%E0%A6%AC%E0%A7%88%E0%A6%A6%E0%A7%87%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95-%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95
কাতার আমিরের সফরে ৬ চুক্তি ও ৫ সমঝোতা স্মারক সই হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ঢাকা। সোমবার বিকেলে বাংলাদেশ সফরে আসবেন তিনি। এ সফরে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে ১১টি সহযোগিতার বিষয়ে ৬টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক সই হবে।
রবিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ এ তথ্য জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নজরুল ইসলাম এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এই সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে। চলতি বছর নতুন সরকার গঠনের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে এটিই প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সফর।’
এ সফরে ৬টি চুক্তি ও ৫টি সমঝোতা স্মারক নিয়ে যে ১১টি দ্বিপক্ষীয় দলিল সই হওয়ার কথা রয়েছে-
১. দ্বৈতকর পরিহার ও কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তি
২. আইনগত বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি
৩. সাগরপথে পরিবহন সংক্রান্ত চুক্তি
৪. উভয় দেশের পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা সংক্রান্ত চুক্তি
৫. দুই দেশের মধ্যকার দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের বদলি সংক্রান্ত চুক্তি
৬. যৌথ ব্যবসা পরিষদ গঠন সংক্রান্ত চুক্তি
৭. শ্রমশক্তির বিষয়ে সমঝোতা স্মারক
৮. বন্দর পরিচালনা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
৯. উচ্চ শিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
১০. যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
১১. কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক
দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্র ছাড়াও ফিলিস্তিন-ইসরায়েলসহ বৈশ্বিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে, যেখানে বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবেই এই আলোচনা উঠতে পারে। গাজায় হত্যাকাণ্ড বন্ধ করতে হবে। সবাই এটা চায়। আমরাও চাই।’
গত মাসে তুরস্কে আন্তালিয়া কূটনীতি ফোরামে অংশ নেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নির্মূলের জন্য ইসরাইলকে জবাবদিহির আওতায় আনার উপরও জোর দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ শান্তির পক্ষে, যুদ্ধের পক্ষে নয়।’
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির আমন্ত্রণে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে সোমবার বাংলাদেশে আসবেন কাতারের আমির।
এক গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমিরের দুই দিনের বাংলাদেশ সফরে তাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে সরকার।
সফর উপলক্ষে ঢাকার কয়েকটি রাস্তায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে।
প্রায় ১৯ বছর পর বন্ধুপ্রতীম দেশ কাতার থেকে ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী এমন উচ্চ পর্যায়ের সফর হচ্ছে।
এর আগে ২০০৫ সালের এপ্রিলে কাতারের তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আল-থানি বাংলাদেশ সফর করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এই সফর দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আমিরকে গান স্যালুট ও আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন অভ্যর্থনা জানাবেন।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরকে তার কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানাবেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে দুজনের মধ্যে বৈঠকের পর আরও একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
সহযোগিতাবিষয়ক নথি সই হওয়ার পর দুই নেতা একটি যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন।
পরিদর্শন বইয়ে সই শেষে মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গভবনে যাবেন আমির। সেখানে রাষ্ট্রপতি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
বঙ্গভবনের দরবার হলে আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন।
এরপর পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানীর একটি সড়ক ও একটি পার্কের নামকরণ করা হবে।
এদিন বিকাল ৩টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় পার্ক এবং মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ফ্লাইওভার পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধন করবেন তিনি।
আমির যেখানে অবস্থান করছেন সেখানে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন।
এদিনই সন্ধ্যা ৬টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশ ও কাতার জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায়।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি-৫) ফাঁকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৈঠকে জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতারের কাছে জ্বালানি বিশেষ করে এলএনজি বাড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর ৪ মার্চ কাতার বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কাতারের কূটনৈতিক মিশন চালু হয়।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ, অভিন্ন ধর্মীয় ভিত্তি, অভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো জনগণের সঙ্গে জনগণের যোগাযোগ। কাতারে ৪ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করেন এবং তারা নিবেদিত ও কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে প্রশংসিত।
বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ এবং কাতারের রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ ও কাতার একে অপরকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে।
প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর আহ্বান রাষ্ট্রদূত ইমরানের
বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান।
তিনি একই সঙ্গে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করতে প্রবাসে দেশের অসাধারণ সাফল্য গাঁথা তুলে ধরার জন্য তাদের প্রতি অনুরোধ জানান।
সম্প্রতি, ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে সোনালী এক্সচেঞ্জের ‘গ্রাহক সমাবেশ ও এসইসিআই অ্যাপ ক্যাম্পেইন’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাষ্ট্রদূত এ আহ্বান জানান।
বৈধ পথে বাংলাদেশে রেমিটেন্স পাঠানোর বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস এবং সোনালী ব্যাংক পিএলসি’র সহযোগী প্রতিষ্ঠান সোনালী এক্সচেঞ্জ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
এতে সোনালী ব্যাংক পিএলসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং স্বাগত বক্তব্য দেন সোনালী এক্সচেঞ্জ কোম্পানি ইনকরপোরেশন, ইউএসএ-এর সিইও দেবশ্রী মিত্র।
আরও পড়ুন: নতুন বছরে রেমিটেন্স যোদ্ধাদের আরও আন্তরিক ও স্মার্ট সেবা প্রদান করা হবে: প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী ও গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ গত দেড় দশকে সবক্ষেত্রে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এই সময়কালে দেশে অনেক ইতিবাচক অর্জন ও পরিবর্তন ঘটেছে এবং যদি আমরা এই সাফল্যের গল্প সবাইকে জানাতে পারি ও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে পারি তাহলে দেশ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাবে।’
ইমরান বলেন, বাংলাদেশ একটি বিজয়ী জাতি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই জাতি বহুল আকাঙ্খিত স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু যে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই লক্ষ্য অর্জন থেকে দেশ এখন আর বেশি দূরে নয়।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রবাসীদেরকে বৈধ পথে রেমিটেন্স পাঠাতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান
রাষ্ট্রদূত বৈধ পথে দেশে রেমিটেন্স পাঠানোর জন্য রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সোনালী ব্যাংকের এসইসিআই অ্যাপ প্রবর্তনের প্রশংসা করেন এবং প্রবাসী বাংলাদেশিসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অ্যাপটির সুবিধাগুলো সবাইকে জানানোর জন্য অনুরোধ করেন।
তিনি ওয়াশিংটনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক বর্তমানে প্রদত্ত বিভিন্ন কনস্যুলার সেবার কথাও সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
সোনালী ব্যাংকের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আফজাল করিম তার বক্তব্যে দেশের সর্ববৃহৎ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এর বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই অ্যাপটি চালু করা হয়েছে। এই অ্যাপটি ব্যবহার করে প্রবাসীরা তাৎক্ষণিকভাবে এবং সহজে দেশে রেমিটেন্স পাঠাতে পারবেন। এই অ্যাপের মাধ্যমে বৈধ পথে অর্থ পাঠালে দেশ অত্যন্ত উপকৃত হবে।
ওয়াশিংটন ডিসি এবং এর পার্শ্ববর্তী অঙ্গরাজ্যগুলোতে বসবাসরত বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি এই অনুষ্ঠানে যোগ দেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দুতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।
আরও পড়ুন: নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ ১ দশমিক ৯৩ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পেয়েছে: বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশে জলবায়ু সহিষ্ণু পানি ব্যবস্থাপনায় ৭১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে এডিবি
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুতি ও ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা জোরদার করতে গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর জেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একটি ঋণ চুক্তি সই করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
শনিবার (২০ এপ্রিল) ঢাকায় এই চুক্তি সই হয়। এতে সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির পক্ষে সংস্থাটির কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং এই ঋণ চুক্তিতে সই করেন।
এডিমন গিন্টিং বলেন, 'বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার উন্নয়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে সহায়তা করতে এডিবির নতুন প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন এই প্রকল্প।’
এডিবির কর্মকর্তা গিন্টিং আরও বলেন, 'এই অঞ্চলে আমাদের পূর্ববর্তী সফল প্রকল্পগুলোর উপর ভিত্তি করে নতুন প্রকল্পটি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীলতা আরও বৃদ্ধি করবে। একই সঙ্গে নারী ও দুর্বল গোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধি এবং টেকসই জীবিকা নির্বাহে সহায়তা করবে। এছাড়া বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য হ্রাস করবে।’
পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য জলবায়ু-সহনশীল সমন্বিত দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চরের প্রকল্পটি ৬ লাখেরও বেশি মানুষকে উপকৃত করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি জলবায়ু-সহনশীল বন্যা নিয়ন্ত্রণ, নিষ্কাশন এবং সেচ (এফসিডিআই) ব্যবস্থা চালু করবে এবং লবণাক্ত অনুপ্রবেশও হ্রাস করবে।
এডিবি জানায়, এফসিডিআই অবকাঠামো শক্তিশালী করতে এবং চারটি সাববেসিনের ড্রেনেজ উন্নত করতে প্রকৃতিভিত্তিক সমাধান গ্রহণ করা হবে।
প্রকল্পটি সমন্বিত পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থার জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং অন্যান্য কমিউনিটি অবকাঠামো নির্মাণ করবে।
প্রকল্পটি স্থানীয় মালিকানা বৃদ্ধি এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে অংশগ্রহণমূলক পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে উৎসাহিত করবে।
এটি সুবিধাগুলোর নকশা, নির্মাণ এবং পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণে পানি ব্যবস্থাপনা গোষ্ঠীগুলোর ক্ষমতা জোরদার করবে এবং যৌথ ব্যবস্থাপনা কমিটি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।
নারী সদস্যপদকে টার্গেট করে চারটি উপপ্রকল্প এলাকায় পানি ব্যবস্থাপনা সংগঠন গঠনে সহায়তা বাড়ানো হবে।
প্রকল্পটি পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় উন্নয়ন, পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম তত্ত্বাবধান এবং এর কার্যক্রমে জলবায়ু অভিযোজন সমন্বিত করতে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
বৈশ্বিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচকের ভিত্তিতে জলবায়ু ঝুঁকির দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান সপ্তম। বাংলাদেশ চরম আবহাওয়া এবং ধীরগতির জলবায়ু ঘটনাগুলোর ক্রমবর্ধমান পুনরাবৃত্তি এবং তীব্রতার মুখোমুখি হচ্ছে।
কার্যকর অভিযোজন ব্যবস্থার ঘাটতি, জলবায়ু পরিবর্তনশীলতা এবং গ্রামীণ সম্প্রদায়গুলো- বিশেষত যেসকল নারীরা তাদের জীবিকার জন্য জলবায়ু সংবেদনশীল কৃষি অনুশীলন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের উপর নির্ভর করে এমন চরম ঘটনাগুলোর কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ কৃষির মোট দেশজ উৎপাদনের প্রায় ৩০ শতাংশ হারাতে পারে।
রাশিয়া-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি সমতা-বন্ধুত্ব: রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিশেষ ভূমিকার কথা উল্লেখ করে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেই ইউরেভিচ রুদেনকো বলেন, স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তি ছিল বন্ধুত্ব, পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সমতা।
যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি ১৯৭২-৭৪ সময়কালে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের মাইন অপসারণ ও ডুবে থাকা জাহাজ উত্তোলনে তৎকালীন সোভিয়েত নৌবাহিনী যে সফল অভিযান চালায়, এ বছর তার ৫০ বছর পূর্তিতে বিশেষ আয়োজনের মাধ্যমে তা উদযাপন করা হবে বলে ঘোষণাও দেন তিনি।
মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে মস্কোর বাংলাদেশ দূতাবাস আয়োজিত সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গত ৫ অক্টোবর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাডিমির পুতিন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎকন্দ্রের জন্য প্রথম পারমানবিক জ্বালানি হস্তান্তর অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করেন রুদেনকো।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীর করার ব্যাপারে একযোগে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি।
দুই দেশের মধ্যে চলমান ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ নিয়ে তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং আগামী দিনে এর আকার ও পরিধি আরও বাড়বে বলে আশা করেন।
আরও পড়ুন: জাহাজ নির্মাণ শিল্পে দক্ষ জনবল নিতে চায় রাশিয়া: প্রবাসীকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী
তিনি বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়া তথা আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায়ও বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ-রাশিয়া উভয়েই জাতিসংঘ সনদ ও আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং বহুপাক্ষিক বিশ্বব্যবস্থা ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় দুই দেশই একসাথে কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে ছিলেন, রাশিয়ার প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রী কর্নেল জেনারেল আলেকজান্ডার ফোমিন এবং মস্কো সিটি গভর্নমেন্টের মন্ত্রী সের্গেই চেরেমিন। এ ছাড়া মস্কোতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডসহ ষাটের অধিক দেশের রাষ্ট্রদূত, স্টেট ডুমার সদস্য, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান ’ভিশন ২০৪১’ এর কথা উল্লেখ করে বলেন, এটি বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি স্মার্ট ও উন্নত রাষ্ট্রের কাতারে নিয়ে যাবে।
বৈদেশিক বিনিয়োগ বাড়াতে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন প্রণোদনার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে অধিক হারে বিনিয়োগের জন্য আহ্বান জানান।
রমজান মাসের কারণে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি ঈদ-উল-ফিতর এর পরে আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ শুরুর পর ৩১ হাজার ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে: জেলেনস্কি
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগে কানাডার বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়তা করবে এফআইপিএ: হাইকমিশনার
সম্প্রতি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিদেশি বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি (এফআইপিএ) সইয়ের বিষয়ে কারিগরি দিকগুলো আলোচনা করতে কানাডাকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কানাডায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমান।
এফআইপিএ আলোচনা শুরুর বিষয়ে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক প্রস্তাব কানাডার বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আস্থা জোরদার করবে বলে মনে করেন তিনি।
একই সঙ্গে কানাডার ইন্দো-প্যাসিফিক বাণিজ্য প্রতিনিধির নেতৃত্বে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলকে আসন্ন ঢাকা সফরকে স্বাগত জানান তিনি।
কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশনে মহান স্বাধীনতা এবং জাতীয় দিবস ২০২৪ উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। সম্প্রতি অটোয়ার হিল্টন গার্ডেন হোটেলে বাংলাদেশ হাইকমিশন এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
হাইকমিশনার বলেন, ঢাকা ও টরন্টোর মধ্যে সরাসরি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট চালু করতে পারায় দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগ ও ব্যবসা বাণিজ্যে গতিশীলতা এসেছে।
বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ অন্য সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও কানাডার মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী ও ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের কথাও তুলে ধরেন তিনি। উভয় দেশের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে এক লাখেরও অধিক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডিয়ানদের অবদানের প্রশংসা করেন।
পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সংলাপের মাধ্যমে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আত্মস্বীকৃত ও আদালতের রায়ে দোষী সাব্যস্ত খুনি নুর চৌধুরীকে ডিপোর্টেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশে ফেরত দিয়ে আদালতের রায় কার্যকর করতে ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে কানাডা সহায়তা করবে বলৌ আশা প্রকাশ করেন হাইকমিশনার।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সংসদীয় সচিব রবার্ট অলিফ্যান্ট বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কানাডার সমর্থন এবং পরবর্তীকালে পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে প্রথম দিকে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের বিষয়টি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ভাবনা পৃথিবীর অন্যান্য দেশে দারিদ্র্য বিমোচন ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে মডেল হিসেবে কাজ করছে।
রবার্ট অলিফ্যান্ট মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ১৩ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশে মানবিক কারণে অস্থায়ী আশ্রয় প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাঁদের নিজ দেশে টেকসই ও নিরাপদ প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (আইসিজে)-সহ অন্যান্য ফোরামে কানাডা বাংলাদেশের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে।
পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি কানাডার অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশি-কানাডিয়ানদের অবদানের কথাও স্বীকার করেন।
কানাডা-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপের (সিবিপিএফজি) চেয়ারপার্সনসহ অন্যান্য সংসদ সদস্য ও সিনেটরগণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
উল্লেখ্য, পবিত্র রমজান মাসের কারণে ২৬ মার্চ-২০২৪ তারিখের পরিবর্তে ১৮ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে কানাডার সিনেটর, সংসদ সদস্য, অটোয়াস্থ কূটনৈতিক মিশনসমূহের প্রধান এবং বাংলাদেশি-কানাডিয়ানসহ দেড় শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।
কাতারের আমিরকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত ঢাকা, সহযোগিতা বাড়ানোর দিকে নজর দুই দেশের
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানিকে স্বাগত জানাতে সব প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ। আগামী সোমবার (২২ এপ্রিল) দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে কাতার আমিরের। সফরকালে বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ একাধিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক জোরদারে প্রায় ডজনখানিক নথি সই হতে পারে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
সরকার এক গেজেট বিজ্ঞপ্তিতে দুই দিনের বাংলাদেশ সফরে আমিরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে।
সফর উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কাতারের আমিরের ছবি দিয়ে ঢাকার কয়েকটি রাস্তা সাজানো হয়েছে।
প্রায় ১৯ বছর পর বন্ধুপ্রতীম দেশ কাতার থেকে ২৪ ঘণ্টা স্থায়ী এমন উচ্চ পর্যায়ের সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
কাতারের তৎকালীন আমির শেখ হামাদ বিন খলিফা আলে সানি ২০০৫ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ সফর করেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বন্দি বিনিময়, দ্বৈত কর পরিহার, জনশক্তি রপ্তানি, ধর্ম ও উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ে এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে দুই দেশের মধ্যে ঠিক কতটি চুক্তি সই হবে তা জানা যায়নি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেন, 'এই সফর দুই দেশের মধ্যে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
আরও পড়ুন: কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
তিনি বলেন, দ্বিপক্ষীয় ক্ষেত্রে সহযোগিতা ছাড়াও ফিলিস্তিন-ইসরায়েলসহ বৈশ্বিক ইস্যু নিয়েও আলোচনা হবে। যেখানে বাংলাদেশ তার অবস্থান তুলে ধরবে।
গত মাসে তুরস্কে আন্তালিয়া কূটনীতি ফোরামে অংশ নেওয়ার সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ গাজায় চলমান গণহত্যা বন্ধে সম্মিলিত প্রচেষ্টার ওপর জোর দিয়েছিলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নির্মূলের জন্য ইসরাইলকে দায়ী করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ শান্তির পক্ষে, যুদ্ধের পক্ষে নয়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকভাবে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন আমিরকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
সোমবার বিকালে একটি বিশেষ ফ্লাইটে আমিরের পৌঁছানোর কথা রয়েছে বলে একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমিরকে তার কার্যালয়ে অভ্যর্থনা জানাবেন।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাদের দুজনের মধ্যে বৈঠক হবে এবং এরপর আরও একটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
দুই নেতা সহযোগিতার দলিল সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন এবং যৌথ সংবাদ সম্মেলনে যোগ দেবেন।
সেখানে পরিদর্শন বইয়ে সই শেষে আমির মঙ্গলবার বিকালে বঙ্গভবনের উদ্দেশে যাত্রা করবেন এবং রাষ্ট্রপতি তাকে অভ্যর্থনা জানাবেন।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বঙ্গভবনের দরবার হলে কাতারের আমিরের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদও আমিরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানীর একটি সড়ক ও একটি পার্কের নামকরণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের গণমাধ্যমের উন্নয়নে সহযোগিতার আশ্বাস কাতারের
ওইদিন বিকাল ৩টায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আওতাধীন মিরপুরের কালশী এলাকায় পার্ক এবং বিকাল ৩টায় মিরপুর ইসিবি চত্বর থেকে কালশী ফ্লাইওভার পর্যন্ত সড়ক উদ্বোধন করবেন তিনি।
এছাড়া নির্বাচিত ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করবেন আমির।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় একটি বিশেষ ফ্লাইটে তার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানাবেন।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির বাংলাদেশ সফরের পর বাংলাদেশ ও কাতার জনশক্তি, জ্বালানি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বৃহত্তর সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায়।
গত বছরের মার্চে কাতারের রাজধানী দোহায় স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জাতিসংঘ সম্মেলনের (এলডিসি-৫) ফাঁকে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি জ্বালানি চাহিদা মেটাতে কাতারের কাছে জ্বালানি বিশেষ করে এলএনজি সরবরাহ বাড়ানোর আহ্বান জানান।
১৯৭৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের পর ১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ কাতার বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাংলাদেশের গণমাধ্যম খাতের উন্নয়নেও সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে কাতার।
১৯৭৫ সালের ২৫ জুন দোহায় বাংলাদেশ তার কূটনৈতিক মিশন চালু করে। ১৯৮২ সালে ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলার মাধ্যমে প্রতিদান দেয় কাতার।
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক পারস্পরিক শ্রদ্ধা, অভিন্ন মূল্যবোধ, অভিন্ন ধর্মীয় ভিত্তি, অভিন্ন সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত।
সুশৃঙ্খল ও পরিশ্রমী হিসেবে অত্যন্ত প্রশংসিত চার লাখেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বাংলাদেশ ও কাতার বাংলাদেশের রূপকল্প ২০৪১ এবং কাতারের রূপকল্প ২০৩০ বাস্তবায়নে একে অপরকে ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ এবং গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করে।
আরও পড়ুন: জনশক্তি, জ্বালানি ও বিনিয়োগে সহযোগিতা জোরদারে কাতারের আমিরের সফর: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে অর্জিত অগ্রগতি জাতিসংঘে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অবস্থিত জাতিসংঘ সদর দপ্তরে চলমান আদিবাসী সংক্রান্ত স্থায়ী ফোরামে ২৩তম অধিবেশনে পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমান এনডিসি ঐতিহাসিক ‘পার্বত্য শান্তিচুক্তি’ বাস্তবায়ন এবং ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের উন্নয়ন ও অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশে সরকারের গৃহীত কার্যক্রম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ১৫ হতে ২৬ এপ্রিল ২০২৪ পর্যন্ত দুই সপ্তাহব্যপী আদিবাসী সংক্রান্ত জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরামের ২৩তম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এই সভায় পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টিতে গুরুত্বারোপ করেছে জি-৭
প্রতিনিধি দলে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. খলিলুর রহমান এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়রাম্যান সুপ্রদীপ চাকমাসহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের আওতায় আদিবাসী সংক্রান্ত স্থায়ী ফোরাম বিশ্বব্যাপী আদিবাসীদের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কাজ করে থাকে।
এই বিষয়ে প্রদত্ত বক্তব্যে সচিব বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান দেশের জনগনের মধ্যে ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারী-পুরুষভেদ বা জন্মস্থান নির্বিশেষে সম অধিকার প্রদান করেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসান ঘটেছে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জনগণকে এদেশের উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এর ধারাগুলো বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। মোট ৭২টি ধারার মধ্যে ইতোমধ্যে ৬৫টি সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়িত হয়েছে, ৩টি আংশিকভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং ৪টি ধারা বাস্তবায়নাধীন।
এছাড়াও তিনি পার্বত্য চট্রগ্রামে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ডিজিটাল ভূমি জরিপ ও ব্যবস্থাপনা উদ্যোগসহ ওসব অঞ্চলের সামগ্রিক উন্নয়ন সাধনে সরকারের গৃহীত নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে ফোরামকে অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ছেন প্রধানমন্ত্রী: অর্থমন্ত্রী
৩টি পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলায় ৩ জন প্রথাগত সার্কেল চিফ নানাবিধ প্রশাসনিক ও আইনি কর্তৃত্ব ভোগ করেন এবং প্রতিটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী থেকে নির্বাচিত হন বলেও উল্লেখ করেন পার্বত্য চট্রগ্রাম বিষয়ক সচিব।
তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকার বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। জাতিসংঘের বেশ কয়েকটি সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী এই অঞ্চলে উন্নয়ন কার্যক্রমের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তিনি উল্লেখ করেন- স্পষ্টতই পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির পর থেকে এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে অসামান্য পরিবর্তন ঘটেছে।
সরকার আইন প্রণয়ন করে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্য, রক্ষা ও প্রচারের জন্য বিশেষায়িত সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেছে। ৫টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিশুদের মাঝে তাদের নিজ নিজ ভাষায় বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক নিয়মিতভাবে বিতরণ করা হচ্ছে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর সরকারি চাকরি এবং সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ হারে কোটা সংরক্ষিত আছে।
বর্তমানে, জাতীয় সংসদে ৪ জন এবং মন্ত্রিসভায় ১ জন ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠীর সদস্য রয়েছেন বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টিতে গুরুত্বারোপ করেছে জি-৭
জি-৭ দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সব রোহিঙ্গা শরণার্থী ও বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের স্বেচ্ছায়, নিরাপদে, মর্যাদার সঙ্গে ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন এবং রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতার জন্য ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির পরিবেশ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা মিয়ানমারে অস্ত্র ও জেট ফুয়েলসহ অন্যান্য দ্বৈত ব্যবহারের উপকরণের প্রবাহ রোধ বা বন্ধ করার জন্য সব দেশের প্রতি তাদের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
তারা একটি অর্থবহ ও টেকসই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে অবিলম্বে যে কোনো সহিংসতা বন্ধ, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত নেতাদের থেকে শুরু করে নির্বিচারে আটক সব বন্দিদের মুক্ত এবং সব অংশীজনদের সঙ্গে অন্তর্ভুক্তিমূলক সংলাপ প্রতিষ্ঠার জন্য মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করলেন ইউএনডিপির শুভেচ্ছা দূত প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়া
কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের জি-৭ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রতি মানবাধিকার ও আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখাতে, যে কোনো ধরনের জোরপূর্বক শ্রম থেকে বিরত থাকতে এবং সব বাস্তুচ্যুত ব্যক্তি ও অভাবী মানুষের কাছে দ্রুত, নিরাপদ ও অবাধ মানবিক প্রবেশাধিকার দেওয়ার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
৫ দফা ঐকমত্যের দ্রুত বাস্তবায়নে বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে আসিয়ানের প্রচেষ্টাকে তারা সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের স্বদেশে প্রত্যাবাসনে ইন্দোনেশিয়া ও আইওএমের সহযোগিতার আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মিয়ানমারে সংঘটিত গুরুতর অপরাধের জন্য জবাবদিহি অপরিহার্য উল্লেখ করে জি-৭ দেশগুলো বলেছে, ‘আমরা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ২৬৬৯ (২০২২) এর ব্যাপক বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরেছি, মিয়ানমার বিষয়ক নবনিযুক্ত জাতিসংঘের বিশেষ দূতের নেতৃত্ব এবং দেশটিতে আবাসিক সমন্বয়কারী নিয়োগের মাধ্যমে এই সংকটে জাতিসংঘের আরও সম্পৃক্ততাকে সমর্থন করি।’
জি-৭ দেশগুলো মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের তীব্র নিন্দা এবং শান্তি, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের জন্য দেশটির জনগণের প্রতি তাদের সমর্থন ও সংহতি পুনর্ব্যক্ত করে।
বেসামরিক অবকাঠামো (বাড়িঘর, স্কুল, উপাসনালয় ও হাসপাতালসহ) সামরিক বাহিনীর অব্যাহত হামলা, বারবার ও গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং উদ্বেগজনক মানবিক পরিস্থিতি - যা বিশেষত শিশু, নারী এবং সংখ্যালঘু ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীর সদস্যসহ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে আক্রান্ত করে। পুরো বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য।
তারা বলেন, ‘আমরা সামরিক শাসকদের দ্বারা ২০১০ সালের বাধ্যতামূলক নিয়োগ আইনের সাম্প্রতিক প্রয়োগেরও নিন্দা জানাই।’
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, তরুণদের জোরপূর্বক নিয়োগ কেবল আরও সহিংসতার দিকে নিয়ে যেতে পারে এবং প্রতিবেশী দেশগুলোতে ব্যাপক পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার কারণ হতে পারে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে প্রকৃত রাজনৈতিক সদিচ্ছা প্রদর্শন করুন: জাতিসংঘে মিয়ানমারকে বাংলাদেশ
মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের মানবাধিকার রক্ষা করতে হবে: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞরা
সরকারি শ্রম অভিবাসন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে কর্মসংস্থানের আশায় মালয়েশিয়ায় যাওয়া বাংলাদেশি প্রবাসীদের পরিস্থিতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা।
শুক্রবার জেনেভা থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, কয়েক মাস বা তার বেশি সময় ধরে মালয়েশিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসীদের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ও অসম্মানজনক।
বিশেষজ্ঞরা হলেন- দাসত্বের সমসাময়িক রূপ, কারণ ও পরিণতি বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টোমোয়া ওবোকাতা; মানব পাচার বিশেষ করে নারী ও শিশু পাচার সম্পর্কিত বিশেষ প্রতিনিধি সিওভান মুল্লালি; প্রবাসীদের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ দূত গেহাদ মাদি এবং রবার্ট ম্যাককরকোডেল (চেয়ার-র্যাপোর্টিয়ার), ফার্নান্দা হোপেনহাইম (ভাইস-চেয়ার), পিচামন ইয়োফানটং, দামিলোলা ওলাউই, এলজবিয়েতা কারস্কা, ব্যবসা ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা দল।
জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলেন, ‘প্রবাসীদের ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং তাদের শোষণ, অপরাধীকরণ ও অন্যান্য মানবাধিকার লঙ্ঘন থেকে রক্ষা করার জন্য মালয়েশিয়ার জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।’
তারা উল্লেখ করেন, অনেক প্রবাসী মালয়েশিয়ায় এসে দেখেন প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী চাকরি নেই এবং অনেক সময় তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও থাকতে বাধ্য করা হয়।
এর ফলে এসব প্রবাসী গ্রেপ্তার, আটক, দুর্ব্যবহার ও বহিষ্কারের ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে প্রবাসী কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে বড় অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে সক্রিয় অপরাধী চক্র।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, প্রবাসীরা প্রতারিত হচ্ছেন, ঘন ঘন ভুয়া কোম্পানিতে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে এবং অতিরিক্ত নিয়োগ ফি দিতে বাধ্য করা হচ্ছে। যে কারণে তাদের ঋণের বোঝা বেড়ে যাচ্ছে।
তারা বলেন, ‘আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে উভয় সরকারের কিছু উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বা এটি প্রশ্রয় দিচ্ছেন। এটা অগ্রহণযোগ্য এবং এর অবসান হওয়া দরকার।’
বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই শোষণমূলক নিয়োগের অপরাধীদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে। এখন পর্যন্ত এই বেসরকারি ব্যবসা এবং প্রতারণামূলক নিয়োগ সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া উভয় দেশের ভূমিকাই অপর্যাপ্ত।
তারা আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে অনেক অসহায় প্রবাসীদের অপরাধীতে পরিণত করা হয়েছে এবং শোষণের শিকার হওয়ার কথা জানাতে গিয়ে কেউ কেউ তীব্র প্রতিহিংসার মুখোমুখি হয়েছেন।
মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশকে এসব ঘটনার তদন্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানান বিশেষজ্ঞরা।
ব্যবসা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের নীতিমালা মেনে চলতে মালয়েশিয়াকে আহ্বান জানিয়েছে বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, 'মালয়েশিয়াকে অবশ্যই পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে শ্রম অভিবাসনকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনা করতে হবে।'
মালয়েশিয়ার ব্যবসাক্ষেত্রগুলোতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাত থেকে প্রবাসী শ্রমিকদের রক্ষা করতে এবং এই ব্যবসাগুলোতে মানবাধিকারের প্রতি সম্মান নিশ্চিত করতে পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা আরও বলেন, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের শনাক্তকরণ, সুরক্ষা ও সহায়তা, মানব পাচারের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনি সুরক্ষা প্রয়োগ এবং দেশের আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা সমুন্নত রাখতে মালয়েশিয়াকে অবশ্যই প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা এর আগে এসব বিষয় নিয়ে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ছেন প্রধানমন্ত্রী: অর্থমন্ত্রী
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার কাজ শুরু করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের স্প্রিং মিটিংয়ে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে অর্থমন্ত্রী এখন ওয়াশিংটনে অবস্থান করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরানও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন এবং মাহমুদ আলীর বর্ণাঢ্য কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক কর্মজীবন সংক্ষেপে তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: মাতৃভূমি রক্ষা করা আমাদের প্রধান কর্তব্য: সেনাপ্রধান
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছেন এবং তার নেতৃত্বে দেশ সামনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার দায়িত্ব নিয়েছেন এবং তিনি জাতিকে এর অভীষ্ঠ লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দেশে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অস্তিত্ব এখনও বিদ্যমান এবং তারা দেশের চলমান উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করার জন্য ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: দায়িত্বশীল ও টেকসই সমুদ্র ব্যবস্থাপনায় সম্মিলিত প্রয়াসের আহ্বান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
মাহমুদ আলী ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত প্রথম কূটনীতিক যিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
অর্থমন্ত্রী দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্ণারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
দূতাবাসে পৌঁছালে অর্থমন্ত্রী মাহমুদ আলীকে স্বাগত জানান রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান এবং দূতাবাসের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
আরও পড়ুন: ঢাকা-দিল্লি সম্পর্ককে লালন করে নতুন উদ্যমে এগিয়ে যেতে হবে: শ্রিংলা