%E0%A6%8F%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
সেনাবাহিনী দখল নেয়ার পর মিয়ানমারের অস্ত্র শিল্পের প্রসার ঘটেছে: রিপোর্ট
অন্তত ১৩টি দেশের কোম্পানি মিয়ানমারকে অস্ত্র তৈরি করতে তার সক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করেছে। যা ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির শান্তিকামী জনগণের ওপর নৃশংসতায় ব্যবহৃত হচ্ছে।
স্বাধীন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এ তথ্য খুঁজে পেয়েছেন।
মিয়ানমারের জন্য বিশেষ উপদেষ্টা পরিষদের সোমবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটি কীভাবে অস্ত্র উৎপাদন বাড়িয়েছে এবং একটি গণ ও জনবিরোধী আন্দোলনকে প্ররোচিত করে তার বিবরণ দেয়া হয়েছে।
৫০ বছরের সামরিক শাসনের পরে গণতন্ত্রের পথে প্রায় এক দশকের অগ্রগতির পর দেশটির জান্তা বাহিনী ফের নির্বাচিত বেসামরিক নেতাদের আটক করে ক্ষমতা দখল করে।
এরপর নিরাপত্তা বাহিনী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে। যার জেরে সেনাশাসন বিরোধীরাও হাতে অস্ত্র তুলে নেয়।
জাতিসংঘের কিছু বিশেষজ্ঞ এই পরিস্থিতিকে গৃহযুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা সমিতি, সহিংসতায় দুই হাজার ৭০০টিরও বেশি বেসামরিক মৃত্যুর কথা নথিভুক্ত করেছে। যার মধ্যে ২৭৭টি শিশু রয়েছে এবং ১৩ হাজারেরও বেশি লোককে আটক করা হয়েছে।
যদিও প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের কোম্পানিগুলো মিয়ানমারের সামরিক সরবরাহ শৃঙ্খলকে সমর্থন করছে।
আরও পড়ুন: ‘আমরা ফিরে আসব’ লিখে কি সতর্কতা দিচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী!
প্রতিবেদনে এই ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যে তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সুবিধা দিচ্ছে না, তা যেন তারা নিশ্চিত করে।
মিয়ানমারের দেশীয় অস্ত্র শিল্পের বিস্তার ঘটেছে। অন্যদিকে, কিছু দেশ অস্ত্র ব্যবসায় বা অস্ত্র উৎপাদনে জড়িত ব্যক্তি ও কোম্পানির বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
গত অক্টোবরে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ একজন ব্যবসায়ী অং মো মিন্টের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
ট্রেজারি বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়, অং মো মিন্টে মিয়ানমারের হয়ে অস্ত্র চুক্তির কাজ সহজতর করে।
তার ভাই হ্লেইং মো মিন্ট এবং তাদের প্রতিষ্ঠিত ট্রেডিং কোম্পানি ডাইনাস্টি ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি লিমিটেডকেও লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এর একজন পরিচালক মায়ো থিটসারকেও নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করা হয়েছিল।
নভেম্বরে মার্কিন বেসামরিক নাগরিকদের ওপর মারাত্মক বিমান হামলার কথা উল্লেখ করে সামরিক বাহিনীতে বিমান সরবরাহকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের কোনো ব্যক্তিগত অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নেই। তাই এই ধরনের কোনো কোম্পানি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা শিল্প অধিদপ্তর দ্বারা পরিচালিত হয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে স্কুলে হেলিকপ্টার হামলা, ৭ শিক্ষার্থীসহ নিহত ১৩
এতে আরও বলা হয়েছে, স্থানীয় কারখানাগুলো এখনও লাইসেন্সপ্রাপ্ত প্রযুক্তি ও বিদেশি সাপ্লাই চেইন, প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং আপগ্রেড ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সিঙ্গাপুর ও তাইওয়ানে সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর নির্ভর করে।
একটি বিবৃতিতে কাউন্সিল বিশেষজ্ঞ ক্রিস সিডোটি অনুরোধ করেছেন, সরকার তদন্ত করবে এবং যেসব সংস্থা মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে ‘বেসামরিকদের ওপর নির্বিচারে আক্রমণ’ এ ব্যবহৃত অস্ত্র তৈরিতে সহায়তা করে সেসব সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।
মানবাধিকার আইনজীবী এবং ২০১৭-২০১৯ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের সদস্য সিডোতি বলেছেন, ‘মিয়ানমারের জনগণের দুর্ভোগ থেকে লাভবান হওয়া বিদেশি কোম্পানিগুলোকে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।’
গত বছর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার অফিসের একটি প্রতিবেদনে রাশিয়া, চীন, ইউক্রেন, ইসরায়েল, সিঙ্গাপুর ও ফিলিপাইনে কোম্পানির নামকরণের কিছু লিঙ্কের রূপরেখা দেয়া হয়েছে।
