সিলেট
সিলেটে শিশু হত্যার ঘটনায় নারী আটক
সিলেটে হাওলাদার পাড়ায় পারিবারিক কলহের জের ধরে তিন বছরের এক শিশুকে হত্যার ঘটনায় এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক পার্বতী দাস হাওলাদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা।
সোমবার সকালে বাড়ির পাশের একটি বাঁশঝাড় থেকে রাহুল দাস নামে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার থেকে শিশুটি নিখোঁজ ছিল।
আরও পড়ুন: স্বামীকে ছেড়ে দেবরকে বিয়ে: নারীকে গলাকেটে হত্যা, সাবেক স্বামী আটক
জালালাবাদ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, রুবেল দাসের ছেলে রাহুল পার্বতীর প্রতিবেশী ছিল। দুই দিন আগে, তিনি রাহুলকে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে লাশটি তার বাড়িতে লুকিয়ে রাখে এবং রবিবার মধ্যরাতে ঝড়ের সময় বাঁশের ঝোপে ফেলে দেয়।’
ওসি জানান, সোমবারই ওই নারীকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি পারিবারিক কলহের জের ধরে শিশুটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: সাভারে বাসচালককে গলাকেটে হত্যা, ভ্যানচালক আটক
নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর ১৬ এপ্রিল রাহুলের বাবা জালালাবাদ থানায় সাধারণ ডায়রি করেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলে জানান ওসি।
সুনামগঞ্জে বাঁধ উপচে হাওরে ঢুকছে ঢলের পানি
উজানের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জির ভারী বৃষ্টিতে সুনামগঞ্জের নদ-নদী ও হাওরে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। রবিবার সকালে ঢলের পানি হাওরের পাড় উপচে তাহিরপুর উপজেলার বর্ধিত গুরমার হাওরে ঢুকছে। এতে হাওরের দুই হাজার হেক্টর জমির ফসল ঝুঁকিতে পড়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানিয়েছেন, এটা নতুন কোনো বাঁধ নয়, হাওরের পাড়ে পুরোনো স্থায়ী বাঁধ। গতকাল শনিবার রাতে হাওরে ব্যাপক পানির চাপ সৃষ্টি হয়। এরপর আজ সকালে বাঁধ উপচে হাওরে পানি ঢুকতে শুরু করে।
হাওরপাড়ের গোলাবাড়ি গ্রামের কৃষক খসরুল আলম বলেন, যেভাবে পানি ঢুকছে, সেটি যদি সারা দিন অব্যাহত থাকে, তাহলে ফসলের ক্ষতি হবে। আর যদি পানির চাপ কমে যায়, তাহলে ফসল রক্ষা পাবে।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বলেন, তাঁরা এ হাওরের ফসল রক্ষায় ১৫ দিন ধরে লড়াই করছেন। কৃষক, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তা সবাই মিলে হাওরের বাগমারা এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধটির সংস্কারকাজ করছে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় পাহাড়ি ঢলে পানির ব্যাপক চাপ বেড়ে রবিবার সকাল থেকে হাওরের উঁচু স্থান দিয়ে উপচে পানি ঢুকছে। এসব স্থানে বাঁধের প্রয়োজন হয় না। পানি আটকানোর চেষ্টা চলছে। লোকজন কাজে নেমে পড়েছেন।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা রবিবার দুপুর ১২টায় ছিল ৫ দশমিক ৮৭ মিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি বেড়েছে ৪০ সেন্টিমিটার। এ ছাড়া জেলার সীমান্তবর্তী জাদুকাটায় এ সময়ে পানি বেড়েছে ৭১ সেন্টিমিটার, পাটলাই নদে ৪৩ সেন্টিমিটার।
সুনামগঞ্জে ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১৩ মিলিমিটার। সুনামগঞ্জে উজানের পাহাড়ি ঢল নামা অব্যাহত আছে। এতে বাড়ছে নদ-নদী ও হাওরের পানি। এ অবস্থায় দ্রুত ধান কাটার চেষ্টা করছেন কৃষকেরা। কিন্তু অনেক হাওরেই ধান এখনও পুরোপুরি পাকেনি। সুনামগঞ্জে এবার প্রথম দফা পাহাড়ি ঢল নামে ৩০ মার্চ।
আরও পড়ুন: হাওরে স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণ করা হবে: পানি সম্পদ উপমন্ত্রী
এখন দ্বিতীয় দফা পাহাড়ি ঢলেও ফসল বেশি ঝুঁকিতে আছে। উপজেলার সব নদ-নদীর পানি আবার বাড়ছে। এতে মাটিয়ান হাওর, গুরমার হাওর, শনির হাওর, মহালিয়া হাওর, সমসার হাওরের ফসল আবার ঝুঁকিতে পড়েছে।
একইভাবে এসব হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধগুলোতেও পানির চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে টাক্সগুয়ার হাওরের বাঁধগুলো রয়েছে চরম ঝুঁকিতে।
এ হাওরের মন্দিয়াতা গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক সানজু মিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকেই আবার ঢল নামছে। শনিবার পরিমাণটা বেশি ছিল। এতে হাওরে ঢেউ উঠছে। এ ঢেউ আছড়ে পড়ছে বাঁধে। এতে বাঁধে সমস্যা হচ্ছে।
একই হাওরপারের জয়পুর গ্রামের কৃষক মুজিবর রহমান বলেন, আমরা রাতে বাঁধে পাহারা দিচ্ছি। প্রশাসনের লোকজনও আমাদের সঙ্গে আছেন।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রায়হান করিব বলেন, হাওরে পানি বেড়েছে। ঢেউয়ের পানি বাঁধ উপচে গেছে। এতে বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কিন্তু ভাঙেনি। তবে অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। বাঁধে পানির ব্যাপক চাপ বেড়েছে। সমস্যা হচ্ছে টাক্সগুয়ার হাওরের বাঁধগুলোকে নিয়েই। যেকোনো সময় যেকোনো বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।
জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইকবাল আল আজাদ বলেন, আমরা একদিকে কৃষকদের বলছি ধান কাটতে, অন্যদিকে হাওরের বাঁধ রক্ষায় কাজ করছি। সবাইকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, জমিতে পাকা ধান রাখা যাবে না। ৮০ শতাংশ পাকলেই কেটে ফেলতে হবে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বরাত দিয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন জানিয়েছেন, আজ থেকে উজানে ও ভাটিতে দুই স্থানেই বৃষ্টি কমবে। উজানের বৃষ্টি আমাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। ১৫ দিন ধরে মাটির বাঁধগুলো ঢলের পানির ব্যাপক চাপ সামলাচ্ছে। মাটি নরম হয়ে গেছে। অনেক বাঁধে ফাটল, ধস আছে। সেগুলোতে দিনরাত কাজ হচ্ছে। আমরা সবাই মিলেই চেষ্টা করছি। দুয়েকটা দিন ধরে রাখতে পারলে মনে হয় বিপদ কেটে যাবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সুনামগঞ্জে এবার দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন।
এ পর্যন্ত ৩০ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। ধান কাটায় কৃষকদের পাশাপাশি হাওরে কম্বাইন্ড হারভেস্টর ও রিপার আছে।
সুনামগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, এবার জেলার ১২টি উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ৭২৭টি প্রকল্পে ১২২ কোটি টাকায় ৫৩৬ কিলোমিটার ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারকাজ হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণকাজের সময়সীমা ছিল ১৫ ডিসেম্বর থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সময় বাড়িয়েও বাঁধের কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করা যায়নি।
আরও পড়ুন: হাওরের ফসলের ঝুঁকি কমাতে কাজ চলছে: কৃষিমন্ত্রী
জাফলংয়ের ডাউকি নদী থেকে ভারতীয় নাগরিকের লাশ উদ্ধার
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলংয়ের ডাউকি নদী থেকে ভারতীয় এক নাগরিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১৭ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে নদীর বল্লাঘাট এলাকা থেকে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে।
মৃত লেস্টারসন পথাও (৩৫) ভারতের মেঘালয় রাজ্যের লংকেরেট এলাকার এসলোংরাংয়ের ছেলে। তিনি পেশায় একজন ট্রাক চালক ছিলেন।
গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাফলংয়ের বল্লাঘাটে ডাউকি নদীতে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন থানায় খবর দেয়। পরে ঘটনাস্থলে গিয়ে গোয়াইনঘাট থানা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা লাশটি উদ্ধার করেন। লাশ উদ্ধারের পর আইনি প্রক্রিয়া শেষে দুপুরের দিকে বিজিবি'র সহায়তায় ভারতের ইস্ট জৈন্তা হিলসের ডাউকি থানা-পুলিশ এবং বিএসএফ সদস্যদের কাছে তা হস্তান্তর করা হয়।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ব্যবসায়ীর গলাকাটা লাশ উদ্ধার
এ সময় বাংলাদেশের পক্ষে ট্যুরিস্ট পুলিশ জাফলং সাব জোনের ইনচার্জ মো. রতন শেখ, গোয়াইনঘাট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ওমর ফারুক মোড়ল, ফায়ার সার্ভিস জৈন্তাপুরের ইনচার্জ বায়েজিদ বোস্তামি, বিজিবি'র সংগ্রাম সীমান্ত ফাড়ির ক্যাম্প কমান্ডার হাবিলদার আকমল হোসেন এবং ভারতের পক্ষে ইস্ট জৈন্তা হিলসের ডাউকি থানা পুলিশের কর্মকর্তা উইলফ্রেড জালা, বিএসএফ'র ডাউকি ক্যম্প কমান্ডার ইন্সপেক্টর রাজ কুমার, ভারতীয় ফায়ার সার্ভিস ও রেসকিউটিম'র ইনচার্জ আর এল ডানলাসহ উভয় দেশের স্থানীয় পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিজিবি ও বিএসএফ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোয়াইনঘাট থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) ওমর ফারুক মোড়ল বলেন, চলতি মাসের ১৪ এপ্রিল সড়ক দুর্ঘটনায় পানিতে তলিয়ে নিখোঁজ হন লেস্টারসন পথাও। মৃত ব্যক্তির বড় ভাই তিদার পাথাও তার পরিচয় শনাক্ত করেছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে রোববার দুপুরে লাশটি ভারতীয় পুলিশ এবং বিএসএফ সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিলেটে ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগ কর্মী খুন
সিলেটের বিশ্বনাথে পূর্ব বিরোধের জেরে ছুরিকাঘাতে এক ছাত্রলীগ কর্মী খুন হয়েছেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।নিহত আব্দুল বাছিত (২৫) উপজেলার টেংরা গ্রামের মৃত আফতাব মিয়ার ছেলে। তিনি বিশ্বনাথ সরকারি কলেজের ছাত্রলীগের কর্মী।বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, বাড়ির পাশে একটি কাঁচা রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিনের বিরোধ চলছিল তাদের। ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচল স্থানীয়ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। শুক্রবার দিবাগত রাতে সুমন নামে একজন পিকআপে করে লাকড়ি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে আসলে বাছিত তাকে নিষেধ করে গাড়ি নিয়ে না আসার জন্য। এনিয়ে তর্কাতর্কি শুরু হয় দুজনের মধ্যে। এক পর্যায়ে সুমন বাছিতকে ছুরিকাঘাত করে।আহত অবস্থায় বাছিতকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় সে।
তিনি আরও বলেন, লাশ ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত
কক্সবাজারের উখিয়া ক্যাম্পে ছুরিকাঘাতে রোহিঙ্গা যুবক নিহত
সুনামগঞ্জে কালবৈশাখীর তাণ্ডব
সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়ি ও বোরো ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আধা ঘণ্টাব্যাপী এই ঝড় বয়ে যায়।
তাৎক্ষণিকভাবে জেলার তাহিরপুর উপজেলায় বয়ে যাওয়া কালবৈশাখী ঝড়ে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের আমতৈল ও পুরানঘাটসহ কয়েকটি গ্রামের প্রায় একশ’ ঘরবাড়ি, গাছপালা ও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এছাড়াও উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের ঘাগড়া ও দীঘিরপাড়সহ উপজেলার তাহিরপুর সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের তিন শতাধিক ঘরবাড়ি ও গাছপালা ভেঙে গেছে।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে ঝুঁকিতে বোরো ফসল, আতঙ্কে কৃষক
উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাসুক মিয়া জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় ৮০-৯০টি ঘরবাড়ি ঝড়ে ভেঙে গেছে ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ওই এলাকার মানুষজন কষ্টের মধ্যে পড়েছে। তবে মানুষ আহত হওয়ার খবর পাইনি রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত।
বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের তাহিরপুর উপজেলা পরিচালক মোহাম্মদ গোলাম মোর্শেদ জানান, উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ও তার ছিড়ে যাওয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। দিনে মেরামত করতে হবে।
আরও পড়ুন: কোমর পানিতে বোরো ধান কাটছে চরাঞ্চলের চাষিরা
সিলেটে ৪০০ বিঘা বোরো খেত প্লাবিত
সুনামগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে ৫ জনের মৃত্যু
সুনামগঞ্জে কালবৈশাখী ঝড় ও বজ্রপাতে পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার জেলার জগন্নাথপুর ও শাল্লা উপজেলায় এই পৃথক ঘটনা ঘটে।
জগন্নাথপুরে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে বয়ে যাওয়া ঘন্টাব্যাপী প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে মা-মেয়ে ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। উপজেলার বহু ঘরবাড়ি, ফসল ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার পাটলী ইউনিয়নের সুলেমানপুর গ্রামের স্কুল শিক্ষক হারুণ মিয়ার টিন সেড ঘরের ওপর পাশাপাশি দুটি বিশাল আকৃতির ঢেউয়া ও খস গাছ প্রচন্ড ঝড়ে উপড়ে ঘরের ওপর পড়ে চাপা দিলে সঙ্গে সঙ্গেই স্কুল শিক্ষক হারুণ মিয়ার স্ত্রী মৌসুমি বেগম (৩৫), মেয়ে মাহিমা বেগম (৪) এবং এক বছর বয়সী ছেলে হোসাইন আহমদের মৃত্যু হয়।
পাটলী ইউপি চেয়ারম্যান আংগুর মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে প্রচন্ড শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ে বড় আকৃতির দুটি গাছ টিন ঘরের মধ্যে পড়ে চাপা দিলে মা ও ছেলে- মেয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটে। আমরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: বজ্রপাতের সময় করণীয়
তিনি জানান, পরিবারটি খুবই গরীব। স্ত্রী সন্তানদের হারিয়ে একটি বেসরকারি স্কুলের খন্ডকালীন শিক্ষক হারুণ মিয়া এখন পাগলপ্রায়।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান জানান, মা ও ছেলে- মেয়ের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে।
এদিকে জেলার শাল্লা উপজেলার নাছিরপুর গ্রামে বজ্রপাতে মুকুল খাঁ (৫০) ও তার ছেলে মাসুদ খাঁর (৭) মৃত্যু হয়েছে। সকাল সাতটার সময় এই ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মাসুদ খাঁ তার দুই ছেলে ও শ্যালক পুত্রকে নিয়ে বাড়ির পাশে জমিতে কৃষি কাজ করতে যান। সকাল ৭টার দিকে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মুকুল খাঁ ও ছেলে মাসুদ খাঁর মৃত্যু হয়। নিহত মুকুল খাঁর ছেলে রিমন খাঁ (১১) ও শ্যালক পুত্র তানভীর হোসেন (৭) আহত হওয়ায় চিকিৎসার জন্য দ্রুত হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে শাল্লা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে বজ্রপাতে শিশুসহ নিহত ৩
সিলেটে একদিনে ৩ লাশ উদ্ধার
সিলেট নগরীর পৃথক স্থান থেকে বুধবার ব্যবসায়ী-কিশোরীসহ তিন জন লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন- গোলাপগঞ্জ উপজেলার খাটখাই গ্রামের উনু মিয়ার ছেলে ও পেশায় একজন সুপারি ব্যবসায়ী খালেদ আহমদ (৩৮), ময়মনসিংহের তারাকান্দা থানার বড়বালকি গ্রামের মুজিবুর রহমান (৬৫) ও সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের ঝর্না আক্তার স্বর্ণা (১৩)।
এর মধ্যে নগরীর লালবাজারের আবাসিক হোটেল আল মিনার থেকে ব্যবসায়ীর, বাগবাড়ি থেকে বৃদ্ধের এবং বাগবাড়ির মদিনা আবাসিক এলাকা থেকে কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: যশোরের চৌগাছায় গালাকাটা লাশ উদ্ধার
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর লালবাজারের হোটেল আল মিনারের ৪র্থ তলার ৪১৪ নম্বর কক্ষ থেকে ব্যবসায়ী খালেদ আহমদের লাশ উদ্ধার হয়।
হোটেল কর্তৃপক্ষ জানান, খালেদ আহমদ ব্যবসার কাজে মঙ্গলবার বিকালের দিকে হোটেলে অবস্থান করেন। পরদিন বুধবার দুপুরে তাকে ডাকাডাকি করা হলেও সাড়া শব্দ মিলেনি। পরে থানায় খবর দেয়া হলে পুলিশ এসে দরজা খুলে তার লাশ উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এদিকে, বুধবার দুপুর ১টার দিকে নগরীর বাগবাড়ি বর্ণমালা পয়েন্টের শামসুদ্দিনের কলোনি থেকে ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় বৃদ্ধ মুজিবুর রহমান লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, দুপুরে ঘরের তীরের সাথে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত অবস্থায় মুজিবুরের লাশ দেখতে পান পরিবারের সদস্যরা। পরে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এছাড়া, একইদিন নগরীর বাগবাড়ি মদিনা আবাসিক এলাকার কলোনি থেকে কিশোরী ঝর্না আক্তার স্বর্ণার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: পাগলা নদীতে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার
স্বর্ণার বাবা আবুল মিয়া পুলিশকে জানান, স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে বাগবাড়ি মদিনা আবাসিক এলাকার একটি কলোনিতে তারা থাকতেন। তার মেয়ের মানসিক সমস্যা ছিল। বুধবার দুপুরে ঘরের ভেতরে স্বর্ণার নিথর দেহ ঝুলে থাকতে দেখে তিনি পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে।
ওসি মো. আলী মাহমুদ জানান, লাশ উদ্ধারের ঘটনাগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে পৃথক তিনটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সিলেটে বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
সিলেট নগরীর বাগবাড়িতে মুজিবুর রহমান (৭০) নামে এক বৃদ্ধের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুর ১টার দিকে বাগবাড়ি বর্ণমালা পয়েন্টের শামসুদ্দিনের কলোনি থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।মুজিবুর রহমানের বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার তারাকান্দা থানার বড়বালকি গ্রামে। তিনি পরিবার নিয়ে এ কলোনিতে থাকতেন।কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আলী মাহমুদ লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: যশোরের চৌগাছায় গালাকাটা লাশ উদ্ধার
তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ওই বৃদ্ধ আত্মহত্যা করেছেন। তারপরও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পরিবারের সদস্যরা সকালে ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় দড়ি দেয়া অবস্থায় মুজিবুর রহমানের দেহ ঝুলতে দেখে কোতোয়ালি থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে দুপুর ১টার দিকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
আরও পড়ুন: পাগলা নদীতে নিখোঁজ শিশুর লাশ উদ্ধার
বগুড়ায় পুকুর থেকে নারীর লাশ উদ্ধার
সুনামগঞ্জে ঢলের আশঙ্কায় হাওরে দ্রুত ধান কাটার অনুরোধ করে মাইকিং
সুনামগঞ্জে এমনিতেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। দু-এক দিনের মধ্যে ভারী বৃষ্টি শুরু হবে, আবার উজানের ঢল নামবে। তাই হাওরের ধান ৮০ শতাংশ পাকলেই সেগুলো দ্রুত কেটে তোলার অনুরোধ জানানো হচ্ছে কৃষকদের। বিষয়টি প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাইকিং করে এবং কৃষি বিভাগের লোকজন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলার হাওর ও নদ-নদীর পানি স্থিতিশীল আছে। সকাল নয়টায় সুরমা নদীর পানির উচ্চতা ছিল চার দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার। একইভাবে জেলার অন্যান্য নদ-নদীর পানিও কিছুটা কমেছে। জেলায় ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে তিন মিলিমিটার।
পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেছেন, ১৫ থেকে ১৭ এপ্রিল এই তিন দিন সুনামগঞ্জে ও ভারতের চেরাপুঞ্জি দুই জায়গাতেই ভারী বৃষ্টি হবে, নামবে পাহাড়ি ঢল। এতে দ্রুত নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
আরও পড়ুন: হাওরাঞ্চলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের প্রণোদনা দেয়া হবে: কৃষিমন্ত্রী
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের কৃষক স্বপন কুমার বর্মণ (৬০) জানান, মানুষ হাওরের ফসল নিয়ে এমনিতেই চরম আতঙ্কে আছে। ফসল রক্ষা বাঁধগুলো রয়েছে ঝুঁকিতে। প্রশাসন থেকে দ্রুত ধান কাটার অনুরোধ জানিয়ে মাইকিং করা হয়েছে। কৃষকেরা এখন আধা পাকা ধানই কাটার চেষ্টা করছেন।
উপজেলার খরচার হাওরপাড়ের নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক গোলাম রব্বানী বলেছেন, আমরা সংকটে আছি। একদিকে বৃষ্টি, ঢলের ভয়, অন্যদিকে জমিতে কাঁচা ধান। আমরা তো ধান কাটার জন্য বসে আছি। কিন্তু ধান না পাকলে কেটে তো লাভ নাই।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদি উর রহিম জাদিদ জানিয়েছেন, প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তারা পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে একরকম লড়াই করে ফসল রক্ষা বাঁধগুলো টিকিয়ে রেখেছেন। কিন্তু এখন আবার ঢল নামলে পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে। কৃষকেরা ধান কাটছেন। একই সঙ্গে কৃষি বিভাগের লোকজন ২৯টি কম্বাইন্ড হার্ভেস্টর যন্ত্র নিয়ে মাঠে মাঠে আছেন। ১৫ দিন ধরে উজান থেকে নামা পাহাড়ি ঢলের পানির চাপে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধগুলো দুর্বল হয়ে পড়ছে। কোথাও কোথাও বাঁধে ধস ও ফাটল দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় আরেক দফা ঢল এলে পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। তাই দ্রুত হাওরের ধান কাটার অনুরোধ জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
তিনি বলেন, ভারতের আসাম ও মেঘালয়ে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে সুনামগঞ্জের সুরমা, কুশিয়ারা, জাদুকাটা নদ-নদীর কয়েকটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার আশঙ্কা রয়েছে। তাই যত দ্রুত সম্ভব হাওরের ধান কেটে ফেলার জন্য বলা হচ্ছে। এ ছাড়া কোথাও যদি ফসল রক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দেয় অথবা বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়, সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিদের অবহিত করতে বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: টাঙ্গুয়ার হাওরে বাঁধ ভেঙে পানির নিচে ১০০ একর ফসল
হাওর রক্ষায় প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরা হাওরের ফসল রক্ষায় দিনরাত কাজ করছি। এটা অন্য রকম এক যুদ্ধ বলা চলে। মাঝখানে পানি কিছুটা কমেছে। কিন্তু এখন আবার বাড়বে, শঙ্কা কাটছে না। অনেক স্থানে বাঁধ দুর্বল হয়ে পড়েছে। আবার ঢল এলে, পানির চাপ আরও বাড়লে, বাঁধগুলো ঠেকানো মুশকিল হবে। গত ৩০ মার্চ থেকে ভারতের মেঘালয় ও চেরাপুঞ্জি থেকে নামা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জে অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ঝুঁকিতে পড়েছে জেলার সব হাওরের বোরো ফসল। গত ২ এপ্রিল প্রথমে তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওরের একটি বাঁধ ভেঙে ফসল তলিয়ে যায়। এরপর একে একে ছোট-বড় আরও ১০টি হাওরের ফসলহানি ঘটেছে। তবে জেলার বড় হাওরগুলোর ফসলের এখনো ক্ষতি হয়নি।
জেলা কৃষি বিভাগের হিসাব মতে, এবার সুনামগঞ্জে দুই লাখ ২২ হাজার ৮০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৩ লাখ ৫০ হাজার ২২০ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত ধান কাটা হয়েছে পাঁচ হাজার ৬৫ হেক্টর জমির।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে। শ্রমিকদের সঙ্গে মাঠে ধান কাটার যন্ত্রও আছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে কৃষকেরা তাদের ফসল গোলায় তুলতে পারবেন।
আরও পড়ুন: হাওরে পানি বাড়ছে, আতঙ্কে কাঁচা ধান কাটছে কৃষক
সিলেটে কলেজছাত্র হত্যা: ১ জনের মৃত্যুদণ্ড
সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় কলেজছাত্র সোহেল হত্যা মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার সকালে সিলেটের অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোমিনুন নেসা এ রায় দেন।
নিহত সোহেল আমিন সিলাম ইউনিয়নের পশ্চিমপাড়া গ্রামের মো. আব্দুল কাইয়ুম আনা মিয়ার ছেলে। তিনি মদনমোহন কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির নাম রফিক বক্স। তিনি দক্ষিণ সুরমা উপজেলার টিলাপাড়া গ্রামের মৃত তছির বক্সের ছেলে রফিক বক্স। এসময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রফিক বক্সের স্ত্রী সাথী বেগমকে এই মামলা থেকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: পরকীয়ার জেরে হত্যা, নারীসহ চারজনের মৃত্যুদণ্ড
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি দক্ষিণ সুরমার সিলাম ইউনিয়নের কলেজছাত্র সোহেল আমিন এশার নামাজ আদায় করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামি রফিক বক্স ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে সোহেল আমিনকে হত্যা করে। দীর্ঘবিচার শেষে রবিবার সকালে চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় দেন আদালত।
মামলা পরিচালনাকারী রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জোবায়ের বখত বলেন, আসামি পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একজন কলেজছাত্রকে হত্যা করে। আদালত প্রকৃত দোষী রফিক বক্সকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। অপর আসামি তার স্ত্রীকে খালাস প্রদান করেছেন।
আরও পড়ুন: যশোরে ২ ভাইকে কুপিয়ে হত্যা