রংপুর
হালখাতা করেও ধারের অর্ধেকের বেশি টাকা ওঠেনি শিক্ষকের
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় এম এ এম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল বন্ধুদের দেওয়া ধারের টাকা সময়মতো তুলতে না পেরে হালখাতার আয়োজন করেন। এই হালখাতার দিন ঠিক করে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পাওনাদারদের চিঠি দেন। সেই চিঠিতে দেওয়া নির্ধারিত দিন গতকাল শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) বিকালে হালখাতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
হালখাতার আয়োজনে কোনো প্রকার কমতি ছিল না। আন্ধারীঝাড় বাজারের সিঙ্গাড়া হটস্পট নামের একটি দোকানে আয়োজন করা হয় এই হালখাতা। এ উপলক্ষে রঙিন কাগজ দিয়ে সাজানো হয় দোকানটি। ছিল চেয়ার-টেবিল, টাকার বাক্সের সামনে সাঁটানো হয় শুভ হালখাতার ব্যানার।
ধারের টাকা পরিশোধে আসা ব্যক্তিদের আপ্যায়ণ করা হয় মাংস বিরিয়ানি দিয়ে। প্যাকেটে করে সবাইকে তা দেওয়া হয়। কেউ খেয়ে গেছেন, আবার কেউ নিয়ে গেছেন।
যারা টাকা পরিশোধ করেছেন তাদের নাম খাতা থেকে কাটা হয়েছে। এদিকে, টাকা যারা ধার নিয়েছিলেন তারা বাদেও পুরো বিষয় দেখতে ভিড় করেন স্থানীয়রা। খোঁজখবর নেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা
হালখাতায় টাকা পরিশোধ করতে আসা সোলাইমান ইসলাম বলেন, ‘বেশ কিছুদিন আগে শিক্ষক আউয়ালের কাছে ৩ হাজার টাকা হাওলাত নিয়েছিলাম। হালখাতার চিঠি পেয়ে প্রথমে হতভম্ব হলেও আজ হালখাতা করলাম। বিরিয়ানি খেয়ে ধারের টাকা পরিশোধ করেছি।’
জব্বার মিয়া নামে আরেকজন বলেন, ‘সাড়ে ৬ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলাম কয়েক মাস আগে। আজ হালখাতায় পরিশোধ করলাম। বিষয়টা ভালো লেগেছে। এতে ঋণমুক্ত হলাম।’
একই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক আনোয়ারুল হক বলেন, ‘আউয়ালের মন অনেক বড়। তিনি বন্ধু-বান্ধবদের টাকা ধার দিয়ে আনন্দ পান। সেই টাকা তোলার জন্য আজ হালখাতার আয়োজন করেছেন। বিষয়টি নেগেটিভলি না নিয়ে পজেটিভলি নেওয়া দরকার। কারণ, ধার নিয়ে মানুষ এখন দিতে চায় না। সেটা তোলার জন্য এই ব্যতিক্রমী আয়োজন করায় তাকে ধন্যবাদ।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা
ঠাকুরগাঁওয়ে জেকে বসেছে শীত, বিক্রি বেড়েছে হকার্স মার্কেটে
ঠাকুরগাঁওয়ে বেশ কয়েকদিন ধরে কুয়াশার সঙ্গে শৈত্যপ্রবাহের কারণে জেকে বসেছে শীত। শীতের তীব্রতাও অনেক বেশি। গত ৪-৫ দিন ধরে ঠিকমতো সূর্যের দেখা মিলছে না। জনজীবন হয়ে পড়েছে বিপর্যস্ত।
প্রচণ্ড ঠান্ডায় বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া ঘর থেকে তেমন বের হচ্ছেন না সাধারণ মানুষ।
এ অবস্থায় শীতের কাপড়ের দোকানে উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে সুযোগ বুঝে বিক্রেতারাও কাপড়ের দাম হাঁকাচ্ছেন বেশি ।
কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষজন কাজে বের হলেও প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে রয়েছেন তারা।
এমন চিত্রই দেখতে পেয়েছেন ইউএনবির ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা।
আরও পড়ুন: চুয়াডাঙ্গা ও কিশোরগঞ্জের নিকলীতে আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা
কুড়িগ্রামে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা
উত্তরের হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশার কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের জন-জীবন।
গত মঙ্গলবার থেকে জেলায় দেখা মিলছে না সূর্যের। দিন ও রাতে বৃষ্টির মতো ঝড়ছে কুয়াশা।
শুক্রবার (১২জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে, ঠান্ডার প্রকোপে কুড়িগ্রামে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত নানান রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন বয়স্ক ও শিশুরা।
শীতের রোগীর কারণে বাড়তি চাপ সামলাতে দেখা যায় হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স ও চিকিৎসকদের। শয্যা সংকটে হাসপাতালের মেঝেতেও চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেকেই।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে সূর্যের দেখা মেলেনি ২ দিন, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ৭ জনসহ শিশু বিভাগে শীতজনিত রোগে মোট ৬২ জন ও ডায়রিয়া বিভাগে নতুন ৩১ জনসহ মোট ৫৯ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন।
শিশু বিভাগে চিকিৎসা নেওয়া অভিভাবক মো. ফরিদ শেখ বলেন, ‘আমার দেড় বছরের বাচ্চাটা গতকাল সন্ধ্যার পর থেকে সর্দি বের হচ্ছে ও বমি করছে। সকালে হাসপাতালে নিয়ে আসলাম, চিকিৎসা চলছে।’
আরেক অভিভাবক লিপি বেগম বলেন, ‘গতকাল বিকালে হাসপাতালে আসছি। ঠান্ডার কারণে বাচ্চাটার জ্বর-সর্দি । কয়েকদিন থেকে ঠাণ্ডার প্রকোপ একটু বেশি।’
হাসপাতালের কর্তব্যরত নার্স মোছা. জুলেখা বেগম বলেন, ‘গত ৩ দিনে হাসপাতালের শিশু বিভাগে আর ডায়রিয়া ওর্য়াডে নতুন অনেক রোগী ভর্তি রয়েছেন। ঠান্ডার কারণে রোগ বাড়ায় আমাদের প্রতিদিন রোগীর চাপ সামলাতে হচ্ছে।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহীনুর রহমান সরদার বলেন, ‘এ জেলাটি হিমালয়ের কাছে হওয়ায় এখানে ঠান্ডার প্রকোপ একটু বেশি। হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন অধিকাংশই চরাঞ্চলের মানুষ।’
সরকারিভাবে ১ মাস আগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হলেও সেটি প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে জানান সাধারণ মানুষ। তারা গরম পোশাকের অভাবে সড়কের পাশে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।
জেলার কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, ঘন কুয়াশার এ দাপট আরও ২-৩ দিন অব্যাহত থাকবে। যার ফলে সূর্যের দেখা পাওয়া কষ্টকর হবে। আগামী সপ্তাহে একটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ দেখা দিতে পারে।
জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘ইতোমধ্যে জেলার ৯ উপজেলায় ৪২ হাজারের বেশি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। আপাতত আমাদের কাছে কোনো মজুত নেই। আমরা ৩০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠিয়েছি।’
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশার দাপট কিছুটা কমলেও অনুভূত হাড় কাঁপানো শীত
কুড়িগ্রামে সূর্যের দেখা মেলেনি ২ দিন, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ
কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশার দাপট কম থাকলেও কনকনে ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে পড়েছেন দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষজন। দুইদিন থেকে সৃর্যের দেখা না মেলায় ঠাণ্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে এ অঞ্চলে।
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দিনের তাপমাত্রা কমে রাতের তাপমাত্রার কাছাকাছি হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত ঠাণ্ডা অনুভূত হচ্ছে। কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষজন কাজে বের হলেও প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে রয়েছেন তারা।
বিশেষ করে উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের মানুষগুলো। শীত ও কনকনে ঠাণ্ডায় কাজে যেতে না পারায় কষ্টে আছেন শ্রমজীবীরা।
অপরদিকে, স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে বেড়েছে রোগীর সংখ্যা।
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের চরে কয়েকদিন থেকে খুব ঠাণ্ডা। ঘর থেকে বের হওয়া যাচ্ছে না। কারণ, নদীর পাড়ে সব সময় বাতাস থাকে। বাতাসের কারণে ঠাণ্ডা বেশি।’
সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল গফুর বলেন, ‘আমার ইউনিয়নটি নদী বেষ্টিত। এখানে অনেক বেশি ঠাণ্ডা অনুভূত হয়। নির্বাচনের আগে সরকারিভাবে মাদরাসার শিশুদের জন্য ৪০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল মাত্র ৮০টি কম্বল বিভিন্ন এলাকায় বিতরণ করা হয়। এ অবস্থায় সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এগিয়ে আসলে আমার এখানকার চরের মানুষ উপকৃত হতো।’
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘তাপমাত্রা আরও দুই-একদিন এমন থাকবে। পরে একটু উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাছাড়াও এ মাসে আরও একটি শৈত্যপ্রবাহ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুশফিকুল আলম হালিম বলেন, ‘সদর উপজেলায় শীত নিবারনে ৪ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এই মুহূর্তে শীতবস্ত্র মজুদ নেই। বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। পেলে বিতরণ করা হবে।’
শীতে কাহিল কুড়িগ্রামের মানুষ, হাসপাতালে বাড়ছে শিশুরোগী
তাপমাত্রা কমতে থাকায় কুড়িগ্রামে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজন। ঠান্ডায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। হাসপাতালে বেড়েছে শিশুরোগী।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে শীতার্তদের কষ্ট লাঘবে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে ৪৩ হাজার কম্বল বিতরণ করেছে জেলা প্রশাসন।
আরও পড়ুন: শীতে কাবু কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলের মানুষ
শীত ও কনকনে ঠান্ডায় খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা নিচ্ছেন হতদরিদ্র মানুষজন। শীত ও কনকনে ঠান্ডায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
মঙ্গলবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছে ২০ জন শিশু। সেখানে গাদাগাদি করে চিকিৎসা নিচ্ছেন আক্রান্তরা। হাসপাতালটিতে বর্তমানে ভর্তি রয়েছে ৪৩ শিশু।
এদিকে উত্তরীয় হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কাহিল হয়েছে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের মানুষগুলো। শীত ও কনকনে ঠান্ডায় কাজে যেতে না পারায় কষ্টে পড়েছে শ্রমজীবীরা।
আরও পড়ুন: তীব্র শীতে বিপর্যস্ত লালমনিরহাটের জনজীবন
তীব্র শীতে বিপর্যস্ত লালমনিরহাটের জনজীবন
গত কয়েকদিন ধরে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় কাঁপছে উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের মানুষ। দুপুর পর্যন্ত সূর্যের দেখা মিলছে না দুইদিন ধরে। হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশায় হাড় কাপাঁনো শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ।
এদিকে দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদি পশুর। শিশু ও বৃদ্ধদের ঠান্ডাজনিত রোগ সর্দি, কাশি ও হাঁপানিজনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে গেছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে শ্রমজীবী পরিবারের মধ্য বয়সী ও বৃদ্ধরা।
আরও পড়ুন: শীত ও কুয়াশায় কাঁপছে কুড়িগ্রাম
জেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, শীতের তীব্রতা বাড়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সন্ধ্যার পর জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না কেউ।
শীতে নাকাল হয়ে পড়েছে বিভিন্ন বয়সের মানুষ। তীব্র শীতে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া কর্মজীবীরা। শীতবস্ত্রের অভাবে দরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষরা দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
গবাদিপশুও রেহাই পাচ্ছে না শীতের প্রকোপ থেকে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশার দাপট কিছুটা কমলেও অনুভূত হাড় কাঁপানো শীত
এদিকে লালমনিরহাটে ঠাণ্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শীতজনিত নানা রোগ। যেমন- ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াম, হাঁপানি, অ্যাজমা, হৃদরোগসহ নানা রোগ। এছাড়া আক্রান্ত হয়ে জেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেগুলোতে বেড়েছে ঠাণ্ডাজনিত রোগী ভর্তি।
লালমনিরহাট সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, লালমনিরহাট স্বাস্থ্য বিভাগ শীতজনিত রোগীদের সেবা দিতে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি রোগীদের সেবা দিতে- বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, মঙ্গলবার সকাল ৮টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সোমবার যা ছিল ১০ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ অবস্থায় দিনের বেলা সূর্যের দেখা না মেলায় সন্ধ্যায় তাপমাত্রা আরও কমে যাচ্ছে। ফলে সন্ধ্যার পরে আরও বেশি শীত অনুভূত হয়।
কুড়িগ্রামে তীব্র শীতে বিপাকে নিম্ন আয়ের মানুষ
কুড়িগ্রামে ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। রাতে বৃষ্টির ফোঁটার মতো পড়ছে কুয়াশা।
মঙ্গলবার (৯ জানুয়ারি) সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ১০টা পর্যন্ত দেখা মেলেনি সূর্যের।
এদিকে রাত ও দিনের তাপমাত্রা প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় দুপুর পর্যন্ত ঠাণ্ডা বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থায় শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষজন প্রয়োজনীয় গরম কাপড়ের অভাবে সময়মতো কাজে বের হতে পাড়ছেন না।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের কিছুটা উত্তাপ ছড়ালেও বিকাল হতেই তাপমাত্রা আবারও নিম্নগামী হতে থাকে।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের বানিয়া পাড়া এলাকার হাফিজুদ্দি বলেন, ‘ঠাণ্ডায় আমার অবস্থা শেষ। হাতে টাকা-পয়সা নাই, শীতের কাপড় কিনতে পারি নাই। মানুষ একটা জ্যাকেট দিছে সেটা দিয়ে একটু ঠাণ্ডা কমেছে।’
একই এলাকার মান্নান মিয়া বলেন, ‘আজ কুয়াশা কম কিন্তু সেই ঠাণ্ডা। হাত-পা বরফ হয়ে যাচ্ছে। মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। বাতাস কাবু করে ফেলছে।’
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আব্দুল বাতেন সরকার বলেন, ‘কিছুদিন আগে মাদরাসার ছাত্রদের জন্য ২০০ কম্বল পেয়েছি, তা বিতরণ করা হয়েছে। আর কোনো শীতবস্ত্র পাইনি। তবে পাওয়ার সম্ভাবনা আছে।’
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, ‘এইরকম তাপমাত্রা আরও কয়েকদিন থাকবে। তবে এ মাসের মধ্যে আরও একটি শৈত্য প্রবাহ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।’
রাণীশংকৈলে নীলগাই জবাই করে গোশত ভাগাভাগি করে নিলেন গ্রামবাসী
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে বিলুপ্তপ্রায় একটি নীলগাই উদ্ধার করে জবাই করেছে এলাকাবাসী। রবিবার (৭ জানুয়ারি) বিকালে উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের ভেলাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, রবিবার বিকালে এলাকার পুকুরপাড়ের ঝোপঝাড়ে ছোটাছুটি করছিল একটি নীল গাই। গ্রামের কয়েকজনের নজরে এলে তাঁরা নীলগাইটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে। খবর ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক গ্রামবাসী সেখানে ভিড় জমান। এক সময় গ্রামবাসী নীলগাইটিকে জবাই করে খাওয়ার পরিকল্পনা করে। পরে নীলগাইটি জবাই করে গ্রামবাসী গোশত ভাগাভাগি করে নেয়।
রাতোর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শরৎ চন্দ্র রায় জানান, গ্রামবাসী একটি নীলগাই আটক করে জবাই করে গোশত ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে আমি শুনেছি। কাজটি তারা ঠিক করেনি। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
রাণীশংকৈল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান জানান, নীলগাইটি জবাই করা ঠিক হয়নি। খবর পেয়ে বন বিভাগের লোককে সেখানে পাঠানো হয়েছে। তারা আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
খবর পেয়ে বন বিভাগ ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা শাহজাহান আলী জানান, ঘটনাস্থলে আমাদের পরিদর্শন দল পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, এ নিয়ে জেলায় ৮টি নীলগাই উদ্ধার হয়। তবে সেগুলোর একটিও বেঁচে নেই।
হ্যাটট্রিক করলেন সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লালমনিরহাট-২ আসনে (আদিতমারী-কালীগঞ্জ) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। টানা তৃতীয়বারের মতো এমপি হলেন তিনি।
রবিবার (৭ জানুয়ারি) রাতে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলাফলে তিনি আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হকের চেয়ে ৪৬ হাজার ৯৪৬ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আট বিভাগে প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী
মোট ১৪৪টি কেন্দ্রের মধ্যে ঘোষিত ১২০টি কেন্দ্রের অনানুষ্ঠানিক ফলাফলে নৌকা প্রতীকের সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ পেয়েছেন ৯৭ হাজার ২৪০ ভোট। জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী সিরাজুল হক ঈগল প্রতীকে পেয়েছেন ৫০ হাজার ৫০১ ভোট।
মোট ভোটার ছিল ৪ লাখ দুই হাজার ৩৪ জন।
সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ আদিতমারী কালীগঞ্জবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে তিনি আদিতমারী-কালীগঞ্জকে নতুনভাবে সাজাতে চাই।
আরও পড়ুন: বিএনপির অবরোধ জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, আমি বিগত দিনে এই এলাকার যে পরিমাণ উন্নয়ন করেছি আমার এই এলাকার মানুষ নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আমাকে কৃতার্থ করেছেন আমি আগামী দিনেও এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে চাই।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, লালমনিরহাটে সুষ্ঠু এবং সুন্দরভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
আরও পড়ুন: প্রতিবন্ধীদের সব প্রত্যাশা পূরণ করা হবে: সমাজকল্যাণমন্ত্রী
সতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে ভোট কেনার টাকা বিতরনের সময় আটক ১
দিনাজপুরের ৬ আসনের (নবাবগঞ্জ, বিরামপুর, ঘোড়াঘাট হাকিমপুর) হাকিমপুরের বৈগ্রামে ভোট কেনার জন্য টাকা বিতরনের সময় এক ব্যক্তিকে আটক করেছে স্থানীয়রা।
পরে তাকে হাকিমপুর থানা পুলিশে তুলে দিয়েছে তারা। তার কাছে ১৮ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় ডাকাতির প্রস্তুতিকালে দেশীয় অস্ত্রসহ ৫ ডাকাত আটক
আটক মোস্তফা হোসেন (৪০) হাকিমপুরের ২নং বোয়ালদাড় ইউনিয়নের বোয়ালদাড় গ্রামের মৃত শমসের আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, আটক মোস্তফা হোসেন সতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগের ওই আসনের সাবেক এমপি আজিজুল হক চৌধুরীর পক্ষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে বৈগ্রামে ভোটারদের কাছে ভোট কিনতে টাকা বিতরন করছিল।
আরও পড়ুন: ভোটারদের টাকা বিতরণকালে জাপার ২ নেতা-কর্মী আটক
পরে তাকে টাকাসহ হাকিমপুর থানা পুলিশে তুলে দিয়েছেন তারা।
হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দুলাল হোসেন জানিয়েছেন, মোস্তফা হোসেনের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ যাছাই বাছাই করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেবেন তারা। আপাতত তার বিরুদ্ধে কোন মামলা দ্বায়ের করা হয়নি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা, স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক আটক