অভ্যন্তরীণ অস্ত্র তৈরির শিল্পের বিকাশের একটি প্রধান কারণ হল অস্ত্র, সামরিক বিমান এবং অন্যান্য অস্ত্র আমদানি নিষেধাজ্ঞা বা নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এখন ছোট অস্ত্র ও হালকা অস্ত্র তৈরিতে স্বাবলম্বী।
এতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের অস্ত্র তৈরির ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে- অ্যাসল্ট রাইফেল এবং মেশিনগান থেকে শুরু করে মর্টার, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ও অ্যান্টি-এয়ারক্রাফ্ট অস্ত্র, ক্ষেপণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার এবং আর্টিলারি ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিভিন্ন আইটেম।
আরও পড়ুন: সহিংসতা বন্ধে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জাতিসংঘ মানবাধিকার প্রধানের
বিমান দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত: নেপালে জাতীয় শোক পালন
পোখরায় বিমান দুর্ঘটনায় ৬৮ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় সোমবার (১৬ জানুয়িারি) জাতীয় শোক পালন করেছে নেপাল।
রবিবার দেশটিতে একটি বিমান ৭২ জন যাত্রী নিয়ে অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হলে এই প্রাণহাণির ঘটনা ঘটে। এতে ৬৮ জন নিহত হন।
দেশটির কাস্কি জেলার একজন জেষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা টেক বাহাদুর কেসি বলেছেন, সোমবার সকালে দুটি লাশ উদ্ধারের মধ্য দিয়ে দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ৬৮ জনে পৌঁছেছে।
তবে বিমান কী কারণে বিধ্বস্ত হয়েছে তা এখনও স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
দিওয়াস বোহোরা নামের এক প্রত্যক্ষদর্শী তার বারান্দা থেকে প্লেনের অবতরণের ফুটেজ রেকর্ড করেছিলেন।
তিনি বলেন, তিনি বিমানটিকে নিচু হয়ে উড়তে দেখেন, এরপর হঠাৎই এটি তার বাম দিকে চলে যায়।
বোহোরা বলেন, ‘আমি এটা (দুর্ঘটনা) দেখেছি এবং আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম ... আমি ভেবেছিলাম যে আজ এটি বিধ্বস্ত হওয়ার পরে এখানে সবকিছু শেষ হয়ে যাবে, আমিও মারা যাব।’
নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে সেটি বিমানবন্দরের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগ করেছিল।
এক বিবৃতিতে দেশটির বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নেপালের ইয়েতি এয়ারলাইন্সের টুইন-ইঞ্জিন এটিআর ৭২ বিমানটি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার (১২৫ মাইল) পশ্চিমে পোখরা পর্যন্ত ২৭ মিনিটের ফ্লাইট পরিচালনা করছিল।
বিমানটি ১৫ জন বিদেশি নাগরিকের পাশাপাশি চারজন ক্রু সদস্য সহ ৬৮ জন যাত্রী বহন করছিল। বিদেশিদের মধ্যে পাঁচজন ভারতীয়, চারজন রাশিয়ান, দুইজন দক্ষিণ কোরিয়ার এবং আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, আর্জেন্টিনা ও ফ্রান্সের একজন করে।
পোখরা একাডেমি অব হেলথ অ্যান্ড সায়েন্স, ওয়েস্টার্ন হাসপাতালে লাশগুলো রাখা হয়েছে।
জেলার পুলিশের মুখপাত্র জ্ঞান খাকদা বলেছেন, ৩১টি লাশ শনাক্ত করা হয়েছে এবং কর্মকর্তারা পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট শেষ করার পরে পরিবারের কাছে সেগুলো হস্তান্তর করবে।
তিনি আরও বলেন, বিদেশিদের লাশ এবং যাদের শনাক্ত করা যাচ্ছে না তাদের আরও তদন্তের জন্য কাঠমান্ডুতে পাঠানো হবে।
রবিবার, টুইটারে ছবিতে দেখা যায় যে পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে প্রায় এক দশমিক ছয় কিলোমিটার (প্রায় এক মাইল) দূরে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়ার ঢেউ দেখা গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বিষ্ণু তিওয়ারি দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধারে সহায়তার জন্য দুর্ঘটনাস্থলে ছুটে এসেছিলেন।
তিনি জানান, ঘন ধোঁয়া এবং আগুনের কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টা ব্যাহত হয়েছে।
তিওয়ারি বলেন, ‘শিখাগুলো এতই উত্তপ্ত ছিল যে আমরা ধ্বংসস্তূপের কাছে যেতে পারিনি। আমি একজন লোককে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে শুনেছি, কিন্তু শিখা এবং ধোঁয়ার কারণে আমরা তাকে সাহায্য করতে পারিনি।’
কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা উদ্বিগ্ন হয়ে তথ্যের জন্য অপেক্ষা করছেন।
দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল বিমানবন্দরে ছুটে যান এবং দুর্ঘটনার তদন্তে একটি প্যানেল গঠন করেন।
তিনি বলেন, ‘এই দুর্ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। দুর্ঘটনাকবলিতদের উদ্ধারের জন্য নেপালি সেনাবাহিনী ও পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে যে তারা এখনও দুই দক্ষিণ কোরিয়ার যাত্রীর ভাগ্যে কি ঘটেছে তা নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং ঘটনাস্থলে কর্মী পাঠিয়েছে।
