খুলনা
বাগেরহাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৭
বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার বৈলতলী এলাকায় ইজিবাইক-পিকআপ সংঘর্ষে ছয় জন এবং পৃথক একটি সড়ক দুর্ঘটনায় আরও একজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার সকালে খুলনা-মাওয়া মহাসড়কের এই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন। হতাহতরা সবাই ইজিবাইক যাত্রী বলে পুলিশ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন:কুষ্টিয়ায় পৃথক দুর্ঘটনায় কলেজশিক্ষকসহ নিহত ৩
মৃতদের মধ্যে দুই জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার নলদা গ্রামের পান ব্যবসায়ী উৎপল রাহা (৩৬) ও নয়ন দত্ত (২৮)। তাৎক্ষণিকভাবে অপর নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনম খায়রুল আনাম জানান, সকালে যাত্রীবাহী ইজিবাইকটি বৈলতলী এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা খুলনাগামী পিকআপের সাথে মুখোমুখি সংর্ঘষ হলে ঘটনাস্থলে ছয় জন ইজিবাইক যাত্রী নিহত হন। আহত একজনকে উদ্ধার করে প্রথমে ফকিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে পিকআপ ও ইজিবাইক জব্দ করা হয়েছে। তবে চালকদের পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৩
এদিকে একই সড়কের মোল্লাহাট উপজেলার চাঁদেরহাটে রাস্তার পাশ থেকে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে কোনও এক সময় যানবাহনের ধাক্কায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই পথচারী নিহত হন।
খুলনার চার হাসপাতালে ১০ জনের মৃত্যু
খুলনার চারটি হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (২১ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার (২২ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়।
খুলনা করোনা হাসপাতালে তিনজন, শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন, বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দুজন এবং গাজী মেডিকেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
পড়ুন: কিশোরগঞ্জে করোনা ও উপসর্গে ১৫ জনের মৃত্যু
মৃত ব্যক্তিরা হলেন- খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকার হাসিনা বেগম (৭৫), ডুমুরিয়ার ফাতিমা খাতুন (৬৫) ও নড়াইল লোহাগড়ার হোসনেয়ারা বেগম (৪০)।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১১৬ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ৪১ জন, ইয়েলো জোনে ৪২ জন, আইসিইউতে ২০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন একজন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮ জন।
খুলনার আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, হাসপাতালে খালিশপুরের ১৮নং লাল হাসপাতাল রোডের শিরিন আক্তার (৬০) নামে একজনের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ৪৫ জন। তার মধ্যে আইসিইউতে রয়েছে ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪ জন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ জন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে কোনো রোগীর মৃত্যু হয়নি। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৪ জন। এর মধ্যে ২৩ জন পুরুষ ও ২১ জন মহিলা। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন।
খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গত ২৪ ঘণ্টায় দুজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা হলেন- খুলনার রূপসা রাজাপুরের বাদশা মিয়া (৬৫) এবং খুলনা মহানগরীর টুটপাড়ার অনিমা রানী ঘোষ (৬৫)। হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ৫৭জন ভর্তি রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৪ জন আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন।
পড়ুন: কুষ্টিয়ায় একদিনে আরও ১৪ মৃত্যু
বিশ্বে করোনা আক্রান্ত ১৯ কোটি ১৯ লাখ ছাড়াল
গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্তাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতরা হলেন- খুলনার নিরালা ১৬নং রোডের মো. আব্দুস সালাম (৬৬), নগরীর ৪৮-৬ আহসান আহম্মেদ রোডের মো. বদরুদ্দীন (৭৮), ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর তালশা এলাকার মো. মুনসুর (৭০)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৫ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৬ জন।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে খুলনায় ঈদ উদযাপন
করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এবার সারা দেশের মতো খুলনায়ও যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করা হয়েছে।
শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে সকাল ৮টায় খুলনা টাউন জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। জামাতে ইমামতি করেন টাউন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মোহাম্মদ সালেহ। এছাড়া কালেক্টরেট জামে মসজিদে সকাল সাড়ে ৮টায় একটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনঃ বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদের ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত
ঈদের জামাতে খুলনার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশগ্রহণ করেন।
নামাজ শেষে করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি, দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
আরও পড়ুনঃ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুমিল্লায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের ৩১টি ওয়ার্ডের ৭৫৫টি মসজিদে সিটি করপোরেশনের সহায়তায় ও ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে পৃথকভাবে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া খুলনা জেলার নয়টি উপজেলার প্রায় দুই হাজার নয়শত ৯৩টি মসজিদে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার, খুলনা বিশেষ অনুষ্ঠানমালা এবং স্থানীয় সংবাদপত্রসমূহ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করে। বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, ভবঘুরে কল্যাণকেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণকেন্দ্রে ঈদ উপলক্ষে বিশেষ খাবার বিতরণ করা হয়।
বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদের ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত
ঐতিহাসিক বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদুল আজহার ৩টি জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুসল্লিরা জামাতে অংশ নেন।
বুধবার সকাল ৭টা ৭ মিনিটে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে ৭.৪৫ এ দ্বিতীয় এবং সকাল ৮.১৫ তে র্সবশেষ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুনঃ করোনা মহামারির মাঝে দেশজুড়ে পালিত হচ্ছে ইদুল আজহা
জামাতে অংশ নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা উম্মার শান্তিকামনা ও করোনা মহামারি থেকে মুক্তির জন্য বিশেষ দোয়া করেন।
ষাটগম্বুজ মসজিদে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোছাব্বেরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ষাটগম্বুজ ইউপি চেয়ারম্যান আক্তারুজ্জামান বাচ্চুসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা নামাজ আদায় করেন।
এছাড়াও জেলার বিভিন্ন ঈদগাহ এবং জামে মসজিদে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে বিভিন্ন এলাকায় পশু কোরবানি করা হয়।
আরও পড়ুনঃ স্বাস্থ্যবিধি মেনে কুমিল্লায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেছেন মুসল্লিরা। আগে থেকেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে মসজিদের ইমাম এবং মসজিদ কমিটিকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামাজের নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
খুলনা বিভাগে একদিনে ৪৩ মৃত্যু, শনাক্ত ১৩৯৪
খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা কমেছে। তবে বেড়েছে শনাক্তের সংখ্যা। বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসময়ে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৩৯৪ জনের।
এর আগে সোমবার বিভাগে ৫২ জনের মৃত্যু এবং ১ হাজার ১৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। মঙ্গলবার বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আরও পড়ুনঃ চট্টগ্রামে করোনায় একদিনে রেকর্ড ১৫ মৃত্যু, শনাক্ত ৯২৫
স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়া জেলায়। বাকিদের মধ্যে খুলনায় ৯ জন, যশোরে ৮ জন, নড়াইল, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে ৪ জন করে, ঝিনাইদহে ২ জন, বাগেরহাট ও মাগুরায় একজন করে মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণের শুরু থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৮৩ হাজার ৯৮০ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৯৯০ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৬ হাজার ৩৫৪ জন।
আরও পড়ুনঃ রামেকের করোনা ইউনিটে একদিনে ২০ মৃত্যু
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জেলাভিত্তিক করোনা-সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘণ্টায় খুলনা জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২৭৪ জনের। যা নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৩৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত জেলায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২১ হাজার ৭১২ জনের। মারা গেছেন ৫২৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৯০৬ জন।
বাগেরহাটে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬১ জনের। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৪৪৮ জনের। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১২ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৯৬৬ জন।
আরও পড়ুনঃ সিলেটে করোনায় আরও ৭ মৃত্যু, শনাক্ত ৪৮৬
সাতক্ষীরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৮২ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৫ হাজার ১০৫ জন এবং মারা গেছেন ৮২ জন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ৭৫৩ জন।
২৪ ঘণ্টায় যশোরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ১৬৫ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১৭ হাজার ৩৭৮ জন। মোট মারা গেছেন ২৮৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১১ হাজার ৭০৮ জন।
২৪ ঘণ্টায় নড়াইলে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ৭৮০ জনের। মোট মারা গেছেন ৮১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ৬৫১ জন।
আরও পড়ুনঃ কোভিড ১৯: বিশ্বব্যাপী মৃত্যু প্রায় ৪১ লাখ
মাগুরায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৬০৮ জনের। মোট মারা গেছেন ৪৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৫৫০ জন।
ঝিনাইদহে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৭২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৫৭৬ জন। মোট মারা গেছেন ১৬৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৪ হাজার ২০ জন।
২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ৪২১ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ১২ হাজার ৫৯১ জনের। মোট মারা গেছেন ৪৩৩ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ২৬৯ জন।
চুয়াডাঙ্গায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৭৯ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৫১৪ জন। মোট মারা গেছেন ১৪৬ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৯৫ জন।
মেহেরপুরে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ১৪৮ জন। এ নিয়ে জেলায় মোট শনাক্ত হয়েছে ৩ হাজার ২৬৮ জন। আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১০৫ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ২৩৬ জন।
খুলনার পাঁচ হাসপাতালে আরও ১৩ জনের মৃত্যু
খুলনার পাঁচ হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (১৯ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার (২০ জুলাই) সকাল ৮টা পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১২ জন এবং উপসর্গ নিয়ে এক জনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালে পাঁচজন, শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের করোনা ইউনিটে তিনজন, জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজন, খুলনা সিটি মেডিকেল হাসপাতালে তিনজন এবং গাজী মেডিকেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
খুলনা ডেডিকেটেড করোনা হাসপাতালের ফোকাল পার্সন ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় চারজন ও উপসর্গ নিয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে।
পড়ুন: কোভিড-১৯: বিশ্বব্যাপী মৃত্যু প্রায় ৪১ লাখ
করোনায় মৃতরা হলেন খুলনার নগরীর ধর্মসভা এলাকার আব্দুর রশিদ (৬৭), খালিশপুর মুজগুন্নির মুক্তার শেখ (৯০), মিয়া পড়া এলাকার এটিএম আনিসুজ্জামান (৫৬) ও গিলাতলা এলাকার সুশান্ত দত্ত (৫৫)। এ ছাড়া উপসর্গে একজনের মৃত্যু হয়।
হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১৩৬ জন। যার মধ্যে রেড জোনে ৫৪ জন, ইয়েলো জোনে ৪৫ জন, আইসিইউতে ২০ জন এবং এইচডিইউতে ১৭ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৩৪ জন। আর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৮ জন।
খুলনার শহীদ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রকাশ দেবনাথ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
মৃতরা হলেন খুলনার রূপসার আইচগাতি এলাকার জাহানারা (৬০), খুলনার অলক রায় (৫৪) ও নড়াইলের কালিয়ার কামাল মোস্তফা (৭২)।
পড়ুন: বাংলাদেশে করোনায় একদিনে নতুন মৃত্যুর রেকর্ড ২৩১
রামেকে করোনায় আরও ১৭ মৃত্যু
হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি রয়েছেন ৪২ জন। তার মধ্যে আইসিইউতে রয়েছে ১০ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৭ জন আর সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচ জন।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাগেরহাটের কচুয়ার ফারজানা (৪৮) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫২ জন। এর মধ্যে ২৫ জন পুরুষ ও ২৭ জন মহিলা। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ছয়জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ জন।
বেসরকারি গাজী মেডিকেল হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দৌলতপুরের রাজন কুমার সাহা (৬০) নামের একজনের মৃত্যু হয়েছে।
হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭৮ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে ৭ জন এবং এইচডিইউতে ৮ জন রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৭ জন। হাসপাতালের আরটিপিসিআর ল্যাবে ৩৭টি নমুনা পরীক্ষায় ২১ জনের করোনা শনাক্ত হয়।
এছাড়া খুলনা সিটি মেডিকেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন খুলনার বটিয়াঘাটার বিন্দু প্রকাশ গোলদার (৭০), রূপসার শাহজান ফকির (৬২) ও পিরোজপুরের প্রিয়াংকা(২৫)।
হাসপাতালের চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৮ জন। এর মধ্যে আইসিইউতে রয়েছেন ৭ জন এবং এইচডিইউতে ৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৭ জন।
করোনা: খুলনায় আরও ৫২ মৃত্যু, শনাক্ত ১১৬৫
খুলনা বিভাগে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৫২ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ১৬৫ জন। এর আগে রবিবার বিভাগে ৫১ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে কুষ্টিয়া জেলায়। বাকিদের মধ্যে খুলনায় ১২, যশোরে ১১, মেহেরপুরে পাঁচ, ঝিনাইদহে তিন, বাগেরহাট, মাগুরা ও নড়াইলে দুই জন করে ও সাতক্ষীরায় একজন মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: বাগেরহাটে করোনা ও উপসর্গে ৩ মৃত্যু
সোমবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় এনিয়ে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৮২ হাজার ৫৮৬ জন। মারা গেছেন ১ হাজার ৯৪৭ জন এবং সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫৪ হাজার ৪০৫ জন।
এদিকে, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত খুলনার সরকারি-বেসরকারি চারটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে আরও ১৩ জন মারা গেছে। এর মধ্যে ১২ জন করোনায় মারা যান।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. সুহাস রঞ্জন হালদার জানান, হাসপাতালে ১৬৩ জন করোনা ও উপসর্গে ভর্তি রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ২৩ জন। আর ছাড়পত্র নিয়েছেন ৩১ জন। এ সময়ের মধ্যে মারা গেছেন সাত জন।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ জানান, সকাল সাড়ে ৮টা পর্যন্ত হাসপাতালে ৪৩ জন করোনা রোগী ভর্তি ছিলেন। আর গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন চার জন। আর ছাড়পত্র নিয়েছেন দুই জন। মারা গেছেন দুই জন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় ৩ মৃত্যু
খুলনা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিট মুখপাত্র ডা. কাজী আবু রাশেদ জানান, হাসপাতালে ৬২ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১২ জন। আর ছাড়পত্র নিয়েছেন ১৫ জন। মারা গেছেন একজন।
বেসরকারি গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের মুখপাত্র ডা. গাজী মিজানুর রহমান জানান, সকাল ৯টা পর্যন্ত ৮৯ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১৫ জন, সুস্থ হয়েছেন ১৭ জন। আর মারা গেছেন তিন জন।
খুলনায় সিআইডি ইন্সপেক্টরের করোনায় মৃত্যু
করোনা আক্রান্ত হয়ে খুলনা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ইন্সপেক্টর মো. শহিদুল ইসলাম শাহিন মারা গেছেন।
সোমবার ভোর ৪টার দিকে ঢাকার সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
মৃত মো. শহিদুল ইসলাম শাহিন (৫৭) পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের বাসিন্দা ও নাজিরপুর উপজেলা পরিষদের প্রথম উপজেলা চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুস সত্তারের ছেলে ও চার সন্তানের বাবা। তিনি খুলনা জেলা সিআইডি পুলিশের ইন্সপেক্টর হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আরও পড়ুন: করোনায় মারা গেলেন বিএনপি নেতা রুহুল আমিন চৌধুরী
তার মেঝো ভাই নাজিরপুর উপজেলার মাটিভাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহিদুল ইসলাম বিলু জানান, শাহিন গত ২২ জুন থেকে করোনা উপসর্গ নিয়ে অসুস্থ ছিলেন। পরে তার নমুনা পরীক্ষা করালে করোনা ধরা পড়ে। প্রথমে তাকে খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তার মৃত্যুতে পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ.ম. রেজাউল করিম গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনায় মারা গেলেন আ’ লীগের সংসদ সদস্য সামাদ
বাগেরহাটে করোনা ও উপসর্গে ৩ মৃত্যু
বাগেরহাটে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে করোনায় দুজন ও উপসর্গে একজনের মৃত্যু হয়।
বাগেরহাট সদর হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। তাদের বয়স ৬৫ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে।
সোমবার সকাল পর্যন্ত নতুনদের নিয়ে বাগেরহাটে করোনায় ১১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে করোনায় ২৪ ঘণ্টায় ৩ মৃত্যু
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৩১২ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। জেলায় এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৩৪৭ জন। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ৯৬৬ জন।
বাগেরহাটে প্রতিদিন শনাক্তের সংখ্যা উঠানামা করছে বলে তিনি জানান।
কুষ্টিয়ায় করোনা ও উপসর্গে আরও ১৪ মৃত্যু
করোনা ও উপসর্গ নিয়ে রবিবার সকাল ৮টা থেকে সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদের মধ্যে করোনায় ১১ জন ও করোনার উপসর্গ নিয়ে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় করোনা ও উপসর্গ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ছিল ২০ জন।
সোমবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পরিসংখ্যান কর্মকর্তা মো. মেজবাউল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: করোনা: কুমিল্লায় একদিনে আরও ১৩ মৃত্যু, শনাক্ত ৫৫৮
তিনি জানান, করোনা ও উপসর্গ নিয়ে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৫৩ জন রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এর মধ্যে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাই ১৮৩ জন। আর উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন আরও ৭০ জন।
কুষ্টিয়া পিসিআর ল্যাবে গত ২৪ ঘণ্টায় ৭২১টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে নতুন করে ২০৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ২৮ দশমিক ২৯ শতাংশ। এনিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ১২ হাজার ১৭১ জনে। এর মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭ হাজার ৮৪৭ জন। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৪০৯ জন।
আরও পড়ুন: রামেকে করোনায় আরও ১৭ মৃত্যু
নতুন শনাক্ত হওয়া ২০৪ জনের মধ্যে সদর উপজেলার ৭৭ জন, দৌলতপুরের ৩১, কুমারখালীর ২০, ভেড়ামারার ২৫, মিরপুরের ৩৮ ও খোকসা উপজেলার ১৩ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত জেলায় ৭৯ হাজার ৪৯৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে। নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়া গেছে ৭৪ হাজার ৯৮৫ জনের। বাকিরা নমুনা পরীক্ষার প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছেন। বর্তমানে কুষ্টিয়ায় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩ হাজার ৯১৫ জন। এদের মধ্যে হাসপাতালে আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ২৫৬ জন। হোম আইসোলেশনে রয়েছেন ৩ হাজার ৬৫৯ জন।