������������������-���������������������
চাঁদপুরে ৩৯টি লবণ মিলই বন্ধ, বেকার হাজারো দিনমজুর
চাঁদপুর জেলার বিখ্যাত ব্যবসা কেন্দ্র পুরানবাজার সেই ব্রিটিশ আমল থেকেই কর্মাশিয়াল হাব হিসেবে খ্যাত। এর পাশেই নৌ, সড়ক ও রেলপথ থাকায় ব্যবসা বাণিজ্য প্রসার লাভ করেছে। প্রতিদিন কোটি কোটি টাকা এখানে লেনদেন হয়। এখান থেকে পাইকারি দরে লবণসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে জেলার খুচরা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা বাণিজ্য করছেন।
এক সময়ে লবণ শিল্প ও লবণ ব্যবসা ছিল জমজমাট। সারাদিনই গম-গম আওয়াজ হতো এসব মিল কারখানায়। প্রতিদিন শত শত দিনমজুর জীবিকা করতো এসব মিলে কাজ করে। এখানে নদীর পাড়ে পাড়ে ৪০টি লবণ মিলে প্রতিদিন টনে টনে লবন উৎপাদন হতো আর প্যাকেটজাত করে পাঠানো হতো জেলা ও জেলার বাইরে শরিয়তপুর, ডামুডা, সুরেশ্বর, মতলব, গজারিয়া, ষাটনলসহ দূর দুরান্তের বিভিন্ন বাজারে নৌপথ ও সড়কের যানবাহনে।
কিন্তু কালের চক্রে আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন রাজধানীসহ বড় নগরীতে বড় বড় শিল্প কারখানায় আরও উন্নত প্যাকে উন্নতমানের রিফাইন্ড লবণ জেলা উপজেলার হাট-বাজারে ও দোকানের দ্বারপ্রান্তে নিজস্ব যানবাহনে পৌঁছে দেয়ায় পুরানবাজারের এ লবণ ব্যবসায় নেমেছে ব্যাপক ধস। একে একে বন্ধ হয়ে গেছে সব মিল ও লবণ ব্যবসা। এটা গত এক দশকের দৃশ্য–জানান ব্যবসায়ীরা।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে তারল্য সংকট নেই, বলছে বিএবি
বেকার হয়ে গেছে হাজারো দিন মজুর। প্রতিটি মিলে কাজ করতো একশ’ বা তার কিছু বেশি দিনমজুর। এখন এসব মিলগুলো পড়ে আছে পরিত্যক্ত অবস্থায়। পুরানবাজারে ঘুরে ঘুরে দেখলাম এসব লবণ মিলগুলি এখন বন্ধ, তালা মারা, যেনো ভুতড়ে গলি।
মেঘনা-ডাকাতিয়ার মোহনায় নদীর পাড়ে পুরানবাজারে জনতা সল্ট মিলের স্বত্বাধিকারী একে আজাদ ইউএনবিকে জানান- জেলার প্রসিদ্ধ ব্যবসা কেন্দ্র পুরানবাজারে শুধু তার মিলটিই কোন রকমে টিকে আছে। পুরানবাজারে ৪০টি লবণ মিল ছিল। ব্যবসা ছিল জমজমাট। এখন ৩৯টি লবণ মিলই বন্ধ।
তিনি বলেন, ‘কমপিটিশন মার্কেটে, অনেক কষ্ট হচ্ছে টিকে থাকতে। শতাধিক দিনমজুর এখানে কাজ করছেন। দুই ধরনের লবণ এখানে উৎপাদন হয়। আমাদের জন্য আয়োডিনযুক্ত লবণ আর গো-খাদ্যের জন্য সাধারণ লবণ।
দিনমজুর হারুনর রশীদ, বাবুল মিয়া, বশির গাজীসহ অনেকেই জানান, আগে শত শত দিনমজুর ৩৯টি মিলে কাজ করতো। কত ব্যস্ত ছিল লবণ মিল এলাকাগুলো! র্দীঘনি:শ্বাস ফেলে এক লবণ শ্রমিক বললেন, ‘কোথায় গেলো সেই দিনগুলো! বেকার সব দিনমজুররা এখানে সেখানে কাজ করছে। কেউ কেউ না ফেরার দেশেও চলে গেছে।
কথা হলো প্রবীণ লবণ ব্যবসায়ী ও পুরানবাজারে অবস্থিত চাঁদপুর চেম্বার অব কর্মার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি আলহাজ্ব জাহাংগীর আখন্দ সেলিমের (৭৫) সঙ্গে। একান্ত আলাপনে তিনি বলেন, পুরানবাজার নদী ভাঙন প্রবণ এলাকা হওয়ার কারণে, কাঁচামালের তীব্র সংকট, ব্যাংক লোন না দেয়া /না পাওয়া ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে চেষ্টা থাকা সত্বেও ব্যবসায়ীরা লবণ ব্যবসায় এগুতে পারেনি। তাছাড়া, কাংখিত লাভও হচ্ছিল না। উর্পযুপরি লস/ লোকসান হচ্ছিল। হতাশ ও নিরাশ হয়ে লবণ ব্যবসায়ীরা একে একে তাদের লবণের ব্যবসা গুটিয়ে ফেলতে থাকেন। ফলে গত ৮/১০ বছরে লবণ শিল্প ও কারখানাগুলিতে তালা ঝুলছে। বেকার হয়ে গেছে হাজারো দিনমজুর। এরা আর সুদিন দেখবে বলে মনে হচ্ছে না। এসব লবণ মিল এখন পরিত্যক্ত বা গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আবার কবে লবণ শিল্প সমৃদ্ধ হবে বা আদৌ লবণ মিলগুলো আবার চালু হবে কি না-তা কেউ জানে না। এমনকি তাঁর নিজের লবণ মিলও বন্ধ ও পরিত্যক্ত।
আরও পড়ুন: ঋণ পেতে আইএমএফের শর্ত মেনে কাজ করছে সরকার
আরও ২০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিতে চিঠি
