কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুরে স্বামী হত্যার ঘটনায় স্ত্রীর ১০ বছরের কারাদণ্ড
লক্ষ্মীপুরে স্বামীকে শ্বাসরোধে হত্যার দায়ে স্ত্রীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ সময় আরও ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিকালে লক্ষ্মীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থী খুনের মামলায় ৫ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
দণ্ডপ্রাপ্ত আমেনা রায়পুর উপজেলার বামনী ইউপি’র বামনী গ্রামের মমিনুল হকের মেয়ে। তার স্বামীর বাড়িও একই এলাকায়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২২ মার্চ রাতে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী গ্রামে পারিবারিক বিরোধের জেরে স্বামী সহিদ হোসেনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে স্ত্রী আমেনা বেগম। বিষয়টি গোপন রেখে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে জানায় আমেনা। দাফনের জন্য গোসল করাতে নিলে গলায় আঁচড়ের দাগ দেখে সন্দেহ হলে পুলিশে খবর দেয় পরিবারের লোকজন। পরে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি উঠে আসে।
এদিকে এ ঘটনায় সহিদের বড় ভাই আব্দুল আলী খোকন বাদী হয়ে আমেনা বেগমকে আসামি করে ২০২২ সালের ২৯ এপ্রিল রায়পুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এছাড়া এ ঘটনায় একই বছরের ২৩ মে আদালতে তদন্তপত্র দাখিল করে পুলিশ।
জানা গেছে, এর আগে ২০২২ সালের ২৬ এপ্রিল পুলিশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসে। এতে সহিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয় বলে প্রমাণ পাওয়া যায় বলে দাবী পুলিশের।
পারিবারিক কলহের জেরে মুখ চেপে ধরে আমেনা সহিদকে হত্যা করে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয় পুলিশের প্রতিবেদনে।
পুলিশ জানান, দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আমেনার বিরুদ্ধে রায় দেন। সহিদ জীবিত থাকা অবস্থায় তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে ছিল। তার মৃত্যুর সময় আমেনা গর্ভবতী ছিলেন।
পরে আমেনা একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। ১৬ মাস বয়সী মেয়ে ফাতেমা আক্তার মারিয়াকে নিয়েই তাকে কারাগারে যেতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: দোষ স্বীকার করায় কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে কারাদণ্ড
ফরিদপুরে বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
দুর্নীতির দায়ে সু চির চূড়ান্ত রায় ঘোষণা, ৩৩ বছরের কারাদণ্ড
সেনা শাসিত মিয়ানমারের একটি আদালত শুক্রবার দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিকে দুর্নীতির দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করেছেন। রাজনৈতিক বিভিন্ন মামলায় সু চিকে টানা ৩৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
একজন আইনি কর্মকর্তা বলেছেন, শুক্রবার শেষ হওয়া ফৌজদারি মামলাটি দুর্নীতি বিরোধী আইনের অধীনে পাঁচটি অপরাধের সঙ্গে জড়িত। মামলায় সু চিকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
তিনি জানান, এর আগেই সাতটি দুর্নীতির মামলায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এগুলোতে সু চিকে মোট ২৬ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
৭৭ বছর বয়সী সু চি অবৈধভাবে ওয়াকিটকি আমদানি ও নিজের কাছে রাখা, করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ লঙ্ঘন, দেশের সরকারি গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন, রাষ্ট্রদ্রোহ ও নির্বাচনে জালিয়াতিসহ আরও কয়েকটি অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
সু চির সমর্থক ও স্বাধীন বিশ্লেষকরা বলছেন, সু চি ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ মূলত সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেয়ার একটি প্রচেষ্টা এবং ২০২৩ সালের নির্বাচনের আগে সু চিকে রাজনীতি থেকে সড়ানোর অপচেষ্টা।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে কারচুপি মামলায় সু চির ৩ বছরের কারাদণ্ড
তার সরকারের প্রধান ছিলেন সু চি। উইন মিন্ট, তার সরকারে প্রেসিডেন্ট ছিলেন, তিনিও একই মামলার অপর অভিযুক্ত।
ওই আইনী কর্মকর্তা বলেছেন, সু চিকে চারটি অভিযোগে তিন বছরের সাজা দেয়া হয়েছে এবং হেলিকপ্টার কেনার সঙ্গে সম্পর্কিত অভিযোগের জন্য চার বছরের সাজাসহ মোট সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। উইন মিন্টকেও একই কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
যদিও আসামিরা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং তার আইনজীবীরা আগামী দিনে আপিল করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, সু চি ও উইন মিন্ট দুজনেই সুস্থ আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ডেপুটি এশিয়া ডিরেক্টর ফিল রবার্টসন একটি ইমেলে দেয়া বিবৃতিতে বলেন, ‘শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জান্তা তার (সু চির) বিরুদ্ধে মামলা সাজানোর জন্য যা কিছু প্রয়োজন তা পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে করে যাচ্ছে। আর সামরিক বাহিনী যা চাইবে, দেশটির ক্যাঙ্গারু আদালত শাস্তির সেই রায়ই দেবে।’
সামরিক সরকারের পক্ষ থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে, আমরা কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে তা বিবেচনা করব।’
আরও পড়ুন: দুর্নীতির মামলায় সু চির ৫ বছরের কারাদণ্ড
রবার্টসন বলেন, বয়সের কারণে সু চির ৩৩ বছরের কারাদণ্ড ‘তার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সমান’।
তিনি বলেন, ‘মিয়ানমার জান্তার প্রহসনমূলক, সম্পূর্ণ অন্যায্য অভিযোগ এবং অং সান সুচির বিরুদ্ধে দোষী সাব্যস্ত করা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত শাস্তির সমান। তাকে সারাজীবন কারাগারে আটকে রাখার জন্য এসব করা হয়েছে।’
মিয়ানমারের স্বাধীনতার নায়ক জেনারেল অং সানের মেয়ে সু চি ১৯৮৯ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত রাজনৈতিক বন্দী হিসেবে প্রায় ১৫ বছর কাটিয়েছেন।
মিয়ানমারে সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান তাকে গণতন্ত্রের জন্য অহিংস সংগ্রামের প্রতীকে পরিণত করে এবং ১৯৯১ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার পান।
তার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি পার্টি ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনে সহজেই জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে এবং ১৯৬২ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর প্রথমবারের মতো সত্যিকারের বেসামরিক সরকার গঠন করে।
কিন্তু ক্ষমতায় আসার পর মুসলিম রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের ওপর ২০১৭ সালের দমন-পীড়নের নৃশংসতাকে উপেক্ষা করে, অবিশ্বাস্যভাবে সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন জানানোর জন্য সু চি সমালোচিত হয়েছিলেন।
তার ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসি ২০২০ সালের নির্বাচনে আবার ভূমিধস বিজয় লাভ করে। কিন্তু তিন মাসেরও কম সময়ের মধ্যে নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের সংসদে তাদের আসন গ্রহণ থেকে বিরত রাখা হয় এবং তার সরকার ও দলের শীর্ষ সদস্যদের আটক করা হয়।
সেনাবাহিনী অভিযোগ করেছে, ২০২০ সালের নির্বাচনে ব্যাপক ভোট জালিয়াতি হয়েছে, কিন্তু স্বাধীন নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা কোন বড় অনিয়ম খুঁজে পাননি।
২০২১ সালে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে। সেসময় দেশব্যাপী ব্যাপক শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ শুরু হয়। দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী সেসব বিক্ষোভ দমনের চেষ্টা করে এবং শিগগিরই এই আন্দোলন সশস্ত্র প্রতিরোধে পরিণত হয়।
সেনাবিরোধী বিক্ষোভকারীদের হত্যা ও গ্রেপ্তারের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা একটি বেসরকারি সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের তালিকা অনুসারে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী কমপক্ষে দুই হাজার ৬৮৫ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করেছে এবং ১৬ হাজার ৬৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: সু চির আরও ৪ বছরের কারাদণ্ড
সুনামগঞ্জে তিন ভারতীয় যুবকের ৭ বছরের কারাদণ্ড
অবৈধভাবে বাংলাদেশে ইয়াবা পাচারের সময় সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত থেকে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া তিন ভারতীয় যুবককে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালত।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক মহিউদ্দিন মুরাদ এই রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সুনামগঞ্জের পাশ্ববর্তী ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সাইপ্রাস থানার কালাটেক গ্রামের লিটন দাস (২৫), সুরঞ্জিত দাস (২৮) ও সাদব দাস (৩০)।
মাদক মামলায় তিন ভারতীয় যুবককে কারাদণ্ড প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ভারপ্রাপ্ত পিপি অ্যাডভোকেট সোহেল আহমদ সোহেল মিয়া।
আদালত সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৭ মার্চ সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার সীমান্ত থেকে তিন হাজার ৯৭০ পিস ইয়াবা ও এক বোতল ভারতীয় মদসহ ভারতীয় ওই তিন যুবককে গ্রেপ্তার করে র্যাব সিলেট অফিসের সদস্যরা। এই ঘটনায় দোয়ারাবাজার থানায় মামলা করা হয়।
তিনি আরও জানান, ইয়াবা জব্দের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আদালত।
রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি আদালতে হাজির ছিলেন বলেও জানা যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অস্ত্র মামলায় ভারতীয় দম্পতির কারাদণ্ড
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অস্ত্র মামলার রায়ে এক ভারতীয় দম্পতিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশের পর অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে স্ত্রী কলাবতী চৌধুরীকে ১০ বছর ও স্বামী রামবিলাস চৌধুরীকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।
বুধবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক রবিউল ইসলাম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ভারতীয় নাগরিক আব্বাস
কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- ভারতের পচিমবঙ্গের মালদা জেলার হবিপুর থানার গৌরীমারী ধুমবালু কলোনীর মৃত রামপরিয়াক চৌধুরীর ছেলে রামবিলাস চৌধুরী (৫৫) ও তার স্ত্রী কলাবতী চৌধুরী (৪৫)।
রাষ্ট্রপক্ষের মো. রবিউল ইসলাম জানান, ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার সীমান্তবর্তী দলদলী ইউনিয়নের মহামারী এলাকা থেকে একটি পিস্তল, পাঁচ রাউন্ড গুলি ও একটি ম্যাগজিনসহ ভারতীয় নাগরিক রামবিলাস চৌধুরী ও তার স্ত্রী কলাবতী চৌধুরীকে আটক করে র্যাব।
পরে র্যাবের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. ইউসুফ আলী ভুইয়া বাদি হয়ে ভোলাহাট থানায় মামলা দায়ের করেন।
আরও পড়ুন: কারাভোগ শেষে ৩ ভারতীয় নাগরিককে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর
বাগেরহাট জেলা কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে দেশে ফিরল ১৩৫ ভারতীয় জেলে
ঝিনাইদহে ভুয়া দন্ত চিকিৎসককে কারাদণ্ড
ঝিনাইদহে এক ভুয়া দন্ত চিকিৎসককে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মঙ্গলবার বিকালে ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস.এম. নুরুন্নবী নজরুল ইসলামকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরে ভুয়া চিকিৎসকের কারাদণ্ড, চেম্বার সিলগালা
এস.এম. নুরুন্নবী জানান, শহরের নতুন হাটখোলায় খান ডেন্টালে ভুয়া এক দন্ত চিকিৎসক দীর্ঘদিন চিকিৎসা দিয়ে আসছিল। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের সঙ্গে ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে অভিযান চালায়। এসময় আটক করা হয় নজরুল ইসলামকে।
তিনি বলেন, নিজের দোষ স্বীকার করায় তাকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০০ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও সাত দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়।
তিনি আরও জানান, সে এসএসসি পাশ ও আগে একটি কারখানার স্টোর কিপারের কাজ করতো।
আরও পড়ুন: ফেনীতে ভুয়া চিকিৎসকের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা
খুলনায় ভুয়া চিকিৎসককে এক বছরের কারাদণ্ড
কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা: ৫ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় কিশোরীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে পাঁচ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-২ এর বিচারক মো. রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।
আসামিরা হলো-গঙ্গাচড়া উপজেলার নরসিংহ মর্ণেয়া গ্রামের শামসুল আলমের ছেলে আবুজার রহমান (২৮), মো. হান্নানের ছেলে আলমগীর হোসেন (২৭), মতিয়ার রহমান মুন্সির ছেলে নাজির হোসেন (৩২), আব্দুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম (২৯) এবং আমিনুর রহমান (২৯)।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে ডাকাতি মামলা ৪ আসামিকে ৬ বছর করে কারাদণ্ড
তাদের মধ্যে আলমগীর হোসেন পলাতক।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, প্রধান অভিযুক্ত আবুজার রহমানের সঙ্গে শাহীনার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। একপর্যায়ে মেয়েটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বিয়ের জন্য চাপ দিলে অস্বীকৃতি জানায় আবুজার। ঘটনার দিন ২০১৫ সালের ১৪ মে আইয়ুব আলী তার স্ত্রীকে নিয়ে লালমনিরহাটে একটি পারিবারিক বিয়ের অনুষ্ঠানে যান। এসময় বাড়িতে শাহীনা ও তার ১২ বছর বয়সী ভাগ্নি শান্তনা বাড়িতে ছিলেন।
বিষয়টি জানাজানির ভয়ে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে অভিযুক্ত আবুজার রহমান তার অপর সহযোগিদের নিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে শাহীনার বাড়িতে গিয়ে তাকে ডেকে এনে পাশ্ববর্তী একটি ধইঞ্চা খেতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর গলাকেটে হত্যা করেন।
ওইদিন রাতে আইয়ুব আলী বাড়িতে ফিরে মেয়েকে না পেয়ে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজখবর নেন। পরদিন সকালে প্রতিবেশিদের মাধ্যমে খবর পেয়ে ধইঞ্চা খেত থেকে শাহীনার লাশ উদ্ধার করেন আইয়ুব আলী।
পরবর্তীতে শান্তনা ও তার স্ত্রীর মুখে বিস্তারিত শুনে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন আইয়ুব আলী।
প্রায় সাত বছর মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সরকারি কৌঁসুলি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত পাঁচ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রাজশাহীতে ২০১২ সালে কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
বান্দরবানে সৎ মাকে হত্যার দায়ে ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সিরাজগঞ্জে শিশু হত্যার দায়ে ৫ জনের যাবজ্জীবন
সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে ইমন (৬) নামে এক শিশুকে হত্যার দায়ে পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এছাড়া মামলার অন্য দুই আসামিকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে তরুণীকে হত্যার দায়ে দম্পতির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে এ দণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
যাবজ্জীবনপ্রাপ্ত আসামিরা হলো-বেলকুচি উপজেলার চক মকিমপুর গ্রামের সোহেল (২৮), কাউছার (৩০), হীরন (৩২), আল-আমিন (৪০) ও ওসমান (৩৮)।
সেইসঙ্গে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামি আলহাজ ও গোলামকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
উক্ত আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট ওয়াজ করনী লকেট এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বেলকুচি উপজেলার চর মকিমপুর গ্রামের মালয়েশিয়া প্রবাসী মো. চাঁন মিয়া ও মোছা. মমতা খাতুনের শিশু সন্তান ইমন ২০২১ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকালে নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজের সাত দিন পর ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুরে একই উপজেলার মাইঝাইল গ্রামের একটি বাঁশঝাড় থেকে শিশু ইমনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত শিশুটির চাচা সানোয়ার হোসেন বাদী হয়ে সাতজনকে আসামি করে বেলকুচি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মামলার তদন্ত চলাকালে আসামি আল-আমিন ও মো. ওসমান জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্ত শেষে সাত আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
এ মামলায় মোট ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বিজ্ঞ আদালত আসামিদের উপস্থিতিতে মঙ্গলবার দুপুরে উল্লেখিত রায় ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে সৎ মাকে হত্যার দায়ে ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
মাদারীপুরে ডাকাতি মামলা ৪ আসামিকে ৬ বছর করে কারাদণ্ড
মাদারীপুরে একটি ডাকাতি মামলার রায়ে চার আসামিকে ছয় বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
সোমবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর এর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ওই জেলার সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি গ্রামের রাজ্জাক খা’র ছেলে রহিম খা(৩৭)। একই রাজৈর উপজেলার রিদয়নন্দী গ্রামের ফরহাদ শেখের ছেলে রিপন শেখ। শরিয়তপুরের গোসাইরহাটের মলংচড়া গ্রামের মাসুম দপ্তরী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বান্চারামপুরের লাফান্দি গ্রামের শাহ আলম খানের ছেলে সোহেল খান।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে সৎ মাকে হত্যার দায়ে ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
জানা গেছে আসামি রহিম খা ছাড়া অন্যরা পলাতক রয়েছে।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের ৭ ডিসেম্বর রাতে ডাকাতরা সদর উপজেলার পশ্চিম রাস্তি এলাকার বাবুল শরীফের বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার ঘরে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে পুলিশ ডাকাতদের রামদা সহ হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। এ ব্যাপারে মাদারীপুর থানায় একটি ডাকাতি মামলা করা হয়।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে জেএমবির ৩ সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হালদা নদীতে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার, ১ জনের কারাদণ্ড
বান্দরবানে সৎ মাকে হত্যার দায়ে ১ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
বান্দরবানের লামা উপজেলার মেরাখোলা এলাকায় সৎ মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যার দায়ে একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার বান্দরবান জেলা ও দায়রা জজ মো. ফজলে এলাহী ভূইঁয়া এ রায় ঘোষণা করেন। একই সাথে আসামিকে দশ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্তের নাম আলী আহাম্মদ(৫৪)।
জেলা আইন কর্মকর্তা পিপি মো. ইকবাল করিম জানান, সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বের কারণে ১৯৯৮ সালের ৩০ জুন লামা উপজেলার মেরাখোলার বেগুনঝিরি নামক স্থানে ঐ এলাকার রওশন আলীর ছেলে আলী আহাম্মদ তার সৎমাতা ভিকটিম ফাতেমা বেগমকে কুপিয়ে হত্যা করে। পরবর্তীতে এলাকার লোকজন আসামি ধরে থানায় সোপর্দ করে। এ ঘটনায় মৃত ফাতেমা বেগমের ভাই বাদী লামা থানার একটি হত্যা মামলা রুজু করেন।
এ ঘটনায় আসামি আলী আহাম্মদ ম্যাজিস্ট্রেট এর কাছে দোষ স্বীকার করেছে। মামলায় ৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড ও দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে জেএমবির ৩ সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হালদা নদীতে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার, ১ জনের কারাদণ্ড
নাটোরে অস্ত্র মামলায় একজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড
লালমনিরহাটে জেএমবির ৩ সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
লালমনিরহাটে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) তিন সদস্যকে নাশকতা ও অস্ত্র মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালত। একই সঙ্গে আরেক জেএমবি সদস্যকে ১৪ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন।
সোমবার(২১ নভেম্বর) দুপুরে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার সাংটেপুর গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলাম, পার্শ্ববর্তী সাহেবডাঙ্গা গ্রামের লুৎফুর রহমানের ছেলে আপেল মিস্ত্রি ও কালীগঞ্জ উপজেলার মদাতীর হাফিজুর রহমানের ছেলে মোখলেছুর রহমান।
আরও পড়ুন: হালদা নদীতে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকার, ১ জনের কারাদণ্ড
১৪ বছর কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর আসামি হলেন পাটগ্রাম উপজেলার মির্জারকোট এলাকার মজিবর রহমানের ছেলে তফিজুল ইসলাম।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২ আগষ্ট রাতে জেএমবি সদস্যরা পাটগ্রামের এমএম প্লাজা মার্কেটের সংলগ্ন একটি কাঠের ফার্নিচার দোকানে বৈঠক করেন। ওই সময় সেখানে রংপুর র্যাব-১৩ সদস্যদের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌঁড়ে পালানোর সময় চারজন আটক হন। এ সময় দেহ তল্লাশি করে শফিকুল ইসলামের কাছ থেকে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার হয়। তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা করা হয়। এ ছাড়া এই তিনজনসহ একজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের কয়েকটি ধারায় আরেকটি মামলা হয়। সেই মামলায় একজনকে ১৪ বছর কারাদণ্ড দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জেলা দায়রা জজ আদালতের (পিপি) আকমল হোসেন আহমেদ বলেন, তারা মূলত সরকারকে উৎখাত করতে বিভিন্ন নাশকতার জন্য বৈঠক করছিল। এসব বিষয় সত্যতা পেয়ে তাদের তিনজনকে যাবজ্জীবন ও একজনকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: নাটোরে অস্ত্র মামলায় একজনের ১০ বছরের কারাদণ্ড
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চীনা নাগরিকসহ ৬ জনের কারাদণ্ড