ইউরোপ
বিদেশি দূতাবাসের সামনে কুরআন পোড়ানোকে অবৈধ ঘোষণা করতে পারে ডেনমার্ক
ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোকে রাসমুসেন স্থানীয় সময় রবিবার (৩১০ জুলাই) বলেছেন, নর্ডিক দেশে বিদেশি দূতাবাসের সামনে কুরআন বা অন্যান্য ধর্মীয় পবিত্র গ্রন্থের অবমাননাকে বেআইনি ঘোষণা করার কথা ভাবছে সরকার।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেনিশ পাবলিক ব্রডকাস্টার ডিআর-এর সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে বলেছেন, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পোড়ানো ‘এমন একটি বিশ্বে বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়েছে, যার আসলে ঐক্যের প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, ‘তাই আমরা সরকারে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা দেখব কিভাবে বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে অন্যান্য দেশের বিদ্রুপ বন্ধ করতে পারি। যা ডেনিশ স্বার্থ এবং ডেনিশদের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।’
ডেনমার্ক এবং প্রতিবেশী সুইডেনে মুষ্টিমেয় কিছু ইসলামবিরোধী মানুষের প্রকাশ্যে কুরআন অবমাননার সাম্প্রতিক ঘটনায় মুসলিম দেশগুলোতে প্রচণ্ড বিক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
লোকে রাসমুসেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেনের মন্ত্রিসভা মত প্রকাশের স্বাধীনতার সঙ্গে আপস না করে এই ধরনের কাজ নিষিদ্ধ করার জন্য ‘একটি আইনী পন্থা’ খুঁজে বের করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে এটি সহজ হবে না।
তিনি ডিআরকে বলেছেন, ‘অবশ্যই ধর্মীয় সমালোচনার জায়গা থাকতে হবে। একটি ব্লাসফেমি ধারা পুনঃপ্রবর্তনের কোনো চিন্তা আমাদের নেই।’
আরও পড়ুন: পবিত্র কোরআন অবমাননা নিয়ে বাংলাদেশ ও সুইডেনের আলোচনা
তিনি বলেন,‘কিন্তু আপনি যখন বিদেশি দূতাবাসের সামনে দাঁড়িয়ে কুরআন পোড়ান বা ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে তাওরাত পোড়ান; তখন তা বিদ্রুপ করা ছাড়া অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয় না।’
রবিবার ডেনিশ সরকারের জারি করা একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ড্যানিশ সমাজের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মূল্যবোধ।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তবে ডেনমার্কে মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থের অবমূল্যায়নের ফলে জাতিটি বিশ্বের অনেক জায়গায় ‘এমন একটি দেশ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে, যারা অন্যান্য দেশের সংস্কৃতি, ধর্ম ও ঐতিহ্যের অপমান ও অবমাননার সুযোগ দেয়।’
এতে আরও বলা হয়েছে, সরকার আবারও এই ধরনের অবমাননার নিন্দা করেছে এবং বলেছে যে তারা ‘গভীরভাবে আপত্তিকর ও বেপরোয়া কাজটি নির্দিষ্ট কিছু মানুষ করেছে’ এবং ‘তাদের এই কাজ ডেনিশ সমাজ যে মূল্যবোধের উপর নির্মিত তা প্রকাশ করে না।’
সুইডেনে প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন রবিবার ইনস্টাগ্রামে বলেছেন, তার সরকার কুরআন এবং অন্যান্য পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা সংক্রান্ত আইনী পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে। কেননা শত্রুতার পরিপ্রেক্ষিতে এই ধরনের কাজগুলো সুইডেনের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করছে।
ক্রিস্টারসন বলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে আমরা সবচেয়ে গুরুতর নিরাপত্তা নীতির মধ্যে আছি।’
সুইডেন ও ডেনমার্কে কোরআন পোড়ানোর বিষয়ে আলোচনার জন্য সোমবার একটি জরুরি বৈঠক ডেকেছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)।
আরও পড়ুন: পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় সুইডেনের সরকার আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে: সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সুইডেনে মসজিদের বাইরে কোরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা বাংলাদেশের
বিদ্রোহের পর পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন প্রিগোজিন: ক্রেমলিনের মুখপাত্র
স্বল্পমেয়াদি বিদ্রোহের মাত্র পাঁচ দিন পরে রাশিয়ার ‘ভাড়াটে’ বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের কমান্ডাররা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং সরকারের প্রতি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
সোমবার (১০ জুলাই) সরকারের এক জ্যেষ্ঠ মুখপাত্র এ কথা বলেন। বিষয়টিকে বিস্ময়কর পর্বের সর্বশেষ মোড় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে দুই পক্ষের ক্ষমতা ও প্রভাব সম্পর্কে জনমনে প্রশ্ন জেগেছে।
ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ২৯ জুন তিন ঘণ্টার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এতে প্রিগোজিনসহ তার ওয়াগনার গ্রুপের সামরিক ঠিকাদারের কমান্ডাররাও উপস্থিত ছিলেন। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ওয়াগনারের কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করেন পুতিন। সেখানে ওয়াগনারের সৈন্যরা রুশ সৈন্যদের পাশাপাশি যুদ্ধ করেছে।
আরও পড়ুন: পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেন আন্তর্জাতিক আদালত
পেসকভ বলেন, কী ঘটেছিল তা নিজেদের মতো করে উপস্থাপন করেছেন কমান্ডাররা। তারা রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রধান কমান্ডারের কট্টর সমর্থক ও অনুগত সৈন্য বলে জানিয়েছেন। তারা আরও বলেন, মাতৃভূমির জন্য লড়াই চালিয়ে যেতে প্রস্তুত তারা।
সামরিক নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবিতে গত মাসে মস্কোয় সৈন্যদের পদযাত্রায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রিগোজিন। তার সঙ্গে পুতিনের সাক্ষাতের বিষয়টিকে ‘অসাধারণ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যদিও বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে রুশ নেতা প্রিগোজিনকে বিশ্বাসঘাতক বলে অভিহিত করা হয়েছিল এবং কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে জানানো হয়েছিল। বিদ্রোহের অভিযোগে ভাড়াটে প্রধানের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও পরে প্রত্যাহার করা হয়।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭
ক্রেমলিনের বৈঠক নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি প্রিগোজিন এবং তার চূড়ান্ত ভাগ্য এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে। তবে সোমবারের ঘোষণায় জানানো হয়েছেম রুদ্ধদ্বার বেঠকে অনেক কিছুই আরোচনা করা হয়েছে। তিনি এখনও আর্থিক অস্বচ্ছতা বা অন্যান্য অভিযোগের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে পারেন।
সোমবার সামরিক প্রধান জেনারেল ভ্যালেরি গেরাসিমভের একটি ভিডিও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় প্রকাশ করার পর এই ঘোষণা আসে। তিনি মূলত প্রিগোজিনের বিদ্রোহের অন্যতম লক্ষ্যবস্তু ছিলেন। বিদ্রোহের পর এই প্রথম গেরাসিমভকে দেখা গেল।
ভিডিওতে দেখা যায়, গেরাসিমভ তার দলের সঙ্গে একটি টেবিলে বসে রাশিয়ার মহাকাশ বাহিনীর চিফ অব স্টাফের কাছ থেকে রবিবার রাশিয়ার ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার একটি ভিডিও প্রতিবেদন দেখছেন। গেরাসিমভ ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির বিরুদ্ধে আগাম হামলা এবং ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষার উন্নতির আহ্বান জানিয়ে প্রতিক্রিয়া জানায়।
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় ওয়াগনারের 'স্বল্পস্থায়ী' বিদ্রোহের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জড়িত ছিল না: বাইডেন
ইতালির মিলানে বৃদ্ধাশ্রমে অগ্নিকাণ্ড, নিহত ৬
ইতালির রাজধানী মিলানে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে একটি বৃদ্ধাশ্রমে আগুন লাগার পর ধোঁয়ায় বিষক্রিয়া হয়ে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৮১ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে পাঁচজন নারী ও একজন পুরুষ, যাদের বয়স ৬৯ থেকে ৮৭ বছরের মধ্যে।
যে কক্ষে বিছানা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, সেখানে দুই নারী পুড়ে মারা গেছেন এবং অন্য দুই নারী ধোঁয়ায় দম আটকে মারা গেছেন বলে জানা গেছে।
সবমিলিয়ে ভবনটিতে ১৬৭ জন বসবাস করতেন।
আরও পড়ুন: উগান্ডায় স্কুলে বিদ্রোহীদের হামলায় নিহত ৪১
মিলানের মেয়র জিউসেপ সালা, যিনি নিরাপত্তার জন্য সিটি কাউন্সিলর মার্কো গ্রানেলির সঙ্গে ভবনটি পরিদর্শন করেছিলেন।
মিলানের মেয়র জিউসেপ সালা নিরাপত্তা বিষয়ক সিটি কাউন্সিলর মার্কো গ্রানেলির সঙ্গে ভবনটি পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সংখ্যায় ছয়জনের এই মৃত্যু বেশ বড়।’
পাবলিক প্রসিকিউটরের কার্যালয় এর তদন্ত শুরু করেছে।
লোমবার্ডির গভর্নর অ্যাটিলিও ফন্টানা হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং বলেছেন যে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ ঘরহারা এই বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বিকল্প বাসস্থান খুঁজে পেতে সহায়তা করার জন্য অবিলম্বে নিজেদের প্রস্তুত করছে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বাস দুর্ঘটনার পর আগুন লেগে নিহত ২৫
সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
ফ্রান্সে সহিংসতার পঞ্চম দিনে ৭১৯ জন গ্রেপ্তার: মন্ত্রণালয়
ফ্রান্সে শনিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত অন্তত ৭১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
স্থানয়ি সময় রবিবার ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক পুলিশ কর্মকর্তার হাতে এক কিশোর নিহত হওয়ার পর দেশব্যাপী সহিংসতার পঞ্চম রাতে শনিবার থেকে রবিবার পর্যন্ত অন্তত ৭১৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, ৪৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা ও সশস্ত্র পুলিশ আহত হয়েছেন এবং ৫৭৭টি গাড়ি ও ৭৪টি ভবন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড দারমানিন বলেছেন, শুক্রবার রাতের চেয়ে শনিবার রাত 'শান্ত' ছিল, যখন ১ হাজার ৩১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং ১ হাজার ৩৫০ টি গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
দারমানিন তার সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, শনিবার রাতে দাঙ্গা ও লুটপাট মোকাবিলায় দেশজুড়ে প্রায় ৪৫ হাজার ফরাসি নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যার মধ্যে শুধুমাত্র প্যারিস এবং এর শহরতলিতে প্রায় ৭ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
শনিবার রাতে প্যারিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরতলীর হে-লেস-রোজেস শহরের মেয়রের বাড়িতেও দাঙ্গাকারীরা হামলা চালায়, এতে মেয়রের স্ত্রী ও তার এক সন্তান আহত হন।
রবিবার বিকালে ফরাসি নিউজ চ্যানেল বিএফএমটিভির সঙ্গে কথা বলার সময় প্যারিসের পুলিশ প্রধান লরেন্ট নুনেজ বলেছেন, দাঙ্গাকারীরা একজন মেয়রের বাড়িতে আক্রমণ করে ‘সীমা লঙ্গন করেছে’ এবং অপরাধীদের ধরার জন্য পুলিশ অবশ্যই তদন্ত করবে।
নুনেজ আশ্বস্ত করেছেন যে শহরে হওয়া সহিংসতার ব্যাপারে পুলিশ ‘খুব মনোযোগী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রয়েছে এবং রবিবার রাতে বৃহত্তর প্যারিস অঞ্চলে আবার ৭ হাজার পুলিশ কর্মকর্তা মোতায়েন করা হবে।
স্থানীয় সময় রবিবার ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এদিন সন্ধ্যা ৭টা ৩০মিনিটে প্রধানমন্ত্রী এলিজাবেথ বোর্ন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন এবং বিচারমন্ত্রী এরিক ডুপন্ড-মোরেত্তির সঙ্গে একটি ব্রিফিং করবেন।
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার একজন ফরাসি পুলিশ অফিসারের গুলিতে ১৭ বছর বয়সী কিশোর নিহত হয়।
যে পুলিশ অফিসার তার বন্দুক থেকে গুলি চালিয়েছিলেন তিনি পরে তদন্তকারীদের বলেছিলেন যে গাড়িটি একটি মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটাতে পারে এই ভয়ে তিনি এ কাজ করেছিলেন।
গত মঙ্গলবারের গুলির ঘটনার পর ফ্রান্সজুড়ে হিংসাত্মক বিক্ষোভ ও দাঙ্গার সূত্রপাত ঘটে, যার ফলে পুলিশ ফ্রান্সের প্রধান শহরগুলোতে কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: মহারাষ্ট্রে বাস দুর্ঘটনার পর আগুন লেগে নিহত ২৫
বিশ্বে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৯.০৯ কোটি ছাড়িয়েছে
রাশিয়ায় ওয়াগনারের 'স্বল্পস্থায়ী' বিদ্রোহের পেছনে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো জড়িত ছিল না: বাইডেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের রাশিয়ায় স্বল্পস্থায়ী বিদ্রোহের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ন্যাটো কোনোভাবে জড়িত নয়। তিনি বলেছিলেন যে ইউক্রেনের যুদ্ধের ‘খুব তড়িৎ’ প্রভাব মূল্যায়ন এটি।
সোমবার বাইডেন বলেছেন, তিনি সপ্তাহের শেষে মিত্রদের সঙ্গে একটি ভিডিও কল করেছেন এবং তারা রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ‘পশ্চিমের ওপর’ বা ন্যাটোকে দোষ দেওয়ার কোন অজুহাত নেই তা নিশ্চিত করেই তারা কাজ করছেন।
বাইডেন বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে দিয়েছি যে আমরা জড়িত নই। এর সঙ্গে আমাদের কিছু করার নেই,’ ‘এটি রাশিয়ান সিস্টেমের মধ্যে একটি যুদ্ধের অংশ ছিল।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ নিয়ে বাইডেনকে দেওয়া ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি সম্পর্কে অবগত নই: মার্কিন মুখপাত্র
বাইডেন পরিস্থিতি সম্পর্কে সপ্তাহান্তে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও কথা বলেছেন এবং বলেছিলেন যে তিনি সোমবার বা মঙ্গলবারের প্রথম দিকে তার সঙ্গে আবারও কথা বলতে চান।
‘আমি তাকে বলেছিলাম যে রাশিয়ায় যাই ঘটুক না কেন, রাশিয়ায় যাই ঘটুক না কেন, আমি বলছি, ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা এবং সার্বভৌমত্ব এবং এর আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।’
ওয়াগনার গ্রুপের নেতা, ইয়েভজেনি প্রিগোজিন এবং রাশিয়ার সামরিক ধৃষ্টতার কারণে তাদের একটি বিরোধ যা পুরো যুদ্ধ জুড়ে বিদ্রোহের সূত্রপাত করে। যা একটি বিদ্রোহে পরিণত হয়েছিল। ভাড়াটে সৈন্যরা দক্ষিণ রাশিয়ার একটি শহরে একটি সামরিক সদর দপ্তর দখল করতে ইউক্রেন ছেড়ে চলে গেছে।
শনিবার ২৪ ঘন্টারও কম সময় পরে ঘুরে আসার আগে তারা মস্কোর দিকে কয়েকশ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেয়।
এর আগে সোমবার, প্রিগোজিন এবং রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রী সের্গেই শোইগু উভয়ের লক্ষ্য নিয়ে জনসমক্ষে মন্তব্য করেছিলেন যে তারা এই সংকটকে কমিয়ে আনতে পারে।
প্রিগোজিন ১১ মিনিটের একটি অডিও বিবৃতিতে বলেছিলেন যে তিনি ‘ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির ধ্বংস রোধ করার জন্য’ কাজ করেছিলেন এবং একটি ওয়াগনার ক্যাম্পে আক্রমণে ৩০ জন সৈন্য নিহত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় সরে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: বাইডেনের কাছে ৬ মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠি: অভিযোগ প্রত্যাখান করেছে বাংলাদেশ বৌদ্ধ ফেডারেশন
বাইডেন বলেছিলেন যে তার দীর্ঘ মেয়াদে পুতিনের কর্তৃত্বের জন্য সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের পরে অনেক কিছু প্রবাহে রয়ে গেছে।
বাইডেন বলেছেন, ‘আমরা এই সপ্তাহান্তের ঘটনাগুলোর ফলাফল এবং রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রভাবগুলো মূল্যায়ন করতে যাচ্ছি,’ ‘তবে এটি কোথায় যাচ্ছে সে সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছানো এখনি খুব তাড়াহুড়ো হবে।’
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট পদে পুনঃনির্বাচনের ঘোষণা বাইডেনের
ইউক্রেনের কাখোভকা বাঁধ ধ্বংস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৭
ইউক্রেনের কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বাঁধ ধ্বংস এবং খেরসন অঞ্চলে তীব্র বন্যার মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ জনে।
মঙ্গলবার আঞ্চলিক সরকারের প্রধান আন্দ্রেই আলেক্সিয়েঙ্কো এ কথা জানিয়েছেন।
আলেক্সিয়েঙ্কো এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলেন, আজ সকালে হোলা প্রিস্তান শহরে ১২ জন এবং ওলেশকি শহরে পাঁচজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি ও শান্তি আলোচনার আহ্বান চীনের
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, যোগাযোগের সমস্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে কাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে, বিশেষ করে ওলেশকি ও হোলা প্রিস্তান শহরে।
গত ৬ জুন কাখোভকা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে চালানো এক হামলায় বাঁধটি ভেঙে পড়ার পর ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে সেখানকার হাজার হাজার বাসিন্দা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের সমালোচনা করায় শিক্ষার্থীর ৮ বছরের কারাদণ্ড
ইউক্রেনে যুদ্ধ ও দুর্যোগে ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭১ মিলিয়ন: প্রতিবেদন
ডেইলি মিররের প্রকাশকের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে আদালতে প্রিন্স হ্যারি
ব্রিটিশ রাজপুত্র প্রিন্স হ্যারি মঙ্গলবার ইংরেজি ভাষার সংবাদপত্র ‘ডেইলি মিরর’-এর প্রকাশকের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিতে আদালতে হাজির হন। এরমধ্য দিয়ে ১৯ শতকের পর রাজপরিবারের প্রথম সদস্য হিসেবে আদালতে হাজির হয়ে ইতিহাস গড়েছেন তিনি।
হ্যারি মিররের ওই প্রকাশকের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে ফোন হ্যাকিং ও অন্যান্য গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন। এরকম একটি মামলায় সাক্ষ্য দিতেই এদিন আদালতে হাজির হন হ্যারি।
তিনি একটি কালো এসইউভি (স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিক্যাল) গাড়িতে করে আদালতে আসেন এবং কয়েক ডজন ফটোগ্রাফার ও টিভি ক্যামেরাকে পাশ কাটিয়ে আদালতে প্রবেশ করেন।
সাক্ষ্য দেওয়ার আগে হ্যারি লন্ডন হাইকোর্টের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে বাইবেল হাতে নিয়ে শপথ নেন। এরপর অভিযুক্তের আইনজীবী তাকে জেরা শুরু করেন।
৩৮ বছর বয়সী হ্যারি ঊনবিংশ শতাব্দীর পর প্রথম ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে আদালতে জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হচ্ছেন।
এর আগে, ১৮৯১ সালে তৎকালীন ভাবি রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড এক জুয়া কেলেঙ্কারির মামলার বিচারে সাক্ষ্য দিতে আদালতে গিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ‘একাকীত্ব' মোকাবিলায় রাজা চার্লস নিজের সঙ্গে একটি টেডি বিয়ার রাখেন: হ্যারি
সোমবার আদালতে প্রিন্সের মামলার বিবরণ দিতে গিয়ে তার আইনজীবী ডেভিড শেরবোর্ন বলেন, হ্যারির শৈশব থেকেই ব্রিটিশ সংবাদপত্রগুলো হ্যাকিং ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে এমন কিছু তথ্য সংগ্রহ করেছে, যেগুলোকে পত্রিকাগুলো ‘স্কুপ’ (এক্সক্লুসিভ সংবাদ) হিসেবে পত্রিকার প্রথম পাতায় প্রকাশ করেছে।
তিনি বলেন, হ্যারির এইসব গল্প সংবাদপত্রটির বিক্রি বাড়ানোর একটি বড় হাতিয়ার ছিল এবং ১৯৯৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত স্কুলে ব্যথা পাওয়া থেকে শুরু করে গাঁজা ও কোকেন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং প্রেমিকাদের সঙ্গে উত্থান-পতন বিষয়ে প্রায় ২ হাজার ৫০০টির মতো নিবন্ধে তার জীবনের প্রায় সমস্ত দিক তুলে ধরা হয়েছিল।
তার আইনজীবী বলেন, ‘ট্যাবলয়েডগুলোর জন্য কিছুই পবিত্র বা সীমার বাইরের ছিল না।’
হ্যাকিং অর্থাৎ তারকাদের ফোনে আড়ি পাতার জন্য ডিফল্ট সিকিউরিটি কোড অনুমান বা ব্যবহার করার অভ্যাস এই শতাব্দীর প্রথম দিকে ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলোতে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হতো।
২০১১ সালে নিউজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড ১৩ বছর বয়সী এক নিহত কিশোরীর ফোন হ্যাক করার খবর প্রকাশের পর এই বিষয়টি অস্তিত্বের সংকটে পড়ে।
এরপর মালিক রুপার্ট মারডক পত্রিকাটি বন্ধ করে দিয়েছিলেন এবং তার বেশ কয়েকজন নির্বাহী বিচারের মুখোমুখি হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: শপথ নিয়ে মাথায় রাজমুকুট পড়লেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস
মিরর গ্রুপ ২০১৫ সালে শত শত অবৈধ তথ্য সংগ্রহের দাবি নিষ্পত্তি করতে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড ১২৫ মিলিয়ন ডলার দিয়েছে এবং ফোন হ্যাকিংয়ের শিকারদের কাছে ক্ষমাও চেয়েছে।
তবে ৩৩টি প্রকাশিত নিবন্ধের বিষয়ে পত্রিকাটি হ্যারির সব দাবি অস্বীকার করেছে বা মেনে নেয়নি।
মিরর গ্রুপের অ্যাটর্নি অ্যান্ড্রু গ্রিন বলেন, ডিউক অব সাসেক্সের হ্যাক হওয়ার ঘটনার পক্ষে সমর্থন করার মতো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
এরপরই গ্রিন হ্যারিকে জিজ্ঞাসাবাদ করার আবেদন করেন।
সোমবার সংবাদপত্রটির বিরুদ্ধে করা তার বেশ কয়েকটি মামলার মধ্যে প্রথম মামলায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য হ্যারির অপেক্ষা করা হয়।
বিচারক টিমোথি ফ্যানকোর্টের স্পষ্ট ক্ষোভের জবাবে তার আইনজীবী ডেভিড শেরবোর্ন বলেন, তিনি (হ্যারি) অনুপস্থিত ছিলেন, কারণ তিনি তার দুই বছর বয়সী মেয়ে লিলিবেটের জন্মদিন উপলক্ষে রবিবার লস অ্যাঞ্জেলেস ছিলেন, সেখান থেকে ফেরার জন্য তিনি বিমানে উঠেছেন।
হ্যারিকে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়ার কথা উল্লেখ করে ফ্যানকোর্ট বলেন, ‘আমি কিছুটা বিস্মিত।’
আরও পড়ুন: জীবনভর প্রস্তুতি নিয়ে ৭৩ বছর বয়সে রাজা হলেন প্রিন্স চার্লস
ইতালির প্রাণঘাতী বন্যা জলবায়ু বিপর্যয়ের সর্বশেষ চরমতম উদাহরণ
বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ইতালির উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার ফলে সৃষ্ট ভূমিধস জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট বিপর্যয়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। এটি চরম আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট একটি বন্যা, বিশ্বের অন্যান্য জায়গায় প্রায়ই যা ঘটছে।
এমিলিয়া-রোমাগনার উপকূলীয় অঞ্চলে দুবার বন্যা আঘাত হেনেছে। প্রথমে দুই সপ্তাহ আগে ভারী বৃষ্টির কারণে রাতারাতি নদীর তীর উপচে পড়েছিল, তারপরে এই সপ্তাহের প্লাবনে ১৩ জনের মৃত্যু হয় এবং বিলিয়ন পরিমাণ ক্ষতি হয়।
প্রবল আঘাত হানা এমিলিয়া-রোমাগনা অঞ্চল বিশেষভাবে নাজুক। অ্যাপেনাইন পর্বত ও অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের মধ্যে অবস্থিত এ অঞ্চলে ৩৬ ঘন্টার মধ্যে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের অর্ধেক হয়েছে।
ইতালির ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিলের জলবায়ু বিজ্ঞানী আন্তোনেলো পাসিনি বলেছেন, একটি প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা হলো ‘প্রতিবছর সামগ্রিকভাবে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ছে তবে বর্ষাকালের স্থায়ীত্ব কমছে। ফলে যে কয়দিন বৃষ্টি হয়, তখন মুষলধারে বর্ষণ হয়।’
শীতের মাসগুলোতে গড় থেকে কম তুষারপাতের কারণে ইতালির উত্তরাঞ্চল দুই বছর খরাযর মুখে পড়ছে।
আল্পস, ডলোমাইটস ও অ্যাপেনিনিস থেকে গলে যাওয়া তুষার গলা পানিতে সাধারণত বসন্ত ও গ্রীষ্মের মধ্যবর্তী সমেয়ে ইতালির হ্রদগুলো পূর্ণ থাকে। যা দিয়ে কৃষিজমিতে সেচ দেওয়া হয় এবং পো ও অন্যান্য প্রধান নদী ও উপনদীগুলোকে প্রবাহমান রাখে।
পাসিনি বলেন, পাহাড়ে স্বাভাবিক তুষারপাত না হওয়ায় সমতল ভূমি শুকিয়ে গেছে এবং নদীর তলদেশ, হ্রদ ও জলাধারগুলো কমে গেছে। বৃষ্টি হলেও নদী-উপনদীগুলো আগের রূপে ফিরছে না, কারণ মাটি ‘শুষ্ক’ হয়ে আছে এবং বৃষ্টি কেবল মাটির ওপর দিয়ে গড়িয়ে সমুদ্রে চলে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘চরম বৃষ্টিপাত খরা কমাতে ভূমিকা রাখতে পারছে না, কারণ উত্তর ইতালিতে বৃষ্টির চেয়ে আল্পসে সঞ্চিত তুষার খরা কমাতে বেশি কার্যকর। এবং গত দুই বছরে খুব কম তুষারপাত হয়েছে।’
দেশটির নাগরিক সুরক্ষা মন্ত্রী নেলো মুসুমেসি বলেছেন, ভূমধ্যসাগরে চরম আবহাওয়ার ঘটনাগুলোকে নতুন বাস্তবতা হিসেবে ইতালিয়দের মানিয়ে নিতে হবে এবং দেশব্যাপী বন্যা সুরক্ষাব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করতে হবে।
মুসুমেসি নেপলসের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ ইসচিয়ায় শেষ একটি প্রচণ্ড ঝড় ও ভূমিধসের উল্লেখ করেছেন, যাতে ১২ জন নিহত হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার তিনি বলেছেন, ‘কিছুই ঘটছে না বলে আমরা ভান করতে পারি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সবকিছু পরিবর্তন করতে হবে, পানিনির্ভর অবকাঠামোতে অবশ্যই পরিবর্তন আনতে হবে, প্রকৌশল পদ্ধতিও পরিবর্তন করতে হবে।’
তিনি বলেন, দুই ডজন নদীর তীর উপচে সৃষ্ট বন্যার কারণে পুরো শহরগুলো কাদাপানিতে তলিয়ে গেছে, এ অবস্থা প্রতিরোধের জন্য এই পরিবর্তনগুলো জরুরি।
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে ইতালি আসার পথে নিহত ৭ অভিবাসীর পরিচয় শনাক্ত
মুসুমেসি বলেন, এগিয়ে যাওয়ার মূল বিষয় হলো প্রতিরোধ, তবে ব্যয়সাপেক্ষে বলতে হবে এটা সহজসাধ্য কোনো কাজ নয়।
তিনি স্কাই টিজি২৪ কে বলেছেন, ‘আমরা প্রতিরোধপ্রবণ জাতি নই। আমরা প্রতিরোধ করার চেয়ে পুনর্নির্মাণ করতে চাই।’
প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটির জলবায়ু বিজ্ঞানী গ্যাবে ভেচ্চি বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘অনেক জায়গায় ঘটনাগুলোকে বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশি কিছু বলে মনে হচ্ছে।
২০২১সালে জলবায়ু পরিবর্তনের বৈজ্ঞানিক প্যানেল সম্পর্কিত জাতিসংঘের আন্তঃসরকার প্যানেল বলেছিল যে এটি ‘প্রতিষ্ঠিত সত্য’ যে মানুষের গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন আরও ঘন ঘন এবং তীব্র আবহাওয়ার সংঙ্কট তৈরি করেছে।
প্যানেলটি তাপমাত্রা বৃ্দ্ধিকে এর সবচেয়ে সুস্পষ্ট কারণ বলে অভিহিত করেছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ‘১৯৫০- এর দশকের তুলনায় অনেক বেশি রেকর্ড বৃষ্টিপাত বর্তমানে সাধারণ হয়ে উঠেছে।’
আরও পড়ুন: ইতালি যাওয়ার পথে ট্রলারডুবিতে ফরিদপুরের ৪ যুবক নিখোঁজ
ইউক্রেনে যুদ্ধ ও দুর্যোগে ২০২২ সালে অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৭১ মিলিয়ন: প্রতিবেদন
ইউক্রেনের যুদ্ধ গত বছর সংঘাত বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হওয়া বিশ্বব্যাপী মোট মানুষের সংখ্যা রেকর্ড পরিমাণ ৭১দশমিক ১ মিলিয়নে নিয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের অভ্যন্তরীণ স্থানচ্যুতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২২ সালের শেষ নাগাদ রুশ আগ্রাসনের কারণে ৫দশমিক ৯ মিলিয়ন মানুষ ইউক্রেনের অভ্যন্তরে চলে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সংঘাত এবং সহিংসতার কারণে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত বিশ্বব্যাপী মোট মানুষের সংখ্যা ৬২ মিলিয়নেরও বেশি হয়েছিল, যা ২০২১ সালের তুলনায় ১৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সিরিয়ায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর সংঘাতের কারণে ৬৮ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
বন্যা ও দুর্ভিক্ষের মতো দুর্যোগের কারণে বছরের শেষে তাদের দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ৮দশমিক ৭ মিলিয়নে পৌঁছেছে, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৪৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত রপ্তানি সুযোগ কাজে লাগান: প্রধানমন্ত্রী
২০২১ সালের তুলনায় বিশ্বব্যাপী অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা মোট ৭১দশমিক ১ মিলিয়ন হয়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতি বলতে এমন মানুষদের বোঝায় যারা তাদের নিজস্ব সীমানার অভ্যন্তরে চলে যেতে বাধ্য হয় এবং অভ্যন্তরীণ স্থানচ্যুতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিবেদনে বিভিন্ন দেশে চলে যাওয়া ব্যক্তিদের বিবেচনায় নেওয়া হয়নি।
ইউক্রেন, সিরিয়া, ইথিওপিয়া এবং অন্যান্য জায়গায় সংঘাতের এক বছর পরেও ২০২৩ সালে কোনও স্বস্তি নেই। জাতিসংঘের অভিবাসন সংস্থা এ সপ্তাহে জানিয়েছে, সুদানে সেনাবাহিনী ও প্রতিদ্বন্দ্বী আধা-সামরিক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাতের কারণে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাত লাখ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইন্টারনাল ডিসপ্লেসমেন্ট মনিটরিং সেন্টার লা নিনা আবহাওয়ার ঘটনাকে উল্লেখ করেছে, যা দুর্যোগ বাস্তুচ্যুতির একটি প্রধান কারণ হিসেবে ২০২২ সালে টানা তৃতীয় বছর অব্যাহত ছিল। এটি পাকিস্তান, নাইজেরিয়া ও ব্রাজিলে রেকর্ড মাত্রার বন্যায় বাস্তুচ্যুতি এবং সোমালিয়া, কেনিয়া ও ইথিওপিয়ায় রেকর্ডের সবচেয়ে খারাপ খরায় অবদান রাখে।
নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল জ্যান এগেলান্ড বলেন, ২০২২ সালে সংঘাত ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের একটি 'নিখুঁত ঝড়' হয়েছিল, যার ফলে এমন মাত্রায় বাস্তুচ্যুতি হয়েছিল, যা আগে কখনও দেখা যায়নি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের সমালোচনা করায় শিক্ষার্থীর ৮ বছরের কারাদণ্ড
শপথ নিয়ে মাথায় রাজমুকুট পড়লেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস
যুক্তরাজ্যের ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে শনিবার রাজা তৃতীয় চার্লস শপথ নিয়ে মাথায় রাজমুকুট পরেছেন।অভিষেক অনুষ্ঠানের বিভিন্ন ধাপ পেরিয়ে ক্যান্টাবুরির আর্চবিশপ রাজা চার্লসের মাথায় ৩৬০ বছরের পুরাতন ‘সেন্ট এডওয়ার্ডস ক্রাউন’ পরিয়ে দেন। চার্লস সেসময় চতুর্দশ শতাব্দীর রাজসিংহাসনে বসেন।
রাজতন্ত্র বিলুপ্তির মধ্যদিয়ে জন্ম হওয়া আধুনিক ব্রিটেনে প্রাচীন ঐতিহ্য অনুসারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাজা তৃতীয় চার্লস বেজওয়েল্ড সেন্ট এডওয়ার্ডের মুকুট গ্রহণ করেন।
রাজমুকুট মাথায় পরানোর সময় মধ্যযুগের গির্জাটিতে ট্রাম্পেট বাজছিল এবং উপস্থিত জনতা ‘গড সেভ দ্য কিং!’ বলে উচ্চধ্বনি করেছিল।
বিভিন্ন দেশের প্রায় ১০০ জন বিশ্বনেতা, অভিজাত এবং সেলিব্রিটিসহ দুই হাজারেরও বেশি অতিথি রাজা চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে সরাসরি যোগ দেন। কয়েক হাজার মানুষ লন্ডনে বসে এবং বিশ্বের লাখ লাখ মানুষ টেলিভিশনে সরাসরি অভিষেক অনুষ্ঠান উপভোগ করেছেন।
অনুষ্ঠানস্থলের বাইরেও হাজার হাজার সৈন্য, কয়েক হাজার দর্শক ও বিক্ষোভকারী জড়ো হয়েছিল।
আজকের দিনটি উত্তরাধিকারী থেকে রাজা হওয়া পর্যন্ত চার্লসের সাত দশকের অপেক্ষার সমাপ্তির ক্ষণ।
রাজপরিবার ও সরকারের কাছে অভিষেক অনুষ্ঠানটির প্রতীকী নাম ‘অপারেশন গোল্ডেন অরব’।
বিশ্বজুড়ে লক্ষাধিক মানুষ অভিষেক অনুষ্ঠানটিকে স্বাগত জানিয়েছে। কেউ কেউ আবার এ সময়ে এত বড় আয়েজন নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে।
রাজতন্ত্র বিরোধী গ্রুপ ‘রিপাবলিকান’-এর বিক্ষোভকারীরা একটি অনুষ্ঠানস্থলের বাইরে জড়ো হয়ে ‘নট মাই কিং’- বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাজা তৃতীয় চার্লসের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী
তাদের দাবি, কারও বিশেষাধিকার এবং বৈষম্যের বিপক্ষে তারা। দেশ দারিদ্র্যের গভীরে তলিয়ে যাচ্ছে এবং সামাজিক বন্ধন ক্রমে আলগা হয়ে যাচ্ছে, এমন সময় এ ধনের আয়োজন বৈষম্যমূলক। এসময় বিক্ষোভস্থল থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
১ দশমিক ৩ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে ঘোড়ায় টানা গাড়িতে করে রাজা ও তার স্ত্রী ক্যামিলা পার্কার অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
তারা পৌঁছানো মাত্র গির্জায় উপস্থিত অতিথিরা হর্ষধ্বনি জানায়। এসময় উপস্থিত ছিলেন- মার্কিন ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রন, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, আটজন বর্তমান ও প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এবং জুডি ডেঞ্চ, এমা থম্পসন ও লিওনেল রিচি সহ সেলিব্রিটিরা।
ঐতিহ্যবাহী অ্যাংলিকান সাজসজ্জার সঙ্গে আধুনিক সময়ের সঙ্গে সঙ্গতি রাখতে সামান্য কিছু পরিবর্তন আনা হয়।
রাজা চার্লস এসময় লাল ও সোনালি পোশাক পরেছিলেন এবং একটি বাইবেলে হাত দিয়ে শপথ নেন যে তিনি একজন ‘সত্যিকারের প্রোটেস্ট্যান্ট’।
তবে রাজ্যাভিষেকের শপথে এবার একটি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে, যাতে বলা হয় চার্চ অব ইংল্যান্ড ‘এমন পরিবেশ গড়ে তুলতে চাইবে যেখানে সকল ধর্ম ও বিশ্বাসের মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে’।
এদিন কিং জেমস বাইবেলের চিঠিটি প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক পাঠ করেছিলেন; যিনি ব্রিটেনের প্রথম হিন্দু নেতা।
একজন গসপেল গায়ক একটি নতুন রচিত ‘অ্যালেলুইয়া’ পরিবেশন করেছিলেন এবং প্রথমবারের মতো নারী পাদ্রিরা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।
এছাড়া, এবার প্রথমবারের মতো অভিষেক অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ, হিন্দু, ইহুদি, মুসলিম ও শিখ ধর্মের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: কমনওয়েলথ লিডার্স ইভেন্টে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে মতবিনিময় প্রধানমন্ত্রীর
ঐতিহ্য অনুযায়ী চার্লসকে পবিত্র ভূমি অলিভ পর্বত থেকে আনা তেল দিয়ে অভিষিক্ত করা হয় এবং ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি ৪০০ টিরও বেশি মূল্যবান পাথর দিয়ে সজ্জিত সোনার মুকুট রাজার মাথায় পরিয়ে দেওয়ার আগে তাকে একটি তলোয়ার ও রাজদণ্ড দেন।
ট্রাম্পেট বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাজ্যজুড়ে গান স্যালুট করা হয়েছিল।
এক হাজার বছর বা তারও বেশি সময় ধরে ব্রিটিশ রাজারা এমন জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে মাথায় মুকুট পরে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন।
৭৪ বছর বয়সে সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তি হিসেবে ৪০ তম রাজা হিসেবে রাজ্যাভিষেক হলো চার্লসের।
বর্তমানে রাজার আর নির্বাহী বা রাজনৈতিক ক্ষমতা নেই। গত সেপ্টেম্বরে তার মা রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে রাজা হন তিনি, তবে এই আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে চার্লসের ক্ষমতারোহন সম্পূর্ণ হলো।
বর্তমানে রাজা যুক্তরাজ্যের রাষ্ট্রপ্রধান এবং জাতীয় পরিচয়ের প্রতীক। চার্লসের সামনে চ্যালেঞ্জ হলো একটি বহুসংস্কৃতির জাতিকে একত্র করা এবং বিলুপ্তপ্রায় রাজতন্ত্রের প্রতি সমর্থন জোগাড় করা।
রাজতন্ত্র বিরোধী গ্রুপ রিপাবলিক জানিয়েছে, তাদের দলের প্রধান নির্বাহীসহ ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ বলেছে, দিনটিকে ব্যাহত করতে চাওয়া লোকেদের জন্য ‘খুব বেশি সহনশীলতা’ দেখানোর সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লন্ডনে পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী
অন্যদিকে, এদিন বিবাদমান রাজপরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেখা যায়। সিংহাসনের উত্তরাধিকারী প্রিন্স উইলিয়াম, তার স্ত্রী কেট উইলিয়াম এবং তাদের তিন সন্তান উপস্থিত ছিলেন। উইলিয়ামের ছোট ভাই প্রিন্স হ্যারি, যিনি প্রকাশ্যে পরিবারের সঙ্গে ঝগড়া করেছেন, তিনি একা এসেছেন। তার স্ত্রী মেগান এবং তাদের সন্তানেরা ক্যালিফোর্নিয়ার বাড়িতেই রয়ে গেছেন।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে উইলিয়াম তার বাবার গালে চুম্বন করার আগে নতজানু হয়ে রাজার প্রতি আনুগত্যের প্রতিশ্রুতি দেন।
তারপর ওয়েলবি গির্জার সবাইকে রাজার প্রতি ‘সত্য আনুগত্য’ শপথ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান তিনি। এমনকি টেলিভিশনে অভিষেক অনুষ্ঠান উপভোগকারী লোকদেরও রাজার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর আমন্ত্রণ জানান।
আজকের ব্রিটেনে বাসকারী মানুষের সঙ্গে চার্লসের মা এলিজাবেথের অভিষেকের সময়কালে বসকারীদের মধ্যে অনেক পার্থক্য আছে। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ এখন জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী থেকে আসে, ১৯৫০ এর দশকে যা ১ শতাংশেরও কম ছিল। ব্রিটিশ স্কুলগুলোতে ৩০০টিরও বেশি ভাষায় কথা বলা হয় এবং জনসংখ্যার অর্ধেকেরও কম নিজেদেরকে খ্রিস্টান হিসেবে পরিচয় দেয়।
তবুও, ইতিহাসের অংশ হতে সারাবিশ্ব ও সারা ব্রিটেন থেকে বহু মানুষ অনুষ্ঠানস্থলে এসেছিল।
লন্ডনের পূর্বে এসেক্সের রাজকীয় অনুরাগী জিল কফলিন বলেন, ‘কেবল ভালবাসা প্রকাশ করা এবং আমাদের রাজা চার্লসকে দেখার জন্য আজ আসা। তিনি আমাদের মূল ভিত্তি।’