%E0%A6%AE%E0%A6%A7%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9A%E0%A7%8D%E0%A6%AF
সিরিয়ায় সামরিক বাহিনীর অনুষ্ঠানে ড্রোন হামলায় নিহত ৮০, আহত ২৪০
সিরিয়ার হোমস শহরে বৃহস্পতিবার সামরিক গ্র্যাজুয়েশন অনুষ্ঠানে ড্রোন হামলায় ৮০ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ২৪০ জন।
শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসান আল-গাবাস বলেছেন, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধে সেনাবাহিনীর ওপর সাম্প্রতিকতম সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলা এটি।
তিনি বলেন, এই হামলায় ছয় শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক ও সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন। আহতদের অনেকের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে সিরিয়ার সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে কোনো নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর নাম উল্লেখ না করে জানায়, তরুণ কর্মকর্তা ও তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে ড্রোন হামলা চালানো হয়।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের হামলায় নিহত বেড়ে ৫৩
সামরিক বাহিনীর উপর এই হামলার জন্য 'পরিচিত আন্তর্জাতিক বাহিনী সমর্থিত' বিদ্রোহীদের অভিযুক্ত করে এতে আরও বলা হয়, 'তারা যেখানেই থাকুক না কেন, এই সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে চিহ্নিত করে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।’
সিরিয়ার ১৩ বছর ধরে চলা সংঘাতের মধ্যে এই হামলার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে দায় স্বীকার করেনি কোনো গোষ্ঠী।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, হোমসে ড্রোন হামলা এবং সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পাল্টা গোলাবর্ষণের খবরে 'গভীর উদ্বেগ' প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। একই সঙ্গে দেশটিতে সব ধরনের সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দেশটির সামরিক বাহিনী হতাহতের কোনো সংখ্যা প্রকাশ না করলেও সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানিয়েছে, সরকার শুক্রবার থেকে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে।
এর আগে ব্রিটেনভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এবং সরকারপন্থী শাম এফএম রেডিও এই হামলার খবর প্রচার করেছে।
২০১১ সালের মার্চ মাসে প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে সিরিয়ার সংকট শুরু হয়। কিন্তু বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারের নৃশংস দমনপীড়নের পর তা দ্রুত গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়।
২০১৫ সালে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে আসাদ সরকার সফলতা পেতে থাকে। এসময় সিরিয়াকে গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সহায়তা প্রদান করে সমর্থন দিতে থাকে রাশিয়ার পাশাপাশি ইরান ও লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহ।
এখন পর্যন্ত এই যুদ্ধে পাঁচ লাখ মানুষ নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ এবং দেশের অনেক অংশ ধ্বংস হয়ে গেছে। সিরিয়ায় চলমান যুদ্ধের ফলে ২ কোটি ৩০ লাখ জনসংখ্যার অর্ধেক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এর মধ্যে ৫০ লাখেরও বেশি সিরিয়ার বাইরে শরণার্থী হিসেবে রয়েছে।
যদিও বেশিরভাগ আরব সরকার দামেস্ক সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক পুনস্থাপন করেছে,কিন্তু সিরিয়া এখনও বিভক্ত রয়েছে। হায়াত তাহরির আল-শাম গ্রুপের আল-কায়েদা-সম্পর্কিত জঙ্গি এবং তুর্কি সমর্থিত সুন্নি বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রণে উত্তর-পশ্চিম একটি অঞ্চল রয়েছে। আর মার্কিন সমর্থিত কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দেশটির উত্তর-পূর্বাঞ্চল।
হোমস শহরটি সরকার নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের কেন্দ্রে অবস্থিত,যেখানে সরকার ও বিদ্রোহী বাহিনী নিয়মিত সরাসরি সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত
ড্রোন হামলার পর সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশের বিভিন্ন গ্রামে গোলাবর্ষণ করে সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সিভিল ডিফেন্স অর্গানাইজেশন হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে, ইদলিব শহরের পূর্বে আল-নায়রাব ও সারমিন শহরে অন্তত ১০ জন বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছে। সরকারি বাহিনী তাদের অনিয়ন্ত্রিত ওই অঞ্চলের অন্যান্য এলাকাতেও গোলাবর্ষণ অব্যাহত রেখেছে।
হোয়াইট হেলমেটস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার হোমসের ওপর ড্রোন হামলার আগে সিরিয়ার সেনাবাহিনী ওই অঞ্চলের আরেকটি গ্রামে গোলাবর্ষণ করে। এতে অন্তত পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়। পশ্চিম আলেপ্পো প্রদেশের কাফর নুরান গ্রামের উপকণ্ঠে একটি পারিবারিক বাড়িতে গুলি চালিয়েছে সরকারি বাহিনী।
অবজারভেটরি জানিয়েছে, ওই হামলায় এক নারী ও তার চার সন্তান নিহত হয়েছেন। এতে ওই পরিবারের আরও নয়জন আহত হয়েছেন।
উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় বসবাসরত প্রায় ৪১ লাখ মানুষের বেশিরভাগই দারিদ্র্যপীড়িত। তারা বেঁচে থাকার জন্য মানবিক সহায়তার উপর নির্ভর করে। তাদের অনেকেই সিরীয়, যারা যুদ্ধের কারণে দেশের অন্যান্য অংশ থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সিরিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার হাসাকেহ ও কামিশলি প্রদেশে তুর্কি ড্রোন হামলায় তেল উৎপাদন কেন্দ্র, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন ও একটি বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় কুর্দি কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তাদের নিরাপত্তা বাহিনীর ছয় সদস্য ও পাঁচ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এদিকে তিন মার্কিন কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এপিকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান বৃহস্পতিবার তুরস্কের একটি ড্রোনকে গুলি করে ভূপাতিত করেছে। ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের মোকাবিলায় সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৯০০ সৈন্য রয়েছে।
তুরস্ক তাৎক্ষণিকভাবে এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও আঙ্কারা বলেছে, সিরিয়ার প্রধান কুর্দি মিলিশিয়া তুরস্কের নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে জোটবদ্ধ, যারা ১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিচ্ছে এবং কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। আঙ্কারা পিকেকেকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত সিরিয়ার কুর্দি বাহিনীর প্রধান মিত্র হলো যুক্তরাষ্ট্র। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে সিরিয়ায় জঙ্গি গোষ্ঠীটিকে পরাজিত করেছিল তারা।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীর কমান্ডার সিরিয়ায় নিহত
সিরিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ২ সেনা আহত
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম মঙ্গলবার বলেছে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কৌশলগত পূর্বাঞ্চলীয় একটি প্রদেশে বিমান হামলায় দুই সৈন্য আহত হয়েছেন এবং এতে বস্তুগত ক্ষতিও হয়েছে।
হামলার বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা বলেছে, সোমবার রাতে দেইর এল-জৌরের সামরিক অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়।
ইরাকের সীমান্তবর্তী পূর্ব দেইর এল-জৌর প্রদেশে তেল ক্ষেত্র রয়েছে এবং সিরিয়ার সংঘাতের সময় এটি একটি কৌশলগত প্রদেশ, সময়ের পরিক্রমায় যা এখন ১৩তম বছরে। ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠী এবং সিরীয় বাহিনী এই অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণ করে এবং পূর্ববর্তী হামলায় প্রায়শই ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
ব্রিটেনভিত্তিক বিরোধী দলের যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড অ্যাক্টিভিস্ট দল দেইর ইজোর ২৪ জানিয়েছে, ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত ইরাকি সীমান্তের বুকামাল অঞ্চলের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। উভয়ই বলেছে, তারা বিমান হামলার উৎস শনাক্ত করতে পারেননি।
ইসরায়েল সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার সরকার নিয়ন্ত্রিত অংশের অভ্যন্তরে শত শত হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে রাজধানী দামেস্কের বিমানবন্দরে হামলাও রয়েছে। এসব হামলা প্রায়ই সিরীয় বাহিনী বা ইরান সমর্থিত গোষ্ঠীগুলোকে লক্ষ্য করে চালানো হয়।
লিবিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত
লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় অন্তত ৬৪ ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। রবিবার ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে।
বিবৃতিতে মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা আহমাদ আল-দীক বলেন, আমরা লিবিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং দুর্ভোগের পরিমাণ নিরূপনে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি।
আরও পড়ুন: লিবিয়ার বন্যার্তদের জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ত্রাণ পাঠানো হচ্ছে আজ
তিনি বিবৃতিতে আরও বলেন, আমরা তাদের (নিহতদের) পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি এবং আশা করছি নিখোঁজ ব্যক্তিদের জীবিত খুঁজে পাওয়া যাবে।
গত ১০ সেপ্টেম্বর লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে বিধ্বংসী ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ড্যানিয়েল আঘাত হানে। এর ফলে লিবিয়ায় কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এতে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এবং এই অঞ্চলের অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়।
আরও পড়ুন: লিবিয়ার উপকূলীয় শহর দেরনায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১১,৩০০: রেড ক্রিসেন্ট
লিবিয়ায় বন্যা: নিহত ১১ হাজার ছাড়িয়েছে, আরও ১০ হাজার নিখোঁজের অনুসন্ধান চলছে
ইরাকের কুর্দি অঞ্চলে সামরিক বিমানবন্দরে হামলায় নিহত ৩
উত্তর ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলে একটি সামরিক বিমানবন্দরে বিমান হামলায় তিনজন নিহত হয়েছে।
সোমবার এই হামলা ও হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
এক বিবৃতিতে এই অঞ্চলের কাউন্টার টেরোরিজম সার্ভিস বলেছে, সুলেইমানিয়াহ শহরের ২৮ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের আরবাত বিমানবন্দরে হামলায় তিনজন কর্মী নিহত হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও তিন কুর্দি পেশমারগা বাহিনীর তিন সদস্য।
সম্প্রতি বিমানবন্দরটিতে প্রশিক্ষণের সুবিধার্থে প্যাট্রিয়টিক ইউনিয়ন অফ কুর্দিস্তানের সঙ্গে যুক্ত সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটগুলোর পুনর্বাসন করা হয়েছিল। যা এই অঞ্চলের দুটি প্রায়শই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রধান দলগুলোর একটি। যারা সুলেইমানিয়াহ’র নিয়ন্ত্রণে করছে।
কাউন্টার টেরোরিজম সার্ভিস কোনো পক্ষকে হামলার জন্য দায়ী করেনি। তবে সুলায়মানিয়াহ গভর্নরেট একটি বিবৃতিতে ‘এই অঞ্চলের দেশগুলোকে কুর্দিস্তান অঞ্চল এবং ইরাকের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করার জন্য’ আহ্বান জানিয়েছে এবং এতে বোঝানো হয়েছে যে এই হামলাটি তুরস্ক চালিয়েছে।
আরও পড়ুন: ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৬ তুর্কি সেনা নিহত : আঙ্কারা
এছাড়াও সোমবার, কুর্দিস্তান ন্যাশনাল কংগ্রেস, কুর্দি গোষ্ঠী এবং দলগুলোর একটি সহায়তাপুষ্ট সংগঠন একটি বিবৃতিতে বিশদ বিবরণ না দিয়ে বলেছে , তাদের একজন সদস্যকে ইরবিলে গ্রুপের অফিসের ভিতরে ‘হত্যা’ করা হয়েছে।
তুরস্ক প্রায়শই সিরিয়া এবং ইরাকের কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি, বা পিকেকে’র লক্ষ্যবস্তুগুলোতে হামলা চালায়। তারা বিশ্বাস করে যে একটি কুর্দি বিচ্ছিন্নতাবাদী দল যেটি ১৯৮০ সাল থেকে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে চালিয়ে আসছে, তাদের সঙ্গে এরা যুক্ত।
কুর্দি জঙ্গি কার্যকলাপের কথিত বৃদ্ধির কারণে ফ্লাইটের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়ায় এপ্রিল মাসে সুলেইমানিয়াহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এবং সেখান থেকে ফ্লাইটের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় তুরস্ক।
আরও পড়ুন: ইরাকে তীর্থযাত্রী বহনকারী বাস উল্টে নিহত ১৮
ইরাকে তীর্থযাত্রী বহনকারী বাস উল্টে নিহত ১৮
ইরাকের রাজধানী বাগদাদের উত্তরে তীর্থযাত্রীদের কারবালা শহরে বহনকারী একটি বাস উল্টে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি দেশটির মেডিকেল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
বিশ্বের বৃহত্তম বার্ষিক জনসমাগম হিসেবে বিবেচিত আরবাইনের শিয়া তীর্থযাত্রার জন্য প্রতি বছর লাখ লাখ বিশ্বাসী এই শহরে জড়ো হন। ইরাকের বিভিন্ন অংশ থেকে, পাশাপাশি ইরান ও উপসাগরীয় দেশগুলো থেকেঅ তীর্থযাত্রীরা আসেন, অনেকে পায়ে হেঁটে কারবালার পথে যাত্রা করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ২ ইরাকি চিকিৎসা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বাগদাদ থেকে প্রায় ৫৫ মাইল (৯০ কিলোমিটার) উত্তরে বালাদ শহরের কাছে বাসটি উল্টে যায়।
কর্মকর্তারা বলেন, নিহতদের মধ্যে ১৫ জন পুরুষ ও ৩ জন নারী। এদের মধ্যে ১০ জন ইরানি, ২ জন ইরাকি (বাসচালক ও তার ছেলে) এবং ৬ জন অজ্ঞাত পরিচয়ের নাগরিক।
আরও পড়ুন: ইরাকে বিস্ফোরণে ৯ পুলিশ নিহত: কর্তৃপক্ষ
ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৬ তুর্কি সেনা নিহত : আঙ্কারা
সৌদি সীমান্তরক্ষীর গুলিতে শতাধিক ইথিওপিয়ান অভিবাসী নিহত: দাবি মানবাধিকার সংগঠনের
সৌদি আরবের সীমান্ত রক্ষীরা ইয়েমেন থেকে দেশে প্রবেশের চেষ্টা করা ইথিওপিয়ানদের উপর মর্টার নিক্ষেপ ও মেশিনগান দিয়ে গুলি করেছে বলে দাবি করা হয়েছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক রিপোর্টে। এতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শতাধিক নিরস্ত্র অভিবাসী নিহত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
সোমবার প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে সৈন্যদের হামলার প্রত্যক্ষদর্শীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য এবং অভিবাসীদের প্রবেশের পথে মৃতদেহ ও সমাধিস্থলের ছবি তুলে ধরা হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, নিহতের সংখ্যা 'হাজার হাজার' হতে পারে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের সঙ্গে সৌদি আরবের দক্ষিণ সীমান্তে অভিবাসন প্রত্যাশীদের উপর সেনাদের গুলি বর্ষণের বিষয়ে জাতিসংঘ এরই মধ্যে সৌদি আরবকে প্রশ্ন করেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সৌদি সরকারের একজন কর্মকর্তা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদনটিকে ‘ভিত্তিহীন এবং অনির্ভরযোগ্য সূত্রের উপর ভিত্তি করে করা’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে তিনি এই দাবির সমর্থনে কোনো প্রমাণ দেননি। সীমান্তে অভিবাসীদের পাচার করে সপ্তাহে কয়েক হাজার ডলার উপার্জন করছে- ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ৭ লাখ ইথিওপিয়ান সৌদি আরবে বাস করছে। যাদের মধ্যে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ মানুষ অনুমোদন ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশ করেছে। ইথিওপিয়ার উত্তর টাইগ্রে অঞ্চলে দুই বছরের গৃহযুদ্ধে কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
যুব বেকারত্বের সঙ্গে লড়াই করতে থাকা সৌদি আরব, আদ্দিস আবাবার সঙ্গে আলোচনা করে হাজার হাজার ইথিওপিয়ানকে নিজ দেশে ফেরত পাঠাচ্ছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ৩৮ জন ইথিওপিয়ান অভিবাসী এবং তাদের চারজন আত্মীয়ের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা ২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করেছিল। তারা বলেছেন, সৌদি সীমান্তরক্ষীরা অভিবাসীদের উপর গুলি করেছে বা অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষদের উপর বিস্ফোরক ছুঁড়তে দেখেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রুপটি ২০২১ সালের ১২ মে এবং ২০২৩ সালের ১৮ জুলাইয়ের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা ৩৫০টিরও বেশি ভিডিও এবং ফটোগ্রাফ বিশ্লেষণ করেছে এবং অন্যান্য উৎস থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছে। এটি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি এবং ২০২৩ সালের জুলাইয়ের মধ্যে স্যাটেলাইট ধারণ করা কয়েকশ বর্গকিলোমিটার (মাইল) এলাকার চিত্রও পরীক্ষা করেছে।
আরও পড়ুন: সৌদি আরবে মার্কিন কনস্যুলেটে বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ২
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'শরণার্থী শিবির ও চিকিৎসা কেন্দ্রে মৃত ও আহত অভিবাসীদের দেখা গেছে। এ ছাড়া অভিবাসী শিবিরের কাছেই কবরস্থানগুলো কীভাবে বাড়ছে, সৌদি আরবের সীমান্ত নিরাপত্তা অবকাঠামোর সম্প্রসারণ এবং সীমান্ত পারাপারের জন্য অভিবাসীরা বর্তমানে যেসব পথ ব্যবহার করছে তাও দেখা গেছে।’
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস -এর বিশ্লেষণ করা প্ল্যানেট ল্যাবস পিবিসি থেকে ২৭ এপ্রিলের একটি স্যাটেলাইট ছবি সৌদি সীমান্তে ইয়েমেনের আল-রাকউয়ের কাছে অধিকার সংস্থাগুলোর চিহ্নিত করা একই তাঁবুর কাঠামো দেখায়। সীমান্তের ওপারে সৌদি আরবে দুই স্তরের বেড়া দেখা যায়।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আল-থাবিতে অভিবাসী শিবির হিসেবে চিহ্নিত করা স্থানকে স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা চিত্রগুলোতেও দেখা যেতে পারে, যা গ্রুপের বর্ণনার সঙ্গে মিলে যায়। যে ক্যাম্পটি মূলত এপ্রিলের শুরুতে ভেঙে ফেলা হয়েছিল।
উত্তর-পশ্চিম ইয়েমেনের দুটি এলাকাতেই দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি। জাতিসংঘ বলেছে, হুথি-নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন অফিস ‘পরিকল্পিতভাবে অভিবাসীদের সৌদি আরবে সরাসরি পাঠানোর জন্য পাচারকারীদের সহযোগিতা করে’ এবং সপ্তাহে ৫০ হাজার মার্কিন ডলার আয় করে।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে হুথিরা ইয়েমেনের রাজধানী সানা দখল করে রেখেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট হুথিদের রাজধানী থেকে উচ্ছেদ না করে ২০১৫ সালের মার্চ থেকে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। সৌদি নেতৃত্বাধীন বাহিনী এবং হুথিদের মধ্যে লড়াই মূলত বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ রিয়াদ যুদ্ধ শেষ করার উপায় খুঁজছে। এ ছাড়া যুদ্ধের বছরগুলোতে, হুথিরা এই পাহাড়ি অঞ্চলে সৌদি সীমান্ত জুড়ে একাধিক অনুপ্রবেশের দাবি করেছে।
আরও পড়ুন: অবৈধ শ্রমিকদের দেশে ফেরার সুযোগ দিতে সৌদির উপমন্ত্রীকে রাষ্ট্রদূতের অনুরোধ
ইথিওপিয়া থেকে আসা অভিবাসীরা সৌদি আরব ও ইয়েমেনে যুদ্ধের সময় নিজেদের আটক, নির্যাতিত এবং এমনকি হত্যার শিকার হয়েছেন। কিন্তু সাম্প্রতিক মাসগুলোতে, ইয়েমেন থেকে আসা অভিবাসীদের উপর সৌদি বাহিনী হামলার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার উদ্বেগ বাড়ছে।
২০২২ সালের ৩ অক্টোবর জাতিসংঘের কাছ থেকে দেশটির কাছে পাঠানো একটি চিঠিতে বলেছে, এর তদন্তকারীরা ‘সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী আন্তঃসীমান্ত এলাকায় কামানের গুলি এবং ছোট অস্ত্রের গোলাগুলির অভিযোগ পেয়েছে। এতে ৪৩০ জনের মৃত্যু ও ৬৫০ জন অভিবাসী আহত হয়েছে।’
জাতিসংঘের ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘যদি কোনো অভিবাসী আটক হন তাহলে তাদের প্রায়শই লাইনে দাঁড় করিয়ে এবং পায়ের পাশ দিয়ে গুলি করে নির্যাতনের শিকার হতে হয়। এমনকি বুলেটটি কতদূর যাবে তা দেখার জন্য। এ ছাড়াও তারা হাতে বা পায়ে গুলি করতে পছন্দ করে কি না তাও জিজ্ঞাসা করা হয়।’ ‘এই ধরনের আক্রমণ থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা পালানোর জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য 'মৃতের ভান করেন' বলে জানিয়েছেন।’
সৌদি আরব সীমান্তে ‘পরিকল্পিত’ হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করার অভিযোগ ‘স্পষ্টভাবে খণ্ডন’ করে মার্চ মাসে জেনেভায় জাতিসংঘে দেশটির মিশনে একটি চিঠি দিয়েছে। এ ছাড়াও চিঠিতে আরও বলেছে, জাতিসংঘ ‘সীমিত তথ্য’ সরবরাহ করেছে তাই এই ‘অভিযোগগুলো নিশ্চিত বা প্রমাণিত নয়।’
আরও পড়ুন: সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সৌদি আরবের সঙ্গে সম্পর্ক 'ঠিক দিকেই এগোচ্ছে': ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন, তার দেশ ও সৌদি আরবের মধ্যকার সম্পর্ক ঠিক দিকেই এগোচ্ছে এবং উভয় পক্ষই বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে এগিয়ে নেবে।
বৃহস্পতিবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে বৈঠক শেষে সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আমির-আব্দুল্লাহিয়ান এ মন্তব্য করেন।
গত মার্চে চীনের মধ্যস্থতায় ২ দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার করতে সম্মত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো সৌদি আরবে সরকারি সফরে আসা ইরানের শীর্ষ এই কূটনীতিক বলেন, সৌদি মন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক 'ফলপ্রসূ' হয়েছে।
তিনি বলেন, ইরান নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ২ দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তাদের বাস্তবায়নের জন্য একটি প্রযুক্তিগত ও নির্বাহী কমিটি গঠন করবে।
আরও পড়ুন: 'শান্তি ও স্থিতাবস্থা' বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি চীন-ভারতের
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান নিশ্চিত করেছেন যে ইরানের প্রেসিডেন্ট শিগগিরই সৌদি আরব সফর করবেন।
তিনি ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০৩০ আয়োজনের জন্য সৌদি আরবের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করে সৌদি মন্ত্রী বলেন, আঞ্চলিক নিরাপত্তা বজায় রাখার মূল চাবিকাঠি হচ্ছে ইরানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধার।
তিনি বলেন, সৌদি আরব ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখবে এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন অগ্রগতিকে উৎসাহিত করবে।
সৌদি কর্মকর্তাও ইরানের প্রেসিডেন্টের নির্ধারিত সৌদি আরব সফরকে স্বাগত জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী বাসে বন্দুকধারীদের অতর্কিত হামলা, নিহত ২০
সিরিয়ায় সৈন্যদের বহনকারী একটি বাসে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করেছে বন্দুকধারীরা। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় এলাকায় এই হামলা চালানো হয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে দেশটির বিদ্রোহীরা।
বৃহস্পতিবার রাতের হামলাটি ইসলামিক স্টেট গোষ্ঠী (আইএস) সদস্যরা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গোষ্ঠীটি সিরিয়ায় ২০১৯ সালে পরাজিত হওয়ার পর থেকে দেশটির কিছু কিছু অংশে তাদের গুপ্তঘাতক দলগুলোর সাহায্যে মারাত্মক হামলা চালিয়ে আসছে।
ব্রিটেন-ভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস জানিয়েছে, ইরাকের সীমান্তবর্তী দেইর এল-জোর প্রদেশের মায়াদিনের পূর্বাঞ্চলীয় শহরের কাছে একটি মরুভূমির রাস্তায় হামলায় ২৩ সিরীয় সেনা নিহত এবং ১০ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় আইএসের ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ৬ বেসামরিক নাগরিক নিহত
পূর্ব সিরিয়ার সংবাদ পরিবেশনকারী আরেকটি অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ বলেছে, ২০ জন সেনা নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছেন।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সামরিক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলেছে, বৃহস্পতিবার রাতে এই হামলায় ‘অনেক সেনা নিহত ও আহত হয়েছে।’ তবে এটি বিস্তারিত বিবরণ দেয়নি, বা হতাহতের সংখ্যা সম্পর্কেও কিছু জানায়নি।
আইএস সিরিয়া এবং ইরাকের বড় একটি অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ২০১৪ সালের জুন মাসে খেলাফত ঘোষণা করেছিল। মাত্র তিন বছরের মধ্যে তাদের দখল করা অঞ্চলগুলো হারাতে থাকে এবং ২০১৭ সালে ইরাকে এবং এর দুই বছর পরে সিরিয়ায় পরাজিত হয় গোষ্ঠীটি।
এর আগে এক বছরের মধ্যে গত ফেব্রুয়ারিতে আইএস’র গুপ্তঘাতক দল দেশটির কেন্দ্রীয় শহর সুখনার কাছে ছত্রাক সংগ্রহকারীদের ওপর ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ৫৩ জনকে হত্যা করেছিল। যাদের বেশির ভাগই শ্রমিক ছিল। এছাড়া হামলায় নিহতদের মধ্যে সিরিয়া সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েজন সদস্যও ছিল।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় বিমান হামলায় ২৯ তুর্কি সেনা নিহত
জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর ওপর গবেষণাকারী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চরমপন্থীদের হামলার নতুন ধারাটি সিরিয়া ও ইরাকের লাখ লাখ মানুষকে সন্ত্রাসবাদের মাধ্যমে শাসনকারীদের একটি নতুন পুনরুত্থানের চিহ্নিত করে কিনা তা খুব দ্রুতই ঠিক করতে হবে।
গত সপ্তাহে, আইএস সিরিয়ায় তার স্বল্প পরিচিত নেতা আবু আল-হুসেইন আল-হুসেইনি আল-কুরায়শির মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে। এই নেতা গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে চরমপন্থী সংগঠনটির প্রধান ছিলেন। মৃত্যুর আগে তার উত্তরাধিকারীর নামও ঘোষণা করেছেন তিনি। ২০১৯ সালে উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় মার্কিন সেনাদের হাতে এর প্রতিষ্ঠাতা আবু বকর আল-বাগদাদি নিহত হওয়ার পর চতুর্থ শীর্ষ নেতা হিসেবে তিনি নিহত হন।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর অভিযানে নিহত ১৩
ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের হামলায় ৬ তুর্কি সেনা নিহত : আঙ্কারা
উত্তর ইরাকে কুর্দি যোদ্ধাদের বুধবার রাতের হামলায় অন্তত ছয় তুর্কি সেনা নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হতাহতের কথা জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের শেয়ার করা একটি সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে জানায়, পরে প্রতিশোধমূলক বিমান হামলায় বৃহস্পতিবার নিষিদ্ধ কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি বা পিকেকে-র চার সদস্যও মারা গেছেন।
একদিকে তুরস্ক এবং তুর্কি সমর্থিত গোষ্ঠী এবং অন্যদিকে ইরাক ও সিরিয়ার কুর্দি যোদ্ধাদের মধ্যে মাসব্যাপী উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে সর্বশেষ সহিংসতা এটি।
তুরস্কের মধ্যে এক দশক ধরে বিদ্রোহ চালিয়েছে যাওয়া পিকেকে এবং সিরিয়া ও ইরাকের মিত্র কুর্দি গোষ্ঠীগুলিকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে বিবেচনা করে আঙ্কারা। তুরস্ক দাবি করে যে পিকেকে সদস্যরা নিয়মিতভাবে উত্তর ইরাকের আধা-স্বায়ত্তশাসিত কুর্দি অঞ্চলে নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পায়।
বাগদাদে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, উত্তর ইরাকের কুর্দি অঞ্চলের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে যে বুধবার ইরাকের সুলায়মানিয়াহ প্রদেশে পিকেকের গাড়ি লক্ষ্য করে পৃথক দুটি তুর্কি ড্রোন হামলায় দুই বিদ্রোহী নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
তুরস্ক ইরাকের একটি সীমান্ত অঞ্চলে সৈন্য মোতায়েন করে এবং সেখানে পিকেকে অবস্থানগুলোকে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করে। গত বছর এটি উত্তর ইরাকে পিকেকে-এর বিরুদ্ধে ‘ক্ল-লক’ নামে একটি স্থল ও বিমান অভিযান শুরু করে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইরাকি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলেছেন, বৃহস্পতিবারের বিমান হামলা দুহোক শহরের উত্তরে অবস্থানে আঘাত হেনেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় মার্কিন-সমর্থিত কুর্দি যোদ্ধাদের ওপর আইএসের হামলা
তুর্কি কর্নেল জেকি আকতুর্ক নিহত সেনাদের প্রতিশোধ নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমাদের সৈন্যরা শহীদদের রক্ত মাটিতে ছাড়বে না।একজন সন্ত্রাসী অবশিষ্ট না থাকা পর্যন্ত একই দৃঢ়তার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনী তাদের লড়াই চালিয়ে যাবে।’
১৯৮৪ সাল থেকে তুরস্কে পিকেকে-এর বিদ্রোহীরা কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় হামলায় নিহত ১০, কুর্দি বাহিনীর হাতে ৫২ জঙ্গি গ্রেপ্তার
ইরান ও বেলজিয়ামের বন্দী বিনিময়, ত্রাণকর্মী ও কূটনীতিকের মুক্তি
বেলজিয়াম এবং ইরান একটি বন্দী বিনিময় করেছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। শুক্রবার ওমানের মধ্যস্থতায় ওমানে এই বন্দী বিনিময় হয়।
তেহরান ফ্রান্সে নির্বাসিতদের একটি সভায় বোমা হামলার চেষ্টার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত একজন ইরানী কূটনীতিকের বিনিময়ে একজন বেলজিয়ামের ত্রাণকর্মীকে মুক্তি দিয়েছে।
ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক ঘোষণায় কোন বন্দীদের অদলবদল করা হচ্ছে তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
পরে শুক্রবার, বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার ডি ক্রু এক বিবৃতিতে বলেছিলেন যে ত্রাণকর্মী অলিভিয়ের ভান্দেকাস্টিলেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। পরে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন নিশ্চিত করেছে যে কূটনীতিক আসাদুল্লাহ আসাদিকেও মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
ওমানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে যে ‘যাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে তাদের দেশে ফেরার প্রস্তুতি হিসেবে আজ শুক্রবার তেহরান এবং ব্রাসেলস থেকে মাস্কাটে স্থানান্তর করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০ মার্কিন নাগরিক ৪ প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা ইরানের
এতে আরও বলা হয়েছে যে ‘ওমানের সালতানাত ইরান ও বেলজিয়ান পক্ষের মধ্যে মাস্কাটে আলোচনায় বিরাজমান উচ্চ ইতিবাচক মনোভাব এবং এই মানবিক সমস্যা সমাধানে তাদের আগ্রহের প্রশংসা করেছে।’
ডি ক্রু জানান, বৃহস্পতিবার রাতে ভ্যানডেকাস্টিলকে ওমানে বদলি করা হয়েছে। তাকে বেলজিয়ামের কূটনীতিক এবং সামরিক কর্মকর্তাদের একটি দল অভ্যর্থনা জানায়, তারপরে ডাক্তাররা তার শারীরিক পরীক্ষা করেন।
ডি ক্রু লিখেছেন ‘নির্দোষ অলিভিয়ার তেহরানের কারাগারে অসহনীয় পরিস্থিতিতে ৪৫৫ দিন কাটিয়েছেন।’ ‘বেলজিয়ামে অলিভিয়ার ভ্যানডেকাস্টিলের প্রত্যাবর্তন একটি স্বস্তি। তার পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের জন্য একটি স্বস্তি।’
ওমান দীর্ঘদিন ধরে ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে।
জানুয়ারিতে, ইরান একটি রুদ্ধদ্বার বিচারে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য দোষী সাব্যস্ত করার পরে ভ্যানডেকাস্টিলকে দীর্ঘ কারাদণ্ড এবং ৭৪টি বেত্রাঘাতের শাস্তি দেয়। পাশাপাশি তাকে এক মিলিয়ন ডলার জরিমানা করা হয়েছে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ২০১৫ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইসলামিক রিপাবলিকের নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল এবং রিলিফ ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে কাজ করার পর, ভ্যানডেকাস্টিলকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইরানে তার জিনিসপত্র প্যাক করার সময় গ্রেপ্তার করেছিল।
ইরানের কূটনীতিকের সঙ্গে অদলবদল সম্ভব করার জন্য, বেলজিয়াম মার্চ মাসে একটি বিতর্কিত বন্দী বিনিময় চুক্তি গ্রহণ করেছিল যা দেশের সাংবিধানিক আদালতে বহাল ছিল।
২০২১ সালে বেলজিয়াম আসাদিকে ফ্রান্সে নির্বাসিত ইরানী বিরোধী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একটি ব্যর্থ বোমা হামলার পরিকল্পনার জন্য দোষী সাব্যস্ত করে এবং তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়।
প্রসিকিউটররা আসাদিকে এক দম্পতির সঙ্গে জড়িত করে যাদেরকে ২০১৮ সালে থামিয়ে বেলজিয়ামের পুলিশ ৫৫০ গ্রাম (এক দশমিক ২১ পাউন্ড) টিএটিপি বিস্ফোরক ও একটি ডেটোনেটর খুঁজে পেয়েছিল। তারা মুজাহেদিন-ই-খালকের ফ্রান্সের ভিলেপিন্টে এমইকে নামে পরিচিত একটি নির্বাসিত ইরানী বিরোধী দলের মিটিংয়ে হামলা করার চেষ্টা করছিল।
অন্যদিকে আসাদিকে একদিন পর জার্মানিতে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বেলজিয়ামে স্থানান্তর করা হয়। বেলজিয়ামের গোয়েন্দারা তাকে ইরানের গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা হিসেবে শনাক্ত করেছে যিনি অস্ট্রিয়ায় ইরানি দূতাবাসে গোপনে কাজ করতেন। ইরান আসাদির জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: ইরানে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতার দায়ে ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর