%E0%A6%86%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%80-%E0%A6%B2%E0%A7%80%E0%A6%97
বিএনপি চোরাগুপ্তা হামলা করে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে: ড. মোমেন
আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিশ্বাস করে বলেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি চোরাগুপ্তা হামলা চালিয়ে দেশে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
তিনি বলেন, বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন দুঃখজনক। তারা মনে করছে নির্বাচনে এলে তারা ভোট পাবে না। বিএনপি ভুল পথে চলছে। আল্লাহ তাদের হেদায়েত দান করুক।
শুক্রবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে সিলেট নগরীতে নির্বাচনী প্রচারের সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মোমেন এসব কথা বলেন।
সিলেট-১ আসনের আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী নগরীর বিভিন্ন এলাকায় সকালে লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রচার চালান।
এরপর তেরো রতন ও গোটাটিকর শিল্প এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেন এবং ভোট চান।
এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ ১৭০ মিলিয়ন মানুষের দেশ, বিশ্বের ৩৩তম বৃহত্তম অর্থনীতি। আমরা এখন আত্মনির্ভরশীল। সব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক আছে। বাংলাদেশ আফগানিস্তান নয়, কাজেই দু-একটি দেশের হুমকি-ধমকিতে কোনো লাভ হবে না।
প্রচারের সময় ছিলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদুর রহমান আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক সালেহ আহমদ সেলিম, কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র, আফসর আহমদ, ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফজলে রাব্বী চৌধুরী মাসুম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি ডা. আব্দুল ওয়াহিদ, মো. আবুর কামাল, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহসাধারণ সম্পাদক সাজেদা পারভীন, সৈয়দা রাবেয়া ইসলাম, সুলতানা বেগম, ওয়ার্ড সভাপতি জাভেদ আহমদ, ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি হোসেন আহমদ, তারেক আহমদ, সুয়েব আহমদসহ স্থানীয় নেতারা।
আরও পড়ুন: এমন নির্বাচন হবে যা দেখে দুনিয়ার সবাই শিখবে: মোমেন
গণতন্ত্রে নির্বাচনের বিকল্প নেই: ড. মোমেন
শুধু দেশ নয়, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যেও শেখ হাসিনাকে প্রয়োজন: ড. মোমেন
জানুয়ারির নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন শান্তিপূর্ণ পরিবেশে উৎসবমুখর ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করতে কাজ করার জন্য আওয়ামী লীগ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'যেহেতু এবারের নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি নানা ধরনের ষড়যন্ত্র চলছে, তাই শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন করতে হবে।’
বৃস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ কার্যালয় থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে শেরপুর, জামালপুর, কিশোরগঞ্জ, চাঁদপুর, নরসিংদী ও বান্দরবান জেলায় নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বিরোধী দল বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল এবং জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
কারচুপির আশঙ্কায় বিএনপি ও জামায়াত উভয়েই ৭ জানুয়ারির ভোট বর্জন করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না বলে তিনি বিশ্বাস করেন না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ ও ভোটাররা নির্বাচনে অংশ নিলে নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে।’
তিনি বলেন, সন্ত্রাসী দল বিএনপি নির্বাচনে বিশ্বাস করে না এবং দেশের কল্যাণে তারা কিছুই করতে পারে না।
তিনি বলেন, 'তারা (বিএনপি) মানুষ হত্যা ও দুর্নীতি ছাড়া আর কিছুই দিতে পারে না।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, এবারের নির্বাচন (বিশেষ করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের জন্য) উন্মুক্ত করা হয়েছে, যাতে নৌকা প্রতীক ও অন্যান্য প্রতীকের প্রার্থীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন।
তিনি বলেন, 'এখানে আমি আপনাদের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে এবং নিজ নিজ প্রতীকে সমানভাবে ভোট চাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে।’
আরও পড়ুন: এখন ব্যবস্থা না নেওয়া গেলেও নির্বাচনের পর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: কাদের
গত বুধবার আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার-২০২৪ ঘোষণার কথা উল্লেখ করে তিনি ইশতেহারে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা জনগণের সামনে তুলে ধরে দলের সদস্যদের ইশতেহার পাঠ করে নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, এই নির্বাচন নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপির কাজ শুধু আগুন দেওয়া এবং নির্বাচন বানচাল করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটি নির্বাচিত, গণতান্ত্রিক সরকার পরপর ক্ষমতায় থাকার পর থেকে বাংলাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু বিগত সরকার দেশকে এক ধাপও এগিয়ে নিতে পারেনি, বরং দেশকে পেছনে নিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ যে অগ্রগতি অর্জন করেছে তা আজ আমাদের অব্যাহত রাখতে হবে। শুধু আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলেই তারা অগ্রগতির এই গতি ধরে রাখতে পারবে।’
আরও পড়ুন: ভোট না দিয়ে পাস করার সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী বিএনপি-জামায়াত: আনিসুল হক
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দরিদ্রসহ এ দেশের সব মানুষের মুক্তি আসবে এবং এ দেশ উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে।’
আওয়ামী লীগ সভাপতি তার দলের সদস্যদের নৌকা প্রতীকে ভোট চাইতে ঘরে ঘরে গিয়ে প্রচার চালানোর আহ্বান জানান, যাতে তারা আবারও তাদের সেবা করার সুযোগ দিতে পারেন।
শেরপুর শহীদ দারোগা আলী পৌর পার্ক, জামালপুর জিলা স্কুল মাঠ, কিশোরগঞ্জ পুরাতন স্টেডিয়াম, নরসিংদী ক্লাব মাঠ, বান্দরবান রাজার মাঠ ও চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একযোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগ সভাপতি ছয়টি জেলা থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা তার দলের প্রার্থীদের জনগণের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তাদের জন্য ভোট প্রার্থনা করেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচনবিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইসি: প্রত্যাশা তথ্যমন্ত্রীর
নির্বাচনবিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ইসি: প্রত্যাশা তথ্যমন্ত্রীর
নির্বাচনবিরোধী অপতৎপরতা নজরে এনে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ব্যবস্থা নেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
বিএনপি-জামায়াতের গণতন্ত্র ও নির্বাচনবিরোধী অপপ্রচার, অবরোধ-অগ্নিসন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজান করে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'নির্বাচনবিরোধী যেকোনো কর্মকাণ্ড, নির্বাচনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে এমন যেকোনো কর্মকাণ্ড বন্ধ করার জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষণা দিয়েছে। আমি নির্বাচন কমিশনকে অনুরোধ জানাব, নির্বাচন বর্জন করার জন্য এবং নির্বাচনের বিরুদ্ধে যে লিফলেট বিতরণ ও মাঝেমধ্যে চোরাগোপ্তা যে মিছিল করা হয়, এগুলো নজরে এনে কমিশন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন: তিন কাঠা জমি থাকলেই কোটিপতি: তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণাটি বাস্তবায়নে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, 'কমিশন সারা দেশের বেশিরভাগ থানা পুলিশের ওসি বদলি করেছে, ইউএনও বদলি করেছে, ডিসি বদলি করেছে। অনেক প্রার্থীকে তারা কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এগুলোর মাধ্যমে তাদের সক্ষমতা এবং একটি সুষ্ঠু, অবাধ ও জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে তাদের দৃঢ়তা প্রকাশ করতে সক্ষম হয়েছে।’
হাছান বলেন, 'বিএনপি নির্বাচন বর্জন করার যে আহ্বান জানাচ্ছে সে দিকে কারো কোনো সাড়া নেই। এখন তারা কী করে! লিফলেট বিতরণ করে। বিএনপি আগুনসন্ত্রাস চালিয়ে মানুষকে ভীতসন্ত্রস্ত করতে চেয়েছিল, পারেনি। তাদের এই আগুনসন্ত্রাসের কারণে নির্বাচনের প্রচার ও আমেজেও কোনো ছেদ পড়েনি। মানুষ পুরোপুরিভাবে আজকে নির্বাচনমুখী।'
আরও পড়ুন: এখন ব্যবস্থা না নেওয়া গেলেও নির্বাচনের পর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: কাদের
তিনি বলেন, 'বিএনপি যাদের দুয়ারে দুয়ারে নির্বাচন বর্জন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নির্বাচনকালীন সরকার এ সমস্ত কথা বলে ধর্ণা দিত, তাদের দুয়ার বিএনপির জন্য বন্ধ হয়ে গেছে।’
হাছান বলেন, 'বিএনপির অনেক সমর্থক আজকে নির্বাচনী প্রচারের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে। বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তৃণমূল বিএনপির মাধ্যমে, তারপর অন্য দলের মাধ্যমে বিএনপির বহু নেতা নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে।’
তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ওআইসি ও সার্কভুক্ত দেশগুলো ও বিভিন্ন সংস্থা পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে, পাঠাচ্ছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, সহসভাপতি ডা. দিলীপ রায়, আওয়ামী লীগ নেতা এম এ করিম, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম পিয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদের সভাপতি জিন্নাত আলী খান, সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েল, ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এইচ এম মেহেদী হাসান, প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আল মামুন সরকার প্রমুখ মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।
আরও পড়ুন: ভোট না দিয়ে পাস করার সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী বিএনপি-জামায়াত: আনিসুল হক
ভোট না দিয়ে পাস করার সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী বিএনপি-জামায়াত: আনিসুল হক
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াত ভোট না দিয়ে পাস করার সংস্কৃতিতে বিশ্বাস করে বলেই জনগণকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত রাখার চেষ্টা্ করছে।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী দেশের মানুষ সব ক্ষমতার উৎস। গণতান্ত্রিক ধারায় ভোটাধিকারের মাধ্যমে তারা তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন। অথচ একটি কুচক্রি মহল নির্বাচন বর্জন করে জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত রাখতে চেষ্টা করছে। বিএনপি তাদের সময়ে নির্বাচন করত ভোটারবিহীন ভোটে। বিএনপি-জামায়াত ভোট না দিয়ে পাস করার সংস্কৃতি বিশ্বাস করে বলেই জনগণকে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে বলছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার চাঁনপুর খেলার মাঠে তার নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের মানুষ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে সারা বিশ্বকে দেখিয়ে দেবে তারা দেশকে কত ভালোবাসে। পরে তিনি সবার কাছে নৌকা প্রতীকে ভোট চান।
এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তাকজিল খলিফা কাজলসহ দলীয় নেতা-কর্মী ও বিপুল সংখ্যক স্থানীয় গ্রামবাসী উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের দায়ে মাশরাফির সমর্থকদের জরিমানা
নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাশরাফি বিন মুর্তজার নির্বাচনী প্রচারের সময় আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে তার ৪ সমর্থককে জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
বুধবার(২৭ ডিসেম্বর) রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিছুর রহমান এই জরিমানা করেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন: মাশরাফির আয় গতবারের চেয়ে অর্ধেকের বেশি কমেছে
তিনি জানান, নড়াইল-২ আসনে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে নিয়মিত প্রচারের অংশ হিসেবে বুধবার রাতে নগরীর হাতির বাগান এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান জানান, গাড়িতে নৌকা প্রতীকের স্টিকার লাগানোর দায়ে মাশরাফির চার সমর্থককে ৫ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তাদের এই অপরাধের পুনরাবৃত্তি না করার জন্য সতর্ক করা হয়েছে বলেও জানান আনিসুর।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান মাশরাফির
এখন ব্যবস্থা না নেওয়া গেলেও নির্বাচনের পর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে: কাদের
যাদের সম্পদ অস্বাভাবিক বেড়েছে তাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় অসঙ্গতির অভিযোগের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘সরকার শুধু রুটিন ওয়ার্ক পরিচালনা করায় এই মুহূর্তে ব্যবস্থা নেওয়া না গেলেও নির্বাচনের পর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকালে ধানমন্ডিতে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ মন্তব্য করেন।
টিআইবি তাদের প্রতিবেদনে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে প্রকাশ করা প্রার্থীদের আয়, সম্পদ, ঋণ ও ঋণের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
টিআইবি একজন মন্ত্রীকে অভিযুক্ত করেছে, যার নাম প্রকাশ করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ভয়ভীতি সত্ত্বেও আসন্ন নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি সন্তোষজনক হবে: কাদের
টিআইবি জানিয়েছে, সরকারের মন্ত্রিসভার অন্তত একজন সদস্যের নিজ নামে বিদেশে একাধিক কোম্পানি থাকার প্রমাণ রয়েছে, যার প্রতিফলন হলফনামায় নেই। মন্ত্রী ও তার স্ত্রীর মালিকানাধীন ছয়টি কোম্পানি এখনও বিদেশে সক্রিয়ভাবে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সেসব কোম্পানির মোট সম্পদ মূল্য প্রায় ২ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।
বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, দলটি জনসমর্থন হারিয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘যদি (বিএনপির আন্দোলনের প্রতি) জনসমর্থন থাকত, তাহলে কোনো দলকেই সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য লুকিয়ে হামলা চালাতে হতো না।’
বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকায় সহিংসতার ঘটনাকে ‘বিচ্ছিন্ন’ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা স্বাভাবিক। কোনো প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করবে না।
তিনি বলেন, প্রার্থীরা ভোটারদের বুঝিয়ে ভোট কেন্দ্রে নিয়ে আসতে চান।
আরও পড়ুন: নির্বাচনে বাধা দানকারীদের বিরুদ্ধে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান কাদেরের
স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার লড়াই এটি: ওবায়দুল কাদের
রাজশাহীতে নৌকার সমর্থকদের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৭ নেতা-কর্মী আহত
রাজশাহীর বাগমারায় নৌকার সমর্থকদের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত সাতজন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। বুধবার(২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে বাগমারার শ্রীপুর ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই হামলা চালানো হয়।
রাজশাহী-৪ আসনের (বাগমারা) স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের (কাঁচি প্রতীক) নেতা-কর্মীদের ওপর নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সমর্থকরা এ হামলা চালায় বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার বিকালে নৌকার সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের তিন সমর্থকের ওপর হামলা করে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুর-৩ আসন: হামলায় আ. লীগ প্রার্থীর ২ সমর্থক আহত
বুধবার দুপুরে হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন এমপি এনামুল হকের সাবেক পিএস জিল্লুর রহমান (৪২)। অন্য আহতরা হলেন- শ্রীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রহমান (৩৮) ও আওয়ামী লীগের কর্মী আলমগীর হোসেন। আহতদের মধ্যে তিনজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জিল্লুর রহমান জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে শ্রীপুর ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হকের কোনো পোস্টার লাগাতে দেওয়া হয়নি।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে ওই ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বজলুর রহমানসহ ১০ থেকে ১২ জন নেতাকর্মী শ্রীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পোস্টার বিতরণ ও লাগানোর সময় হামলার শিকার হন।আরও পড়ুন: রংপুরে নৌকা সমর্থকদের হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১০ জন সমর্থক আহত
এসময় তাদের দুটি মোবাইল ও এক কর্মীর একটি মোবাইল হামলাকারী ছিনিয়ে নেয়।
তিনি আরও জানান, ঘটনাস্থল থেকে বাগমারা থানা মাত্র ৫ মিনিট দূরত্বের হলেও পুলিশ খবর পেয়েও সেখানে ঘটনার এক ঘণ্টা পর পুলিশ যায়। স্থানীয়রা গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। কালামের সমর্থকদের মারধরে তার ডান পায়ে প্রচণ্ড আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার বিকালে স্বতন্ত্র প্রার্থীর তিন সমর্থকের ওপর হামলা চালায় নৌকার সমর্থকরা। আহতদের উদ্ধার করে বাগমারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
বাগমারা থানার থানার তদন্ত ওসি সোহেব খান হামলার ঘটনাটি নিশ্চিত করে জানান, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয়দের বরাতে তিনি জানিয়েছেন, নৌকার প্রার্থীর লোকজন বেশ কয়েকজনকে মারধর করে আহত করেছে।
এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ফরিদপুর-৩: ঈগল প্রতীকের নির্বাচনী অফিসে নৌকার কর্মীদের হামলা, আহত ৫
তিন কাঠা জমি থাকলেই কোটিপতি: তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ঢাকা শহরে এক কোটি টাকার নিচে কোথাও জমি নেই, চট্টগ্রামেও নেই। ‘কারো তিন কাঠা জমি থাকলেই তো সে কোটিপতি। এখন সবাই কোটিপতি।’
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এই মন্তব্য করেন।
মঙ্গলবার ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল একটি বক্তব্যে বলেছে, আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের ১৮ জনের ১০০ কোটি টাকার বেশি আছে। এছাড়াও ৭৭ শতাংশ কোটিপতি রয়েছেন।
টিআইবির ওই প্রতিবেদন সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, গবেষণা করে তারা পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে বলেছিল। তাদের অনেক বড় গলা ছিল। তারা প্রচুর সংবাদ সম্মেলন করেছে। পরে দেখা গেল, পদ্মা সেতুতে তো দুর্নীতি হয়নি এবং দুর্নীতির কোনো সুযোগও সৃষ্টি হয়নি।
