চট্টগ্রাম
গোসল করতে নেমে কাপ্তাই হ্রদে ডুবে দুই বন্ধুর মৃত্যু
গোসল করতে নেমে রাঙ্গামাটি কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বিকালে জেলা শহরের পর্যটন বিজিবি রোড আমিনা পাহাড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
নিহতরা হলেন- মাহিদুর রহমান মুহিত (১২) ও আহনাফ সাদিব ইনাম (১২)। তারা দুজন বন্ধু।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকালে তবলছড়ি পর্যটন বিজিবি রোড আমিনা পাহাড় এলাকায় গোসল করতে যায় দুই বন্ধু মুহিত ও ইনাম। এসময় তারা গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে যায়। দুজনই সাঁতার জানতো না৷ পরে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে একজনের দেহ ভেসে উঠে। এসময় স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাঙ্গামাটি জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক তিষা চাকমা জানান, বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতালে আনার আগেই তারা দুইজনই মারা গেছে। তাদেরকে অনেক দেরিতে নিয়ে আসা হয়েছে।
নিহত মাহিদুর রহমান মুহিতের চাচা আব্দুল করিম লালু জানান, গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে তাদের দুই বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে।
সুবলং চ্যানেলে তীব্র স্রোত: কাপ্তাই হ্রদে লঞ্চ চলাচল বন্ধ
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুবলং চ্যানেলে পানির তীব্র স্রোতের কারণে কাপ্তাই হ্রদে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে কৃর্তপক্ষ। সোমবার সকাল থেকে রাঙ্গামাটির অন্তত ছয়টি নৌ-রুটে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।
রবিবার দিবাগত রাতে লঞ্চ মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থা রাঙ্গামাটি জোন-এর পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: পাহাড়ি ঢলে মুহুরী নদীর বাঁধ ভেঙে ফুলগাজীর ৪ গ্রাম প্লাবিত
যাত্রীবাহী লঞ্চের মালিক গিয়াস উদ্দিন আদর জানান, পরিস্থিতি উত্তরণ হলে মঙ্গলবার এই পথে নৌযান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কথা রয়েছে। তবে পরিস্থিতি সাপেক্ষ এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-চলাচল ও যাত্রী পরিবহন সংস্থার রাঙ্গামাটি জোন চেয়ারম্যান মো. মঈনুদ্দীন সেলিম জানান, গত কয়েকদিনে টানা বৃষ্টির কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে সুবলং চ্যানেলে তীব্র স্রোতের কারণে লঞ্চ চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই সোমবার থেকে রাঙ্গামাটির সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকবে। প্রচন্ড স্রোতের কারণে দুর্ঘটনার সম্ভাবনার ঝুঁকি থাকায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার স্রোতের পরিস্থিতি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
এদিকে রাঙ্গামাটিতে সীমান্ত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি, বরকল এর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চার দিনের বৃষ্টিপাত কিছুটা কমে এসেছে। উপজেলাগুলোতে জরুরি ভিত্তিতে আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: যমুনায় পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, বাঁধ ভেঙে ৫ গ্রাম প্লাবিত
অন্যদিকে রাঙ্গামাটিতে পাহাড় ধসের আশঙ্কায় প্রাথমিকভাবে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শহরে ২৮টি ঝুঁকিপুর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে শহরের ১০টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় এক হাজারের বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। প্রবল বর্ষণে রাঙ্গামাটি চট্টগ্রাম সড়কের বিভিন্ন অংশে পাহাড় ধস ও রাস্তায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাঙ্গামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক স্বাভাবিক রাখতে সড়ক ও জনপদ বিভাগের কাজ করে যাচ্ছে।
চসিক মেয়রের বাড়িতে হাঁটু পানি
রবিবার রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে সোমবার সকাল থেকে পথচারী, অফিসগামী মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।এদিকে বৃষ্টির পানি জমে হাঁটু পানিতে ডুবে আছে চট্টগ্রাম সিটি মেয়রের বাসভব্ন। গতকাল রবিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চট্টগ্রামে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় নগরীতে সর্বোচ্চ ২৪১ দশমিক ২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। ফলে নগরীর বিভিন্ন দোকানপাট ও বাসাবাড়ির নিচতলায় পানি উঠছে। আবহাওয়া অফিসের মতে এমন বৃষ্টি থাকবে আরও দুইদিন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বৃষ্টির পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ২ জনের মৃত্যুআবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ চৌধুরী বলেন, এই বৃষ্টি থেমে থেমে আরও দুইদিন থাকতে পারে। সকাল থেকে বৃষ্টি থেমে গেলেও বিকালে আবারও বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে বলে জানান তিনি। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাতভর ভারি বৃষ্টিতে নগরের বহদ্দারহাট, চান্দগাঁও, আগ্রাবাদের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ভোর সাড়ে ৬টার পর বৃষ্টি থেমে গেলেও এখনও নামেনি বৃষ্টির পানি। হাঁটু পানি জমেছে চান্দগাঁও থানায়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধভাবে বসবাসকারী ১৮৫ পরিবার উচ্ছেদ
