স্বাস্থ্য-ও-সুস্থতা
সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার: ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী?
সাইক্লিং, দৌড় কিংবা সাঁতার ফিটনেস ধরে রাখার অন্যতম ৩ টি উপায়। তবে শক্তি বৃদ্ধি কিংবা ওজন কমাতে কোনটি বেশি কার্যকরী সে ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মত লক্ষ্য করা যায়। আজকে আমরা জানবো মেদ ঝড়াতে এবং দৈনন্দিন জীবনযাত্রার উন্নয়নে কোনটি বেশি কার্যকর।
দৌড়ের মাধ্যমে কীভাবে মেদ কমাবেনঃ
অনেকের কাছে সহজ ব্যায়ামের একটি হলো দৌড়। আপনি একা কিংবা বন্ধুদের সাথে দৌড়াতে পারেন কোনও নির্দিষ্ট সেট আপ ছাড়া। এটি আউটডোর কিংবা ইনডোর উভয় জায়গাতেই করা যায়। এটা মেদ কমাতে এবং পেশির ঝুঁকে পড়া রোধ করে। দৌড়ের গতির ওপর নির্ভর করবে এটা কতটুকু ওজন কমাবে। তবে ওজন কমানোর জন্য এই অভ্যাসটি নিয়মিত হওয়া জরুরি। আধা ঘন্টা দৌড় আপনার শরীরে অনেক পরিবর্তন আনতে পারে।
আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে কলা নয়, খোসা খান
সাইক্লিং করে কীভাবে ওজন কমাবেনঃ
অনেকেই শখের বসে এই কাজগুলো করে থাকেন। বিভিন্ন অবস্থানে কীভাবে এগুলো চালাতে হবে, কিভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে তা জানার মাধ্যমে সহজেই ওয়ার্কাউট প্ল্যান করা যায়। জয়েন্ট ব্যাথার ক্ষেত্রে এটি খুবই কার্যকরী। তবে দৌড়ের চেয়ে এটি কম ক্যালরি ঝড়াতে সাহায্য করে।
সাঁতারঃ
শুধু ওজন কমানোই নয় পুরো শরীরের ব্যায়ামে সাহায্য করে সাঁতার। এর ফলে পুরো শরীর এবং পেশিগুলোর মধ্যে একধরনের পরিবর্তন হয়। তবে এক্ষেত্রে সব ধরনের সাঁতার একইভাবে প্রভাব রাখে না। ফাস্ট ফ্রি স্ট্রোকস এবং বুঁক সাঁতার ক্যালরি কমাতে বেশ ভূমিকা রাখে।
তিনটির বিচারে সাইক্লিং এর চেয়ে সাঁতার এবং দৌড় ওজন কমাতে বেশ কার্যকর।
আরও পড়ুন: কোরিয়ান মেয়েদের রূপ রহস্য: দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যার ১০টি ধাপ
তবে সাইক্লিং ওজন কমানোর একটি নিরাপদ উপায় বলা চলে। প্রকৃতপক্ষে ভালো ফলাফলের জন্য প্রচুর পরিশ্রম প্রয়োজন। সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান থাকতে নিয়মিত ব্যায়ামের কোনও বিকল্প নেই।
কালো ছত্রাক সংক্রমণ: কোভিড রোগীদের নতুন আতঙ্ক
কোভিড-১৯ মহামারির জের ধরে কালো ছত্রাক সংক্রমণ নতুন আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে করোনা আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে। সংক্রমণের সূচনালগ্নেই এটি ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করেছে সাড়া ভারত জুড়ে। উদ্বেগ-উৎকন্ঠা সাথে নিয়েই করোনাত্তোর এই দীর্ঘ মেয়াদী সংকট নিরসনে চলছে পরীক্ষা-নীরিক্ষা। ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে- যারা করোনা থেকে ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন বা ক্রমশ সুস্থ হওয়ার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন, তারাও এতে আক্রান্ত হচ্ছেন। যাদের কোভিড নেই তারাও কিন্তু ঝুঁকির বাইরে নন। প্রতি ১০০ জন আক্রান্তদের ৫০ জনই মারা যাচ্ছেন বিধায় ভবিষ্যতে এর ভয়াবহতা বিজ্ঞানীদের আশঙ্কার কারণ হয়ে দাড়িয়েছে। চূড়ান্ত অবস্থায় এ রোগ প্রতিকারের সম্ভাবনা কম তাই আগে থেকেই এ বিষয়ে সঠিক জ্ঞান নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি।
জেনে নিন ত্বক ফর্সাকারী ক্রিমের ক্ষতিকর দিকগুলো!
