চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামে ৩ ভোট কেন্দ্রে আগুন
চট্টগ্রাম মহানগরীতে তিনটি ভোটকেন্দ্রে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। পুড়ে যাওয়া ভোটকেন্দ্রগুলোর মধ্যে দুইটি স্কুল ও একটি মাদরাসা।
শনিবার (৬ জানুয়ারি) ভোরে নগরীর বন্দর থানার দুইটি ও খুলশী থানার একটা কেন্দ্রে আগুন দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ১৬ ঘণ্টায় ৬টি গাড়ি ও ১০টি স্থাপনায় আগুন: ফায়ার সার্ভিস
আগুন লাগানো ভোটকেন্দ্রগুলো হচ্ছে— চট্টগ্রাম বন্দর থানার ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মহিউস সুন্নাহ মাদরাসা ও খুলশী হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পাশে ডিজেল কলোনি ইউসেপ স্কুল (ডাব্বা স্কুল)।
বন্দর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শামীম জানান, ভোর ৫টা থেকে কাছাকাছি সময়ে তিন প্রতিষ্ঠানে আগুনের খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিসের দুইটি করে ইউনিট।
আরও পড়ুন: গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ভোটকেন্দ্রে আগুন
তিনি আরও জানান, এর মধ্যে চট্টগ্রাম-১১ সংসদীয় আসনের আওতাধীন নিশ্চিন্তাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আগুন লাগে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার তিন হাজার ২৯২ জন।
তিনি জানান, বিদ্যালয়ের তিনতলা ভবনের নিচতলায় প্রধান শিক্ষকের রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে সকাল ৬টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে প্রধান শিক্ষকের রুমে থাকা নতুন বইসহ আনুমানিক ৫০ হাজার টাকার জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। তবে ভোটের সামগ্রী ও বুথের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
আরও পড়ুন: রামুর বৌদ্ধ বিহারে আগুন
চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নারী নিহত
চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (৬ জানুয়ারি) বেলা পৌনে ১২টার দিকে উপজেলা চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি আঞ্চলিক মহাসড়কের ইসলামিয়া হাট এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মরিয়ম বেগম (৫০) উপজেলার উত্তর মাদার্শা রহমত ঘোনা এলাকার আলা মিয়ার মেয়ে। তার স্বামীর নাম মো. মিয়া।
হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান জানান, শনিবার দুপুরের দিকে হাটহাজারী সদর এলাকায় বোনের বাড়ি যাচ্ছিলেন মরিয়ম বেগম। রাস্তা পারাপারের সময় হাটহাজারী অভিমুখী বেপরোয়া একটি ট্রাক চাপা দিলে ঘটনাস্থলে মারা যান মরিয়ম।
তিনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে এবং লাশের সুরতহাল তৈরি করেছে।
রামুর বৌদ্ধ বিহারে আগুন
রামুর বৌদ্ধ বিহারে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় ‘উসাইচেন বৌদ্ধ বিহার (বড় ক্যাং)’ নামে একটি বৌদ্ধ বিহারের সিঁড়ি পুড়ে গেছে।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ২টার দিকে উপজেলা সদরের চেরাংঘাটা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান জানান, ঘটনার পর থেকে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে অবস্থান করছে। শনিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে পুলিশসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাতে রামু উপজেলা সদরের চেরাংঘাটাস্থ রাখাইন সম্প্রদায়ের দেড়শ বছরের পুরানো কাঠের তৈরি উসাইচেন বৌদ্ধ বিহারের (বড় ক্যাং) পুরোহিতসহ অন্যরা প্রতিদিনের মতো ঘুমিয়ে পড়েন। রাত ২টার দিকে আকস্মিক আগুন লেগে যায়। এ সময় বৌদ্ধ বিহারের ভেতরে অবস্থানকারীরা চিৎকার শুরু করলে এলাকাবাসী এগিয়ে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। পরে খবর পেয়ে রামু ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে বৌদ্ধ বিহারটির ভেতরের কাঠের তৈরি একটি সিঁড়ি পুড়ে গেছে। তবে দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলতে পারায় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’
ওসি আরও বলেন, ‘আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে তা জানা যায়নি। তা ছাড়া এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা তা পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। রাতে ঘটনাটি শোনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বৌদ্ধ বিহারসহ আশপাশের সব সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ তদন্ত করছে।’
সীতাকুণ্ডে দুর্বত্তদের আগুনে পুড়ল পিকআপ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে পিকআপে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (৬ জানুয়ারি) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপজেলার ঢালিপাড়া রাস্তার মাথা (মোস্তফা সিএনজি ফিলিং স্টেশনের বিপরীত পাশে) এ ঘটনা ঘটে।
কুমিরা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম জানান, ভোর সাড়ে ৫টায় ওই এলাকায় পিকআপে আগুন দেওয়ার এ ঘটনা ঘটে।
সীতাকুণ্ড ফায়ার স্টেশনের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা নুরুল আলম দুলাল বলেন, পুড়ে যাওয়া গাড়ির চালক জানান- ৮ থেকে ১০ জন ব্যক্তি চলন্ত গাড়িটিকে মহাসড়কে দাঁড় করাতে বাধ্য করেন। এরপর চালক ও তার সহকারীকে গাড়ি থেকে নামিয়ে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের ঠিক আগে ট্রেনে আগুন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তের চূড়ান্ত অভিপ্রায়: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান। সেখানে গিয়ে মহাসড়কের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে ওই পিকআপে আগুন জ্বলতে দেখেন। পরে আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
ওসি বলেন, আগুনে পিকআপ ও এতে থাকা প্লাস্টিকের ড্রামগুলো পুড়ে গেছে। চালক ও সহকারী নেমে পড়ায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ওসি।
আরও পড়ুন: গোপীবাগে ট্রেনে আগুন: ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন
আখাউড়ায় ডোবা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির গলিত লাশ উদ্ধার
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় পরিত্যক্ত ডোবা থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তির গলিত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে আখাউড়া পৌরসভার দেবগ্রাম আমতলীবাজার এলাকা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: নাটোরের সিংড়া থেকে কৃষকের লাশ উদ্ধার
আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আলম বলেন, শুক্রবার সকালে দাগন খান বাড়ির পরিত্যক্ত ডোবায় লাশসদৃশ কিছু ভেসে থাকতে দেখে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দেয়।
পরে পুলিশ এসে ডোবা থেকে লাশটি উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
তিনি আরও বলেন, ওই ব্যক্তির পরনে শার্ট ও লুঙ্গি ছিল। তার গলায় ও পায়ের নিচে আঘাতের চিহ্ন আছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
তিনি বলেন, ওই ব্যক্তির লাশের পরিচয় শনাক্তের জন্য পিবিআইকে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর বনশ্রীতে গৃহকর্মীর লাশ উদ্ধার, সংঘর্ষ-গাড়িতে আগুন
ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুনের অভিযোগ
কক্সবাজারের রামুতে ছোট ভাইয়ের হাতে বড় ভাই খুন হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) উপজেলার খুনিয়াপালং ইউনিয়নের ধেছুয়াপালং কম্বনিয়া এলাকায় সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে বাসচাপায় দুই শিশু নিহত
নিহত আইয়ুব আলীর বড় ভাই মো. আলী জানান, আইয়ুব আলী নিজ সুপারি বাগানে পানির পাম্প দিয়ে সেচ দিচ্ছিলেন। তার আপন ছোট ভাই ইয়াসিন আলী এসে তার দরকার বলে পানির পাম্প নিতে চান। এই নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ইয়াসিন আলী বাড়ি থেকে কিরিচ নিয়ে এসে তার বড় ভাই আইয়ুব আলীর উপর আঘাত করেন।
নিহতের ফুফাতো ভাই মো. সুলতান জানান, তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক কোন্দল চলছিল। তারই জের ধরে এই ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুল্লাহ জানান, দুই ভায়ের মধ্যে পারিবারিক কলহ তিনি নিজেই তিনবার মিটমাট করেছেন। তারপরও মিটমাট না হওয়ায় চেয়ারম্যানের কাছে পর্যন্ত বিচার গড়ায়।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে লবণবোঝাই ট্রাকে ১৮ কেজি ক্রিস্টাল মেথ জব্দ, আটক ২
নিহত আইয়ুব আলীর বন্ধু করিম বলেন, আমার বন্ধু বিয়ে করেছে এখনো ১৫ দিনও হয়নি। এরই মধ্যে এমন ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। এটি পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা।
তাই বন্ধুকে হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন তিনি।
এই বিষয়ে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের জানান, ঘটনার পর তারা সেখানে পরিদর্শন করেছেন। তারা আলামত সংগ্রহ করেছেন এবং পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরও জানান, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে বিজিবি'র অভিযানে ৭০ হাজার ইয়াবা জব্দ, আটক ১
ভাষা সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা বি এম কলিমুল্লাহ আর নেই
ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম কলিমুল্লাহ ভুঁইয়া আর নেই।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকার কল্যাণপুরে ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ১০৯ বছর।
আরও পড়ুন: সাবেক কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান আর নেই
তার ছেলে বি এম আহসান ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার পৈত্রিক বাড়ি উপজেলার রামচন্দ্রপুর গোপালখোর ভু্ইয়াবাড়িতে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ভাষা সৈনিক বি এম কলিমুল্লাহর এক ছেলে, সাত মেয়ে আছেন।
আরও পড়ুন: কবি আবু বকর সিদ্দিক আর নেই
ভাষা সৈনিক বি এম কলিমুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৫২’র ভাষা সৈনিক আ. মতিনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র থাকাকালে তিনি ‘৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলে যোগ দেন। তখন পুলিশের গুলিবিদ্ধ সালামকে কোলে করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সিটি মেয়র রিফাত আর নেই
এরপর তিনি চাঁদপুরে লঞ্চে বাড়ি আসার সময় ডিবি পুলিশ তাকে সদরঘাটে গ্রেপ্তার করে। কয়েকদিন কারাবন্দি থাকেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েই ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে চাঁদপুরের মোহাম্মদি মুসলিম হোস্টেলে (এখন সরকারি মহিলা কলেজ হোস্টেল) এক গোপন মিটিংএ সালামের রক্তমাখা জামা সবাইকে দেখালে সবাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এর পর তার নেতৃত্বেই গঠিত হয় চাঁদপুর মহকুমা ভাষা সংগ্রাম কমিটি। এ সভায় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন আ. করিম পাটোয়ারিসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। যার ফলে ভাষা আন্দোলন চাঁদপুরের সবর্ত্র ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: প্রবীণ সাংবাদিক এম ওয়াহিদুল্লাহ আর নেই
চাঁদপুরে ঘন কুয়াশায় লঞ্চে কার্গো জাহাজের ধাক্কা, নিখোঁজ ১
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে ঘন কুয়াশার কারণে কার্গো জাহাজের ধাক্কায় তলা ফেটে চরে আটকা পড়েছে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বরিশালগামী এমভি সুন্দরবন-১৬ লঞ্চ। এতে এক নারী যাত্রী নিখোঁজ এবং আরেক যাত্রী আহত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার আমিরাবাদ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় লঞ্চের ৫ শতাধিক যাত্রী আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বিষয়টি ইউএনবিকে নিশ্চিত করেন চাঁদপুরের বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটি) উপপরিচালক শাহাদাত হোসেন।
ধাক্কা দেওয়া কর্গো জাহাজটি দ্রুত পালিয়েছে বলে জানান মোহনপুর নৌপুলিশ ও নৌপুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ ধরায় ৮৮ জেলে আটক
তিনি জানান, ঘটনার পর যাত্রীদের উদ্ধার ও নিরাপত্তা দিতে চাঁদপুর সদর ও মোহনপুর নৌপুলিশ ঘটনাস্থলে কাজ করছে। তবে ঘন কুয়াশার কারণে কাজ কিছুটা ব্যাহত হয়েছে।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকালে ঘটনাস্থল থেকে চাঁদপুর নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনায় এক নারী যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন। আর এক পুরুষ যাত্রী আহত হয়েছেন। তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
চাঁদপুর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপ-পরিচালক বশির আলী খান ইউএনবিকে বলেন, দুর্ঘটনার পর থেকে যাত্রীদের নিরাপদে গন্তব্য পৌঁছানোর বিষয়টি তত্ত্বাবধান করা হচ্ছে। নিখোঁজ এবং আহত যাত্রীর পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: পর্যটন পরিকল্পনার বড় অংশ হচ্ছে চাঁদপুর আধুনিক নৌবন্দর: দীপু মনি
দুর্ঘটনা কবলিত সুন্দরবন-১৬ লঞ্চের সুপার ভাইজার সিরাজুল ইসলাম জানান, তারা লঞ্চটি নিরাপদে মেঘনা নদীর আমিরাবাদ এলাকায় নোঙর করে রেখেছেন।
এর মধ্যে দিবাগত রাত ৪টার দিকে এমভি সুন্দরবন-১৫ দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চের ডেক এবং প্রথম শ্রেণির ২৫০ যাত্রীকে বরিশালে নিয়ে গেছে। এ লঞ্চের সুপারভাইজার দুলাল জানান, সকাল ৮টায় তারা বরিশাল লঞ্চঘাটে গিয়ে পৌঁছান।
এমভি সুন্দরবন-১৪ লঞ্চের সুপারভাইজার মো. ইউনুছ জানান, লঞ্চের কেবিনসহ বাকি প্রায় ২৫০ যাত্রীকে নিয়ে আজ সকাল সাড়ে ৮টায় পর তারা বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে গেছেন।
আরও পড়ুন: ৬ ঘণ্টা পর চাঁদপুর-শরীয়তপুর ফেরি চলাচল শুরু
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন নজিবুল বশর ভাণ্ডারী
চট্টগ্রাম-২ ফটিকছড়ি আসনে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও বর্তমান এমপি নজীবুল বশর মাইজভাণ্ডারী নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।
বৃহস্পতিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুরে ফটিকছড়ি মাইজভান্ডার শরীফের রহমান মঞ্জিলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নৌকাকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন নজীবুল বশর।
আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পেয়ে তিনি ফুল প্রতীক নিয়ে তরিকত ফেডারেশন থেকে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আমি চারবারের মধ্যে ৩ বার নৌকা প্রতীক এমপি নির্বাচিত হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে বার বার সন্মানিত করেছেন। যেহেতু ১৪ দলীয় জোট নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে ফটিকছড়িতে নৌকার প্রতীকের সমর্থন পূর্ণব্যক্ত করেছেন সেহেতু উনার প্রতি সন্মান জানানো আমার নৈতিক দায়িত্ব। তাই এখন ফটিকছড়িতে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করা সমীচীন মনে করছি না।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নির্বাচনবিরোধী লিফলেট বিতরণকালে বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
তিনি আরও বলেন, আমি যদি নির্বাচনের মাঝে থাকি ভোটের যে সমীকরণ হবে সেখানে আমার প্রাপ্ত ভোটের কারণে নৌকার বিজয় বাধার কারণ হতে পারে আমি মনে করি।
‘তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ১৪ দলীয় জোট নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সন্মান জানিয়ে ও ফটিকছড়ির সার্বিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার নিমিত্তে আগামী ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদের প্রার্থী থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। আমি ফটিকছড়িবাসীর সঙ্গে সবসময় পাশে ছিলাম এবং থাকব।’
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যের পর তিনি সাংবাদিকদের কোনো প্রশ্নে উত্তর দেবেন না বলে জানান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার
চাঁদপুরে ‘বাকবাকুম’ শব্দে মুখরিত বাবুরহাট কবুতর বাজার
শত শত কবুতরের সমাহার চাঁদপুরের বাবুরহাটে অবস্থিত কবুতর বাজারে। জেলার সবচেয়ে বড় কবুতরের সমাহার হয় শতবষের্র পুরনো ও সমৃদ্ধ চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে অবস্থতি বাজারটিতে।
সাপ্তাহিক হাট বা বাজারের দিনগুলোতে জেলা শহরের বিপনীবাগ, সদরের বাবুরহাট, শাহতলী বাজার, বিষ্ণুপুর বাজার, মহামায়া বাজার, পুরান বাজার, ছোট সুন্দর, বাগড়া, বাগাদী, চান্দ্রা বাজার, পশ্চিম চান্দ্রা বাজার, বহরিয়া, বাংলাবাজার, হাজীগঞ্জের বাকিলা বাজার, মতলব দক্ষিণের মুন্সীরহাট বাজারেও প্রচুর কবুতর বিক্রি হয়।
কিন্তু বাবুরহাট বাজারের কবুতর বাজারে শত শত কবুতর বিক্রি হয়। সাপ্তাহিক বাজারের দিন বৃহস্পতিবার ও রবিবার। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে বিকিকিনি। এমনটাই জানিয়েছেন প্রবীণ কবুতর বিক্রেতা হাবিবুল্লা খান (৬০), কামাল পাটোয়ারি (৫৮) ও সিদ্দিকুর রহমান (৫৬)।
সদর ও আশপাশের উপজেলা মতলবের মুন্সীরহাট ও বরদিয়া, ফরিদগঞ্জের চান্দ্রা বাজার ও হাজীগঞ্জসহ প্রত্যন্ত এলাকা থেকে হাটের দিনগুলোতে প্রচুর কবুতর আসে এ বাজারে। এ দু’দিন কমপক্ষে ৮-৯ লাখ টাকার কবুতর বিকিকিনি হয় বলে জানান তারা।
আরও পড়ুন: পর্যটন পরিকল্পনার বড় অংশ হচ্ছে চাঁদপুর আধুনিক নৌবন্দর: দীপু মনি
অনেক উদ্যমী যুবক ও কলেজের ছাত্ররাও বাজারে তাদের বাসা-বাড়ি ও নিজস্ব ছোট-বড় খামারে পালিত কবুতর নিয়ে আসেন বিক্রির জন্য। আবার অনেক যুবক শখের বসে কবুতর পালার জন্য এখানে কবুতর কিনতে আসেন বিভিন্ন এলাকা থেকে।
শখের বসে ও বাড়তি আয়ের উদ্দেশ্যে কবুতর পালন করা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, এ কাজে বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না। প্রতিমাসেই বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করা যায়।-
প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হাজীগঞ্জের ইমন বলেন, বাড়তি আয় দিয়ে তারা নিজেদের পকেটমানি ও পড়ালেখার খরচ চালান- এমনটাই জানান এক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইমন।
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অবসরে ও ছুটির দিনে অর্থ যোগান দিতে বাড়িতে সে কবুতর ও হাঁস-মুরগি প্রতিপালন করছেন। বিড়াল, কুকুর, ময়না, টিয়া পালন করতেন আগে। এসব ক্ষেত্রে খাবারের খরচ বেশি। তাই ওসব প্রায় বাদ দিয়েছেন।
বাবুরহাট বাজার এলাকার কলেজ (এইচএসসি) শিক্ষার্থী কামরুল বলেন, ৩ জোড়া কবুতর নিয়ে এসেছেন এ বাজারে। বাড়িতে আরও ১০-১২ টি কবুতর আছে। শখের বসে কবুতর পালন করছেন। পকেট খরচ হয়ে যায়, কবুতর পালনে আনন্দও পান তিনি।
জেলা শহরের কোড়ালিয়া এলাকা থেকে রাকিবুল ইসলাম ও নইমুল ইসলাম গুয়াখোলা এলাকা থেকে নিজেদের পালিত খাঁচায় করে ২০-৩০টি কবুতর বিক্রি করতে এনেছেন এ বাবুরহাট বাজারে।
তরুণ ব্যবসায়ী জাহিদ হোসেন (৩৫) জানান, তিনি নিজেও শহরের হাজী মোহসীন রোডের বাড়িতে কবুতর পালন করেন এবং তা বিক্রি করেন এ বাজারে।
আ. রহমান (৫৫), সিদ্দিক, কামাল পাটোয়ারি, হারুন, দুলাল, রনি, হাবিবুল্লাহ খানসহ (৬০) আরো অনেকে এখানে কবুতর বিক্রি করেন।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে সরবরাহ বাড়লেও ইলিশ এখনও সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে
সিদ্দিক ও কামাল জানান, তারা এ বাজারে প্রায় ৪০ বছর ধরে কবুতর বিক্রি করেন। দৈনিক ৪-৬ হাজার টাকা আয় হয়।
তারা বলেন, জেলার সবচেয়ে বড় কবুতর বাজার হলো বাবুরহাটের ‘বাকবাকুম কবুতর বাজার’।
বিভিন্নস্থান থেকে এখানে সারা দিন ২ শতাধিক কবুতর বিক্রেতা আসেন। কয়েক হাজার ক্রেতাও আসেন কবুতর কিনতে। সদরের শাহতলী থেকে এসেছেন যুবক ইকরাম প্রধানীয়া ও ইমন। তারা নিজ নিজ বাড়িতে শখের বসে কবুতর পালন করছেন।
কবুতর কয়েক প্রজাতির হয়ে থাকে। দেশি, ময়ূর কবুতর, ম্যাগপাই, হুমা, রাইচার, বোম্বে, গিরিবাজ, সিরাজি প্রজাতির কবুতর বাজারে দেখা যায়। এলাকাভেদে সেগুলোর নামও ভিন্ন হয়ে থাকে।
গিরিবাজ কবুতর জোড়া ৭০০ টাকা । দেশীয় কবুতর জোড়া ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কবুতরের বাচ্চা জোড়া ৩০০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়ে থাকে।
ঘুরে ঘুরে দেখা গেছে, কবুতরের দাম অনেকটা একই রকম মুন্সীরহাট (মতলব দক্ষিণ), মহামায়া, ছোট সুন্দর, পুরান বাজার, বউ বাজার, বিষ্ণুপুর, জেলা শহরের পালবাজার, বিপনীবাগ বাজার ও ওয়ারল্যাস বাজারে।
সদরের আশিকাটি ইউনিয়নের মান্দারি গ্রামে চাঁদপুর-কুমিল্লা মহাসড়কের পাশেই নিজ বাড়িতে পারভিন ইসলাম ৪-৫টি কবুতর নিয়ে কয়েক বছর আগে লালনপালন শুরু করেন। এখন তার বাড়িতে সারাক্ষণই বাকবাকুম শব্দে মুখরিত থাকে।
তিনি বলেন, ‘আমার বাসায় এখন প্রায় ৫০ জোড়া বিভিন্ন প্রজাতির কবুতর রয়েছে। খরচ বাদে মাসে আমার প্রায় ১০-১২ হাজার টাকা আয় হচ্ছে।’
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসার মো. বখতিয়ার আলম বলেন, জেলার ৮ উপজেলায় প্রায় ৫০০টি কবুতরের ছোট-বড় নিজস্ব খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রতিমাসেই বাচ্চা ফুটানো হয়।
তিনি বলেন, ‘কবুতর ও কবুতরের বাচ্চা বিক্রি করে অসংখ্য নারী-পুরুষ এবং যুবক বয়সীরাও বেশ টাকা উপার্জন করছেন। কবুতর পালনে পুঁজি কম লাগে। এটি একটি লাভজনক সেক্টর।’
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে মাছ ঘাটে ইলিশের আমদানি বেড়েছে, দাম কিছুটা নিম্নমুখী