বৈদেশিক-সম্পর্ক
বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উত্তরণে ইইউ’র কাছে জিএসপি+ চান প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) বাংলাদেশকে জিএসপি+ দেবে।
তিনি বলেন, 'আমি আশা করি, ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের পর আমাদের উন্নয়নে সহায়তা করতে ইইউ বাংলাদেশকে জিএসপি+ দেবে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কমিশনের সদর দপ্তরে দুই নেতার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এ কথা বলেন।
এ বছর বাংলাদেশ-ইইউ অংশীদারিত্বের ৫০তম বার্ষিকী উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমরা আনন্দিত যে ইইউ এখন বাংলাদেশের বড় বাণিজ্য অংশীদার।
তিনি বলেন, ইইউ'র এভরিথিং-বাট-আর্মস স্কিম বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক অবদান রেখেছে। তিনি ২০০০ সালে তার প্রথম মেয়াদে এই ব্যবস্থাটি আনুষ্ঠানিকভাবে করার কথা স্মরণ করেন।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের সঙ্গে ঢাকার সই করা সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর আর্থিক চুক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলবায়ু পদক্ষেপ ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ইইউ'র সঙ্গে অংশীদারিত্বে ইইউ'র আগ্রহের প্রশংসা করে।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নেওয়া ১২ লাখ রোহিঙ্গার মানবিক সহায়তার জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবাসনের মধ্যে নিহিত। সংকটের দ্রুত টেকসই সমাধানের জন্য আমি ইইউকে সম্পৃক্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিকদের অধিকারের পাশাপাশি নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসনের বিষয়ে তারা অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, 'আমাদের কিছু স্থানীয় চ্যালেঞ্জের সমাধান খুঁজতে গবেষণা ও উদ্ভাবনে অংশীদারিত্বের আগ্রহ প্রকাশ করেছি আমি। আমরা কৌশলগত উপাদানগুলোতে আরও মনোনিবেশ করে ইইউর সঙ্গে ভবিষ্যতের অংশীদারিত্বের পরিকল্পনা করছি।
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
তিনি বলেন, তারা খুব শিগগিরই একটি অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছেন। তিনি বলেন, এটি আমাদের চমৎকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।
ইউরোপীয় কমিশন প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন তার বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এত বছর ধরে আমরা একটি দৃঢ় অংশীদারিত্ব গড়ে তুলেছি এবং এখন আমরা এটিকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে ঋণ ও অনুদান প্যাকেজ প্রসঙ্গে ইসি বলেন, ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি বিনিয়োগ প্যাকেজ জলবায়ুর জন্য ভালো এবং স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যও ভালো।
আরও পড়ুন: উন্নত ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
উন্নত ভবিষ্যতের জন্য যুদ্ধ-অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করুন: বিশ্ব নেতাদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী
উন্নত ভবিষ্যৎ গড়তে যুদ্ধ, সংঘাত ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে পদক্ষেপ নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'শান্তি ও অগ্রগতির জন্য মানুষের সংযোগই প্রাণশক্তি। ভবিষ্যতের সংকটের জন্য আমাদের আরও ভালোভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। আমাদের অবশ্যই দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ায় আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে জিজিএফ কনফারেন্স ভেন্যুতে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম ২০২৩-এর উদ্বোধনী অধিবেশনের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েনের আমন্ত্রণে এই ফোরামে অংশ নিচ্ছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ গ্লোবাল গেটওয়েকে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি বড় সংযোগকারী হিসেবে দেখতে চায়।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অংশীদার দেশগুলোর ৪০ জনেরও বেশি উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বেসরকারি খাত, সুশীল সমাজ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা ২৫-২৬ অক্টোবরের সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
আরও পড়ুন: উচ্চ পর্যায়ের সফরে ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী
তারা অবকাঠামো খাতে বৈশ্বিক বিনিয়োগ, সরকারি ও বেসরকারি খাতের চ্যালেঞ্জ, সর্বোত্তম অনুশীলন এবং শিক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে ইইউ বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন এবং হাই-টেক পার্কে সুযোগ-সুবিধা অনুসন্ধানের আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় বিনিয়োগ পরিবেশ দেয়। ‘আমি ইইউ বিনিয়োগকারীদের আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোর সুবিধাগুলো পরিদর্শন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। নিরাপদ কাজ ও বহুমাত্রিক অর্থনীতি নিয়ে আমাদের আরও কাজ করার সুযোগ রয়েছে।’
১৭০ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে বাংলাদেশ কৌশলগতভাবে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে অবস্থিত। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের ৩০০ কোটি গ্রাহকের বাণিজ্যকেন্দ্রে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, আঞ্চলিক অর্থনৈতিক করিডোরের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে সড়ক, রেল ও বন্দর অবকাঠামো নির্মাণ করা হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ। দেশটি নেপাল, ভুটান ও উত্তর-পূর্ব ভারতের স্থল-সংযুক্ত অঞ্চলগুলোতে বঙ্গোপসাগরে প্রবেশের প্রস্তাব দিয়েছে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলো প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করতে পারে।
শেখ হাসিনা বলেন, 'ইন্দো-প্যাসিফিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বাংলাদেশ ও ইইউয়ের মধ্যে কানেক্টিভিটি একটি অভিন্ন বাধ্যবাধকতা।’
তিনি বলেন, ইইউ বাংলাদেশের বিশ্বস্ত বাণিজ্য, উন্নয়ন ও মানবিক অংশীদার। ‘নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের গতিশীলতার ক্ষেত্রে আমাদের ফলপ্রসূ সহযোগিতা রয়েছে। ইইউয়ের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ ও অঙ্গীকার।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছি। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের জন্য সাড়ে ৩০০ কোটি ইউরো ঋণের জন্য আমরা ইআইবির সঙ্গে একটি যুগান্তকারী চুক্তি সই করেছি।’
বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকীতে তিনি ইইউ'র সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদারে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশে (এলডিসি) উত্তরণের জন্য বাণিজ্য অগ্রাধিকার অব্যাহত রাখার জন্য ইইউ'র প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৩৫তম বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ১৫ বছরেরও কম সময়ে ৭০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি ৪৬৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত করেছে। চরম দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ২৫ দশমিক ১ শতাংশ থেকে কমে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে নেমে এসেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে কাজ করবে।
তিনি বলেন, তার সরকার খাদ্য নিরাপত্তা, সর্বজনীন স্কুল ভর্তি, কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা, নিরাপদ পানি ও পয়োনিষ্কাশন, বিনামূল্যে আবাসন, গ্রামীণ যোগাযোগ, দুর্যোগ মোকাবিলা, জলবায়ু অভিযোজন, শতভাগ বিদ্যুৎ পরিষেবা নিশ্চিত, দেশব্যাপী ইন্টারনেট, শিল্প প্রবৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং সর্বোপরি নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা জলবায়ু ঝুঁকি থেকে সহনশীলতা ও সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, পরিবহন নেটওয়ার্ক, স্বাস্থ্য নিরাপত্তা, সবুজ জ্বালানি, ডিজিটাল রূপান্তর, গবেষণা ও উদ্ভাবনে গ্লোবাল গেটওয়ের মনোযোগের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার প্রশংসা করেন তারা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমরা আমাদের স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের জন্য ইইউ'র অব্যাহত বাণিজ্য অগ্রাধিকার চাই।’
তিনি বলেন, গ্রিন হাইড্রোজেনের প্রসারে বাংলাদেশ ইইউতে যোগ দিতে ইচ্ছুক। ‘সামুদ্রিক সম্পদের টেকসই ব্যবহারে ইইউয়ের দক্ষতা থেকে আমরা উপকৃত হতে পারি। আমাদের কৃষি উৎপাদন সংরক্ষণের জন্য কোল্ড চেইন নেটওয়ার্কগুলোতে বিনিয়োগ প্রয়োজন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জাম শিল্প উৎপাদনে বহুমুখীকরণে ইইউ'র প্রচেষ্টাকে সহায়তা করতে পারে। 'ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি নিয়ে আমাদের আসন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য আমরা অংশীদার খুঁজছিন।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠী ইইউয়ের দক্ষতা ও প্রতিভা অংশীদারিত্ব কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্রস্তুত। আমরা বিশ্বাস করি, গ্লোবাল গেটওয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে আমাদের 'স্মার্ট বাংলাদেশ' রূপকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করবে।”
আরও পড়ুন: নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বাংলাদেশ-ইইউ'র ৪০০ কোটি ইউরোর চুক্তি সই
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্ক সম্প্রসারণ ও উন্নয়নে নতুন অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছেন ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে শীর্ষ পর্যায়ের এই আলোচনা শুরু হয়।
সেই উপলক্ষে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের টেকসই সবুজ রূপান্তরে অবদান রাখতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের জন্য ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর চুক্তি সই করেছে ইইউ’র ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (ইআইবি) ও বাংলাদেশ। এটি দেশের জলবায়ু প্রশমন লক্ষ্যমাত্রা পূরণের লক্ষ্যেও করা হয়েছে।
শিক্ষা সহায়তা, নিরাপদ কাজ, সবুজায়ন, ই-গভর্নেন্স ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধে সহায়তার জন্য ৭০ কোটি ইউরো মূল্যের পাঁচটি অতিরিক্ত সহযোগিতামূলক পদক্ষেপও চালু করা হয়েছে।
ব্রাসেলসের বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেয়েন বলেন, 'ইইউ ও বাংলাদেশ ৫০ বছর ধরে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত অংশীদার। এখন, গ্লোবাল গেটওয়ের অধীনে সবুজ রূপান্তরের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে আমরা এই অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। ইউরোপীয় কমিশন, ইআইবি ও বাংলাদেশ নবায়ণযোগ্য জ্বালানি সহায়তা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একযোগে কাজ করবে। এই ৪০০ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ বাংলাদেশের জনগণ ও অর্থনীতিতে পরিবর্তন আনবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, 'আমরা আত্মবিশ্বাসী যে এই উদ্যোগ বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অবকাঠামোগত ঘাটতি দূরীকরণ, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ডিজিটাল উদ্ভাবন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আরও অনেক কিছুতে বিনিয়োগ করতে সক্ষম করবে। গ্লোবাল গেটওয়ে বন্ধুত্বের, অংশীদারিত্বের, বিশ্বাসের, স্বার্থসংশ্লিষ্ট পারস্পরিক নির্ভরশীলতার একটি প্রতীক।
নবায়ণযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পগুলোর জন্য ইইউ এবং ইআইবি (৩৯৫ মিলিয়ন) ইউরোর মধ্যে ঘোষিত ৪০০ মিলিয়ন ইউরোর অংশীদারিত্বের মধ্যে সাড়ে ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর ইইউ-গ্যারান্টিযুক্ত ইআইবি ঋণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং বিনিয়োগ অনুদানসহ ৪৫ মিলিয়ন ইউরোর মিশ্রণ সহায়তা প্যাকেজের পরিপূরক।
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
উপরন্তু, ১২ মিলিয়ন ইউরো মূল্যের গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশন প্রকল্প, যার মধ্যে ৭ মিলিয়ন ইউরো রয়েছে যা জার্মানির সহ-অর্থায়নে পরিচালিত হয়, যার লক্ষ্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ জ্বালানি রূপান্তরকে সহজতর করার নীতি, আইনি কাঠামো এবং বিনিয়োগের পরিবেশে কাজ করা।
প্রকল্পগুলো মূলত ইউটিলিটি স্কেল সৌর ফোটোভোলটাইক এবং উপকূলীয় বায়ু প্রকল্প এবং সম্ভাব্য সম্পর্কিত ব্যাটারি শক্তি সঞ্চয় ব্যবস্থার সমন্বয়ে সমগ্র বাংলাদেশে জ্বালানি ও গ্রামীণ উন্নয়নে অ্যাক্সেস বাড়াতে অবদান রাখবে।
এই কার্যক্রম বাংলাদেশে আনুমানিক ৭৫০ মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি সক্ষমতা স্থাপনে অবদান রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিনিয়োগগুলো বিদ্যুৎ বিতরণ ও বিকেন্দ্রীকরণের উন্নতি করবে, শেষ পর্যন্ত জাতীয় ও সম্ভাব্য আঞ্চলিক, সংযোগ ও সহনশীলতা বাড়াবে।
কারিগরি সহায়তার অংশ হিসেবে, ইইউ একই জমিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং খাদ্য উৎপাদন, সৌর শক্তি, হাইব্রিড সৌর শক্তি/বায়ু ও ব্যাটারিচালিত সৌরশক্তি একত্রিত করার উপায়সহ প্রকল্প প্রস্তাবগুলো পরীক্ষা করতে সহায়তা করবে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব অংশীজনদের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকার আহ্বান অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সৌর প্রকল্প ও উপকূলীয় বায়ু প্রকল্প জাতীয় গ্রিডের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।
গ্রিন এনার্জি ট্রানজিশনের জন্য অংশীদারিত্ব বাংলাদেশি আইনি কাঠামো তৈরিতে সহায়তা করবে যা অন্তর্ভুক্তিমূলক সবুজ জ্বালানি রূপান্তরের জন্য বিনিয়োগকে উৎসাহিত করবে এবং জ্বালানি খাতে নারী পেশাদারদের কর্মসংস্থানের সুযোগও উন্নত করবে।
গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে শিক্ষা খাতের (৩০ মিলিয়ন ইউরো), নিরাপদ কাজের কর্মসূচির উন্নয়নে, সবুজ নির্মাণ, কার্যকর ডিজিটাল গভর্নেন্স জোরদার এবং দেশের উন্মুক্ত স্থানে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা রোধে (প্রতিটি ক্ষেত্রে ১০ মিলিয়ন ইউরো) সহযোগিতার জন্য অতিরিক্ত ৭০ মিলিয়ন ইউরোর একটি প্যাকেজ সই হয়।
এ বছর ইইউ-বাংলাদেশ কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী। এই সময়ে ইইউ বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন, বাণিজ্য ও মানবিক অংশীদার হয়েছে।
এই পাঁচ দশকে রাজনীতি, বাণিজ্য, উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন ও কানেক্টিভিটির সমন্বয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক বহুমাত্রিক হয়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আইসিটি প্রতিমন্ত্রীর সাক্ষাৎ
যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) বেলজিয়ামের ব্র্যাসেলসে অনুষ্ঠিত টেক অ্যাক্সিলারেটর প্রোগ্রাম ২০২৩-এর `প্রযুক্তি বিপ্লবকে কাজে লাগানো: রাষ্ট্রের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক সেমিনারের পর টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন প্রতিমন্ত্রী।
এসময় টনি ব্লেয়ার প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকার কীভাবে জনগণের জীবনমান উন্নত করতে এবং আরও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়তে পারে সে বিষয়ে অনুপ্রেরণামূলক মতামত ব্যক্ত করেন।
ডিজিটাল অবকাঠামোতে বিনিয়োগ, উদ্ভাবনকে সমর্থন এবং প্রযুক্তিকে যথাযথভাবে নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালিত করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের সব অংশীজনদের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকার আহ্বান অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র
প্রযুক্তির শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বকে আরও ভালো আবাস ভূমি হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করায় টনি ব্লেয়ারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জুনাইদ আহমেদ পলক।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য জিরো ডিজিটাল ডিভাইড নিশ্চিত করতে একসঙ্গে কাজ করা।
এসময় তিনি স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট গভর্নমেন্ট, স্মার্ট ইকোনমি ও স্মার্ট সোসাইটি- এই চারটি স্তম্ভের ওপর ভিত্তি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের রূপরেখা তুলে ধরেন।
সাক্ষাৎ শেষে টনি ব্লেয়ার ইনস্টিটিউট আয়োজিত নৈশ্যভোজে অংশ নেন প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: বিএনপির সমাবেশের দিন রাস্তা বন্ধ করা হবে কিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন রাষ্ট্রদূত হাস
ফিলিস্তিনের কাছে মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ
বাংলাদেশে সব ধর্মের নাগরিকের অধিকার সমান: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাংলাদেশে সব ধর্মের নাগরিকের অধিকার সমান। সব সম্প্রদায়ের মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে লড়াই করে আমরা বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি। সবাই একসঙ্গে থাকলে আমরা সব ক্ষেত্রে অবশ্যই সফল হব।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বনানীতে কামাল আতাতুর্ক পার্কে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন ড. মোমেন।
আরও পড়ুন: আমরা এগুলোকে গুরুত্ব দিই না: বিএনপির কর্মসূচি সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আনন্দিত এজন্য যে সমাজের দুষ্ট লোকগুলোকে পরাজিত করেছি। শুধু পূজার সময় না, সারা বছরই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে এই দুষ্ট লোকগুলোর আর কখনো উত্থান না হয়।
এসময় ড. মোমেন সকলের সহযোগিতায় বাংলাদেশে একটি অসাম্প্রদায়িক অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) উপাচার্য সত্য প্রসাদ মজুমদার ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিদেশিদের ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রটি দেখা উচিত: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশের সব অংশীজনদের সহিংসতা ও ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকার আহ্বান অব্যাহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা বাংলাদেশে নির্বাচনের অগ্রগতি ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছে।
সোমবার (২৩ অক্টোবর) ওয়াশিংটনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ যে সকল অংশীজনেরা শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে।’