সৌন্দর্যের প্রতি জন্মগত আকর্ষণের জন্য হরহামেশাই আপনি ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। যেকোনও পার্টিতে যাওয়ার পূর্বে সবার নিকট নিজেকে দর্শনীয় করার জন্য নির্ভর করেন বাজারের ফেয়ারনেস ক্রিমগুলোর ওপর।
কিন্তু এ ধরনের ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম সাময়িকভাবে ফর্সা ভাব দিলেও আপনার ত্বকের জন্য এগুলো খুবই ক্ষতিকর। আপনি প্রায়ই বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে দ্রুত রং ফর্সা করার লোভনীয় অফার দেখে থাকবেন। এগুলো কোনটাই দীর্ঘ মেয়াদী নয়। ত্বক বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরেই এই সাবধানবাণী দিয়ে আসছেন।
বাংলাদেশে বিশেষ করে কোরিয়ান সৌন্দর্য বর্ধক পণ্যগুলোর অনেক চাহিদা। মনে রাখতে হবে, কোরিয়ান পণ্য মানেই কিন্তু ভালো পণ্য নয়। চলুন, এ ধরনের ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহারে কি কি ক্ষতি হতে পারে তা জেনে নেয়া যাক।
ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারের ক্ষতিকর দিকগুলো
লালচে ফুস্কুড়ি
এর আরেক নাম রোসেসিয়া, যা আপনার মুখে লালচে ফুস্কুড়ি সৃষ্টি করে এবং চামড়ার ভেতরের রক্তনালীকে দৃশ্যমান করে তোলে। আপনার ত্বক যদি হাল্কা হয়ে থাকে আর সেই ত্বকে আপনি নিয়মিত ক্রিম ব্যবহার করেন, তাহলে আপনি এই সমস্যার সম্মুখীন হবেন।
ত্বকের রং হারিয়ে ফেলা
এটি ক্রিম ব্যবহারের সবচেয়ে ক্ষতিকর দিকগুলোর মধ্যে একটি। এর ফলে আপনার শুধু ত্বক-ই নয়, ধীরে ধীরে সমস্ত শরীর ফ্যাকাসে হয়ে যেতে শুরু করবে। চূড়ান্ত অবস্থায় এটি স্কিন ক্যান্সারের দিকে নিয়ে যায়।
চুলকানি
ঘন ঘন ক্রিম ব্যবহার আপনার ত্বকে প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া তেল শুষে নেয়। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে শুষ্ক। আর চুলকানি মাত্রা ছাড়ায় এই শুষ্ক ত্বকেই। আপনার সংবেদনশীল ত্বককে চুলকানির মাধ্যমে স্থায়ী ভাবে নষ্ট করার জন্য একটি ক্রিম-ই যথেষ্ঠ।
ব্রণ
‘আপনার ব্রণের দাগ দূর করবে’ আপনি হয়ত ক্রিমের গায়ে এই কথাটি দেখেই কিনে ফেলছেন। কিন্তু এই ধরনের ক্রিমগুলোতে থাকে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ। এগুলো প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার ব্রণের কালচে দাগ দূর করবে না। বরং পরবর্তীতে যখন আপনি ব্রণের চিকিৎসার জন্য কোনো ওষুধ ব্যবহার করবেন, তখন সেগুলোর কার্যকারিতা কমিয়ে দিবে।
আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে কলা নয়, খোসা খান
রোদে জ্বালা পোড়া
অতিরিক্ত মাত্রায় ফর্সা হওয়ার ক্রিম ব্যবহারে আপনার ত্বক হয়ে যায় পাতলা। আর পাতলা ত্বক সূর্যের অতি বেগুনী রশ্মি দ্বারা তুলনামুলকভাবে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অতঃপর এর প্রভাবে খুব কম বয়সেই মুখে বলিরেখা পড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে স্কিন ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।
ত্বকে প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া
মুখে ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহারের ফলে ত্বকের উপরই যে শুধু আলাদা একটা স্তর পড়ে- তা নয়। বরং তা আপনার ত্বকের রোগ প্রতিরোধী কোষগুলোর স্বাভাবিক ক্ষমতাও নষ্ট করে দেয়। ফলশ্রুতিতে আপনার ত্বক অরক্ষিত হয়ে পড়ে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গালের কাছে।
কিডনী এবং স্নায়ুজনিত জটিলতা
বাজারে আপনি যে ফেয়ারনেস ক্রিমগুলো পাচ্ছেন তার অধিকাংশগুলোতেই অধিক মাত্রায় থাকে পারদ। আর এই পারদ আপনার কিডনী নষ্ট করে দেয়ার পাশাপাশি স্নায়ুজনিত নানাবিধ সমস্যার জন্য দায়ী।
আরও পড়ুন: সুস্থ থাকতে কলা নয়, খোসা খান
কোরিয়ান মেয়েদের রূপ রহস্য: দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যার ১০টি ধাপ
কোরিয়ান মেয়েদের রূপ রহস্য নিহিত থাকে মূলত তাদের নিত্য নৈমিত্যিক রূপচর্চার ভেতর। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করতে যেয়ে আপনি বলতেই পারেন যে তারা প্রকৃতি প্রসূত। কিন্তু দৈব ক্রমে পাওয়া ঐশ্বর্যের স্থায়ীত্ব নির্ভর করে সেটা ধরে রাখার প্রচেষ্টার উপর। ঠিক তেমনি নিজেদের সৌন্দর্য্য ধরে রাখতে নিয়ত কিছু পরিচর্যা নীতি মেনে চলে কোরিয়ান মেয়েরা।
দৈনন্দিন ত্বক পরিচর্যার ১০টি ধাপ
ধাপ - ১ | তেল ভিত্তিক ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার
অল্প পরিমাণে ক্লিনজার নিয়ে মুখের দাগগুলোতে আলতো করে ঘষুন। দাগের উপর ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে পরিষ্কার করা হলে রক্তের প্রবাহকেও বাড়ায় যা স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য প্রয়োজনীয় এবং কোষগুলি তাদের কাজগুলি সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে পারে। এটি আপনার ত্বককে উজ্জ্বল এবং স্বাস্থ্যকর রাখতে সহায়তা করে!
২ থেকে ৩ মিনিট ধরে পরিষ্কার করুন এবং হালকা জল দিয়ে ক্লিনজারটি ধুয়ে ফেলুন। আপনার ত্বকের জ্বালা এবং অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া এড়াতে যথেষ্ঠ পরিমাণে তেলের মিক্সচার ব্যবহার করতে পারেন।
ধাপ - ২ | ফোমিং বা পুনরায় পানি দিয়ে পরিষ্কার
একটি পাম্প বা দুটি ক্লিনজার নিয়ে ত্বকে আলতোভাবে ম্যাসেজ করুন। আপনার ত্বকের প্রতিবন্ধকতা রোধ করতে একটি পিএইচ ভারসাম্যকারী ক্লিনজার ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ। ত্বকের ভিতরে যে প্রয়োজনীয় পরিমাণ তেল আবদ্ধ রয়েছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন। এভাবে দুই দুইবার পরিষ্কার করায় আপনার মুখটি ময়লা, কুসুম, ঘাম এবং তেল চিটচিটে ভাব দূর করতে সহায়তা করবে।
ধাপ - ৩ | স্ক্রাব দিয়ে মৃত কোষগুলো তুলে ফেলা
এই পদ্ধতির নাম এক্সফোলিয়েশন। আপনার হাতের তালুর উপর স্ক্রাবের অল্প পরিমাণ নিন। অতঃপর আলতো করে এটি আপনার মুখের উপর একটি বৃত্তাকার গতিতে রোল করুন। এক বা দুই মিনিট পরে এটি ধুয়ে ফেলুন।
সুস্থ থাকতে কলা নয়, খোসা খান
মানব শরীরের জন্য ফলের গুরুত্ব অপরিসীম। তাই সুস্থ থাকতে ফল খাওয়া অনেক জরুরী। ওজন কমানো থেকে এনার্জি বাড়ানো সবকিছুতেই ডায়েচ চার্টে সবার উপরে থাকবে ফল। কিন্তু তার থেকেও বেশি উপকারী ফলের খোসা এই কথা অনেকেই জানেন না। তবে এমনটাই এখন দাবি করছেন ডায়টেশিয়ানরা।
আরও পড়ুন: জেনে নিন তরমুজ বীজের উপকারিতা
কলার থেকেও নাকি বেশি উপকারি কলার খোসা। কলার মধ্যে থাকা ভিটামিন বি-৬, বি-১২, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম যেমন হজমে সাহায্য করে তেমনই কলায় থাকা প্রচুর পরিমান ফাইবার পেট পরিষ্কার রাখে। কলা যেমন আমরা এমনি খেতে অভ্যস্ত, তেমনি কর্নফ্লেক্সের সঙ্গে, কলার পুডিং, মাফিন, কেক এমনকী, কলার বড়াও বেশ উপাদেয়। তবে কলা যেভাবেই খাই না কেন খোসাটি কিন্তু যায় সেই ডাস্টবিনে। এদিকে এই কলার খোসাতেই থাকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ। যা শুধু শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই বাড়িয়ে তোলে নয়, যেকোনও সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে অত্যন্ত উপকারী। খোসার মধ্যে থাকা লুটিন নামক পদার্থ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতেও উপকারী। এছাড়াও কলার খোসায় থাকা প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট শরীরের কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে। শরীরে রক্তচাপের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখে কলার খোসা।
আরও পড়ুন: অনলাইন ব্যবসায় সাফল্য পেতে জেনে নিন ১০ ধাপ
সবুজ না হলুদ কোন খোসা বেশি উপকারী?
জাপানের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে সবুজ খোসার থেকে বেশি উপকারী হলুদ খোসা। এই খোসা রক্তে শ্বেতকণিকার পরিমাণ ঠিক রেখে ক্যান্সার মোকাবিলা করতে পারে। সবুজ খোসার ক্ষেত্রে ১০ মিনিট খোসা সিদ্ধ করে খেলে উপকার পাওয়া যাবে। অন্যদিকে সবুজ খোসার মধ্যে থাকা অ্যামাইনো অ্যাসিড ট্রিপ্টোফ্যানের কারণে রাতে ভালো ঘুম হয়।
অনেক গবেষণায় দেখা গিয়েছে সবুজ খোসার মধ্যে থাকা সিরোটোনিন অবসাদের মোকাবিলা করতেও সক্ষম। আবার ডোপামিনের সাহায্যে কিডনিতে রক্ত চলাচল ভালো হয়।
আরও পড়ুন: মাস্ক পরলে চশমা ঘোলা হচ্ছে? সমাধান জেনে নিন
কীভাবে কলার খোসা খাবেন?
অনেক রকম ভাবে কলার খোসা খাওয়া যায়। এশিয়া ও ক্যারিবিয়ান দ্বীপগুলিতে কলার শাঁস ও খোসা প্রায় একসাই খাওয়া হয়। এছাড়াও বানানা পিল টি বা বানানা পিল স্মুদি উইথ আইসক্রিমও স্বাস্থ্য সচেতনদের কাছে বেশি জনপ্রিয়। কেউ কাঁচা খোসা খেতে পছন্দ করেন, কেউ বা সিদ্ধ করে খেতে পছন্দ করেন।
সূত্র: টাইম অফ ইন্ডিয়া বাংলা
রমজানে পাতে থাকুক মজাদার-স্বাস্থ্যকর ইফতার
রমজানে দিনের দীর্ঘ একটি সময় রোজা রাখার পর আমরা মুখিয়ে থাকি মজাদার ইফতার খাবার জন্য। কিন্তু ইফতারের খাদ্য তালিকায় শুধু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন মজাদার খাবার থাকলেই হবে না, তা হতে হবে স্বাস্থ্যকর। দেখা যায়, প্রায় অধিকাংশ ইফতারের দোকানগুলোতে বিক্রি হওয়া ইফতারে ভেজাল থাকে। এ সকল ভেজাল ইফতার হতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।
তাই রমজানে সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে প্রয়োজন স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার গ্রহণ করা। শুধুমাত্র সুষম ইফতার গ্রহণের মাধ্যমেই একদিকে যেমন দেহের পুষ্টিগত চাহিদা পূরণ করা যায়, অন্যদিকে শরীর থাকে সতেজ ও প্রাণবন্ত। প্রতিদিনেই ইফতারে পরিবারের সকলের পছন্দের কথা মাথায় রেখেই ইফতার বানানো উচিত। নিচে এমনই কিছু মজাদার ও স্বাস্থ্যকর ইফতারের রেসিপি ইউএনবি পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।
জনপ্রিয় ইফতার সামগ্রী
বাংলাদেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তার প্রশ্নে ইফতারে তেলে-ভাজা খাবার সবসময়ই শীর্ষ অবস্থান দখল করে আছে। ইফতারে জনপ্রিয় তেলে ভাজা খাবারের মধ্যে আছে চপ, পেঁয়াজু, পাকোড়া অন্যতম। বহু বছরের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ হয়ে ওঠেছে মুখরোচক স্বাদের এসব খাবার। কিন্তু পুরো রমজান মাসজুড়ে এমন খাবার গ্রহণ হতে পারে স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দেখা দিতে পারে প্রাথমিক গ্যাসট্রিক থেকে ভয়াবহ আলসারও। তবে অল্প পরিমাণে এসকল খাবার খাওয়া যেতে পারে।
ডিম চপ
ছোট-বড় সকলের কাছেই ডিম চপ অত্যন্ত প্রিয় একটি খাবার। তবে ইফতারে ছোটদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ বহন করে এই খাবারটি। তাই অনেকেই বাইরে থেকে কিনে অথবা ঘরে বানিয়ে খাবার চেষ্টা করে। সহজে ডিম চপ বানানোর প্রক্রিয়া আলোচন করা হল।
আরও পড়ুন: রমজানের শুরুতেই সবজির বাজারে ঊর্ধ্বগতি, ক্রেতাদের অসন্তোষ
প্রয়োজনীয় উপাদানের মধ্যে লাগবে, সিদ্ধ ডিম, সিদ্ধ আলু, পেঁয়াজ কুচি, কাঁচা মরিচ, মরিচ গুড়া, লবণ, রুটির গুড়া, ফেটে নেয়া ডিম এবং তেল।
প্রথমেই প্রয়োজন মতো ডিম ও আলু সিদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর ডিমগুলোকে দুইভাগে কেটে নিতে হবে। এরপর সিদ্ধ আলুর সাথে পরিমাণমত পেঁয়াজ কুঁচি, স্বাদমত মরিচ গুড়া, ধনে পাতা এবং লবণ মিশিয়ে মাখিয়ে নিতে হবে। এরপর সিদ্ধ আলুর উপকরণটি দিয়ে কেটে রাখা ডিমগুলো মুড়ে নিয়ে চপের আকৃতি দিতে হবে। তারপর সেগুলো ফেটে রাখা ডিমের কুসুমে মাখিয়ে রুটির গুড়া লাগাতে হবে। এরপর কিছুক্ষণ ফ্রিজে রেখে ডুবন্তে তেলে ভেজে নিলেও তৈরি হয়ে যাবে সুস্বাদু ডিম চপ।
বেগুনী
বাঙালির ইফতার আয়োজনে অন্যতম জনপ্রিয় খাবার বেগুনী। ইফতারে এই খাবার ছাড়া যেন খাওয়া ই শুরু করা যায় না।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: স্লাইস করে কেটে নেয়া বেগুনের টুকরা, গুড়া করা এক কাপ
মসুর ডাল, এক টেবিল চামচ আটা, আধা চা চামচ ধনেপাতা গুড়া, স্বাদমত জিরা বাটা, আধা চা-চামচ আদা বাটা, আধা চা-চামচ রসুন বাটা, ১/৪ চা-চামচ বেকিং পাউডার, আধা চা-চামচ কর্নফ্লাওয়ার, আধা চা-চামচ মরিচ গুড়া, আধা চা-চামচ হলুদ গুড়া, স্বাদমত লবণ, পরিমাণ মত পানি এবং ডিম। এরপর একটি বলে বেগুন বাদে সব উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে বেসন তৈরি করতে হবে।
এরপর কেটেরাখা বেগুনগুলো বেসনে মিশিয়ে ডুবো তেলে ভেজে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মজাদার বেগুনী।
পেঁয়াজু
ইফতার ছাড়াও সারাবছরই এই দেশের মানুষের সবসময়ের প্রিয় খাবার হলে পেঁয়াজু। খুবই সহজ এর তৈরির পদ্ধতি।
প্রয়োজনীয় উপাদান: মসুর ডালে পেস্ট আধা কাপ, শুকনা মরিচ গুড়া ১ চা-চামচ, ধনে পাতা ১ চা-চামচ, রসুনের পেস্ট ১ চা-চামচ, আদা বাটা ১ চা-চামচ, পুদিন পাতা গুড়া ১ চা-চামচ, লবণ এবং তেল।
সবগুলো উপকরণ একসাথে ভালো করে মিশিয়ে ভেজে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে মুখরোচক পেঁয়াজু।
স্বাস্থ্যকর ইফতার সামগ্রী
ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন শরীরকে পুষ্টি জোগায়, একইসাথে সারাদিন পর খাবার খেয়েও শরীরকে রাখে হালকা। সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য প্রত্যেক সচেতন মানুষের প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার।
চিকেন সালাদ
মাত্র এক কাপ মরুগির মাংস ও প্রয়োজনীয় উপকরণ সহকারে তৈরি চিকেন সালাদ আপনাকে দিতে পারে ৫০৮ ক্যালরি।
প্রয়োজনীয় উপকরণ: এক কাপ হাড়বিহীন মুরগির মাংস, দুই টেবিল চামচ ময়দা, এক চা-চামচ পেঁয়াজ গুড়া, এক চা-চামচ রসুন গুড়া, আধা চামচ লাল মরিচের গুড়া, গোলমরিচের গুড়া, টমেটো সস, স্বাদমত লবণ, একে টেবিল চামচ তেল, শসা, গাজর, টমেটো, লেটুস কুচি এবং লেবুর রস ও অলিভ অয়েল।
প্রথমে সকল মসলা মাখিয়ে ১০ মিনিটের জন্য মাংস মেরিনেট করে নিতে হবে। এরপর অল্প আঁচে মাংস ভেজে নিয়ে তার সাতে শসা, গাজর, টমেটো, লেটুস পাতা এবং অল্প লবণ, হালকা ভাজা নুডুলস, লেবুর রস, অলিভ অয়েলসহ মাখিয়ে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে চিকেন সালাদ।
শরবত
রমজানে সারাদিন রোজা রাখার পর শরীরের পানির চাহিদা পূরণে ফলের শরবত হতে পারে অন্যতম স্বাস্থ্যকর উপাদান। কমলা, আম, আপলে, বেল, মিক্সড ফলের শরবত হতে পারে প্রতিদিনের ইফতারের অংশ।
আপনি চাইলে ঘরেই ব্লেন্ড করে তৈরি করে নিতে পারেন ফলের শরবত। এছাড়া ভালো মানের দোকান থেকেও কিনে নিতে পারেন। এক কাফ ফলের শরবত থেকে প্রায় ১৩৬ ক্যালরি পাওয়া যায়।
স্যুপ
তরল খাবার হলেও ইফতারের জন্য খুবই উপাদেয় এবং স্বাস্থ্যকর খাবার হল স্যুপ। যেকোন ব্যক্তি খুব সহজেই মাশরুম, টমেটো, আদা, চিংড়ি, মুরগীর মাংস ও সবজিসহ নানা উপাদান ব্যবহার করে স্যুপ তৈরি করে নিতে পারেন। এক স্যুপ প্রোটিন, খনিজ, ফাইবা, ভিটামিনের চাহিদা যেমন পূরণ করতে পারে, অন্যদিকে লো-ফ্যাট ও লো-ক্যালরি সম্পন্ন খাবার।
আরও পড়ুন: রমজানে নকল-ভেজালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা : শিল্পমন্ত্রী
উপাদান ভেদে এক কাপ স্যুপ থেকে ৫০-১৪০ ক্যালরি পাওয়া যায়।
চিঁড়া
ইফতারে চিঁড়া হতে পারে আদর্শ একটি খাবার। একই সাথে ক্ষুধা নিরসন এবং পাকস্থলী ঠাণ্ডা রাখতে এই খাবারের তুলনা নেই বললেই চলে। পানি বা অন্য কোনো উপাদানে ভিজিয়ে রেখে চিঁড়া খাওয়া যায়। তবে ভেজা চিঁড়া, দই এব কলার মিশ্রণ হতে পারে ইফতারের সবচেয়ে আদর্শ খাবার।
এছাড়াও সুস্থ থাকতে ডিম, আটা, চাল, আলু, মধুসহ বিভিন্ন প্রকৃতিক উপাদান ব্যবহার করেই স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার তৈরি করা সহজ। তবে খাবারে তেলের পরিমাণ নিয়ে অবশ্যই সচেতন হতে হবে।
গরমের সবজি ঝিঙের যত গুন
আমাদের দেশে গরমের সবজির মধ্যে অন্যতম একটি উপকারী সবজি হলো ঝিঙে। কিন্তু অনেকই আছেন যারা এই সবজি খেতে মোটেই পছন্দ করেন না। অথচ এই সবজির বেশ গুনাগুন রয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের শরীরকে সুস্থ সবল রাখার জন্য দৈনিক খাদ্য তালিকায় শাকসবজি রাখা বাধ্যতামূলক। ইতোমধ্যেই ডাক্তার এবং পুষ্টিবিদেরা পরামর্শ দিয়েছেন বিভিন্ন সবুজ শাক সবজি খাদ্য তালিকায় রাখার জন্য। সবুজ শাক সবজির মধ্যে অন্যতম একটি সবজি হলো ঝিঙে। তাছাড়া এই গরমে ঝিঙের মতো উপকারী খাবার কিন্তু আর হয় না।
যদি স্লিম থাকতে চান রোজ ৫ রকমের বাদাম খান
সুন্দর মেদহীন শরীর সবারই কাম্য। তবে ব্যস্ত জীবনে ফাস্ট ফুড বা বাইরের খাবারের উপর ভরসা করে যাদের দিন কাটে, তাদের শরীরে মেদ থাকবে না এটা বলা যাচ্ছে না। বর্তমানে অল্প বয়সেই অনেকেই স্থুলতার সমস্যায় ভুগছেন।
আরও পড়ুন: জেনে নিন কাঁচা মরিচের যত গুণ
তাছাড়া মেদবহুল শরীর স্বাস্থ্যের পক্ষেও অত্যন্ত ক্ষতিকর। শরীরের অতিরিক্ত মেদ বা ওজনের ফলে ডায়েবিটিস, রক্তচাপ, কোমর বা হাঁটুর ব্যথার মতো সমস্যা বাড়তে পারে। এছাড়াও সামান্য পরিশ্রমেই ক্লান্ত হয়ে পড়া, অনিদ্রা, শ্বাসকষ্টের মতো একাধিক শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে। শরীরের বাড়তি ওজন কমাতে আমরা কত কিছুই না করি। তবে সহজে চটজলদি ওজন কমাতে পাঁচ রকমের বাদাম ডায়েটে রাখুন।
আরও পড়ুন: মাস্ক পরলে চশমা ঘোলা হচ্ছে? সমাধান জেনে নিন
জেনে নিন কোন কোন বাদাম সহজে ওজন কমাতে সাহায্য করবে
১) খিদে পেলে একমুঠো চিনেবাদাম খেয়ে নিতে পারেন। এতে শরীর তার প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাবে, খিদেও কমবে।
২) কাজু বাদামে ক্যালসিয়ামের মাত্রা কম থাকলেও এতে কপার, ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস প্রচুর পরিমাণে থাকে। তাই ওজন কমাতে পাতে রাখুন কাজু।
আরও পড়ুন: শীতের শুষ্কতায় উপকারী বন্ধু তেল
৩) আমন্ডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট যা আপনার খাওয়ার ইচ্ছা বা খিদের বোধ কমিয়ে দিতে সাহায্য করে। তাই ওজন কমাতে পাতে রাখুন আমন্ড। উপকার পাবেন।
আরও পড়ুন: সীতাকুণ্ডে ঐতিহ্যবাহী শিব চতুর্দশী মেলা শুরু
৪) প্রতিদিন সকালে একমুঠো আখরোট নিয়মিত খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। সেই সাথে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমবে অনেকটাই। খিদেও কমবে। তাই ওজন কমাতে খাদ্য তালিকায় আখরোট রাখুন।
সূত্র : টাইমস অব ইন্ডিয়া বাংলা
আরও পড়ুন: মাগুরায় ঐতিহ্যবাহী ঘৌড়দৌড় প্রতিযোগিতা
জেনে নিন ক্ষতিকর অ্যারোসল, কয়েলের চেয়ে প্রাকৃতিকভাবে মশা তাড়ানোর উপায়
বাংলাদেশে গত বছরের তুলনায় কিউলেক্স মশার সংখ্যা চারগুণ বাড়ার তথ্য সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে। মশাবাহিত রোগবালাইয়ে মানুষের ভোগান্তিও বেড়েছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন: আপনার যা জানা দরকার
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজরি গ্রুপ অব এক্সপার্ট অন ইমিউনাইজেশন (এসএজিই) বৃহস্পতিবার অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড-১৯ টিকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু অন্তর্বর্তীকালীন সুপারিশ করেছে।