%E0%A6%8F%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
আফগানিস্তানে ভয়াবহ বিস্ফোরণে ১৬ জন আহত
আফগানিস্তানের বাঘলান প্রদেশে একটি ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছে। শনিবার খামা প্রেস এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর আফগানিস্তানের বাঘলান প্রদেশের পোল-খোমরি শহরে এই বিস্ফোরণ ঘটে।
আহতদের চিকিৎসার জন্য স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আফগান গণমাধ্যমের তথ্যানুসারে তালেবান কর্মকর্তারা এখনও বিস্ফোরণের বিষয়ে মন্তব্য করেনি এবং কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী দায় স্বীকার করেনি।
দেশজুড়ে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে, যার জন্য ইসলামিক স্টেট বা দায়েশ এর আগে দায় স্বীকার করেছে।
তালেবান ২০২১ সালের আগস্টে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর, আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা বড়েছে।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে ভয়াবহ পঙ্গপালের বিষয়ে সতর্কতা জারি জাতিসংঘের
আফগানিস্তানে ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্প
আফগানিস্তানে জ্বালানি ট্যাঙ্কার টানেলে বিস্ফোরণ, নিহত ১৯
শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পূর্ব জাপান, সুনামির সতর্কতা নেই
একটি শক্তিশালী ভূমিকম্পে শুক্রবার টোকিও এবং পূর্ব জাপানের অন্যান্য এলাকা কেঁপে ওঠে, তবে সুনামির কোনো সতর্কতা জারি করা হয়নি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানিয়েছে, ৬ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পটি চিবা উপদ্বীপের পূর্ব উপকূলে ৪৪ দশমিক ৫ কিলোমিটার (২৮ মাইল) গভীরতায় কেন্দ্রীভূত হয়েছিল।
চিবা ও ইবারাকি প্রিফেকচারে শক্তিশালী কম্পনের খবর পাওয়া গেছে, কিন্তু ইউএসজিএস বলেছে যে গুরুতর ক্ষতি বা প্রাণহানির সম্ভাবনা কম।
কিয়োডো নিউজ সার্ভিস জানিয়েছে, ইবারাকির টোকাই নং ২ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে কোনো সমস্যা দেখা যায়নি।
৫ মে মধ্য জাপানে একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে, এতে অন্তত একজন নিহত এবং ২০ জনেরও বেশি আহত হয়।
জাপান বিশ্বের অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। দেশটির উত্তর-পূর্বে ২০১১ সালের একটি বিশাল ভূমিকম্পের ফলে একটি বিধ্বংসী সুনামি হয় এবং পারমাণবিক প্ল্যান্ট গলে যায়।
আরও পড়ুন: প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ৭.৭ মাত্রার ভূমিকম্প, ভানুয়াতুতে ছোট সুনামি
জাপানে শক্তিশালী ভূমিকম্প, সুনামির আশঙ্কা নেই
নিউজিল্যান্ডে ৭.২ মাত্রার ভূমিকম্পের আঘাত
রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ জাপানের, বেলারুশে পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েন চুক্তির সমালোচনা
ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জাপান। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে রয়েছে কয়েক ডজন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর সম্পদ জব্দ করা এবং রাশিয়ান সামরিক-সম্পর্কিত সংস্থাগুলোতে রপ্তানি নিষিদ্ধ করা।
শুক্রবার এই নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন করে জাপান।
দেশটির মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিরোকাজু মাতসুনো সাংবাদিকদের বলেন, মন্ত্রিসভার অনুমোদন অনুযায়ী রাশিয়ার বিরুদ্ধে জাপানের নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত ও জোরদার করার জন্য গত সপ্তাহে হিরোশিমায় তাদের শীর্ষ সম্মেলনের সময় সম্মত হওয়া গ্রুপ অব সেভেনের বাকি অংশের সঙ্গে এক ধাপ এগিয়েছে।
তিনি বলেন, ইউক্রেনের ‘পরিস্থিতির উন্নতি করতে’ অন্যান্য জি-৭ দেশ এবং বৃহত্তর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ জাপান।
মাতসুনো বৃহস্পতিবার রাশিয়া এবং বেলারুশের মধ্যে একটি চুক্তি সইয়ের তীব্র সমালোচনা করেছেন যেটি ‘আরো উত্তেজনা বৃদ্ধি’ হিসাবে তার মিত্র অঞ্চলে মস্কোর কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্র মোতায়েনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছে।
মাতসুনো বলেছেন, ‘বিশ্বের একমাত্র দেশ হিসেবে পারমাণবিক হামলার শিকার হয়েছে জাপান। এজন্য রাশিয়ার পারমাণবিক অস্ত্রের হুমকি এবং তাদের ব্যবহার একেবারেই অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করে জাপান।’ ‘জাপানের সরকার রাশিয়া এবং বেলারুশের কাছে এমন পদক্ষেপ বন্ধ করার দাবি করে যা উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তোলে, কারণ আমরা দৃঢ় উদ্বেগের সঙ্গে উন্নয়ন পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ৩টি তেল শোধনাগারের নিয়ন্ত্রণ নিল জার্মানি
মাতসুনো বলেছেন, জাপানের অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা এবং রপ্তানি নিষেধাজ্ঞাগুলো তৃতীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞাগুলো ফাঁকি দেওয়া রোধ করতে জি-৭ এর লক্ষ্যকে প্রতিফলিত করে এবং রাশিয়ার শিল্প ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে এমন সামগ্রী রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা অন্তর্ভুক্ত করে।’
পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের যৌথভাবে জারি করা একটি বিবৃতিতে, নিষেধাজ্ঞা এড়ানো এবং এড়ানোর অভিযোগে সহায়তা করেছিল সেই গুলোসহ ২৪ ব্যক্তি এবং ৭৮টি সংস্থাকে সম্পদ জব্দ করা বিষয়ক তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে।
জাপান মেশিনারি প্রস্তুতকারকসহ রাশিয়ার সামরিক-সম্পর্কিত ৮০টি প্রতিষ্ঠানের উপর রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাশিয়ার জন্য নির্মাণ, প্রকৌশল এবং অন্যান্য পরিষেবার বিধানও নিষিদ্ধ করা হবে।
এশিয়ায় সংঘাতের প্রভাব নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধের কারণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার জন্য জাপান জি-৭ এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সহযোগিতা করছে, যেখানে চীন তার সামরিক উপস্থিতি প্রসারিত করছে এবং স্ব-শাসিত তাইওয়ানের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োগের জন্য শক্তি প্রয়োগের হুমকি দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত, স্বাক্ষর করলেন পুতিন
ইমরান খানের নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে: পাকিস্তানের গণমাধ্যম
পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) প্রধান এবং পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানেন নাম নো-ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের একটি গণমাধ্যমের বরাতে ভারতের গণমাধ্যম এএনআই এ তথ্য জানিয়েছে।
সূত্রের বরাত দিয়ে পাকিস্তান ডেইলি টুইট জানিয়েছে, ‘আইকে (ইমরান খান) নো ফ্লাই লিস্টে যোগ করা হয়েছে।’
পাকিস্তান ডেইলি দেশটির একটি ডিজিটাল নিউজ পোর্টাল, যা প্রধানত পাকিস্তানের রাজনৈতিক আপডেট সম্পর্কে রিপোর্ট করে।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে মুক্তির নির্দেশ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের
তবে ইমরান খানকে নো-ফ্লাই তালিকায় যুক্ত করার বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা পাওয়া যায়নি।
ডন জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন যে সরকার ৯মে সংঘটিত ঘটনার জন্য পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে।
ইসলামাবাদে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় খাজা আসিফ বলেন, ‘এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে অবশ্যই পর্যালোচনা চলছে।’
ডন জানায়, তিনি (খাজা আসিফ) ৯মে পাকিস্তানজুড়ে সামরিক স্থাপনায় ভাঙচুরকে পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানের করা পরিকল্পনা অনুযায়ী ‘সমন্বিত হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন।
এর আগে, ডন জানিয়েছে যে পুলিশ বিভাগ প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলির তিনজন প্রাক্তন সদস্যসহ ২৪৫ জন পিটিআই কর্মীর নাম ফেডারেল সরকারের কাছে প্রভিশনাল ন্যাশনাল আইডেন্টিফিকেশন লিস্টে (পিএনআইএল) অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পাঠিয়েছে, যাতে তারা দেশ ছেড়ে যেতে না পারে।
ডন বৃহস্পতিবার লিখেছে, রাওয়ালপিন্ডি জেলা পুলিশ তাদের ওয়ান্টেড তালিকায় প্রায় ৩১৯ জনের নাম দিয়েছে এবং ফেডারেল তদন্ত সংস্থার (এফআইএ) হেফাজতে থাকা ২৪৫ জন পিটিআই কর্মীর নাম পাঠিয়েছে। বাকি ৭৪ জনকে এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি।
ডন পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান মিডিয়া হাউস, যা পাকিস্তান সম্পর্কিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলো রিপোর্ট করে।
ডন জানিয়েছে, মঙ্গলবার লাহোর পুলিশ ৭৪৬ পিটিআই নেতার বিদেশ ভ্রমণে এক মাসের নিষেধাজ্ঞা আরোপের লক্ষ্যে নো-ফ্লাই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিল। রাওয়ালপিন্ডি পুলিশের অনুরোধের পরে, তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এমন পিটিআই কর্মীদের মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৯১।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে ২ সপ্তাহের জামিন দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট
ডন একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে লিখেছে, পিএনআইএল-এর অধীনে পুলিশের ওয়ান্টেড তালিকায় থাকা ব্যক্তিদের ৩০ দিনের জন্য দেশের বাইরে যেতে বাধা দেওয়া হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মামলা পর্যালোচনা করে পুলিশ ৯ মে সহিংসতার সময় ও পরে আটক ২৪৫ জনের নাম চূড়ান্ত করেছে। বিমান, স্থল বা সমুদ্রপথে তাদের ভ্রমণ সীমিত করার জন্য এই নামগুলো এফআইএ-তে পাঠানো হয়েছিল।
ডনের প্রতিবেদন অনুসারে, যাদেরকে পুলিশ এখনও খুঁজছে, কিন্তু এখনও গ্রেপ্তার করা হয়নি তাদের মধ্যে রয়েছেন- পিটিআই-এর সাবেক এমপি রশিদ হাফিজ, শেখ রশিদের ভাগ্নে; ফাইয়াজুল হাসান চোহান, যিনি আগে গ্রেপ্তার হয়ে পরে মুক্তি পেয়েছিলেন এবং উমর তানভীর বাট।
ডন জানিয়েছে, ফেডারেল সরকারকে দেওয়া তথ্যানুসারে জানানো হয়েছে যে জিএইচকিউতে হামলার সঙ্গে জড়িত ৩১ জন সন্দেহভাজনকে আরএ বাজার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে, পুলিশের তালিকায় ২৭ জন ওয়ান্টেড রয়েছে।
ভিডিও ক্লিপ, সিসিটিভি ফুটেজ, গোয়েন্দা তথ্য এবং জিও-ফেন্সিংয়ের মাধ্যমে সহিংস বিক্ষোভে জড়িত পিটিআই সমর্থকদের চিহ্নিত করার পরে পুলিশ অস্থায়ী ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব করেছিল।
নগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (সিপিও) সৈয়দ খালিদ হামদানীর তত্ত্বাবধানে পুলিশের তদন্ত দল জিএইচকিউ হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ১০৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে এবং ২৩ জনের শনাক্তকরণ প্যারেড সম্পন্ন হয়েছে।
ডন জানিয়েছে, ৯ মে সহিংসতার ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই বিষয়ে, পুলিশ সন্ত্রাসবিরোধী আইনের (এটিএ) ধারা ৭ এর অধীনে নথিভুক্ত সন্ত্রাস-সম্পর্কিত মামলাগুলোর তদন্ত করার জন্য একটি যৌথ তদন্ত দল (জেআইটি) গঠন করার জন্য পাঞ্জাব স্বরাষ্ট্র বিভাগকেও অনুরোধ করেছে।
এসব ঘটনায় জড়িত সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
এদিকে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে পুলিশের দুটি পৃথক দল, প্রতিটি পুলিশ সুপারের তত্ত্বাবধানে, পাঞ্জাব এবং কেপি থেকে পিটিআই নেতা ও কর্মীদের গ্রেপ্তারের জন্য গঠন করা হয়েছে।
ক্যাপিটাল পুলিশ পিটিআই নেতাদের নাম পিএনআইএল এবং এক্সিট কন্ট্রোল লিস্টে (ইসিএল) রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছেও অনুরোধ করেছে, যারা ২০২২ ও ২০২৩ সালের মে মাসে সহিংসতার জন্য তাদের বিরুদ্ধে নথিভুক্ত করা মামলার সঙ্গে জড়িত।
আরও পড়ুন: কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে ইমরান খান
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পৌঁছেছেন জি২০ প্রতিনিধিরা
চীন ও পাকিস্তানের আপত্তিকে অগ্রাহ্য করে ভারত আয়োজিত একটি পর্যটন সভায় অংশ নিতে ২০টি দেশের প্রতিনিধি সোমবার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে পৌঁছেছেন।
২০১৯ সালে নয়াদিল্লি মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলটির আধা-স্বায়ত্তশাসন কেড়ে নেওয়ার পর থেকে সোমবারের এই বৈঠকটি কাশ্মীরের প্রথম উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক ঘটনা।
সভায় প্রতিনিধিরা সবুজ পর্যটন এবং ভ্রমণ ব্যবস্থাপনার মতো বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
সোমবার এই অঞ্চলের প্রধান শহর শ্রীনগরের রাস্তাগুলোকে পরিস্কার করা হয়েছে, বেশিরভাগ নিরাপত্তা চেকপয়েন্ট অপসারণ করা হয়েছে বা জি২০ সাইনবোর্ড দিয়ে তৈরি কিউবিকলের মতো নিরাপত্তা পোস্ট দিয়ে ছদ্মবেশ তৈরি করা হয়েছে, যার পিছনে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা দাঁড়িয়ে আছেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অনুষ্ঠানের জন্য শত শত কর্মকর্তাকে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যেটিকে তারা ‘অদৃশ্য পুলিশিং’ বলে অভিহিত করেছেন।
বিভিন্ন বাণিজ্য প্রতিনিধি এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈঠকের পরে শহরের কেন্দ্রস্থলের দোকানগুলোও স্বাভাবিকের চেয়ে আগে খোলা হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ সম্মেলন কেন্দ্রের প্রধান রাস্তা দিয়ে বেসামরিক যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে এবং শহরের অনেক স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে।
সোমবারের এসব চিত্র শ্রীনগরের সাধারণ দিনগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার চেয়ে সম্পূর্ণ বিপরীত।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে জি২০ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক: পার্শ্ব বৈঠক করবেন মোমেন
দেখা যায় পানিতে রাবার বোটে টহলরত অভিজাত নৌ কমান্ডোদের সঙ্গে শ্রীনগরের ডাল লেকের তীরে অনুষ্ঠানস্থলের চারপাশে একটি বিশাল নিরাপত্তা কর্ডন স্থাপন করা হয়েছে।
শহরের বাণিজ্যিক কেন্দ্রটি যেন জেগে উঠেছে, লেকসাইড কনভেনশন সেন্টারের দিকে যাওয়ার রাস্তা ও বিদ্যুতের খুঁটিগুলো ভারতের জাতীয় পতাকার রঙে আলোকিত করা হয়েছে।
জি২০-এর জন্য ভারতের প্রধান সমন্বয়কারী হর্ষবর্ধন শ্রিংলা রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি অনন্য বৈঠকের আয়োজন করেছি।’
তিনি বলেন, এই বছরের শুরুর দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও গুজরাট রাজ্যে অনুষ্ঠিত আগের পর্যটন সভাগুলোর তুলনায় এই অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ বিদেশি প্রতিনিধি থাকবে।
গত সপ্তাহে ভারতের কাশ্মীরে জি২০ সম্মেলন আয়োজন নিয়ে জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিবেদক ফার্নান্ড ডি ভারেনেস বলেছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরে যা চলছে, তার আন্তর্জাতিক অনুমোদনের জন্যই ভারত সেখানে জি-২০ সম্মেলন করতে চাইছে।
তিনি বলেন, এই সভার প্রতিনিধিরা ‘স্বাভাবিকতার মুখোশ’ পড়ে থাকবেন, অন্যদিকে এই অঞ্চলে ‘ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন’ অব্যাহত থাকবে।
জেনেভায় জাতিসংঘে ভারতের মিশন এই বিবৃতিটিকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘অযৌক্তিক অভিযোগ’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভারতের পর্যটন সচিব অরবিন্দ সিং শনিবার সাংবাদিকদের বলেছেন, বৈঠকটি ‘শুধু পর্যটনের জন্য তাদের (কাশ্মীরের) সম্ভাবনা প্রদর্শনের জন্য নয়, এছাড়া বিশ্ববাসীকে এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও স্বাভাবিকতা পুনরুদ্ধার সম্পর্কে জানানোও এর লক্ষ্য।’
এই অঞ্চলটি বিশ্বের সবচেয়ে সংঘাতময় সামরিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। স্বাধীনতা বা পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হওয়ার চেষ্টা করে ১৯৮৯ সালে এই অঞ্চলে একটি সহিংস বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহ শুরু হয়েছিল। ভারত নৃশংসভাবে এই বিদ্রোহের জবাব দিয়েছে এবং সংঘর্ষে কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক, সেনা ও বিদ্রোহী নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: জি২০ অর্থমন্ত্রীদের 'সবচেয়ে নাজুক মানুষদের' দিকে মনোনিবেশ করার আহ্বান মোদির
২০১৯ সালে নয়াদিল্লি সরাসরি নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলে ভারতের কর্তৃত্ব বৃদ্ধি পায়।
তারপর থেকে এই অঞ্চলের জনগণ এবং এর গণমাধ্যম অনেকাংশে চুপ হয়ে গেছে। কঠোর সন্ত্রাস বিরোধী আইনের অধীনে কর্তৃপক্ষ বেশ কয়েকটি বাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে এবং শতাধিক লোককে গ্রেপ্তার করেছে।
সরকার বলেছে, একটি ‘সন্ত্রাস ইকোসিস্টেম’ বন্ধ করার জন্য এই ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন।
এছাড়া, কর্তৃপক্ষ নতুন নতুন আইনও প্রণয়ন করেছে।
বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি নিয়ে গঠিত জি২০-এর একটি রোলিং প্রেসিডেন্সি রয়েছে এবং প্রতিবছর বিভিন্ন সদস্য তাদের অগ্রাধিকার নির্ধারণ করে। ভারত ২০২৩ সালে গ্রুপ পরিচালনা করছে।
ভারত ২০১৯ সালের সিদ্ধান্তের পর থেকে শান্তির প্রতীক হিসেবে কাশ্মীরে পর্যটনের প্রসার করছে। তবে হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত এই অঞ্চলটি কয়েক দশক ধরে শুধুমাত্র একটি প্রধান অভ্যন্তরীণ পর্যটন গন্তব্য। লাখ লাখ দর্শনার্থী প্রতিবছর কাশ্মীরে আসেন এবং সর্বব্যাপী নিরাপত্তা চৌকি, সাঁজোয়া যান এবং টহলরত সৈন্যদের দ্বারা আবৃত এক অদ্ভুত শান্তি উপভোগ করেন!
কাশ্মীরের অর্থনীতির মূল ভিত্তি এখনও কৃষি, এই অঞ্চলের জিডিপিতে পর্যটন শিল্পের অবদান মাত্র ৭ শতাংশ।
প্রতিবেশি চীন এই অনুষ্ঠানটি বয়কট করেছে এবং পাকিস্তান কাশ্মীরের শ্রীনগরে এই বৈঠক আয়োজনের জন্য নয়াদিল্লির নিন্দা করেছে।
উভয়ের যুক্তি, বিতর্কিত অঞ্চলে এই জাতীয় বৈঠক করা উচিত না।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে ভারত বলেছে, তারা (পাকিস্তান) জি২০ এর সদস্য পর্যন্ত নয়, তাই তাদের এ ধরনের নিন্দা অবান্তর।
ঘূর্ণিঝড় মোখায় সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা ১৪৫: মিয়ানমার
মিয়ানমারে আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ১৪৫ জনে পৌঁছেছে, যার মধ্যে ১১৭ জন মুসলিম রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু সদস্য। শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এ তথ্য জানিয়েছে।
টেলিভিশনের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে মৃতের এই তথ্য পাওয়া গেছে। ঘূর্ণিঝড় মোখায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাখাইন। তবে দেশের অন্যান্য অংশে ঝড়ের কারণে কতজনের মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যোগাযোগের অসুবিধা এবং স্বাধীন তথ্যপ্রবাহের ওপর সামরিক সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণের কারণে ঘূর্ণিঝড়ে হতাহতের হিসাব ধীরগতিতে হচ্ছে।
সামরিক সরকার জানায়, অনানুষ্ঠানিকভাবে মৃতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়ানোর তথ্যটি মিথ্যা।
তবে স্বাধীনভাবে নিশ্চিতকরণের অভাবে হতাহতের এবং ধ্বংসের প্রকৃত পরিমাণ সম্পর্কে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
দুর্বল হওয়ার আগে মোখা প্রতি ঘন্টায় ২০৯ কিলোমিটার (১৩০ মাইল) বেগে রবিবার বিকালে রাখাইন রাজ্যের সিটাওয়ে শহরের কাছের স্থলভাগে আঘাত হানে।
এই ঘূর্ণিঝড়টি অন্তত এক দশকের মধ্যে দেশটির সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক দুর্যোগ। এর ফলে আকস্মিক প্রবল বন্যা, বিদ্যুৎ বিভ্রাট, প্রবল বাতাসে ভবনের ছাদ ভেড়ে পড়া এবং সেলফোন টাওয়ারগুলো ভেঙে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয়ের কার্যালয় (ওসিএইচএ) জানিয়েছে, ‘ধ্বংসাবশেষ সড়ানো এবং ঘূর্ণিঝড়ে বাস্তুচ্যূতদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য এখন ব্যাপক প্রচেষ্টা চলছে।’
তারা আরও জানিয়েছে, ‘রাখাইন উপকূলে ঘূর্ণিঝড় সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে এবং উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল জুড়ে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে এবং কাচিনেও (রাজ্য) কিছু ক্ষয়ক্ষতিরও খবর পাওয়া গেছে।’
এমআরটিভি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের শুক্রবারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাখাইনে ১১৭ জন রোহিঙ্গা ছাড়াও চার সেনা এবং ২৪ জন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হয়েছেন। ঝড় আঘাত হানার আগে কর্তৃপক্ষের সতর্কতা সত্ত্বেও তারা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে অস্বীকার করাকে তাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী করা হয়েছে।
এমআরটিভি জানিয়েছে, কর্তৃপক্ষ গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সিটাওয়েসহ ১৭টি টাউনশিপের ১৭টি ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া এক লাখ ২৫ হাজার ৭৮৯ রোহিঙ্গার মধ্যে ৬৩ হাজার ৩০২ জনকে সরিয়ে নিয়েছে।
এর প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ‘বাঙালি’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সরকারিভাবে সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর সদস্যদের অবৈধ অভিবাসী হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে।
রোহিঙ্গারা প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করে আসছে, তবে তারা মিয়ানমারে সরকারিভাবে সংখ্যালঘু হিসেবে স্বীকৃত নয় এবং নাগরিকত্ব ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার থেকে তারা বঞ্চিত।
ঝড়ের কবলে পড়া রোহিঙ্গারা বেশিরভাগই জনাকীর্ণ বাস্তুচ্যুত শিবিরে বসবাস করত। মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নেতৃত্বে ২০১৭ সালের একটি নৃশংস ‘বিদ্রোহী বিরোধী অভিযানে’ তাদের বাড়িঘর হারানোর পরে তারা ওই স্থানে স্থানান্তরিত হয়েছিল। রবিবার ঝড়ের তাণ্ডবে নিচু জমিতে তাদের অস্থায়ী বাসস্থানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২০১৭ সালে এখানকার সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশি বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে পালিয়ে এসেছিল। বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শিবিরগুলো ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হলেও কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
ওসিএইচএ-এর প্রতিবেদনে ঝড়ের জন্য মৃতের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি, তবে বলা হয়েছে যে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিসহ হতাহত এবং নিখোঁজ ব্যক্তিদের এখনও তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।
ক্যাম্পে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের জন্য হেডওয়ে শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক থেইন শোয়ে শুক্রবার বলেছেন, ৩২ শিশু এবং ৪৬ জন নারীসহ ১৫টি ক্যাম্প ও গ্রামের অন্তত ১১৬ জনের লাশ দাফন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কেউ কেউ ঝড়ের আগে নিজ বাড়ি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে, এ তথ্য সঠিক।
যদিও কর্তৃপক্ষ কিছু খাদ্য ও বাসস্থান সহায়তা দিয়েছে, তকে আরও অনেক সহায়তা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং বেসরকারি দাতাদের কাছ থেকে এখনও সাহায্য আসেনি।
থেইন শোয়ে বলেছেন, ‘কর্তৃপক্ষ যদি শিগগিরই আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে প্রবেশের অনুমোদন দেয়, তাহলে এখানকার রোহিঙ্গারা দ্রুত সাহায্য পাবে। যদি প্রবেশের অনুমোদন সীমিত হয়, তাহলে এখানকার মানুষদের আরও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
ওসিএইচএ বলেছে, স্বাস্থ্য ও নিরাপদ পানি নিশ্চিত করার জন্য জ্বালানির সরবরাহ জরুরি।
সংস্থাটি আরও জানায়, কয়েক দশকের গৃহযুদ্ধের ফলে মিয়ানমারে ‘বিশুদ্ধ পানির সরবরাহ একটি উদ্বেগের বিষয়। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনের মধ্যে রয়েছে-আশ্রয়, খাদ্য সহায়তা, চিকিৎসা সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা। এছাড়া প্লাবিত এলাকায় জলবাহিত রোগের বিস্তার এবং ল্যান্ডমাইন চলাচলের বিষয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।’
তারা আরও বলে, ‘ক্ষতিগ্রস্ত জনসংখ্যার জন্য নিরবচ্ছিন্ন মানবিক সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
রাখাইন রাজ্যের মুখপাত্র এবং অ্যাটর্নি-জেনারেল হ্লা থেইন বৃহস্পতিবার বলেছেন, স্থানীয় বা আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাহায্য পাঠানোর ওপর কোনও বিধিনিষেধ নেই।
তবে এতথ্যের সত্যতা স্বাধীনভাবে নিশ্চিত করা যায়নি।
২০০৮ সালে মিয়ানমারে আঘাত হানান ঘূর্ণিঝড় নার্গিস ইরাবতি নদীর ব-দ্বীপের আশেপাশের জনবহুল এলাকাগুলোকে বিধ্বস্ত করে। সেসময় কমপক্ষে এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যায় এবং কয়েক হাজার বাড়ি এবং অন্যান্য ভবন বিধ্বস্ত হয়।
২০২১ সালে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করা সামরিক সরকারের ত্রাণ প্রদান কর্মসূচির ব্যাপক কভারেজ করেছে স্টার মিডিয়া।
ভারত, জাপান, যুক্তরাজ্য ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি দেশ ইতোমধ্যে রবিবারের ঘূর্ণিঝড় থেকে পুনরুদ্ধারের জন্য আর্থিক বা বস্তুগত সহায়তা ঘোষণা করেছে।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রহ্মণ্যম জয়শঙ্কর বলেছেন, ত্রাণ সামগ্রী বহনকারী তিনটি ভারতীয় নৌবাহিনীর জাহাজ বৃহস্পতিবার মিয়ানমারের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনে পৌঁছেছে এবং শুক্রবার একটি চতুর্থ জাহাজ পৌঁছানোর কথা ছিল। ইয়াঙ্গুন ঘূর্ণিঝড়-বিধ্বস্ত এলাকার দক্ষিণ-পূর্বে এবং এখানে একটি প্রধান আন্তর্জাতিক বন্দর রয়েছে।
জয়শঙ্কর টুইটারে পোস্ট করা এক বার্তায় বলেছেন, ‘জাহাজগুলোতে জরুরি খাদ্য সামগ্রী, তাঁবু, প্রয়োজনীয় ওষুধ, পানির পাম্প, বহনযোগ্য জেনারেটর, জামাকাপড়, স্যানিটারি ও স্বাস্থ্যবিধি সামগ্রী রয়েছে।’
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় রায় ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে বহাল
ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলায় রায় মঙ্গলবার বহাল রেখেছেন দেশটির ঝাড়খণ্ড হাইকোর্ট।
বিচারপতি অম্বুজনাথের আদালতে যুক্তিতর্ক শেষে উভয়পক্ষকে আলোচনার সারসংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশও দিয়েছেন আদালত।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৮ সালে ঝাড়খন্ডের চাইবাসায় কংগ্রেসের এক সমাবেশে বিজেপি নেতা অমিত শাহের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্য করার অভিযোগে মানহানির মামলা করেন স্থানীয় এক বিজেপি নেতা।
আরও পড়ুন: এবার কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করবেন রাহুল গান্ধী
২০১৮ সালে কংগ্রেসের এক সভায় রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ‘একজন খুনের আসামি কেবল বিজেপিতেই দলের সভাপতি হতে পারেন। কংগ্রেসে এটা সম্ভব নয়।’
নিম্ন আদালত এই বিষয়ে রাহুল গান্ধীকে নোটিশ জারি করেছিলেন। নিম্ন আদালতের জারি করা নোটিশ বাতিল করার জন্য হাইকোর্টে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল।
রাহুল গান্ধীর পক্ষে আইনজীবী পীযূষ চিত্রেশ ও দীপঙ্কর রাই মামলাটি উপস্থাপন করেন।
১২ মে আদালত 'জোরপূর্বক ব্যবস্থা না নেওয়ার' আদেশের মেয়াদ ১৬ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীর জামিন মঞ্জুর, সাজা স্থগিত
পাকিস্তানে কয়লা খনি নিয়ে দুই উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৫
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী পাকিস্তানের অশান্ত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি কয়লা খনির মালিকানার অধিকার নিয়ে দুই উপজাতির মধ্যে ঘণ্টাব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে দেশেটির পুলিশ।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মুনাওয়ার খান বলেছেন, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দারা আদম খেলা জেলায় সোমবার খনির সীমানা নির্ধারণের সময় সানি খেলা এবং জারঘুন খেলার সশস্ত্র ব্যক্তিরা একে অপরের উপর বন্দুক হামলা চালায়।
আরও পড়ুন: ইমরান খানের গ্রেপ্তার: পাকিস্তানজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সহিংসতা
তিনি বলেন, দুই উপজাতি যুদ্ধ থামাতে অস্বীকৃতি জানালে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সৈন্যদের তলব করা হয়।
যদিও কয়লা খনিতে বিস্ফোরণে প্রতি বছর পাকিস্তান জুড়ে বহু মানুষ মারা যায়, তবে এই ধরনের সহিংস সংঘর্ষ বিরল। কয়লা খনিগুলো পাকিস্তানের বিশেষ করে উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশে অবস্থিত।
আরও পড়ুন: ইমরান খানকে মুক্তির নির্দেশ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: দ্বিতীয় পর্বের ভোটে লড়তে হতে পারে এরদোয়ান ও কিলিচদারুগ্লুকে
কয়েক দশকের মধ্যে তুরস্কের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান এবং তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বীর কিলিচদারুগ্লু পর্যাপ্ত ভোট পাননি। ফলে তাদেরকে আবারো লড়াইয়ে অবতীর্ণ হওয়া লাগতে পারে।
রবিবার দেশটিতে ভোটগ্রহণ শেষে প্রায় সমস্ত ভোট গণনা করার পর তুরস্কের সুপ্রিম ইলেকশন কাউন্সিল বলেছে যে এরদোগান ৪৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিচদারোগ্লু ৪৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।
বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এরদোগান কিলিচদারোগ্লু প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য যথেষ্ট ভোট না পাওয়ায় দেশটির নির্বাচনী নিয়মানুযায়ী দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের পর এরদোয়ান আঙ্কারায় তার একে পার্টির সমর্থকদের বলেছেন যে তিনি প্রয়োজনে দ্বিতীয় পর্বের ভোটের জন্য প্রস্তুত, তবে বিশ্বাস করেন যে তিনি এখনও সরাসরি জয়লাভ করতে পারবেন।
এদিকে কিলিচদারোগ্লু দ্বিতীয় পর্বের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার অঙ্গীকার করে বলেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী জনগণের কাছ থেকে আস্থার ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছেন।
দেশটিতে বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতির পটভূমিতে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো।
তুরস্কে ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টা পর দম্পতি জীবিত উদ্ধার, মারা গেছে তাদের সন্তান
একে পার্টির জোট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫০ শতাংশের অধিক ভোট না পেলেও পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ছয় কোটি ৪০ লাখ তুর্কি এই নির্বাচনে তাদের ভোট দেওয়ার যোগ্য ছিল। তবে এবারে তাদের মধ্যে ৫০ লাখ প্রথমবারের ভোটার ছিল, যাদের বয়স ১৮ থেকে ২২ -এর মধ্যে।
এরদোয়ান এবং তার একে পার্টি ২০০২ সাল থেকে দেশ শাসন করে আসছে। তাই তরুণ ভোটাররা তাদের জীবদ্দশায় ক্ষমতায় থাকা অন্য কোনো দল সম্পর্কে জানেন না।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: নিহতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ছাড়াল, তুরস্কে ঠিকাদার আটক
২০০২ সালের আগের দশকে তুরস্ক জোট সরকার দ্বারা শাসিত হয়েছিল। যা প্রতি দুই থেকে তিন বছর পর পর নির্বাচনের মাধ্যমে পরিবর্তনের প্রবণতা ছিল।
তুর্কি ভোটাররা শুধু নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করতেই ভোট দেয়নি, বরং তারা পার্লামেন্টের ৬০০ আসন পূরণের জন্যও ভোট দিয়েছে।
এরদোয়ানের একে পার্টি (একেপি) সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছে, কিন্তু দলটির নেতা ভালো করতে পারেনি।
২০০২ সালে একে পার্টি ৩৬৩টি আসন জিতেছিল। তারপর থেকে, প্রতিটি নির্বাচনে তাদের সংখ্যা কমে গেলেও, দলটি কখনও ৩০০ -এর কম আসন পায়নি।
২০১৮ সালের নির্বাচনে এই সংখ্যাটি ২৯৫-এ নেমে এসেছে। কিন্তু জোটগতভাবে তাদের প্রাপ্ত আসন ছিল ৩৪৪টি।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক খাসোগি হত্যাকাণ্ডের অডিও টেপ শুনেছে সৌদিসহ অন্যরা: এরদোগান
মিয়ানমার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে ৩ জন নিহত
মিয়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়া শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে বাড়ির ছাদ ধসে পড়ে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। এসময় কয়েক হাজার মানুষ নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে মঠ, প্যাগোডা ও স্কুলে আশ্রয় নিচ্ছে।
মিয়ানমারের আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রটি রবিবার বিকালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিত্তওয়ে শহরের কাছে ২০৯ কেপিএম (১৩০ মাইল প্রতিঘণ্টায়) গতিতে আছড়ে পড়েছে।
মিয়ানমারের সামরিক তথ্য অফিস জানিয়েছে, ঝড়ের কারণে সিত্তওয়ে, কিয়াউকপিউ ও গওয়া শহরে ঘরবাড়ি, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, সেলফোন টাওয়ার, নৌকা ও ল্যাম্পপোস্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তারা জানায়, ঘূর্ণিঝড়টিতে দেশের বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ৪২৫ কিলোমিটার (২৬৪ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমের কোকো দ্বীপপুঞ্জের ক্রীড়া ভবনগুলোর ছাদও ধসে পড়েছে।
সিত্তওয়ে আশ্রয়কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবী টিন নিন ওও বলেছেন, সিত্তওয়ের তিন লাখ বাসিন্দার মধ্যে চার হাজারেরও বেশি মানুষকে অন্য শহরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ২০ হাজারেরও বেশি মানুষ শহরের উচ্চভূমিতে অবস্থিত মঠ, প্যাগোডা ও স্কুলের মতো মজবুত ভবনগুলোতে আশ্রয় নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, স্থানীয় অনেক মানুষ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে তিন মিটারেরও বেশি উঁচু এলাকায় বাস করে, সেখানকার বাসিন্দারা মনে করছেন তাদের এলাকা পর্যন্ত ঝড়ের জলোচ্ছ্বাস পৌঁছাতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘ঝড় এখনও আঘাত হানেনি, তাই আমাদের খুব একটা অসুবিধা নেই। তবে, আশ্রয়কেন্দ্রে অনেক মানুষ এবং পর্যাপ্ত টয়লেট নেই।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: সেন্টমার্টিন দ্বীপে বৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস এখনও শুরু হয়নি
স্থানীয় একটি দাতব্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লিন লিন বলেছেন, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি লোক আসায় সিত্তওয়ের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত খাবার নেই।
মিয়ানমারে ইউএন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের প্রতিনিধি টিটন মিত্র এই টুইটে জানিয়েছেন, ‘মোখা আঘাত হেনেছে। দুই মিলিয়ন মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংসলীলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমরা প্রতিক্রিয়া জানাতে প্রস্তুত এবং ক্ষতিগ্রস্ত সকল মানুষের জন্য নিরবিচ্ছিন্ন সহযোগিতা প্রয়োজন।’
রবিবার সকালে মিয়ানমারে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যের একটি উদ্ধারকারী দল তাদের ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে জানিয়েছে, তারা এক দম্পতির লাশ উদ্ধার করেছে। টাচিলেক শহরে ভারি বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে নিজ বাড়িতে চাপা পড়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, মধ্য মান্দালয় অঞ্চলের পাইন ও লুইন শহরে একটি বটগাছ উপড়ে পড়ে পিষ্ট হয়ে একজন ব্যক্তি মারা গেছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম আরও জানিয়েছে, সিত্তওয়েতে প্রবল বাতাসে একটি সেলফোন টাওয়ার উপড়ে পড়েছে এবং অন্যান্য ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২০০৮ সালের মে মাসে ঘূর্ণিঝড় নার্গিস মিয়ানমারে আঘাত হানে, সেসময় ইরাবতি নদীর ডেল্টার আশেপাশের জনবহুল এলাকাগুলো ধ্বংস হয়ে যায়। এতে কমপক্ষে এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যায় এবং কয়েক হাজার বাড়ি এবং অন্যান্য স্থাপনা পানিতে ভেসে যায়।
পুনে শহরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল মেটিওরোলজির জলবায়ু বিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথিউ কোল বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বঙ্গোপসাগরে ঘন ঘন ঘূর্ণিঝড় হচ্ছে।
জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় এখন অনেক দিন তাদের শক্তি ধরে রাখতে পারে। ২০২০ সালে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আম্ফান পূর্ব ভারতে আঘাত হানে এবং ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।
কোল বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত মহাসাগর উষ্ণ থাকে এবং বাতাস অনুকূল থাকে, ততক্ষণ ঘূর্ণিঝড়গুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য তাদের তীব্রতা ধরে রাখে।’
ঘূর্ণিঝড় বিশ্বের সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্যে একটি, বিশেষ করে যেগুলো দক্ষিণ এশিয়ার ঘনবসতিপূর্ণ উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে আঘাত হানে।
আরও পড়ুন: সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় মোখার কোনো প্রভাব নেই