তিনি বলেন, এর মধ্যে রয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, রাজনৈতিক দল, নির্বাচন কমিশন, গণমাধ্যম এবং অবশ্যই ভোটাররা।
মুখপাত্র বলেছেন, ‘এবং আমরা সব অংশীজনদেরকে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার এবং সহিংসতা, হয়রানি ও ভয় দেখানো থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাতে থাকব।’
এর আগে রবিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় ‘শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ’ এবং ‘হস্তক্ষেপমুক্ত’ অংশগ্রহণের গুরুত্ব ব্যক্ত করেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দলের শুধু ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার পরিকল্পনা রয়েছে, রাজপথে বসার নয়।
তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকার রাজপথ আওয়ামী লীগের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
অন্যদিকে, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান শনিবার বলেছেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির সমাবেশে কেউ সহিংসতার চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে ডিএমপি চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেবে।
মার্কিন মুখপাত্র মিলার বলেন, কূটনৈতিক সম্পর্কের ভিয়েনা কনভেনশনের অধীনে বাংলাদেশের কূটনৈতিক প্রাঙ্গণ এবং কর্মীদের সুরক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি সরকার দেশের সকল মার্কিন মিশন এবং কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।’
চ্যালেঞ্জ নিতে চাই এবং মোকাবিলা করতে প্রস্তুত: মোমেন
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সোমবার বলেছেন, সরকার যে কোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিদিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি। কিন্তু আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে চাই এবং আমরা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত আছি।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, একা সফলতা অর্জন করা যায় না, এর জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে ‘পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাফল্যের গল্প’- শীর্ষক একটি প্রকাশনার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্জনের কথা তুলে ধরেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।
তিনি দুটি অসমাপ্ত কাজের কথাও উল্লেখ করেছেন। এগুলো হলো- রোহিঙ্গাদের নিরাপদে প্রত্যাবাসন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের বাকি খুনিদের ফিরিয়ে আনা।
শাহরিয়ার বলেন, এই দুটি কাজ খুবই জটিল ও চ্যালেঞ্জিং।
ফিলিস্তিনের কাছে মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ফিলিস্তিনের কাছে মানবিক সহায়তা হস্তান্তর করেছে বাংলাদেশ।
এসময় এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রদূত ইউসুফ এসওয়াই রমাদান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত এই প্রতীকী মানবিক সহায়তা গ্রহণ করেন।
এটি শিশুদের উপর বিশ্বের সবচেয়ে জঘন্য গণহত্যা বলে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, ‘এটা শুরু। আরও অনেক কিছু হবে।’
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রদূত প্রথম থেকেই বাংলাদেশ যে ভালোবাসা ও সম্মান দেখিয়ে আসছে তার জন্য বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ এই জঘন্য কাজের নিন্দা করার জন্য জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে এবং বলেছে যে যুদ্ধের শিকার হিসেবে আরও নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের মৃত্যু ও দুর্ভোগ রোধ করতে এই বর্বর যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতে, বাংলাদেশ বিশ্বাস করে যে ইসরায়েল বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্য করে গাজায় বর্তমানে যে যুদ্ধ চালাচ্ছে তা শুধু অসঙ্গতি ও অসামঞ্জস্যপূর্ণই নয়; এটি গাজার ফিলিস্তিনি জনগণকে সম্মিলিতভাবে শাস্তি দেওয়ার সমতুল্য এবং মানবাধিকারের সব মৌলিক নীতি এবং আন্তর্জাতিক নাগরিক চুক্তি ও কনভেনশনের পরিপন্থী।
বাংলাদেশ বলেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চলমান সংঘাতের মূল কারণগুলো সমাধান করার সময় এসেছে।
বাংলাদেশ ফিলিস্তিনি জনগণের স্ব-নিয়ন্ত্রণের অবিচ্ছেদ্য অধিকারকে বিশেষভাবে উল্লেখ করেছে এবং ইউএনএসসি রেজোলিউশনে আলোচিত পূর্ব জেরুজালেমকে রাজধানী হিসেবে ১৯৬৭ সীমানার ভিত্তিতে একটি দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান সমর্থন করে।
