এশিয়া
মহারাষ্ট্রে বাস দুর্ঘটনার পর আগুন লেগে নিহত ২৫
পশ্চিম ভারতে শুক্রবার দিবাগত রাতে টায়ার বিস্ফোরণে বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের বিভাজকের সঙ্গে ধাক্কায় এবং গাড়িটিতে আগুন লেগে যায়। এতে ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ ও স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা সুনীল কাদাসনে প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, রাত দেড়টার দিকে মহারাষ্ট্র রাজ্যের বুলধানা জেলার একটি মহাসড়কে দুর্ঘটনার সময় বাসটিতে ৩৩ জন ছিলেন।
তিনি আরও জানান, বেঁচে যাওয়া আটজনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিগন্যালিং সিস্টেমের ত্রুটির কারণে প্রাণঘাতী এই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে: ভারতের রেলমন্ত্রী
বেসরকারি ট্রাভেল বাসটি নাগপুর থেকে পুনে শহরের দিকে যাচ্ছিল।
পুলিশ সূত্র বলছে যে বেপরোয়া গাড়ি চালানো, দুর্বল রক্ষণাবেক্ষণ করা সড়ক এবং পুরানো যানবাহনের কারণে ভারতে মারাত্মক সড়ক দুর্ঘটনা প্রায়শই ঘটে। ভারতে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লাখ ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’: মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান
ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা
গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া নৌকায় ৩৫০ জন পাকিস্তানি অভিবাসী ছিল: কর্মকর্তারা
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ খান বলেছেন, গত সপ্তাহে গ্রিসের উপকূলে ডুবে যাওয়া একটি মাছ ধরার নৌকায় আনুমানিক ৩৫০ জন পাকিস্তানি অভিবাসীদে ছিলেন। এ ঘটনায় এখনও অনেকে নিখোঁজ রয়েছে এবং মধ্য ভূমধ্যসাগরে ঘটা সবচেয়ে মারাত্মক ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি এটি।
শুক্রবার দেশটির ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে থাকা সংসদ সদস্যদের রানা সানাউল্লাহ খান জানান, ১৪ জুন নৌকাটি ডুবে যাওয়ার সময় সেটিতে আনুমানিক ৭০০ অভিবাসী ছিলেন। ১২ জন পাকিস্তানিসহ মাত্র ১০৪ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং ৮২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে নৌকাটিতে মোট কতজন যাত্রী ছিল তা নিশ্চিত জানা যায়নি।
খান বলেন, নিখোঁজ পাকিস্তানিদের মধ্যে অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ‘এখন পর্যন্ত ২৮১টি পরিবার সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে দাবি করেচে যে ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে তাদের ছেলে বা প্রিয়জন থাকতে পারে।’
খানের মন্তব্য দেশটির আইনপ্রণেতাদের হতবাক করেছে এবং তিনি কথা বলার সময় তারা সবাই দুঃখ প্রকাশ করেন।
এই প্রথম দেশটির কোনো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে নৌকাডুবির পর এত বেশি পাকিস্তানি নাগরিক নিখোঁজ হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণে নিহত ২৫, আহত ১৪৫
লাশ শনাক্ত করতে কর্মকর্তারা বর্তমানে এমন লোকদের কাছ থেকে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করছেন, যারা দাবি করছেন যে তাদের স্বজন ওই নৌকায় ছিলেন।
মাছ ধরার নৌকায় পাকিস্তানিদের অভিবাসনের ব্যবস্থা করা মানব পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে পাকিস্তানের সরকার। এসব অধিবাসীদের অনেকেই ইউরোপে চাকরি খুঁজছিল। এখনও পর্যন্ত পুলিশ এই মামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে অন্তত ১৭ জন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
কর্মকর্তারা বলছেন, ভুক্তভোগীরা পাচারকারীদের সমুদ্রযাত্রার জন্য ৫ হাজার থেকে ৮ হাজার মার্কিন ডলার দিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক জলসীমায় ডুবে যাওয়ার আগে অভিবাসীদের বাঁচানোর চেষ্টা না করায় গ্রিস ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছে।
যদিও এথেন্সের কর্মকর্তারা বলছেন যে যাত্রীরা কোনো সাহায্য প্রত্যাখ্যান করেছিল এবং ইতালিতে যাওয়ার জন্য জোর দিয়েছিল। কেননা জাহাজটির যাত্রীদের মধ্যে সন্দেহভাজন ৯জন মিশরীয় ব্যক্তিকে গ্রিসে একটি অপরাধমূলক সংগঠনে অংশ নেওয়া, হত্যাকাণ্ড এবং জাহাজ ভাঙার মতো অভিযোগের মুখোমুখি করা হয়েছে।