আরও পড়ুন: সাইকেল শোভাযাত্রা করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করলেন তথ্যমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন সময়ের নানা গবেষণায় দেখা যায়, সেগুলো আসলে গবেষণা না, কতগুলো প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে সেই প্রতিবেদন উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে প্রকাশ করা হয়।’
হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের প্রতিবেদনে ৭৭ শতাংশ কোটিপতির কথা বলা হয়েছে, দেশে এক কাঠা জমির দাম গ্রামেও ২০ লাখ টাকা। পাঁচ কাঠা জমির দাম এক কোটি টাকা। ঢাকা শহরে এক কোটি টাকার নিচে কোথাও জমি নেই, চট্টগ্রামেও নেই। কারো তিন কাঠা জমি থাকলেই তো সে কোটিপতি। এখন সবাই কোটিপতি। কাজেই এই হিসাব দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কোনো সুযোগ নেই। এই হিসাব উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ বছরে সরকার পরিচালনার সময় দ্রব্যমূল্য সবসময় মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে ছিল। কোনো কোনো সময় কোনো কোনো পণ্যের মূল্য বেড়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতেই সিপিডির অসত্য তথ্যনির্ভর সংবাদ সম্মেলন: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘আজ থেকে ১৫ বছর আগে একজন দিনমজুর সারাদিন পরিশ্রম করে যে টাকা পেতেন, সেই টাকা দিয়ে চার-পাঁচ কেজি চাল কিনতে পারতেন। এখন একজন দিনমজুর সারাদিন কাজ করে যে চাল কিনতে পারেন, সেটা ১২ থেকে পনেরো কেজি।’
মন্ত্রী বলেন, ‘তেতাল্লিশে কলকতা, বাংলায় যখন দুর্ভিক্ষ হয়, তখন ছয় টাকায় চল্লিশ কেজি চাল পাওয়া যেত। কিন্তু সেই চাল কিনতে না পেরে মানুষ মারা গেছেন। তখন তো দ্রব্যমূল্য অনেক কম ছিল। মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে কি না। আমাদের দেশে যত না মূল্য বেড়েছে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা তার চেয়ে বেশি বেড়েছে।’
তবে মাঝে মাঝে ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে কৃত্রিমভাবে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয় বলে মনে করেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, এটা হলো মুনাফালোভীদের কারসাজি। আমরা সেটিকে নিয়ন্ত্রণের কথা বলেছি। আবার সরকার গঠন করতে পারলে এই মুনাফালোভী ও অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের কিছু ভোগ্যপণ্য আছে, যেগুলো আমদানি নির্ভর। আমরা এগুলোর উৎপাদন বাড়াতে চাই। একইসঙ্গে এগুলোর সংরক্ষণ ব্যবস্থা উন্নত করতে চাই।
ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন বাড়িয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি, তাদের রিপোর্ট নির্জলা মিথ্যাচার: তথ্যমন্ত্রী
৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান মাশরাফির
নড়াইল-২ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাশরাফি বিন মুর্তজা ভোটারদের আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) নড়াইল সদর উপজেলার শাহবাদ ও মুলিয়া ইউনিয়নে পথসভায় তিনি এই আহ্বান জানান।
এসময় নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত মাশরাফিকে স্থানীয়রা ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানায়।
আরও পড়ুন: আ. লীগের সফল পররাষ্ট্রনীতির কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শক্তিশালী অবস্থানে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, নড়াইলেও উন্নয়ন হচ্ছে। ভবিষ্যতে বাকি উন্নয়নমূলক কাজগুলো করা হবে।
এ সময় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার আলমগীর হোসেন, শাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জিয়া, আওরিয়া ইউনিয়নের সভাপতি এস এম পলাশসহ আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সুরক্ষা-সহিষ্ণুতার অঙ্গীকার আওয়ামী লীগের
সংখ্যালঘুদের জন্য আরও সুরক্ষা-সহিষ্ণুতার অঙ্গীকার আওয়ামী লীগের
জাতিকে স্মার্ট, কুসংস্কারমুক্ত ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ করার প্রত্যয় নিয়ে আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ইশতেহার ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ।
'স্মার্ট বাংলাদেশ: দৃশ্যমান উন্নয়ন, বর্ধিত কর্মসংস্থান' স্লোগান নিয়ে বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
ইশতেহারে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। দল ক্ষমতায় ফিরে এলে এসব সম্প্রদায়ের জন্য কী পদক্ষেপ নেবে তার পরিকল্পনা রয়েছে এতে।