নেপালে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেক্সি নোভিকভ বিমানটিতে থাকা চার রুশ নাগরিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আর্জেন্টিনার নিউকুয়েন প্রদেশের গভর্নর ওমর গুতেরেজ তার অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে লিখেছেন যে ফ্লাইটে একজন আর্জেন্টিনার যাত্রী ছিলেন।
পোখরা হল অন্নপূর্ণা সার্কিটের প্রবেশদ্বার ও হিমালয়ের একটি জনপ্রিয় হাইকিং ট্রেইল। এ শহরের নতুন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি মাত্র দুই সপ্তাহ আগে কার্যক্রম শুরু করেছে।
দুর্ঘটনা কবলিত বিমানটি এটিআর৭২, যা সারা বিশ্বের এয়ারলাইনগুলো সংক্ষিপ্ত আঞ্চলিক ফ্লাইটের জন্য ব্যবহার করে।
১৯৮০-এর দশকের শেষের দিকে একটি ফরাসি ও ইতালীয় অংশীদারিত্বে নির্মিত হয় এটি। বিমানের এই মডেলটি বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি মারাত্মক দুর্ঘটনায় পতিত হয়েছে।
এর আগে তাইওয়ানে মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে দু'টি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। যার মধ্যে একটি এটিআর৭২-৫০০ ও এটিআর৭২-৬০০ বিমান।
২০১৪ সালের জুলাইয়ে একটি ট্রান্সএশিয়া এটিআর ৭২-৫০০ ফ্লাইট তাইওয়ান এবং চীনের মধ্যে মনোরম পেঙ্গু দ্বীপপুঞ্জে অবতরণের চেষ্টা করার সময় বিধ্বস্ত হয়। এতে ৪৮ জনের মৃত্যু হয়। একই তাইওয়ানিজ এয়ারলাইন পরিচালিত একটি এটিআর ৭২-৬০০।
২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাইপেইতে উড্ডয়নের পরপরই বিধ্বস্ত হয়। এসময় এর একটি ইঞ্জিন ব্যর্থ হয় এবং দ্বিতীয়টি ভুলবশত বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৫ সালের দুর্ঘটনার ফুটেজ নাটকীয়ভাবে ধারণ করা হয়েছে।
এতে দেখা যায় যে বিমানটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গিয়ে একটি ট্যাক্সিকে আঘাত করে। এতে ৪৩ জন নিহত হয় এবং কর্তৃপক্ষকে কিছু সময়ের জন্য তাইওয়ানি-নিবন্ধিত সমস্ত এটিআর ৭২ বিমানগুলোকে ফ্লাইট না চালানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয়।
এছাড়া ২০১৬ সালে ট্রান্সএশিয়া সমস্ত ফ্লাইট বন্ধ করার পর ব্যবসাও বন্ধ করে দেয়।
আরও পড়ুন: পোখরায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: ৭২ জন যাত্রীর মধ্যে নিহত ৬৮
বিমান কোম্পানির মুখপাত্র সুদর্শন বারতৌলা জানিয়েছেন, ইয়েতি এয়ারলাইন্সের ছয়টি এটিআ৭২-৫০০ প্লেনের বহর রয়েছে।
নেপালে মাউন্ট এভারেস্ট সহ বিশ্বের ১৪টি সর্বোচ্চ পর্বতের মধ্যে আটটির অবস্থান। এবং দেশটির বিমান দুর্ঘটনার ইতিহাস রয়েছে।
ফ্লাইট সেফটি ফাউন্ডেশনের এভিয়েশন সেফটি ডাটাবেস অনুসারে, ১৯৪৬ সাল থেকে নেপালে ৪২টি মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রবিবারের দুর্ঘটনাটি ১৯৯২ সালের পর নেপালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা। সেসময় একটি বিমান কাঠমান্ডুতে অবতরণের চেষ্টা করার সময় একটি পাহাড়ে ধাক্কা দেয় এবং এতে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমানে থাকা ১৬৭ জন যাত্রীর সবাই প্রাণ হারান।
নিরাপত্তার মান দুর্বল উল্লেখ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০১৩ সাল থেকে নেপালের এয়ারলাইন্সকে ২৭টি দেশের ওপর দিয়ে উড়তে নিষেধ করেছে।
২০১৭ সালে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অর্গানাইজেশন নেপালের এভিয়েশন সেক্টরে উন্নতির কথা উল্লেখ করেছে।
কিন্তু, ইইউ এর প্রশাসনিক সংস্কারের দাবি করে আসছে।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনীয় বাহিনীর বিশেষ যুদ্ধ প্রশিক্ষণ জার্মানিতে শুরু করেছে মার্কিন সেনাবাহিনী
গুয়াতেমালার রেইন ফরেস্টের নিচে ২ হাজার বছর পুরনো মায়া শহর আবিষ্কৃত
পোখরায় যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: ৭২ জন যাত্রীর মধ্যে নিহত ৬৮
মধ্য নেপালের শহর পোখারায় একটি ৭২ আসনের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হলে অন্তত ৬৮ জন নিহত হয়। রবিবার দেশটির একজন সরকারি কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছে।
কাস্কি জেলার একজন সিনিয়র প্রশাসনিক কর্মকর্তা তেক বাহাদুর কে.সি. বলেন, উদ্ধারকারীরা পোখারা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে বিধ্বস্ত স্থানটি অনুসন্ধান করছে এবং আরও মৃতদেহ খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সংবাদপত্রে উল্লেখ করা হয়, বিমানটিতে ৬৮ জন যাত্রী ও চারজন ক্রু সদস্য ছিল।