মোবাইল আর্থিক পরিষেবা প্রদানকারীরা সরাসরি আনতে পারবে রেমিটেন্স: বাংলাদেশ ব্যাংক
রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক মোবাইল আর্থিক পরিষেবা (এমএসএফ) প্রদানকারীদের অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্স আনার অনুমতি দিয়েছে।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, অনুমোদিত ডিলাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্বানুমতি ছাড়াই বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউসের সঙ্গে বন্দোবস্ত করতে পারবে।
অনুমোদিত ডিলারদের বাংলাদেশ দূতাবাস বা সংশ্লিষ্ট দেশের হাই কমিশন থেকে সুপারিশপত্র বা সনদপত্র ছাড়াই বন্দোবস্ত করার অনুমতি থাকছে।
আরও পড়ুন: মোবাইলে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন
প্রজ্ঞাপনের বলা হয়েছে, এমএফএস প্রদানকারীদের জন্য আরও বেশি সহজ করতে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে পরিষেবা প্রদানকারী, ব্যাংক, ডিজিটাল ওয়ালেট, কার্ড স্কিম ও বিদেশে আর্থিক পরিষেবা সমন্বয়কারীদের সঙ্গে মিলিতভাবে রেমিটেন্স উপার্জনকারীদের অর্থ দেশে পাঠানোর অনুমতি দেয়া হবে।
এই প্রেক্ষাপটে, এমএফএস প্রদানকারীদের অবশ্যই তাদের অ্যাকাউন্টে বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়ার জন্য বিদেশি পেমেন্ট ও সেটেলমেন্ট সিস্টেমের (পিএসপি) সঙ্গে স্থায়ী ব্যবস্থা থাকতে হবে এবং সমতুল্য অর্থ মজুরি উপার্জনকারীদের এমএফএস অ্যাকাউন্টে জমা হবে।
পরবর্তীকালে, বিদেশি পিএসপিগুলো মনোনীত ডিলারের নস্ট্রো অ্যাকাউন্টে ক্রেডিট প্রদান করবে (একটি অ্যাকাউন্ট যা একটি ব্যাংক অন্য ব্যাংকে
বৈদেশিক মুদ্রায় ধারণ করে)। টাকায় মজুরি পাওয়ার পর উপার্জনকারীরা সমস্ত লেনদেন করতে বিদেশ থেকে এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন।
যারা মোবাইল আর্থিক পরিষেবা প্রদান করতে চায় তাদেরকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ওপরে বর্ণিত ফ্রেমওয়ার্ক বা অনুরূপ সুবিধাজনক পদ্ধতি অনুসারে প্রস্তাবিত ব্যবস্থার বিবরণসহ বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগে আবেদন করতে হবে।
উদ্যোগটি ছোট পরিসরে পর্যালোচনার প্রাথমিকভাবে অনুমতি দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ২০১১ সালে এমএফএস চালু করে। তখন থেকেই পরিষেবাটি নিয়ে দেশে যথেষ্ট গুঞ্জন হয়েছে। বর্তমানে ১৩টি এমএফএস অপারেটর ১৮ কোটিরও বেশি অ্যাকাউন্ট হোল্ডারকে পরিষেবা প্রদান করছে, যারা প্রতিদিন প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা আদানপ্রদান করছে।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য আছে ১.৬৯ লাখ কোটি টাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক
জানুয়ারি থেকে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকবে না: বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর
ব্যাংকে তারল্য সংকট নেই, বলছে বিএবি
বেসরকারি ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকস (বিএবি) এক বিবৃতিতে বলেছে, বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে তারল্য সংকট নেই।
সোমবার দেয়া ওেই বিবৃতিতে বিএবি আরও বলেছে যে ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণা চলছে। কিন্তু এটা সত্য না; এতে আরও বলা হয়, ব্যাংকগুলোতে তারল্য স্থিতিশীল রয়েছে।
আরও পড়ুন: হালাল অ্যাক্রেডিটেশন স্কিম চালু করবে বিএবি
বিএবি ও এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে এক দশমিক ৭০ লাখ কোটি টাকার তারল্য অবশিষ্ট রয়েছে।যা প্রয়োজনের চেয়ে বেশি। বৈঠকে ব্যাংকিং খাতের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার পর বিএবি এ বিবৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ২৬ লাখ কম্বল দিল বিএবি
ঋণ পেতে আইএমএফের শর্ত মেনে কাজ করছে সরকার
