বায়ুদূষণ
বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের পুরোনো বাস প্রত্যাহার করতে হবে: পরিবেশমন্ত্রী
বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের বেশি বয়সী বাসগুলো ঢাকা শহর থেকে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।
রবিবার বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গণপরিবহনের কালো ধোঁয়া নির্গমন বন্ধ ও উন্মুক্ত স্থানে নির্মাণ সামগ্রী না রাখা এবং বায়োমাস বর্জ্য পোড়ানো বন্ধের বিষয়ে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় এ নির্দেশ দেন তিনি।
পরিবেশমন্ত্রী আরও বলেন, বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে কোনো আপস করা হবে না। ৮ এপ্রিলের মধ্যে ঢাকা শহরে চলাচলকারী ২০ বছরেরও বেশি বয়সী বাসের তালিকা দেবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ। পরিবহন মালিক সমিতি ২০ এপ্রিলের মধ্যে ২০ বছরের অধিক বয়সী বাস প্রত্যাহারের পরিকল্পনা দেবে।
সাবের চৌধুরী বলেন, সরকারি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দূষণ নিয়ন্ত্রণের বরাদ্দ দেওয়া বাজেট দূষণ নিয়ন্ত্রণ কর্মকাণ্ড বাস্তবায়নে ব্যয় করতে হবে। তিতাস গ্যাস, বিদ্যুৎ বিভাগ, ওয়াশা, সিটি করপোরেশন সমন্বয় করে রাস্তার খননকার্য সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে সালফারসহ ডিজেল আমদানি বন্ধ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, উন্মুক্তভাবে যাতে বর্জ্য পোড়ানো না হয়, সিটি করপোরেশন সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। রাজউক, সিটি করপোরেশন, পুলিশ বিভাগ নির্মাণকালে নির্মাণ সামগ্রী ঢেকে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করবে। রাজউকের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংশ্লিষ্ট শর্ত মেনে চলতে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট নির্মাণ কার্যক্রমের অনুমতি বাতিল করতে হবে।
এ সময় পুরাতন যানবাহন পুরোপুরি নিয়ম মেনে স্ক্র্যাপ করার নির্দেশও দেন পরিবেশমন্ত্রী।
সভায় আরও ছিলেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব নবিরুল ইসলাম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, অতিরিক্ত সচিব (পদূনি) তপন কুমার বিশ্বাস, অতিরিক্ত সচিব (পরিবেশ) ড. ফাহমিদা খানম, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. আবদুল হামিদ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন এসোসিয়েশনের সহসভাপতি মাহবুবুর রহমান এবং ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমদসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা।
বায়ুদূষণের দায়ে ৭ যানবাহন ও ৬ ইটভাটাকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় ঘোষিত অভিযানে বায়ুদূষণের দায়ে সাতটি যানবাহন ও ছয়টি ইটভাটা থেকে ২০ লাখ ২১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
বায়ুদূষণ বিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে রবিবার পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং, ঢাকা মহানগর কার্যালয়, চাঁদপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলা কার্যালয় এর উদ্যোগে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: ঢাকার বায়ুদূষণ হ্রাসে নীতিমালা হচ্ছে
মুন্সিঞ্জের গজারিয়া এলাকায় অবৈধ ইটভাটা পরিচালনা করায় মোবাইল কোর্টে দুইটি ইটভাটা হতে মোট ১০ লাখ টাকা এবং চাঁদপুরের মতলব উত্তর এলাকায় চারটি ইটভাটা হতে মোট ১০ লাখ টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয়।
ঢাকার মতিঝিল এলাকায় মোবাইল কোর্টে যানবাহনের কালো ধোঁয়া দ্বারা বায়ুদূষণের দায়ে সাতটি যানবাহন হতে হতে মোট ২১ হাজার পাঁচ শত টাকা জরিমানা ধার্যপূর্বক আদায় করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট উইং কর্তৃক পরিচালিত বায়ুদূষণ বিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন: দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ুদূষণ রোধে জরুরি সমন্বিত পদক্ষেপের তাগিদ বিশ্বব্যাংকের
মেগাপ্রকল্প নির্মাণ এবং আশেপাশের ইটভাটার কারণে ঢাকার বায়ুদূষণ বাড়ছে: মন্ত্রী
অবৈধ ইটভাটা বন্ধ: সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে ডিসিদের নির্দেশ
দেশের বায়ুদূষণ রোধকল্পে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেশের সকল জেলা প্রশাসককে অনুরোধ করেছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ অধিশাখা-১ থেকে পাঠানো চিঠিতে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
চিঠিতে দেশের সকল অবৈধ ইটভাটা, বিশেষ করে অধিক ক্ষতিকর ইটভাটাসমূহকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বন্ধ করতে বলা হয়েছে। কোনও লাইসেন্স ছাড়াই নতুন তৈরি ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম জোরদার করতে বলা হয়েছে।
যে জেলাগুলোতে বৈধ ইটভাটার চেয়ে অবৈধ ইটভাটা বেশি, সে জেলাগুলোর জেলা প্রশাসকগণকে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে ডিসিদের সতর্ক থাকার নির্দেশ
আজ জারীকৃত অপর এক চিঠিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ জেলার সকল সরকারি অফিসসমূহে এবং উপকূলীয় এলাকায় সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিকের ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। প্লাস্টিক ও পলিথিন দূষণ রোধকল্পে মাসিক সভা ও অংশীজনদের নিয়ে নিয়মিত আলোচনা সভা আয়োজন এবং এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, পরিবেশ দূষণকারী ইটভাটাসমূহের হালনাগাদ অবস্থা, প্লাস্টিক ও পলিথিন ব্যবহার রোধকল্পে গৃহীত কার্যক্রম এবং পরিবেশ দূষণ সম্পর্কিত এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনার জন্য ২০২৩ সালের ৩ জানুয়ারি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসকগণের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সভায় গৃহীত এসব সিদ্ধান্ত দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ডিসিদের ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান
অবৈধ ইটভাটা ধ্বংসের নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়নি, পরিবেশের ডিজিসহ ৫ ডিসিকে হাইকোর্টে তলব
বায়ুদূষণ কমাতে গণপরিবহনের ব্যবহার বাড়াতে হবে: মন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ক্ষতিকর গ্যাসের নিঃসরণজনিত বায়ুদূষণ কমাতে ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে গণপরিবহনের ব্যবহার বড়াতে হবে।
মেগাপ্রকল্প নির্মাণ এবং আশেপাশের ইটভাটার কারণে ঢাকার বায়ুদূষণ বাড়ছে: মন্ত্রী
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন বলেছেন, ‘ঢাকার বায়ুর মানের অবনতি ঘটার পেছনে অন্যতম প্রধান কারণ মেগাপ্রকল্প নির্মাণ। এছাড়াও শহরের আশেপাশে ইটভাটা থেকে যে ধোঁয়া বের হচ্ছে তাতেও বায়ুদূষণ হচ্ছে।’