প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহাল বলেন, উড়োজাহাজটি রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে মধ্য নেপালের পোখারায় যাচ্ছিল এবং নিরাপত্তা কর্মী ও সাধারণ জনগণকে উদ্ধার অভিযানে সাহায্য করার জন্য অনুরোধ করছি।
পোখারা শহর কাঠমান্ডু থেকে ২০০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত।
টুইটারে শেয়ার করা ছবি ও ভিডিওগুলোতে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ধোঁয়া উড়তে দেখা গেছে। সেসময় উদ্ধারকর্মীদের ও সাধারণ মানুষদের উড়োজাহাজটির ধ্বংসাবশেষের চারপাশে দেখা যায়।
জাপানে শিনজো আবের হত্যায় ইয়ামাগামিকে অভিযুক্ত দেশটির আইনজীবীদের
জাপানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের হত্যায় তেতসুয়া ইয়ামাগামিকে (৪২) অভিযুক্ত করেছেন দেশটির আইনজীবীরা। শুক্রবার বিচারের জন্য তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গত বছরের জুলাই মাসে পশ্চিম জাপানের নারাতে একটি ট্রেন স্টেশনের বাইরে নির্বাচনী প্রচারণায় বক্তৃতা দেয়ার সময় গুলি লেগে মারা যান আবে। তাকে গুলি করার অভিযোগে অবিলম্বে তেতসুয়া ইয়ামাগামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: শিনজো আবের শেষকৃত্য আজ
এরপর ইয়ামাগামিকে প্রায় ছয় মাসের জন্য ওসাকার একটি মানসিক মূল্যায়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার যার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপর ইয়ামাগামি নারায় পুলিশ হেফাজতে ফিরে এসেছে।
আইনজীবীরা জানিয়েছেন, ইয়ামাগামির মানসিক মূল্যায়নের ফলাফলে জানা গেছে তিনি বিচারের উপযুক্ত।
এছাড়া নারা জেলা আদালতে ইয়ামাগামির বিরুদ্ধে বন্দুক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগও আনা হয়েছে।
পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিতে ইয়ামাগামি বলেছিলেন যে, একটি ধর্মীয় গোষ্ঠীর প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টিতে প্রত্যক্ষ ভূমিকার কারণে তিনি আবেকে হত্যা করেন।
তার দেয়া বিবৃতিতে এবং তার সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টগুলোতে ইয়ামাগামি বলেছিলেন, তিনি (আবে) বিদ্বেষ তৈরি করেছিলেন। যার কারণে তার মাকে ইউনিফিকেশন চার্চে অনেক বড় অংকের টাকা দিতে হয়। যার ফলে তার পরিবার দেউলিয়া হয়ে যায়; যা তার জীবনকে ধ্বংস করে দেয়।
তার আইনজীবীদের একজন মাসাকি ফুরুকাওয়া বৃহস্পতিবার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ওসাকায় তার মানসিক মূল্যায়নের সময় ইয়ামাগামি সুস্থ ছিলেন। সেসময় কেবল তার বোন এবং তিনজন আইনজীবীকে তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেয়া হয়।
ফুরুয়া বলেছেন, মামলার জটিলতার কারণে তার বিচার শুরু হতে অন্তত কয়েক মাস সময় লাগবে।
পুলিশ ইয়ামাগামির বিরুদ্ধে অস্ত্র উৎপাদন, বিস্ফোরক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন এবং ভবনগুলোর ক্ষতিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগ যুক্ত করার কথাও বিবেচনা করছে।
তবে কিছু জাপানি ইয়ামাগামির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে যারা দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ইউনিফিকেশন চার্চের অনুসারীদের সন্তান। অনুগামীদের বড় দান করার জন্য চাপ দেয়ার জন্য এটি পরিচিত এবং জাপানে এটি একটি ধর্ম বলে বিবেচিত হয়।
হাজার হাজার মানুষ ইয়ামাগামির লঘু শাস্তির জন্য অনুরোধ জানিয়ে একটি পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে এবং অনেকে তার আত্মীয়দের বা আটক কেন্দ্রে কেয়ার প্যাকেজ পাঠিয়েছে।
এই মামলার তদন্তের ফলে আবের শাসক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং গির্জার মধ্যে বছরের পর বছর ধরে চলা নিবিড় সম্পর্কের রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে।
কারণ আবের দাদা ও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নোবুসুকে কিশি ১৯৬০-এর দশকে রক্ষণশীল ও বিরোধীদের মধ্যে পারস্পারিক স্বার্থের জন্য জাপানে এই চার্চের শিকড় বিস্তৃত করতে সাহায্য করেছিলেন।
আরও পড়ুন: শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর যোগদান
শিনজো আবের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে পারেন মোদি
চীনের কোভিড-১৯ নীতির হাজারের অধিক সমালোচকের সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট স্থগিত
চীন কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের বিষয়ে সরকারের নীতির সমালোচনা করে এমন এক হাজারেরও বেশি ব্যক্তির সামাজিক মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে সরকার। কারণ দেশটি ভাইরাসটির কারণে আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে।
দেশটিতে জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যম সিনা ওয়েইবো বলেছে যে এটি বিশেষজ্ঞ, পণ্ডিত এবং চিকিৎসা কর্মীদের ওপর আক্রমণসহ ১২ হাজার ৮৫৪টি লঙ্ঘনের সমাধান করেছে এবং এক হাজার ১২০ টি অ্যাকাউন্টে অস্থায়ী বা স্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টি তার কঠোর লকডাউন, কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা এবং গণ পরীক্ষার ন্যায্যতা দেয়ার জন্য চিকিৎসকদের ওপর মূলত নির্ভর করেছিল। যার প্রায় সবকটিই গত মাসে হঠাৎ করে পরিত্যাগ করেছিল। যার ফলে নতুন করে আক্রান্তের হার বাড়ে। চিকিৎসা সংস্থাগুলো তাদের সীমা প্রসারিত করেছিল। দলটি সরাসরি সমালোচনার অনুমতি দেয় না এবং বাকস্বাধীনতার ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ সীমা আরোপ করে।
আরও পড়ুন: ঢাকায় কিশোর মাহবুবনী: যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বৈরথে ভূ-রাজনীতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে সিনা ওয়েইবো বলেছে, কোম্পানি ‘সব ধরনের অবৈধ বিষয়বস্তুর তদন্ত এবং পরিচ্ছন্নতা বাড়াতে থাকবে এবং অধিকাংশ ব্যবহারকারীর জন্য একটি ভারসাম্যপূর্ণ এবং বন্ধুত্বপূর্ণ সম্প্রদায়ের পরিবেশ তৈরি করবে।’
সমালোচনা মূলত উন্মুক্ত ভ্রমণ বিধিনিষেধের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। এতে দেখা যায় যে মানুষ কখনও কখনও পর্যাপ্ত খাবার বা চিকিৎসা যত্ন ছাড়াই কয়েক সপ্তাহ ধরে তাদের বাড়িতে আবদ্ধ ছিল। যে কেউ সম্ভাব্যভাবে করোনা ইতিবাচক পরীক্ষা করেছেন বা এই জাতীয় ব্যক্তির সংস্পর্শে এসেছেন তাকে একটি ফিল্ড হাসপাতালে পর্যবেক্ষণের জন্য সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। যেখানে অতিরিক্ত ভিড়, খারাপ খাবার এবং স্বাস্থ্যবিধি উল্লেখ করা হয়েছিল এই প্রয়োজনীয়তার উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়েছিল।
সামাজিক এবং অর্থনৈতিক ব্যয় অবশেষে বেইজিং এবং অন্যান্য শহরে বিরল রাস্তার প্রতিবাদকে উসকে দেয়। যা পার্টির কঠোরতম ব্যবস্থাগুলোর সিদ্ধান্তকে দ্রুত সহজ করার জন্য প্রভাবিত করে।
চীনের বড় শহরগুলোতে আক্রান্ত এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধির মুখোমুখি হচ্ছে। আগামী দিনে চন্দ্র নববর্ষ ভ্রমণের ভিড় শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে স্বল্প উন্নত অঞ্চলে আরও বিস্তারের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। যদিও আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো এখন হ্রাস পেয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে যে তারা আশা করে যে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অভ্যন্তরীণ রেল এবং বিমান ভ্রমণ দ্বিগুণ হবে, যা মহামারি শুরুর আগে ২০১৯ সালের ছুটির সময়ের কাছাকাছি সামগ্রিক সংখ্যা নিয়ে আসবে।
শুক্রবার পরিবহন মন্ত্রণালয় ভ্রমণকারীদের ভ্রমণ এবং জমায়েত কমানোর আহ্বান জানিয়েছে। বিশেষত যদি তারা বয়স্ক ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা, ছোট শিশু এবং অভ্যন্তরীণ জটিলতায় থাকেন।
আরও পড়ুন: একদিনে তাইওয়ানের দিকে ৩৯টি যুদ্ধবিমান ও ৩টি জাহাজ পাঠিয়েছে চীন
উপ মন্ত্রী জু চেংগুয়াং এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, গণপরিবহন ব্যবহারকারীদেরও মাস্ক পরতে এবং তাদের স্বাস্থ্য ও ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
তবুও, চীন রবিবার থেকে বিদেশ থেকে আগত যাত্রীদের জন্য বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইন শেষ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
শহর শিক্ষা ব্যুরো শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেছে, বেইজিং এছাড়াও ১৩ ফেব্রুয়ারি ছুটির বিরতির পরে ক্লাস পুনরায় শুরু হলে ক্যাম্পাসে প্রবেশের জন্য শহরের স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি কোভিড-১৯ পরীক্ষার নেতিবাচক করার প্রয়োজনীয়তা বাদ দেয়ার পরিকল্পনা করেছে। যদিও নতুন প্রাদুর্ভাবের ক্ষেত্রে স্কুলগুলোকে অনলাইনে ক্লাস করার অনুমতি দেয়া হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের অবশ্যই ব্যক্তিগত নির্দেশে ফিরে যেতে হবে।
এদিকে, গণ পরীক্ষার সমাপ্তি, মৃত্যুর সংখ্যা, সংক্রমণ এবং গুরুতর আক্রান্তের মতো মৌলিক তথ্যের অভাব এবং নতুন রূপের সম্ভাব্য উত্থান সরকারগুলোকে অন্যত্র চীন
থেকে আসা ভ্রমণকারীদের জন্য ভাইরাস পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা চালু করতে উৎসাহিত করেছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীন থেকে তথ্যের অভাব সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। মার্কিন চীন থেকে ভ্রমণকারীদের জন্য প্রস্থানের ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একটি নেতিবাচক পরীক্ষার ফলাফল প্রয়োজনীয়তা যুক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