স্বজন হারানো পাকিস্তানিরা অন্যদেরকে তাদের প্রিয়জনকে অবৈধভাবে বিদেশে না পাঠাতে অনুরোধ করছেন।
এই দুর্ঘটনায় নিহতের আশঙ্কা করা আলী রাজা নামক এক ব্যক্তির ভাই সাওয়ান রাজা বলেছেন, ‘পাকিস্তানে থেকে দুপুর বা রাতের খাবার না খেয়ে থাকাও, চোরাকারবারীদের সাহায্যে বিদেশে যাওয়ার ঝুঁকি নেওয়ার পরিবর্তে অনেক ভালো।’
রাজাসহ অনেক নিখোঁজ অভিবাসী পাকিস্তানের সবচেয়ে জনবহুল পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশ ও কাশ্মীরের প্রত্যন্ত শহরের বাসিন্দা।
পাকিস্তান তার রেকর্ড সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকটে ভুগছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতি ৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে এবং অনেক যুবক ভাল চাকরি খোঁজার জন্য ইউরোপে বিপজ্জনক ভ্রমণ করেছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে কয়লা খনি নিয়ে দুই উপজাতির মধ্যে সংঘর্ষে নিহত ১৫
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেনে আগুনে নিহত ৭
ভারতে তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট, হাসপাতালগুলোতে বেড়েই চলেছে মৃতের সংখ্যা
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এখন পর্যন্ত ভারতে ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে আবার ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাট অবস্থা আরও শোচনীয় করে তুলেছে।
দেশটির সবচেয়ে জনবহুল দু’টি রাজ্যের হাসপাতালগুলো তীব্র তাপপ্রবাহে অসুস্থ রোগীতে পূর্ণ। এমনকি একটি মর্গ ধারণক্ষমতায় পৌঁছেছে।
স্থানীয় সংবাদ প্রতিবেদন এবং স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের তথ্যমতে, উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তর প্রদেশে গত কয়েক দিনে তাপজনিত অসুস্থতায় ১১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহারে ৪৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
উত্তরপ্রদেশের বালিয়া জেলা থেকে ১১০ কিলোমিটার দূরে দেওরিয়া শহরের একটি লাশবাহী গাড়িরচালক জিতেন্দ্র কুমার যাদব অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘গরমে এত মানুষ মারা যাচ্ছে যে আমরা বিশ্রামের জন্য এক মিনিটও সময় পাচ্ছি না। রবিবার আমি ২৬টি লাশ বহন করেছি।’
আরও পড়ুন: তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’: মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান
ওই এলাকার অন্য বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে তারা মধ্যসকালের পরে বাইরে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
উত্তর প্রদেশের বালিয়া জেলার বৃহত্তম হাসপাতালটি নতুন আরও কোনো রোগীকে জায়গা দিতে পারছে না।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাপপ্রবাহে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত ৫৪ জন বৃদ্ধের মৃত্যুর পর মর্গটি পূর্ণ হয়ে যায়। কিছু পরিবারকে তাদের স্বজনদের লাশ বাড়িতে নিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
রবিবার রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ব্রজেশ পাঠক বলেন, দুই সদস্যের একটি কমিটি কেন এত সংখ্যক মৃত্যু হয়েছে তার কারণ খতিয়ে দেখবে এবং এর মধ্যে সরাসরি তাপপ্রবাহের কারণে এই মৃত্যুগুলো হয়েছে কি-না তাও তদন্ত করবে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যানুসারে, গ্রীষ্মের সময় দেশটির উত্তরাঞ্চলে প্রচণ্ড গরম পড়ে। তবে তাপমাত্রা এবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, মোটামুটি ৪৩ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছে। যদি তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয় বা তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয় তবে তা তাপপ্রবাহ হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: জি-২০ উন্নয়ন মন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে ভারত সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ক্রমাগত তাপপ্রবাহের কারণে ওই অঞ্চলজুড়ে দেখা দিয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও পানির সংকট। ফলে এলাকাবাসীকে অধিকাংশ সময় ফ্যান বা এয়ার কন্ডিশনার ছাড়াই থাকতে হচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেছেন, সরকার নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য ব্যবস্থা নিচ্ছে। তিনি নাগরিকদের সহযোগিতা করার এবং পরিমিত বিদ্যুৎ ব্যবহারের আহ্বান জানান।
জরুরি বিভাগের একজন মেডিকেল অফিসার ডা. আদিত্য সিং বলেন, ‘আমাদের সমস্ত কর্মীরা এখানে টানা তিনদিন ধরে রয়েছেন এবং সবাই অতিরিক্ত কাজ করে যাচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের ওয়ার্ডগুলোতে কোনো কার্যকর এয়ার কন্ডিশনার নেই এবং যেসব কুলিং ইউনিট রয়েছে সেগুলো বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে সঠিকভাবে কাজ করছে না। ফলে কর্মচারীরা বই দিয়ে রোগীদের বাতাস করছেন।
আরও পড়ুন: সিগন্যালিং সিস্টেমের ত্রুটির কারণে প্রাণঘাতী এই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে: ভারতের রেলমন্ত্রী
ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়: গুজরাটে ২ জন নিহত
পশ্চিম ভারতের গুজরাট উপকূলে বৃহস্পতিবার আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়ের তাণ্ডবে দুজন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার প্রবল বাতাস ও বৃষ্টি নিয়ে পাকিস্তানে আঘাত হানে ঝড়টি।
ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতাস্বরূপ দুই দেশের উপকূলবর্তী ১ লাখ ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
পশ্চিম গুজরাটের উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের গতিবেগ ছিল ৮৫ কিলোমিটার (৫৩ মাইল প্রতি ঘণ্টা) এবং এসময় ১০৫ কিলোমিটার (৬৫ মাইল) পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা উপকূলবর্তী ৮২ হাজার মানুষকে সরিয়ে নিয়েছে এবং সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি রাখা হয়েছে।
পশ্চিম ভারতে ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
তবে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দুজনের মৃত্যু ছাড়াও পার্শ্ববর্তী দ্বারকা জেলায় তিনজন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারে বাংলাদেশের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পশ্চিম ভারতে প্রায় ১ লাখ মানুষকে সাময়িকভাবে ত্রাণ শিবিরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঝড়ে এ অঞ্চলের গাছ ও বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যাওয়াসহ স্থলভাগের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উপকূলীয় শহর মান্ডভির কর্মকর্তারা বলেছেন, ভারী বাতাসে ভারতের অন্যতম বৃহত্তম বন্দর মুন্দ্রা বন্দরের কিছু শিপিং কন্টেইনার সমুদ্রে ভেসে গেছে।
শুক্রবারের পরে ঘূর্ণিঝড়টি দুর্বল হয়ে দক্ষিণ পাকিস্তানে আঘাত হানার পর প্রতিবেশি ভারতীয় রাজ্য রাজস্থানের দিকে অগ্রসর হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
পাকিস্তান এখনও গত বছরের মারাত্মক বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
দেশটির অনেক মানুষ দাতব্য সংস্থা, সাহায্য সংস্থা এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের দান করা খাবার গ্রহণের জন্য লাইনে দাঁড়াতে বাধ্য হচ্ছে।
পাকিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বন্যা কবলিত সিন্ধু প্রদেশের বন্দর কেটি বন্দরের ১২৫ কিলোমিটার (৭৫ মাইল) দক্ষিণ-দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে।
তারা জানিয়েছে, ‘ঝড়টি প্রথমে একটি ঘূর্ণিঝড়ে এবং তারপরে শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যে একটি নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: কক্সবাজারে ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় আরব সাগরে ১০ দিনেরও বেশি সময় ধরে দীর্ঘতম আয়ুষ্কালের রেকর্ড তৈরি করেছে। ২০১৯ সালে ‘ঘূর্ণিঝড় কিয়ার’ ৯ দিনের জীবন নিয়ে এই রেকর্ড ধরে রেখেছিল।
গুজরাট সরকার বলেছে, তারা প্রায় ৭০০টি এশিয়াটিক সিংহের আবাসস্থল গির ন্যাশনাল পার্কে বন্যপ্রাণী উদ্ধার এবং ভেড়ে পড়া গাছগুলো সরানোর জন্য ১৮৪টি ইমার্জেন্সি অ্যাকশন স্কোয়াড মোতায়েন করেছে।
শুক্রবার দ্বিতীয় দিনের জন্য পাকিস্তানের দক্ষিণ উপকূলীয় শহরগুলোতে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণ পাকিস্তানে আকস্মিক বন্যা সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হয়েছিল।
পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ গত গ্রীষ্মে দেশটির সবচেয়ে মারাত্মক বন্যা হয়েছিল, যাতে কমপক্ষে ১ হাজার ৭৩৯ জন নিহত এবং ৩৩ মিলিয়ন বাস্তুচ্যুত হয়েছিল।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বৃহস্পতিবার বলেছে যে তারা ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব মোকাবিলায় পাকিস্তানের প্রচেষ্টাকে সমর্থন করছে। পাকিস্তানের সরকার এবং স্থানীয় সাহায্য গোষ্ঠীগুলো বাস্তুচ্যুত লোকদের বিনামূল্যে খাবার এবং পানীয় জল সরবরাহ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেছেন, তার সরকার ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের রক্ষায় কাজ করছে।
বৃহস্পতিবার ইউনিসেফ সতর্ক করেছে যে পাকিস্তান ও ভারতে ৬ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি শিশু ভয়াবহ ঝুঁকিতে রয়েছে।
ইউনিসেফের দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক পরিচালক নোয়ালা স্কিনার বলেছেন, ‘পাকিস্তানে আঘাত হানা ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় সিন্ধুর শিশু এবং পরিবারগুলোর জন্য একটি নতুন সংকট সৃষ্টি করেছে। এমনিতেই এই প্রদেশটি গত বছরের ভয়াবহ বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।’
২০২১ সালের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের ফ্রিকোয়েন্সি, সময়কাল ও তীব্রতা ১৯৮২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বৃদ্ধি অব্যাহত থাকবে। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি আরও জরুরি।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: রাঙ্গামাটিতে জরুরি সতর্কতা জারি, কাপ্তাই হ্রদে নৌ চলাচল বন্ধ
বুকে ব্যথা নিয়ে ফের হাসপাতালে ভর্তি নেপালের প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউদেল
নেপালের প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউদেল মঙ্গলবার সকালে বুকে ব্যথা নিয়ে ফের কাঠমান্ডুর একটি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, অসুস্থ ৭৮ বছর বয়সী পাউদেলকে কার্ডিয়াক চেকআপের জন্য কাঠমান্ডুর শহীদ গাঙ্গালাল ন্যাশনাল হার্ট সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সূত্রটি এএনআইকে জানিয়েছে, ‘বিভিন্ন পরীক্ষা করা হচ্ছে। এখনও রিপোর্ট আসেনি।’
হাসপাতাল এবং প্রেসিডেন্টের কার্যালয় অবশ্য তার হাসপাতালে ভর্তির বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেয়নি বা তার স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা জানায়নি।
আরও পড়ুন: নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউদেল হাসপাতালে ভর্তি
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, ‘সকালে প্রেসিডেন্ট বুকে ব্যথার কথা জানান এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের ২৫৪ নম্বর ভিআইপি কেবিনের ৬ নম্বর বেডে রাখা হয়েছে।’
মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তির আগে পাউদেল শনিবার সর্বশেষ তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছিলেন।
গত এপ্রিল মাসের শুরুতে পাউদেলকে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সে (এআইআইএমএস) চিকিৎসার জন্য শ্রী এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে নয়াদিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
নেপালের প্রেসিডেন্ট দিল্লিতে যাওয়ার আগে চারদিন কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় টিচিং হাসপাতালে (টিইউটিএইচ) চিকিৎসা নিয়েছিলেন। চলতি বছরের ৫ এপ্রিল ভর্তি হওয়া রামচন্দ্রকে চার রাত পর ছেড়ে দেওয়া হয়।
গত ১৩ মার্চ নেপালি কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা রাম চন্দ্র পাউদেল নেপালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন নেপালের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাওদেল
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল
তীব্র ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’: মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান
আশঙ্কা করা হচ্ছে এই সপ্তাহের শেষের দিকে ভারত ও পাকিস্তানের উপকূলে আঘাত হানবে তীব্র ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয়। এটি এ অঞ্চলের জন্য এই বছরের প্রথম তীব্র ঘূর্ণিঝড়। তাই কর্তৃপক্ষ সব ধরনের মাছ ধরার কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে এবং উদ্ধারকর্মী মোতায়েন করেছে।
আরব সাগরে উদ্ভূত ঘূর্ণিঝড় বিপর্যয় পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশ এবং ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটের উপকূলরেখা বরাবর ধেয়ে আসছে।
আগামী বৃহস্পতিবার এটি স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে এবং পাকিস্তানের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্যানুসারে বাতাসের গতিবেগ সর্বোচ্চ ২০০ কিলোমিটার (১২৪ মাইল) পর্যন্ত পৌঁছতে পারে।
ঝড়ের গতিপথে থাকা ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চল এবং শহরগুলোতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টি সম্ভবত পাকিস্তানের করাচির পাশাপাশি গুজরাট রাজ্যের ভারতের দুটি বৃহত্তম বন্দর মুন্দ্রা ও কাণ্ডলাকে প্রভাবিত করবে।
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র প্যাটেল এক টুইট বার্তায় বলেছেন, ভারতের সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও উপকূলরক্ষীরাও প্রস্তুতিতে সহায়তা করছে।
প্যাটেল বলেন, প্রয়োজনে নিম্নাঞ্চলে বসবাসকারী লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দুর্যোগের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করতে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখায় ক্ষতিগ্রস্ত মিয়ানমারে বাংলাদেশের পাঠানো ত্রাণসামগ্রী হস্তান্তর
পাকিস্তানে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশগত সমন্বয় মন্ত্রী শেরি রেহমান বলেছেন, সিন্ধু ও বেলুচিস্তান প্রদেশের সমস্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগকে উচ্চ সতর্কতায় রাখা হয়েছে।
এছাড়া পাকিস্তানের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বিমানবন্দর কর্মকর্তাদের অবিলম্বে বিমান ও পণ্যসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পদক্ষেপ নিতে বলেছে।
গত বছর ভয়াবহ বন্যায় ১ হাজার ৭৩৯ জন মারা যাওয়ার এবং ৩০ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হওয়ার পর থেকে বিপর্যয়ই প্রথম মারাত্মক ঘূর্ণিঝড় যা পাকিস্তানে আঘাত হানার শঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আরব সাগর অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় বৃদ্ধি পেয়েছে, যার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার বিষয়টি আরও জরুরি হয়ে পড়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের আর্থ সিস্টেম সায়েন্টিস্ট রঘু মুর্তুগুড্ডে বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্র ইতোমধ্যেই উষ্ণ হয়ে উঠেছে।’
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে যে আরব সাগরের তাপমাত্রা প্রায় ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (২ দশমিক ২ ডিগ্রি ফারেনহাইট) বেড়েছে। এই বছরের মার্চ থেকেই তীব্র ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির জন্য অনুকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, ২০২১ সালের একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড়ের ফ্রিকোয়েন্সি, সময়কাল ও তীব্রতা ১৯৮২ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে যে উষ্ণ জলবায়ুতে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা বাড়বে।
২০১৯ সালে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তঃসরকারি প্যানেলের একটি প্রতিবেদনে দেখা গেছে যে ১৯৫০ সাল থেকে ভারত মহাসাগরে সমুদ্র পৃষ্ঠের উষ্ণতা সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে।
পাকিস্তানের জলবায়ু পরিবর্তন কাউন্সিলের সদস্য এবং ইসলামাবাদভিত্তিক সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আবিদ কাইয়ুম সুলেরি বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের যুগে ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ কেবল বাড়বে এবং এড়ানো যাবে না। বিশেষ করে করাচি, মুম্বাই, ঢাকা ও কলম্বোর মতো দক্ষিণ এশিয়ার বৃহৎ উপকূলীয় শহরগুলোর জন্য আরও ভাল প্রস্তুতি এবং উন্নত নীতিমালা এখন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে; যা জীবন ও মৃতের সংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধিতে প্রভাব ফেলতে পারে।’
২০২১ সালে ঘূর্ণিঝড় তাকতাই ছিল সর্বশেষ মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়, যা একই অঞ্চলের স্থলভাগে আছড়ে পড়েছিল। সেই ঘূর্ণিঝড়ে ১৭৪ জনের প্রাণহানি ঘটে এবং ১ দশমিক ৫৭ বিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: ঘূর্ণিঝড় মোখা: রাঙ্গামাটিতে জরুরি সতর্কতা জারি, কাপ্তাই হ্রদে নৌ চলাচল বন্ধ
ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে উপকূলের ৬ জেলায় জলোচ্ছ্বাস হতে পারে: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণে নিহত ২৫, আহত ১৪৫
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে শনিবার বেশ কয়েকটি বাড়ি ধসে পড়ে এবং কমপক্ষে ২৫ জন নিহত ও ১৪৫ জন আহত হয়।
জ্যেষ্ঠ উদ্ধার কর্মকর্তা খাতের আহমেদ বলেন, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নু, লাক্কি মারওয়াত এবং কারাক জেলায় বৃষ্টি ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে; গাছ উপড়ে গেছে এবং বৈদ্যুতিক সঞ্চালন টাওয়ার ভেঙে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, কর্মকর্তারা আহতদের জরুরি ত্রাণ দেওয়ার জন্য কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে বন্যা: ১৬ কোটি ডলারের জরুরি সহায়তার আবেদন জাতিসংঘের
গত বছর বর্ষায় বৃষ্টি ও বন্যায় পাকিস্তানে ১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়, প্রায় ৩৩ মিলিয়ন মানুষ দুর্যোগের কারণে প্রভাবিত হয় এবং প্রায় ৮ মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়।
প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব কমাতে সরকার শুক্রবার উপস্থাপিত জাতীয় বাজেটের খসড়ায় জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতার জন্য ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ করেছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ শনিবার দুর্যোগে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন এবং কর্তৃপক্ষকে ত্রাণ তৎপরতার গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কারণ
পাকিস্তানে লোডশেডিং: সরকারের পক্ষে অবস্থান পাক জ্বালানি মন্ত্রীর
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখতে আদালতে আপিলের রায়ে জিতেছেন হংকংয়ের পুরষ্কারপ্রাপ্ত সাংবাদিক
পুরস্কার বিজয়ী হংকংয়ের এক সাংবাদিক সোমবার তার অনুসন্ধানী তথ্যচিত্রে কাজ করার সঙ্গে সম্পর্কিত তার দোষী সাব্যস্ততা বাতিল করে আদালতের একটি আপিল রায়ে জয় পেয়েছেন। যা একটি বিরল ঘটনা। একই সঙ্গে নিজ ভূখণ্ডে গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সমর্থন করে আদালতের রায়টি।
বাও চয় ২০২১ সালের এপ্রিলে সাংবাদিকতার উদ্দেশ্যে গাড়ির মালিকানার নথি পেয়ে সরকারকে প্রতারণা করার জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। পরে তিনি তার অনলাইন আবেদনে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি ‘অন্যান্য ট্রাফিক এবং পরিবহন সম্পর্কিত সমস্যাগুলোর জন্য’ তথ্য ব্যবহার করবেন।
অনুসন্ধানী এই সাংবাদিক তার ডকুমেন্টারির জন্য ২০১৯ সালে ব্যাপক সরকার বিরোধী বিক্ষোভের সময় একটি ট্রেন স্টেশনের ভিতরে বিক্ষোভকারী এবং যাত্রীদের ওপর জনতার আক্রমণের অপরাধীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছিলেন।
সেই সময়ে মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার জন্য চয়েকে ৬ হাজার হংকং ডলার (৭৬৫ মার্কিন ডলার) জরিমানা করা হয়েছিল এবং এটিকে ‘হংকংয়ের সমস্ত সাংবাদিকদের জন্য একটি খুব অন্ধকার দিন’ বলে অভিহিত করা হয়েছিল। সেই রায়টি শহরের সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে সংকুচিত করা হিসেবে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
সোমবার, শহরের শীর্ষ আদালতের বিচারকরা সর্বসম্মতভাবে একটি লিখিত রায়ে চয়ের পক্ষে রায় দিয়েছেন, তার দোষী সাব্যস্ততা এবং সাজা বাতিল করেছেন।
রায়ে বলা হয়েছে, ‘মিথ্যা ও তথ্যের বিষয়গুলো আপিলকারীর বিরুদ্ধে ভুলভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কারণ প্রশ্নযুক্ত তারিখে গাড়ির ব্যবহারের বিষয়ে তার সাংবাদিকতা তদন্ত 'অন্যান্য ট্রাফিক এবং পরিবহন সম্পর্কিত বিষয়'-এর ব্যাপক ক্যাচল বিভাগে পড়েছিল।’
রায়ে আরও বলা হয়েছে, ‘এমনকি যদি তা নাও করে তবে এটি ‘একটি অপ্রতিরোধ্য অনুমান নয় যে তিনি এটিকে মিথ্যা বলে জানতেন।’
‘৭.২১ হু ওনস দ্যা ট্রুথ’ নামের গল্পটির সহ-প্রযোজনা করেছিল চয়। যেটি ২০২১ সালে হিউম্যান রাইটস প্রেস অ্যাওয়ার্ডে চীনা ভাষার ডকুমেন্টারি পুরস্কার জিতেছে৷ বিচারক প্যানেল এটিকে ‘একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনের ক্লাসিক’ হিসাবে স্বাগত জানিয়েছে যেটি ‘সবচেয়ে ছোটটিকে অনুসরণ করেছিল’ ক্লুস, ভয় বা অনুগ্রহ ছাড়াই ক্ষমতাবানদের জিজ্ঞাসাবাদ করা।’
২০১৯ সালের বিক্ষোভের পরে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউনে, দুটি ভোকাল মিডিয়া আউটলেট - অ্যাপল ডেইলি এবং স্ট্যান্ড নিউজ বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে এবং তাদের কিছু শীর্ষ পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: এবার হংকংয়ের ‘নিউ ট্যালেন্ট অ্যাওয়ার্ড‘ জিতলো রেহানা মরিয়ম নূর
অ্যাপল ডেইলির প্রতিষ্ঠাতা জিমি লাই ২০২০ সালে প্রণীত একটি সুস্পষ্ট জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে যোগসাজশের অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন। দুই প্রাক্তন স্ট্যান্ড নিউজ সম্পাদককে একটি ঔপনিবেশিক যুগের রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের অধীনে অভিযুক্ত করা হয়েছে যা সমালোচনামূলক কণ্ঠস্বর ছিন্ন করার জন্য ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।
হংকং, একটি প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশ। ১৯৯৭ সালে চীনের শাসনাধীনে ফিরে আসে। কিন্তু সমালোচকরা বলছেন যে বেইজিংয়ের প্রতিশ্রুতি যে এটি শহরের স্বাধীনতা বজায় রাখবে তা ক্রমশ কমছে।
গত মাসে প্রকাশিত রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস-এর সর্বশেষ বিশ্ব প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশ ও অঞ্চলের মধ্যে হংকং ১৪০তম স্থানে রয়েছে।
গ্লোবাল মিডিয়া ওয়াচডগ বলেছে যে নগরটি ২০২০ সাল থেকে একটি অভূতপূর্ব ধাক্কার সম্মুখীন হয়েছে, যখন নিরাপত্তা আইন চালু হয়েছিল।
আরও পড়ুন: মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে সতর্ক করলো হংকংয়ের বেইজিং অফিস
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে ভূমিধসে খনি শ্রমিক আবাসনে নিহত ১৯
দক্ষিণ-পশ্চিম চীনে একটি খনির কোম্পানীর কর্মী আবাসিকে ভূমিধসে ১৯ জন নিহত হয়েছে।
রবিবার ভোরে এই বিপর্যয় ঘটে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিপর্যয়টি সিচুয়ান প্রদেশের লেশান কাউন্টির একটি পাহাড়ী গ্রামীণ জেলায় কয়েক সপ্তাহ ধরে অবিরাম বৃষ্টিপাত হওয়ার কারণে ভূমিধস হয়।
রবিবার বিকালে উদ্ধার অভিযানা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়াদের খুঁজে বের করতে ১৮০ জনেরও বেশি লোককে একত্রিত করা হয়েছিল।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারকার সংস্থা সিসিটিভির মতে, নিহতরা সবাই জিনকাইয়ুয়ান মাইনিং কোম্পানির কর্মী।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিধসে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২১
আর্দ্র, বৃষ্টির আবহাওয়াসহ, দক্ষিণ-পশ্চিম চীন ভূমিধস প্রবণ এলাকা। বিশেষ করে এমন এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে যেখানে কৃষিকাজ, বন উজাড়, প্রকৌশল প্রকল্প এবং খনির কাজের কারণে বৃহৎ আকারে মাটি সরানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইকুয়েডরে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ অনেকে
সিগন্যালিং সিস্টেমের ত্রুটির কারণে প্রাণঘাতী এই ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে: ভারতের রেলমন্ত্রী
ভারতের রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছেন, ইলেকট্রনিক সিগন্যালিং সিস্টেমের ত্রুটির কারণে একটি ট্রেন ভুলভাবে ট্র্যাক পরিবর্তন করায় এই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। রবিবার নয়াদিল্লি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে তিনি এ তথ্য জানিয়েছেন।
এরআগে, শুক্রবার রাতে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া থেকে দক্ষিণ তামিলনাড়ুর রাজধানী চেন্নাই যাওয়ার পথে কলকাতার প্রায় ২২০ কিলোমিটার (১৩৭ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে বালাসোর জেলায় করমণ্ডল এক্সপ্রেস নামের যাত্রীবাহী একটি ট্রেন, একটি পণ্যবাহী ট্রেন ও যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয় এবং আরও শতাধিক আহত হয়।
রেলমন্ত্রী বলেন, ‘কে এটা করেছে এবং কারণ কী তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে।’
কয়েক দশকের মধ্যে এটি ভারতের সবচেয়ে মারাত্মক রেল দুর্ঘটনার মধ্যে একটি।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, উচ্চগতিসম্পন্ন করমণ্ডল এক্সপ্রেসকে প্রধান ট্র্যাক লাইনে প্রবেশ করার জন্য একটি সংকেত দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু পরে সিগন্যালটি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল এবং ট্রেনটি পরিবর্তে একটি সংলগ্ন লুপ লাইনে প্রবেশ করেছিল; যেখানে এটি একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কোচগুলো অন্য ট্র্যাকে উল্টে যায়, যার ফলে বিপরীত দিক থেকে আসা যশবন্তপুর-হাওড়া এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয় এবং তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
যাত্রীবাহী ট্রেনে মোট ২ হাজার ২৯৬ জন যাত্রী ছিল।
আরও পড়ুন: ভারতে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় ২৮০ জনের বেশি নিহত, আহত ৯০০
পণ্য বহনকারী ট্রেনগুলো প্রায়ই পাশের একটি সংলগ্ন লুপ লাইনে পার্ক করা হয়, যাতে একটি পাসিং ট্রেনের জন্য মূল লাইন পরিষ্কার থাকে।
শনিবার সন্ধ্যায় ১৫টি লাশ উদ্ধার করা হয় এবং রাতভর ভারি ক্রেন ব্যবহার করে একটি ইঞ্জিন অপসারণের প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল।
ওড়িশার ফায়ার অ্যান্ড ইমার্জেন্সি সার্ভিসের মহাপরিচালক সুধাংশু সারঙ্গি বলেছেন, ইঞ্জিনে কোনও লাশ পাওয়া যায়নি এবং রবিবার সকালে উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে।
মোদি শনিবার ত্রাণ তৎপরতা পরীক্ষা করতে এবং উদ্ধার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
তিনি একটি হাসপাতালও পরিদর্শন করেন, যেখানে তিনি আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কিছু রোগীর সঙ্গেও কথা বলেন।
মোদি সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের কষ্ট তিনি অনুভব করছেন।
তিনি বলেন, সরকার তাদের সাহায্য করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করবে এবং দায়ীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
একটি ট্রেনের ১০ থেকে ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায় এবং কিছু বিধ্বস্ত কোচের ধ্বংসাবশেষ পাশের আরেকটি ট্র্যাকের উপর পড়ে।
রেল মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অমিতাভ শর্মা বলেছেন, বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি যাত্রীবাহী ট্রেনের সঙ্গে আরেকটি পণ্যবাহী ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। যার ফলে দ্বিতীয় ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছিল।
আরও পড়ুন: এক নজরে ভারতের সাম্প্রতিক কয়েকটি প্রাণঘাতী ট্রেন দুর্ঘটনা
রেল নিরাপত্তা উন্নত করার জন্য সরকারি প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ভারতে প্রতিবছর কয়েকশো ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। বেশিরভাগ ট্রেন দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করা হয় মানবিক ত্রুটি বা সেকেলে সিগন্যালিং যন্ত্রপাতিকে।
১৯৯৫ সালের আগস্ট মাসে নয়াদিল্লির কাছে দুটি ট্রেন সংঘর্ষে ৩৫৮ জন মারা যায়, এটি ভারতের সবচেয়ে খারাপ ট্রেন দুর্ঘটনা।
২০১৬ সালে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন ইন্দোর ও পাটনা শহরের মাঝামাঝি একটি জায়গায় লাইনচ্যুত হয়ে ১৪৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
প্রতিদিন ভারতজুড়ে ১২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ ১৪ হাজার ট্রেনে চড়ে ৬৪ হাজার কিলোমিটার (৪০ হাজার মাইল) পথ ভ্রমণ করে।
আরও পড়ুন: ভারতে দুই ট্রেনের সংঘর্ষে ২৩৩ জন নিহত, ৯ শতাধিক মানুষ আহত