সিলেট
সিলেটে পানি নামায় বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দৃশ্যমান
সিলেটের উঁচু এলাকাগুলো থেকে ধীরে ধীরে পানি নেমে যাচ্ছে। তবে ৮০ ভাগেরও বেশি এলাকা এখনো পানিতে টইটুম্বুর। এদিকে উঁচু এলাকাগুলো থেকে পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে দৃশ্যমান হচ্ছে ধ্বংসস্তুপের চিত্র।
রবিবার সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়া সিলেটে ক্ষয়-ক্ষতির যেন কোনো শেষ নেই। ঘরবাড়ি, ফসল, প্রাণিসম্পদ সবক্ষেত্রেই হয়েছে ব্যাপক ক্ষতি। এবারের বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন সোয়া চার লাখ পরিবারের প্রায় ২২ লাখ মানুষ।
জেলা প্রশাসনের সহকারি কমিশনার আহসানুল আলম জানান, বন্যায় সিলেট সিটি করপোরেশনের আংশিক এলাকা, জেলার ১৩টি উপজেলা ও পাঁচটি পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৯৯টি ইউনিয়নের চার লাখ ১৬ হাজার ৮১৯টি পরিবারের ২১ লাখ ৮৭ হাজার ২৩২ জন সদস্য বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।তিনি জানান, ২২ হাজার ৪৫০টি ঘরবাড়ি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২৮ হাজার ৯৪৫ হেক্টর জমির ফসল পড়েছে ক্ষতির মুখে।বন্যাকবলিত এলাকার জন্য এখন অবধি দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় থেকে এক হাজার ৪১২ মেট্রিক টন চাল, ১৩ হাজার ২১৮ প্যাকেট শুকনো খাবার এবং নগদ এক কোটি ৪২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন থেকে জানা গেছে।তবে জেলা প্রশাসনের এ হিসেবের চেয়ে প্রকৃত ক্ষতি আরও কয়েক গুণ বেশী বলে জানাচ্ছে স্থানীয় সূত্রগুলো। এছাড়া সড়ক বিভাগ ও এলজিইডি সূত্র বলছে, সিলেট জেলার সড়ক বিভাগের প্রায় ১২৫ কিলোমিটার সড়ক তলিয়ে গেছে।এদিকে, বন্যার ভয়াবহতায় সিলেটের স্বাস্থ্যখাতেও নজিরবিহীন ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
সিলেট শহীদ শামসুদ্দীন আহমেদ হাসপাতালের নিচতলা প্রায় তিনফুট পানিতে তলিয়ে যায়। ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জেনারেটর জলমগ্ন হওয়ায় হাসপাতালের বিকল্প বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। নিচতলায় পানি উঠে যাওয়ায় রোগীরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। পানি নামার পর দেখা যায়-হাসপাতালটির এম আর আই, সিটিস্ক্যান ও রেডিও থেরাপি মেশিনে পানি ঢুকে গেছে। ফলে বন্ধ রয়েছে এসব সেবা কার্যক্রম।
আরও পড়ুন: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, তবে রবিবার ১১টি জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি
এবারের বন্যায় শুধু ওসমানী হাসপাতালেই নয়, ক্ষতিগ্রস্ত করেছে বিভাগের অনেক সরকারি হাসপাতাল, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও কমিউনিটি ক্লিনিক। ফলে বিভাগজুড়ে স্বাস্থ্যসেবা বিঘ্নিত হচ্ছে।বন্যায় আক্রান্ত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের তথ্যাদি সংক্রান্ত প্রতিবেদনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর উল্লেখ করে- সিলেট বিভাগের মোট ৪০টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে ২৪টি বন্যাকবলিত হয়েছে। ৮৫ টি ইউনিয়ন সাব-সেন্টারের মধ্যে ৩১টিতে পানি ঢুকেছে। সুনামগঞ্জে ২০ শয্যার দুটি হাসপাতালে পানি প্রবেশ করে। এছাড়াও ৯শ ২৭ টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে ৪১৪টি ক্লিনিক পানিতে নিমিজ্জিত হয়।সিলেট স্বাস্থ্য বিভাগের প্রাথমিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, সকল উপদ্রুত স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। অনেক স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি, ইপিআই আইএলআর ফ্রিজ, প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি, এক্সরে মেশিন, এমএসআর সামগ্রী নষ্ট হয়ে গেছে। জলমগ্ন এসব যন্ত্রপাতি কতটা সচল কিংবা অচল তা পানি নেমে না যাওয়ায় যাচাই করা যাচ্ছে না। সার্বিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে আরও সময় লাগবে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে দশমিক শূন্য ৯ সেন্টিমিটার কমে ১৩ দশমিক ৫৮ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছে। একই সময়ে নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি দশমিক শূন্য ৭ সেন্টিমিটার কমে ১০ দশমকি ৮২ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছে। তবে এই সবই বিপদসীমার ওপরে।
ওদিকে, কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্ট, শেরপুর পয়েন্ট ও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে পানি অপরিবর্তিত রয়েছে ।
সিলেট পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, সিলেটে গত পাঁচদিন বৃষ্টি না হওয়ায় পানি কমতে শুরু করেছে। তবে ধীরগতিতে পানি নামছে। আর বৃষ্টি না হলে আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে পানি আরও কমে যাবে বলে আশা করছেন তিনি।
তবে আগামী মাসের শেষ দিকে আবার বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটে ৭০ বৎসর বয়সের বৃদ্ধের আত্মহত্যা
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নে শুক্রবার সত্তর বৎসর বয়সের এক বৃদ্ধ গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
নিহত আব্দুল খালেক উপজেলার চকরাম প্রসাদ গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদের ছেলে।
আরও পড়ুন: চাকরি না পেয়ে হতাশায় যুবকের ‘আত্মহত্যা’, গ্রেপ্তার ১
নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, কয়েকদিন ধরে খালেককে মানসিক ভারসাম্যহীন দেখাচ্ছিল। শুক্রবার রাতে বাড়ির কাছাকাছি তার ভাইপোর ঘরের তীরের সঙ্গে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয় তারা।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: পাবনায় কীটনাশক পান করে ২ কিশোরীর ‘আত্মহত্যা’
ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানান বিশ্বনাথ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জয়ন্ত সরকার।
বন্যার পানিতে ডুবে সিলেটে কিশোরের মৃত্যু
সিলেটে বন্যার পানিতে ডুবে ১৫ বছরের এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় এয়ারপোর্ট থানার বাইশটিলা এলাকা থেকে ওই কিশোরের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
মৃত মোবারক একই থানার বাদামবাগিচা এলাকার ১নং গলির বাসিন্দা।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে বন্যার পানিতে ডুবে ব্যক্তির মৃত্যু
সিলেট মহানগর পুলিশের (এসএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্যাহ তাহের ও এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির জানান, বাইশটিলায় প্রতিদিন বিকালে অনেকেই আড্ডা দিতে ভিড় করে। শুক্রবার বিকালে মোবারক ওই জায়গায় বেড়াতে গেলে বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: শিশু কন্যাকে বাঁচাতে গিয়ে পানিতে ডুবে মায়ের মৃত্যু
খবর পেয়ে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাইশটিলা এলাকার আলিফ সিটির পাশের ব্রিজের নিচ থেকে মোবারকের লাশ উদ্ধার করে।
সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
গত ৪৮ ঘণ্টায় কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিলেটের কিছু অংশে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, শুক্রবার সকালে কুশিয়ারা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
কুশিয়ারার পানি বাড়ায় জকিগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, ওসমানীনগর, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, মৌলভীবাজারের বড়লেখা, কুলাউড়া, রাজনগর, জুড়ি, সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরসহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে সিলেট নগরীসহ জেলার অনেক এলাকায় বন্যার পানি নেমে গেছে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর পানি কমলেও কুশিয়ারা সংলগ্ন এলাকাগুলোতে বাড়ছে পানি।
ভারত থেকে প্রবাহিত নদ-নদীর প্রবাহ ও মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জি ও সিলেটে অতি ভারী বৃষ্টির কারণে এ অঞ্চলে বন্যার ভয়াল রূপ। বন্যায় ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দী ছিলেন।
গত চারদিন ধরে ধীরে পানি কমতে শুরু করেছে। সুরমা নদীর পানি কমলেও এখনও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
অন্যদিকে, গত তিন দিন বৃষ্টি না হলেও কুশিয়ারা অববাহিকতায় পানি বাড়ছে।
সুরমা নদীর পানি কমতে থাকায় সিলেট-সুনামগঞ্জ ও সিলেট-ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক থেকে পানি নেমেছে। শুরু হয়েছে যান চলাচল। কিন্তু, সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে যান চলাচল। কিছু উপজেলার সড়কেও পানি কমেছে।
পড়ুন: পদ্মায় প্রবল স্রোত: পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোয় বিশুদ্ধ খাবার পানি, শুকনো খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া সরকারিভাবে বরাদ্দ পাওয়া ত্রাণসামগ্রী বিভিন্ন ওয়ার্ডে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
এদিকে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বন্যার পানির স্রোতে ভেসে গেছেন সানু মিয়া (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ। শুক্রবার (২৪ জুন) সকাল ১০টা পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, বিষয়টি শুনেছি। পুলিশ উদ্ধার অভিযানে কাজ করছে।
সিলেট জুড়ে বন্যার্তদের এক হাজারের বেশি আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত সিলেট বিভাগে ৪৮ জনের প্রাণহানির হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
পড়ুন: কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি, ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ট্রাকচাপায় মা-ছেলে নিহত
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে ট্রাকচাপায় অটোরিকশা আরোহী মা ও ছেলে নিহত এবং চালকসহ আরও তিন জন আহত হয়েছেন। শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার তেলিখাল এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- উপজেলার ইসলামপুরের হনুফা বেগম ও তার ছেলে এমরাজ মিয়া।
আরও পড়ুন: নওগাঁয় ট্রাক-সিএনজি মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৫
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী জানান, সকালে সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা সিলেট থেকে কোম্পানীগঞ্জে যাচ্ছিল। পথে তেলিখাল এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক অটোরিকশাকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মা ও ছেলে নিহত হন। এই ঘটনায় চালকসহ তিন অটোরিকশা আরেহী আহত হন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ৩
ওসি জানান, আহতদেরকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া ঘাতক ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। তবে ট্রাকের চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছেন।
সিলেটে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান বাতিল
সার্বিক বন্যা পরিস্থিতিতে পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে সিলেট অঞ্চলে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আতশবাজি বাদ দিয়ে শুধু আলোচনা অনুষ্ঠান হবে। এছাড়া মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বড় পর্দায় দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে।
বৃহস্পতিবার (২৩ জুন) বিকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
জেলা প্রশাসক মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে প্রস্তুতি সভায় বক্তব্য দেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, জেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি আল আজাদ প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আগামীকাল ২৫ জুন দেশের ৬৪ জেলায় একযোগে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উদযাপিত হবে।
পড়ুন: পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান বিএনপির
পদ্মা সেতু আমাদের জাতীয় গর্ব: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
শাবিপ্রবির প্রক্টরিয়াল টিমে নতুন তিন সদস্য
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) প্রক্টরিয়াল টিমে নতুন তিন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ দেয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-রেজিস্ট্রার ইউনুস আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
অফিস আদেশে বলা হয়, সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. সাজ্জাদুর রহমান, মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক এ কে এম আশিকুজ্জামান, ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টি টেকনোলজি বিভাগের প্রভাষক জাহিদ হাসান সৌরভকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত সহকারী প্রক্টর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। দায়িত্ব পালনের জন্য তাঁহারা বিধি মোতাবেক দায়িত্বভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধা প্রাপ্য হবেন। যোগদানের তারিখ থেকে এই আদেশ কার্যকর হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ইসরাত ইবনে ইসমাইল বলেন, এটি একটি রুটিন ওয়ার্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও সার্বিক নিরাপত্তার দিক বিবেচনা করে নতুন তিন সদস্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: বন্যায় আটকে পড়া শাবিপ্রবি ছাত্রীদের উদ্ধারে বিজিবি
আকস্মিক বিপর্যয় সামলে উঠেছে শাবিপ্রবি
কুশিয়ারার আগ্রাসী রূপ: পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিহত ১
সিলেটের বিয়ানীবাজারে বন্যার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর শেওলা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই সঙ্গে কুশিয়ারা নদীর ডাইক উপচে এবং কয়েকটি স্থানে ভাঙা ডাইক দিয়ে হুহু করে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে।
নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় দুবাগ, শেওলা, কুড়ারবাজার, মাথিউরা, তিলপাড়া ও মোল্লাপুর, ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে এসব ইউনিয়নের নতুন করে ৯০ গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের বৈরাগী খশির এলাকার বসতঘর থেকে পানিতে ভাসমান অবস্থায় একজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বাহার উদ্দিন (৪০) নামের ওই আব্দুল্লাহপুর নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। নিহত ব্যক্তি ওই পরিবারের গৃহকর্তা বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: বন্যা: ৬ দিন পর সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে ফ্লাইট উঠা-নামা শুরু
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত এক সপ্তাহ থেকে বাহার উদ্দিনের ঘরে পানি উঠে। পরে তিনি পরিবারের সদস্যদের নিয়ে স্থানীয় বৈরাগীবাজার সিনিয়র মাদরাসা আশ্রয় কেন্দ্রে ওঠেন। বুধবার বিকালে তিনি তার ডুবে যাওয়া ঘর দেখতে যান। এরপর পরিবারের সদস্যদের মোবাইল ফোনের মাধ্যমে জানান- তিনি বাড়িতে রাত্রিযাপন করবেন। বৃহস্পতিবার সকালে তার খোঁজ না পেয়ে পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে এসে দেখেন, ঘরে পানির মধ্যে তার লাশ ভাসছে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বাহারের লাশ উদ্ধার করে বৈরাগীবাজার সিনিয়র মাদরাসা আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়।
অপরদিকে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার নব্বইভাগের বেশি মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানববেতর জীবন যাপন করছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত উপজেলার ৯৮৭টি পরিবারের প্রায় ছয় হাজার আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় কুশিয়ারা নদীর পানি বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের প্রস্তুত করা ৫৩টি অস্থায়ী আশ্রয় ১০টি ইউনিয়ন ও একটি আশ্রয় কেন্দ্রে ৯৮৭ পরিবারের পাঁচ হাজার ৯২২ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এসব পরিবারের ৬২০টি গবাদিপশুও আশ্রয় কেন্দ্রের বাইরে রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস, তবে বৃহস্পতিবার সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে
বিয়ানীবাজার পৌরশহর ছাড়া উপজেলার অন্যান্য হাটবাজারে বন্যার পানি ওঠেছে। রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় সাধারণ মানুষকে জরুরি প্রয়োজনে নৌকা ব্যবহার করতে দেখা গেছে। বৈরাগীবাজার ও কাকরদিয়া এলাকায় প্রধান সড়ক দিয়ে নৌকা চলাচল করতে দেখা গেছে।
সোনাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিয়ানীবাজার উপজেলার লাউতা, মুড়িয়া ও তিলপাড়া ইউনিয়নের বহুগ্রাম প্লাবিত হয়েছে। সোনাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জলঢুপ-লাতু সড়কের সিংহভাগ তলিয়ে গেছে। একই সঙ্গে টিলাবেষ্টিত নাওয়ালা, দক্ষিণ পাহাড়িবহরসহ আশপাশ এলাকা ডুবে গেছে।
আরও পড়ুন: কুশিয়ারায় পানি বাড়ায় সিলেটের ৬ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
কুশিয়ারায় পানি বাড়ায় সিলেটের ৬ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
গত চার দিন বৃষ্টি কম হওয়ায় সিলেটের সুরমা, ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। একই সঙ্গে তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতির দিকে। তবে ভারতের আসামের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টিপাত হওয়ায় কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার থেকে সিলেটের কুশিয়ারা তীরবর্তী ছয় উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এতে কয়েক লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুশিয়ারা নদীর ডাইকের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ও ডাইক উপচে পানি ঢুকে জেলার জকিগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর ও গোলাপগঞ্জ মোট ছয়টি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। তবে পানিবন্দি মানুষকে উদ্ধারে এখনও সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড, পুলিশ ও বিজিবি কাজ করে যাচ্ছে।
জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীতে গত রবিবার থেকে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়া শুরু হয়েছে। ফলে রবিবার থেকে বুধবার পর্যন্ত কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এক মাস আগে বন্যার সময় যেসব স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছিল, তার পাশাপাশি নতুন নতুন স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ডাইকের ওপর দিয়ে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করা শুরু করেছে। ফলে কুশিয়ারা তীরবর্তী উপজেলাগুলোতে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এসব উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটেছে। কুশিয়ারা তীরবর্তী জকিগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জকিগঞ্জ উপজেলার ৪০টি স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ করছিল। এর মধ্যে সুলতানপুর ইউনিয়নের ভক্তিপুর, সদর ইউনিয়নের রারাই, বীরশ্রীর সুপ্রাকান্দি, কাজলসারের বড়বন্দ এলাকায় সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্তমানে উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হওয়ার পাশাপাশি পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন করে আরও ভাঙনের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যায় মারা গেছে ৩ হাজারের বেশি গবাদিপশু
ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলায় কুশিয়ারা নদী ও তীরবর্তী এলাকা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। বানের পানিতে উপজেলা সদরসহ ৬০ শতাংশ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বালাগঞ্জ উপজেলার অবস্থাও একই। কুশিয়ারা নদীর ডাইক ভেঙে এবং ওপর দিয়ে পানি প্রবেশ করে বাড়িঘর, হাটবাজার ও রাস্তাঘাট প্লাবিত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে বালাগঞ্জ-খছরুপুর ও ফেঞ্চুগঞ্জ-বালাগঞ্জ সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
তাছাড়া বন্যার কারণে জেলা সদরের সঙ্গে এখনও বিয়ানীবাজার উপজেলার সড়ক যোগাযোগ ঠিক থাকলেও যে কোনো সময় তা বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বুধবার সারাদিন বিয়ানীবাজার উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকায় পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার চারখাই, আলীনগর, মুড়িয়া, শেওলা, দুবাগ, কুড়ারবাজার ও থানাবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। উপজেলার লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
ওসমানীনগর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতিও ভয়াবহ হয়ে ওঠেছে। উপজেলার গোয়ালাবাজার, তাজপুর, দয়ামীর, বুরঙ্গা, সাদিপুর, পশ্চিম পৈলনপুর, উসমানপুর ও উমরপুর ইউনিয়নের পুরোটাই পানিতে তলিয়ে গেছে। কুশিয়ারা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটছে।
গোলাপগঞ্জ উপজেলার সুরমা তীরবর্তী বাঘাসহ কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে কুশিয়ারা তীরবর্তী এলাকায় অবনতি হয়েছে। উপজেলার শরীফগঞ্জ, বাদেপাশা, ঢাকা দক্ষিণ, আমুড়া ও ভাদেশ্বর ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির বেশ অবনতি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুশিয়ারা তীরবর্তী ইউনিয়নগুলোর নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সুরমা নদীর তীরবর্তী সিলেট নগরী, সদর, বিশ্বনাথ ও কানাইঘাট উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। সিলেট নগরীর উঁচু এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। নদী তীরবর্তী এলাকায় এখনও লাখো মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। বাকি উপজেলাগুলোতেও লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন। ধলাই, পিয়াইন, সারি ও লোভা নদীর পানি কমায় জেলার কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার পানি কিছুটা কমেছে। তবে পানি কমার গতি খুবই ধীর বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। এই তিন উপজেলার এখনও ৯০ ভাগ এলাকা প্লাবিত রয়েছে।
সিলেট বিভাগীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম শহিদুল ইসলাম জানান, সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ওই পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৭৬ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছিল। বুধবার বিকেলে ওই পয়েন্টে পানি ১৩ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটারে অবস্থান করছে। সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানির বিপদসীমা ১০ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে ছিল ১১ দশমিক ১৬ সেন্টিমিটার। বুধবার বিকালে হিসাব অনুযায়ী সেখানে পানি ছিল ১১ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার।
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে বন্যায় ৭ দিনে ২২ জনের মৃত্যু: বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক
সিলেটে বন্যায় মারা গেছে ৩ হাজারের বেশি গবাদিপশু
সিলেটে চলমান বন্যায় প্রাণিসম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ জুন) পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বন্যার পানিতে সিলেট জেলায় হাঁস-মুরগিসহ তিন হাজারের বেশি গবাদিপশু মারা গেছে। আর ডুবে গেছে গবাদিপশুর ৭১০টি খামার।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পানি কমলে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র পাওয়া যাবে।
বন্যায় হালের গরু ভেসে যেতে দেখেছেন কোম্পানীগঞ্জের বিলাজুর এলাকার এরশাদ মিয়া। তিনি বলেন, ‘বন্যা সব নিয়ে গেছে। ঘরে গরু ও মুরগি ছিল, এগুলোও ভাসিয়ে নিয়েছে। ঘরের আসবাবপত্রও স্রোতে ভেসে গেছে। কিছুই রক্ষা করতে পারিনি। কেবল নিজেরা জীবন নিয়ে কোনোমতে আছি।’
আরও পড়ুন: সিলেট বিভাগে বন্যায় ৭ দিনে ২২ জনের মৃত্যু: বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, পানির তোড়ে ভেসে গিয়ে জেলায় এখন পর্যন্ত তিন হাজার ১৮৯টি গবাদিপশু মারা গেছে।
আর জেলা কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বন্যায় সিলেট জেলায় ৭১০টি খামার ডুবে গেছে। পানিতে ভেসে গেছে এক হাজার ৯৯১ টন খড় ও দুই হাজার ৯৫৯ টন ঘাস। সব মিলিয়ে এ পর্যন্ত জেলায় প্রাণিসম্পদের ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি ৬৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা।
চলমান বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা। তবে এ উপজেলার ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য নেই প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কাছে।
অধিপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, পানিতে উপজেলা পরিষদ ভবন তলিয়ে যাওয়া, বিদ্যুৎ ও মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় এই উপজেলার তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি