বিশ্বব্যাংক
সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক
প্রথম অফিসিয়াল সফরে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকায় আসছেন বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অপারেশনস) আনা বিজার্ড।
একদিনের এই সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতের নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বিজার্ড।
আরও পড়ুন: সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেকের সৌজন্য সাক্ষাৎ
তার সঙ্গে থাকবেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশকে সহায়তা করা প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্বব্যাংক অন্যতম।
তখন থেকে বাংলাদেশকে ৪১ বিলিয়ন ডলারের বেশি অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বিশ্বব্যাংক, যার বেশিরভাগই অনুদান বা রেয়াতি ঋণে।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) সহায়তায় বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় কর্মসূচি চলছে।
আরও পড়ুন: শিশুদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ২১০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন
২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক-এডিবির ঋণ নয়, অনুদান চাই: টিআইবি
রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলা করতে ঋণের পরিবর্তে অনুদান দিতে বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে আলোচনা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সোমবার টিআইবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কাছ থেকে চাওয়া এক বিলিয়ন ডলারের বিপরীতে ৫৩৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ এবং ৪৬৫ মিলিয়ন অনুদানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলায় এমন সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশের বাধ্য হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে টিআইবি।
আরও পড়ুন: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত খাত: টিআইবি জরিপ
একই সঙ্গে রোহিঙ্গা সংকটের মতো বৈশ্বিক মানবিক সংকট মোকাবিলার জন্য অনুদান হিসেবে দিতে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে আলোচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
পাশাপাশি, এই নীপিড়নমূলক মানবিক সংকট মোকাবিলায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ন্যায্য ও যথাযথভাবে এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোহিঙ্গা সংকটের মতো এমন একটি মানবিক সংকট মোকাবিলার সব ভার শুধু বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেওয়া পুরোপুরি অন্যায্য এবং তা মোটেই কার্যকর ও টেকসই সমাধান নয়।
এই সংকট সমাধানের জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত পদক্ষেপ ও বৈশ্বিক সংহতি। মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় প্রদান ও বছরের পর বছর ভরণপোষণের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে নিজেদের সামর্থ্যের সর্বোচ্চ করেছে বাংলাদেশ।
এই বাড়তি অর্থনৈতিক বোঝা সম্মিলিতভাবেই বহন করার দায়িত্ব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের। নির্যাতনে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বলে, এই অর্থনৈতিক বোঝার পুরোটাই অনন্তকাল ধরে বাংলাদেশের কাঁধে চাপিয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
বিশেষত, যখন বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে সেই মুহূর্তে এই ঋণ চাওয়ার সিদ্ধান্ত দ্বিগুণ উদ্বেগজনক।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এ বিষয়ে বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক ও এডিবি থেকে ঋণ গ্রহণের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা এবং রোহিঙ্গা সংকটসংশ্লিষ্ট সব খরচের সুষ্ঠু ও ন্যায়সঙ্গত বণ্টন নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংলাপের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঋণ নয় অনুদান হিসেবে সহায়তা প্রদানের জন্য বিশ্বব্যাংক ও এডিবির প্রতি আমরা আহ্বান জানাই।’
