এশিয়া
তাজিকিস্তানের কম জনবহুল এলাকায় ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প
চীনের সুদূর পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলের কাছে তাজিকিস্তানের কম জনবহুল প্রত্যন্ত এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোরে ৬ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ অনুসারে, এটি তাজিকিস্তানের মুরঘব থেকে ৬৭ কিলোমিটার পশ্চিমে এবং ২০ কিলোমিটার গভীরে আঘাত হানে।
পামির পর্বতমালায় কয়েক হাজার লোকের জনসংখ্যা নিয়ে মুরঘব হচ্ছে জেলা রাজধানী।
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টার জানিয়েছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ২ এবং এর গভীরতা ১০ কিলোমিটার। তবে, এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ভূমিকম্পে রেস্তোরাঁ ধসে ৪ জনের মৃত্যু
তুরস্কে নতুন করে ভূমিকম্পে নিহত ৩, আহত ২ শতাধিক
তুরস্কে নতুন করে ভূমিকম্পে নিহত ৩, আহত ২ শতাধিক
তুরস্কের কিছু অংশে সোমবার ৬ দশমিক ৪ মাত্রার একটি নতুন ভূমিকম্পে তিন জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে। আরও অনেক ভবন ধসে পড়েছে, কিছু লোক আটকা পড়েছে, এবং পার্শ্ববর্তী সিরিয়াতেও বেশ কয়েকটি আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিষয়টি তুরস্কের সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছে।
সোমবারের ভূমিকম্পটি তুরস্কের হাতায় প্রদেশের ডেফনে শহরে কেন্দ্রীভূত ছিল, যা ৬ ফেব্রুয়ারি আঘাত হানা ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। এটি সিরিয়া, জর্ডান, সাইপ্রাস, ইসরায়েল ও মিশরের মতো দূরবর্তী অঞ্চলে অনুভূত হয় এবং তারপরে দ্বিতীয় ৫দশমিক ৮ মাত্রার আরেকটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু জানিয়েছেন, এ ঘটনায় তিনজন নিহত ও ২১৩ জন আহত হয়েছেন। তিনটি ধসে পড়া ভবনে তল্লাশি ও উদ্ধার কাজ চলছে, যেখানে ছয়জন আটকা পড়েছে বলে ধারণা করা হয়।
আরও পড়ুন: তুরস্কের ভূমিকম্প অঞ্চল পরিদর্শনে ব্লিঙ্কেন, ১০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি
হ্যাবারতুর্ক টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, হাতায় পুলিশ একটি তিনতলা ভবনের ভেতর আটকা পড়া একজনকে উদ্ধার করেছে। খবরে আরও বলা হয়, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে আসবাবপত্র ও অন্যান্য জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে লোকজনকে সহায়তাকারীরাও আটকা পড়েন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা জানিয়েছে, আলেপ্পোতে ধ্বংসস্তূপ ধসে ছয়জন আহত হয়েছেন। উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার সিভিল ডিফেন্স সংস্থা হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ১৩০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই প্রাণঘাতী নয়।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টা পর দম্পতি জীবিত উদ্ধার, মারা গেছে তাদের সন্তান
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্প পরবর্তী প্রধান অগ্রগতি
তুরস্কের ভূমিকম্প অঞ্চল পরিদর্শনে ব্লিঙ্কেন, ১০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন দক্ষিণ তুরস্ক এবং উত্তর সিরিয়ায় ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ একটি প্রদেশ সফর করেছেন।
রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) একটি হেলিকপ্টারে চড়ে তিনি ওই এলাকাগুলো সফর করেছেন। এসময় তিনি এই অঞ্চলের জন্য আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
ইনসিরলিক এয়ার বেসে ব্লিঙ্কেন বলেছেন,‘এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রচেষ্টা হতে যাচ্ছে’ মার্কিন-তুর্কি যৌথভাবে দুর্যোগ সহায়তা বিতরণ করছে। ‘দুর্ভাগ্যবশত অনুসন্ধান এবং উদ্ধার কাজ শেষ হচ্ছে। পুনরুদ্ধার কার্যক্রম চলছে এবং তারপরে একটি ব্যাপক পুনর্নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হবে।
