ব্যবসা-বাণিজ্য
বৈদেশিক মুদ্রার হার বাজারভিত্তিক করা হবে: অর্থমন্ত্রী
সরকার বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করার কথা চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, ‘আমরা বৈদেশিক বিনিময় হার বাজার ভিত্তিক করার চিন্তা করছি। আজ বা আগামীকাল, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার বাজার-ভিত্তিক লেনদেনের জন্য যেতেই হবে।’
বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি (সিসিইএ) এবং সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির (সিসিজিপি) পরপর দুটি বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন:বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়াতে আইএমএফের কোনো প্রস্তাব পাইনি: অর্থমন্ত্রী
সাম্প্রতিককালে বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে অস্থিরতার পটভূমিতে অর্থমন্ত্রী এমন মন্তব্য করলেন। মুদ্রার বাজারে মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ৮৫ টাকা থেকে ১১৯ টাকায় উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি বিনিময় হার নির্ধারণ করেছে ৯৫ টাকা, বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ডলার লেনদেন হচ্ছে ১০৮ টাকায়।
ব্যাংক ঋণের সুদ হার পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমানত ও ব্যাংক ঋণে বিদ্যমান ৬-৯ শতাংশ সুদের হারের বিপরীতে ঋণের হারে কোনো ঊর্ধ্বমুখী বা নিম্নমুখী পরিবর্তনের সম্ভাবনা নাকচ করে দেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘বর্তমান সুদের হার ৬-৯ শতাংশের মধ্যে ভাল কাজ করছে।’
মুস্তাফা কামাল বলেন, অনেক দেশ মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সুদের হার বৃদ্ধির পথ অনুসরণ করে।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু বাংলাদেশের মতো দেশে সুদের হার বাড়িয়ে বা কমিয়ে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা খুবই কঠিন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুটি উপায়ে কাজ করে – আর্থিক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বাজার পর্যবেক্ষণ করে।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সম্পর্কে তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ভালো অবস্থায় রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী দাবি করে বলেন, ‘আমাদের রেমিট্যান্স বাড়ছে, রপ্তানি বাড়ছে এবং আমদানি কমছে।’
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার বাজারে কোনো সংকট নেই। শিগগিরই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে।
রুবলে রাশিয়ান জ্বালানি আমদানির বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে বাংলাদেশকে মুদ্রা অদলবদলের মাধ্যমে তা করতে হবে। সেক্ষেত্রে রাশিয়াকে প্রথমে আমাদের মুদ্রা গ্রহণ করতে হবে।’
আরও পড়ুন:আইএমএফের কাছে ঋণ চাইলেও অর্থনীতির অবস্থা খারাপ নয়: অর্থমন্ত্রী
আইএমএফের ঋণের জন্য বাংলাদেশের অনুরোধের খবর নাকচ অর্থমন্ত্রীর
বিবি’র ওয়েব পোর্টালে ডলার ১০৬, ব্যাংকে ৯৬ টাকা!
বাংলাদেশ ব্যাংক(বিবি) মঙ্গলবার হঠাৎ করেই আন্তব্যাংক লেনদেনে ইউএস ডলারের মূল্য পরিবর্তন করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, আন্তব্যাংক লেনদেনে ডলারের বিক্রয়মূল্য মঙ্গলবার ছিল ১০৬ দশমিক ১৫ টাকা। আর আন্তব্যাংকিং লেনদেনে ডলারের ক্রয়মূল্য ১০১ দশমিক ৬৭ টাকা ছিল।
কিন্ত এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দর ছিল না। এটি ডলার ব্যবসায়ী ও তাদের সঙ্গে ব্যাংগুলোর দর। ব্যাংকগুলো যে দরে ডলার কেনা-বেচা করে তাকে আন্তব্যাংক দর বলে।
আরও পড়ুন: চাল রপ্তানিতে ২০ভাগ শুল্ক আরোপ করল ভারত
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে দামে ডলার বেচা-কেনা করত তাকে আন্তব্যাংক দর উল্লেখ করেছিল। বিবি সেই দর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছিল।
কিন্তু মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক হঠাৎ করে ডলারের দামের মূল্য পরিবর্তন করেছে। গত রবিবার তাদের ওয়েবসাইটে ডলারের বিক্রয়মূল্য দেখানো হয়েছিল ৯৫ টাকা। গত সোমবার ডলারের মূল্য ১ টাকা বেড়ে হয় ৯৬ টাকা হয়।
মঙ্গলবার বিবি’র ওয়েবসাইটে ডলারের বিক্রয় মূল্য দেখাচ্ছে সর্বোচ্চ ১০৬ টাকা। আর ক্রয়মূল্য দেখাচ্ছে ১০২ টাকার মধ্যে।
যাইহোক, আজকেও বিবি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ৪ দশমিক ৫ কোটি ডলার ৯৬ টাকা দরে বিক্রি করেছে।
পড়ুন: ব্রোকার সেবা প্রদানে এশিয়া সিকিউরিটিস ও এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটালের সমঝোতা স্মারক সই
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যাংকগুলো যে দামে ডলার ক্রয়-বিক্রয় করবে সেটাই হবে আন্তব্যাংক দর। যা ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হবে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ দরে বিক্রি করবে না।
বিবির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, ‘গতকাল ডলারের দাম বৃদ্ধি করে ৯৬ টাকা করা হয়েছিল। আজও কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই দামেই ডলার বিক্রি করেছে।’
কেন ওয়েবসাইটে ডলারের দাম এত বেশি দেখানো হচ্ছে তা তিনি জানেন না।
আরও পড়ুন: ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৭২ বিলিয়ন ডলার
বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ চায় বিজিএমইএ
রপ্তানির সঙ্গে সম্পৃক্ত কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন(বিজিএমইএ)।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বৈশ্বিকভাবে জ্বালানি ও বিদ্যুতের সংকট এবং দেশে তৈরি পোশাক শিল্পে প্রভাব পড়ার কথা স্বীকার করে এই অনুরোধ জানান।
শনিবার বিজিএমইএ ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ সম্পর্কে বক্তব্য রাখার সময় এ অনুরোধ জানান তিনি।
বিজিএমইএ’র সহ-সভাপতি মো. শহিদুল্লাহ আজিম, সহ-সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম(অর্থ) এবং সংগঠনটির পরিচালকরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) ও বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্ট এসোসিয়েশন(বিজিএমইএ)এর যৌথ উদ্যোগে আগামী ১২-১৮ নভেম্বর ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ আয়োজন করা হবে। যাতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের চিত্তাকর্ষক গল্পসমূহ ও উৎকর্ষ সাধনের ক্রমাগত প্রচেষ্টাগুলো তুলে ধরা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৩ নভেম্বর ‘মেড ইন বাংলাদেশ উইক’ -এর উদ্বোধন করবেন।
বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এই শিল্প ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত এক বছর নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদনের প্রত্যক্ষ সাক্ষী।
‘আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে ধীরে ধীরে আমাদের কাজের আদেশগুলো বাতিল হয়ে যাচ্ছে,’ উল্লেখ করে বিজিএমইএ প্রধান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বাংলাদেশের রপ্তানির প্রধান বাজারগুলোতে সম্ভাব্য মন্দা ও মূল্যস্ফীতির কারণে আগামী বছরের কার্যাদেশ ২০-৩০ শতাংশ কমে এসেছে।
ফারুক হাসান বলেন, অনেক খুচরা বিক্রেতা মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে এবং অনেক ব্রান্ডের পণ্যের বিক্রির হার কমে যাওয়ার ফলে অবিক্রিত পণ্যের মজুদ বেড়েছে।
বিজিএমইএ প্রধান বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনায় সামনের মাসে আমাদের রপ্তানির ধারাবাহিকতায় নেতিবাচকতা দেখা যেতে পারে।’
আরও পড়ুন: গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে বৈচিত্র্য আনার আহ্বান এফবিসিসিআই সভাপতির
চলতি অর্থবছরে রপ্তানি মুনাফার ওপর ১ শতাংশ উৎস কর আরোপ করেছে সরকার। বিজিএমইএ প্রধান সরকারকে বিগত বছরের মতো (০.৫ শতাংশ) রাখার অনুরোধ জানান।
সপ্তাহব্যাপী সম্মেলনের এই আয়োজনে মেলা, প্রদর্শনী, পুরস্কার, কারখানা ভ্রমণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং নেটওয়ার্কিংসহ শারীরিক ইভেন্ট উপস্থাপন করা হবে।
বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের এটি একটি সাংকেতিক ঘটনা। বিশ্বের ১৬০টিরও বেশি দেশে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ পোশাক রপ্তানি করে দেশটি।
মেড ইন বাংলাদেশ উইক’-এর লক্ষ্য হলো ভবিষ্যতের সম্ভাবনা এবং রোডম্যাপ নিয়ে আলোচনা ও সহযোগিতা শুরু করতে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের সকল মালিকদের একত্রিত করা।
এছাড়াও, টেকসই এবং দায়িত্বশীল ব্যবসা সম্প্রসারণে সম্মিলিত প্রতিশ্রুতির জন্য আয়োজনটি কাজ করবে।
বিজিএমইএ জানিয়েছে, দেশের পোশাক শিল্পের প্রশস্ততা প্রদর্শনের পাশাপাশি, এই সপ্তাহের লক্ষ্য ভবিষ্যতের অগ্রাধিকার এবং অংশীদারদের মধ্যে সহযোগিতার
সুযোগগুলো চিহ্নিত করা। যাতে বিশ্বব্যাপী পোশাকের সোর্সিংয়ের জন্য একটি পছন্দের গন্তব্য হিসাবে বাংলাদেশ থাকে, তা নিশ্চিত করা।
এতে বলা হয়েছে, মেড ইন বাংলাদেশ উইক হবে বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের জন্য একটি মাইলফলক ঘটনা।