টেকনাফে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ রোহিঙ্গা নিহত
কক্সবাজার টেকনাফ হাইওয়ে সড়কে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় ইজিবাইকে থাকা দুই যাত্রী ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও দু’জন। সোমবার (২০ জুন) সকাল ৮টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ হাইওয়ে সড়ক হোয়াইক্যং তেচ্ছিব্রিজ এলাকার সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন উনচিপ্রাং ২২ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মৃত আব্দুল গফুরের ছেলে আমির হামজা (৫০) ও একই ক্যাম্পের মো. ইদ্রিসের মেয়ে ইসমত আরা বেগম (১০)।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোয়াইক্যং হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি জানান, কাভার্ড ভ্যান এবং ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
পড়ুন: নবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নানা-নাতনীসহ নিহত ৩
কক্সবাজারে পাহাড় ধসে শিশুর মৃত্যু
কক্সবাজারের মহেশখালীতে রবিবার রাত ৯টার দিকে অতি বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত রবিউল হোসেন (৫) উপজেলার কালারমারছড়ার গোরা পুছুনের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রবিবার বিকালে বৃষ্টির সময় খেলতে গিয়ে শিশুটি নিখোঁজ হয়। পরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজার পর রাত ৯টার দিকে স্থানীয় এক শিশুর দেখিয়ে দেয়া স্থানে পাহাড় ধসের মাটি সরিয়ে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই জানান, ধসে পড়া পাহাড়ের মাটির নিচ থেকে একটি শিশু মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
পড়ুন: কক্সবাজার পাহাড়ে ১২ হাজার পরিবারের ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস
টানা বর্ষণ: কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বেড়েছে উৎপাদন
গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানির পরিমাণ কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার ফলে পানির ওপর নির্ভরশীল দেশের একমাত্র পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রাঙ্গামাটির কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদন কিছুটা বেড়েছে।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের সঙ্গে রবিবার সকালে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, রবিবার ৮টা পর্যন্ত কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে তিনটি ইউনিটে মোট ৯৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে। তৎমধ্যে ২নং ইউনিটে ৩৯ মেগাওয়াট, ৩নং ইউনিটে ২৯ মেগাওয়াট এবং ৫নং ইউনিটে ৩০ মেগাওয়াট উৎপাদন হচ্ছে।
এছাড়া পুর্নবাসনের জন্য ১নং ইউনিট বন্ধ থাকলেও হ্রদে পানি বৃদ্ধি পেলে প্রয়োজনে ৪নং ইউনিটটি চালু করা হবে বলে তিনি জানান।
কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, কাপ্তাই হ্রদে পানির ধারণ ক্ষমতা ১০৯ মিনস সি লেভেল (এমএসএল)। কাপ্তাই হ্রদে বর্তমানে ৮৯.৭৬ এমএসএল পানি থাকার কথা থাকলেও রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৭৭.০৪ এমএসএল পানি রয়েছে।
কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক আরও জানান, এখন বর্ষা মৌসুম প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যার ফলে ধীরে ধীরে কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়বে।
উল্লেখ্য, কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট।
আরও পড়ুন: নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি, কিশোরগঞ্জের ১৫ গ্রাম বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
সিলেট নগরীর আংশিক এলাকায় সচল বিদ্যুৎ সরবরাহ
কুতুবদিয়ায় বজ্রপাতে নিহত ২
কক্সবাজারের কুতুবদিয়া উপকূলে বজ্রপাতে মো. করিম ও মো. ইয়াছিন নামের দুই জেলে নিহত হয়েছে। রবিবার সকাল ১১টায় উত্তর ধুরুং ইউনিয়নের চুল্লার পাড়া গ্রামে এ সময় আরও দুই জন আহত হয়েছে।
নিহতরা হলেন- ইমতিয়াজ (২৫) ও মো. করিম (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকালে ওই গ্রামের জাকের উল্লাহ’র তিন ছেলে রমিজ উদ্দিন(৩৬), ইমতিয়াজ, আক্কাস (২২) এবং দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়নের ধুরুং কাঁচার ছাবের আহমদের ছেলে মো. করিম মাছ ধরার নৌকায় কাজ করারত অবস্থায় বজ্রপাতের আঘাতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। প্রতিবেশীরা খবর পেয়ে আহত অবস্থায় চারজনকে উদ্ধার করে কুতুবদিয়া সরকারি হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি করে। হাসপাতালের চিকিৎসক নেছার আহমদ আহতদের পরীক্ষা নিরীক্ষার পর মো. ইমতিয়াজ ও মো. করিমকে মৃত ঘোষণা করেন। তবে আহত সহোদর দুই ভাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে উত্তর ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল হালিম নিশ্চিত করেন।
নিহত মো. করিম রবিবার সকালে উত্তর ধুরুং চুল্লার পাড়া এলাকায় ভগ্নিপতির মাছ ধরার নৌকায় জালের কাজ করতে যায়। সেখানে বজ্রপাতের আঘাতে নিহত হয়েছে বলে দক্ষিণ ধুরুং ইউপির চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আল আজাদ জানিয়েছেন।
কুতুবদিয়ায় বজ্রপাতের আঘাতে দুই জেলে শ্রমিকের মৃত্যুর খবর ইউএনও দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর হায়দার নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: বজ্রপাতে ১২ জনের মৃত্যু, চলতি বছরে সর্বোচ্চ
ময়মনসিংহে পৃথক বজ্রপাতে ৬ জনের মৃত্যু
মিয়ানমারে ফেরার দাবিতে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ
নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে নেয়ার দাবিতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পের ২৫টি ক্যাম্পে গো হোম ক্যাম্পেইন বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা।
রবিবার উখিয়ার ২৩টি ও টেকনাফের দুটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে সকাল ৮টা থেকে মানববন্ধন ও মিছিল শেষে সমাবেশ শুরু হয়। এতে ক্যাম্পের প্রতিটি ব্লকের রোহিঙ্গারা অংশ নেন। মিছিল ও সমাবেশের মাধ্যমে নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরিয়ে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানান রোহিঙ্গারা। ‘ব্যাক টু হোম’ স্লোগানে এই বিক্ষোভ সমাবেশে নানা বয়সের রোহিঙ্গারা অংশগ্রহণ করেন।
২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর দুর্বৃত্তের গুলি নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ একই দাবিতে ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত মহাসমাবেশের নেতৃত্বে ছিলেন।
তবে, এবারের সমাবেশের একক কোনো আয়োজক কিংবা নেতৃত্ব পর্যায়ের কেউ সামনে না এলেও প্রচারপত্রে আয়োজক হিসেবে নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী লেখা হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের রোহিঙ্গা বলেই ডাকা, দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রত্যেক রোহিঙ্গাকে আরাকানের গ্রামে গ্রামে প্রত্যাবাসন, প্রত্যাবাসন সংক্রান্ত প্রত্যেক চুক্তি অন্তর্ভুক্ত করা, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র, জাতিসংঘ, ওআইসি, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয়ান ইউনিয়ন, বাংলাদেশ, এনজিও, সংশ্লিষ্ট সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করা, বার্মার ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল, সম্পত্তি ফেরত, স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকার অধিকারসহ ইত্যাদি দাবি উত্থাপন করা হয় এই বিক্ষোভে।
আরও পড়ুন: ১৯ দফা দাবিতে রোহিঙ্গাদের বিক্ষোভ
উখিয়ার ৪নং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হেড মাঝি মোহাম্মদ হোসেন বলেন, আমরা নিরাপদ প্রত্যাবাসন চাই এবং আমাদের আশা এবারের সমাবেশটির মাধ্যমে উত্থাপিত রোহিঙ্গাদের যৌক্তিক দাবিগুলো আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গুরুত্ব পাবে।
রোহিঙ্গা ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কিন মং বলেন, সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে আমাদের দেশ মিয়ানমারে ফিরতে চাই আমরা, সমাবেশে আমরা এই মূল দাবিটাই জানাচ্ছি বিশ্ববাসীর কাছে। বাংলাদেশ সরকার আমাদের আশ্বাস দিয়ে মানবিক দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে, আমরা কৃতজ্ঞ।
অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ সামছু-দ্দৌজা বলেন, রোহিঙ্গারা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দাঁড়িয়ে বাড়ি ফিরে যাওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেয়া হয়নি।
ক্যাম্পে আইন-শৃঙ্খলায় নিয়োজিত ৮ এপিবিএন এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) কামরান হোসাইন জানান, ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ হয়েছে। ক্যাম্প এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে ৮ এপিবিএনের তৎপরতা সবসময় অব্যাহত আছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর জঘন্য নৃশংসতায় মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিকেরা নির্যাতিত হয়ে জোরপূর্বক বাংলাদেশে বিতাড়িত হয়েছিল, যা ইতিহাসে রোহিঙ্গাদের সবচেয়ে ভয়াবহ দেশত্যাগ হিসেবে বিবেচিত। নির্যাতিত রোহিঙ্গারা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সাতদফা দাবি উত্থাপন করেছেন।
আরও পড়ুন: অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘আমরা রোহিঙ্গা’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনী
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি জাহাজে ২ ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু!
চট্টগ্রাম বন্দরে বিদেশি জাহাজে কাজ করার সময় দুই ভারতীয় মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। শনিবার এই ঘটনা ঘটে।
মৃতরা হলেন-জাহাজের টেকনিশিয়ান কেরালার বাসিন্দা জিষ্ণু রাজ (২৯) ও অখিল শেখর (২৬)।
রবিবার চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, তারা এমটি নরড ম্যাজিক নামে জাহাজে কর্মরত ছিলেন।
এই বিষয়ে পতেঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ডেনমার্কের পতাকাবাহী এমটি নর্ড ম্যাজিক জাহাজটি ১৫ জুন চট্টগ্রাম বন্দরের আসে। জাহাজটি আনোয়ারার পারকি চরের কাছাকাছি এলাকায় নোঙর করা হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে যুক্ত হচ্ছে দুটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন টাগবোট
ওসি জানান, সেখান থেকে জাহাজে আনা সয়াবিন তেল খালাস করা হয়। ওই দুই ভারতীয় টেকনিশিয়ান জাহাজে নেমে ট্যাঙ্কারের থিকনেস পরীক্ষা করতে গিয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। জাহাজে থাকা কর্মকর্তারা তাদেরকে কোস্টগার্ড এবং লোকাল শিপিং এজেন্টের সহায়তায়্বেএকটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জিষ্ণু রাজকে মৃত ঘোষণা করেন। আর অখিল শেখরকে আইসিইউতে ভর্তি করে, পরে তিনিও মারা যান। এবিষয়ে জাহাজের স্থানীয় এজেন্ট এমটিসিএল পতেঙ্গা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে নিহত ৪
বন্দর সূত্র জানায়, জাহাজটিতে মোট ২৫ জন নাবিক ছিলেন। তাদের মধ্যে ২১ জন ভারতীয়, ডেনিস ও লুথিয়ানরার একজন করে, দুইজন ফিলিপিনো নাগরিক রয়েছে। বাকি ২৩ জন নাবিক সুস্থ এবং স্বাভাবিক আছেন মর্মে জাহাজটির সেকেন্ড ইঞ্জিনিয়ার মাহেন্দ্রা এম্বার নিশ্চিত করেছেন।
চট্টগ্রামে পাহাড় ধসে প্রাণহানী ঠেকাতে খোলা হল ১৯ আশ্রয়কেন্দ্র
চট্টগ্রামে লাগাতার বৃষ্টির কারণে পাহাড় ধসে চারজনের মৃত্যুর পর প্রাণহানির ঠেকাতে খোলা হয়েছে ১৯টি আশ্রয়কেন্দ্র।
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে বা পাহাড়ের ওপর বসবাসকারীরা যাতে সরে গিয়ে নিরাপদে আশ্রয় নিতে পারে সে জন্য জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে শনিবার চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ, বাকলিয়া, কাট্টলী ও চান্দগাঁও সার্কেলে এসব আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়।বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের স্টাফ অফিসার প্লাবণ কুমার বিশ্বাস।এর আগে শুক্রবার দিবাগত রাত ১টায় আকবর শাহ থানার বরিশাল ঘোনা ও রাত ৩টার দিকে ফয়েস লেকের বিজয় নগর এলাকায় পৃথক পাহাড় ধসের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন নারী-পুরুষ নিহত ও কয়েকজন আহত হয়।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যার্তদের জন্য ১৯৯ আশ্রয়কেন্দ্র