বৈদেশিক-সম্পর্ক
মস্কোর ফাইন্যান্সিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপদেষ্টা বোর্ডের চেয়ারম্যান ইউনূস
রাশিয়ান ফেডারেশনের অধীন ফাইন্যান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের সভাপতি নিযুক্ত হয়েছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
রাশিয়ান ফেডারেশন সরকারের অধীনে ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির রেক্টর প্রফেসর স্তানিস্লাভ প্রোকোফিয়েভের সঙ্গে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয়।
আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড গঠনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ওই সভায় অধ্যাপক ইউনূসকে উপদেষ্টা বোর্ডের সভাপতি নিযুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনি তা সানন্দে গ্রহণ করেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের সভাপতি হলেন ড. ইউনূস
ফাইন্যান্সিয়াল ইউনিভার্সিটি রাশিয়ার শীর্ষ পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাডেমিক স্টাফের সংখ্যা তিন হাজার। এছাড়া গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়টির আমন্ত্রণে সেখানকার ছাত্র-শিক্ষকদের মিলনায়তনে নিজের সামাজিক কার্যক্রমের উপরে বক্তব্য দেন।
যেখানে তিনি নেট জিরো, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও শূন্য বেকারত্বের লক্ষ্য অর্জনে সামাজিক ব্যবসাভিত্তিক নতুন সভ্যতা নির্মাণে তার চিন্তা-ভাবনা ও রূপকল্প তাদের কাছে তুলে ধরেন।
ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির এই আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড পরামর্শকেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষা কমিটির মতো কাজ করবে; যার মূল লক্ষ্য হবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগানো।
এছাড়া বিষয়ভিত্তিক গভীর বিশেষজ্ঞ-বিশ্লেষণ প্রদান করা, কৌশলগত উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তৈরি করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য অ্যাকাডেমিক, গবেষণা ও উদ্ভাবনমূলক কর্মসূচি গ্রহণে সহায়তা করা।
প্রফেসর ইউনূস ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টরের বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কর্মসূচি ও গবেষণার জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা তৈরিতে আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের ভূমিকা ব্যাখ্যা করেন।
তিনি প্রফেসর ইউনূসের সামাজিক ব্যবসা তত্ত্বের প্রশংসা করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব পর্যায়ের অ্যাকাডেমিক কর্মসূচিতে এই তত্ত্ব অন্তর্ভুক্ত করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন— বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মিখাইল এসকিন্দারভ, অ্যাকাডেমিক অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক ভাইস রেক্টর প্রফেসর একাতেরিনা কামেনেভা, সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড এডুকেশনাল প্রজেক্টসের পরিচালক প্রফেসর কিরিল বাবায়েভ, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশানস বিভাগের প্রধান মিস লিলিয়া।
আরও পড়ুন: স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এখন জরুরি কাজ, বিলম্ব গ্রহণযোগ্য নয়: ড. ইউনূস
কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো: দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস
ঢাকায় ফিরেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস
ছুটি কাটিয়ে সোমবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকায় ফিরেছেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইন্সের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে তিনি ঢাকায় পৌঁছান।
তবে মার্কিন রাষ্ট্রদূত কলম্বো থেকে ফিরে এসেছেন, নাকি এটি তার ট্রানজিট পয়েন্ট ছিল তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পিটার হাস শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে ছুটি কাটাতে গত ১৬ নভেম্বর ঢাকা ত্যাগ করেন।
ঢাকা থেকে তার চলে যাওয়ার গুজবের মধ্যেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কোনো রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার সময় কূটনৈতিক চ্যানেলের মাধ্যমে যে দেশে কর্মরত সে দেশকে জানানো একটি কূটনৈতিক প্রক্রিয়া, যা মন্ত্রণালয় জনসাধারণের সামনে প্রকাশ করে না।
যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের ঢাকা ত্যাগের বিষয়ে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরিন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যখন কোনো রাষ্ট্রদূত বা হাইকমিশনার স্টেশন ছেড়ে যান, তখন তারা একটি কূটনৈতিক নোটের মাধ্যমে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানান এবং সেই বিশেষ কূটনীতিকের অনুপস্থিতিতে কে মিশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান হবেন তাও উল্লেখ থাকে।’
তিনি বলেন, ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করে না।’
আরও পড়ুন: পিটার হাসকে হুমকির বিষয়ে সরকারের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে: মার্কিন দূতাবাস
পূর্বশর্ত ছাড়াই সংলাপের উপায় বের করার আহ্বান পিটার হাসের
৩ প্রধান দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একসঙ্গে বৈঠকের অনুরোধ পিটার হাসের
বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নতি সাধনে অবদান রাখবে জাইকা
সম্প্রতি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সঙ্গে ‘ডেভেলপমেন্ট অব মিডিয়েশন অ্যান্ড সিভিল লিটিগেশন প্র্যাকটিস ফর এনহ্যান্সমেন্ট অব অ্যাকসেস টু জাস্টিস’- শীর্ষক একটি চুক্তি (রেকর্ড অব ডিসকাশন) সই করেছে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
এটি জাইকার কারিগরী সহায়তা প্রকল্প হিসেবে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় আইনজীবীদের জন্য প্রশিক্ষণ, সচেতনতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম এবং অন্যান্য উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আদালত, লিগ্যাল এইড অফিস (আইনি সহায়তা কেন্দ্র) এবং বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলো থেকে ন্যায়বিচার পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রাখবে জাইকা।
প্রকল্পটি প্রথমে ঢাকা, কুমিল্লা ও নরসিংদীতে শুরু হবে; পরে এটি বাংলাদেশের অন্যান্য জেলাগুলোতেও সম্প্রসারণ করা হবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ৫০ বছর উদযাপন জাইকার
জাইকা বাংলাদেশের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে বলেন, ‘ন্যায়বিচার ও একটি সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার। আইন ও বিচার বিভাগ এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সঙ্গে আমরা বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার উন্নতি সাধনে একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখব বলে আশাবাদী।’
সরকারের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্ম সচিব উম্মে কুলসুম এবং ইআরডি’র অতিরিক্ত সচিব ও উইং চিফ (আমেরিকা ও জাপান) একেএম শাহাবুদ্দিন।
এছাড়া, এই প্রকল্পের অধীনে সবার জন্য মধ্যস্থতা সংক্রান্ত আইনি সেবা আরও সহজতর এবং সাধারণ নাগরিকের মাঝে মধ্যস্থতা প্রক্রিয়া জনপ্রিয় করতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
দেশে মামলার জট হওয়ার পেছনে মূল কারণগুলো বের করে এই সমস্যা সমাধানে কাজ করবে জাইকা। যার ফলে দেওয়ানী মামলার বিচার প্রক্রিয়ার উন্নতি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন আদালতে প্রায় ৩৫ লক্ষ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই প্রকল্পের কার্যক্রম ২০২৪ সালে শুরু হবে।
আরও পড়ুন: নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তাদের মাঝে জাইকার পৃষ্ঠপোষকতায় ট্যাব বিতরণ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জাইকার সেমিনার অনুষ্ঠিত
প্রিমাকভ রিডিংস ইন্টারন্যাশনাল ফোরামের উদ্বোধন মস্কোয়
নবম আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক ও বিশেষজ্ঞ ফোরাম প্রিমাকভ রিডিংসের উদ্বোধন হয়েছে।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) রাশিয়ার মস্কোর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফোরামের উদ্বাধন হয়।
রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, বিশেষজ্ঞ ও ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানে আলোচনার মূল বিষয় হলো পোস্ট-গ্লোবালাইজেশন হরাইজনস।
এই বছর ফোরামে আর্মেনিয়া, আজারবাইজান, বাংলাদেশ, চীন, কিউবা, মিশর, ফিনল্যান্ড, ভারত, ইরান, কাজাখস্তান, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, উজবেকিস্তানসহ বিশ্বের ৩১টি দেশের ৮০ জন আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, বিশ্ব রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ উপস্থিত থাকবেন।
আয়োজকরা জানিয়েছে, রুশ ও বিদেশি বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞ সম্প্রদায়ের ১৩০০ জনের বেশি প্রতিনিধি, সরকারি সংস্থা এবং রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক ব্যক্তিত্ব ফোরামে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠানে দুজন রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত থাকবেন। একজন হলো উগান্ডার বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইওওয়েরি কাগুতা মুসেভেনি এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট (১৯৯৯-২০০৮) থাবো এমবেকি।
আসন্ন ফোরামের আরেকটি বিশেষত্ব হলো প্রথমবারের মতো প্রিমাকভ রিডিংয়ে রাশিয়া-আফ্রিকা শীর্ষক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।
প্রিমাকভ রিডিংয়ের দুই দিনে আটটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এতে বক্তৃতা করবেন।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও গণমাধ্যম বিভাগের পরিচালক মারিয়া জাখারোভা ২২ নভেম্বর এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘তিনি পক্ষাপাতহীন বহুমেরুর বৈশ্বিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে রাশিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করার পরিকল্পনা করেছেন।’
আরও পড়ুন: ৯ম ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড এক্সপার্ট ফোরামে ভাষণ দেবেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী
ফোরামে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে স্বাগত বক্তব্য দেবেন রাশিয়ান ফেডারেশনের প্রেসিডেন্টের সহকারী ও প্রিমাকভ রিডিংস অর্গানাইজিং কমিটির প্রধান ইউরি উশাকভ, রাশিয়ান ফেডারেশনের ফেডারেশন কাউন্সিলের ডেপুটি স্পিকার কনস্ট্যান্টিন কোসাচেভ, প্রিমাকভ ন্যাশনাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব ওয়ার্ল্ড ইকোনমি অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনসের (আইএমইএমও) প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ডিনকিন এবং রাশিয়ার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট সের্গেই ক্যাটারিন।
আলেকজান্ডার ডিনকিন বলেন, ‘গত ৩০ বছরে আমরা যে বিশ্বায়ন দেখেছি তার চালিকাশক্তি শেষ হয়ে গেছে। নতুন বিশ্বায়নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রথম পদক্ষেপ ছিল নয়াদিল্লিতে জি২০ বৈঠক। তবে ভবিষ্যৎ কেমন হবে তা বলা মুশকিল। কোভিড-১৯ মহামারির পরিণতি, ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্যের সংকট, চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা, জ্বালানি ঝুঁকি এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ; যেমন জলবায়ু ও অভিবাসন সংকট প্রভৃতি বিষয়গুলো পরবর্তী বৈশ্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করবে। তাই এগুলোই চলতি বছরের প্রিমাকভ রিডিংয়ের কেন্দ্রবিন্দু।’
আলোচনায় বৈশ্বিক জ্বালানি বাজারের জন্য রাজনৈতিক ঝুঁকি, রাশিয়া এবং মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ ককেশাসের দেশগুলোর সহযোগিতা, চীন-আমেরিকান সম্পর্ক এবং গ্লোবাল সাউথের উন্নয়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করছে।
অংশগ্রহণকারীরা বাল্টিক অঞ্চলে শক্তির ভারসাম্য এবং রাশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্কের বিকাশের সম্ভাবনার বিষয়েও আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই বছর ফোরামটি অনলাইন ও সশরীরে দুইভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিছু বিদেশি বক্তা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
আইএমইএমও আরএএস ইউটিউব চ্যানেলে সবাই আলোচনা দেখতে পারবেন।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকায় বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত: রাশিয়া
রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গভর্নর সের্গেইভিচের বৈঠক অনুষ্ঠিত
রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের সভাপতি হলেন ড. ইউনূস
রাশিয়ান ফেডারেশন সরকারের অধীনস্ত ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের সভাপতি নিযুক্ত হয়েছেন নোবেল বিজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
২০২৩ সালের ২৩ নভেম্বর নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ও রাশিয়ান ফেডারেশন সরকারের অধীনস্ত ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির রেক্টর প্রফেসর স্তানিস্লাভ প্রোকোফিয়েভের মধ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে একটি আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রফেসর ইউনূসকে এই উপদেষ্টা বোর্ডের সভাপতি নিযুক্ত করার প্রস্তাব দেন এবং তিনি তা সানন্দে গ্রহণ করেন।
সোমবার (২৭ নভেম্বর) ইউনূস সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক লামিয়া মোরশেদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটি রাশিয়ার শীর্ষ ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম। এর একাডেমিক স্টাফের সংখ্যা তিন হাজার।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে 'হাতিয়ার' হিসেবে শ্রম আইনের ব্যবহার বন্ধের আহ্বান অ্যামনেস্টির
গত বছর প্রফেসর ইউনূস এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে সেখানকার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন। তিনি ‘তিন শূন্য’ অর্থাৎ শূন্য নীট কার্বন নিঃস্বরণ, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীকরণ ও শূন্য বেকারত্বের লক্ষ্য অর্জনে সামাজিক ব্যবসা-ভিত্তিক একটি নতুন সভ্যতা নির্মাণে তার চিন্তা-ভাবনা ও রূপকল্প তাদের তুলে ধরেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির এই আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ড একটি পরামর্শ-কেন্দ্রিক উচ্চশিক্ষামূলক কমিটির মতো কাজ করবে যার মূল লক্ষ্য হবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাগুলো কাজে লাগানো, বিষয়বস্তুভিত্তিক গভীর বিশেষজ্ঞ-বিশ্লেষণ প্রদান করা, কৌশলগত উন্নয়নে বিভিন্ন প্রস্তাবনা তৈরি করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির জন্য একাডেমিক, গবেষণা ও উদ্ভাবনমূলক কর্মসূচি গ্রহণে সহায়তা করা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট প্রফেসর মিখাইল এসকিন্দারভ, একাডেমিক অ্যাফেয়ার্স বিষয়ক ভাইস রেক্টর প্রফেসর একাতেরিনা কামেনেভা, সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড এডুকেশনাল প্রজেক্টসের পরিচালক প্রফেসর কিরিল বাবায়েভ, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস বিভাগের প্রধান মিস লিলিয়া প্রিখোদকো, এবং রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংক অব রাশিয়ার সার্ভিস ফর দ্য প্রটেকশন অব ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস টু কনজ্যুমারস এন্ড মাইনরিটি শেয়ারহোল্ডারস এর প্রধান মিখাইল মামুতা।
আরও পড়ুন: কোনো অপরাধ করিনি, শঙ্কিত কেন হবো: দুদক কার্যালয়ে ড. ইউনূস
অনলাইন প্লাটফর্মে অনুষ্ঠিত এই সভায় ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্টিফিক এন্ড এডুকেশনাল প্রজেক্টসের এবং ইনস্টিটিউট অব ফার ইস্টার্ণ স্টাডিজ অব দ্য রাশিয়ান একাডেমি অব সায়েন্সেস এর পরিচালক ভাষাতত্ত্ব বিজ্ঞানে ডক্টরেট অধ্যাপক কিরিল বাবায়েভকে,আন্তর্জাতিক উপদেষ্টা বোর্ডের সেক্রেটারী পদে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এছাড়াও সভায় অংশগ্রহণকারীরা ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটি ও ইউনূস সেন্টারের মধ্যে সম্ভাব্য সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করেন। ফাইনান্সিয়াল ইউনিভার্সিটির রেক্টর প্রফেসর স্তানিস্লাভ প্রোকোফিয়েভ টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক উন্নয়নের গ্যারান্টি হিসেবে সামাজিক ব্যবসার ধারণার প্রতি তার অকুণ্ঠ সমর্থন ব্যক্ত করেন।
আরও পড়ুন: স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই এখন জরুরি কাজ, বিলম্ব গ্রহণযোগ্য নয়: ড. ইউনূস
বাংলাদেশ সম্পর্কে অন্যান্য দেশের মন্তব্য অনভিপ্রেত: পররাষ্ট্র সচিব
বাংলাদেশ নিয়ে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক মন্তব্য ও পাল্টা মন্তব্যকে ‘অনভিপ্রেত’ বলে উল্লেখ করেছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, ‘দেখুন, আমি এটা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। বাংলাদেশের কী হচ্ছে বা না হচ্ছে, তা নিয়ে কথা বলতে পারি। তৃতীয় বা চতুর্থ দেশ নিজেদের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা করছে... এ বিষয়ে আমি কী বলব- এটাকে অনভিপ্রেত বলা যেতে পারে।’
রবিবার (২৬ নভেম্বর) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এসব কথা বলেন।
দুই বড় দেশের সাম্প্রতিক মন্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকরা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে পররাষ্ট্র সচিব এ মন্তব্য করেন।
মারিয়া জাখারোভা ২২ নভেম্বর সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে বলেন, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ‘স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি’ নিশ্চিত করার নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টার বিষয়ে বারবার কথা বলেছে রাশিয়া।
আরও পড়ুন: অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের 'হস্তক্ষেপ' নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব
রাশিয়ার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস এবং স্থানীয় বিরোধী দলের একজন উচ্চ পদস্থ প্রতিনিধির মধ্যে অক্টোবরের শেষে একটি বৈঠকের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ পেয়েছে।
রুশ পক্ষ জানিয়েছে, বৈঠকে তারা দেশে ব্যাপক সরকারবিরোধী বিক্ষোভ সংগঠিত করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে।
জবাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বৈঠক নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার 'ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যাখ্যার' বিষয়ে তারা অবগত।
শনিবার (২৫ নভেম্বর) মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশের বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলকে পছন্দ করে না যুক্তরাষ্ট্র।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পুনর্ব্যক্ত করেছে, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, তারাও তাই চায়, আর তা হলো- শান্তিপূর্ণভাবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হোক।
আরও পড়ুন: এফওসি: বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা
দিল্লিভিত্তিক কূটনীতিকদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছে বাংলাদেশ
ভোটের আগে সীমান্তে সতর্কতা বাড়াবে বিজিবি-বিএসএফ
বাংলাদেশে আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময় বা তার আগে নাশকতার ঝুঁকি এড়াতে অভিন্ন সীমান্তে সতর্কতা জোরদার করতে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত।
রবিবার (২৬ নভেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুই দেশের সীমান্ত বাহিনী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতের বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) কঠোর নজরদারি করতে সম্মত হয়েছে।
পররাষ্ট্র সচিব সম্প্রতি সীমান্ত থেকে বোমা তৈরির উপকরণের কয়েকটি চালান জব্দের কথা উল্লেখ করেন।
শুক্রবার নয়াদিল্লির ঐতিহাসিক হায়দ্রাবাদ হাউসে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার সঙ্গে তার বৈঠকে দুই দেশ সীমান্ত ও নিরাপত্তা, ব্যবসা, বাণিজ্য ও সংযোগ, পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, দুই দেশের জনগণের মধ্যকার সম্পর্ক এবং উন্নয়ন সহযোগিতাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ‘বিস্তারিত আলোচনা’ করেছে।
উভয় পক্ষ ফরেন অফিস কনসালটেশনে (এফওসি) উপআঞ্চলিক, আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয়ে মতবিনিময় করেছে।
আরও পড়ুন: নাশকতার অভিযোগ: ২৮ অক্টোবর থেকে ৭৩৯ জন গ্রেপ্তার
৪৮ ঘণ্টার অবরোধ: সারা দেশে ২৩০ প্লাটুন বিজিবি ও র্যাবের ৪৩০ টহল দল মোতায়েন
২৮ অক্টোবর থেকে সারাদেশে ২০৮টি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে
অভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের 'হস্তক্ষেপ' নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন পররাষ্ট্র সচিব
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, কোনো দেশ যদি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার চেষ্টা করবে এবং তাদের বোঝানোর চেষ্টা করবে যে, বাংলাদেশের উদ্দেশ্য নিয়ে তাদের সন্দেহ করার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে ডব্লিউআইওএনের কূটনৈতিক প্রতিবেদক সিধান্ত সিবালকে তিনি বলেন, 'আপনারা জানেন, প্রতিটি দেশেরই তাদের অধিকার বা এখতিয়ার রয়েছে এবং তারা সবাই আমাদের উন্নয়ন সহযোগী।’
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা ২+২ ভারত-মার্কিন বৈঠকের পর ভারতের অবস্থান কী তা আগেই বলেছেন।
তিনি বলেন, 'তিনি আমার কাছে এ কথার পুনরাবৃত্তি করেছেন এবং এই অবস্থানের প্রশংসা করেছেন যে নির্বাচন আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং আমাদের প্রতিষ্ঠান ও জনগণের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সমর্থন করবে: মোমেন
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে এবং সরকারও অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, 'বর্তমানে কয়েকটি রাজনৈতিক দল ছাড়া সব রাজনৈতিক দল প্রার্থী মনোনয়ন, বাছাইয়ের বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতেছে।’
আশা করে তিনি বলেন, জনগণের অংশগ্রহণে তারা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করবে এবং বিদেশি পর্যবেক্ষকদের স্বাগত জানানোর জন্য উন্মুক্ত থাকবে, যাতে তারা এসে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারে এবং দেখতে পারে যে তারা কতটা অবাধ ও সুষ্ঠু।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে মাসুদ বলেন, কিছু কিছু কৃষিপণ্য আছে যেখানে ঘাটতি রয়েছে।
তিনি বলেন, 'আমরা যদি ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কিছু নিশ্চয়তা পেতে পারি যে দ্রুত সময়ের মধ্যে এগুলো বাংলাদেশে সরবরাহ করা যেতে পারে, যদি না ভারতে কিছু অভ্যন্তরীণ বাধ্যবাধকতা যেমন ঘাটতি থাকে। সুতরাং, আপনি জানেন, যদি সেই আশ্বাস দেওয়া হলে আমরা তাতে নীতিগতভাবে একমত হব। তবে প্রাসঙ্গিক প্রতিষ্ঠান ও প্রাসঙ্গিক সংস্থাগুলোকে বাছাই করার সমস্যা এবং এটি কীভাবে করা যেতে পারে, সেই ব্যবস্থা করতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। তবে নীতিগতভাবে এটি দুর্দান্ত।’
আরও পড়ুন: এফওসি: বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা
মাসুদ বলেন, শুক্রবার তিনি ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার সঙ্গে খুব ফলপ্রসূ আলোচনা করেছেন এবং অনেক দ্বিপক্ষীয় বিষয় এবং আঞ্চলিক ও বহুপক্ষীয় বিষয় নিয়েও আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, 'আমরা ২০২৩ সালে সংঘটিত অনেক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছি এবং কীভাবে আমরা নিকট ভবিষ্যতে অর্থাৎ ২০২৪ এবং তার পরেও নিজেদের অবস্থান নির্ধারণ করতে চাই।’
বাংলাদেশ সফলভাবে এলডিসি উত্তরণের মানদণ্ড পূরণ করেছে এবং ২০২৬ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করায় তারা সিইপিএ নিয়ে আলোচনা করেন।
মাসুদ বলেন, 'সুতরাং, সমস্ত আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা প্রত্যাহার করা হবে, যদিও কিছু দেশ স্বতন্ত্রভাবে ২০২৯ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশকে কিছু রূপান্তর ব্যবস্থা দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: দিল্লিভিত্তিক কূটনীতিকদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ভারত সাফটা'র বিধানসহ বিভিন্ন সহায়তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে, যার মাধ্যমে সার্কের অধীনে স্বল্পোন্নত দেশগুলো নির্দিষ্ট কিছু ক্যাটাগরিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।
তাই ২০২৬ সালের পর পরিস্থিতি ভিন্ন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। ‘তাই আমরা সিইপিএ বা কমপ্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ এগ্রিমেন্ট নিয়ে আলোচনা করছি এবং দুই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে, তারা একটি কারিগরি কমিটি গঠন করেছে।’
তিনি আরও বলেন, 'আমরা সিইপিএ চালু করতে পারি, বিশেষ করে ২০২৬ সালের নভেম্বরের মধ্যে।’
পররাষ্ট্র সচিব নয়া দিল্লিতে তার ভারতীয় সমকক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেন।
সাক্ষাৎকালে পররাষ্ট্র সচিব কানেক্টিভিটি, রোহিঙ্গা সংকট, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কোটাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি ও রাষ্ট্রদূত হাসের বৈঠক সম্পর্কে মস্কোর 'ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যাখ্যা' সম্পর্কে অবগত যুক্তরাষ্ট্র: ওয়াশিংটন
মার্কিন পররাষ্ট্র নীতি ও রাষ্ট্রদূত হাসের বৈঠক সম্পর্কে মস্কোর 'ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যাখ্যা' সম্পর্কে অবগত যুক্তরাষ্ট্র: ওয়াশিংটন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ও বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের বৈঠক নিয়ে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভার 'ইচ্ছাকৃত ভুল ব্যাখ্যার' বিষয়ে তারা অবগত বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
শনিবার মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশের বিশেষ কোনো রাজনৈতিক দলকে পছন্দ করে না যুক্তরাষ্ট্র।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর পুনর্ব্যক্ত করেছে, বাংলাদেশের জনগণ যা চায়, তারাও তাই চায়, আর তা হলো- শান্তিপূর্ণভাবে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন হোক।
পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের অভিন্ন লক্ষ্যকে সমর্থন করতে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তারা সরকার, বিরোধী দল, সুশীল সমাজ ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশের জনগণের সুবিধার্থে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাশিয়ার ইতিবাচক ভূমিকা প্রত্যাশা বিএনপির: রিজভী
২২ নভেম্বর সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মারিয়া জাখারোভা বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে 'স্বচ্ছতা ও অন্তর্ভুক্তি' নিশ্চিত করার বিষয়ে রাশিয়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে প্রভাবিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রচেষ্টার বিষয়ে বারবার কথা বলেছে।
রাশিয়ার পক্ষে জানানো হয়, অক্টোবরের শেষদিকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ও স্থানীয় বিরোধী দলের একজন উচ্চপদস্থ প্রতিনিধির মধ্যে বৈঠকের তথ্য উঠে এসেছে। বৈঠকে তারা দেশে সরকারবিরোধী গণবিক্ষোভ সংগঠিত করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: সরকারবিরোধী বিক্ষোভের পরিকল্পনা নিয়ে ঢাকায় বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত: রাশিয়া
বিশেষ করে ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভে’ অংশগ্রহণকারীদের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের হামলা করার কোনো পরিকল্পনা থাকলে সে বিষয়ে বিরোধী দলের ওই প্রতিনিধিকে তথ্য দিয়ে সহায়তার ‘প্রতিশ্রুতি’ দেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত।
ঢাকাস্থ রুশ দূতাবাসের এক ফেসবুক পোস্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে এরকম আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
রুশ মুখপাত্র বলেন, ‘বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এসব কর্মকাণ্ডকে কীভাবে বিবেচনা করা যায়? এসব বিষয়কে ওয়াশিংটন ও তার পক্ষ থেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে গুরুতর হস্তক্ষেপের চেয়ে কম কিছু নয়, যা কূটনৈতিক সম্পর্কের ১৯৬১ সালের ভিয়েনা কনভেনশনে উল্লিখিত নিয়মের প্রতি প্রকাশ্যে অবজ্ঞা করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘সংবিধান মেনে, স্বাধীনভাবে, বিদেশি শুভাকাঙ্ক্ষীদের সহায়তা ছাড়াই ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের সক্ষমতা নিয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ নেই।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে গভর্নর সের্গেইভিচের বৈঠক অনুষ্ঠিত
দিল্লিভিত্তিক কূটনীতিকদের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে জানিয়েছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে নয়া দিল্লিভিত্তিক মিশন প্রধানদের (প্রায় ৯০ জন) জানিয়েছে বাংলাদেশ।
নির্বাচন একটি ‘উৎসবের উপলক্ষ যেমন আমরা অনেক গণতান্ত্রিক দেশে দেখি’ উল্লেখ করে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন রাষ্ট্রদূতদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে ভোট দিতে এবং তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
মাসুদ দিল্লিতে কূটনীতিকদের বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটারদের অংশগ্রহণে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে নির্বাচন কমিশন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আরও পড়ুন: এফওসি: বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বাণিজ্য, নিরাপত্তা, সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আলোচনা
শুক্রবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র সচিব বাংলাদেশে একযোগে কূটনীতিকদের এসব জানান।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকালে হায়দ্রাবাদ হাউজে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনুষ্ঠিত ফরেন অফিস কনসালটেশনে যোগ দিতে তিনি নয়া দিল্লি সফর করেন।
সন্ধ্যায় তিনি নয়া দিল্লির বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ হাইকমিশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতদের ব্রিফ করেন।
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির অগ্রাধিকার ও গতিশীলতা তুলে ধরেন।
তিনি বিভিন্ন ভূ-রাজনৈতিক সমসাময়িক ইস্যুতে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে রাষ্ট্রদূতদের অবহিত করেন।
ব্রিফিংয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত
মাসুদ এ অঞ্চল ও এর বাইরে শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য শরণার্থীদের নিরাপদ ও স্থায়ী প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তাদের সমর্থন কামনা করেন।
ব্রিফিং সেশনে রাষ্ট্রদূতদের ২০২৪-২০২৫ মেয়াদের জন্য 'সি' ক্যাটাগরির আওতায় ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইম অর্গানাইজেশন (আইএমও) কাউন্সিলের সদস্যপদের জন্য নিজ নিজ সরকারের সমর্থন কামনা করা হয়। চলতি বছরের ১ ডিসেম্বর লন্ডনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
বাংলাদেশের সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক প্লাটফর্মে অব্যাহত স্থিতিশীলতা ও ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব এবং বৈশ্বিক উদ্বেগের বিষয়গুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ততার প্রেক্ষাপটে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ রাষ্ট্রদূতদের ঢাকায় কূটনৈতিক মিশন খোলার বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য নিজ নিজ সরকারকে অনুরোধ করার আহ্বান জানান।
তিনি এ প্রক্রিয়া সহজীকরণে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
পররাষ্ট্র সচিব একযোগে স্বীকৃত রাষ্ট্রদূতদের উত্থাপিত প্রশ্নের জবাব দেন।
পররাষ্ট্র সচিবের আজ (২৫ নভেম্বর) বিকালে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসন শুরুর প্রস্তুতি অব্যাহত থাকবে: পররাষ্ট্র সচিব