ভূমিকম্পের কয়েকদিন পর দু’টি দেশে ৪৪ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার পর প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তুরস্ক এবং সিরিয়ার জন্য ৮৫ মিলিয়ন ডলার সহায়তা ঘোষণা করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটি অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল, চিকিৎসা সরবরাহ ও সরঞ্জামও পাঠিয়েছে।
ব্লিঙ্কেনের ঘোষিত অতিরিক্ত সহায়তার মধ্যে রয়েছে জরুরি শরণার্থী ও অভিবাসন তহবিলে ৫০ মিলিয়ন এবং মানবিক সহায়তায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
দুই বছর আগে দায়িত্ব নেয়ার পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যাটো মিত্র তুরস্কে প্রথম সফর করছেন। ব্লিঙ্কেন জার্মানিতে মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে যোগদানের পর রবিবার আদানার কাছে ইনসিরলিক বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছেছেন।
আরও পড়ুন: উত্তর-পশ্চিম তুরস্কে ৫.৯ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত
তিনি তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলুর সঙ্গে হেলিকপ্টার থেকে তুরস্কের হাতায় প্রদেশ সফর করেন। তিনি মার্কিন এবং তুর্কি পরিষেবা কর্মীদের সঙ্গে সঙ্গে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত তুর্কি সামরিক পরিবারের সঙ্গে দেখা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
হেলিকপ্টার সফরের পর শীর্ষ মার্কিন কূটনীতিক ‘ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ, ভবনের সংখ্যা, অ্যাপার্টমেন্টের সংখ্যা, ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ির সংখ্যা দেখে বলেন, এটি পুনর্নির্মাণের জন্য ব্যাপক প্রচেষ্টা চালাতে যাচ্ছে।
ব্লিঙ্কেন বলেছেন, ‘বর্তমানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যাদের প্রয়োজন তাদের সাহায্য পাওয়া, তাদের শীতকালীন সহযোগিতা করা এবং তাদের স্বনির্ভর করা।’ নিকটবর্তী সৈন্যরা সাহায্যের বাক্সগুলো নামাচ্ছে ... আমরা সঙ্গে থাকব, যতক্ষণ না আমরা কাজ শেষ করি।’
মার্কিন বিমান বাহিনীর ৩৯তম এয়ার বেস উইং এর আবাসস্থল ইনসারলিক -এ সাহায্য বিতরণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক কেন্দ্র করা হয়েছে। সারা বিশ্ব থেকে সরবরাহগুলো ঘাঁটিতে পাঠানো হয়েছে এবং ট্রাক এবং যে সকল গ্রামে পৌঁছানো কঠিন সে সকল গ্রামের হেলিকপ্টারযোগে তা অভাবীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ব্লিঙ্কেন সোমবার তুর্কি কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় যাবেন। এসময় তিনি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে একটি বৈঠক করবেন। ভূমিকম্পের প্রভাবের পাশাপাশি, ব্লিঙ্কেন ন্যাটোতে যোগদানের জন্য সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডের প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। যা তুরস্ক বিলম্বিত করছে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্প পরবর্তী প্রধান অগ্রগতি
তুরস্কে ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টা পর দম্পতি জীবিত উদ্ধার, মারা গেছে তাদের সন্তান
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পের ১২ দিনেরও বেশি সময় পর ধসে পড়া অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের নিচ থেকে এক দম্পতি ও তাদের ছেলেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। তবে তাদের ছেলে হাসপাতালে মারা যায়। শনিবার তুরস্কের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বিষয়টি জানিয়েছে।
রাষ্ট্র পরিচালিত আনাদোলু সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, কিরগিজস্তান থেকে আগত এক উদ্ধারকারী দল তুরস্কের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর আন্তাকিয়ায় অ্যাপার্টমেন্ট ভবনের ধ্বংসস্তূপ খনন করার সময় সামির মুহাম্মদ আকর (৪৯), তার স্ত্রী রাগদা আকর (৪০) এবং তাদের ১২ বছর বয়সী ছেলেকে উদ্ধার করে।
স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১১টায় বা ৬ ফেব্রুয়ারি ভূমিকম্পের ২৯৬ ঘণ্টা পরে তাদের উদ্ধার করে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে পাঠানো হয়। টিভি ফুটেজে দেখা গেছে, স্ট্রেচারে শুয়ে থাকা অবস্থায় চিকিৎসকরা ওই ব্যক্তির বাহুতে আইভি ড্রিপ ঠিক করছেন।
কিরগিজস্তানের একজন উদ্ধারকর্মী জানান, দলটি দুটি শিশুর লাশও পেয়েছে। সংবাদ সংস্থাটি পরে জানায় যে শিশুটিও সামির মুহাম্মদ ও রাগদা আকরের সন্তান।
আরও পড়ুন: তুরস্কে আরও ৪ জনের লাশ উদ্ধার করল বাংলাদেশ সম্মিলিত দল
হাতায় প্রদেশের রাজধানী আন্তাকিয়া সফরকালে তুরস্কের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ফাহরেতিন কোকা বলেছেন, বাবা (সামির মুহাম্মদ) এর জ্ঞান ছিল এবং মুস্তাফা কামাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আনাদোলু আমেরিকান টিভি ব্যক্তিত্ব ও মার্কিন সিনেটের সাবেক প্রার্থী মেহমেত ওজকে উদ্ধার হওয়া ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করতে দেখা যায়।
সংবাদ সংস্থা আরও উল্লেখ করে, সামির মুহাম্মদ আকর বর্ণনা করেন যে কীভাবে তিনি নিজের প্রস্রাব পান করে বেঁচে ছিলেন। তিনি মেহমেত ওজকে বলেছিলেন যে তার সন্তানরা প্রথম দুই বা তিন দিন ধরে তার কণ্ঠস্বরে সাড়া দিয়েছিল কিন্তু তার পরে তিনি কিছুই শোনেননি।
তুরস্কে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যদিও দেশটির দুর্যোগ মোকাবিলা সংস্থার প্রধান বলেছেন যে রবিবার কার্যক্রম শেষ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ভূমিকম্প: ঘানার ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ান আতসুর মরদেহ উদ্ধার
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে এল আরও ১২টি চিতা
দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আরও ১২টি চিতা ভারতে এসেছে। শনিবার ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিমানে করে চিতাগুলোকে জোহানেসবার্গ থেকে ভারতে মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রের এয়ার ফোর্স স্টেশনে আনা হয়। এরপরে চিতাগুলোকে কুনো জাতীয় উদ্যানে অবমুক্ত করা হয়।
এর মধ্যে রয়েছে- পাঁচটি মহিলা ও সাতটি পুরুষ চিতা।
আরও পড়ুন:৭০ বছর পর ভারতে ফিরে এসেছে চিতাবাঘ
এর আগে গত বছর নামিবিয়া থেকে আটটি চিতা আনা হয়েছিল। নতুন আসা ১২টি চিতাকে আটটি নামিবিয়ান চিতার সঙ্গে একই অভয়ারণ্যে রাখা হবে।
এর মধ্যদিয়ে ভারতে চিতার সংখ্যা বেড়ে ২০টিতে পৌঁছেছে।
এদিকে ১৯৫২ সালে ভারত থেকে চিতাকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।
তবে ভারত সরকারের একটি উচ্চাভিলাষী স্থানান্তর প্রকল্প ‘প্রজেক্ট চিতা’-র অধীনে ভারতে চিতা আনা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ধরা পড়ল বিরল প্রজাতির চিতা বিড়াল
সুন্দরবন থেকে গরু আনতে গিয়ে বাঘের মুখে কৃষক
তিন দেশের মহড়ায় নতুন হাইপারসনিক মিসাইল পরীক্ষা করবে রাশিয়া
ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণ এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে চীনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যে ঘনিষ্ট তিনটি দেশ রাশিয়া, চীন এবং দক্ষিণ আফ্রিকা শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার ভারত মহাসাগরের উপকূলে নৌ মহড়া শুরু করতে প্রস্তুতি নিয়েছে।
গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রথম বার্ষিকীতে মোসি-২ নামে ১০ দিনের একটি মহড়া অনুষ্ঠিত হবে৷
রাশিয়ান একটি ফ্রিগেটের অ্যাডমিরাল গোর্শকভ চলতি সপ্তাহের শুরুতে কেপটাউনে পৌঁছেছে। যার পাশে জেড এবং ভি অক্ষর রয়েছে। এই অক্ষর দিয়ে মূলত ইউক্রেনের সামনের সারিতে রাশিয়ান অস্ত্র চিহ্নিত করে এবং রাশিয়ায় দেশপ্রেমের প্রতীক হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