ফিলিস্তিন সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে আলোচনার টেবিলে আসার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার বেলজিয়াম সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৫-২৬ অক্টোবর বেলজিয়ামে অনুষ্ঠিতব্য ‘গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরাম’- এ যোগ দিতে তিন দিনের সরকারি সফরে মঙ্গলবার সকালে ব্রাসেলসের উদ্দেশে রওনা হবেন।
ইউরোপিয়ান কমিশনের (ইসি) প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেনের আমন্ত্রণে তিনি ব্রাসেলসে যাচ্ছেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি বাণিজ্যিক ফ্লাইট ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (এইচএসআইএ) থেকে ছেড়ে যাবে।
ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে ব্রাসেলস জাভেনটেম বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে।
সোমবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন ব্রাসেলস সফরকে ‘অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এই সফর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সহায়তা করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এই সফর ‘গুরুত্বপূর্ণ সময়ে’ হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ সফর। এটি আমাদের জন্য একটি অর্জন।’
আরও পড়ুন: গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্রাসেলস সফর বাংলাদেশ-ইইউ সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সফরকালে প্রধানমন্ত্রী ফোরামের সাইডলাইনে ইউরোপীয় দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে বেশ কয়েকটি বৈঠক করবেন।
২৫ অক্টোবর (বুধবার) প্রধানমন্ত্রী ইসি প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লেন এবং ইসির নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিসের সঙ্গে পৃথক দ্বিপক্ষয়ি বৈঠক করবেন।
বৈঠকের পর তিনি ইসি প্রেসিডেন্ট এবং ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (ইআইবি) প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ও ইআইবির সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করবেন। ইইউ বাংলাদেশকে ৪০৭ মিলিয়ন ইউরো রেয়াতি ঋণ ও অনুদানের আকারে দেবে। এর মধ্যে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো ছাড় দেওয়া হবে।
একই দিনে শেখ হাসিনা গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের উদ্বোধনী পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে যোগ দেবেন এবং তার বক্তব্য দেবেন।
বিকালে তিনি ইআইবি প্রেসিডেন্ট ড. ওয়ার্নার হোয়ারের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এছাড়া ইসি কমিশনার ফর ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট জেনেজ লেনারসিক এবং ইসি কমিশনার ফর ইন্টারন্যাশনাল পার্টনারশিপ জুট্টা উরপিলাইনেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মানে ইসি প্রেসিডেন্ট লেয়েনের দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন।
২৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) তিনি তার বেলজিয়ামের প্রতিপক্ষ আলেকজান্ডার ডি ক্রুর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন।
প্রধানমন্ত্রী লাক্সেমবার্গের প্রধানমন্ত্রী জেভিয়ার বেটেলের সঙ্গেও বৈঠক করবেন।
বিকালে শেখ হাসিনা বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের দেওয়া এক কমিউনিটি সংবর্ধনায় যোগ দেবেন।
২৭ অক্টোবর (শুক্রবার) প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত ১০টায় ব্রাসেলস ত্যাগ করবেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন মিশনের সুপারিশ নিয়ে আমাদের মন্তব্য করার কিছু নেই: মোমেন
চলতি মাসে ব্রাসেলসে গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী: মোমেন
ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের আমন্ত্রণে বেলজিয়াম গেলেন পলক
ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের বিশেষ আমন্ত্রণে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বেলজিয়ামের উদ্দেশ্যে সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকালে ঢাকা ত্যাগ করেছেন।
সফরকালে প্রতিমন্ত্রী বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) অনুষ্ঠিতব্য টনি ব্লেয়ার ইন্সটিটিউট ফর গ্লোবাল চেঞ্জ’র উদ্যোগে আয়োজিত ‘টেক অ্যাক্সিলেরেটর প্রোগ্রাম ২০২৩’ এ অংশগ্রহণ করবেন।
এই এক্সেলেরেটর প্রোগ্রামে বাংলাদেশ, ব্রিটেন, অ্যাঙ্গোলা, মলদোভা, জাম্বিয়া, সিঙ্গাপুর, মরক্কো, আলবেনিয়া, ভিয়েতনাম, ভিয়েতনাম, তিমুর, বুলগেরিয়া, রিসা, গ্রীস, ইউকে, ম্যাক্রা, রোমানিয়াসহ বিশ্বের ৩১টি দেশ থেকে মন্ত্রী, মেম্বার অব পার্লামেন্ট, সরকারি, বেসরকারিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা এতে অংশগ্রহণ করবেন।