বাস্তুহীন রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অনুদান হ্রাসের প্রবণতায় টিআইবি বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন।
এর মাধ্যমেই প্রমাণ হয়- আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে কাপুরুষের মতো তাদের দায় এড়িয়ে যাচ্ছে এবং এই বোঝা বহনের দায়িত্ব শুধু বাংলাদেশের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনুদান কমে যাওয়ার কারণে মাথাপিছু খাদ্য সহযোগিতায় বরাদ্দ প্রতি মাসে ১২ ডলার থেকে ৮ ডলারে নেমে এসেছে।
ড. জামান বলেন, ‘বৈশ্বিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে মিয়ানমারের বহুমাত্রিক অংশীদারত্ব, স্বার্থসংশ্লিষ্ট দেশসমূহের দায়িত্ব হলো রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা বৃদ্ধি, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবর্তনের টেকসই সমাধান এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য মায়ানমারকে জবাবদিহির মুখোমুখি করার মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতি সহায়তার হাত বাড়ানো।’
রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকটের আন্তর্জাতিক উদ্যোগ সমন্বয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের জন্য জাতিসংঘ এবং তার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রোহিঙ্গা শরণার্থীরা যাতে প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়, তা নিশ্চিত করা জাতিসংঘের নৈতিক দায়িত্ব। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগণের উপর চলমান নিপীড়নসহ এই সংকটের মূল কারণসমূহ মোকাবিলায় জাতিসংঘকেও কাজ করতে হবে।’
পরিচালক আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হয়েছে এবং মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবনের অধিকার তাদের আছে। রোহিঙ্গা নিপীড়ন-গণহত্যা থেকে সৃষ্ট অর্থনৈতিক, সামাজিক, পরিবেশগত ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ বইতে গিয়ে বাংলাদেশ অনেক বেশি চাপে রয়েছে। এখন সেই চাপ মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশকে ঋণ নিতে বাধ্য করার মতো নিন্দনীয় ও ঘৃণ্য কাজ আর কী হতে পারে!’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অ্যামনেস্টি,আরএসএফ ও টিআইবি বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্য খাত নিয়ে টিআইবি মিথ্যাচার করেছে: মন্ত্রী
বিদেশফেরত দুই লাখ কর্মীকে ২৭০ কোটি টাকার প্রণোদনা দেবে সরকার
করোনা মহামারির সময় বিদেশফেরত দুই লাখ কর্মীকে ২৭০ কোটি টাকা প্রণোদনা দেবে সরকার।
এজন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় রিকভারি অ্যান্ড অ্যাডভান্সমেন্ট অব ইনফরমাল সেক্টর এমপ্লয়মেন্ট (আরএআইএসই বা রেইজ)- শীর্ষক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) প্রবাসী কল্যাণ ভবনে প্রকল্পের বিষয়ে অবহিত করতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ তথ্য জানানো হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন।
এসময় প্রকল্প পরিচালক ও সরকারের যুগ্ম সচিব সৌমেন্দ্রনাথ সাহাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভার আয়োজন করেপ্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।
সভায় জানানো হয়, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিভিন্ন দেশ থেকে কাজ হারিয়ে ২০২০ সালে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। প্রত্যাগত বিদেশফেরত অধিকাংশ কর্মী কর্মহীন অবস্থায় রয়েছেন এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্থকষ্টসহ সমাজে নানা ধরনের প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
আরও পড়ুন: বোরোতে উফশী ধানের উৎপাদন বাড়াতে ১০৮ কোটি টাকার প্রণোদনা: কৃষি মন্ত্রণালয়
এতে আরও বলা হয়েছে, এই কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না হলে সমাজে অস্থিরতাসহ নানাধরনের অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। তাদের পুনঃএকত্রীকরণের (রি-ইন্টিগ্রেশন) লক্ষ্যে বিশ্বব্যাংকের ঋণ সহায়তায় রেইজ প্রকল্পের আওতায় বিদেশফেরত কর্মীদের পুনর্বাসন ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা করা হবে।
