এশিয়া
ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে আরও ১৮৩ রোহিঙ্গার অবতরণ
দুই দিনের মধ্যে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল কয়েক সপ্তাহ সাগরে ভেসে বেড়ানোর পর সোমবার ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় আচেহ প্রদেশের একটি সৈকতে অবতরণ করেছে। বিষয়টি সরকারি কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান ফৌজি বলেন, ‘আচেহের পিডি জেলার উপকূলীয় গ্রাম মুয়ারা টিগায় উজং পাই সমুদ্র সৈকতে সন্ধ্যার সময় কমপক্ষে ১৮৫ জন পুরুষ, মহিলা ও শিশু একটি কাঠের নৌকা থেকে স্থলে নামে।’
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে ৫৮ রোহিঙ্গার অবতরণ
তিনি আরও বলেন, ‘সমুদ্রে কয়েক সপ্তাহ থাকার কারণে পানিশূন্যতা ও ক্লান্তিতে তারা খুব দুর্বল ছিল।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত একটি ভিডিও দেখা যায় যে ১৮৫ জন পানিশূন্যতা ও ক্লান্তিতে কাতর রোহিঙ্গার অনেকেই সাহায্যের জন্য কাঁদছেন।
৮৩ জন পুরুষ, ৭০ জন নারী ও ৩২ জন শিশুকে সোমবার মধ্যরাতের আগে একটি গ্রামের হল থেকে সামরিক ট্রাকযোগে একটি স্কুলে স্থানান্তরিত করা হয়।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে ২০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী নৌকা উদ্ধার করুন: দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংসদ সদস্যদের আহ্বান
রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে পিইউআইসি প্রতিনিধিদলকে কাজ করার আহ্বান মোমেনের
উ. কোরিয়ার ড্রোন সীমান্ত অতিক্রমের পর দ. কোরিয়ার সতর্কীকরণ গুলি
উত্তর কোরিয়ার ড্রোন সীমান্ত অতিক্রম করে দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করায় সেগুলোকে তাড়াতে সতর্কীকরণ গুলি চালিয়েছে দেশটির সামরিক বাহিনী।
সোমবার এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা।
দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন, উত্তর তার সর্বশেষ পরীক্ষার কার্যক্রমে দুটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র চালু করার কয়েকদিন পরে এই ঘটনা ঘটলো।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সোমবার সকালে উত্তর কোরিয়ার বেশ কয়েকটি ড্রোন আন্ত-কোরিয়ান সীমান্ত অতিক্রম করলে দক্ষিণের ভূখণ্ডে তা সনাক্ত করা হয়।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়ার ড্রোনগুলোকে গুলি করতে ফাইটার জেট এবং অ্যাটাক হেলিকপ্টার চালু করার আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী সতর্কবার্তা সম্প্রচার করেছে এবং সতর্কীকরণ গুলি করেছে।
তবে গুলি করে ড্রোনগুলো ভূপাতিত করা হয়েছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
প্রথমবারের মতো ২০১৭ সালে উত্তর কোরিয়ার ড্রোন দক্ষিণ কোরিয়ার আকাশসীমায় প্রবেশ করেছিল, যখন একটি সন্দেহভাজন উত্তর কোরিয়ার ড্রোন দক্ষিণ কোরিয়ায় বিধ্বস্ত হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক কর্মকর্তারা তখন বলেছিলেন যে ড্রোনটি দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ছবি তুলেছে।
এর আগে উত্তর কোরিয়া তাদের ড্রোন কর্মসূচির কথা বলেছে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার কর্মকর্তারা বলেছেন উত্তরের কাছে প্রায় ৩০০টি ড্রোন রয়েছে। ২০১৪ সালে সীমান্তের দক্ষিণে বেশ কয়েকটি সন্দেহভাজন উত্তর কোরিয়ার ড্রোন পাওয়া গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন যে ড্রোনগুলো কম প্রযুক্তির কিন্তু একটি সম্ভাব্য নিরাপত্তা হুমকি হিসাবে বিবেচিত হতে পারে।
আরও পড়ুন:তাইওয়ানের পর দ. কোরিয়া গেলেন পেলোসি
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চিফস অফ স্টাফের মতে, গত শুক্রবার উত্তর কোরিয়া তার পূর্ব জলসীমার দিকে দুটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। উৎক্ষেপণটিকে দক্ষিণ কোরিয়া-মার্কিন যৌথ বিমান মহড়ার প্রতিবাদ হিসেবে দেখা হয়েছিল যেটিকে উত্তর কোরিয়া আক্রমণের মহড়া হিসেবে দেখে।