কেপ টাউনের বন্দরে রাশিয়ান ফ্রিগেট যাত্রাকালে ইউক্রেনের পতাকা উড়িয়ে একটি ছোট বাহনে প্রতিবাদ জানায়। সামরিক মহড়ার বিরোধিতাকারী দক্ষিণ আফ্রিকানরা শুক্রবার কেপটাউনের রাশিয়ান কনস্যুলেটের সামনে মহড়া বিরোধী বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
অ্যাডমিরাল গোর্শকভের আগমন যথেষ্ট বিতর্কের জন্ম দিয়েছে কারণ এটি অত্যাধুনিক জিরকন হাইপারসনিক মিসাইল দিয়ে সজ্জিত। রাশিয়া বলছে এটি এমন একটি অস্ত্র যা যে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে সমুদ্রে এবং স্থলে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারে।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, যৌথ নৌ মহড়ার সময় যুদ্ধজাহাজটি একটি জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করবে। আন্তর্জাতিক মহড়ায় ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম উৎক্ষেপণ হবে এই পরীক্ষা।
দক্ষিণ আফ্রিকার সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অ্যাডমিরাল গোর্শকভ ছাড়াও, সামুদ্রিক মহড়ায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য জাহাজগুলোর মধ্যে একটি রাশিয়ান তেল ট্যাঙ্কার, একটি দক্ষিণ আফ্রিকান ফ্রিগেট এবং তিনটি চীনা জাহাজ অন্তর্ভুক্ত থাকবে - একটি ডেস্ট্রয়ার, একটি ফ্রিগেট এবং একটি সাপোর্ট বাহন।
যৌথ নৌ মহড়াটিও আসে যখন ওয়াশিংটনের সঙ্গে চীনের উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের মধ্যেই যৌথ নৌ মহড়াটি শুরু হচ্ছে। চীনের বেলুনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে যাত্রা করে এবং অবশেষে মার্কিনিরা গুলি করে ফেলায়।
আরও পড়ুন: ভারতে বিবিসি’র কার্যালয়ে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান, কর ফাঁকির অভিযোগ
দক্ষিণ আফ্রিকার কোয়াজুলু-নাটাল প্রদেশের ডারবান এবং রিচার্ডস বে বন্দর থেকে সামুদ্রিক মহড়া অনুষ্ঠিত হবে।
মহড়ার গণমাধ্যমের কভারেজ সীমিত করা হয়েছে।
মহড়ায় অংশ নিয়ে অভ্যন্তরীণ সমালোচনার মুখে পড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বিরোধী গণতান্ত্রিক জোট বলেছে যে এটি দেখায় যে ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকা নিরপেক্ষ নয়।
দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে নৌ মহড়াকে ‘একটি বহুজাতিক সামুদ্রিক মহড়া’ বলে বর্ণনা করেছে।
সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘অপারেশনাল দক্ষতা এবং জ্ঞান ভাগাভাগি করার লক্ষ্যে নৌ মহড়া ‘দ. আফ্রিকা, রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে ইতোমধ্যে বিকাশমান সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে।’
সরকার জানিয়েছে ,দক্ষিণ আফ্রিকার নৌবাহিনী এবং অন্যান্য সামরিক শাখার অন্তত ৩৫০ জন সদস্য মহড়ায় অংশগ্রহণ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে ২০১৯ সালে তিনটি দেশ কেপটাউনে মোসি-১ নৌ মহড়া করেছিল।
আরও পড়ুন: উ.কোরিয়া ফের সমুদ্রের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে: দ. কোরিয়া
তুরস্কে ভূমিকম্প: ঘানার ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ান আতসুর মরদেহ উদ্ধার
তুরস্কের ভূমিকম্পের প্রায় দুই সপ্তাহ পর ঘানার ফুটবল তারকা ক্রিশ্চিয়ান আতসুর (৩১) বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শনিবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, তার এজেন্ট নানা সেচেরে আতসুর লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আতসু ঘানার আন্তর্জাতিক প্রিমিয়ার লিগের দল এভারটন, চেলসি ও নিউক্যাসলে খেলেছেন।
৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে হাতায়ের আন্তাকায় তার অ্যাপার্টমেন্ট ধসে পড়ার পর থেকেই আতসু নিখোঁজ ছিলেন।
তুর্কি শীর্ষ-ফ্লাইট ক্লাব হাতায়স্পোর এক টুইটে জানায়, ‘শোক প্রকাশ করার মতো কোনো ভাষা আমাদের জানা নেই। আতসু, আমরা তোমাকে ভুলব না। তোমার ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’
ভূমিকম্পের পর হাতায়স্পোর প্রথমে জানিয়েছিল ‘আহত অবস্থায়’ আতসুকে উদ্ধার করা হয়েছে, কিন্তু একদিন পরে তারা নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে ১ বিলিয়ন ডলার সহায়তার আহ্বান জাতিসংঘের
উ.কোরিয়া ফের সমুদ্রের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে: দ. কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ং থেকে শনিবার ফের সমুদ্রের দিকে একটি সন্দেহভাজন দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। দ.কোরিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ সামরিক মহড়ার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দেয়ার একদিন পরেই উ.কোরিয়া এই ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
সিউলের জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ জানিয়েছেন, এদিন বিকাল ৫টা ২২ মিনিটে পিয়ংইয়ং এর সুনান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা থেকে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রটি নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তবে অস্ত্রটি কোথায় পড়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে বলা হয়নি।
উ.কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া হিসেবে দ.কোরিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে মিলে একাধিক পরিকল্পিত সামরিক মহড়া ঘোষণা করে।
এরপর উ.কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের বিরুদ্ধে ‘অভূতপূর্ব’ শক্তিশালী পদক্ষেপের হুমকি দিয়েছে।
উ.কোরিয়া চলতি বছরের ১ জানুয়ারি পরীক্ষামূলকভাবে প্রথম একটি স্বল্প-পাল্লার অস্ত্রের পরীক্ষা চালায়। এবছর উত্তর কোরিয়া ৭০টিরও বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে অস্ত্র প্রদর্শনে রেকর্ড করেছে। যার মধ্যে মার্কিন মূল ভূখণ্ডে পৌঁছানোর সম্ভাব্য সক্ষমতাসহ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও রয়েছে।
উ.কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষাগুলো মূলত দ.কোরিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে পারমাণবিক হামলার হুমকি।
আরও পড়ুন: আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করল উত্তর কোরিয়া
উ.কোরিয়ার নেতা কিম জং উন ২০২৩ সালে তার পরমাণু কর্মকাণ্ড দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছেন।
তিনি দেশটির পারমাণবিক ওয়ারহেডগুলো ‘উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি’ ও ‘শত্রু’ দ.কোরিয়াকে লক্ষ্য করে যুদ্ধক্ষেত্রের কৌশলগত পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপক উৎপাদন এবং আরও উন্নত আইসিবিএমগুলো বিকাশের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গত সপ্তাহে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে একটি বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের সময় এক ডজনেরও বেশি আইসিবিএম প্রদর্শন করেন।
সীমিত সম্পদ থাকা সত্ত্বেও বিপুল সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কিম তার দেশের সামরিক সক্ষমতা সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতার ওপর জোর দিয়ে আসছেন।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনায় অচলাবস্থা বজায় রয়েছে।
শুক্রবার উ.কোরিয়া এক বিবৃতিতে এই বছর ওয়াশিংটন ও সিউলকে ২০ রাউন্ডের বেশি সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। যার মধ্যে বড় আকারের মহড়াও রয়েছে এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যাহত করছে’ বলে বর্ণনা করেছে।
দ.কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আইনপ্রণেতা কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে সিউল ও ওয়াশিংটন মার্চের মাঝামাঝি সময়ে একটি বার্ষিক কম্পিউটার-সিমুলেটেড সম্মিলিত প্রশিক্ষণের আয়োজন করবে।
দ.কোরিয়ার জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতির উপমন্ত্রী হিও তাই-কেউনের মতে, ১১ দিনের প্রশিক্ষণ উ. কোরিয়ার পারমাণবিক হুমকির পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ বিভিন্ন অনির্দিষ্ট লক্ষ্য প্রতিফলিত করবে।
হিও বলেন, দুই দেশ মার্চের মাঝামাঝি সময়ে যৌথ মহড়াও পরিচালনা করবে, যা বিগত কয়েক বছরে অনুষ্ঠিত হওয়া মহড়ার তুলনায় বড় হবে।
আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার মিসাইল পরীক্ষা
শিগগিরই নতুন ‘কৌশলগত অস্ত্র’ প্রদর্শন করবে উত্তর কোরিয়া: কিম
ফিলিপাইনে ভূমিকম্পের কারণে খালি করা হলো হাসপাতাল
ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় প্রদেশ একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প কেঁপে ওঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতের ভূমিকম্পে লোকজন তাদের বাড়িঘর থেকে বের হয়ে আসে।
একইভাবে বেশ কিছু রোগীকে কলিজিয়াম সরকারি হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কলিজিয়াম সরকারি হাসপাতাল ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
উপকূলীয় শহর বাতুয়ান থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার (ছয় দশমিক আট মাইল) পশ্চিমে ১০ কিলোমিটার (ছয় মাইল) গভীরতায় একটি স্থানীয় ফল্ট লাইনে ছয় মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে।
মাসবাত প্রদেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এতে হতাহতের বা বড় ক্ষয়ক্ষতির কোনো তাৎক্ষণিক খবর পাওয়া যায়নি।
মাসবেত প্রাদেশিক দুর্যোগ-প্রশমন কর্মকর্তা অ্যাডোনিস ডিলাও বলেন, মধ্যরাতের প্রায় দুই ঘণ্টা পর ভূমিকম্পটি আঘাত হানে, যার ফলে অনেক মানুষ ঘুম থেকে জেগে ওঠে।
প্রাদেশিক রাজধানী মাসবেট শহরের রেড ক্রস কর্মকর্তা এমজে অক্সেমার টেলিফোনে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে বলেছেন, ‘প্রথম ঝাঁকুনিটি সত্যিই শক্তিশালী ছিল এবং তারপর কেঁপে উঠেছিল যা আমাকে এবং আমার শিশুকে জাগিয়েছিল।’ ‘আমরা মাটির গর্জন শুনতে পাচ্ছিলাম।’
ডিলাও জানিয়েছ, মাসবেটের একটি প্রাদেশিক হাসপাতাল থেকে কয়েক ডজন রোগীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে ভূমিকম্পের কারণে তিনতলা ভবনে কিছু ফাটল দেখা দেয়ার পরও ফিরিয়ে আনা হয়। মাসবেট শহরের একটি ছোট সরকারি কলিজিয়ামের ছাদের একটি অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
দিলাও টেলিফোনে এপিকে জানান, মাসবেট শহরের কেন্দ্রস্থলে মুদি এবং ওষুধের দোকানসহ কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কংক্রিটের স্তম্ভে এবং কিছু বাড়িতে ফাটল দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্প: ধ্বংসস্তূপ থেকে জীবিতদের উদ্ধারে উল্লাস
ডিলাও বলেছিলেন যে দোকান বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কখন খুলতে হবে সে সম্পর্কে যদিও মালিকদের বিচক্ষণতা আছে। তবুও তাদের সরকারি সুরক্ষা পরিদর্শকদের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। কারণ ভূমিকম্পের পরে কমপক্ষে দুটি শক্তিশালী আফটারশক অনুভূত হয়েছিল।
তিনি বলেন, টাইফুনের বিপরীতে, যা মানুষকে সময় দেয়ার জন্য ভবিষ্যদ্বাণী করা যেতে পারে, ভূমিকম্প হঠাৎ করে আঘাত হানতে পারে।
সিভিল ডিফেন্স কার্যালয় বলছে, ভূমিকম্পটি মাসবেট এবং নিকটবর্তী টিকাও দ্বীপের অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় এবং কিছু স্কুলের ক্লাস স্থগিত করা হয়। স্থানীয় কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখছে।
ফিলিপাইন প্রশান্ত মহাসাগরের ‘রিং অব ফায়ার’ বরাবর অবস্থিত। প্রশান্ত মহাসাগরের চারপাশে ত্রুটির একটি চাপ থাকায় বিশ্বের বেশিরভাগ ভূমিকম্প এই অঞ্চলে হয়। এটির কারণে প্রতি বছর প্রায় ২০টি টাইফুন এবং গ্রীষ্মমন্ডলীয় ঝড় আঘাত হানে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দুর্যোগ-প্রবণ দেশগুলোর মধ্যে একটি।
উত্তর ফিলিপাইনে ১৯৯০ সালে সাত দশমিক সাত মাত্রার একটি ভূমিকম্পে প্রায় দুই হাজার মানুষ মারা গেছে।
আরও পড়ুন: তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা ২৮ হাজার ছাড়াল
ভারতে বিবিসি’র কার্যালয়ে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান, কর ফাঁকির অভিযোগ
কর ফাঁকির অভিযোগে নয়াদিল্লি ও মুম্বাইয়ে বিবিসি কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিনের মতো তল্লাশি চালাচ্ছে দেশটির কর কর্মকর্তারা। সংস্থাটির ব্যবসায়িক কার্যক্রম সম্পর্কে তথ্য জানতেই তারা এই তল্লাশি চালাচ্ছে।
বিরোধী রাজনৈতিক দল এবং অন্যান্য গণমাধ্যম সংস্থাগুলো ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা হিসাবে এই অভিযানের সমালোচনা করছে।
গণমাধ্যমে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু গণমাধ্যমকর্মী বলেছেন, কর কর্মকর্তারা বৃহস্পতিবার কয়েকজন সাংবাদিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তবে কোম্পানির ব্যবসায়িক নির্বাহী এবং তাদের কার্যালয়ে অভিযান চালাতে পারেনি।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচকরা অনুসন্ধানের সময় নিয়ে প্রশ্ন তু্লেছেন। বিবিসি মোদির সমালোচনামূলক একটি ডকুমেন্টারি যুক্তরাজ্যে প্রচারের কয়েক সপ্তাহ পরে এই অভিযান চালানো হলো।
ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কাঞ্চন গুপ্তা বলেছেন, ডকুমেন্টারির সঙ্গে অভিযানের কোন সম্পর্ক নেই।
মিরর নাউ টেলিভিশন সংবাদ চ্যানেলকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গুপ্তা বলেন, ‘আপনি একটি গণমাধ্যম সংস্থা হোন বা আপনি একজন নির্মাতা হোন, ট্যাক্স আইনের উদ্দেশ্য প্রত্যেকের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য। যদি আপনি সেই ট্যাক্স আইন লঙ্ঘন করেন, তবে আইনের যথাযথ প্রক্রিয়া হিসাবে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মঙ্গলবার সকালে কর্মকর্তারা সেখানে আসার পর থেকে বিবিসি অফিসে তল্লাশি চালানোর জন্য ভারতীয় কর বিভাগ এখন পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দেয়নি।
ব্রিটেনের সরকারি অর্থায়নে চালিত জাতীয় সম্প্রচারকারী সংস্থাটি মঙ্গলবার বলেছে, তারা ভারতীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই পরিস্থিতির সমাধান হবে’ বলে আশাবাদী।
আরও পড়ুন: ঝাড়খন্ডে অ্যাপার্টমেন্টে অগ্নিকাণ্ডে শিশুসহ নিহত ১৪, আহত ১২
বিবিসি বলেছে, ‘অনেক কর্মী এখন ভবন ছেড়ে চলে গেছে। কিন্তু কয়েকজনকে থাকতে বলা হয়েছে এবং চলমান অনুসন্ধানে সহযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, আমাদের আউটপুট এবং সাংবাদিকতা স্বাভাবিকভাবে চলতে ‘থাকে।’ বিবিসি ব্যবস্থাপনা সম্পাদকীয় এবং অন্যান্য কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে।
সংবাদ সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই) বৃহস্পতিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তাদের বরাতে বলেছে যে তদন্তকারীরা বিবিসি কর্মীদের কাছ থেকে আর্থিক তথ্য সংগ্রহ করেছেন এবং সংবাদ সংস্থার ইলেকট্রনিক এবং কাগজের ডেটার কপি তৈরি করেছেন। কিছু সংবাদ কর্মীকে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
সংস্থাটি বলেছে, বিবিসির সহযোগী সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক কর এবং স্থানান্তর মূল্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলো তদন্তে জরিপটি চালানো হচ্ছে।
ভারতের নিউজ ব্রডকাস্টার ও ডিজিটাল অ্যাসোসিয়েশন বিবিসি অফিসে আয়কর ‘অভিযান’ এর সমালোচনা করেছে।
বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, যদিও অ্যাসোসিয়েশনটি ‘কোন প্রতিষ্ঠানই আইনের ঊর্ধ্বে নয় বলে মনে করে, এটি গণমাধ্যমকে ভয় দেখানো এবং সাংবাদিক ও সংবাদ সংস্থার অবাধ কার্যকারিতায় হস্তক্ষেপ করার যে কোনও প্রচেষ্টার নিন্দা করে।’
