রাজশাহী
চাঁপাইনবাবগঞ্জে হত্যা মামলায় দুজনের যাবজ্জীবন
চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্কুলছাত্র তাজেমুল হককে (১৫) হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ রবিউল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা আসামিরা হলেন- জেলার নাচোল উপজেলার শ্রীরামপুর এলাকা আব্দুল খালেকের ছেলে রুবেল হোসেন আবীর ও নিয়ামুল হকের ছেলে হযরত আলী। এর মধ্যে হযরত আলী পলাতক।
অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) রবিউল ইসলাম জানান, পড়াশোনার পাশাপাশি অটোরিকশা চালাতেন তাজেমুল হক। ২০২০ সালের ১৯ নভেম্বর আসামিরা ধান নিয়ে আসার কথা বলে তাজেমুল হকের অটোরিকশা ভাড়া নেয়। এরপর অটোরিকশা নিয়ে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের পুকুরপাড়া মোড় এলাকায় একটি নির্মাণাধীন বাড়িতে নিয়ে যায় তাজেমুলকে। সেখানে তার গলায় গামছা ও রশি পেঁচিয়ে এবং ইট দিয়ে মুখ থেতলে হত্যা করে তাকে। পরে ওই ভবনেই বালুচাপা দিয়ে লাশ গুম করে।
এ ঘটনায় তাজেমুলের নানা আব্দুল ওহাব বাদী হয়ে নাচোল থানায় মামলা করেন। ২০২১ সালের ৩১ মে নাচোল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম রসুল আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
নওগাঁয় সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী আটক
নওগাঁর সাপাহার উপজেলার একটি কেন্দ্রে থেকে চলমান এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।
আটক পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র জমা নিয়ে ভুয়া পরীক্ষার্থী হিসেবে অংশ নেওয়ার অভিযোগ এনে বহিষ্কার করা হয়।
আজ মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বেলা সড়ে ১১টার দিকে সাপাহার উপজেলা সদরের সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থীকে আটক করে উপজেলা প্রশাসন।
অভিযানের নেতৃত্ব দেন সাপাহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ হোসেন। ওই কেন্দ্রে ১০টি প্রতিষ্ঠানের মোট ৭৭৭ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষার্থী ছিল।
জানতে চাইলে ইউএনও মাসুদ হোসেন বলেন, আজ সকাল ১০টা থেকে দাখিল পরীক্ষার আরবি প্রথম পত্রের পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষা শুরুর দিকে কিছু গোপন সূত্রে আমাদের কাছে খবর আসে সরফতুল্লাহ ফাজিল মাদরাসা কেন্দ্রে ভুয়া পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: ছাত্রীদের উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় এসএসসি পরীক্ষার্থীকে হত্যা
খবর পেয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও কেন্দ্র সচিবকে সঙ্গে নিয়ে ওই কেন্দ্রে গিয়ে যাচাই-বাছাই করে দুপুর সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত ৫৯ জন ভুয়া পরীক্ষার্থী পাওয়া গেছে।
তিনি আরও বলেন, ওই কেন্দ্রের সব পরীক্ষার্থীর প্রত্যেকের প্রবেশপত্রসহ অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। ছবিসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র যাচাই শেষে প্রকৃত ভুয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা জানা যাবে।
ইউএনও বলেন, এই অনিয়মের সঙ্গে কেন্দ্র সচিব, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকেরা জড়িত থাকার প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে।
আরও পড়ুন: এইচএসসি ও সমমানের ১০৫০০ পরীক্ষার্থী বৃত্তি পাবে: মাউশি
বগুড়ায় কোটি টাকার তক্ষকসহ আটক ১
বগুড়ার গাবতলীতে বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী তক্ষকসহ লেবু মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে থানা পুলিশ।
রবিবার দিবাগত রাতে উপজেলার পূর্বপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছে থাকা তক্ষকটি জব্দ করে পুলিশ।
লেবু গাবতলী উপজেলার পূর্বপাড়া এলাকার মৃত শামসুল ফকিরের ছেলে।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বাবাকে খুনের অভিযোগে ছেলে আটক
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) গাবতলী মডেল থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গাবতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিয়াজ মেহেদী।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে তক্ষকসহ লেবু মিয়াকে আটক করে। এ সময় চক্রের অন্য সদস্যরা পালিয়ে যায়। তক্ষকটির দৈর্ঘ্য ১১ ইঞ্চি এবং ওজন প্রায় ২০০ গ্রাম, যার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।
তিনি আরও জানান, লেবু মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- সে চোরাচালান চক্রের হোতা। তার সঙ্গে আরও সদস্য রয়েছে। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে তক্ষকটি বন বিভাগের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে বাস-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ৭: শেরপুর থেকে বাসচালক ও হেলপার আটক
বগুড়ায় পিকনিকের বাস থেকে কিশোর গ্যাংয়ের ৯ সদস্য আটক
দই বিক্রেতা থেকে ‘আশার আলো’
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলার দই বিক্রেতা জিয়াউল হক (৯১) নিজে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হলেও শত শত মানুষের শিক্ষার আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন।
চামামুসরিভুজা গ্রামে বসবাসকারী জিয়াউল সমাজের কল্যাণে তার জীবন উৎসর্গ করেছেন। শিক্ষা ও বিভিন্ন কমিউনিটি সেবার মাধ্যমে তার চারপাশের মানুষের জীবনে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছেন।
অন্যের জীবনমান উন্নয়নে আজীবন অঙ্গীকারের স্বীকৃতিস্বরূপ জিয়াউল হক এ বছর সমাজসেবা ক্যাটাগরিতে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ‘একুশে পদক’ পেয়েছেন।
জিয়াউল তার সম্প্রদায়ের একটি পরিচিত মুখ। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে দই বিক্রি করছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভ্যানচালক বাবা ও চা বিক্রেতা মায়ের মেয়ে ফুটবল প্রশিক্ষণে যাচ্ছে পর্তুগাল
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশিত একুশে পদকপ্রাপ্তদের তালিকায় জিয়াউল নাম দেখা যায়। এর আগে ২০০৬ সালের 'সাদা মনের মানুষ' পুরস্কারসহ বিভিন্ন ধরনের সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
খবর পেয়ে উচ্ছ্বসিত জিয়াউল এই স্বীকৃতিকে তার সামাজিক কর্মকাণ্ড অব্যাহত রাখার প্রেরণা হিসেবে দেখছেন। দারিদ্র্যের কারণে পঞ্চম শ্রেণির পরে তার প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা থেমে যায়। জিয়াউল তার অপ্রাপ্তিকে অন্যদের লেখাপড়া করার আশা পূরণের মিশনে পরিণত করেন।
তিনি আর্থিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের সহায়তা করেন। তার দই বিক্রির টাকা থেকে বই এবং অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ সরবরাহ করেন।
১৯৬৯ সালে, জিয়াউল তার বাড়িতে একটি গ্রন্থাগার প্রতিষ্ঠা করেন। সেখানে এখন উপন্যাস থেকে শুরু করে শিক্ষামূলক বিভিন্ন বইসহ প্রায় ১৪ হাজার বই রয়েছে। যা তিনি স্থানীয় শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে সরবরাহ করেন।
শিক্ষার বাইরেও তিনি গৃহহীনদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করেছেন। বিশুদ্ধ খাবার পানির জন্য কূপ খনন করেছেন এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের শীতবস্ত্র ও কোরআন দান করেছেন।
জিয়াউল নিজে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করতে না পারলেও স্থানীয় শিশুদের শিক্ষা লাভের সুযোগ দিতে পারায় আন্তরিক তৃপ্তি পান। তার প্রচেষ্টায় শিশু স্কুলে ভর্তি হয়েছে। এসব কাজ করতে পেরে তিনি গর্বিত।
জেলাবাসীর সঙ্গে জিয়াউলের পরিবার এই পদকপ্রাপ্তির স্বীকৃতি উদযাপন করছে। ভোলাহাটের স্থানীয় সাংবাদিক রুবেল আহমেদ এবং আরও অনেকে জিয়াউলের চেতনা এবং সততার প্রশংসা করেছেন।
যুবা ও শিক্ষাবিদদের উপর তার গ্রন্থাগার এবং জনহিতকর কাজের গভীর প্রভাবের কথা স্বীকার করেছেন তারা। জিয়াউল হকের কর্মকাণ্ড অনুসরণীয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় রুটি বিক্রেতা রিক্তা এখন ইউপি সদস্য
সিরাজগঞ্জে পানির ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে যুবক নিহত
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় পানির ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে ৩ তলার ছাদ থেকে পড়ে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে।
নিহত কামাল পাশা (৩২) সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পেঁচিবাড়ি গ্রামের মজনু শেখের ছেলে।
এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের নার্সিং সুপারভাইজার ডলি আক্তার তার স্বামী কামাল পাশাকে নিয়ে এনায়েতপুর থানা সদরে একটি ভবনে ভাড়া থাকতেন। শনিবার সকালে ডলি আক্তার হাসপাতালে ডিউটিতে চলে গেলে বাসায় স্বামী কামাল পাশা বাসায় একাই ছিলেন। বিকালে বাসার ছাদের পানির ট্যাংক পরিষ্কার করতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ৩ তলা থেকে পড়ে যায় কামাল পাশা।
তিনি আরও বলেন, স্থানীয়রা উদ্ধার করে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করলেও কোনো অভিযোগ না থাকায় পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু
সিরাজগঞ্জে চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে পড়ে কিশোর নিহত
রাজশাহীতে জ্বর হয়ে ৪ দিনে দুই বোনের মৃত্যু, মা-বাবা আইসোলেশনে
রাজশাহীতে জ্বর হয়ে ৪ দিনের ব্যবধানে ২ বোনের মৃত্যু হয়েছে।
তাদের মধ্যে বড় মেয়ে শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মারা যায় এবং ৪ দিন আগে বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ছোট মেয়েকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
শিশু ২ জনের নাম মুনতাহা মারিশা (১ বছর ১১ মাস) ও মুফতাউল মাশিয়া (৪ বছর ৯ মাস)।
তাদের বাবা মনজুর রহমান রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের গণিত বিভাগের প্রভাষক। তার স্ত্রী পলি খাতুন গৃহিণী। তাদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার চুনিয়াপাড়া গ্রামে। তবে তারা রাজশাহীর চারঘাটের সারদায় ক্যাডেট কলেজের কোয়ার্টারেই থাকতেন।
ভাইরাসজনিত কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণ করছেন চিকিৎসকরা। তবে কোন ভাইরাসে তারা আক্রান্ত হয়েছিল তা নিশ্চিত হতে পারেননি। এমন অবস্থায় দুই শিশুর মা ও বাবাকে কোথাও যেতে না করে দিয়ে হাসপাতালেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কালাজ্বর নির্মূলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে ডব্লিউএইচও: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বিভাগের চিকিৎসক আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, ‘ধারণা করা হচ্ছে- বাচ্চা দুটো নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল। যদিও তাদের বাবা-মা জানিয়েছেন, তারা খেজুরের রস খায়নি। তবে কুড়িয়ে পাওয়া বরই না ধুয়ে খেয়েছিল। এটা নিপাহ ভাইরাস হতে পারে, আবার অন্য কোনো ভাইরাসও হতে পারে। হাসপাতালে মারা যাওয়া মারিশা এবং তার বাবা-মায়ের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।’
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, শনিবার বিকাল ৫টার দিকে আইসিইউতে মারা যায় বড় মেয়ে মাশিয়া। এরপর শিশুদের বাবা-মাকে আর হাসপাতাল থেকে যেতে দেননি চিকিৎসকরা। তাদের রামেক হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে শিশুদের মা পলি খাতুন বলেন, ‘১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে গৃহকর্মী কলেজ ক্যাম্পাসের গাছ থেকে বরই কুড়িয়ে এনে দুই মেয়েকে খেতে দেয়। না ধুয়েই তারা খেয়েছিল। সে দিন তারা ভালোই ছিল, খেলাধুলা করেছে।’
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ, নির্ণয়ের প্রক্রিয়া, চিকিৎসা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা
তিনি আরও বলেন, পরদিন বুধবার বেলা ১১টার দিকে ছোট মেয়ে মারিশার জ্বর আসে। বার বার পানি খাচ্ছিল। দুপুরের পর শুরু হয় বমি। তখন মেয়েকে নিয়ে তারা একটি মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীর সম্মিলিত সামরিক হাসাপাতালে (সিএমএইচ) যাচ্ছিলেন। সিএমএইচে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, সে আর নেই।
পলি খাতুন বলেন, ‘শুক্রবার সকালে দুর্গাপুরের বাড়িতে মাশিয়ারও জ্বর আসে। শুরু হয় বমি। দ্রুতই তাকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে রাজশাহীতে সিএমএইচে আনা হয়। রাতে মাশিয়ারও পুরো শরীরে ছোট কালো দাগ উঠতে শুরু করে। তা দেখে সিএমএইচের চিকিৎসকেরা মাশিয়াকে রামেক হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। রাত ৯টায় তাকে রামেক হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসকেরা তাকে দ্রুতই আইসিইউতে ভর্তি নেন। বিকালে মাশিয়াও মারা যায়।’
ছোট মেয়ে মাশিয়ার শরীরেও ছোপ ছোপ কাল দাগ উঠছিল জানিয়ে পলি খাতুন বলেন, ‘মারিশার একই রকম কাল দাগ উঠতে শুরু করে মৃত্যুর আগের রাতে। এ রকম দাগ আমি আগে কখনও দেখিনি। গরম তেল শরীরে পড়লে যে ধরনের দাগ হয়, তা অনেকটা সে রকমের। অসুস্থ হওয়ার পরে দুই বোনই বার বার পানি খাচ্ছিল।’
রামেক হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা কামাল বলেন, ‘এ বছর এ পর্যন্ত রাজশাহীতে কেউ নিপাহ ভাইরাসে মারা গিয়েছেন এ রকম প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তবে এটা সঠিক যে বাচ্চা দুটো কোনো একটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েই মারা গেছে। অসুস্থ হওয়ার আগে এটা বোঝা যায়নি।’
তিনি আরও বলেন, অসুস্থ হওয়ার পর চিকিৎসার জন্য খুব বেশি সময়ও পাওয়া যায়নি। তাই বাচ্চা দুটোর বাবা-মাকে বাসায় যেতে দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা টেস্ট থেকে বাদ সাইফ হাসান
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যুবক আহত
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে মহানন্দা নদীতে মাছ ধরার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফএর গুলিতে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হয়েছে।
শনিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে জেলার ভোলাহাট উপজেলার পোল্লাডাঙ্গা সীমান্তে মহানন্দা নদীতে মাছ ধরার সময় এই ঘটনা ঘটে।
আহত জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার গোহালবাড়ি ইউনিয়নের কলোনিপাড়া গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস আলমের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে পোল্লাডাঙ্গা সীমান্তে মহানন্দা নদীতে নৌকা নিয়ে মাছ ধরছিল জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় বিএসএফ তাকে লক্ষ্য করে গুলি করলে তার ডান হাতে গুলি লাগে। তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ভোলাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. দেলোয়ার হোসেন জানান, জাহাঙ্গীরকে ডান হাতের কুনইয়ে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রামেক হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বাসের ধাক্কায় ৬ পুলিশ সদস্য আহত: চালক-হেলপার-সুপারভাইজার গ্রেপ্তার
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৫৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া জানান, উপজেলার পোল্লাডাঙ্গা সীমান্তে ২০১ নম্বর সীমান্ত এলাকায় আজ ভোর সাড়ে ৪টার মহানন্দা নদীতে মাছ ধরার এক পর্যায়ে জাহাঙ্গীর ভারতীয় সীমানায় চলে গেলে ভারতের মনষামাথা বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এতে সে আহত হয়।
তিনি আরও জানান, এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে কড়া প্রতিবাদলিপি দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: আবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, ২ পুলিশ আহত
বগুড়ায় ২ ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩
বগুড়ার বীরগ্রাম এলাকায় দুইটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই চালক ও এক সহকারী নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের বীরগ্রাম নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- নাটোর সদরের আল আমিন ওরফে মানিক, কুড়িগ্রাম সদরের কুদ্দুস মিয়া এবং কুড়িগ্রামের উলিপুরের নুর ইসলাম।
আরও পড়ুন: জামালপুরে ট্রাক-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩
এদের মধ্যে- মানিক ও কুদ্দুস ট্রাকচালক এবং নুর ইসলাম ট্রাকের সহকারী।
বগুড়া শাজাহানপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বালুবাহী একটি ট্রাক নাটোরের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় বীরগ্রামে পৌঁছালে নাটোরের দিক থেকে আসা কুড়িগ্রামগামী একটি কয়লাবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই ট্রাকের চালক ও এক হেলপার নিহত হন।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে হাইওয়ে ও থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। ট্রাক দুইটি জব্দ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পাবনায় বাস-মাইক্রোবাস মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২
নাটোরে ২ ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক ও হেলপার নিহত
বগুড়ায় পিকনিকের বাস থেকে কিশোর গ্যাংয়ের ৯ সদস্য আটক
বগুড়ার গাবতলীতে পিকনিক বাসে তল্লাশি চালিয়ে বার্মিজ চাকু জব্দসহ কিশোর গ্যাংয়ের ৯ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার পীরগাছা বন্দর থেকে তাদের আটক করে পুলিশ।
কিশোর গ্যাংয়ের ৯ সদস্যের মধ্যে সাতজনই কিশোর। তদের বয়স ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে হওয়ায় তাদের নামপরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: পাটগ্রামে বিজিবির হাতে ভারতীয় নাগরিক আটক
আটকদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক দুইজন হলেন- গাবতলী উপজেলার জমিরবাড়ীয়া গ্রামের শিহাব উদ্দিন ও লাজু সাব্বির।
শুক্রবার বিকালে তাদের বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মির্জা সাহেলার আদালতে তোলা হয়। বিচারক প্রাপ্তবয়স্ক দুইজনকে জেলা কারাগারে ও কিশোর সাতজনকে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, গাবতলী উপজেলার আটাপাড়া বাজারে থেকে স্থানীয়রা বৃহস্পতিবার দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে পিকনিকে যায়। সেখানে কয়েকজন কিশোরের কাছে বার্মিজ চাকু ছিল।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ বাসটি ফেরার পথে পীরগাছা বন্দরে থামিয়ে তল্লাশি করে। ৯ জনের কাছ থেকে ছয়টি ধারালো বার্মিজ চাকু জব্দ করা হয়। এলাকায় অপরাধ সংগঠনের জন্য তারা দিনাজপুর থেকে বার্মিজ চাকু ক্রয় করেছিল।
আরও পড়ুন: শেরপুরে বাবাকে খুনের অভিযোগে ছেলে আটক
জয়পুরহাটে ১০টি স্বর্ণের বার জব্দ, আটক ৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মাঠে মাঠে বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষকরা
চাঁপাইনবাবগঞ্জে মাঠে মাঠে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বোরো চাষিরা। কেউ জমিতে বোরোর চারা রোপণ করছেন, কেউ চাষ দিয়ে জমি প্রস্তুত করছেন। কেউ বা জমির আইল ঠিক করতে ব্যস্ত রয়েছেন। বিভিন্ন এলাকার ফসলের মাঠে মাঠে এমনই দৃশ্য চোখে পড়বে এখন।
সদর উপজেলার বিলবৈঠা মাঠ এলাকায় ইউএনবির এই প্রতিবেদকের কথা হয় কৃষক কওসার আলীর সঙ্গে। তিনি এবার ৮ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছেন।
কওসার বলেন, ‘শীতের জন্য লেবার আসছে দেরিতে। কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তাছাড়া গতবারের থেকে এবার সবকিছুর খরচ বেড়েছে। কিন্তু ধানের দাম বাড়েনি।’
একই মাঠে কৃষক ময়েজ উদ্দিন বলেন, ‘হালের দাম বেশি, প্যাঠের দাম বেশি, বিড়ির দাম বেশি। গত বছর হালের প্যাঠ ছিল ৩০০ টাকা, এবার হয়েছে ৩৫০ টাকা। তার উপর খাবার ও বিড়ি দিতে হচ্ছে। সময়ে সময়ে চা খাওয়াতে হচ্ছে। কৃষক মানুষ, কী করব! চাষাবাদ করেই চলতে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ইউটিউব দেখে চিয়া সিড চাষে উদ্বুদ্ধ, লাভের প্রত্যাশা
কৃষি শ্রমিক মদন (৫৫) জানালেন, ‘শীতকালের সকালে আমাদেরকে কষ্ট করতে হয়। বিছন তুলে আমরা জমিতে চারা লাগাই। আমাদের দেয় ৫০০ টাকা। কাজ করি পেটের দায়ে। কিছু করার নাই।’
১৮ বছর বয়সী আদিবাসী নারী কৃষি শ্রমিক সুসমিতা হাসদা বলেন, সকাল বেলা অনেক ঠান্ডা লাগে। তাও আমরা ধান লাগাতে আসি। ধান লাগিয়ে যে ৪শ’ টাকা পাই তা দিয়েই আমাদের সংসার চলে।
কৃষি বিভাগ থেকে জানা গেছে, এ বছর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৫২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বেরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৩ হাজার ২২০ হেক্টর, গোমস্তাপুর উপজেলায় ১৫ হাজার ৭২০ হেক্টর, ভোলাহাট উপজেলায় ৬ হাজার ২৫০ হেক্টর, নাচোল উপজেলায় ৯ হাজর ৬৮০ হেক্টর ও শিবগঞ্জ উপজেলায় ৭ হাজার ৩৩০ হেক্টর।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় রঙিন ফুলকপি চাষে সফলতা
এর থেকে সম্ভাব্য উৎপাদন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৮০ মেট্রিক টন চাল। বর্তমানে বোরো ধানের আবাদ কার্যক্রম চলছে। ফেব্রুয়ারি মাস জুড়ে চলবে এ আবাদ কার্যক্রম।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, চাষিরা উফশী ও হাইব্রিড জাতের বোরো আবাদ করছেন। সার, বীজের কোনো সংকাট নেই। সেই সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক থাকায় সেচেরও কোনো সংকট নেই।
কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বোরো চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত জেলায় বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: ঠাকুরগাঁওয়ে সরিষার আবাদ বেশি হওয়ায় মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌয়ালরা