চীনা স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ নতুন সংক্রমণ, গুরুতর সংক্রমণ এবং মৃত্যুর দৈনিক গণনা প্রকাশ করে। তবে এই সংখ্যায় শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত হওয়া আক্রান্ত অন্তর্ভুক্ত এবং কোভিড-১৯ সম্পর্কিত মৃত্যুর একটি খুব সংকীর্ণ সংজ্ঞা ব্যবহার করে।
চীন বলেছে যে পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিজ্ঞান ভিত্তিক নয় এবং অনির্দিষ্ট পাল্টা ব্যবস্থার হুমকি দিয়েছে। এর মুখপাত্র বলেছেন যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পুনরায় খোলার প্রস্তুতির অভাবের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাস শনাক্ত: ঢাকা বিমানবন্দর থেকে ৪ চীনা নাগরিক আইসোলেশনে
যদি একটি প্রাদুর্ভাবে একটি বৈকল্পিক আবির্ভূত হয়, এটি ভাইরাসের জেনেটিক সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে পাওয়া যায়।
মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে চীন করোনভাইরাস ডেটার জন্য একটি বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্ম জিআএসএআইডি-এর সঙ্গে চার হাজার ১৪৪টি সিকোয়েন্স শেয়ার করেছে। এটি তার রিপোর্ট করা আক্রান্তের মাত্র শূন্য দশমিক ০৪ ভাগ, যে হারটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে ১০০ গুণ কম এবং প্রতিবেশী মঙ্গোলিয়ার চেয়ে প্রায় চার গুণ কম।
এদিকে হংকংও রবিবার মূল ভূখণ্ড চীনের সঙ্গে তার কিছু সীমান্ত ক্রসিং পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করেছে এবং প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষকে কোয়ারেন্টাইন ছাড়াই অতিক্রম করার অনুমতি দেবে।
আধা-স্বায়ত্তশাসিত দক্ষিণ চীনা শহরটি ভাইরাসে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এর স্থল ও সমুদ্র সীমান্ত চেকপয়েন্টগুলো প্রায় তিন বছর ধরে প্রায়শই বন্ধ রয়েছে। ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, পুনরায় খোলার ফলে হংকং-এর পর্যটন এবং খুচরা খাতগুলোকে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় উৎসাহ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চীন ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করতে হবে
ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মেরাপিতে অগ্ন্যুৎপাত
ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম সুমাত্রা প্রদেশের মেরাপি আগ্নেয়গিরিতে শনিবার প্রায় ৪৫ সেকেন্ড ধরে অগ্ন্যুৎপাত ঘটে। এসময় আগ্নেয়গিরিটির শিখর থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত ছাই ছড়িয়ে পড়ে।
দেশটির সেন্টার ফর ভলকানোলজি এন্ড জিওলজিক্যাল হ্যাজার্ড মিটিগেশনের তথ্যমতে, ‘স্থানীয় সময় সকাল ৬টা ১১ মিনিটে (২৩টা ১১ জিএমটি) অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।’
সংগঠনটি এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, বালির সঙ্গে আগ্নেয়গিরির ছাই নিক্ষেপের ফলে আশেপাশের এলাকায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।’
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৮৯১ মিটার উঁচু এই আগ্নেয়গিরিটি ২০২২ সালের ২৫ ডিসেম্বর থেকে সক্রিয় হয়ে উঠেছে।
ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মাউন্ট মেরাপি বর্তমানে বিপদের দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে।
কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের ভার্বিক ক্রেটার থেকে আশেপাশের ৩ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে না থাকার আহ্বান জানায়।
বেইজিংয়ের হাসপাতালে বেড সংকট, কোভিডে আরও বেশি আক্রান্ত হচ্ছে
চীনের রাজধানী বেইজিং –এ কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালগুলোতে শয্যা সংকট দেখা দিয়েছে। এতে বয়স্ক রোগীরা স্ট্রেচারে শুয়ে ও হুইল চেয়ারে বসে অক্সিজেন নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার শহরের পূর্বের চুইয়াংলিউ হাসপাতাল আগত নতুন রোগী দিয়ে পরিপূর্ণ ছিল। মাঝামাঝি সময়ে বিছানা ফুরিয়ে গিয়েছিল, এমনকি অ্যাম্বুলেন্সগুলো অনবরত তাদের নিয়ে আসতে থাকে।
কঠোর চাপে থাকা নার্স এবং ডাক্তাররা তথ্য নিতে এবং সবচেয়ে জরুরি কেসগুলো শনাক্ত করতে ছুটে আসেন।
প্রায় তিন বছরের লকডাউন, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এবং স্কুল বন্ধের পরে গত মাসে চীন তার সবচেয়ে গুরুতর মহামারি বিধিনিষেধ পরিত্যাগ করে। এতে হাসপাতালে যত্নের প্রয়োজনে গুরুতর অসুস্থ লোকেদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে থাকে।
তবে তিন বছরের বিধিনিষেধ অর্থনীতিতে ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলে এবং ১৯৮০-এর দশকের শেষের দিক থেকে রাস্তায় এরকম বিক্ষোভ দেখা যায়নি।
বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন তার সদস্য দেশগুলোকে চীন থেকে আসা যাত্রীদের প্রাক-প্রস্থানের সময় কোভিড-১৯ পরীক্ষা আরোপ করতে ‘কঠোরভাবে উৎসাহিত’ করা হয়।
আরও পড়ুন: ডিএনসিসির কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে ডেঙ্গুর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে: মেয়র আতিক
গত সপ্তাহে ইইউ দেশগুলো একসঙ্গে কাজ করার পূর্বের প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে চীন থেকে আসা ভ্রমণকারীদের প্রতি বিভিন্ন বিধিনিষেধের সাথে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
ইউরোপের মধ্যে ইতালিতে মহামারিটি প্রথম ২০২০ সালের শুরুতে একটি উচ্চহার দেখা দিয়েছিল। চীন থেকে আগত বিমান যাত্রীদের জন্য করোনভাইরাস পরীক্ষা করার জন্য প্রথম ইইউ সদস্য ছিল দেশটি। তবে ফ্রান্স এবং স্পেন দ্রুত তাদের নিজস্ব ব্যবস্থা অনুসরণ করেছিল। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রয়োজনীয়তা আরোপ করার পরে যে চীন থেকে আসা সমস্ত যাত্রী প্রস্থানের পূর্ববর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে করোনা পরীক্ষার ফলাফল নেগেটিভ দেখাতে হবে।
যদি এই ধরনের নীতি এই অঞ্চল জুড়ে আরোপ করা হয় তবে ‘পাল্টা ব্যবস্থা’ সম্পর্কে সতর্ক করেছে চীন।
তবুও, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান টেড্রোস আধানম ঘেব্রেইসাস বুধবার বলেছেন যে তিনি চীন সরকারের কাছ থেকে প্রাদুর্ভাবের তথ্যের অভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন।
চীন তার বয়স্ক জনসংখ্যাকে আরও বেশি টিকা দেয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু অতীতের কেলেঙ্কারি জাল ওষুধ এবং বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে টিকার প্রতিকূল প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে পূর্ববর্তী সতর্কতাগুলোর কারণে সেই প্রচেষ্টাগুলো ব্যাহত হয়েছে।
চীন অভ্যন্তরীণভাবে উন্নত ভ্যাকসিনগুলো অন্যত্র ব্যবহৃত এআরএনএ জ্যাবগুলোর তুলনায় কম কার্যকর বলে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুন: চীন ভ্রমণকারীদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করতে হবে
বাংলাদেশ তার কোভিড-১৯ ব্যবস্থাপনার অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত: নিউইয়র্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কাবুলে অভিযানে ৭ আইএস সদস্য হত্যার দাবি তালেবানের
আফগানিস্তানের কাবুলে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিদের একটি আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে। বুধবার একজন সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, হামলায় কমপক্ষে সাতজন নিহত ও আরও সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার তালেবানের অন্যতম মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক টুইটে বলেছেন, ‘ইসলামী আমিরাতের নিরাপত্তা বাহিনী বুধবার সন্ধ্যায় কাবুলের কালাচা ও শুহাদাই সালেহেন এলাকায় আইএস জঙ্গিদের আস্তানায় অভিযান চালায়। এর ফলে সাত আইএস বিদ্রোহী নিহত এবং সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে মসজিদে বিস্ফোরণে নিহত ১৮, আহত ২১
এর আগে বুধবার বিকালে কাবুলের বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন যে পুলিশ ডিস্ট্রিক্ট ৮-এর কারতা-ই-নাউ এলাকা এবং এর আশেপাশে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।
মুজাহিদ আরও বলেন, আফগান নিরাপত্তা বাহিনী বুধবার ভোরে পশ্চিম নিমরোজ প্রদেশে প্রতিদ্বন্দ্বী আইএস বা ইসলামিক স্টেট গ্রুপের দুই সশস্ত্র বিদ্রোহীকে আটক করেছে।
আইএস বেশ কয়েকবার আফগান সরকারের বিরুদ্ধে হামলার দায় স্বীকার করেছে। এর মধ্যে কয়েকদিন আগে কাবুলের একটি সামরিক বিমানবন্দরের গেটে সর্বশেষ হামলায় এক ডজনেরও বেশি মানুষ নিহত ও আহত হয়।
তবে, তালেবানের হামলার বিষয়ে আইএস এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে মসজিদে বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৩
‘আফগানিস্তান যুদ্ধের অবশিষ্ট অস্ত্রের বিস্ফোরণে ৪ শিশু নিহত’
কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় দুই শিশুসহ নিহত ৪: পুলিশ
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের একটি গ্রামে জঙ্গি হামলায় দুই শিশুসহ চারজন নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন। সোমবার দক্ষিণ রাজৌরি জেলার ধাংড়ি গ্রামে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, রবিবার সারারাত জঙ্গিরা ওই গ্রামের কয়েকটি বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এরপরই এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। নিহতদের মধ্যে পাঁচ বছরের একটি ছেলে এবং ১২ বছরের একটি মেয়েও রয়েছে। আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
পুলিশের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা মুকেশ সিং সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, রবিবার রাতে দুই বন্দুকধারী নির্বিচারে ধাংড়ির তিনটি বাড়িতে গুলি চালায়। এতে চারজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং পাঁচজন আহত হয়েছেন।
পুলিশ ভারতীয় কেন্দ্র শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইরত জঙ্গিদের ধংড়িতে দুটি হামলার জন্য দায়ী করেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
তারা আরও জানায়, হামলাকারীরা আরও বিস্ফোরক রেখে গেছে কিনা তা এখনও জানা যায়নি।
হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ধাংড়িতে কয়েকশ’ মানুষ জড়ো হয়, হামলাকারীদের নিন্দা জানিয়ে স্লোগান দেয়। দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর জম্মুর অর্ধশতাধিক মানুষও এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেছে।
নয়াদিল্লির শীর্ষ প্রশাসক মনোজ সিনহা এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত সন্ত্রাসী হামলা’ হিসেবে নিন্দা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি জনগণকে আশ্বস্ত করছি যে এই ঘৃণ্য হামলার পেছনে যারা আছে, তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।’
ভারত ও পাকিস্তান প্রত্যেকেই অবিভক্ত কাশ্মীরকে নিজেদের অঞ্চল দাবি করে।
আরও পড়ুন: প্যারিসে গুলিতে নিহত ৩, সন্দেহভাজন গ্রেপ্তার
ইরাকে বিস্ফোরণে ৯ পুলিশ নিহত: কর্তৃপক্ষ
ফিলিপাইনে বন্যায় ৫১ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ১৯
ফিলিপাইনে প্রবল বর্ষণ ও বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫১জনে পৌঁছেছে। এখনও ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সোমবার দেশটির জাতীয় দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া সংস্থা এসব তথ্য জানিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিগুলোতে উত্তর মিন্দানাওয়ের মিসামিস অক্সিডেন্টাল প্রদেশের বাসিন্দাদের তাদের বাড়ির মেঝে থেকে ঘন কাদার স্তর পরিস্কার করতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, ক্যাবোল-অনোনানের সমুদ্রতীরবর্তী গ্রামে নারকেল গাছ উপড়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়।
দেশটির ন্যাশনাল ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট কাউন্সিলের মতে, দক্ষিণাঞ্চলের উত্তর মিন্দানাওতে এই বিপর্যয়ে ২৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ মৃত্যুই পানিতে ডুবে এবং ভূমিধসের কারণে হয়েছে।
আরও পড়ুন: অস্ট্রেলিয়ায় সমুদ্র সৈকতে দুই হেলিকপ্টারের সংঘর্ষে নিহত ৪
খারাপ আবহাওয়ার কারণে ফিলিপাইনের পূর্ব, মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে ক্রিসমাস উদযাপন ব্যাহত হয়েছে। ক্রিসমাসের ছুটির মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ছয় লাখ মানুষকে নিজেদের বাড়ি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে হয়েছে। এখনও আট হাজার ৬০০ জনের বেশি মানুষ জরুরি আশ্রয়কেন্দ্রে রয়ে গেছেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, বন্যায় রাস্তা ও সেতুসহ চার হাজার ৫০০ টিরও বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং কিছু এলাকায় এখনও বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ পুনরুদ্ধার হয়নি।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সরকার বন্যাকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, ধ্বংসস্তূপ অপসারণের ভারী যন্ত্রপাতি এবং বাড়িঘর মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পাঠিয়েছে।
রাজধানী ম্যানিলা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষদের জন্য সীমিত পরিমাণ বিশুদ্ধ পানি পাঠানো হয়েছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিষদ জানিয়েছে, দেশটির অন্তত ২২টি শহর ও পৌরসভা দুর্যোগের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
আরও পড়ুন: মেক্সিকান সীমান্ত কারাগারে হামলায় নিহত ১৪
সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার