বৈদেশিক-সম্পর্ক
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে নির্মমভাবে নিহত এ মাটির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) ওয়াশিংটন ডিসিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত হয়েছে।
দূতাবাসের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান কর্তৃক বঙ্গবন্ধু কর্নারে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ ভাস্কর্যে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় মিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
পরে বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রদত্ত বাণী পাঠ করে শোনান মিনিস্টার (কনস্যুলার) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান এবং মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. রাশেদুজ্জামান।
এরপর দিনটির তাৎপর্য তুলে ধরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে রাষ্ট্রদূত ইমরান শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের প্রতিও গভীর শ্রদ্ধা জানান।
তিনি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের দ্বারা বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞকে মানব ইতিহাসের অন্যতম গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেন এবং এই দিনটি আরো বৃহৎ পরিসরে পালনের মাধ্যমে এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত ইমরান বলেন, ‘এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞ ছিল জাতির জন্য একটি অপূরণীয় ক্ষতি।’
তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের আত্মত্যাগে উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অনুরোধ জানান ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে মিনিস্টার (প্রেস) এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন ১৪ ডিসেম্বরকে বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কজনক দিন হিসেবে বর্ণনা করেন।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা এই দিনে দেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূন্য করতে চেয়েছিল।’
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের শাস্তি এড়াতে কিছু যুদ্ধাপরাধী বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন এবং খুনিদের বিচারের মুখোমুখি করতে অবিলম্বে তাদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
শহীদ বুদ্ধিজীবী, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এক বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিনের কর্মসূচি শেষ হয়।
কর্মসূচি পরিচালনা করেন কাউন্সেলর ও দূতালয় প্রধান শামীমা ইয়াসমিন স্মৃতি।
আরও পড়ুন: মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
ঢাকা-লন্ডন অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব অব্যাহত রয়েছে: সারাহ কুক
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের (ইউকে) মধ্যে আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্ব অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) বাংলাদেশের বিজয় দিবসের আগে এক সংক্ষিপ্ত বার্তায় তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাতে পেরে আনন্দিত।
হাইকমিশনার বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দুই দেশের ইতিহাস ও জনগণের সঙ্গে গভীর সম্পর্কের ভিত্তিতে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল যুক্তরাজ্য।
ব্রিটিশ সরকারের মতে, যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশ একটি আধুনিক অর্থনৈতিক, বাণিজ্য ও নিরাপত্তা অংশীদারিত্বে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের বিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে। যা জলবায়ু পরিবর্তন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট মোকাবিলার মতো বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকারগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
পাটকে ‘ভবিষ্যতের আঁশ’ হিসেবে তুলে ধরার সুযোগ নিন: শাহরিয়ার আলম
বিশ্ব যে সবুজ প্রবৃদ্ধি কৌশল অনুসরণ করছে তার অংশ হিসেবে পাটকে ‘ভবিষ্যতের আঁশ’ হিসেবে তুলে ধরার এই মুহূর্তে যে সুযোগ রয়েছে তা কাজে লাগানোর উপর গুরুত্বারোপ করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই সুযোগটি কাজে লাগাতে হবে... পাটকে তার সঠিক নামে স্বীকৃতি দিতে এবং সঠিক অবস্থানে পৌঁছাতে সহায়তা করতে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খলে স্থায়িত্ব ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখার জন্য বিপুল চাপকে কাজে লাগানোর সময় এসেছে।’
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত ‘প্রজেক্টিং জুট অ্যাজ দ্য ফাইবার অব দ্য ফিউচার’- শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আবদুর রউফ, বুয়েটের উপউপাচার্য আব্দুল জব্বার খান ও বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বক্তব্য রাখেন।
শাহরিয়ার বলেন, এটা উদ্বেগজনক যে লাখ লাখ টন পচনশীল নয় এমন পদার্থ আমাদের মাটি ও পানিতে প্রবেশ করছে, যেগুলো আমাদের গ্রহের স্বাস্থ্য ও বাস্তুতন্ত্রকে মারাত্মকভাবে প্রভাবিত করছে।
আলম বলেন, বিপরীতে পাট ও অন্যান্য প্রাকৃতিক তন্তুগুলো এই ধরনের কিছু সমস্যার সমাধান করতে পারে।
তিনি বলেন, পাটের ক্ষেত্রে মোটা প্যাকেজিং উপাদানের ঐতিহ্যগত মূল্য ছাড়াও এর অভিযোজনযোগ্যতা ও বহুমুখিতা তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ।
আলম বলেন, ‘আমরা এখন জানি দামি অ্যাক্টিভেটেড চারকোল থেকে জিও-টেক্সটাইলের মতো হাইটেক অ্যাপ্লিকেশনের মতো বিভিন্ন উপাদান পাট থেকে পাওয়া যেতে পারে। এই তথ্য আরও ছড়িয়ে দেওয়া আমাদের দায়িত্ব।’
তিনি বলেন, প্রতি দুই বছর পর পর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত পাট ও অন্যান্য প্রাকৃতিক তন্তু ব্যবহারের বিষয়ে একটি রেজুলেশন পাওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আমরা ইউএনজিএ রেজিউলোশনের চেতনায় পাটের উপর একটি কৌশলগত প্রচার চালানোর জন্য সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনদের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে প্রস্তুত।’
আলম বলেন, তারা টেকসই উন্নয়ন, ন্যায্য বাণিজ্য ও জলবায়ু কর্মকাণ্ডের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে পাটকে ‘ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ’-এর মূল উপাদান হিসেবে দেখতে চান।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই উদ্যোগে আমাদের সঙ্গে যোগ দেওয়ার জন্য বিশ্বজুড়ে আমাদের বন্ধু ও অংশীদারদের আমন্ত্রণ জানাতে চাই।’
প্রতিমন্ত্রী পাঁচটি সুনির্দিষ্ট পরামর্শ দিয়েছেন। বিশ্বাস করা হচ্ছে এই পরামর্শগুলো পারস্পরিক লাভজনক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে পারে:
প্রথমত, প্রকৃতির জন্য উপকারী বিশ্ব গঠনের প্রতি আমাদের পারস্পরিক অঙ্গীকারের অংশ হিসেবে পাটকে পচনশীল নয় এমন উপকরণের পরিবেশবান্ধব বিকল্প হিসেবে প্রচার করুন।
দ্বিতীয়ত, পাট ও পাটজাত দ্রব্যের অবাধ ও ন্যায্য বাণিজ্যকে সমর্থন করার উপায় হিসেবে পাট চাষি এবং উদ্যোক্তাদের সমর্থন করা- তারা এই অনন্য প্রাকৃতিক সম্পদের প্রকৃত অভিভাবক।
তৃতীয়ত, পাটের সর্বোত্তম সম্ভাবনা অন্বেষণের জন্য চাপ-প্রতিরোধী পাটের জাত ও উচ্চ মূল্যসম্পন্ন পাটজাত পণ্যের জন্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে বিনিয়োগ করুন।
চতুর্থত, গুণমান উন্নত করা এবং অপচয় বা দূষণ রোধ করার লক্ষ্যে কাঁচা পাট আহরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণসহ দক্ষ পণ্যের নকশা ও উন্নয়নকে সমর্থন করা।
পঞ্চম, সবশেষে টেকসই টেক্সটাইল, প্যাকেজিং, আসবাবপত্র বা কাগজ উদ্ভাবনে বিশ্বজুড়ে তরুণদের জন্য সম্ভাব্য জীবনধারা পছন্দ হিসেবে পাটের কথা ছড়িয়ে দিন।
তিনি বলেন, ‘প্রোডাক্ট অব দ্য ইয়ার ২০২৩’ উদযাপন এবং আগামী বছরগুলোতে পাটের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য কৌশল নির্ধারণ করুন।
প্রতিমন্ত্রী পাটের বাজারের দৃশ্যমানতা বাড়াতে, এটিকে বৈশ্বিক স্থায়ীত্বের প্রবণতার সঙ্গে সারিবদ্ধ করতে এবং জলবায়ু-নিরপেক্ষ ভবিষ্যতের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সবুজ বৃদ্ধির জন্য সব ইচ্ছুক অংশীদারদের সঙ্গে হাত মেলাবেন বলে আশা করেন।
আফসোস করে আলম বলেন, প্লাস্টিকের মতো কৃত্রিম পণ্যের বিশ্বব্যাপী বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী প্যাকেজিং ও কার্পেট শিল্পে পাট তার প্রাধান্য হারাতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক সরকারও রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বহু পাট কারখানা ক্রমান্বয়ে হ্রাস ও বন্ধের নেতৃত্ব দিয়েছে। অথচ পাটভিত্তিক পণ্যের বৈচিত্র্যকরণে খুব কমই কোনো প্রচেষ্টা করা হয়েছে।
আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই ধারাবাহিক নীতি ও আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে পাট শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করতে সহায়তা করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘকাল ধরে অদক্ষতা ও লোকসান কাজটিকে কঠিন করে তুলেছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পাটখাত ফের ক্রমবর্ধমান অনুকূল বৈশ্বিক ও স্থানীয় পরিবেশে গুণগত পরিবর্তনের জন্য প্রস্তুত হয়েছে।
কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
কানাডায় অটয়োয় যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতি স্মরণ করছে সূর্যসন্তানদের
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) হাইকমিশন অডিটোরিয়ামে যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়।
হাইকমিশনার ড. খলিলুর রহমানের সভাপতিত্বে হাইকমিশনের অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতিতে এই দিবস পালিত হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের শহীদ সদস্য, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী এবং অন্য মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
যুক্তরাষ্ট্র চায় বাংলাদেশে নির্বাচন সহিংসতামুক্ত পরিবেশে হোক: মুখপাত্র
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচন সহিংসতামুক্ত পরিবেশে অনুষ্ঠিত হওয়ার আশাবাদ জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে ট্রাক ও যাত্রীবাহী বাসে পরপর অগ্নিসংযোগ, রেল ট্র্যাক অপসারণ, অবরোধ চলাকালীন ট্রেনের কোচে পেট্রোলবোমা হামলার কথা উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র কী মনে করছে এই ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচেষ্টাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে কি না।
উত্তরে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অন্যতম উপাদান হলো নির্বাচনটি সহিংসতা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আপনারা আমাকে এই মঞ্চ থেকে ধারাবাহিকভাবে বলতে শুনেছেন আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চাই।’
গত ১৩ ডিসেম্বর মিলার সব পক্ষকে সংযম বজায় রাখতে এবং সহিংসতা এড়ানোর আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সম্প্রতি বলেছেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায় এবং এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অহিংস নির্বাচন দেখতে চায়।
মোমেন বলেন, তারা অহিংস নির্বাচনের নিশ্চয়তা দিতে পারে না, কারণ এটা রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সবার আন্তরিকতা ও সদিচ্ছার উপর নির্ভর করে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস’ পালিত
যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৩’ পালন করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী বীর শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।
আরও পড়ুন: মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
এরপর দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। আলোচনা পর্বে মূল বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের উপস্থায়ী প্রতিনিধি ও চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স তৌফিক ইসলাম শাতিল।
উপস্থায়ী প্রতিনিধি তার বক্তব্যের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের শাহাদাৎ বরণকারী সব সদস্য, ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বরে নিহত সব শহীদ বুদ্ধিজীবী, মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদ এবং নির্যাতনের শিকার মা-বোনদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।
দিবসটিকে আমাদের ইতিহাসের এক কলঙ্কময় অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতির এই বীর সন্তানেরা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের বিজয়ের পথ প্রশস্ত করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিনগুলোতে পাকহানাদার বাহিনী ও তাদের দোসররা যখন বুঝে গিয়েছিল যে তাদের পরাজয় নিশ্চিত, তখনই তারা বাংলাদেশকে মেধাশূণ্য করতে বেছে বেছে পরিকল্পিতভাবে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে।’
যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি অব লেবার জুলি সু'র সঙ্গে রাষ্ট্রদূত ইমরানের সাক্ষাৎ
যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি অব লেবার জুলি সু'র সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে মতবিনিময় করেছেন।
১৪ ডিসেম্বর (যুক্তরাষ্ট্র সময়) যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তর আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের ফাঁকে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত ও ভারপ্রাপ্ত মার্কিন সেক্রেটারি অব লেবার বাংলাদেশের বর্তমান শ্রম পরিস্থিতি এবং শ্রমিকদের অধিকার উন্নয়নে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের নির্বাচন সংক্রান্ত কুতথ্যে 'ডিপ ফেক' বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ
তারা বাংলাদেশের শ্রমমান নিয়ে দুই সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সম্পৃক্ত থাকতে এবং পক্ষগুলোর উদ্বেগ আরও বুঝতে সম্মত হন।
রাষ্ট্রদূত ইমরান একই অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম দপ্তরের ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া লি'র সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।
ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (বাণিজ্য) সেলিম রেজা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের সহায়তায় আরও ৮৭ মিলিয়ন ডলার দেবে যুক্তরাষ্ট্র
ঢাকা বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে প্রযুক্তি সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
বিজয় দিবস উদযাপনে ঢাকায় ৩০ ভারতীয় ওয়ার ভেটারেন
মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫২তম বার্ষিকী উপলক্ষে ৩০ ভারতীয় ওয়ার ভেটারেন এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ৬ জন কর্মরত কর্মকর্তা বিজয় দিবস উদযাপনে অংশ নিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন অনুসারে, ‘এই সফরগুলো আমাদের বন্ধুত্ব উদযাপন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে।’
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে স্মরণীয় করে রাখতে ভারত ও বাংলাদেশ একে অপরের ওয়ার ভেটারেন ও কর্মরত অফিসারদের প্রতি বছর তাদের বিজয় দিবস উদযাপনে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানায়।
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবী ও বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
মহান মুক্তিযুদ্ধের ৫২তম বার্ষিকী উপলক্ষে ৩০ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ৬ জন কর্মরত অফিসার কলকাতায় বিজয় দিবস উদযাপনে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার ভারতের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।
একইভাবে ৩০ ভারতীয় ওয়ার ভেটারেন এবং ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ৬ জন কর্মরত অফিসার বাংলাদেশের বিজয় দিবস উদযাপনে অংশ নিতে ঢাকায় পৌঁছেছেন।
হাইকমিশন বলেছে, এই দ্বিপক্ষীয় সফরগুলো বাংলাদেশি মুক্তিযোদ্ধা এবং ভারতীয় ওয়ার ভেটারেন দুই দেশের অনন্য বন্ধুত্ব উদযাপন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। যা মূলত দখল, নিপীড়ন ও গণনৃশংসতা থেকে বাংলাদেশের মুক্তির জন্য ভারত ও বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর অভিন্ন আত্মত্যাগের প্রতীক।
আরও পড়ুন: ‘বিজয়’: বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী-মুক্তিযোদ্ধা বীরেন সোম ও শিশু শিল্পীদের নিয়ে গ্যালারি কসমসের দিনব্যাপী আর্ট ইভেন্ট
মিশরে বাংলাদেশ দূতাবাসে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত
মিশরের কায়রোতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ভবনে বৃহস্পতিবার যথাযোগ্য মর্যাদা ও গাম্ভীর্যের সঙ্গে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।
দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু কর্নার সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কর্মকর্তারা অংশ নেন।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো বাণী পাঠ করা হয়।
আরও পড়ুন: বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে জাতিকে পঙ্গু করা যায়নি: হাছান মাহমুদ
দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ প্রথমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীসহ সকল শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এই দিনে (১৪ ডিসেম্বর) দেশের প্রখ্যাত বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।
তিনি বলেন, ‘এই দিনটি পালনের মাধ্যমে আমরা তাদের গভীরভাবে স্মরণ করি এবং আমাদের জাতীয় জীবনে তাদের অবদানকে তুলে ধরেছি, তাদের আত্মত্যাগ এবং স্বাধীনতার জন্য ত্যাগের ইতিহাস স্মরণ করি।’
অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারের শহীদ সদস্য, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বুদ্ধিজীবী ও অন্যান্য শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
আরও পড়ুন: শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে জাতি স্মরণ করছে সূর্যসন্তানদের
একাত্তরের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন আরও ১৩৬ বাংলাদেশি
লিবিয়ার বেনগাজির বন্দিশালায় আটক আরও ১৩৬ জন অনিয়মিত বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) দেশটির রাজধানী ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় বুরাক এয়ারের (ইউজেড ০২২২) চার্টার্ড ফ্লাইটে দেশে ফেরেন তারা।
এরআগে গত ২৮ নভেম্বর ত্রিপোলির আইনজেরা বন্দিশালায় আটক ১৪৩ জন, ৩০ নভেম্বর ১১০ জন এবং ৬ ডিসেম্বর বেনগাজী বন্দিশালায় আটক ১৪৫ অনিয়মিত বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইওএমের কর্মকর্তারা তাদের অভ্যর্থনা জানান।
আইওএমের পক্ষ থেকে তাদের প্রত্যেককে পকেট মানি হিসেবে ৬ হাজার ৫৮ টাকা এবং কিছু খাবার উপহার দেওয়া হয়।
এসময় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক (কল্যাণ) মোস্তফা জামিল খান দেশে ফেরা বাংলাদেশিদের খোঁজ-খবর নেন।
তিনি বাড়ি ফিরে লিবিয়াতে তাদের ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা প্রতিবেশী ও আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে আলোচনার পরামর্শ দেন।
মোস্তফা জামিল বলেন, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন টাকা খরচ করে বা দালালের খপ্পরে পড়ে অবৈধ পথে বিদেশে পা না বাড়ায় সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে অভিবাসীরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
উল্লেখ্য, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ত্রিপোলির বাংলাদেশ দূতাবাস এবং আইওএমের সহযোগিতায় লিবিয়ায় আটকে পড়া বাংলাদেশিদের দেশে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে।
খুব শিগগিরই আরও অনিয়মিত বাংলাদেশিকে লিবিয়া থেকে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে আর্ন্তজাতিক অভিবাসন সংস্থার ভাড়া করা চারটি চাটার্ড ফ্লাইটে মোট ৫৩৪ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।