বৈদেশিক-সম্পর্ক
মানবিক সহায়তায় শরণার্থীদের স্বস্তির ব্যবস্থা করতে বিদেশি সরকারগুলোর সমর্থন বাড়াতে হবে: আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ
আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ বুধবার বলেছে, বাংলাদেশের শিবিরগুলোতে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছেন। যাদের শিগগিরই মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। এর মধ্যে শিবিরগুলোতে সহিংসতা বেড়েছে এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তার পরিমাণও কমেছে।
যুদ্ধ প্রতিরোধ এবং আরও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলার জন্য নীতিমালা প্রণয়নের লক্ষ্যে কাজ করা স্বাধীন এই সংস্থাটি বলেছে, দাতাদের উচিৎ সহায়তার পরিমাণ বাড়ানো এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার জন্য ঢাকার দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করা।
সংস্থাটির নতুন প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আসার ৬ বছর পরও বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের দেশে ফেরার কাছাকাছি পর্যায়ে নেই।’
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ার মতো দুর্দশাগ্রস্ত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তা করুন: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
নতুন কী
বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরগুলোতে ২০১৭ সাল থেকে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গার বসবাস। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর লড়াই এবং ত্রাণসহায়তা কমে আসায় সেখানকার ভয়াবহ পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ঢাকা ও নেপিডো শরণার্থীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বিরাজমান নিরাপত্তাহীনতা এবং নাগরিকত্ব ও অন্যান্য সুরক্ষার বিষয়ে স্পষ্ট প্রতিশ্রুতি না থাকায় বড় সংখ্যক শরণার্থীর প্রত্যাবাসনের বিষয়টি অবাস্তব।
কেন বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ
প্রত্যাবাসনের জন্য চাপ প্রয়োগে ঢাকা শরণার্থীদের চলাফেরার স্বাধীনতা এবং বাংলাদেশে কাজ করার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। ত্রাণসহায়তা সংস্থাগুলোর কর্মকাণ্ড সংকুচিত করার মাধ্যমে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কাজও জটিল করে তুলেছে। শুধু বেঁচে থাকার তাগিদে শরণার্থীরা অপরাধী চক্রগুলোতে যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনের মতো মরিয়া পথে পা বাড়াচ্ছে।
কী করা উচিৎ
মানবিক সহায়তায় সাড়াদানের ক্ষেত্রে নিজেদের সমর্থন আরও বাড়ানোর মাধ্যমে বিদেশি সরকারগুলো শরণার্থীদের আশু স্বস্তির ব্যবস্থা করতে পারে। একইসঙ্গে, দীর্ঘস্থায়ী সংকটের সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে দাতাদের সহযোগিতায় ত্রাণসহায়তা দক্ষতা এবং শরণার্থীদের স্বনির্ভরতা বাড়াতে ঢাকার উচিৎ নিজেদের নীতি-কৌশলে সমন্বয় সাধন করা। শরণার্থী শিবিরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা ঢেলে সাজানোর বিষয়টিও খতিয়ে দেখা উচিৎ ঢাকার।
প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টা
এদিকে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানে সাড়াদানে আন্তর্জাতিক সমর্থন কমছে। ২০২২ সালে জাতিসংঘের মানবিক আবেদনে মাত্র ৬৩ শতাংশ অর্থ পাওয়া গেছে। আর ২০২৩ সালের এখন পর্যন্ত অর্থসহায়তার প্রতিশ্রুতি আরও অনেক কমেছে। এর ফলে মানবিক সংস্থাগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো থেকে পিছিয়ে আসতে হয়েছে।
সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) দুইবার খাদ্য রেশনের পরিমাণ কমাতে বাধ্য হয়েছে। প্রতি মাসে জনপ্রতি ১২ ডলার থেকে কমিয়ে ৮ ডলার করা হয়েছে, যা একদিনে ২৭ সেন্ট করে পড়ে।
এই কাটছাঁট বিপর্যয়কর; কারণ অধিকাংশ শরণার্থী ত্রাণসহায়তার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সঙ্গে মিশে যাওয়া ঠেকাতে সরকারের বিধিনিষেধের অর্থ হলো তাদের বৈধ কর্মসংস্থান খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক আগ্রাসনের পর খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি সমস্যাটিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইতোমধ্যেই এমন অনেক ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, ত্রাণসহায়তা কমানোর ফলে শিশুদের মধ্যে অপুষ্টির হার বেড়ে যাওয়া থেকে শুরু করে দাম্পত্য সহিংসতা আরও বেড়ে যাওয়ার মতো ক্ষতিকর প্রভাব পড়েছে।
২০১৮ ও ২০১৯ সালে দু’টি ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর ২০২৩ সালের শুরুর দিকে নেপিডো এবং ঢাকা প্রত্যাবাসনের একটি পাইলট প্রকল্প নিয়ে অগ্রসর হয়েছে। এর অংশ হিসেবে প্রথম পর্যায়ে এক হাজারের বেশি শরণার্থী ফিরতে পারে।
মধ্যস্থতাকারী ভূমিকায় থাকা চীনের পাশাপাশি দুইপক্ষ (নেপিডো এবং ঢাকা) বিভিন্ন কারণে এ নিয়ে অগ্রগতি সাধনে আগ্রহী। মিয়ানমারের সামরিক সরকার বিশ্বাস করে, ২০১৭ সালের গণহত্যার অভিযোগের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে এ প্রত্যাবাসন তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনে সাহায্য করবে।
আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ বলেছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার আশা করছে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনে এটি তাদের পক্ষে কাজে লাগবে। তবে প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। শরণার্থীরা তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে নেপিডোর দেওয়া আশ্বাসের বিষয়ে সন্দিহান আর তাদেরকে স্বাভাবিকভাবে নাগরিকত্ব প্রদানে অস্বীকৃতির বিষয়ে সতর্ক। শরণার্থীদের সতর্ক হওয়ার উপযুক্ত কারণ রয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করতে জি-২০ নেতাদের প্রতি আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নভেম্বরে রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনী এবং দেশটির অন্যতম শক্তিশালী জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির মধ্যে নতুন করে লড়াই শুরু হয়। যা নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ এবং স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনকে কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে।
ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা, ত্রাণসহায়তা কমে যাওয়া এবং প্রত্যাবাসনে অচলাবস্থা- এই ৩টি বিষয় অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। বিষয়গুলো এমন এক সংকট তৈরি করেছে যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
বাংলাদেশ সরকারের বিধিনিষেধ শরণার্থীদের সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতাকে আরও গভীর করেছে এবং মানবিক সহায়তার ওপর চাপ বাড়িয়েছে। ঢাকার এমন নীতি বাস্তবতার সঙ্গে যায় না, যেখানে হাজার হাজার শরণার্থী ইতোমধ্যেই শরণার্থী শিবিরের আশপাশের শহরগুলোতে অনানুষ্ঠানিকভাবে কাজ করছে। সেখানে তারা নিজেদের অবৈধ অবস্থানের কারণে নিয়মিত শোষণের শিকার এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের ঘুষ দিতে বাধ্য হয়।
সংস্থাটি বলেছে, শরণার্থী শিবিরে ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্য এবং অদূর ভবিষ্যতে মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা ঘিরে অনিশ্চয়তার কারণে সৃষ্ট হতাশা অনেক রোহিঙ্গাকে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। এর মধ্যে রয়েছে অর্থের জন্য তরুণদের সশস্ত্র গোষ্ঠী বা অপরাধী চক্রগুলোতে যোগদান থেকে শুরু করে খাবার গ্রহণকারী সদস্যের সংখ্যা কমাতে পরিবারগুলোতে নিরুপায় হয়ে বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের বাল্যবিয়ে দেওয়া।
কয়েক হাজার হতাশ শরণার্থী মালয়েশিয়ায় যাওয়ার আশায় (সমুদ্রপথে) ঝুঁকিপূর্ণ যাত্রাও করেছে। একই সময় অজ্ঞাত সংখ্যক শরণার্থী ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও নিরবে রাখাইন রাজ্যে ফিরে গেছে কিংবা সাধারণত শরণার্থী শিবির ছেড়ে যাওয়া নিষেধ এমন আইন থাকার পরও বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে গিয়ে নিরুদ্দেশ হয়েছে।
ক্রাইসিস গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোর সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে এই দুষ্টচক্র ভাঙতে হবে। দেশটির একটি টেকসই পদক্ষেপের সূচনা করা উচিৎ, যা এ সংকট যে দীর্ঘায়িত ধরনের তা স্বীকার করে নেবে, এমনকি যখন দেশটি প্রত্যাবাসনের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে অব্যাহতভাবে চাপ দিয়ে যাচ্ছে।
স্বনির্ভরতা গড়ে তুলতে এবং ত্রাণনির্ভরতা কমিয়ে দেয় এমন উদ্যোগগুলো এগিয়ে নিতে দাতাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে তারা কেবল তখনই সেটা করতে পারে, যখন জরুরি ত্রাণসহায়তার বাইরের কর্মকাণ্ডের অনুমতি দিয়ে ঢাকা তার নীতিগুলো পুনর্বিবেচনা করবে।
অন্তর্বর্তী সময়টুকুতে দাতাদের মানবিক অর্থসহায়তাকে এমন পর্যায়ে ফিরিয়ে আনা উচিৎ, যা শরণার্থীরা যাতে পর্যাপ্ত খেতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা থেকে শুরু করে তাদের মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের ব্যবস্থা করে।
গ্রুপটি জানিয়েছে, ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা মোকাবিলায় বাংলাদেশকেও শরণার্থী শিবিরগুলোতে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাপনা সংস্কার করতে হবে, শরণার্থী জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে বৃহত্তর বেসামরিক নেতৃত্বের সুযোগ করে দিতে হবে এবং ব্যক্তিগত লাভের জন্য শরণার্থী সংকটকে কাজে লাগাচ্ছে এমন অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার আহ্বান জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞের
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে চায় বাংলাদেশ-সৌদি পার্লামেন্ট ফ্রেন্ডশিপ কমিটি
সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিতে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ-সৌদি পার্লামেন্ট ফ্রেন্ডশিপ কমিটির কো-চেয়ারম্যান খালেদ এম আল বাওয়াদ।
দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, খেলাধুলা, পর্যটনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই দুই ভ্রাতৃপ্রতিম দেশের সম্পর্ক আরো বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে বলে তিনি সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সঙ্গে সোমবার (৪ ডিসেম্বর) মজলিসে শুরায় অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আরবদের সম্পর্ক ঐতিহাসিক ও সহস্রাব্দ প্রাচীন এবং এই সম্পর্ক সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।
এ সময় রাষ্ট্রদূত সৌদি আরবের যুবরাজ প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমানের দূরদর্শী নেতৃত্বে সৌদি আরবের চলমান উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড, সংস্কার এবং আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক পর্যায়ে গঠনমূলক ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
তিনি রিয়াদে ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০৩০ আয়োজনের এবং ২০৩৪ সালে ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ায় সৌদি সরকারকে অভিনন্দন জানান৷
তিনি বলেন, এটি অবশ্যই বিশ্ব পর্যায়ে সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে।
আরও পড়ুন: সৌদি প্রবাসীদের জন্য চালু হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র সেবা
রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারী বলেন, ‘বাংলাদেশ গত কয়েক বছরে সৌদি আরবের সঙ্গে বিভিন্ন খাতে সহযোগিতার বিষয়ে ১৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে। অনেক চুক্তির খসড়া এবং সমঝোতা স্মারক আলোচনার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। সৌদি বাণিজ্যমন্ত্রী চলতি বছরের মার্চে ৫৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে বাংলাদেশ সফর করেন।’
তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য দুই বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। সৌদি আরব বাংলাদেশে বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করছে, একইসঙ্গে বাংলাদেশও সৌদি আরবে বিনিয়োগ করছে।
এ সময় শুরা সদস্য খালেদ এম আল বাওয়াদ বলেন, সৌদি আরবে বাংলাদেশের বিশাল সংখ্যক শ্রমিক যথেষ্ট সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন ও সৌদি অর্থনীতিকে সামনে এগিয়ে নিতে সহায়তা করছেন। এ ছাড়াও তারা দুই দেশের মানুষের মধ্যে মেল-বন্ধন তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি শ্রমিকদের সৌদি আরবে কাজের সুযোগ করে দেবার জন্য সৌদি নেতৃত্বের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মজলিসে শুরায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে বাংলাদেশ-সৌদি পার্লামেন্ট ফ্রেন্ডশিপ কমিটির সৌদি পক্ষের সকল সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করবে সৌদি কোম্পানি
সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাবেদ পাটোয়ারীর নিয়োগ মেয়াদ বেড়েছে ১৮ মাস
কপ-২৮ সম্মেলনে স্থানীয় জলবায়ু নেতৃত্বে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বাংলাদেশ
চলমান জলবায়ু সম্মেলনে ইনোভেশন ইন ডেভেলপিং ফাইন্যান্স ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ) লোকাল লেড অ্যাডাপটেশন (এলএলএ) চ্যাম্পিয়নশিপ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত স্থানীয় সরকার ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্প এ সম্মান অর্জন করে। এই লজিক প্রকল্পটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সুইডেন, ডেনমার্ক, জাতিসংঘের মূলধন উন্নয়ন তহবিল (ইউএনসিডিএফ) এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) সহায়তায় বাস্তবায়িত হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) রেসিলিয়েন্স হাবে আয়োজিত এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে স্থানীয় পর্যায়ে অভিযোজন ও সহনশীলতা বিনির্মাণে বাংলাদেশের অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এই পুরস্কার প্রদান করা হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলো মোকাবিলায় স্থানীয়ভাবে পরিচালিত সৃজনশীল, প্রশংসনীয় এবং সম্প্রসারণযোগ্য প্রকল্পগুলোকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী এবং জনগণকে পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহায়তা করার উদ্দেশ্যে ২০২২ সালে জিসিএ এলএলএ চ্যাম্পিয়ন্স অ্যাওয়ার্ডস চালু করা হয়।
আরও পড়ুন: কপ-২৮: ৫ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে অন্য দেশের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ
অর্থায়ন বৃদ্ধিতে উদ্ভাবনী পদ্ধতির জন্য এই পুরষ্কার দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পক্ষে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এই পুরস্কার গ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের ৯টি প্রধান জলবায়ু ও ঝুঁকিপূর্ণ জেলায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ এই প্রকল্পের আওতায় উপকৃত হয়েছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় আরো ভালোভাবে প্রস্তুত হওয়ার জন্য ৪ লাখেরও বেশি পরিবারের ক্ষমতায়ন করেছে।
এই মানুষগুলো এখন জলবায়ু-সহনশীল জীবিকায় বিনিয়োগ করতে পারেন, বৈচিত্র্যময় আয়ের উৎস বেছে নিতে পারে্ন এবং অভিযোজনের চর্চাগুলো বাড়ানোর জন্য বাজার এবং বিনিয়োগে নিজেদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে পারেন।
আরও পড়ুন: কপ-২৮: বিশ্বব্যাপী জলবায়ু প্রতিক্রিয়া ত্বরান্বিত করার আহ্বান
ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার বলেন, ‘স্থানীয় সরকার ইনিশিয়েটিভ অন ক্লাইমেট চেঞ্জ (লজিক) প্রকল্পের স্বীকৃতি স্থানীয়ভাবে পরিচালিত জলবায়ু অভিযোজন ও সহনশীলতার প্রতি বাংলাদেশের দৃঢ় অঙ্গীকারের ফসল। এই পুরস্কার স্থানীয় সরকার বিভাগ এবং এর উন্নয়ন অংশীদারদের নিষ্ঠার স্বীকৃতি।এটি জলবায়ু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনের শক্তিকে একটি নজির হিসেবে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন এবং তাদের জন্য টেকসই ও জলবায়ু সহনশীল ভবিষ্যতে অবদান রাখতে রূপান্তরমূলক উদ্যোগকে সহায়তা যোগাতে ইউএনডিপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
উল্লেখ্য, জিসিএ অ্যাওয়ার্ডস কেবল বিজয়ীদের অর্জনকেই স্বীকৃতি প্রদান করে না বরং স্থানীয় পর্যায়ের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার সম্মিলিত প্রচেষ্টাকেও বিশ্বের কাছে তুলে ধরে। টেকসই আগামীর জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা এবং উদ্ভাবন এর যোগান দেওয়ার মাধ্যমে জলবায়ু সহনশীলতা গড়ে তুলতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবগুলোর সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এই ধরনের পুরষ্কারগুলোর অনন্য ভূমিকা রয়েছে।
আরও পড়ুন: কপ২৮-এ বিশুদ্ধ জ্বালানির বিষয়ে অগ্রগতি আনতে হবে: যুক্তরাজ্য
চিকিৎসাবঞ্চিত দরিদ্র ও সম্প্রদায়কে নিয়ে গবেষণায় অবদান রাখছে আইসিডিডিআর,বি: লিলি নিকোলস
আইসিডিডিআর,বি শুধু গবেষণায় নয়, সম্প্রদায়ের জন্যও অবদান রাখছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ড. লিলি নিকোলস।
তিনি বলেন, বিশেষ করে দরিদ্র লোক, যাদের চিকিৎসা পরিষেবার কোনো উপায় বা সুযোগ নেই তাদের নিয়ে গবেষণা করছে সংস্থাটি।
মঙ্গলবার একটি অনুষ্ঠানে ড. নিকোলস এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি অবিশ্বাস্য অবদান। আপনি পরবর্তীতে কী করবেন তা দেখার জন্য আমিও খুব আগ্রহী। কানাডা অবশ্যই শুরু থেকেই গর্বিত মূল দাতা হিসেবে আপনাদের সঙ্গে ছিল এবং থাকবে।’
বৈশ্বিক স্বাস্থ্য গবেষণা ও উদ্ভাবনে অগ্রণী ভূমিকা পালনের ৬৩ বছর পূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালী ক্যাম্পাসে আইসিডিডিআর,বি'র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হয়।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া চুক্তি সংস্থা (এসইএটিও) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) সহায়তায় কলেরা রিসার্চ ল্যাবরেটরি (সিআরএল) নামে চালু হয়। পরে ১৯৭৮ সালে আইসিডিডিআর,বি নামে প্রতিষ্ঠানটির নামকরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সংসদে পাস হওয়া আইসিডিডিআর,বি আইন ২০২২-এর প্রথম বর্ষপূর্তি উদযাপন করা হয়, যা একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইসিডিডিআরবি'র ভূমিকা পুনর্ব্যক্ত করে।
বিশেষ সেমিনারে তাহমিদ আহমেদের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে দিবসটি শুরু হয়। চিকিৎসা গবেষণা ও জনস্বাস্থ্যে আইসিডিডিআরবি'র গুরুত্বপূর্ণ অবদান তুলে ধরেন তিনি।
আইসিডিডিআর,বি'র ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) এর যুগান্তকারী উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. আহমেদ। টিটেনাস টক্সয়েড ভ্যাকসিন গবেষণায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিসহ শৈশবকালীন ডায়রিয়াজনিত রোগের মৃত্যুহার হ্রাস এবং মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের অগ্রগতিতে এর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
কার্যকর মুখে খাওয়ার কলেরার টিকা তৈরি, গুরুতর অপুষ্টির চিকিৎসার জন্য গাইডলাইন প্রতিষ্ঠা এবং বৈশ্বিক পোলিও নির্মূল প্রচেষ্টায় অবদান রাখার ক্ষেত্রে আইসিডিডিআরবি'র নেতৃত্বের কথাও উঠে আসে তার বক্তব্যে।
আরও পড়ুন: সন্তান প্রসবে সবচেয়ে বেশি ব্যয় সিজারে: আইসিডিডিআরবি
এশিয়ায় তাপচাপ মোকাবিলায় নারীদের সহনশীলতা বাড়াতে নতুন উদ্যোগ এডিবি'র
এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলজুড়ে নারী ও মেয়েদের উপর তাপচাপের প্রভাব আরও ভালভাবে বুঝতে এবং অভিযোজনে বিনিয়োগের জন্য একটি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) এই নতুন উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়।
নতুন কারিগরি সহায়তা কর্মসূচির আওতায় এডিবি নারীদের ওপর তাপচাপের ক্রমবর্ধমান হুমকি কীভাবে প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে গবেষণা করবে এবং সুনির্দিষ্ট নীতি, পদক্ষেপ ও বিনিয়োগ নির্ধারণ করবে যা নারী ও মেয়েদের ওপর তাপের প্রভাব কমাতে সরকারকে সহায়তা করতে পারে।
বাংলাদেশ, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্ক ও তাজিকিস্তানে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে।
কপ-২৮ সম্মেলনের উদ্বোধনীতে এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, 'এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সবচেয়ে উষ্ণতম বছরের জন্য অবশ্যই রয়েছি। এটি নারীদের অর্থনৈতিক উৎপাদনশীলতা, খাদ্য নিরাপত্তায় তাদের ভূমিকা এবং নারীদের ব্যবহৃত অবকাঠামোর ওপর নজিরবিহীন চাপ সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, ‘চরম তাপের মতো জলবায়ু পরিবর্তনের পরিণতি মোকাবিলা না করে উন্নয়ন আর সম্ভব নয়। আমাদের অবশ্যই নারীদের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের জ্বালানি সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ২০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
প্রচণ্ড গরমে বিশ্বব্যাপী ৬৫০ বিলিয়ন ঘণ্টারও বেশি বার্ষিক শ্রম ক্ষতি হয়। যা প্রায় ১৪৮ মিলিয়ন পূর্ণ-সময়ের চাকরির সমতুল্য- য একটি পরিমাপে ব্যাঘাতের দিক থেকে কোভিড-১৯ মহামারির সঙ্গে তুলনীয়।
নারীরা এই ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রা দ্বারা অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত হয়, প্রাণঘাতী পরিস্থিতি এবং উল্লেখযোগ্য আর্থ-সামাজিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
এডিবি এবং আরশট-রকফেলার ফাউন্ডেশন রেজিলিয়েন্স সেন্টারের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আরশট-রক গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন বলেন, 'ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলের নারীরা প্রায়শই আমাদের উষ্ণায়নের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’ ‘এসব ভারসাম্যহীনতা দূরীকরণে এডিবির উদ্যোগ একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট ফিলিপে ক্যালডেরন বলেন, 'পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ প্রচণ্ড গরমে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।’
‘নীতিনির্ধারকদের অবশ্যই সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রদায়গুলোকে রক্ষা করার জন্য ব্যবস্থা নিতে হবে, বিশেষত শহরগুলোতে যেখানে শহুরে তাপ দ্বীপের প্রভাবের কারণে সমস্যাটি আরও গুরুতর। তাপপ্রবাহের নামকরণ এবং শ্রেণিবদ্ধকরণ থেকে শুরু করে শহুরে সবুজায়নের উদ্যোগগুলো, শহরগুলো তাদের নাগরিকদের জীবন ও জীবিকা সুরক্ষিত করার সমাধানগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে অগ্রভাবে রয়েছে।’
ফিজির নারী, শিশু ও দারিদ্র্য বিমোচন বিষয়ক মন্ত্রী লিন্ডা তাবুইয়া বলেন, ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তন একটি জীবন্ত বাস্তবতা, আমরা সেখানে প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পাচ্ছি যে প্রচণ্ড তাপ কীভাবে বিদ্যমান লিঙ্গ বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে। ‘আমাদের সম্মিলিত জলবায়ু প্রতিক্রিয়ার জন্য লক্ষ্যযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-উত্তরপশ্চিমাঞ্চল আন্তর্জাতিক বাণিজ্য করিডোর উন্নয়ন: বাংলাদেশকে ৩০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে এডিবি
ইউএন-হ্যাবিট্যাট অ্যান্ড আরস্ট-রক গ্লোবালের চিফ হিট অফিসার এলেনি মাইরিভিলি বলেন, ‘নারীদের ওপর তাপচাপের অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাবের জন্য একটি উপযুক্ত পদ্ধতি প্রয়োজন। ‘আমাদের জলবায়ু কৌশলগুলোতে লিঙ্গ দৃষ্টিভঙ্গি একীভূত করা কেবল অপরিহার্য নয়; এটি জরুরি এবং সমতার বিষয়।’
মেলবোর্ন সিটির মেয়র স্যালি ক্যাপ বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে শহরগুলো সর্বাগ্রে রয়েছে।‘নেতা হিসাবে, আমাদের অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যে আমাদের জলবায়ু সহনশীলতার প্রচেষ্টা, বিশেষত তাপচাপের বিষয়ে, অন্তর্ভুক্তিমূলক,নারীদের অনন্য দুর্বলতা এবং শক্তিকে স্বীকৃতি দেয়।
এই উদ্যোগটি ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে সমস্ত নতুন কার্যক্রমে হিট অ্যাকশন-প্ল্যানিংকে একীভূত করার,নারীদের জলবায়ু সহনশীলতা বাড়ানোর দিকে মনোনিবেশ করা এবং লিঙ্গ-প্রতিক্রিয়াশীল পদক্ষেপের পক্ষে পরামর্শ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিকে চিহ্নিত করে।
এডিবির মতে, ২০১৯ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে অভিযোজনের জন্য ৩৪ বিলিয়ন ডলারসহ নিজস্ব সম্পদ থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়ন প্রদানের ব্যাংকের উচ্চাকাঙ্ক্ষার সঙ্গে এই কর্মসূচিটি সামঞ্জস্যপূর্ণ।
২০২২ সালে এডিবি ৭ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু অর্থায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এরমধ্যে প্রশমনের জন্য ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার এবং অভিযোজনের জন্য ২ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার রয়েছে।
ব্যাংকটি গত বছর বেসরকারি খাত থেকে জলবায়ু অর্থায়নে অতিরিক্ত ৫৪৮ মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংক-এডিবির ঋণ নয়, অনুদান চাই: টিআইবি
বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ১.০৮ বিলিয়ন ডলার যোগ হতে পারে
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে বাংলাদেশ ১ দশমিক ০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ পেতে পারে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বলেছেন, আগামী ১২ ডিসেম্বর এডিবি বোর্ড সভায় বাংলাদেশের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ডলারের একটি ঋণ প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, একই দিনে আইএমএফের বোর্ড সভায় বাংলাদেশকে দেওয়া ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮১ মিলিয়ন ডলার অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংস্থাটি।
উভয় ঋণ প্রস্তাব আগামী সপ্তাহে অনুমোদিত হলে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ১ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার যোগ হতে পারে।
এটি বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিতে স্বস্তি আনবে। যা আমদানি বিল পরিশোধ এবং বাংলাদেশের নাগরিকদের বিদেশে শিক্ষা ও চিকিৎসার অর্থ প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় ডলারের ঘাটতি মেটাবে।
আরও পড়ুন: ডিসেম্বরে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার আশা বাংলাদেশ ব্যাংকের
৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের পরবর্তী কিস্তির জন্য আইএমএফের সঙ্গে চুক্তি সই
আইএমএফ ৪.৭০ বিলিয়ন ডলার ঋণের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা শিথিল করেছে
বাংলাদেশের নির্বাচনের ফলাফল অনুমান করতে যাচ্ছি না: মার্কিন মুখপাত্র
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেখার আকাঙ্ক্ষা পুনর্ব্যক্ত করে বলেছে, তারা আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে অনুমান করতে চায় না।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ৪ ডিসেম্বর নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমি নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোনো অনুমান করতে যাচ্ছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এর আগে বেশ কয়েকবার যা বলেছি, আমি তাই বলব।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ নিয়ে বাইডেনকে দেওয়া ৬ কংগ্রেসম্যানের চিঠি সম্পর্কে অবগত নই: মার্কিন মুখপাত্র
মিলার বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে একযোগে কাজ করতে সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ এবং অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যোগাযোগ অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চায় নির্বাচন যেন শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: আইপিইএফ নিয়ে ঢাকার সঙ্গে যোগাযোগ করছে ওয়াশিংটন: মার্কিন মুখপাত্র
নৈতিক সাংবাদিকতা নিশ্চিতের উপায় নিয়ে চীনে শুরু হয়েছে ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিট
ডিজিটালাইজেশনের যুগে যথাযথ রিপোর্টিং এবং নৈতিক সাংবাদিকতা নিশ্চিত করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে দক্ষিণ চীনের গুয়াংজুতে জড়ো হয়েছেন বৈশ্বিক মিডিয়া নেতারা।
৫ম ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে ১০১টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের প্রায় ৪৫০ জন প্রতিনিধি অংশ নেন, যার মধ্যে ১৯৭টি মূলধারার গণমাধ্যমের প্রতিনিধিও রয়েছেন। এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য 'বুস্টিং গ্লোবাল কনফিডেন্স, প্রমোটিং মিডিয়া ডেভেলপমেন্ট'।
ইউএনবি ও ঢাকা কুরিয়ারের প্রধান সম্পাদক এনায়েতউল্লাহ খান সপ্তাহব্যাপী সম্মেলনে ২ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ইউএনবির পরিচালক মাসুদ জামিল খানও সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন।
সম্মেলনটির সহ-আয়োজক হিসেবে রয়েছে চীনের সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া। যেখানে প্রতিনিধিরা মানব উন্নয়ন ও নিরাপত্তা, নতুন প্রযুক্তিগত সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ, নতুন যুগে গণমাধ্যম ও বাজার এবং অভিন্ন উদ্বেগের অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
আরও পড়ুন: চীনে ওয়ার্ল্ড মিডিয়া সামিটে ইউএনবি প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এনায়েতউল্লাহ খান
পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল পরিচালনা করবে সৌদি কোম্পানি
পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার জন্য বুধবার সৌদি কোম্পানি রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটি) এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) একটি ‘কনসেশন এগ্রিমেন্ট’ সই করবে।
একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ইউএনবিকে জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সৌদি বিনিয়োগমন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিহ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চুক্তি সই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
অনুষ্ঠানের আগে সৌদি মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
এটিই হবে প্রথম বিদেশি কোম্পানি, যারা বাংলাদেশের বন্দর পরিচালনা করবে।
আরএসজিটি একটি আন্তর্জাতিক টার্মিনাল অপারেটর, যা সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল এবং মালয়েশিয়ান মাইনিং কোম্পানির (এমএমসি) মধ্যে অংশীদারিত্বের প্রতিনিধিত্ব করে।
সম্মিলিত সম্পদ, হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে বিশ্বব্যাপী দশটি বৃহত্তম কন্টেইনার টার্মিনালের একটি এটি। যার সম্মিলিত বার্ষিক হ্যান্ডলিং ক্ষমতা ২০ মিলিয়ন টিইইউস এবং এর ইক্যুইটি-ওয়েটেড থ্রুপুট ১০ মিলিয়ন মিলিয়ন টিইইউস।
চলতি বছরের মে মাসে কাতারের দোহায় সৌদি আরব বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বড় আকারের বিনিয়োগের প্রস্তাব দেয়। কারণ দেশটির স্থিতিশীল সরকার ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ভালো রেকর্ড রয়েছে।
সৌদি আরবের বিনিয়োগ মন্ত্রী খালিদ এ আল-ফালিয়াহ এবং অর্থনীতি ও পরিকল্পনামন্ত্রী ফয়সাল আলিব্রাহিম সম্প্রতি দোহায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার বাসভবনে যৌথভাবে সাক্ষাৎ করার সময় এই প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশে বিনিয়োগে সৌদি আরবের আগ্রহ বৃদ্ধির বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সম্প্রতি বলেছেন, সৌদি আরব একটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন সহযোগীতে পরিণত হয়েছে।
পারস্পরিক সহযোগিতা এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পৃক্ততাকে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য রাষ্ট্রদূতকে তার সক্রিয় ও গতিশীল ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি বাংলাদেশ-সৌদি সম্পর্ক শক্তিশালী থেকে শক্তিশালীতর হবে এবং দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক সুবিধার বিষয়ে এগিয়ে যাবে।’
কসোভোকে নিজেদের উচ্চমানের আরএমজি ও ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য আমদানি করার পরামর্শ বাংলাদেশের
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন কসোভোকে বাংলাদেশ থেকে উচ্চমানের আরএমজি ও ওষুধ আমদানির পরামর্শ দিয়েছেন।
রবিবার (ডিসেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বাংলাদেশে নিযুক্ত কসোভো প্রজাতন্ত্রের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত গুনার উরেজা বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করার সময় তিনি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ মানবসম্পদ নেওয়ার পরামর্শ দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বাংলাদেশে কসোভোর রাষ্ট্রদূত হিসেবে চার বছরেরও বেশি সময় দায়িত্ব পালনের পর, গুনার উরেজা শিগগিরই বাংলাদেশ থেকে বিদায় নিতে চলেছেন।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে রাষ্ট্রদূতের সক্রিয় ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ানোর উপর জোর দেন।
বিদায়ী রাষ্ট্রদূত কসোভো প্রজাতন্ত্রের প্রতি সমর্থনের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: ১৯৭১ সালে ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে কিসিঞ্জারের ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল: মোমেন
তিনি বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের প্রশংসা করেন। কসোভোর বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, আঞ্চলিক উন্নয়ন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উন্নয়নে বাংলাদেশ ও কসোভো দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের আগ্রহ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান।
তারা নারীর ক্ষমতায়ন এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য শান্তির পূর্বশর্ত নিয়েও আলোচনা করেন।
বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের মানুষ, সংস্কৃতি ও সৌন্দর্যের প্রশংসা করে বলেন, বাংলাদেশ চিরকাল তার হৃদয়ে থাকবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা সক্রিয়, মার্কিন শ্রম নীতি নিয়ে খুব উদ্বেগ নেই: পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন
যুক্তরাষ্ট্র আমাদের সঙ্গে আছে, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আছি: পররাষ্ট্রমন্ত্রী