অনেক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর উত্তর কোরিয়া একটি অভূতপূর্ব সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা পরিচালনা করেছে যা তাদের অস্ত্র উন্নত করার প্রচেষ্টা এবং ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার প্রতিদ্বন্দ্বীদের জন্য চাপ দেয়ার প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করছে।
সম্প্রতি, উত্তর তার প্রথম গুপ্তচর উপগ্রহ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম আরও মোবাইল আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র সক্ষমতা অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বড় পরীক্ষাগুলো চালিয়েছে বলে দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন একমাত্র সমাধান: দ. কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত
ইন্দোনেশিয়ার সৈকতে ৫৮ রোহিঙ্গার অবতরণ
ইন্দোনেশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ আচেহের একটি সমুদ্র সৈকতে কয়েক সপ্তাহ ভেসে বেড়ানোর পর রবিবার কয়েক ডজন ক্ষুধার্ত ও দুর্বল রোহিঙ্গাকে পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দেশটির সরকারি কর্মকর্তা।
স্থানীয় পুলিশ প্রধান রোলি ইউইজা অ্যাওয়ে বলেন, ৫৮ জনের দল রবিবার ভোরে আচেহ বেসার জেলার মাছ ধরার গ্রাম লাদং-এর ইন্দ্রপাত্র সৈকতে পৌঁছায়। গ্রামবাসীরা জাতিগত রোহিঙ্গাদের দলটিকে একটি কাঠের নৌকায় দেখে তাদের অবতরণ করতে সাহায্য করে এবং তারপর কর্তৃপক্ষকে তাদের আগমনের কথা জানায়।
ইউইজা অ্যাওয়ে আরও বলেন, ‘তারা ক্ষুধা ও পানিশূন্যতার কারণে খুব দুর্বল দেখায়। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সমুদ্রে দীর্ঘ ও তীব্র সমুদ্রযাত্রার পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আচেহ-তে অভিবাসন ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের কাছ থেকে পরবর্তী নির্দেশের জন্য অপেক্ষা করার সময় রোহিঙ্গারা গ্রামবাসী ও অন্যদের কাছ থেকে খাবার, পানি পেয়েছে।’
আরও পড়ুন: ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে ইউএনএইচসিআরের সুপারিশ বিবেচনা করবে যুক্তরাষ্ট্র
তিনি আরও বলেন, তাদের মধ্যে অন্তত তিনজনকে চিকিৎসার জন্য একটি ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং অন্যরা বিভিন্ন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
আন্দামান সাগরে কয়েক সপ্তাহ ধরে ভেসে বেড়ানো একটি ছোট নৌকায় থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থী বলে বিশ্বাস করা ১৯০ জনকে উদ্ধার করার জন্য শুক্রবার জাতিসংঘ ও অন্যান্য গ্রুপগুলো দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে অনুরোধ করে।
আরও পড়ুন: অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জুলিয়েটা ভলস নয়েসের রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন
অবিলম্বে ২০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী নৌকা উদ্ধার করুন: দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংসদ সদস্যদের আহ্বান
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল
নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন সাবেক কমিউনিস্ট বিদ্রোহীদের নেতা পুষ্পকমল দাহাল। রবিবার তার প্রাক্তন প্রতিপক্ষ এবং অন্যান্য ছোট রাজনৈতিক দলের সমর্থনে প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।
গত মাসের নির্বাচনে হিমালয়ান জাতির রাজনীতিতে একটি বড় মোড় ঘোরায় মাওবাদী কমিউনিস্ট পার্টির নেতা পুষ্পকমল দাহাল প্রধানমন্ত্রীত্বের দাবি জানাতে রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভান্ডারীর সঙ্গে দেখা করার পর তার কার্যালয় থেকে এই ঘোষণা দেয়া হলো।
সংসদের নিম্নকক্ষ নবনির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদের অর্ধেকেরও বেশি সদস্যের সমর্থন রয়েছে দাহালের প্রতি।
তিনি সম্ভবত সোমবার শপথ নেবেন এবং সপ্তাহের শেষের দিকে ২৭৫ সদস্যের সংসদে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণ করবেন।
সাতটি দল দাহালের প্রতি তাদের সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যার মধ্যে খড়গা প্রসাদ অলির নেতৃত্বে তার বন্ধু-শত্রু কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (ইউনাইটেড মার্কসবাদী-লেনিনবাদী) রয়েছে।
দাহাল ও অলি ২০১৭ সালের সংসদ নির্বাচনে অংশীদারিত্ব করেছিলেন। কিন্তু পাঁচ বছরের মেয়াদের মাঝপথে তারা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কে থাকবেন তা নিয়ে বিবাদ শুরু করে। প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছিল যে তারা মেয়াদ ভাগ করবে। কিন্তু অলি দৃশ্যত প্রত্যাখ্যান করেন, যা দাহালকে ক্ষুব্ধ করে।
দাহাল অংশীদারিত্ব ত্যাগ করেন এবং শের বাহাদুর দেউবা এবং তার নেপালি কংগ্রেস দলের সঙ্গে দেউবার নেতৃত্বে একটি নতুন জোট সরকারের অংশ হতে জোটবদ্ধ হন।
২০ নভেম্বরের নির্বাচনের পর কে প্রধানমন্ত্রী হবেন তা নিয়ে একমত হতে না পারায় দেউবা ও দাহাল বাদ পড়েন।
দাহাল প্রচন্ড নামেও পরিচিত, বা ‘উগ্র একজন’ ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত একটি সহিংস মাওবাদী কমিউনিস্ট বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৭ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল এবং অনেকের অবস্থা অজানা ছিল।
মাওবাদীরা ২০০৬ সালে তাদের সশস্ত্র বিদ্রোহ ছেড়ে দিয়ে জাতিসংঘের সহায়তা শান্তি প্রক্রিয়ায় যোগ দেয়। এবং মূলধারার রাজনীতিতে প্রবেশ করে। দাহালের দল ২০০৮ সালে সর্বাধিক সংসদীয় আসন লাভ করে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু এক বছর পরে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে মতবিরোধের কারণে পদত্যাগ করেন।
নির্বাচনের আগে, দাহাল অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে তার মূল লক্ষ্য ছিল দেশকে একটি স্থিতিশীল সরকার দেয়া যা পুরো পাঁচ বছরের মেয়াদ পূর্ণ করবে।
নেপাল রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সরকারে ঘন ঘন পরিবর্তন এবং দলগুলোর মধ্যে কলহের কারণে বাধাগ্রস্ত হয়েছে, যা সংবিধান রচনায় বিলম্ব এবং ধীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য দায়ী করা হয়েছে।
দেশটিতে ২০০৮ সালে শতাব্দী প্রাচীন রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পর থেকে কোনো সরকারই পূর্ণ মেয়াদ পূর্ণ করতে পারেনি।
রাশিয়ায় অবৈধ আশ্রয়কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে ২২ জনের মৃত্যু
সাইবেরিয়ার কেমেরোভো শহরের একটি ব্যক্তিগত আশ্রয়কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে ২২ জন নিহত হয়েছে।
শনিবার এই হতাহতের কথা জানিয়েছেন রাশিয়ান কর্মকর্তারা।
প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয় মস্কো থেকে ৩ হাজার কিলোমিটার (১৯শ’ মাইল) পূর্বের একটি শহরের কাঠের বিল্ডিংটিকে নার্সিং হোম হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু বড় অপরাধের তদন্ত করার পর দেশটির তদন্ত কমিটি বলেছিল যে এটি ‘জীবনের কঠিন পরিস্থিতিতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য একটি অস্থায়ী বাসস্থান।’
আরও পড়ুন:ভৈরবে জুতার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, নিয়ন্ত্রণে ৮টি ইউনিট
কমিটি বলেছে যে ভবনটি ভাড়া দেয়া ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘনের কারণে একাধিক ব্যক্তির মৃত্যু হওয়ার জন্য তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কমিটির বিবৃতিতে তাকে চিহ্নিত করা হয়নি, তবে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে তিনি একজন স্থানীয় পাদ্রী ছিলেন।
গভীর রাতে আগুন লাগার কারণ নির্ধারণ করা হয়নি। তবে তদন্ত কমিটি জানিয়েছে যে আগুন লাগার আগের দিন বাসিন্দারা আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালককে বলেছিলেন যে ভবনের কয়লা চালিত বয়লারটি খারাপ ছিল।
অগ্নিকাণ্ডে আরও ছয়জন আহত হয়েছেন এবং দোতলা ভবনটি ধ্বংস হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফ্রান্সের অ্যাপার্টমেন্টে অগ্নিকাণ্ডে ৫ শিশুসহ নিহত ১০
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়া মহড়ার পর ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ উ. কোরিয়ার
উত্তর কোরিয়া শুক্রবার তার পূর্ব জলসীমার দিকে দুটি স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ যুদ্ধবিমান মহড়ার পর এটিই উ. কোরিয়ার সর্বশেষ শক্তি প্রদর্শন।
দ. কোরিয়ার সামরিক বাহিনী শুক্রবার বিকাল ৪টা ৩২ মিনিটে উত্তর কোরিয়ার রাজধানী থেকে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ শনাক্ত করেছে।
উত্তর কোরিয়া এই বছর অনেক বেশি সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে। কিছু বিশেষজ্ঞ এটিকে ভবিষ্যতে নিষেধাজ্ঞা (উ. কোরিয়ার ওপর থেকে) তুলে নেয়ার জন্য তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের চাপ দেয়ার জন্য তার অস্ত্রের সক্ষমতা বাড়ানোর প্রচেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন।
সম্প্রতি উ. কোরিয়া তার প্রথম ‘গুপ্তচর উপগ্রহ’ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম আরও ভ্রম্যমাণ আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় বড় পরীক্ষাগুলো করার দাবি করেছে।
শুক্রবার, জাপান বলেছে যে তারা উত্তর কোরিয়ার অন্তত একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরেছে।
আরও পড়ুন: উত্তর কোরিয়ার দূরপাল্লার মিসাইল পরীক্ষা
তবে উত্তর কোরিয়া ঠিক কী ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কোরীয় উপদ্বীপ এবং জাপানের মধ্যবর্তী জলসীমায় পড়ার আগে যথাক্রমে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার (১৫৫ মাইল) এবং ৩৫০ কিলোমিটার (২২০ মাইল) অতিক্রম করেছে।
জাপানের উপপ্রতিরক্ষা মন্ত্রী তোশিরো ইনো বলেছেন যে জাপানের শনাক্ত করা ক্ষেপণাস্ত্রটি সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার (৩০ মাইল) উচ্চতা দিয়ে ৩০০ কিলোমিটার (180 মাইল) পথ পাড়ি দিয়েছে।
তিনি বলেন, ক্ষেপণাস্ত্রটিতে একটি ‘অনিয়মিত’ আবিস্কার সম্পর্কে জানাতে পারে। এটি উ. কোরিয়ার ইল্লেখিত অত্যন্ত দ্রুতগতিসম্পন্ন পারমাণবিক সক্ষম কেএন-২৩ হতে পারে, যা রাশিয়ার ‘ইস্কান্দার’ ক্ষেপণাস্ত্রের আদলে তৈরি করা হয়েছিল।
দ.কোরিয়ার সামরিক বাহিনী এই উৎক্ষেপণকে ‘একটি গুরুতর উস্কানি’ বলে অভিহিত করেছে যা আন্তর্জাতিক শান্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
দ.কোরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়া সর্বোচ্চ প্রস্তুতি বজায় রাখবে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে উ. কোরিয়ার পদক্ষেপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।
ইনো উত্তর কোরিয়াকে বারবার অস্ত্র পরীক্ষার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্যভাবে উত্তেজনা বাড়ানোর ব্যাপারে অভিযুক্ত করেছে।
এই ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ গত মঙ্গলবার কোরীয় উপদ্বীপের কাছে মার্কিন-দ. কোরিয়ার বিমান সামরিক মহড়ার প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্র ও দ. কোরিয়ার বিরুদ্ধে পরমাণু ব্যবহারের হুমকি কিমের
কারণ উ. কোরিয়া এর আগেও বলেছে যে গত মাসগুলোতে তার পরীক্ষামূলক কার্যক্রম মূলত তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের তার আগে করা সম্মিলিত মহড়ার সতর্কতা হিসাবে করা হয়েছিল।
যদিও ওয়াশিংটন ও সিউল বলেছে যে তাদের মহড়াগুলো প্রতিরক্ষামূলক প্রকৃতির, কিন্তু উত্তর কোরিয়া সেগুলোকে আক্রমণের অনুশীলন বলে অভিযুক্ত করে।
সর্বশেষ মার্কিন-দক্ষিণ কোরিয়ার মহড়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বি-৫২ পারমাণবিক-সক্ষম বোমারু বিমান এবং এফ-২২ স্টিলথ ফাইটার জেট এবং দ. কোরিয়ার অন্যান্য উন্নত যুদ্ধবিমান ড্র করা হয়েছে।
দ.কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, পারমাণবিকসহ সমস্ত সম্ভাব্য সামরিক সক্ষমতা নিয়ে তার এশিয়ান মিত্রকে রক্ষা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি বাড়ানোর বিষয়ে একটি দ্বিপক্ষীয় চুক্তির অংশ ছিল এই প্রশিক্ষণ।
দ.কোরিয়ার প্রতিরক্ষা কর্মকর্তারা বলেছেন, দ. কোরিয়ার বিমান বাহিনীর সঙ্গে এই সপ্তাহে আরও যৌথ মহড়ার জন্য এফ-২২ জেটগুলো দক্ষিণ কোরিয়ায় থাকার কথা ছিল।
তারা আরও জানিয়েছে, কিন্তু মার্কিন বিমানগুরো অবশেষে আবহাওয়ার কারণে জাপানে তাদের ঘাঁটিতে ফিরে এসেছে।
অন্যদিকে উ.কোরিয়া বলেছে যে সামরিক শক্তি শনাক্তকারী তার প্রথম উপগ্রহ স্থাপনের জন্য রবিবার ক্যামেরা ও অন্যান্য সিস্টেম পরীক্ষা করার জন্য উৎক্ষেপণ বাহন হিসেবে তার পুরানো ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করার পরে এই বিমান মহড়া করেছে তারা (মার্কিন-দ.কোরিয়া)।
উ. কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া মহাকাশ থেকে দেখা দক্ষিণ কোরিয়ার শহরগুলোর কম-রেজোলিউশনের ছবিও প্রকাশ করেছে।
উ. প্রধান কিম ইয়ো জং দ. কোরিয়ার মূল্যায়নকে উপহাস করে বলেছেন, উ. কোরিয়ার এখনও জীবিত।
এর আগে দ. কোরিযা বলেছিল আইসিবিএম অর্জনে উ. কোরিয়ার এখনও প্রযুক্তিগত বাধা রয়েছে।
আরও পড়ুন: আবারও ব্যালিস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করল উত্তর কোরিয়া
কুখ্যাত ফরাসি সিরিয়াল কিলার নেপালের কারাগার থেকে মুক্ত
স্বীকৃত ফরাসি সিরিয়াল কিলার চার্লস শোভরাজ নেপালের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন। আমেরিকান এবং কানাডিয়ান পর্যটককে হত্যার দায়ে তার বেশিরভাগ সাজা ভোগ শেষে শুক্রবার মুক্তি পেয়েছেন তিনি।
শোভরাজকে কাঠমান্ডুর সেন্ট্রাল জেল থেকে বের করে দেয়ার পর তার ভ্রমণ নথি প্রস্তুত করার জন্য ইমিগ্রেশন অধিদপ্তরে একটি কঠোর প্রহরায় পুলিশ কনভয়ে তিনি অপেক্ষা করবেন।
দেশটির সুপ্রিম কোর্ট আদেশ দিয়েছেন যে নেপালের কারাগারে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত শোভরাজকে খারাপ স্বাস্থ্য, ভাল আচরণ এবং ইতোমধ্যে তার বেশিরভাগ সাজা ভোগ করায় তাকে মুক্তি দেয়া হবে। নেপালে যাবজ্জীবন সাজা ২০ বছর।
আদেশে আরও বলা হয়েছে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে দেশ ছাড়তে হবে।
শোভরাজের অ্যাটর্নি গোপাল সিওয়াকোটি চিতান সাংবাদিকদের বলেছেন যে ভ্রমণ নথিগুলোর জন্য নেপালে ফরাসী দূতাবাসে অভিবাসন বিভাগকে অনুরোধ করতে হবে।
এতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। বড়দিনের ছুটির জন্য সপ্তাহের শেষ দিকে অফিস বন্ধ থাকে।
আদালতের নথিতে বলা হয়েছে যে তিনি ইতোমধ্যে তার ৭৫ শতাংশেরও বেশি সাজা ভোগ করেছেন, যা তাকে মুক্তির যোগ্য করে তুলেছে। এছাড়াও তার হৃদরোগ রয়েছে।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল নেপাল, ঘুমন্ত ৬ জনের মৃত্যু
ফরাসি ব্যক্তি অতীতে বেশ কয়েকজন পশ্চিমা পর্যটককে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন এবং তিনি আফগানিস্তান ও ভারতে কমপক্ষে ২০ জনকে হত্যা করেছেন বলে মনে করা হয়।
১৯৭০ এর দশকে থাইল্যান্ড, তুরস্ক, নেপাল, ইরান এবং হংকং ছাড়া নেপালে ২০০৪ সালে অভিযুক্ত হওয়ার পরে তিনি প্রথমবার আদালতে দোষী সাব্যস্ত হন।
শোভরাজকে চুরির সন্দেহে নয়াদিল্লির সর্বোচ্চ-নিরাপত্তা বেষ্টিত তিহার কারাগারে দুই দশক ধরে রাখা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৯৭ সালে কোনো অভিযোগ ছাড়াই ফ্রান্সে নির্বাসিত করা হয়েছিল। ২০০৩ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি কাঠমান্ডুতে পুনরুত্থিত হন।
তার ডাকনাম দ্য সার্পেন্ট একজন ছদ্মবেশী এবং পালাবার কারিগর হিসাবে তার খ্যাতি রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের পর হত্যাই ‘সিরিয়াল কিলার’ মুন্নার নেশা
একদিনে তাইওয়ানের দিকে ৩৯টি যুদ্ধবিমান ও ৩টি জাহাজ পাঠিয়েছে চীন
চীনের সামরিক বাহিনী শক্তি প্রদর্শনের অংশ হিসেবে ২৪ ঘণ্টায় তাইওয়ানের দিকে ৩৯টি বিমান এবং তিনটি জাহাজ পাঠিয়েছে। বৃহস্পতিবার তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানিয়েছে।
তাইওয়ানের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার মধ্যে ৩০টি চীনা বিমান তাইওয়ান প্রণালীর মাঝামাঝি অতিক্রম করেছে। এটি একটি অনানুষ্ঠানিক সীমানা, যা দুইপক্ষের দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত ছিল।
তাইওয়ানের দেয়া ফ্লাইট প্যাটার্নগুলোর ছবি অনুসারে, এই বিমানগুলো দ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং তারপরে নতুন আরও বিমান যোগ হওয়ার পরে একসঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে উড়েছিল। বিমান বহরের মধ্যে ছিল ২১টি জে-১৬ যুদ্ধবিমান, চারটি এইচ-৬ বোমারু বিমান এবং দুটি আগাম সতর্ককারী বিমান।
তাইওয়ান বলেছে যে তারা তার স্থল-ভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার পাশাপাশি নিজস্ব নৌবাহিনীর জাহাজের মাধ্যমে চীনা কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণ করে।
আরও পড়ুন: চীন সীমান্তে ভারতীয় সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত, নিহত ৩
চীন তার নিজের এলাকা বলে দাবি করে তাইওয়ানকে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্বায়ত্তশাসিত ভূখণ্ড তাইওয়ানে চীনের সামরিক হয়রানি তীব্র হয়েছে এবং কমিউনিস্ট পার্টির পিপলস লিবারেশন আর্মি প্রায় প্রতিদিনই দ্বীপটির দিকে বিমান বা জাহাজ পাঠিয়েছে।
মার্কিন হাউসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির তাইওয়ান সফরের প্রতিক্রিয়ায় আগস্টে চীনের সামরিক বাহিনী বড় ধরনের সামরিক মহড়া করেছে।
কারণ বেইজিং এই দ্বীপে বিদেশি সরকারপ্রধানদের সফরকে তাইওয়ানকে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি এবং চীনের সার্বভৌমত্বের দাবির প্রতি চ্যালেঞ্জ হিসেবে মনে করে।
কয়েক দশকের মধ্যে তাইওয়ানকে লক্ষ্য করে চীন নিয়মিতভাবে তার সামরিক মহড়ায় জাহাজ ও বিমান পাঠায় এবং এমনকি তাইওয়ানের ওপর দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। জাপানের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে গিয়ে পড়ে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো।
আরও পড়ুন: তাইওয়ান সমস্যার সমাধান চীনাদেরই করতে হবে: ২০তম সিপিসি সম্মেলনে শি জিনপিং
১৬টি নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করল চীন
তালেবানদের হাতে বন্দি কর্মকর্তাদের উদ্ধারে পাকিস্তানে অভিযান শুরু
পাকিস্তানের বিশেষ বাহিনী একটি প্রত্যন্ত উত্তর-পশ্চিম জেলায় একটি সন্ত্রাসবিরোধী কেন্দ্রে হামলা চালিয়েছে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে পাকিস্তানি তালেবান জঙ্গিদের একটি গ্রুপের হাতে জিম্মি হওয়া বেশ কয়েকজন নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে মুক্ত করতে এই অভিযান শুরু করেছে।
মঙ্গলবার দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা এই তথ্য জানিয়েছেন।
রবিবার খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বান্নুর কেন্দ্রে বছরের পর বছর ধরে তাদের রক্ষীদের পরাস্ত করে তাদের অস্ত্র ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের জিম্মি করার পরে এই অভিযান চালানো হয়।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ভ্যান খাদে পড়ে নিহত ২০, আহত ১৩
সোমবার জিম্মিকারীদের হাতে কেন্দ্রের এক কর্মকর্তা নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাকিস্তানি কর্মকর্তারা জিম্মিকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ৪০ ঘন্টারও বেশি সময় ধরে ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর ওই এলাকায় মোতায়েন বিশেষ বাহিনী কম্পাউন্ডে হামলা চালায়। তারা বিস্তারিত আর কিছু বলেননি।
মঙ্গলবার বিকাল নাগাদ, দু’টি বিস্ফোরণের শব্দ শোনার পর কম্পাউন্ডের ভেতর থেকে ঘন কালো ধোঁয়া আকাশে উড়ে যায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চলমান পরিস্থিতি নিয়ে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে(এপি)কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এলাকা জুড়ে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল।
জিম্মিকারী বা তালেবান যোদ্ধাদের কী হয়েছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। কোনো সামরিক বা সরকারি মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এর আগে, কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে কেন্দ্রটি দখলে নেয়ার সঙ্গে প্রায় ৩০ তালেবান যোদ্ধা জড়িত ছিল। জিম্মিকারীরা জঙ্গি গোষ্ঠীর সাবেক শক্ত ঘাঁটিতে নিরাপদে সরে যাওয়ার দাবি জানিয়েছিল।
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত অঞ্চলে রবিবার কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ হারানো সরকারের নির্লজ্জভাবে অক্ষমতার প্রতিফলন।
পাকিস্তানি তালেবান তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামেও পরিচিত। তারা আলাদা কিন্তু আফগান তালেবানদের মিত্র যারা গত বছর প্রতিবেশী আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখল করেছিল কারণ মার্কিন এবং ন্যাটো সৈন্যরা ২০ বছরের যুদ্ধের পর দেশ থেকে তাদের প্রত্যাহারের শেষ সপ্তাহে ছিল।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের কাছে মর্টার বিস্ফোরণে নিহত ৪, নিখোঁজ ২০
১৯৭১ সালের পরাজয়কে ‘সামরিক ব্যর্থতা’ বললেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অবিলম্বে ২০০ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী নৌকা উদ্ধার করুন: দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংসদ সদস্যদের আহ্বান
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় সংসদ সদস্যরা আসিয়ানের সদস্য রাষ্ট্র ও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকে নারী ও শিশুসহ ২০০ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকাকে জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধার করার আহ্বান জানিয়েছেন। যেটি প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতের উপকূলে ভেসে বেড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) অনুযায়ী, নভেম্বরের শেষের দিক থেকে নৌকাটি গভীর সাগরে পাড়ি জমায় এবং যাত্রার পর থেকে জাহাজে থাকা কয়েক ডজন লোক ইতোমধ্যেই মারা গেছে। অন্যদিকে বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের খাবার, পানীয় জল বা ওষুধ নেই।
আসিয়ান পার্লামেন্টারিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটসের (এপিএইচআর) বোর্ড সদস্য ইভা সুন্দরী বলেন, আমরা জরুরি ভিত্তিতে আসিয়ান সদস্য দেশ ও এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকে তাদের মানবিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে এবং তাদের যথাযথভাবে অবতরণ করার অনুমতি দিয়ে নৌকাটি তাদের জল সীমায় প্রবেশ করলে অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযান শুরু করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
তারা আরও বলেন, এটা লজ্জাজনক যে গুরুতর বিপদে পুরুষ, নারী ও শিশুদের নিয়ে নৌকাটিকে ভেসে থাকতে হচ্ছে। ওই মানুষগুলোকে অবহেলা করা মানবতার অবমাননার কম কিছু নয়।
আরও পড়ুন: মিয়ানমার বিষয়ক আসিয়ানের বিশেষ দূতকে সু চির সঙ্গে দেখা করার আহ্বান
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও মানবাধিকার সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহ থেকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বহনকারী আরও দুটি নৌকা ভেসে বেড়াচ্ছে।
এদিকে, ১৫৪ শরণার্থী বহনকারী একটি নৌকাকে ৮ ডিসেম্বর ভিয়েতনামের একটি তেলবাহী জাহাজ উদ্ধার করে। তাদের মিয়ানমার নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়। ১০৪ শরণার্থী বহনকারী আরেকটি নৌকাকে ১৮ ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার নৌবাহিনী উদ্ধার করে এবং তাদেরকে কানকেসান্তুরাই হারবারে অবতরণ করা হয়।
রোহিঙ্গারা তাদের স্বদেশ মিয়ানমারে কয়েক দশক ধরে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে।
১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে কর্তৃপক্ষ তাদের অধিকাংশকে রাষ্ট্রহীন করে দেয় এবং সত্তরের দশকের শেষের দিক থেকে সবচেয়ে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হয় তারা।
২০১৬ ও ২০১৭ সালে নৃশংস সামরিক অভিযানের শিকার হয়ে প্রতিবেশি বাংলাদেশে সাত লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়। এজন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে গণহত্যার জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে তাদের অনেকেই উন্নত জীবন খোঁজার জন্য অসাধু মানব পাচারকারীদের হাতে আত্মসমর্পণ করে আন্দামান সাগরের মধ্য দিয়ে অত্যন্ত বিপজ্জনক পথে মালয়েশিয়ার মতো দেশে পাড়ি জমায়।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে মিয়ানমারের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হচ্ছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
এপিএইচআর-এর চেয়ারপারসন ও মালয়েশিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য চার্লস সান্টিয়াগো বলেন, ‘সব সম্ভাবনা বিচারে এসব নৌকা উদ্ধারে বিলম্বের কারণে ইতোমধ্যেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও প্রাণহানি ঘটেছে। আর কোনো বিলম্ব অযৌক্তিক। সাগরে আটকে থাকা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি এই অবহেলা নতুন কিছু নয়। যেমনটি বছরের পর বছর ধরে চলছে এবং এর ফলে শত শত, এমনকি হাজার হাজার মৃত্যু হয়েছে। যা সহজেই প্রতিহত করা যেত যদি এই অঞ্চলের দেশগুলো প্রাথমিক মানবিক নীতিগুলি পূরণ করত।’
এপিএইচআর আসিয়ানকে সমুদ্রে আটকা পড়া শরণার্থীদের ইস্যুতে একটি বিস্তৃত ও সমন্বিত আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া তৈরি করার লক্ষ্যে কার্যকরভাবে কাজ করা ও মানবিক নীতি অনুসারে এই ধরনের পরিস্থিতিতে সমুদ্রে জীবন বাঁচানোর সম্মিলিত প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়েছে।
মঙ্গলবার এপিএইচআর জানায় যে আসিয়ানের উচিত রোহিঙ্গাদের এত বছর ধরে এই ট্র্যাজেডির মূল কারণগুলোরও সমাধান করা। যার মধ্যে রয়েছে- মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে তাদের নাগরিকত্ব ফিরিয়ে আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করা এবং বর্তমানে বাংলাদেশের ক্যাম্পে বসবাসকারী শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়া।
রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অপরাধীদের জবাবদিহি করতেও আসিয়ানকে সহায়তা করা উচিত, বিশেষ করে এখন যে সেনাবাহিনী তাদের বিরুদ্ধে ২০১৬ ও ২০১৭ সালে গণহত্যামূলক সামরিক অভিযান শুরু করে,তারাই ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি একটি অবৈধ অভ্যুত্থান ঘটিয়ে মিয়ানমারে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে।
এপিএইচআর বোর্ডের সদস্য ও প্রাক্তন থাই পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাসিত পিরোম্যা বলেন, ‘বহু বছর ধরে আসিয়ান ও বৃহত্তরভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দীর্ঘ সময় ধরে নির্বিকার রয়েছে, কারণ রোহিঙ্গা ট্রাজেডি বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে। যেসব দেশ মানবাধিকার রক্ষার দাবি করে, তাদের রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার সংকটের মূল কারণগুলো মোকাবিলা করার নৈতিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে; নতুবা এই মানবিক ট্রাজেডিগুলো বারবার পুনরাবৃত্তি হবে। সেইসঙ্গে আসিয়ান সদস্য দেশগুলো এই অঞ্চলে ও এর বাইরেও তাদের অংশীদারদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করবে, সমস্ত বৈষম্যমূলক আচরণের অবসান ঘটাবে এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনবে।’
আরও পড়ুন: আন্তরিকতার অভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বিলম্বিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী