শিল্প-সংস্কৃতি
ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
স্বাধীনতা যুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলোর কাল সাক্ষী হয়ে আছে অতি প্রাচীন এই নগরী ঢাকা। যুদ্ধের প্রেক্ষাপট পালটে দিতে যেমন অনেক কৃতি সন্তানের বিচরণ ঘটেছে এর পিচঢালা পথে, তেমনি বিস্ফোরণের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশের রাজধানীর বুক। সেই সব চাঞ্চল্যকর ঘটনাগুলোকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে এখানে তৈরি করা হয়েছে অনেক স্মৃতিস্তম্ভ যেগুলো আজও মনে করিয়ে দেয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের কথা। বিমূর্ত ভাস্করগুলো যেন এখনও প্রচার করে যায় মুক্তিযুদ্ধের বাণী। চলুন, এই বিজয়ের মাসে ঢাকায় অবস্থিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-স্মারকগুলোর ব্যাপারে কিছু জেনে নেয়া যাক।
ঢাকায় অবস্থিত বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ ভিত্তিক স্থাপত্য ও ভাস্কর্য
স্বাধীনতা স্তম্ভ, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’ ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই জ্বালাময়ী ভাষণের জন্য বিখ্যাত এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। এটি সেই ময়দান যেখানে যুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সেনা আত্মসমর্পণ করেছিল। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের এই তাৎপর্য চিহ্নিত করতে সেখানে স্বাধীনতা সৌধ নামে একটি স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। স্তম্ভটির নকশা করেছেন কাশেফ মাহবুব চৌধুরী ও মেরিনা তাবাসসুম। ১৫০ ফুট লম্বা এবং ১৬ ফুট প্রশস্ত কাঠামোটি মূলত একটি কাচের টাওয়ার। পশ্চিম দিকে একটি ছোট্ট লেক এবং পূর্ব দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর বানানো একটি পোড়ামাটির ম্যুরাল রয়েছে। এই স্মৃতিস্তম্ভের নীচে স্বাধীনতা জাদুঘর।
আরও পড়ুন: স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক: সুজেয় শ্যাম
শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ, রায়ের বাজার বধ্যভূমি
ঢাকার পশ্চিমে মিরপুর বেড়ি বাধেঁর পাশে অবস্থিত এই শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ। পাকিস্তান সেনাবাহিনী যখন যুদ্ধে আসন্ন পরাজয় টের পেল, তখন তারা ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গকে হত্যা করে এখানকার পরিত্যক্ত ইটের ভাটার পেছনের জলাশয়ে ফেলে রেখেছিলো। এর মধ্যে ছিলেন শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, প্রকৌশলী, চিকিৎসক, শিল্পী, এবং আইনজীবী, যারা স্বাধীন বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নের রূপকার হতেন।
নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ‘কনসার্ট ফর মাইগ্রেন্টস’ শনিবার
বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবস উপলক্ষে নিরাপদ অভিবাসন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে ১৮ ডিসেম্বর ‘কনসার্ট ফর মাইগ্রেন্টস’ নামে একটি ভার্চুয়াল কনসার্ট আয়োজন করবে।
দ্বিতীয়বারের মতো হতে যাওয়া কনসার্টের লক্ষ্য হলো অভিবাসী ও তাদের সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা এবং তথ্য ও বিনোদনের মাধ্যমে নিরাপদ অভিবাসনকে উৎসাহিত করা।
প্রথম ‘কনসার্ট ফর মাইগ্রেন্টস’ ২০২০ সালে অনুষ্ঠিত হয় যেখানে ২০ টিরও বেশি দেশের ৪০ লাখেরও বেশি দর্শক ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়।
সারাবিশ্বে কর্মরত প্রায় ৭৪ লাখের মতো বাংলাদেশি প্রবাসী এ কনসার্টের মাধ্যমে যুক্ত হতে পারবে এবং কনসার্টটি দেখতে পারবে।
আরও পড়ুন: চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বিজয় মেলা: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা
ভার্চুয়াল এ কনসার্টে গান পরিবেশন করবেন কুমার বিশ্বজিৎ, ফজলুর রহমান বাবু, শিরোনামহীন, লুইপা, আসিফ আকবর, কুদ্দুস বয়াতি, নন্দিতা, প্রীতম আহমেদ, মাশা ইসলামসহ জনপ্রিয় শিল্পীরা।
এ কনসার্টে বেশিরভাগ লোকসঙ্গীত ও সমসাময়িক সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে। মূলত যে গানগুলো সম্পর্কে অভিবাসী, তাদের পরিবার ও সাধারণ সম্প্রদায়ের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে।
বাংলাদেশের অভিবাসী শ্রমিকরা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ রেমিটেন্স অর্জনকারী দেশ এবং ১৯৭৬ সাল থেকে অভিবাসীরা ২৪৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন।
আইওএম বাংলাদেশের অফিসার ইনচার্জ ফাতিমা নুসরাথ গাজ্জালি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবসে, এই কনসার্টের মাধ্যমে দেশে ও বিদেশে অবদান রাখা বাংলাদেশি প্রবাসীদের আমরা সম্মান জানানোর সুযোগ পেয়েছি।’
তিনি বলেন, নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও বৈধ অভিবাসনের গুরুত্ব সম্পর্কে এই কনসার্ট দর্শকদের অবহিত করবে এবং একইসঙ্গে বিনোদন দেবে।
আরও পড়ুন: ওজন কমাতে ১০ কার্যকরী পানীয়
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক: সুজেয় শ্যাম
কনসার্টকে সামনে রেখে কুমার বিশ্বজিৎ এক ভিডিও বার্তায় বলেন, ‘অনুগ্রহ করে কোনো ফাঁদে পা দেবেন না এবং বিদেশে অভিবাসনের সময় মানব পাচারের শিকার হবেন না। একটি সচেতন সিদ্ধান্ত নেয়াই নিরাপদে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার সর্বোত্তম উপায়।’
অভিনেতা ও গায়ক ফজলুর রহমান বাবু বলেন, ‘অভিবাসন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ খাত। কিন্তু এরপরও অনেক অভিবাসী অবৈধভাবে বিদেশে যাচ্ছেন।’
চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে বিজয় মেলা: মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা
প্রতিবছরের মতো চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে এবারও অনুষ্ঠিত হয়ে গেল দিনব্যাপী বিজয় মেলা। ‘বিজয়ের ৫০’ শিরোনামে এই আয়োজন শুরু হয় বেলা ১১টা ৫ মিনিটে। অনুষ্ঠানে ৫০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন চ্যানেল আই পরিচালনা পর্ষদ সদস্য জহিরউদ্দিন মাহমুদ বাবু এবং চ্যানেল আই—এর পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ প্রমুখ।দেশাত্মবোধক গান গেয়ে অনুষ্ঠানে প্রাণ সঞ্চার করেন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর শিল্পীরা। এসময় স্মৃতিচারণ করেছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য ও অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্টজনরা।
শিল্পী মনিরুল ইসলামের নেতেৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চিত্রাংকন করেছেন একদল শিল্পী। ছোট পরিসরে বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী ও মুক্তিযুদ্ধের দলিল সম্বলিত স্টলও ছিল মেলায়।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণই আমাদের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রীবীর শহীদদের স্মরণে এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘৫০ বছরের অর্জন ও আনন্দের বিজয় দেখে যেতে পারবো ভাবিনি। আমাদের কাছে অভাবনীয় সাফল্যের দিন আজ। এদিনে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা জানাতে পারবো চিন্তার বাইরে ছিল। জীবন বাজি রেখে যেসব মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন তাদের সালাম ও শ্রদ্ধা জানাই। এই শ্রদ্ধাঞ্জলি শুধু এখানকার ৫০ জন যোদ্ধাদের নয়, সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের। তারা এগিয়ে না এলে আমরা এদেশ পেতাম না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকের কমবেশি ক্ষমতা রয়েছে। এর সঙ্গে একটু মমতা মিশিয়ে প্রত্যেকে হাতে হাত মিলিয়ে এগিয়ে এলেই বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যেতে পারবে। তাহলেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও আমাদের বাংলাদেশ ভালো থাকবে।অনুষ্ঠানে আগত মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরীয় পরিয়ে তাদের হাতে সম্মাননাসূচক ক্রেস্ট তুলে দেন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম, চ্যানেল আই পরিচালনা পর্ষদ সদস্যরা।
বীর শহীদদের স্মরণ করে শাইখ সিরাজ বলেন, ‘বাংলাদেশের উন্নয়ন কাছ থেকে দেখার সুযোগ হয়েছে। পরবর্তী ৫০ বছরে দেশ যেখানে যাবে সেই স্বপ্ন আমরা এখনই দেখা শুরু করেছি। আমাদের সবার প্রচেষ্টা ও কল্যাণে দেশ যেভাবে অগ্রগামী হচ্ছে আগামীতে আরও এগুবে। সেদিন আমরা হয়তো থাকবো না, থাকবে নতুন প্রজন্ম।অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব হাসান ইমাম, লায়লা হাসানসহ আরও অনেকে।
পড়ুন: স্বাধীনতার লক্ষ্য এখনো বাস্তবায়িত হয়নি: ফখরুল
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক: সুজেয় শ্যাম
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কণ্ঠযোদ্ধা ও জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। দেশ স্বাধীনের আগে থেকে সংগীত নিয়ে কাজ করে চলেছেন সুজেয় শ্যাম। মুক্তিযুদ্ধের সময়ে স্বাধীন বাংলা বেতারের জন্য তার সুরকরা গানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ’, ‘রক্ত দিয়ে নাম লিখেছি, বাংলাদেশের নাম’, ‘ওরে আয়রে তোরা শোন’, ‘মুক্তির একই পথ সংগ্রাম’, ‘রক্ত চাই, রক্ত চাই’।
গত বছর করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর অনেকদিন ঘরবন্দি সময় কেটেছে তার। তবুও থেমে থাকেনি তার সৃষ্টি। চলতি বছর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে পাঁচটি গান প্রকাশ করেছেন তিনি। বর্তমানে তার ব্যস্ততা বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তীকে কেন্দ্র করে। সেসব প্রসঙ্গের পাশাপাশি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন ইউএনবির সঙ্গে।
প্রতিবছর বিজয় দিবস এলে আপনার ব্যস্ততা অনেকটা বেড়ে যায়। এবার কোন কোন বিশেষ আয়োজনে আপনাকে পাওয়া যাবে?
হ্যাঁ, ব্যস্ততা তো খানিকটা বেড়ে যায়। গত বছর করোনার জন্য অনেক আয়োজন সম্ভব হয়নি। তবে এবারের চিত্রটা পাল্টেছে। বড় পরিসরে একাধিক অনুষ্ঠান হবে। আমিও বেশ কয়েকটিতে থাকবে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৬ ডিসেম্বর সংসদ ভবনের আয়োজনটি। এছাড়া টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারের বেশ কয়েকটি শোতে থাকব।
আরও পড়ুন: ঢাকার দর্শকদের মুগ্ধ করেছে সুফি সঙ্গীত
মুক্তিযুদ্ধের সময় আপনার মতো কণ্ঠযোদ্ধাদের যেমন প্রতিবাদের মাধ্যম ছিল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, তেমনি মুক্তিযোদ্ধাদের গান দিয়ে জাগ্রত করেছেন আপনারা। সেই সময় আপনার ভূমিকার কথাগুলো জানাতে চাই।
গান সব সময় শক্তিশালী মাধ্যম। এর মধ্য দিয়ে মানুষকে যেমন বিনোদন দেয়া যায়, তেমনি এটি প্রতিবাদের হাতিয়ার। পৃথিবীর অনেক সংগ্রাম ও প্রতিবাদের গানের সম্পৃক্ততা রয়েছে। আমাদের ক্ষেত্রেও তেমন। কণ্ঠ দিয়ে আমরা যেমন প্রতিবাদ করেছি তেমনি একটি স্বাধীন দেশের জন্য বিজয়ের স্বপ্ন বুনেছি। এজন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী, সুরকার ও সংগীত পরিচালকসহ সবাই দিন-রাত নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রর জন্য আমার প্রথম গান ছিল কবি দেলওয়ারের ‘আয়রে চাষি মজুর’। পরবর্তীতে আরও ৮টি গান করেছি। সুর ও সংগীতায়োজনের মধ্য দিয়ে আশার মশাল জ্বালানোর আহ্বান জানিয়েছি। একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান বলে মনে হয়।
আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গানও যুক্ত। নতুন প্রজন্মের কাছে গানগুলো কতটা পৌঁছেছে মনে করেন?
দেশ গঠন সম্পর্কে জানতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানার বিকল্প নেই। সেটি তরুণ প্রজন্মসহ সবার জন্যই। সেই সময়ের অবস্থা, দুঃখ বা আনন্দ সবকিছুই স্বাধীন বাংলার গানে প্রকাশ হয়েছে। নতুন প্রজন্মের কাছেও স্বাধীন বাংলা বেতারের গানের জনপ্রিয়তা রয়েছে। তরুণ যারা গান করছেন তাদের কণ্ঠেও গানগুলো শোনা যায় মাঝে মাঝে। তবে সেই প্রসার আরও হওয়া প্রয়োজন মনে করি। এনটিভির জন্য একটি রিয়্যালিটি শোতে দুই দিনব্যাপী স্বাধীন বাংলার গান নিয়ে একটি আয়োজন ছিল। যেগুলো তখনকার প্রতিযোগিরা গেয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেই গানগুলো নিয়ে অ্যালবাম বের হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আর হয়নি। আমার একটা ইচ্ছার কথা বলি, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেয়া হোক। যদিও মাঝে একটি টেলিকম প্রতিষ্ঠান একটি উদ্যোগ নিয়ে দুটি অ্যালবাম রিলিজ করেছিল। কিন্তু সেখানে যারা গেয়েছেন এর মান নিয়ে আমার সন্দেহ রয়েছে।
আরও পড়ুন: পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হলো প্রথম বাংলাদেশ কউচার উইক
‘পিস রানার অ্যাওয়ার্ড' পেলেন বিশ্বজয়ী বাংলাদেশি পর্যটক নাজমুন নাহার
এখন অন্যান কী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
শরীরের জন্য তো আগের মতো নিয়মিত কাজ করতে পারি না। করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার পর শেখ হাসিনাকে নিয়ে ৫টি গান করেছিলাম। সেটি বেশ বড় আয়োজন ছিল। এখন বাংলাদেশ টেলিভিশনে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের গান নিয়ে একটি অনুষ্ঠান করছি। এরইমধ্যে চারটি পর্ব প্রচার হয়েছে।
অনেক সিনেমায় সংগীত পরিচালক হিসেবে আপনাকে পাওয়া গেছে। তবে এখন বিরতিতে আছেন। সামনে কাজ ও এখন প্লেব্যাকের অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন।
একবারে যে বিরতি নিয়েছি এমনটা নয়। গত বছর নার্গিস আক্তার পরিচালিত ‘যৈবতী কন্যা মন’ সিনেমার সংগীত পরিচালনা করেছি। যদিও এখন পর্যন্ত তা মুক্তি পায়নি। আর এখন তো আমাদের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের অনেককিছুতেই সংকট। সিনেমার গানের যেই জনপ্রিয়তা এক সময় ছিল, সেটিও কমেছে। প্রযুক্তর উন্নতি হয়েছে কিন্তু আবেগ হয়তো কমে যাচ্ছে। তবে এর মধ্যেও ভালো কাজ হচ্ছে। অনেক চেষ্টা প্রশংসা করার মতো।
ঢাকার দর্শকদের মুগ্ধ করেছে সুফি সঙ্গীত
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি (বিএসএ)ও তুরস্ক দূতাবাসের যৌথ আয়োজনে সোমবার সন্ধ্যায় সুফি সঙ্গীত, তুর্কি ঐতিহ্যবাহী ঘূর্ণি দরবেশ এবং বাউল গান ঢাকার দর্শকদের মুগ্ধ করেছে।
মুজিববর্ষ ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে একাডেমি ও দূতাবাস যৌথভাবে এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিএসএ মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশে নিযুক্ত তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দশটি প্রাচীন মসজিদ: দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
তুর্কি রাষ্ট্রদূতের পাশাপাশি, তুর্কি শিল্পীদের একটি সাংস্কৃতিক ইউনিট, যার মধ্যে ইশাক উরুন, হাসান হেকিমোগ্লু, সেয়িত সেরকান চেলিক এবং বুরাক মালকোক, সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় যোগ দিয়েছিলেন। এসময় তারা তুর্কি ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে শ্রোতাদের বিমোহিত করেন।
তুর্কি নৃত্যশিল্পীরা তাদের বিশ্ব বিখ্যাত ‘ঘূর্ণি দরবেশ’ উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ থেকে শিল্পকলা একাডেমির বাউল ও নৃত্যদল মন্ত্রমুগ্ধ বাউল গান এবং সুফি নৃত্য পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: সুলতানের শিল্পকর্ম গবেষণায় অর্থায়ন করবে যুক্তরাষ্ট্র
কাল ঢাকায় শুরু হচ্ছে কোরিয়া ফিল্ম অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেস্টিভ্যাল
বাংলাদেশে কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাসের আয়োজনে বার্ষিক কোরিয়ান চলচ্চিত্র ও পর্যটন উৎসব ২০২১ বুধবার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের প্রধান অডিটোরিয়ামে এই উৎসব চলবে।
২০১৯ সালের জনপ্রিয় কোরিয়ান চলচ্চিত্র ‘প্যারাসাইট’ এর প্রিমিয়ারের মাধ্যমে ২০২১ ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধন হবে। ২০১৯ সালে একাডেমি পুরস্কারের ৯২ বছরের ইতিহাসে সেরা ছবির পুরস্কার জিতেছে এই সিনেমাটি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। অনুষ্ঠানে পুরষ্কার বিজয়ী বাংলাদেশের তরুণদের পক্ষ থেকে কে-পপ পরিবেশনাও থাকবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের দশটি প্রাচীন মসজিদ: দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
২৪-২৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী এই উৎসবে মোট পাঁচটি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।দেখানো হবে বিশ্ব-বিখ্যাত চলচ্চিত্র ‘প্যারাসাইট’, মাল-মো-ই: দ্য সিক্রেট মিশন। দ্য সিক্রেট মিশন একটি সত্য গল্পের উপর ভিত্তি করে এমন একটি চলচ্চিত্র যেখানে বিদেশি দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে তাদের কোরিয়ান মাতৃভাষাকে রক্ষা করার জন্য লড়াই করা লোকদের চিত্রিত করা হয়েছে।
এই উৎসবের জন্য নির্ধারিত অন্যান্য সিনেমা হল- `কিম জি-ইয়ং, বর্ন ১৯৮২’, #এলাইভ, এবং `রেড শুস অ্যান্ড দ্য সেভেন ডোয়ার্ফস’।
আরও পড়ুন: প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের স্মরণ করল ‘বঙ্গীয় সাহিত্য সংসদ’
পর্যটন উৎসবের দর্শনার্থীরা ভার্চুয়াল ট্যুর, কোরিয়ান লোক খেলা, হ্যানবক ওয়ারিং, ডালগোনা ক্যান্ডি তৈরি, তাৎক্ষণিক ফটোশুট এবং মিউজিয়ামে কোরিয়া কর্নারসহ বিভিন্ন লাইভ কার্যক্রম উপভোগ করতে পারবেন।
উৎসব সম্পর্কে আয়োজকরা বলেছেন, এখন আমরা দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ইভেন্টটি পুনরায় শুরু করতে পেরে খুব খুশি এবং কোরিয়ান চলচ্চিত্র এবং এর বাইরেও আগ্রহ মেটাতে প্রস্তুত।
বাংলাদেশের দশটি প্রাচীন মসজিদ: দেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
মধ্যযুগীয় পূর্ব সময় থেকে বর্তমান বাংলাদেশ নামে এই স্বাধীন ভূ-খণ্ডটি অনেক মুসলিম শাসক শাসন করেছেন। সেই সময় থেকেই ধীরে ধীরে বিবর্তন হয়েছে এই জায়গাটির সভ্যতা ও সংস্কৃতি। তৈরি হয়েছে প্রাসাদ, বিশাল জলাশয়, দূর্গ, কূপ, সেতু এমনকি গোটা একটা শহর। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে এই তল্লাটে স্থাপনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষনীয় ছিল মসজিদগুলো। এখানকার ধর্মপ্রাণ মানুষগুলোর প্রার্থনাসহ রীতিনীতি, দরবার-শালিস সব কিছু এই মসজিদ কেন্দ্রীক ছিল। তারই ফলস্বরূপ সারা দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রার্থনা কেন্দ্রগুলো। আজকের ফিচারটি সাজানো হয়েছে বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন প্রাচীন মসজিদ নিয়ে।
১০ প্রাচীন মসজিদ: বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন
ষাট গম্বুজ মসজিদ, খুলনা
বাংলা সালতানাতের সময় সুন্দরবনের গভর্নর খান জাহান আলী এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। এটি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক মুসলিম স্মৃতিস্তম্ভগুলোর মধ্যে একটি। সাতটি সারিতে সাজানো ৭৭ নিচু গম্বুজ এবং প্রতিটি কোণে একটি করে গম্বুজ নিয়ে মোট গম্বুজ সংখ্যা ৮১টি। এখানকার চারটি টাওয়ারের মধ্যে আযান দেয়ার জন্য দুটি ব্যবহার করা হত। বিস্তীর্ণ নামাযের জায়গায় ২১টি কাতারে একসাথে প্রায় তিন হাজার মুসল্লি নামাজ পড়তে পারেন। ৬০টি সরু পাথরের স্তম্ভ গম্বুজগুলোকে ধরে রাখে। এই কারণেই মূলত একে ষাট গম্বুজ মসজিদ বলা হয়ে থাকে।
বাঘা মসজিদ, রাজশাহী
১৫২৩ থেকে ১৫২৪ সালে হোসেন শাহী রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা আলাউদ্দিন শাহের পুত্র সুলতান নুসরাত শাহ মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদের গম্বুজ ভেঙ্গে পড়লে ১৮৯৭ সালে ধ্বংস হওয়া মসজিদটি পুনর্নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি ২৫৬ বিঘা জমির উপর অবস্থিত। মসজিদের আঙিনা সমতল ভূমি থেকে প্রায় ১০ ফুট উঁচু।
প্রয়াত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের স্মরণ করল ‘বঙ্গীয় সাহিত্য সংসদ’
করোনাকালীন সময়ে মারা যাওয়া প্রয়াত বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিদের এক বিশেষ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্মরণ করল বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদ।
রবিবার সন্ধ্যায় একাডেমির উন্মুক্ত মঞ্চে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও সংস্কৃতি সংসদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘স্মরণে শ্রদ্ধা’ অনুষ্ঠানে প্রয়াত জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, বীর উত্তম সিআর দত্ত এবং কিংবদন্তি ভারতীয় বাঙালি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে স্মরণ করা হয়।
এছাড়াও স্মরণ করা হয় ঢাকায় নটরডেম কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ও প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ফাদার আরডব্লিউ টিম, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ জামিলুর রেজা চৌধুরী, নাট্য অভিনেতা আলী যাকের, সাংবাদিক কামাল লোহানী, লেখক বুদ্ধদেব গুহ, রূপালী পর্দার অভিনেতা সারা বেগম কবরীকে। মুক্তিযোদ্ধা আবু ওসমান চৌধুরী, বাংলা একাডেমির সাবেক চেয়ারম্যান ও লোকসাহিত্যিক শামসুজ্জামান খান, লেখক শঙ্খ ঘোষ, লেখক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর, কিংবদন্তি বাঁশি বাদক ইন্দ্র মোহন রাজবংশী, বিশিষ্ট গায়ক এন্ড্রু কিশোর, ফোক আইকন ফকির আলমগীর ও ঔপন্যাসিক খাতুন রাবেয়ার প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
আরও পড়ুন: সুলতানের শিল্পকর্ম গবেষণায় অর্থায়ন করবে যুক্তরাষ্ট্র
অভিনেতা-নাট্যকার ডক্টর এনামুল হক, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সুরকার আজাদ রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক আতিকুল্লাহ খান মাসুদ, কিংবদন্তি চিত্রশিল্পী মুর্তজা বশীর, নাট্যকার আফসার আহমেদ, অভিনেতা মাহমুদ সাজ্জাদ, কবি অলোকেরঞ্জন দাশগুপ্ত, সুফিয়া আহমেদ, লেখক দেবেশ রায়, বাংলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী, রবীন্দ্র গবেষক মিতা হক, রূপালী পর্দার কিংবদন্তি এটিএম শামসুজ্জামান, সাংবাদিক রাহাত খান, কালী ও কলমের সাবেক সম্পাদক আবুল হাসনাত, রক আইকন আইয়ুব বাচ্চু ও মান্নান হীরাকেও স্মরণ করা হয়।
মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, রামেন্দু মজুমদার, আসাদুজ্জামান নুর, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, এম হামিদ, লিয়াকত আলী লাকী ও সারা যাকের সহ বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন এবং প্রয়াত ব্যক্তিত্বদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস।
আরও পড়ুন: কালিদাস কর্মকারের স্মরণে গ্যালারি কসমসের দিনব্যাপী আয়োজন
মাটিরাঙ্গায় বন বিহারে কঠিন চীবর দান
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গার সাপমারা আর্য মার্গ বন বিহারে ৪র্থ তম দানোত্তম শুভ কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার সকাল থেকে দিন ব্যাপী কঠিন চীবরদান অনুষ্ঠানে প্রধান অথিতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুই প্রু চৌধুরী অপু।
আরও পড়ুন: পানছড়িতে দিনব্যাপী কঠিন চীবর দান
চীবরদান অনুষ্ঠানে অংশ হিসেবে সকালে বৌদ্ধ নর-নারীরা পঞ্চশীল গ্রহণের পর কঠিন চীবরদান, মুর্তি দান, সংঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পিণ্ডদানসহ নানাবিধ দান করা হয়।
অনুষ্ঠানে ধর্মীয় আলোচক ছিলেন অগ্র জ্যোতি মহাস্থবির ভান্তে, দীপনন্দ মহাস্থবির ও বিহারধ্যক্ষ বুদ্ধজয় ভান্তে। দান অনুষ্ঠানে দেশ জাতি তথা সকলে মঙ্গল কামনা প্রার্থনা করা হয়।
চীবর দানোৎসবে মুখর পাহাড়
দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসবকে ঘিরে মুখরিত পাহাড়ি জনপদ। রাঙ্গামাটির বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহারে চলছে মাসব্যাপী বৌদ্ধদের প্রধান দানোৎসব কঠিন চীবর দান।
এ উপলক্ষে ধর্মীয় নানা আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে লংগদু উপজেলার আটরকছড়া ইউনিয়নের করল্যাছড়ির আর্যগিরি বনবিহারে বৃহস্পতিবার সকালে থেকে শুরু হয়ে শুক্রবার বিকালে দু’দিন ব্যাপী উদযাপিত হয়েছে ৪র্থ তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব।
কর্মসূচির মধ্য বুদ্ধপূজা, বুদ্ধমূর্তিদান, সংঘদান, অষ্টপরিষ্কার দান, কঠিন চীবর দান, পঞ্চশীল প্রার্থনা, সূত্রপাঠ, ধর্মীয় দেশনা, হাজার বাতি দান, কল্পতরু প্রদক্ষিণ ও উৎসর্গসহ নানাবিধ দান উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন: পানছড়িতে দিনব্যাপী কঠিন চীবর দান
উৎসবে বিশ্বের সকল প্রাণীর হিতসুখ ও মঙ্গল কামনায় এবং মহামারি করোনাভাইরাস থেকে পরিত্রাণের জন্য ভিক্ষু সংঘের সমীপে নিবেদন করা হয়েছে বিশেষ প্রার্থনা। স্মরণ করা হয় মহাসাধক সাধনানন্দ মহাস্থবির বনভান্তেকে। ভগবান বুদ্ধের জয়ধ্বনিতে হাজারো পুণ্যার্থীদের ভক্তি ও শ্রদ্ধায় মুখর হয়ে উঠে পুরো বিহার প্রাঙ্গণ।
শুক্রবার দুপুরে কল্পতরু ও কঠিন চীবরকে পুরো বিহার এলাকা প্রদক্ষিণ করে আনন্দ শোভাযাত্রা করা হয়। পরে উদ্বোধনী ধর্মীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্যদিয়ে কঠিন চীবর দানোৎসব শুরু হয়।
অনুষ্ঠানে রুপেল চাকমার পরিচালনায় পঞ্চশীল পাঠ করেন বিহার পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দিবাকর চাকমা। বিশেষ প্রার্থনা পাঠ করেন বৈশাখী চাকমা। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি অজয় চাকমা (মিত্র) ও বিহার পরিচালনা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক দিবাকর চাকমা, খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা টিটন খীসা, ১নং আটরকছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মঙ্গল কান্তি চাকমাসহ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে বৌদ্ধ বিহারে দানোত্তম কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠিত
ধর্মীয় বনভান্তের অমৃতময় বাণীর উদ্ধৃতি দিয়ে পুণ্যার্থীদের মাঝে ধর্মদেশনা দেন, সাধনাটিলা বনবিহারের বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ বুদ্ধবংশ মহাস্থবির, রাঙ্গামাটি রাজবন বিহারের ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ মুদিতা বংশ মহাস্থবির, রাজবন বিহারের আবাসিক ভিক্ষু ভদন্ত শ্রীমৎ গিরিমানন্দ স্থবির ও জয়বর্ধন স্থবিরসহ প্রমুখ। এসময় আটকরকছড়া আর্যগিরি বনবিহারের বিহার অধ্যক্ষ ভদন্ত শ্রীমৎ অমর রতন্ন স্থবিরসহ অন্যান্য প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।