������������������
রাহুল গান্ধীর জামিন মঞ্জুর, সাজা স্থগিত
ভারতের একটি আদালত বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধীর দুই বছরের কারাদণ্ড স্থগিত করেছেন।
সোমবার রাহুল পশ্চিমাঞ্চলীয় গুজরাট রাজ্যের একটি আদালতে আপিল করেন এবং এসময় আপিল প্রক্রিয়ার সময়কালের জন্য তাকে জামিন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর উপাধি নিয়ে ‘বিদ্রুপ’ করার অভিযোগে দেওয়া কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করেন রাহুল। যার ফলে তাকে সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রাহুল গান্ধী ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির কট্টর সমালোচক এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
২০১৯ সালের নির্বাচনী বক্তৃতায় ‘মোদি’ উপাধি নিয়ে উপহাস করার জন্য একটি আদালত তাকে মানহানির অভিযোগে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং এরপর তার সংসদ সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রপৌত্র এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এই কারাদণ্ড ও লোকসভার সদস্যপদ প্রত্যাহারের তীব্র নিন্দা করেছেন মোদি বিরোধীরা।
তারা এটিকে ক্ষমতাসীন সরকারের করা গণতন্ত্রের ওপর সর্বশেষ হামলা এবং ভিন্নমতকে দমন করার পদক্ষেপ বলে সমালোচনা করেছেন।
গত মাসে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলে আপিল করার জন্য তাকে ৩০ দিনের জন্য জামিন দেওয়া হয়েছিল। আগামী ১৩ এপ্রিল শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।
সোমবারের শুনানির পর এক টুইটে রাহুল লিখেছেন, ‘এই সংগ্রামে, সত্যই আমার অস্ত্র এবং সত্যই আমার সমর্থন।’
তিনি আদালতের বাইরে জড়ো হওয়া সমর্থক এবং কংগ্রেস দলের সদস্যদের দিকে হাত নাড়েন।
নামে ‘মোদি’ উপাধি আছে এমন একজন ব্যক্তি রাহুলের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের নির্বাচনের আগে এক জনসভায় দেওয়া বক্তৃতায় মানহানির অভিযোগে মামলা করেন।
সেই বক্তৃতায় রাহুল কৌতুক করে বলেছিলেন, ‘সব চোরের নামে কেন মোদি উপাধি থাকে?’
রাহুল তার বক্তৃতায় তিনজন মোদির কথা উল্লেখ করেন- একজন হলেন পলাতক ভারতীয় হীরা টাইকুন, দ্বিতীয়জন ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) থেকে নিষিদ্ধ ক্রিকেট নির্বাহী এবং তৃতীয়জন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
যে আবেদনকারী মামলাটি করেছেন তিনি গুজরাটে মোদির ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সদস্য।
কিন্তু রাহুলের উল্লেখিত অন্য দুই মোদি বা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার অন্য কোনো সম্পর্ক নেই।
রাহুলকে ২৩শে মার্চ দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল এবং পরের দিন সংসদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
বিরোধী আইনপ্রণেতারা রাহুলের সমর্থনে সমাবেশ করেন এবং তার বহিষ্কারকে ভারতের সাংবিধানিক গণতন্ত্রের জন্য একটি নতুন আঘাত বলে অভিহিত করেন।
ভারতীয় আইন অনুযায়ী, দুই বছর বা তার বেশি সময়ের জন্য কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে সংসদ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়। যদি উচ্চ আদালত রাহুলের কারাদণ্ড স্থগিত বা বাতিল না করেন, তবে তাকে জেলে যেতে হবে এবং সম্ভবত ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।
প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (পিটিআই) নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, গান্ধীর আইনী দলের একজন আইনজীবী বাবু মাঙ্গুকিয়া বলেছেন যে আদালত তার দণ্ড স্থগিত না করা পর্যন্ত তিনি সংসদ থেকে অযোগ্য থাকবেন।
আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, রাহুলের মামলাটি অস্বাভাবিক, বিশেষত এ ধরনের মানহানির অভিযোগ বিরল।
সিনিয়র আইনজীবী গোপাল শঙ্কর নারায়ণ বলেছেন, ‘মানহানির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং এরজন্য কারাদণ্ড দিতে এর আগে আমরা আর কখনোই দেখি নি। একটি নিরীহ মন্তব্যের জন্য তাকে সর্বোচ্চ সাজা (দুই বছরের) দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজনীতিবিদদের বাকস্বাধীনতার ক্ষেত্রে সাধারণত বেশি সুযোগ দেওয়া হয়। বেশিরভাগ সভ্য দেশে মানহানি অপরাধ নয়। বড়জোর আপনি সুনাম ক্ষুন্নের জন্য মামলা করতে পারেন এবং ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। কিন্তু এটি দোষী সাব্যস্ত করার মতো কোনো অপরাধ নয়।’
প্রায় ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে ভারত বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ।
মোদির সমালোচকরা বলছেন যে তিনি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ভারতের গণতন্ত্র বাধার মুখে পড়েছে। তারা মোদি সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু জাতীয়তাবাদী এজেন্ডা অনুসরণ করার অভিযোগ তোলে।
যদিও সরকার এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলে, তার নীতিগুলো জাত-পাত নির্বিশেষে সকল ভারতীয়দের জন্য নেওয়া হয়।
রাহুলের পরিবারে তিনজন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। তিনি ছাড়া বাকি দুজন তার দাদি ইন্দিরা গান্ধী ও বাবা রাজীব গান্ধী; তারা দুজনই হত্যার শিকার হয়েছেন।
যদিও রাহুলকে মোদি সরকারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা হয়, তবে তার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস দল গত দুটি সাধারণ নির্বাচনে খুব বাজেভাবে পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে।
ভোটারদের আকৃষ্ট করার জন্য রাহুল সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বেশ সক্রিয় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন।
তিনি মোদি ও তার দল বিজেপির বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং ভারতের গণতান্ত্রিক পরিচয়পত্রকে কলঙ্কিত করার অভিযোগ করেছেন।
এবার কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করবেন রাহুল গান্ধী
ভারতের বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উপাধি নিয়ে ‘উপহাস’ করার জন্য ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হওয়া এবং কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে সোমবার আপিল করবেন।
কেননা রাহুলের বহিষ্কারাদেশ আগামী সাধারণ নির্বাচনে তার দল কংগ্রেসের জন্য একটি বড় প্রতিবন্ধকতা।
রাহুল গান্ধী ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির কট্টর সমালোচক এবং ২০২৪ সালের নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।
২০১৯ সালের নির্বাচনী বক্তৃতায় ‘মোদি’ উপাধি নিয়ে উপহাস করার জন্য একটি আদালত তাকে মানহানির অভিযোগে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয় এবং এরপর তার সংসদ সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
আরও পড়ুন: কারাদণ্ডের পর এবার লোকসভার সদস্যপদ হারালেন রাহুল গান্ধী
ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর প্রপৌত্র এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে এই কারাদণ্ড ও লোকসভার সদস্যপদ প্রত্যাহারের তীব্র নিন্দা করেছেন মোদি বিরোধীরা।
তারা এটিকে ক্ষমতাসীন সরকারের করা গণতন্ত্রের ওপর সর্বশেষ হামলা এবং ভিন্নমতকে দমন করার পদক্ষেপ বলে সমালোচনা করেছেন।
রাহুলের আইনজীবীরা ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে জানিয়েছে, রাহুল আজ তাকে কারাদণ্ড দেওয়া গুজরাটের সুরাটের ওই আদালতে হাজির হবেন। সেখানে তিনি তার কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ বা সাময়িক স্থগিতাদেশ চাইবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের কারাদণ্ড
নেপালের প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউদেল হাসপাতালে ভর্তি
শারিরীক অসুস্থতার কারণে নেপালের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউদেলকে কাঠমান্ডুর মহারাজগঞ্জের ত্রিভুবন ইউনিভার্সিটি টিচিং হাসপাতালে (টিইউটিএইচ) ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার টিইউটিএইচ কর্তৃপক্ষের বরাতে ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পেটে ব্যথা অনুভব করায় পাউদেলকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, ‘শনিবার গভীর রাতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং বর্তমানে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’
মাত্র দুই সপ্তাহ আগে নেপালি কংগ্রেস পার্টির জ্যেষ্ঠ নেতা রাম চন্দ্র পাউদেল নেপালের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন।
নেপালের নির্বাচন কমিশনের মতে, পাউদেল ৩৩ হাজার ৮০২ ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছেন এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সুবাস চন্দ্র নেমওয়াং ১৫ হাজার ৫১৮ ইলেক্টোরাল ভোট পেয়েছেন।
নেপালের নির্বাচন কমিশনের মতে, ফেডারেল পার্লামেন্টের ৩১৩ জন সদস্য ভোটে অংশ নিয়েছিলেন এবং প্রাদেশিক পরিষদের ৫১৮ জন সদস্যও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করার জন্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়েছিলেন।
কাঠমান্ডুর নিউ বানেশ্বরে নেপালের সংসদ ভবনে এই ভোটগ্রহণ হয়।
আরও পড়ুন: শপথ নিলেন নেপালের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাওদেল
নেপালের নির্বাচন কমিশন ফেডারেল পার্লামেন্টারিয়ান ও প্রাদেশিক অ্যাসেম্বলি সদস্যদের জন্য হলটিতে দু’টি পৃথক ভোট কেন্দ্র স্থাপন করেছিল।
নির্বাচনের জন্য সব প্রদেশের আইনপ্রণেতারা কাঠমান্ডুতে পৌঁছেছেন। প্রতিনিধি পরিষদের ২৭৫ জন, জাতীয় পরিষদের ৫৯ জন এবং সাতটি প্রাদেশিক পরিষদের ৫৫০ জনসহ মোট ৮৮৪ জন সদস্য নিয়ে ইলেক্টোরাল কলেজ গঠিত।
পাউদেলকে আটটি দল সমর্থন করেছিল, অন্যদিকে সিপিএন-ইউএমএল এর একমাত্র প্রার্থী সুভাষ চন্দ্র নেমওয়াং আইনপ্রণেতাদের দ্বারা সমর্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নেপালে ফের ৪ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প
নেপালে ফের ৪ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প
নেপালের কাঠমান্ডুতে শনিবার সকালে ৪ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। তবে এ ঘটনায় কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৪.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল সিলেট
ন্যাশনাল সেন্টার ফর সিসমোলজি (ইএসই) জানায়, শনিবার সকাল ১১টা ১২ মিনিটে নেপালের কাঠমান্ডু থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৫ এবং ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ১৭৮ কিলোমিটার।
এর আগে ফেব্রুয়ারিতে নেপাল ৫ দশমিক ২ মাত্রার ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল।
নেপালের ন্যাশনাল আর্থকোয়েক মনিটরিং অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার (এনইএমআরসি) এক টুইট বার্তায় জানিয়েছে, ২২ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে বাজুরা জেলার বিছিয়ার আশেপাশে ভূমিকম্পটি ঘটে।
আরও পড়ুন: তুরস্কে ফের ৫.৬ মাত্রার ভূমিকম্প, নিহত ১
তাজিকিস্তানের কম জনবহুল এলাকায় ৬.৮ মাত্রার ভূমিকম্প
ভারতে মন্দিরে কূপ ঢেকে রাখার কাঠামো ভেঙে নিহত ৩৫
দেবতা রামের জন্য একটি উৎসবে প্রার্থনা করার সময় একটি কূপের ওপর ঢেকে রাখার কাঠামো ভেঙে পড়ার পরে সেনাবাহিনীর সদস্য ও অন্যান্যরা ৩৫টি লাশ উদ্ধার করেছে।
শুক্রবার রাজ্য সরকারের এক আধিকারিক একথা জানিয়েছেন।
প্রায় ১৪০ জন উদ্ধারকর্মী দড়ি ও মই ব্যবহার করে কূপ থেকে পানি বের করে লাশগুলো উদ্ধার করে। কূপের সংকীর্ণ পথ ও ধ্বংসাবশেষ কাজটিকে কঠিন করে তুলেছিল।
পুলিশ কমিশনার মকরন্দ দেওস্কর জানান, মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ইন্দোরে মন্দির কমপ্লেক্সের একটি কূপে বৃহস্পতিবার কাঠামো ধসে পড়ে এবং ধ্বংসস্তূপে ঢেকে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মন্দিরে আগুন আচার এবং হিন্দু উৎসব উদযাপনের জন্য ভক্তদের বড় আকারের ভিড় ছিল।
আরও পড়ুন: আদানি ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ ভারতের সুপ্রিম কোর্টের
রাজ্যের শীর্ষ নির্বাচিত কর্মকর্তা শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, কাঠামোটি বিশাল জনতার ওজন সামলাতে না পেরে দৃশ্যত ধসে পড়ে। তিনি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
শুক্রবার জেলা প্রশাসক ইলিয়ারাজা টি. বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ৩৫টি লাশ উদ্ধার করেছি এবং উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’ বৃহস্পতিবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি উদ্ধারকারী দল অভিযানে যোগ দেয়।
চৌহান বলেন, ১৮ জনকে উদ্ধার করে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মন্দির কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর আগে কূপটি ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছিল এবং এটি একটি কাঠামো দিয়ে ঢেকে দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: ভারতে বিবিসি’র কার্যালয়ে তৃতীয় দিনের মতো অভিযান, কর ফাঁকির অভিযোগ
ফিলিপাইনে ফেরিতে আগুন লেগে নিহত ৩১, নিখোঁজ ৭
দক্ষিণ ফিলিপাইনে বুধবার গভীর রাতে প্রায় ২৫০ জন যাত্রী ও ক্রু বহনকারী একটি ফেরিতে আগুন লেগে ৩১ জন মারা গেছেন। এসময় ২৩ যাত্রী আহত এবং কমপক্ষে ৭জন নিঁখোজ হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দক্ষিণের দ্বীপ বাসিলানের প্রাদেশিক গভর্নর জিম হাতমান বলেছেন, নিখোঁজদের খোঁজে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে।
হাতমান জানিয়েছেন, যাত্রীদের অনেকেই আগুন দেখে আতঙ্কিত হয়ে ‘এমভি লেডি মেরি জয়-৩’ নামের ফেরিটি থেকে সাগরে ঝাঁপ দিয়েছিলেন। উপকূলরক্ষী, নৌবাহিনী, অন্য একটি ফেরির লোকেরা এবং স্থানীয় জেলেরা মিলে পানিতে ভাসমান অনেক মানুষকে উদ্ধার করেছে।
তিনি আরও বলেন, নিখোঁজ সাত যাত্রীর সন্ধানে উদ্ধার অভিযান বৃহস্পতিবারও অব্যাহত রয়েছে।
আরও পড়ুন: মেক্সিকোয় অভিবাসন কেন্দ্রে অগ্নিকাণ্ডে ৩৯ জন নিহত
হাতামান বলেন, পোড়া ফেরিটি বাসিলানের উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। যেখানে উপকূলরক্ষী কর্মী এবং অন্যান্য কর্তৃপক্ষ যাত্রী কেবিনের একটি অংশ থেকে ১৮টি লাশ উদ্ধার করেছে।
গভর্নর জানান, দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে।
তিনি আরও বলেন, ফেরিটি দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দর শহর জাম্বোয়াঙ্গা থেকে সুলু প্রদেশের জোলো শহরের দিকে যাচ্ছিল। মধ্যরাতে বাসিলানের কাছাকাছি এসে এটিতে আগুন ধরে যায়।
হাতমান টেলিফোনে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, ‘অগ্নিকাণ্ডের কারণে কেউ কেউ জাহাজ থেকে লাফ দিয়েছিল।’
ঘন ঘন ঝড়, দুর্বল নৌযান, অতিরিক্ত ভিড় এবং বিশেষ করে প্রত্যন্ত প্রদেশে নিরাপত্তা বিধি না মানার কারণে ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জে সাগরে প্রায়ই নৌযানডুবি হয়।
১৯৮৭ সালের ডিসেম্বরে ফেরি ‘ডোনা পাজ’ একটি জ্বালানি ট্যাঙ্কারের সঙ্গে সংঘর্ষের পরে ডুবে যায়। বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ এই সামুদ্রিক বিপর্যয়ে ৪ হাজার ৩০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
আরও পড়ুন: ইকুয়েডরে ভূমিধসে নিহত ৭, নিখোঁজ অনেকে
সৌদি আরবে সেতুর সঙ্গে বাসের ধাক্কায় নিহত ২০
পাকিস্তানে জঙ্গি হামলায় ৪ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত, আহত ৬
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি পুলিশ স্টেশনে জঙ্গিদের হামলায় চার পুলিশ কর্মকর্তা নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ভোরে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে রাস্তার পাশে পুতে রাখা বোমা বিস্ফোরণে এই হতাহতের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ ও বিদ্রোহীরা।
আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের একটি শহর লাকি মারওয়াতে একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার প্রতিক্রিয়া জানাতে পুলিশের শক্তি বৃদ্ধির জন্য পাঠানো রসদ বহনকারী একটি পুলিশ গাড়িতে বোমা বিস্ফোরণে চারজন কর্মকর্তাকে হত্যা করে জঙ্গিরা।এতে পুলিশ স্টেশনের আরও ছয় কর্মকর্তা আহত হন।
আরও পড়ুন: ইমরান খানের বাড়িতে পুলিশের অভিযান, গ্রেপ্তার ৬১
স্থানীয় পুলিশ অফিসার আশফাক খান বলেছেন যে জঙ্গি সন্দেহভাজনদের বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে যারা লাকি মারওয়াতে পুলিশ স্টেশনে হামলা করেছিল এবং পরে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে।
দুটি হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানি তালেবান। তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান বা টিটিপি নামে পরিচিত দলটি আলাদা কিন্তু আফগানিস্তানের তালেবানের সঙ্গে জোটবদ্ধ। পাকিস্তানি তালেবান পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি শেষ করার পর পাকিস্তানে হামলার মাত্রা বেড়েছে।
২০২১ সালে আফগান তালেবানরা আফগানিস্তানে ক্ষমতা দখলের পর থেকে টিটিপির তৎপড়তা বেড়েছে যখন ২০ বছর যুদ্ধের পর মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তালেবান দখলের পর থেকে অনেক টিটিপি নেতা ও যোদ্ধা আফগানিস্তানে আশ্রয়স্থল খুঁজে পেয়েছেন।
পাকিস্তান গত দুই দশকে অগণিত জঙ্গি হামলার মুখোমুখি হয়েছে। কিন্তু, নভেম্বরের পর থেকে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদিকে টিটিপি পাকিস্তান সরকারের সঙ্গে আফগান তালেবান-মধ্যস্থতায় এক মাসের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ করেছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ দায়ের
মুম্বাইয়ে প্রথম জি-২০ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শুরু
ভারতে জি-২০ এর প্রথম ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার ভারতের মুম্বাইয়ে ভারতের সভাপতিত্বে এই বৈঠক শুরু হয়।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সচিব সুনীল বার্থওয়াল ৭০ জন প্রতিনিধিকে স্বাগত জানিয়েছেন যারা মুম্বাইতে বৈঠকের জন্য সমবেত হন। আঞ্চলিক গ্রুপিং এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো বৈশ্বিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করতে আলোচনায় অংশ নিবেন বলে জানায় ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআই।
ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির লক্ষ্য হলো বৈশ্বিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে ত্বরান্বিত করার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলা করা। এবং বিদ্যমান সুযোগগুলাকে কীভাবে মানব-কেন্দ্রিক গঠনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এবং দৃঢ় ফলাফল বয়ে আনা যায়, সেগুলোকে ভাগ করে নেয়া।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে মতৈক্য ছাড়াই ভারতে জি-২০ বৈঠক শেষ
তিন দিনের বৈঠকের আলোচনায় ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির অগ্রাধিকারের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে সহযোগিতার সুবিধা দেবে।
সভার প্রথম দিন একটি সেমিনার দিয়ে শুরু হবে যেখানে প্রতিনিধিরা ক্রমবর্ধমান ট্রেড ফাইন্যান্স ব্যবধান কমানোর জন্য চিন্তাভাবনা করবে এবং সমাধান দিবেন।
উল্লেখযোগ্যভাবে, আজ মুম্বাই, ভাইজাগ এবং রামনগরে শুরু হওয়া আরও তিনটি বৈঠক জি-২০ সভার অর্ধশতক পূর্ণ করেছে।এখনও পর্যন্ত ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির অধীনে যা ২০২২ সালের ১ ডিসেম্বর গৃহীত হয়েছিল। দুটি মন্ত্রী পর্যায়ের, একটি শেরপা, ২৩টি ওয়ার্কিং গ্রুপ, ২০টি এনগেজমেন্ট গ্রুপ এবং একটি কার্টেন রাইজার অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে প্রায় ৩০টি ইউনিভার্সিটি কানেক্ট এবং কয়েক ডজন জনভাগীদারি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব উষ্ণায়ন কমাতে জি-২০ দেশগুলোকে সংশোধনমূলক পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান ঢাকার
কারাদণ্ডের পর এবার লোকসভার সদস্যপদ হারালেন রাহুল গান্ধী
মানহানির মামলায় দুই বছরের কারাদণ্ডের একদিন পর শুক্রবার ভারতের পার্লামেন্ট সিনিয়র বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর লোকসভার সাংসদ পদ খারিজ করেছে।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিম্নকক্ষকে ইঙ্গিত করে সংসদের একটি নোটিশে বলা হয়েছে যে রাহুল গান্ধীর ‘লোকসভার সদস্যপদ খারিজ করা হলো’।
২০১৯ সালের নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপাধি সম্পর্কে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্যের জন্য আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন।
রাহুল গান্ধী দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কেরালার ওয়েনাড়ের সাংসদ ছিলেন।
তিনি বর্তমানে ৩০ দিনের জন্য জামিনে রয়েছেন এবং জানিয়েছেন যে তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন।
রাহুল গান্ধীর দল কংগ্রেস এই রায়কে ‘ভুল এবং পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিহিত করেছে।
দলের সিনিয়র নেতা জয়রাম রমেশ বলেছেন, দল ‘আইনগত ও রাজনৈতিক উভয়ভাবেই’ রাহুল গান্ধীর সাংসদ পদ খারিজের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।
শুক্রবার রাজধানী দিল্লিতে বিক্ষোভ মিছিলে বিরোধী নেতাদের নেতৃত্ব দেয় কংগ্রেস।
প্রতিবাদী সাংসদরা রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সরকারি বাসভবন রাষ্ট্রপতি ভবনে মিছিল করার পরিকল্পনা করেছিলেন।
কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগে গণমাধ্যমকে বলেছেন, রাহুল গান্ধী শুক্রবার সংসদে কথা বলার অনুমতি চেয়েছিলেন, কিন্তু তা প্রত্যাখান করা হয়।
আরও পড়ুন: মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের কারাদণ্ড
তিনি অভিযোগ করেছেন, রাহুলের বিরুদ্ধে এই রায় মূলত আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তের জন্য একটি যৌথ সংসদীয় কমিটির তদন্তের দাবির ফলাফল।
এই বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক শর্ট-বিক্রেতা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রকাশিত প্রতিবেদনে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে কয়েক দশক ধরে স্টক ম্যানিপুলেশন এবং অ্যাকাউন্টিং জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছিল। যদিও আদানি গ্রুপ আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কংগ্রেস সভাপতি বলেছেন, ‘যারা সত্য কথা বলছে তারা (সরকার) তাদের রাখতে চায় না, তবে আমরা সত্য কথা বলতে থাকব।’
কংগ্রেস বলছে আগামী দিনে তারা সরকারের বিরুদ্ধে আরও বড় পরিসরে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছে।
২০১৯ সালে একটি নির্বাচনী সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপাধি সম্পর্কে মন্তব্যের জন্য বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে রাহুল গান্ধীকে।
২০১৩ সালের সুপ্রিম কোর্টের একটি আদেশে বলা হয়েছে যে একজন আইনপ্রণেতা অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে দুই বা তার বেশি বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে অবিলম্বে সংসদ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হবে।
সাজা স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত বা মামলায় খালাস না পাওয়া পর্যন্ত নির্বাচনে লড়তে পারবেন না রাহুল গান্ধী।
আগামী বছর ভারতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা।
কংগ্রেস পার্টি বলেছে, সরকারের ‘অন্যায়’ প্রকাশ করার জন্য টার্গেট করা হচ্ছে রাহুলকে।
মি. রমেশ গুজরাটের আদালতের রায়কে ‘খুবই গুরুতর রাজনৈতিক সমস্যা’ বলে অভিহিত করেন এবং বলেন এই রায় ‘আমাদের গণতন্ত্রের ভবিষ্যত’কে প্রভাবিত করতে পারে।
বৃহস্পতিবার একটি দলীয় বৈঠকের পরে তিনি বলেন, ‘এটি মোদী সরকারের প্রতিহিংসার রাজনীতি, হুমকির রাজনীতি, ভয় দেখানোর রাজনীতি এবং হয়রানির রাজনীতির একটি বড় উদাহরণ’।
ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) মন্ত্রীরা অবশ্য রায় নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য রাহুল গান্ধী ও তার দলের সমালোচনা করেছেন।
কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব বলেছেন, রাহুল গান্ধী আদার ব্যাকওয়ার্ড ক্লাসেস (ওবিসি) নামে পরিচিত গোষ্ঠীর সদস্যদের অপমান করেছিলেন, যার অধীনে ‘মোদি’ নামটি পড়ে।
তিনি বলেন, ‘কোনও পদবীকে অপমান করা বাক স্বাধীনতা নয়।’
গত বছর কংগ্রেস দল ছাড়া ভারতের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী কপিল সিবাল আদালতের সিদ্ধান্তকে ‘উদ্ভট’ বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, রাহুল গান্ধীর মন্তব্য ‘একজন ব্যক্তিকে’ লক্ষ্য করে, কোনও গোষ্ঠীকে নয়।
বৃহস্পতিবারের রায়ের প্রতিক্রিয়ায়, রাহুল গান্ধী মহাত্মা গান্ধীর একটি উদ্ধৃতি টুইট করেছেন, ‘আমার ধর্ম সত্য ও অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত। সত্য আমার ঈশ্বর, অহিংসা তা পাওয়ার মাধ্যম।’
বেশ কয়েকটি বিরোধী দল রাহুল গান্ধীর সমর্থনে নেমেছে।
শুক্রবার কংগ্রেসসহ ১৪টি দল সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল।
তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার বিজেপির বিরোধীদের লক্ষ্যবস্তু করার জন্য তদন্তকারী সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করছে।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীকে আটকের পর ছেড়ে দিল দিল্লি পুলিশ
দিল্লিতে বিক্ষোভ থেকে রাহুল-প্রিয়াঙ্কা আটক
মানহানির মামলায় রাহুল গান্ধীর ২ বছরের কারাদণ্ড
ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে বৃহস্পতিবার দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন সুরাটের একটি আদালত।
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে এক নির্বাচনী সমাবেশে দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম নিয়ে 'অবমাননাকর' মন্তব্যের জন্য দায়ের করা মানহানির মামলায় তাকে এই কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
তবে, আদালত জামিনে রাহুল গান্ধীর জামিন মঞ্জুর করেছেন এবং তাকে উচ্চ আদালতে আপিল করার অনুমতি দিয়ে ৩০ দিনের জন্য সাজা স্থগিত করেছেন।
রায়ের পরে বিজেপি নেতারা রাহুল গান্ধীকে আক্রমণ করে বলেন, তিনি (রাহুল) যাই বলুন না কেন তা কংগ্রেস দল এবং দেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতারা বলছেন যে বিজেপি সরকার রাহুল গান্ধীর কণ্ঠস্বরকে দমন করার চেষ্টা করছে এবং তিনি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
কংগ্রেস নেতারা আরও অভিযোগ করেন, বিচার বিভাগ চাপের মধ্যে রয়েছে।
দলের প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে সহ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা এই মামলায় বিচারক পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করেছেন।
আরও পড়ুন: রাহুল গান্ধীকে আটকের পর ছেড়ে দিল দিল্লি পুলিশ
অন্যদিকে, রায়ের কয়েক ঘন্টা পরেই ভিনীত জিন্দাল নামক সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী, লোকসভার স্পিকারের কাছে কারাদণ্ডের জন্য রাহুল গান্ধীকে হাউস থেকে অযোগ্য ঘোষণা করার অভিযোগ করেন।
রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মানহানির মামলা করেছেন সুরাট পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেশ মোদি।
২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে কর্ণাটকের কোলারে একটি লোকসভা নির্বাচনী সমাবেশে রাহুল গান্ধী বলেন, ‘সব মোদিরা কেন চোর হয়?’
গত সপ্তাহে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এইচ এইচ ভার্মার আদালত উভয় পক্ষের চূড়ান্ত যুক্তি শুনানি শেষ করেন এবং চার বছরের পুরনো এই মানহানির মামলায় রায় ঘোষণার জন্য ২৩ মার্চ দিন ধার্য করেন।
রায় ঘোষণার সময় ওয়ানাডের সাংসদ রাহুল গান্ধী অন্যান্য কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
গুজরাটের প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেশ মোদি আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি আদালতের রায়কে স্বাগত জানাই।
আরও পড়ুন: অর্থ পাচারের অভিযোগে রাহুল গান্ধীকে তলব
পূর্ণেশ মোদীর আইনজীবী কেতন রেশমওয়ালা বলেছেন, রাহুল গান্ধীকে আইপিসির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
রাহুল গান্ধী গত বছরের জুনে ন্যাশনাল হেরাল্ড মামলায় দুর্নীতির অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
এই মামলায় দলের প্রাক্তন প্রধান সোনিয়া গান্ধীকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ডিসেম্বরে দিল্লির একটি আদালত মামলায় এই দুই নেতাকে জামিন দিয়েছিলেন।
রাহুল গান্ধীর প্রপিতামহী ইন্দিরা গান্ধীও আদালতের প্রতিকূল রায়ের মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং ১৯৭৫ সালের জুন মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্টে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর ছয় বছরের জন্য কোনো নির্বাচিত পদে থাকা থেকে বিরত ছিলেন।
এই রায়ের ফলে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইন্দিরা গান্ধীকে নির্বাচনী অসদাচরণের জন্য দোষী সাব্যস্ত করার সময়, বিচারপতি জগমোহনলাল সিনহা তাকে সংসদ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করেন এবং তার ওপর যে কোনও নির্বাচিত পদে থাকার ব্যাপারে ছয় বছরের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।
আরও পড়ুন: প্রিয়াঙ্কার অবৈধ গ্রেপ্তার যোগী সরকারের ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতার প্রকাশ: রাহুল গান্ধী