সহযোগিতার মধ্যে দুই লাখ কর্মীকে এককালীন ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে প্রণোদনা দেওয়া হবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই এ প্রণোদনা দেওয়া হবে।
এছাড়াও, তাদের আত্মকর্মসংস্থানে সহযোগিতা, ঋণ প্রাপ্তিতে সহযোগিতা, দক্ষতা সনদ প্রদান, উদ্যোক্তা প্রশিক্ষণ গ্রহণে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করা হবে।
এসময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিনিয়র সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, প্রণোদনার মূল উদ্দ্যেশ্য হচ্ছে আমাদের সঙ্গে তাদের যুক্ত করা। শুরুতে যে পরিমাণ রেজিস্ট্রেশন হয়েছে তা আশাব্যঞ্জক। এই প্রজেক্ট তার গন্তব্যে পৌঁছবে। প্রজেক্টটি করোনাকালে যারা ফেরত এসেছে তাদের নিয়ে শুরু করেছি। তবে আমরা ভাবছি করোনা পরবর্তীতেও যারা এসেছে তাদের নিয়েও কাজ করার। আমরা চেষ্টা করি তাদের পাশে দাঁড়ানোর। তবে আমরা শতভাগ তাদের পাশে দাঁড়াতে পারি না তথ্যের ঘাটতির কারণে।
তিনি বলেন, প্রতিবছর কতজন কর্মী প্রবাসে যান সেটি আমাদের তালিকায় আছে। কিন্তু কতজন ফেরত আসেন তা কিন্তু আমাদের জানা নেই। তারা হয়তো জানেন না কিভাবে কি করতে হবে। কেউ হয়তো পুনরায় প্রবাসে যেতে চান। সেসব বিষয়ে তাদের সহযোগিতা করাই রেইজ প্রকল্পের লক্ষ্য। শুধু প্রণোদনা দেওয়া নয়, দক্ষতা উন্নয়নেও সহযোগিতা করবে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়। প্রবাস ফেরতদের কেউ ঋণ চাইলে আমরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সঙ্গে সমন্বয় করে দেব। কেউ উদ্যোক্তা হতে চাইলেও আমরা সহযোগিতা করবো।
আরও পড়ুন: পরিবেশবান্ধব ইট উৎপাদনকারীদের প্রণোদনা দেবে সরকার: পরিবেশমন্ত্রী
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের বিষয়ে ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, প্রত্যাশী মানুষের সংখ্যা কম হওয়ায় আমরা ঋণ দিতে পারছি না। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে ২০০ কোটি টাকার ফান্ড আছে। আমরা হয়তো ১৫০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছি। এর মানে এই না, আমরা কার্যক্রম চালাচ্ছি না। আসলে আমরা প্রবাসীদের ঋণের চাহিদা পাচ্ছি না। তবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক তো একটা ব্যাংক। এই প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মেনে চলতে হয়। হয়তো ঋণ পাওয়ার যেসব শর্ত আছে, সেটি কারও জন্য পূরণ করা কঠিন হয়। কিন্তু ঋণ পাচ্ছে না বিষয়টি এমন নয়।
সভায় জানানো হয়, যে সকল কর্মী বিদেশ গমনের পর দক্ষতা অর্জন করেছেন, কিন্তু প্রাতিষ্ঠানিক সনদ নেই এ সকল কর্মীদের রিকগনিশন অব প্রিয়র লার্নিং (আরপিএল) এর আওতায় ২৩ হাজার ৫০০ জন কর্মীকে দক্ষতা সনদ প্রদান করা হবে। যা তাদের কর্মসংস্থানে সহায়ক হবে। এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী কর্মী সংখ্যা ২ লাখ। এই দুই লাখ কর্মীর প্রত্যেককে এককালীন ১৩ হাজার ৫০০ টাকা করে নগদ প্রণোদনা (ক্যাশ ইনসেনটিভ) দেওয়া হবে।
এছাড়া, রেফারেলের আওতায় কর্মীর চাহিদা অনুযায়ী সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তিতে সহযোগিতা করা হবে। যাতে করে তারা সমাজে নিজেকে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় প্রশিক্ষণ/আর্থিক কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নিজেই নিজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে।
এ লক্ষ্যে রেইজ প্রকল্প বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সইয়ের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো প্রত্যাগত কর্মীদের একটি তথ্য সমৃদ্ধ ডাটাবেইজ তৈরি হবে। গত ৪ মাসে ৫৯ হাজার জন কর্মীর রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গত ৩০ জুলাই, ২০২৩ তারিখে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কর্তৃক ৩০টি জেলায় ওয়েলফেয়ার সেন্টার উদ্বোধন করা হয়। যার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। ৩০টি সেন্টারের মাধ্যমে সারা দেশে প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। সেন্টারের কার্যক্রম বাস্তবায়নে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আইওএম বাংলাদেশ এবং সাব কনসালট্যান্ট হিসেবে আরো ৭ টি বেসরকারি সংস্থা (রামরু, ওকাপ, ব্র্যাক, প্রত্যাশী, বিএসএসকে, ওয়্যারবি, কেএনইউএস) সহায়তা করছে।
আরও পড়ুন: রবি ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে ১৮৯ কোটি টাকার প্রণোদনা দেবে সরকার
মানব সম্পদ ও জলবায়ু সহনশীলতার উন্নয়নে বাংলাদেশকে সহায়তা করবে বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে স্থিতিশীল ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জনে পাঁচটি অর্থায়ন চুক্তি সই হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) এই চুক্তি সই হয় বলে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রারম্ভিক শৈশব উন্নয়ন, মাধ্যমিক শিক্ষা, নদীর তীর সুরক্ষা ও নাব্যতা, শহুরে প্রাথমিক স্বাস্থ্য এবং গ্যাস বিতরণ দক্ষতা সম্পর্কিত প্রকল্পগুলো এই চুক্তির আওতায় রয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
চুক্তির আওতাধীন প্রকল্পগুলো হলো- ২১০ মিলিয়ন ডলারের বাংলাদেশ এনহ্যান্সিং ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড বেনিফিটস ফর আর্লি ইয়ার্স প্রজেক্ট, ৩০০ মিলিয়ন ডলারের লার্নিং এক্সেলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন অপারেশন প্রজেক্ট, ১০২ মিলিয়ন ডলারের যমুনা রিভার সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট, ১ হাজার ২০০ মিলিয়ন ডলারের আরবান হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্রজেক্ট এবং ৩০০ মিলিয়ন ডলারের গ্যাস সেক্টর এফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড কার্বন অ্যাবিটমেন্ট প্রজেক্ট।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সিনিয়র সচিব শরিফা খান এবং বাংলাদেশ ও ভুটানে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলাই সেক নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
বাংলাদেশ এনহ্যান্সিং ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড বেনিফিটস ফর আর্লি ইয়ার্স প্রজেক্ট ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের প্রায় ১৭ লাখ গর্ভবতী নারী ও ৪ বছরের কম বয়সী শিশুদের মায়েদের নগদ অর্থ প্রদান ও কাউন্সেলিং সেবা প্রদানের মাধ্যমে প্রারম্ভিক শৈশব উন্নয়নে সহায়তা করবে।
লার্নিং এক্সেলারেশন ইন সেকেন্ডারি এডুকেশন অপারেশন প্রজেক্ট শিক্ষার ফলাফল এবং শিক্ষার মান উন্নত করে মাধ্যমিক শিক্ষাকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। কোভিড-১৯ মহামারির সময় শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে এবং ভবিষ্যতের ধাক্কাগুলোর জন্য প্রস্তুতি উন্নত করতে প্রকল্পটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার পাশাপাশি পরিপূরক অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালু করবে। ঝরে পড়ার হার কমাতে এই কর্মসূচির আওতায় ৮০ লাখ ঝুঁকিপূর্ণ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদান করা হবে এবং ৫ হাজার স্কুলে সক্রিয় যৌন হয়রানি ও প্রতিরোধ কমিটি গঠন নিশ্চিত করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে: বিশ্বব্যাংক
যমুনা রিভার সাসটেইনেবল ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট-১ যমুনা নদীর তীর রক্ষা ও নাব্যতা উন্নয়ন, নদীভাঙন ও বন্যা থেকে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমি রক্ষা, হাজার হাজার মানুষকে বাস্তুচ্যুত হওয়া থেকে রক্ষা এবং তাদের জীবিকা ও সম্পদ রক্ষায় সহায়তা করবে। এটি পর্যাপ্ত গভীরতার সঙ্গে নৌপথের চ্যানেলগুলোকে উন্নত করবে যাতে সারা বছর বড় কার্গো জাহাজগুলোর চলাচল উপযোগী করতে পারে এবং অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং বাণিজ্যকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে।
আরবান হেলথ, নিউট্রিশন অ্যান্ড পপুলেশন প্রজেক্ট ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এবং সাভার ও তারাবো পৌরসভায় ডেঙ্গুর মতো মশাবাহিত রোগসহ সাধারণ রোগের চিকিৎসা, প্রতিরোধ ও রেফারেল করার জন্য প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন করবে। এটি মশা নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং আচরণ পরিবর্তন যোগাযোগকেও সমর্থন করবে। এটি নারীদের জন্য প্রসবপূর্ব পরিষেবাগুলো উন্নত করতে সহায়তা করবে। গর্ভাবস্থায় আড়াই লাখেরও বেশি নারীকে কমপক্ষে চারটি চেকআপ পাওয়ার লক্ষ্য নিশ্চিত করবে। এটি প্রায় ১৩ লাখ প্রাপ্তবয়স্কের হাইপারটেনশন স্ক্রিনিং এবং ফলো-আপে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: শিশুদের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের ২১০ মিলিয়ন ডলার অনুমোদন
গ্যাস সেক্টর এফিসিয়েন্সি ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড কার্বন অ্যাবিটমেন্ট প্রজেক্ট প্রি-পেইড মিটারিং সিস্টেমের মাধ্যমে গ্যাস বিতরণ এবং শেষ ব্যবহারের দক্ষতা উন্নত করতে এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মান শৃঙ্খলে মিথেন নির্গমন কমাতে সহায়তা করবে। এটি ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগে ১২ লাখের বেশি প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন করবে। প্রিপেইড গ্যাস মিটার এবং উন্নত মনিটরিং সিস্টেম প্রাকৃতিক গ্যাসের শেষ ব্যবহারকে কার্যকর করতে, গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন কমানো এবং পরিবার ও শিল্প ব্যবহারকারীদের জন্য গ্যাস বিল কমাতে সহায়তা করবে।
আবদুলাই সেক বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলো জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সহনশীলতা উন্নত করার পাশাপাশি আমাদের শিশুদের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত প্রস্তুত করতে সহায়তা করবে।’
তিনি বলেন, একটি বাসযোগ্য গ্রহে দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব গড়ার বিশ্বব্যাংকের লক্ষ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বাংলাদেশের কার্যকর অংশীদারিত্ব থাকায় লাখ লাখ বাংলাদেশি দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ প্রধানদের সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বিশ্বব্যাংক-আইএমএফ প্রধানদের সঙ্গে ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) ঢাকায় এই বৈঠক করেন তিনি।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি চিফ আবদুলাই সেক এবং আইএমএফের আবাসিক প্রতিনিধি জয়েন্দু দে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পিটার হাসকে হুমকির বিষয়ে সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে: মার্কিন দূতাবাস
মার্কিন দূতাবাসের মুখপাত্র স্টিফেন আইবেলি ইউএনবিকে বলেন, ‘কূটনীতিক হিসেবে আমরা বিভিন্ন সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও জনগণের সঙ্গে কথা বলি। এর মধ্যে রয়েছে সুশীল সমাজ, বেসরকারি সংস্থা, গণমাধ্যম পেশাজীবী, ব্যবসায়ী নেতা, চেম্বার অব কমার্স, রাজনৈতিক দল, একাডেমিক ও বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি কর্মকর্তা, সাংস্কৃতিক অবদানকারী, শিক্ষাবিদ এবং আরও অনেক ধরনের সংগঠন, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি।
তিনি বলেন, 'এই কথোপকথন আমাদের বাংলাদেশকে আরও ভালোভাবে বুঝতে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করতে সহায়তা করবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের উন্নয়ন ও তৈরি পোশাক খাতে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রশংসা ইইউ প্রতিনিধি দলের
অর্থনীতি সঠিক পথে এগোচ্ছে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বিভিন্ন বৈদেশিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও অর্থনীতি সঠিক পথে এগোচ্ছে।
তিনি বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সাম্প্রতিক মতামত উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি সঠিক পথে রয়েছে এবং দেশের প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের কাছাকাছি রাখা হয়েছে।
কামাল রবিবার (২২ অক্টোবর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সরকারি পেনশন বিনিয়োগ সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
এই মাসের শুরুর দিকে আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। যেখানে বিশ্বব্যাংক ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অনুমান ৬ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ৬৫ শতাংশ করেছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আবারও বলব সারা বিশ্বের অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আমরা একা আমাদের অর্থনীতি চালাতে পারি না। সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে।’
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপের আশ্বাস অর্থমন্ত্রীর
একদিকে যুদ্ধ থেমে গেলে অন্য দিকে আরেক যুদ্ধ শুরু হয় বলে দুঃখ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এখন আপনারা (সাংবাদিকরা) বলেন কিভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণ করব?’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ইতোমধ্যে ১৫ হাজার জন নিবন্ধন করেছেন। তাদের জমাকৃত টাকার পরিমাণ ১২ কোটি ৪৫ লাখ টাকার বেশি।
তিনি বলেন, ‘সরকার সাবস্ক্রিপশনের টাকা সর্বজনীন পেনশন স্কিমে বিনিয়োগ করা শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে ১০ বছরের ট্রেজারি বন্ডের জন্য ১১ কোটি ৩১ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র: অর্থমন্ত্রী
আইএমএফের শর্তের ভিত্তিতে বাজেট করা হয়নি: অর্থমন্ত্রী
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি বাড়তে পারে: বিশ্বব্যাংক
নিকট ভবিষ্যতে বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতি বাড়তে পারে এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের রপ্তানি খাতের উপর চাপ অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) ঢাকায় আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের (অ্যামচাম) মধ্যাহ্নভোজ সভায় বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদুলায়ে সেক এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, এটি বৈশ্বিক পরিস্থিতি এবং দেশীয় বিনিময় হার, মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির উপর নির্ভর করে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর বলেন, ‘গত দুই মাসের তথ্যে আমরা ইতোমধ্যেই এই পূর্বাভাসটিকে বাস্তবায়িত হতে দেখেছি। রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্স প্রবাহ হ্রাস পেতে দেখা গেছে।’
তিনি বলেন, আগামীতে নীতির সমন্বয় সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থাকে স্থিতিশীল করতে সাহায্য করতে পারে। অতিরিক্ত বিনিময় হারের নমনীয়তা প্রবাসীদের আনুষ্ঠানিক চ্যানেল ব্যবহার করে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করবে এবং রপ্তানি আয় বৃদ্ধি উৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: ২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
সেক বলেছেন, ঋণের উপর সুদের হারের সীমা নির্ধারণ পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করাসহ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে মুদ্রানীতির সংস্কার জোরদার করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘একই সময়ে কার্যকর ব্যাংক তদারকির মাধ্যমে আর্থিক খাতের দুর্বলতাগুলো মোকাবিলা করা প্রয়োজন। সাম্প্রতিক মুদ্রানীতির সংস্কারগুলো একটি সঠিক পদক্ষেপ, তবে এগুলো বাস্তবায়নে গতি বাড়ানো প্রয়োজন।’
তিনি আরও বলেন, এসব বাস্তবায়ন হলে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে পারে। যেহেতু আমদানি মূল্য মধ্যম মেয়াদে স্থিতিশীল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের
২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১.৭ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস বিশ্বব্যাংকের
২০২৪ সালে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি ১ দশমিক ৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে, ২০২৩ সালে দেশটির অর্থনীতি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ সংকুচিত হয়।
মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বিশ্বব্যাংক তার ষান্মাষিক পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বলেছে, ঋণ পুনর্গঠন এবং জটিল কাঠামোগত সংস্কার বাস্তবায়নের অগ্রগতির উপর প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা নির্ভর করে।
বিশ্বব্যাংক মঙ্গলবার তার সর্বশেষ পূর্বাভাসে জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য উন্নত রাজস্ব সংহতি গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
দেশটিতে একটি সরকার-নেতৃত্বাধীন কর সংস্কার প্যাকেজ ২০২২ সালের মে থেকে বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- নতুন করের প্রবর্তন, বিস্তৃত পরিসরে করের হার ও ভিত্তিগুলো সমন্বয়, কর সংগ্রহের দক্ষতা বৃদ্ধি প্রভৃতি।
মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারিস এইচ হাদাদ-জারভোস বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক সংকটের শুরু থেকেই শ্রীলঙ্কা গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার করেছে। পুনরুদ্ধারের জন্য আর্থিক ঝুঁকিগুলো মোকাবিলা করার সময় সংস্কারমূলক একটি টেকসই প্রবৃদ্ধির পথ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
তিনি বলেন, জনগণের আস্থা তৈরি করতে এবং উন্নততর জনসেবা প্রদানের সঙ্গে ব্যয়ের স্বচ্ছতা এবং ক্রমাগত সংস্কারের মাধ্যমে কর রাজস্ব সংগ্রহের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকা উচিত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার অনুমোদন বিশ্বব্যাংকের
বাংলাদেশ-বিশ্বব্যাংকের ৩০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তি সই
বাংলাদেশের ২০২৪ অর্থবছরের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমাল বিশ্বব্যাংক
বিশ্বব্যাংক তার সর্বশেষ হালনাগাদে আগামী জুনে শেষ হওয়া ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে।
এপ্রিলে দেওয়া তার আগের পূর্বাভাসে চলতি অর্থবছরের জন্য ৬ দশমিক ২ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির কথা বলেছিল বৈশ্বিক ঋণদাতা বিশ্বব্যাংক।
মঙ্গলবার প্রকাশিত সর্বশেষ 'সাউথ এশিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট- টুওয়ার্ডস ফাস্টার, ক্লিনার গ্রোথ' শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার প্রবৃদ্ধি হবে ৫ দশমিক ৮ শতাংশ, যা বিশ্বের অন্য যেকোনো উদীয়মান ও উন্নয়নশীল অঞ্চলের চেয়ে বেশি। কিন্তু এটি করোনা মহামারি পূর্বের গতির চেয়ে ধীর এবং এর উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণের জন্য যথেষ্ট গতির নয়।
বিশ্বব্যাংক তার হালনাগাদে আরও বলেছে, বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মহামারি থেকে একটি শক্তিশালী পুনরুদ্ধার করেছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক খাতে দুর্বলতা, বাহ্যিক চাপ এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে মহামারি পরবর্তী ২০২৩ অর্থবছরে পুনরুদ্ধার বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দারিদ্র্য বিমোচনে নতুন ফ্রন্টিয়ারস বলছে, মুদ্রাস্ফীতি মোকাবিলায় আর্থিক ও রাজস্ব নীতির পাশাপাশি আর্থিক খাতের দুর্বলতার মাধ্যমে সংস্কার দেশের প্রবৃদ্ধি ও দারিদ্র্য বিমোচন বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
এতে আরও বলা হয়, একটি একক বাজার-ভিত্তিক বিনিময় হার আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহকে আকর্ষণ করতে এবং অর্থপ্রদানের ভারসাম্য এবং রিজার্ভ জমাতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে দেশে ৪০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিটেন্স এসেছে
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সহায়তায় বাংলাদেশ জীবনযাত্রার অবস্থার উন্নতি করেছে এবং ২০১৬ সালের চরম দারিদ্র্য ৯ শতাংশ থেকে ২০২২ সালে ৫ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। যা লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান দেশগুলোর সঙ্গে তুলনীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ার গড়ের চেয়ে ভালো।
বিশ্বব্যাংক বলছে, আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমা ২ দশমিক ১৫ ডলার (২০১৭ ক্রয় ক্ষমতা সমতা ব্যবহার করে) এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গৃহস্থালি আয় ব্যয় জরিপ ২০২২ এবং ২০১৬ সালের পুনঃনিরীক্ষণের উপর ভিত্তি করে নতুন দারিদ্র্যের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক বলেছেন, দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অগ্রগতি বহুমাত্রিক- এটি শিশু মৃত্যুহার ও অপুষ্টি হ্রাস এবং বিদ্যুৎ, স্যানিটারি টয়লেট ও শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধিসহ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর কল্যাণে উন্নতি সাধন করেছে। শহর ও নগরের তুলনায় গ্রামাঞ্চলে দ্রুত দারিদ্র্য বিমোচন হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এসব অর্জন সত্ত্বেও, অসমতা গ্রামীণ এলাকায় কিছুটা সংকুচিত হয়েছে এবং শহরাঞ্চলে প্রশস্ত হয়েছে। বিশ্বব্যাংক অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করতে জরুরি সংস্কারের জন্য বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে প্রস্তুত রয়েছে।’
আরও পড়ুন: অর্থনীতিকে করোনা পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরাতে চায় সরকার
আঞ্চলিক প্রতিবেদনে দক্ষিণ এশিয়ায় ২০২৪ এবং ২০২৫ সালে প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে আসার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, কারণ মহামারি পরবর্তী পুনরুদ্ধার হ্রাস পেয়েছে এবং আর্থিক কঠোরতা, আর্থিক একত্রীকরণ এবং বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাসের সমন্বয়ে অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের উপর প্রভাব পড়ে।
ভঙ্গুর আর্থিক অবস্থানের কারণে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনাগুলো নেতিবাচক ঝুঁকিসাপেক্ষ। ২০২২ সালে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে সরকারি ঋণ জিডিপির গড় ৮৬ শতাংশ, যা খেলাপির ঝুঁকি ও ঋণের খরচ বাড়ায় এবং বেসরকারি খাত থেকে ঋণ সরিয়ে নেয়। এই অঞ্চলটি চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আরও মন্দা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আরও ঘন ঘন এবং তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাবে পড়তে পারে।
বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রাইসার বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়া যখন ধারাবাহিকভাবে অগ্রগতি করছে, তখন এই অঞ্চলের বেশিরভাগ দেশই এক প্রজন্মের মধ্যে উচ্চ আয়ের সীমায় পৌঁছানোর মতো দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে না।
তিনি আরও বলেন,‘দেশগুলোকে জরুরিভিত্তিতে আর্থিক ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা করতে হবে এবং বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক জ্বালানি রূপান্তরের ফলে সৃষ্ট সুযোগগুলো কাজে লাগানোসহ প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পদক্ষেপের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: শিগগিরই এসক্রো বাস্তবায়ন কমিটি গঠন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেকের সৌজন্য সাক্ষাৎ
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বাংলাদেশ ও ভুটানের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।
আগারগাঁওস্থ বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভবনে উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের অফিস কক্ষে রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: ‘উন্নয়ন ও গণতন্ত্র রক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেছি’: মোমেনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট কাউন্সেলরের সাক্ষাৎ
বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন আবদৌলায়ে সেক। একই সঙ্গে বৈশ্বিক কারণে সৃষ্ট রিজার্ভের সাময়িক সমস্যাও বাংলাদেশ কাটিয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের এই কান্ট্রি ডিরেক্টর করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট সমস্যার মধ্যেও বাংলাদেশে যে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রয়েছে তারও ভূয়সী প্রশংসা করেন।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর আবদৌলায়ে সেককে স্বাগত জানান উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। বাংলাদেশে বিগত ১৪ বছরে অর্জিত অর্থনৈতিক অগ্রগতির সার্বিক চিত্র তুলে ধরেন তিনি। অব্যাহত সহযোগিতার জন্য বিশ্বব্যাংকের প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফেরার উপায় নেই, ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর বিদায়ী সাক্ষাৎ