বৈশ্বিক ফ্যাশন বাজারে বাংলাদেশের উপস্থিতি জোরদার করার গুরুত্ব এবং টেকসই উৎপাদন ও সোর্সিংয়ের জন্য বিশ্বব্যাপী স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৃহত্তর সহযোগিতার সূচনার জন্য, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ বাংলাদেশে ৩৭তম বিশ্ব ফ্যাশন কনভেনশনের আয়োজন করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল অ্যাক্রেডিটেশন ফোরামকে(আইএএফ) সুপারিশ করেছে।
আইএএফ সেই প্রস্তাবে সম্মত হয়েছে এবং ৩৭তম বিশ্ব ফ্যাশন সম্মেলন বাংলাদেশে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ -এর সহযোগিতায় ২০২২ সালের ১২-১৫ নভেম্বর -এর মধ্যে ঢাকায় হোটেল রেডিসন ব্লুতে অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ব্র্যান্ডের প্রচারের আহ্বান বিজিএমইএ’র
সিঙ্গাপুরের ৪২তম শীর্ষ ধনী সামিটের আজিজ খান
আবারও মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ৫০ ধনীর তালিকায় নাম উঠেছে বাংলাদেশি নাগরিক মুহাম্মদ আজিজ খানের। এবার সিঙ্গাপুরের ৪২তম শীর্ষ ধনী ব্যক্তি হিসেবে তাঁর নাম স্থান পেয়েছে। তিনি বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি সামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
শুক্রবার পর্যন্ত করা ফোর্বসের তালিকায় তার মোট সম্পদের পরিমাণ বলা হয়েছে ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ।
আজিজ খান বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সামিট শুরু করলেও পরবর্তীতে অবকাঠামোতে মনোযোগ দেন। সামিট বিদ্যুৎ, বন্দর, ফাইবার অপটিক্স ও রিয়েল এস্টেট খাত নিয়ে কাজ করে।
ফোর্বসের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে , ২০১৯ সালে আজিজ খান সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের ২২ শতাংশ অংশীদারিত্ব ৩৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে জাপানের জেইআরএ-এর কাছে বিক্রি করেন। ফলে কোম্পানির মূল্য ১৫০ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।
২০১৮ সালেও সিঙ্গাপুরের শীর্ষ ধনী হিসাবে তাকে তালিকাভূক্ত করেছিল ফোর্বস।
তাকে স্বপ্নদ্রষ্টা এবং জীবন্ত কিংবদন্তি বলা হয়, তাঁর ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা শুধুমাত্র অন্যদের জীবনকে উন্নত করার জন্য উৎসর্গিত, তিনি একজন সমাজসেবী এবং শিল্পের উৎসাহী ও অনুরাগী মানুষ।
২০১৯ সালে এই সেক্টরে তার অবদানের জন্য ‘এশিয়ান ওয়ান’ ম্যাগাজিনের পাওয়ার অ্যান্ড এনার্জি বিভাগের অধীনে তিনি 'গ্লোবাল এশিয়ান অব দ্য ইয়ার ২০১৮' হিসাবে স্বীকৃত হন।
ইতিমধ্যে, ১৫ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের সম্পদের সঙ্গে চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহকারী শেনজেন মিন্ডরে বায়ো-মেডিকেল ইলেকট্রনিক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান লি শিটিং সিঙ্গাপুরের ৫০ ধনী নাগরিকের তালিকায় শীর্ষে রয়েছেন।
চাল রপ্তানিতে ২০ভাগ শুল্ক আরোপ করল ভারত
বাংলাদেশে চাল রপ্তানি বন্ধ না করলেও রপ্তানিতে নিরুৎসাহিত করতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে ভারত সরকার।
ভারতীয় ব্যবসায়ীদের উদ্ধৃতি দিয়ে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে এই শুল্ক কার্যকর হবে।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক রবিউল ইসলাম জানান, আমরা এতদিন ভারত থেকে শুল্কমুক্ত চাল আমদানি করছিলাম। ভারতও বাংলাদেশে শুল্কমুক্ত চাল রপ্তানি করে আসছিল। হঠাৎ গত বৃহস্পতিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চাল রপ্তানিতেতে ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়টি আমাদের জানান। নতুন এই শুল্ক শুক্রবার থেকেই কার্যকর করা হয়েছে। এর ফলে চালের আমদানি মুল্য বেড়ে যাবে। যার কারণে দেশের বাজারে চালের দাম আরও বাড়বে।
হিলি স্থলবন্দর আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রæপের সভাপতি হারুন উর রশিদ জানান, ভারত সরকারের শুল্ক বসানোর পরও যদি দামে পড়তা হয় তাহলে বন্দর দিয়ে চাল আমদানি করা হবে। না হলে চাল আমদানি নিয়ে শঙ্কা আছে। তবে শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির কারণে বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে। শনিবার বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি শুরু হলে বিষয়টি বোঝা যাবে।
উল্লেখ্য, দেশের বাজারে সরবরাহ স্বাভাবিক ও দাম নিয়ন্ত্রণ রাখতে চালের আমদানি শুল্ক ৬২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। সেই সঙ্গে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানির অনুমতি দিলে গত ২৩ জুলাই বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু হয়। অনুমতি পাওয়া আমদানিকারকরা হিলিসহ দেশের বিভিন্ন বন্দর দিয়ে চাল আমদানি শুরু করেন। ২৮ আগস্ট চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। এরপর থেকে বন্দর দিয়ে চালের আমদানি বেড়ে যাওয়ায় কেজি প্রতি ৪-৫ টাকা করে দাম কমে আসছিল। কিন্তু এরমধ্যেই ভারত সরকার নতুন ঘোষণা দিল।
‘বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’ পেল প্রাণ-আরএফএল
ব্যবসা ক্ষেত্রে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পেয়েছে দেশের শিল্পগ্রুপ প্রাণ-আরএফএল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর স্থানীয় একটি হোটেলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরীর হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
শুক্রবার সকালে প্রাণ গ্রুপের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়,এই বছর তিন শ্রেণিতে দুই প্রতিষ্ঠান ও এক ব্যক্তিকে ‘বাংলাদেশ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড’দেয়া হয়। ‘এন্টারপ্রাইজ অব দ্য ইয়ার’ ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী দিলো প্রাণ-আরএফএল
প্রাণ গ্রুপের চেয়ারম্যান আহসান খান চৌধুরী বলেন, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের লক্ষ্য হচ্ছে ব্যবসায়িক কার্যক্রমের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিপূর্বক মানুষের মর্যাদা ও আত্মসম্মান বৃদ্ধি করা। আমরা এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে অবিরামভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এ স্বীকৃতি আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে আরও বেশি উৎসাহিত করবে।
আরও পড়ুন: সেরা ভ্যাটদাতা সম্মাননা পেল প্রাণ-আরএফএলের ৪ প্রতিষ্ঠান
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন দ্য ডেইলি স্টার সম্পাদক ও প্রকাশক মাহ্ফুজ আনাম, ডিএইচএল এক্সপ্রেস ইন্ডিয়া’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরএস সুব্রামানিয়ান, ডিএইচএল এক্সপ্রেস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিয়ারুল হকসহ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ৫ হাজার কর্মসংস্থান হবে প্রাণ-আরএফএলের বরেন্দ্র ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কে
দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে ২০০০ সাল থেকে আন্তর্জাতিক লজিস্টিক প্রতিষ্ঠান ডিএইচএল ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার যৌথভাবে এ সম্মাননা দিয়ে আসছে।
ব্রোকার সেবা প্রদানে এশিয়া সিকিউরিটিস ও এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটালের সমঝোতা স্মারক সই
টি এশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড ও এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড -এর মধ্যে ব্রোকার সেবা প্রদানের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক সাক্ষর করেছে।
বৃহস্পতিবার বনানীর তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড এর প্রধান কার্যালয়ে এ চুক্তি সাক্ষরিত হয়।
এই চুক্তির অধীনে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এর পরিচালিত সকল মিউচ্যুয়াল ফান্ড তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড থেকে সব ধরনের ব্রোকারেজ পরিষেবা পাবে।
তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আনোয়ার হোসেন এবং এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মনজুরুল আলম এ চুক্তিতে সাক্ষর করেছেন।
এ চুক্তি দু’পক্ষের মধ্যে একটি সুদৃঢ় সম্পর্ক তৈরি করবে। পুঁজিবাজারে ধারাবাহিকতা রক্ষায় তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড ও এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড -এর মধ্যকার চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
চুক্তি সাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্তিত ছিলেন নগদ লিমিটেড -এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর এ মিশুক , নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক , তাশিয়া সিকিউরিটিস লিমিটেড -এর পক্ষে চেয়ারম্যান আসওয়াদ আকসির মুজিব ওয়াসি, এফআইএসডিএস ও প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন ।
অপরদিকে এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারস অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড-এর পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন শাহরিয়ার হাসান চৌধুরী উদয় (ম্যানেজার ফান্ড অপারেশন)।
অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যম: বৈধভাবে টাকা কোথায় বিনিয়োগ করবেন?
জীবনে স্বচ্ছলতা আনার জন্য অর্থ বিনিয়োগ একটি জরুরি বিষয়। মধ্যম আয় থেকে শুরু করে উচ্চ আয়ের কর্মজীবীরা বৈধভাবে টাকা কোথায় বিনিয়োগ করবেন তা নিয়ে নানা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে থাকেন। দেখা গেছে যে বেশিরভাগ বাংলাদেশিই তাদের উপার্জিত অর্থের একটা অংশ ব্যাংকে জমা রাখেন। নির্দিষ্ট সুদের হারের সঙ্গে বিনিয়োগের স্কিমগুলো দিন দিন বেশ আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে। তবে সুচিন্তিত ও পরিকল্পিত বিনিয়োগ ভবিষ্যতে আর্থিক সুরক্ষায় সম্পদ গড়ে তুলতে সহায়তা করতে পারে। সদূরপ্রসারী বিনিয়োগের প্রতিক্রিয়া স্বরূপ অধিকাংশ ক্ষেত্রে এতোটাই লাভজনক যে তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গেও পাল্লা দিতে পারে। গড়পড়তায় যে কোনো আয়ের লোকদের জন্য ২০ শতাংশ বিনিয়োগ করাটা নিরাপদ। আসুন জেনে নেয়া যাক বৈধভাবে অর্থ কোথায় বিনিয়োগ করলে লাভবান হতে পারেন।
অর্থ বিনিয়োগের সেরা কয়েকটি মাধ্যম
ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি)
ব্যাংকিংয়ের এই মাধ্যমের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম খেয়াল রাখতে হয় দীর্ঘ মেয়াদে অর্থ জমা রাখার ব্যাপারে। কম বেশি যে রকমেরই সুদের হার হোক না কেন, উপার্জনের বড় সংখ্যক অর্থটি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে পড়ে থাকবে লম্বা সময় ধরে। মূলত এই ধরনের অ্যাকাউন্টে অ্যাকাউন্টধারী ব্যক্তি সাধারণ সঞ্চয় ভিত্তিক অ্যাকাউন্ট থেকে অপেক্ষাকৃত বেশি সুদ পেয়ে থাকেন।
শুধু ব্যাংকিই নয়; যেকোনো ধরনের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকেও ফিক্সড ডিপোজিটের অ্যাকাউন্ট খোলা যায়। প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সুদের হার কম বেশি হয়ে থাকে। নিশ্চিত রিটার্নস পাওয়ার জন্য ফিক্সড ডিপোজিট বিনিয়োগের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। এখানে সুদের পরিমাণ মার্কেটে সুদের হারের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানটি যে হারে সুদ নির্ধারণ করেছিল সেই হারেই বিনিয়োগকারি রিটার্নস পেয়ে থাকেন।
আরও পড়ুন: ধনী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে প্রিমিয়াম ভিসা চালু করছে মালয়েশিয়া
যেকোনো সময় ডিপোজিটের মেয়াদ নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতায় পরিবর্তন করা যায়। সুদের হার পে-আউট, মাসিক ও ত্রৈমাসিক হিসেবে নির্বাচন করা যায়। পুনঃবিনিয়োগের ব্যবস্থা তো থাকছেই, সেই সঙ্গে আছে পাঁচ বছর মেয়াদের এফডির জন্য কর মুক্তির সুবিধা।
সঞ্চয়পত্র
বাংলাদেশ জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ঝুঁকিমুক্তভাবে জনগণের বিনিয়োগের পথ তৈরি করে সঞ্চয়পত্র। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয় স্কিমে জনগণকে সংযুক্ত করার মাধ্যমে এখানে বিনিয়োগ নেয়া হয়ে থাকে। স্থানীয় ও প্রবাসী; এই দুই ধরনের বাংলাদেশিদের জন্য আলাদা আলাদা সঞ্চয়পত্র গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন মেয়াদের এই সঞ্চয়পত্রগুলো অর্থ বিনিয়োগের বিনিয়োগে সর্বোচ্চ মুনাফা দিয়ে থাকে। সেই সূত্রে, এটি নিঃসন্দেহে বৈধভাবে টাকা বিনিয়োগের একটি উপযুক্ত মাধ্যম।
বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে তৈরি করা সঞ্চয়পত্রে ভিন্ন মেয়াদের সুদের হার পরিচালনা করে। ১৮ বছরের ওপরে যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিক সঞ্চয়পত্র কেনার যোগ্যতা সম্পন্ন। এই মাধ্যমে একক বা যৌথভাবেও অর্থ বিনিয়োগ করা যায়। সর্বনিম্ন ৫০ হাজার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত একজন ব্যক্তি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারে। মেয়াদের ওপর ভিত্তি করে এতে লাভ থাকে কমপক্ষে ৯ শতাংশ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
শেয়ার বাজার
বিনিয়োগকারিদের জন্য রীতিমত স্বর্গ বলা যেতে পারে শেয়ার বাজারকে। এখানে কেবল অর্থই না; সেই সঙ্গে দরকার হয় নানা ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য, শিক্ষা, বুদ্ধি ও সুদূরপ্রসারি দৃষ্টিভঙ্গি।
এই দক্ষতা কারণেই প্রায়ই সময় দেখা যায় যে একদিকে কেউ শেয়ার বাজারে দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে। আর অন্যদিকে কেউ নিজের সর্বস্ব হারিয়ে পথে বসছে। তাই বলে শেয়ার বাজার কিন্তু কোনো জুয়া নয়। এখানে যে ব্যাপারটি দিন শেষে ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়, সেটি হচ্ছে যথেষ্ট পরিমাণের জ্ঞান ও মেধা। উপযুক্ত শেয়ার সঠিক সময়ে যারা ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারছে তাদের কাছে পুরো ব্যাপারটি বেশ লাভজনক হয়ে ওঠে। আর এক্ষেত্রে অপারগরাই দিন শেষে ক্ষতির সম্মুখীন হন।
শেয়ার বাজারে সাফল্য লাভের নিদিষ্ট কোনো ফর্মুলা নেই, তবে তুখোড় ব্যক্তিরা বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পারেন যে কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনা ঠিক আর কোনটা ভুল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বৈধভাবে রেমিটেন্স পাঠানোর সেরা কয়েকটি মাধ্যম: বিদেশ থেকে টাকা পাঠাবেন যেভাবে
মিউচুয়াল ফান্ড
বিনিয়োগ থেকে উচ্চ হারে রিটার্নপ্রাপ্তি মানেই মিউচুয়াল ফান্ড। বিনিয়োগকারীর টাকাটা এখানে বিনিয়োগ হয় ঋণ তহবিলে। মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করা উচিত দীর্ঘমেয়াদে, তবে এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাজারের ওঠানামা। তাই স্বাভাবিকভাবেই বড় পরিমাণে ক্ষতি হওয়ার ঝুঁকি থাকে। কিন্তু ডেট ফান্ডের ক্ষেত্রে এই ঝামেলা কম।
অনেকেই ভাবেন মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের প্রথম শর্ত ভারতীয় হওয়া। কিন্তু মজার বিষয় হচ্ছে, শুধু বাংলাদেশই নয়; বিশ্বের যে কোনো দেশ থেকে নির্দিষ্ট ব্যাংক শাখা কিংবা বুকারের মাধ্যমে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে এই ফান্ডে বিনিয়োগ করা যায়। বর্তমানে এর প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি এটাই বোঝায় যে, মিউচুয়াল ফান্ডে টাকা বিনিয়োগ করার মাধ্যমে আসলেই ভালো পরিমাণ লাভের মুখ দেখা যায়। বাংলাদেশে অনেক ব্যাংকের মাধ্যমে মিউচুয়াল ফান্ডে গ্রাহকরা বিনিয়োগ করে থাকে।
গোল্ড বা স্বর্ণ
বর্তমানে মুদ্রাস্ফিতির এক বিভীষিকাময় অবস্থার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ববাসী। আজকের ১০০ টাকায় যা ক্রয় করা সম্ভব, আগামী ১০ বছর পরের ১০০ টাকায় তা কল্পনাও করা যাবে না। আর অর্থের এই সময় মূল্যের যখন ভয়াবহ হারে অধঃগমন ঘটে তখনি অর্থনীতির খারাপ সময় শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় বিনিয়োগে আগ্রহী সুইজারল্যান্ড
এটা খুবই স্বাভাবিক যে মূল্য কমে যাওয়া থেকে টাকাকে বাঁচাতে হলে কোনো না কোনো খাতে অবশ্যই বিনিয়োগ করতে হবে। কিন্তু এই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দুঃসাহসের চর্চায় যারা ভয় করেন তাদের একমাত্র গন্তব্য স্বর্ণ মজুদ। স্বর্ণের দাম ক্রমাগত বেড়েই চলে; বিশেষত দীর্ঘ মেয়াদে মূল্য অনেক বেশি বেড়ে যাবার সমূহ সম্ভাবনা থাকে। স্বর্ণ ক্রয় করে মজুদ রাখাটা অর্থ বিনিয়োগের বৈধ একটি উপায়।
এখন ডিজিটাল গোল্ড ইনভেস্টমেন্টের মাধ্যমে খুব সহজেই যেকোনো অর্থের ওপর কিংবা যেকোনো পরিস্থিতিতে স্বর্ণ বিনিয়োগ করা যায়। এই ইনভেস্টমেন্ট হলো প্রকৃত স্বর্ণ না কিনেও তার মালিক হওয়া, যা সেই মালিকের নামে মজুদ থাকবে নিদিষ্ট একটি কোম্পানির ভল্টে।
রিয়েল এস্টেট
টাকা বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা। রিয়েল এস্টেট হলো আবাসিক ও অনাবাসিক প্লট বা বাড়ি ক্রয় ও বিক্রয়, ডেভেলপমেন্ট, ব্যবস্থাপনা, ভাড়া দেয়া বা নেয়া ইত্যাদি। আবাসন একজন নাগরিকের মৌলিক চাহিদা। স্বভাবতই বসবাস ভিত্তিক আবাসিক স্থানের চাহিদা যতই দিন যাচ্ছে বাড়ছে। সেই সঙ্গে বেড়ে চলেছে জায়গা বা বাড়িগুলোর দাম।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আবুধাবির বিনিয়োগকারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তাছাড়া এই লেনদেনে অর্থের পরিমাণ থাকে প্রচুর। একদিকে যেমন খরচ হয় আরেক দিকে পাল্লা দিয়ে উপার্জনও হয় অত্যাধিক। তাই রিটার্নের কথা ভাবলে রিয়েল এস্টেটের অবস্থান শীর্ষস্থানীয় ব্যবসার তালিকায় থাকবে। এমনকি যখন দেশের মুদ্রাস্ফিতির প্রভাব পরে, তখনও এই ব্যবসার বাজার ভালো থাকে। সঠিন জ্ঞান ও মূলধনের সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে এই ব্যবসায় বিনিয়োগ হতে পারে দীর্ঘ মেয়াদি আয়ের উৎস।
বীমা
বীমা মানেই কিন্তু শুধুমাত্র ঝুঁকি কমানোর কোন স্কিম নয়। ঝুঁকির হ্রাস পাওয়া একটা সুবিধা; আর এর সঙ্গে সঙ্গে মেয়াদান্তে যথেষ্ট পরিমাণে মুনাফাও লাভ করা যায়। বাংলাদেশে অনেকগুলো বীমা প্রতিষ্ঠান গ্রাহকদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণে লাভ সরবরাহ করে আসছে।
এই খাতটিও বিনিয়োগের একটি ভালো পছন্দ হতে পারে। তবে অবশ্যই এর আগে ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে। শুধুমাত্র এই একটি খাতকে কেন্দ্র করে সমুদয় বিনিয়োগ ঢেলে দেয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। একজন সুবিবেচক ততটুকুই ঝুঁকি নেন, যতটুকু তিনি পুষিয়ে নিতে সক্ষম থাকেন।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বহুমুখী বিনিয়োগ চায় বাংলাদেশ
পরিশেষে
সবশেষে বলা যেতে পারে যে চাকরিজীবী বা ব্যবসায়ী, প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই আয় বাড়ানোর সেরা উপায় অর্থ বিনিয়োগ। কর্মজীবনের প্রথম দিক থেকে এই প্রক্রিয়া শুরু করলে বৈধভাবে টাকা কোথায় বিনিয়োগ করবেন তা নিয়ে যাবতীয় দ্বিধা দ্বন্দ্ব ধীরে ধীরে কেটে যায়। ফলশ্রুতিতে অবসর গ্রহণের বেশ আগেই হাতে মোটা অঙ্কের টাকা চলে আসে। অর্থাৎ অভিজ্ঞতা একজন বিনিয়োগকারিকে অর্থায়নের নানা খাত সম্বন্ধে জ্ঞানী করে তোলে। তাছাড়া মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকতে হলেও বিনিয়োগ করাতে অভ্যস্ত হতে হবে। নতুবা অভাবের নিষ্পেষনে বেঁচে থাকাটাই দায় হয়ে দাঁড়াবে। বিনিয়োগ কিন্তু যে কোনো বয়স থেকেই শুরু করা যায়। শুধু প্রয়োজন বাজেট অনুযায়ী পরিকল্পনা করে সেরা বিকল্পটা বেছে নেয়া।
আগস্টে রেমিটেন্স ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে
বৈদেশিক মুদ্রা সংকটের মধ্যে আগস্টে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ২ দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্স এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাইতে অভিবাসী শ্রমিকরা ২ দশমিক ০৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেশে পাঠিয়েছিল।
জুলাইতে রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল ১ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২১-২২ অর্থবছরের আগস্টে ছিল ১ দশমিক ৮১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
চলতি ২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিটেন্সন্স আহরণ করেছে, যা ২১ অর্থবছরে আহরিত ২৪ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলারের তুলনায় ১৫ শতাংশ কমেছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসের রেমিটেন্স প্রবাহ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে আশার আলো দেখালেও ক্রমবর্ধমান আমদানি চাহিদা মেটানো কঠিন হয়েছে।
পড়ুন:দেশের অর্থনীতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নরের ৩ অগ্রাধিকার
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম ইউএনবিকে বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিটেন্স পাঠাতে আগ্রহ তৈরিতে প্রক্রিয়াগুলোকে সহজীকরণ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
তিনি বলেন, সরকার রেমিটেন্স প্রণোদনার পাশাপাশি নীতিগত সহায়তা প্রদান করছে। এখন ডলারের মূল্যহার বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই খাত সংশ্লিষ্টরা বলছে, মহামারি পরবর্তী বাংলাদেশের জনশক্তি রপ্তানি ও চাকরির সুযোগ ও রেমিটেন্স প্রবাহ গত অর্থবছরের তুলনায় আরও বাড়াবে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যমতে, ২০২২ অর্থবছরে ৯ লাখ ৮৮ হাজার কর্মী বিদেশে গেছে যা ২০১১ অর্থবছরে ছিল ২ লাখ ৭১ হাজার।
পড়ুন: মেগা প্রকল্প অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে না: প্রধানমন্ত্রী
গত সাত বছরে বার্ষিক বৈদেশিক চাকরির এটি সর্বোচ্চ সংখ্যা।
কর্মকর্তারা আশা করছেন, মালয়েশিয়ার সমঝোতা চুক্তি অনুযায়ী পুনরায় জনশক্তি নেয়া শুরু করলে এই অর্থবছরে কর্মীদের বিদেশে যাওয়ার সংখ্যা আরও বাড়বে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০২১ অর্থবছরে করোনা মহামারির মধ্যে ২ লাখ ৭১ হাজার ৪৪৫ জন চাকরি পেয়েছে, যা ২০২০ সালে ছিল ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৮৩ জন, ২০১৯ সালে ছিল ৬ লাখ ৫৯ হাজার ৪৪ জন, ২০১৮ সালে ছিল ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৪১৭ জন, ২০১৭ সালে ৮ লাখ ৯৩ হাজার ৭৩৬ জন এবং ২০১৬ সালে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৭২১ জন।
আরও পড়ুন: ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি
২৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৭২ বিলিয়ন ডলার
চলতি আগস্টের প্রথম ২৫ দিনে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দেয়া বিভিন্ন ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এই সময়ে বাংলাদেশি প্রবাসীরা সরকারি ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এক দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।
জুলাই মাসে বাংলাদেশ ২ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অভ্যন্তরীণ রেমিট্যান্স পেয়েছে। সেসময় বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিরা ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে পরিজনদের জন্য আরও বেশি অর্থ পাঠায়।
গত অর্থবছরের আগস্টে প্রবাসীরা এক দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন।
ক্রমবর্ধমান আমদানি বিলের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাসের মধ্যেও বেসরকারি খাতের অনেক ব্যাংক এখন সরকারি খাতের তুলনায় বেশি রেমিট্যান্স দেশে আনছে।
বিভিন্ন বেসরকারি ব্যাংক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের চেয়ে বেশি হারে ডলার কিনছে, যা তাদের বেশি রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করতে সহায়তা করছে।
১ থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ইসলামী ব্যাংক ৩৫৬.২৩ মিলিয়ন ডলার, অগ্রণী ব্যাংক ১১০.১২ মিলিয়ন ডলার এবং সিটি ব্যাংক ১০৯.৪৩ মিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পেয়েছে।
পূবালী ব্যাংক ৫ দশমিক ৪৮ মিলিয়ন ডলার, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ৯৫ দশমিক ৩৮ মিলিয়ন ডলার এবং রূপালী ব্যাংক ৯৩ দশমিক ৫৩ মিলিয়ন ডলার পেয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে ১৪ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ ২.০৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে জুলাইয়ে
জুলাইয়ের ২১ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৬৪ বিলিয়ন ডলার