প্রধান বিরোধী কংগ্রেস দলের নেতা, মল্লিকার্জুন খড়গে মোদী সরকারের অধীনে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর সরকারি হস্তক্ষেপ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।
ডকুমেন্টারি ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন,’ গত মাসে যুক্তরাজ্যে সম্প্রচারিত হয়েছিল। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য গুজরাটে ২০০২ সালে মুসলিম বিরোধী দাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রীর ভূমিকা মূল্যায়ন করে। সেসময় তিনি ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। সহিংসতায় এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।
মোদি দাবি করেছেন যে তার তত্ত্বাবধানে থাকা গুজরাট সরকার রক্তপাতের অনুমতি বা উৎসাহ কোনটাই দেয়নি। সুপ্রিম কোর্টও বলেছে, তার বিরুদ্ধে মামলা করার কোনও প্রমাণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। গত বছর, আদালত মোদির অব্যাহতি নিয়ে প্রশ্ন করে একজন মুসলিম ভুক্তভোগীর দায়ের করা একটি আবেদন খারিজ করে দেয়।
বিবিসি ওয়েবসাইট অনুসারে, দুই-অংশের ডকুমেন্টারির দ্বিতীয় অংশে ‘২০১৯ সালে নরেন্দ্র মোদির পুনঃনির্বাচনের পরে তার সরকারের ট্র্যাক রেকর্ড’ পরীক্ষা করা হয়েছে।
এই প্রোগ্রামটি ভারত সরকারের কাছ থেকে একটি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া টেনেছে। এটি দেশে দেখানো বন্ধ করতে তথ্য প্রযুক্তি আইনের অধীনে জরুরি ক্ষমতার আহ্বান জানানো হয়েছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্ক্রিনে দেখানো বন্ধ করার ওপর জোর দিচ্ছে। টুইটার ও ইউটিউবসহ সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলো ডকুমেন্টারিটির লিঙ্কগুলো সরানোর জন্য সরকারি অনুরোধ মেনে চলছে।
বিবিসি সেই সময়ে বলেছিল যে ‘ব্যাপক গবেষণা’ করে ডকুমেন্টারিটি করা হয়েছে এবং এতে বিভিন্ন কণ্ঠ ও মতামত দেয়া হয়েছে।
তার বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ভারত সরকারকে সিরিজে উত্থাপিত বিষয়গুলোর উত্তর দেয়ার অধিকারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু, এই বিষেয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে অস্বীকার করে।’
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডকুমেন্টারিটিতে বস্তুনিষ্ঠতার অভাব থাকার কথা উল্লেখ করে ‘অসম্মানিত আখ্যানকে বিশেষভাবে তুলে ধরতে বানোয়াট একটি প্রচারণা অংশ’ বলে অভিহিত করেছে।
আরও পড়ুন: ভ্যালেন্টাইনস ডে-তে গরুকে আলিঙ্গন করার আবেদন প্রত্যাহার করল ভারত
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ক্রমাগত হ্রাস পেয়েছে। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার দ্বারা প্রকাশিত ২০২২ সালের প্রেস ফ্রিডম ইনডেক্সে ১৮০টি দেশের মধ্যে আট ধাপ নেমে ১৫০-এ এসেছে দেশটি। মিডিয়া ওয়াচডগ গোষ্ঠীগুলো মোদী সরকারকে একটি ব্যাপক ইন্টারনেট আইনের অধীনে সামাজিক মাধ্যমের সমালোচনাকে থামানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে যা টুইটার এবং ফেসবুকসহ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোকে সরাসরি সরকারের তত্ত্বাবধানে রাখে।
সরকারের সমালোচনা করা কিছু মিডিয়া আউটলেট ট্যাক্স অনুসন্ধানের নামে তল্লাশির শিকার হয়েছে।
কর্তৃপক্ষ ২০২১ সালে একই দিনে বাম ঘরানার ওয়েবসাইট নিউজক্লিক এবং স্বাধীন মিডিয়া পোর্টাল নিউজ লন্ড্রির অফিসে তল্লাশি চালায়। কর কর্মকর্তারা দৈনিক ভাস্কর পত্রিকার বিরুদ্ধে ২০২১ সালে কর ফাঁকির অভিযোগও এনেছিলেন। যখন এটি কোভিড-১৯ মহামারিকালে গণ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া এবং ভাসমান লাশের প্রতিবেদন এবং সরকারের অব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
এর আগে ২০১৭ সালে সরকারের তদন্ত ব্যুরো বলেছিল যে এটি নিরপেক্ষ অবস্থানের জন্য পরিচিত নয়াদিল্লি টেলিভিশনের অফিসে অভিযান চালানোর সময় ঋণ খেলাপির মামলাগুলো তদন্ত করছে।
আরও পড়ুন: মোদির তথ্যচিত্র প্রকাশের পর বিবিসির দিল্লি অফিসে তল্লাশি