আইএমএফ থেকে বাংলাদেশ সাড়ে ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা পেতে সংস্থাটির দেয়া শর্ত মেনে কাজ করছে সরকার।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈশ্বিক ঋণদাতার বোর্ড সভার আগে আর্থিক ও জ্বালানি খাতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) কর্তৃক নির্ধারিত কিছু শর্ত বাস্তবায়ন শুরু করেছে সরকার।
এর অংশ হিসেবে ঋণের সুদের সীমা শিগগিরই প্রত্যাহার করা হবে এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১২ শতাংশ কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে। যা বর্তমান গড় ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ রয়েছে।
রবিবার আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা ইউএনবিকে এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: জিডিপি প্রতিবেদন প্রতি ৩ মাসে হালনাগাদ করার পরামর্শ আইএমএফের
পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তিনি এবং অন্যান্য সূত্র এসব কথা বলেছেন, কারণ গণমাধ্যমের সঙ্গে তাদের কথা বলার অনুমতি নেই।
সরকার রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল এবং শ্রীলঙ্কার ঋণ বাদ দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হিসাব সংশোধন করেছে। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের (বিবি) গভর্নর বলেছেন যে মোট রিজার্ভ এখন ২৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
সূত্র জানায়, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি আইএমএফের অন্যতম শর্ত। তাই বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) সম্প্রতি বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বাড়িয়েছে। এটি বিতরণ কোম্পানিগুলোকে ভোক্তা পর্যায়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করেছে।
ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে আইএমএফের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠেয় বোর্ড সভায় বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের ঋণ অনুমোদনের কথা রয়েছে।
এর আগে সাড়ে চার বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়ে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে আইএমএফের একটি দল চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর ঢাকা সফর করেছেন।
দলটি অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, ন্যাশনাল বোর্ড অব রেভিনিউ(এনবিআর), বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন(বিএসইসি), বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং আরও কিছু সংস্থার সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছে।
ফলে ঋণের চূড়ান্ত অনুমোদনের আগেই এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ। বিশদভাবে বলতে গেলে, আইএমএফের দাবির মধ্যে ব্যাংকিং খাতে সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যার মধ্যে খেলাপি ঋণ হ্রাস করা, সরকারি ভর্তুকি ব্যয় হ্রাস এবং রাজস্ব খাতের সংস্কার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা ও গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এ প্রসঙ্গে ইউএনবিকে বলেন, ‘আইএমএফের শর্ত মেনে নেয়া উচিত। এগুলোর সঙ্গে কারো দ্বিমত করা ঠিক নয়।’
তিনি বলেন, ‘এবারের শর্তগুলো খুবই নমনীয়। আমরা যদি এগুলো মেনে নিতে না পারি, তাহলে বুঝতে হবে আমরা সমস্যার সমাধান করতে চাই না।’
আরও পড়ুন: আইএমএফ’র সঙ্গে বাংলাদেশের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক ঋণচুক্তি
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিলো আইএমএফ
আরও ২০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমতি দিতে চিঠি
বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে আরও ছয়টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির জন্য অনুমতি দিতে চিঠি দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে এ চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এতে ১৩ হাজার টন সিদ্ধ চাল এবং সাত হাজার টন আতপ চাল আমদানি করার কথা বলা হয়েছে।
চিঠিতে সই করেছেন খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মজিবর রহমান।
আরও পড়ুন: দেশের বাজারে ঊর্মি গ্রুপের নতুন পণ্য ‘টুর্যাগ অ্যাক্টিভ’
এতে বলা হয়েছে, এসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে উল্লেখিত পরিমাণ (সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ ভাংগাদানা বিশিষ্ট) সিদ্ধ চাল ও আতপ চাল আমদানির অনুমতি দেয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
চাল আমদানির শর্তে বলা হয়েছে, বরাদ্দ পাওয়া আমদানিকারকদেরকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সমুদয় চাল বাংলাদেশে বাজারজাত করতে হবে। আমদানি করা চালের পরিমাণ, গুদামজাত ও বাজারজাতকরণের তথ্য সংশ্লিষ্ট জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে অবহিত করতে হবে।
এছাড়া বরাদ্দের অতিরিক্ত আইপি ইস্যু করা যাবে না বলেও চিঠিতে শর্ত দেয়া হয়েছে।
বলা হয়েছে, আমদানি করা চাল সত্ত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠানের নামে ফের প্যাকেটজাত করা যাবে না এবং আমদানি করা বস্তায় চাল বিক্রি করতে হবে।
এর আগে প্রথম দফায় ৩০ জুন বেসরকারিভাবে চার লাখ ৯ হাজার টন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য ৯৫টি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছিল।
আর ৪ জুলাই দ্বিতীয় দফায় ১২৫টি প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ ৪৬ হাজার টন এবং তৃতীয় দফায় ৭ জুলাই ৬২টি প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ ৮২ হাজার টন সিদ্ধ ও আতপ চাল আমদানির জন্য অনুমতি দিতে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: ‘বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্সের জন্য ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়ন জরুরি’
আইএমএফের ৪৫০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে পাওয়া যাবে: অর্থমন্ত্রী
দেশের বাজারে ঊর্মি গ্রুপের নতুন পণ্য ‘টুর্যাগ অ্যাক্টিভ’
ঊর্মি গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ওয়েভ রাইডার্স লিমিটেডের নতুন পণ্য টুর্যাগ অ্যাক্টিভ উন্মোচন করা হয়েছে।
সম্প্রতি রাজধানীর বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে বিজিএমইএ কাপের ফাইনাল খেলা চলাকালীন সময়ে জমকালো এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে নতুন এ পণ্য উন্মোচন করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটির নতুন এ পণ্য প্রাথমিকভাবে কোম্পানির অনলাইন আউটলেটে পাওয়া যাবে।
অ্যাকটিভওয়্যার খেলাধুলা ও শরীরচর্চার জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় ও উপযুক্ত পোশাক। অ্যাথলেট ও যারা ফিট থাকতে ভালোবাসেন তাদের জন্য এ পোশাক মানানসই। অ্যাকটিভওয়্যার পড়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জিম ও অন্যান্য এক্সারসাইজ করা যাবে; পাশাপাশি, অ্যাকটিভওয়্যার দেখতেও স্টাইলিশ। এক্সারসাইজ করার সময় ছাড়াও ক্যাজুয়াল পরিবেশেও এ পোশাক চমৎকারভাবে খাপ খেয়ে নেয়।
প্রতিষ্ঠানটির নতুন এ পণ্য উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান। এছাড়াও, অনুষ্ঠানে ঊর্মি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ এবং বিজিএমইএ ও ঊর্মি গ্রুপের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে এডেলউইসের পণ্যের সমাহার নিয়ে এলো দ্য বডি শপ
স্থানীয় ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ঊর্মি গ্রুপ প্রতিনিয়ত বাজারে বিভিন্ন ধরনের পণ্য উন্মোচন করছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি তরুণ ও স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের জন্য নতুন পণ্য অ্যাক্টিভ ওয়্যার উন্মোচন করেছে যা টেকসই উপাদান দ্বারা তৈরি এবং পারফরম্যান্স বৃদ্ধিতে সহায়ক।
বিজিএমইএ এর সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক খাতের গুরুত্ব ও অবদান অপরিসীম। পোশাক রপ্তানির দিক থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম।
দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) খাতটির অবদান ১১ শতাংশ। এ অর্জনে আমাদের দেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি, তারা স্থানীয় মানুষের চাহিদা পূরণেও বিভিন্ন ধরনের পণ্য বাজারে নিয়ে আসছে। প্রতিষ্ঠানটি জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের নতুন পণ্য ‘টুর্যাগ অ্যাক্টিভ’ উন্মোচন করল।’
আরও পড়ুন: প্যারিস ফ্যাশন উইক: বেলা হাদিদের শরীরে জাদুকরী 'স্প্রে প্রিন্টেড' পোশাক
অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ এর পরিচালক ও ঊর্মি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ বলেন, ‘জীবনে সুস্থ্যভাবে বেঁচে থাকতে ও লক্ষ্য অর্জন করতে হলে শরীরচর্চা খুবই জরুরি। তাই, মানুষ যেন সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারে সে লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন ধরনের পণ্য বাজারে নিয়ে আসি। আামাদের নতুন এ পণ্যটিই এর প্রমাণ।
খেলাধুলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রফুল্ল থাকতে খেলাধুলা ও শরীরচর্চার বিকল্প নেই। তাই, আমাদের ব্যস্ত জীবনে সুযোগ পেলেই সবাইকে খেলাধুলা ও শরীরচর্চার প্রতি মনোযোগী হওয়া উচিত। এমন সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করার জন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
আরও পড়ুন: আমরা বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না, তবে রপ্তানি বাড়াতে চাই: বিজিএমইএ সভাপতি
‘বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্সের জন্য ডিজিটাল অবকাঠামোর উন্নয়ন জরুরি’
টেকসই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের জন্য বৈধ পথে আরও বেশি রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করার জন্য সুবিধাজনক ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার রাজধানীর ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত 'বৈধ চ্যানেল: ডিজিটাল প্লাটফর্মের প্রসপেক্টস' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় বক্তারা এই অভিমত দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার এবং বিশেষজ্ঞরা বৈদেশিক মুদ্রার ক্রমহ্রাসমান স্টক নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে আরও বেশি রেমিট্যান্স আকৃষ্ট করার জন্য আরও ভাল কৌশলের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ করেছেন।
আরও পড়ুন: বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স পাঠাতে ফি দিতে হবে না প্রবাসীদের
মান্নান বলেন, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষ যারা রেমিট্যান্স গ্রহণ করেন,তাঁদের ব্যাংকে গিয়ে লেনদেনের বিষয়ে এক ধরনের সামাজিক ও মনস্তাত্বিক দূরত্ব আছে। ফলে ঘরে বসেই অবৈধ পথে রেমিট্যান্স গ্রহণ করাকেও তাঁরা অপেক্ষাকৃত সহজ মনে করেন। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে যারা কাজ করছে তাদের সঙ্গে প্রবাসীদের দূরত্ব কমাতে না পারলে রেমিট্যান্স বাড়ানো যাবে না। এ জন্য সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে। এক্ষেত্রে ডিজিটাল মাধ্যম কার্যকারী ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে সপ্তাহে তিন দিন বিদেশের সঙ্গে লেনদেন বন্ধ থাকে। এ কারণে অনেকেই সুবিধাজনক বিকল্প হিসেবে হুন্ডিকে বেছে নিচ্ছেন।
মন্ত্রী বলেন, সরকার এসব ঐতিহ্য ভেঙে একটি ধারা শুরু করতে চায়। এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে।
পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, বৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে রেমিট্যান্স বাড়াতে ডলারের বিনিময় হার স্থিতিশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে।
তিনি বলেন, ‘অভিবাসী শ্রমিকরা হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠাতে বেশি আগ্রহী, যখন অবৈধ চ্যানেলগুলিতে ডলারের বিনিময় হারের পার্থক্য বৈধ উপায়ের চেয়ে বেশি হয়।’
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুল মওলা বলেন, দেশে প্রবাসীদের স্বজনদের কাছে টাকা পাঠানোর সমস্যা দূর হলে বিদ্যমান বৈদেশিক মুদ্রা ও রিজার্ভ সংকট মোকাবিলা করা সহজ হবে।
তিনি বলেন, 'ডিজিটাল পদ্ধতিতে রেমিট্যান্স পাঠানো সম্ভব হলে আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও সানেমের চেয়ারম্যান ড. বজলুল এইচ খোন্দকার এ বিষয়ে একটি মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক শারমিন নীলরমী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ও বিএফআইইউ'র সাবেক উপ-প্রধান ইস্কান্দার মিয়া, বিকাশ প্রধান পররাষ্ট্র ও করপোরেট বিষয়ক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) শেখ মো. মনিরুল ইসলাম এবং অর্থনীতিবিদ খোন্দকার শাখাওয়াত আলী প্রমুখ।
আরও পড়ুন: ডলারের অভিন্ন দাম: রেমিট্যান্সের জন্য সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা ও রপ্তানি আয়ের জন্য ৯৯ টাকা
২৫ আগস্ট পর্যন্ত ব্যাংকগুলোতে রেমিট্যান্স এসেছে ১.৭২ বিলিয়ন ডলার
আইএমএফের ৪৫০ কোটি ডলার ঋণের প্রথম কিস্তি ফেব্রুয়ারিতে পাওয়া যাবে: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল নিশ্চিত করেছেন যে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে সাড়ে ৪শ’ কোটি ডলার পাবে। এই ঋণের প্রথম কিস্তি সংস্থাটি আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে দিবে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
বুধবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইএমএফের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এ কথা জানান।
আইএমএফ জানিয়েছে, তারা এই ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছেছে। সফররত আইএমএফের একটি দল ও বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দুই সপ্তাহ ধরে আলোচনা বুধবার শেষ হওয়ার পর এই চুক্তি হয়।
ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৪শ’ কোটি ডলার নিশ্চিত করে কামাল বলেন, '২০২৬ সাল পর্যন্ত সাত কিস্তিতে এই ঋণ পাওয়া যাবে।’
‘আমি আশা করি, আইএমএফ আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসডিআর ৩৫২.৩৫ মিলিয়নের প্রথম কিস্তির অর্থ দিতে সক্ষম হবে। অবশিষ্ট ঋণ স্পেশাল ড্রয়িং রাইটসের (এসডিআর) অধীনে ২০২৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি ছয় মাসে এসডিআর ৫১৯ মিলিয়নের ছয়টি সমান কিস্তিতে পাওয়া যাবে,’ তিনি যোগ করেন।
আইএমএফের প্রতিটি সদস্য দেশের কোটার পরিমাণের ওপর ভিত্তি করে এসডিআর বরাদ্দ করা হয়। কোটার পরিমাণ যত বেশি হবে, একটি দেশ তত বেশি এসডিআর বরাদ্দ পাবে। সাধারণভাবে, শক্তিশালী অর্থনীতিতে উচ্চতর কোটা রয়েছে।
আরও পড়ুন: অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে বিশ্ব নেতাদের প্রতি অর্থমন্ত্রীর আহ্বান
অর্থমন্ত্রী বলেন, আইএমএফ মিশন তাদের কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী এ তথ্য জানিয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে ঋণ প্রস্তাবের সকল আনুষ্ঠানিকতা ও চূড়ান্ত বোর্ড অনুমোদন সম্পন্ন করা হবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সরকারি নথি অনুসারে, বর্ধিত ঋণ সুবিধার (ইসিএফ) আওতায় বাংলাদেশ সুদমুক্ত এসডিআর ৮২২ দশমিক ৮২ মিলিয়ন পাবে। বর্ধিত তহবিল সুবিধা (ইএফএফ) এর অধীনে একটি উন্মুক্ত (ফ্লোটিং) এসডিআর ১ শতাংশ সুদের হারে এসডিআর ১৬৪৫ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন পাবে। অন্যদিকে এসডিআর রেটের সঙ্গে শুন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ যোগ করে যা দাঁড়াবে তাই হবে রেজিলিয়েন্স ট্রাস্ট ফ্যাসিলিটি বা আরসিএফের ১০০ কোটি ডলার ঋণের সুদহার।
কামাল বলেন, সারা বিশ্বের অর্থনীতি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সমস্ত উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশে অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে। ডলারের তুলনায় প্রায় সব দেশের মুদ্রার অবমূল্যায়ন হয়েছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলেছে বলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে গেছে।
তিনি বলেন, 'আমরা আইএমএফকে এই অস্থিতিশীলতা যাতে সংকটে পরিণত না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য একটি পূর্বনির্ধারিত পদক্ষেপ হিসেবে ঋণের জন্য অনুরোধ করেছি। এর আগেও বেশ কয়েকবার তাদের সঙ্গে দেখা হয়েছে। আমরা চলমান ঋণ আলোচনা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি।’
সফররত আইএমএফ টিম বাংলাদেশ সরকারের সকল স্টেকহোল্ডারদের, বিশেষ করে আর্থিক খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করেন।
‘তারা (আইএমএফ) আমাদের বলেছে, আমাদের সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা অন্যান্য অনেক দেশের চেয়ে ভালো। আইএমএফ টিম আমাদের চলমান অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে একমত হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা চার বছরের জন্য ঋণ কর্মসূচি নিতে যাচ্ছি,’ বলেন কামাল।
চলতি বছরের জুলাই মাসে ঢাকা ঋণ চাওয়ার পর ঋণের আবেদন নিয়ে আলোচনা করতে এবং অর্থনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে ওয়াশিংটনভিত্তিক বৈশ্বিক ঋণদাতার প্রতিনিধি দল গত ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশে আসে।
এটি আইএমএফের কাছ থেকে চাওয়া বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পরিমাণ ঋণ। কারণ কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে।
সফরকালে আইএমএফের দলটি অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, বিদ্যুৎ বিভাগ, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ), ইআরডি, এনবিআর, বিডা এবং অন্যান্য আর্থিক সংস্থার সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করে।
আরও পড়ুন: বৈদেশিক মুদ্রার হার বাজারভিত্তিক করা হবে: অর্থমন্ত্রী
বিদ্যুৎ ও পেট্রোলিয়ামের দাম বাড়াতে আইএমএফের কোনো প্রস্তাব পাইনি: অর্থমন্ত্রী
আইএমএফ’র সঙ্গে বাংলাদেশের সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের প্রাথমিক ঋণচুক্তি
আইএমএমএফ থেকে বাংলাদেশের চাওয়া ঋণের বিষয়ে বুধবার একটি প্রাথমিক চুক্তি হয়েছে।
বাড়তি ঋণ সুবিধা এবং বাড়তি তহবিল সুবিধার অধীনে প্রায় তিন দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং সেইসঙ্গে স্থিতিস্থাপকতা এবং স্থায়িত্বের অধীনে এক দশমিক তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার সুবিধা দিতে ৪২ মাসের জন্য আইএমএফ প্রতিনিধিদল এবং বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ দেশের অর্থনৈতিক নীতিগুলোকে সহযোগিতা করতে এই প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছে।
আইএমএফের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নতুন তহবিল-সমর্থিত কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা এবং দুর্বলদের রক্ষা করার পাশাপাশি শক্তিশালী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ইতিবাচক উন্নয়নকে সহযোগিতা করা।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সক্ষমতা বৃদ্ধির পরামর্শ দিলো আইএমএফ
স্থিতিস্থাপকতা এবং স্থায়িত্ব সুবিধা (আরএসএফ) বাংলাদেশের জলবায়ু বিনিয়োগের চাহিদাকে সমর্থন করতে, জলবায়ু অর্থায়নকে অনুঘটক করতে এবং আমদানি-নিবিড় জলবায়ু বিনিয়োগ থেকে অর্থপ্রদানের ভারসাম্যের চাপ কমাতে সাশ্রয়ী, দীর্ঘমেয়াদী অর্থায়ন প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে, রাহুল আনন্দের নেতৃত্বে একটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) মিশন বাংলাদেশের জন্য আইএমএফ-এর সমর্থন এবং কর্তৃপক্ষের ব্যাপক অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করতে চলতি বছরের ২৬ অক্টোবর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা সফর করে।
মিশন শেষে, রাহুল আনন্দ নিম্নলিখিত বিবৃতি দেন:
‘বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ এবং আইএমএফ টিম প্রায় তিন দশমিক দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার (এসডিআর দুই দশমিক পাঁচ বিলিয়ন, কোটার ২৩১ দশমিক ৪ শতাংশের সমতুল্য) ৪২ মাসের নতুন ইসিএফ বা ইএফএফ ব্যবস্থার অধীনে কর্তৃপক্ষের সংস্কার নীতিগুলোকে সমর্থনের জন্য একটি কর্মী পর্যায়ের চুক্তিতে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে সংঘটিত আএসএফ ব্যবস্থার প্রায় এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলার (এসডিআর এক বিলিয়ন, কোটার ৯৩ দশমিক ৮০ শতাংশের সমতুল্য)।
‘নতুন ইসিএফ বা ইএফএফ ব্যবস্থার লক্ষ্য হলো সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করা এবং দুর্বলদের রক্ষায় বিঘ্নিত সমন্বয় প্রতিরোধ করা, যেখানে শক্তিশালী অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং ইতিবাচক উন্নয়নকে সহযোগিতার জন্য কাঠামোগত পরিবর্তনে জোর দেয়া। বাংলাদেশের বৃহৎ জলবায়ু অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তা প্রতিফলিত করে, সমসাময়িক আরএসএফ। যা ইসিএফ বা ইএফএফ -এর অধীনে উপলব্ধ সংস্থাগুলোর পরিপূরক করে। অন্যান্য অর্থায়নের অনুঘটকসহ কর্তৃপক্ষের পরিকল্পনায় চিহ্নিত জলবায়ু অগ্রাধিকারগুলোর অর্থায়নের জন্য আর্থিক খাতকে প্রসারিত করে এবং জলবায়ুর আমদানি বিনিয়োগের বাহ্যিক চাপ হ্রাস করবে।আশা করা হচ্ছে আগামী সপ্তাহে কর্মকর্তা-পর্যায়ের চুক্তিটি আইএমএফ ব্যবস্থাপনার অনুমোদন এবং নির্বাহী বোর্ডের অনুমোদনের জন্য পেশ করা হবে।
বিবৃতিতে যোগ করা হয়েছে, ‘মহামারি থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে চলতি হিসাবের ঘাটতি তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের দ্রুত পতন, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি এবং প্রবৃদ্ধি মন্থর হয়েছে।’
আরও পড়ুন: নিরাপদ রিজার্ভ গড়ে তুলতে আইএমএফ এর ঋণ দরকার: বাণিজ্যমন্ত্রী
মর্যাদা ক্ষুন্ন হলে বাংলাদেশকে আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার দরকার নেই: এফবিসিসিআই
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঋণের সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংক (বিবি) এক নির্দেশনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ঋণের সীমা প্রত্যাহার করেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ৫ বছরের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে পারবে।
মঙ্গলবার ব্যাংকিং প্রবিধান ও নীতি বিভাগের পরিচালক মো. আলী আকবর ফরাজি এ সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তেলের দাম বৃদ্ধির মধ্যে বাংলাদেশ গ্যাস-ভিত্তিক এবং ডিজেল-চালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য সংগ্রাম করছে।
এতে বলা হয়েছে, জমি ক্রয়, যন্ত্রপাতি আমদানি ও ক্রয়, যন্ত্রপাতি স্থাপন সংক্রান্ত ব্যয় এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের রক্ষণাবেক্ষণসহ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য ব্যাংকগুলো প্রয়োজনীয় ঋণ দিতে পারে।
ফলে ব্যাংক ঋণ পেতে সংরক্ষিত মূলধনের ২৫ শতাংশ ঋণ দেয়ার হিসাব আগামী পাঁচ বছর কার্যকর হবে না।
জুলাই মাসে ছয় মাসের জন্য এ নির্দেশনা দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।