ইশতেহারে শুধু আগামী পাঁচ বছরের কথাই বলা হয়নি, ২০৪১ সালের মধ্যে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার রূপকল্পও তুলে ধরা হয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি এ রূপকল্পতে বলা হয়েছে, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, ইতিহাস ও আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের উন্নয়নের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত। ইশতেহারে এই বর্ধিত সময়ের মধ্যে এসব সম্প্রদায়ের জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপসহ একটি স্পষ্ট রূপরেখা দেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নির্মূল করা হবে। তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে অগ্রাধিকারমূলক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৪৫টি জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বসবাস করে। তাদের জীবন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস বাংলাদেশের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের সংবিধানে জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুসহ সব সম্প্রদায়ের সমান অধিকার ও মর্যাদার স্বীকৃতি দেন। এরই ধারাবাহিকতায় আওয়ামী লীগ এসব সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ দূর করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে এবং তাদের জীবন, সম্পদ, উপাসনালয়, স্বায়ত্তশাসন ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।
বাংলাদেশে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ ও অন্য ধর্মাবলম্বীরা স্বাধীনভাবে তাদের ধর্ম পালন করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
উন্নয়ন ও অগ্রগতি
ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের জমি, বাড়িঘর, উপাসনালয় ও অন্যান্য সম্পদ রক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মানুষকে উন্নয়নের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
সুবিধাবঞ্চিত নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু এবং চাশ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের জন্য বিশেষ বিধান ও সুযোগ অব্যাহত।
জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা প্রত্যন্ত অঞ্চলে সম্প্রসারিত করা হয়েছে এবং সড়ক ও বিদ্যুৎসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধাউন্নত করা হয়েছে।
সরকার জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যময় রীতিনীতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণকে উৎসাহিত করে।
বৃহত্তর রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব এবং সামাজিক অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য, সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণপ্রক্রিয়ায় জাতিগত সংখ্যালঘুদের অংশগ্রহণ বাড়াতে ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির বিভিন্ন ধারা আঞ্চলিক পরিষদ ও জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে; যাতে স্থানীয়, ভৌগোলিক ও আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিকল্পিত ও বাস্তবায়ন করা যায়।
তিন পার্বত্য জেলায় পর্যটন, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং ঐতিহ্যবাহী কুটির শিল্পের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জনগণের সুবিধার্থে উচ্চ মূল্যের মশলা চাষ, কফি ও কাজুবাদাম চাষ, তুলা চাষ ও সৌরশক্তি উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে।
নিজ নিজ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সার্বিক কল্যাণে চলমান কর্মসূচির পাশাপাশি মন্দির, শ্মশান, প্যাগোডা ও গির্জার উন্নয়নে অনুদান অব্যাহত রয়েছে।
আওয়ামী লীগের অঙ্গীকার
সংবিধানের ২৩ক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, জাতিগোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য স্থানীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এই সাংবিধানিক বিধান সমুন্নত রাখার উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অর্পিত সম্পত্তি আইন সংশোধন করা হয় এবং অর্পিত সম্পত্তিসংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। আইন বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা দূর করা হবে।
একটি জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা হবে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ রক্ষার জন্য সংখ্যালঘুদের জন্য একটি বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হবে। ধর্মীয় ও নৃতাত্ত্বিক সংখ্যালঘু এবং সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও জীবিকা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ অব্যাহত রাখবে।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরা নৃশংস হামলা ও বৈষম্যের শিকার হয়। এই সম্প্রদায়ের অনেককে হত্যা করা হয়েছিল, অসংখ্য নারীকে ধর্ষণ করা হয়েছিল এবং তাদের বাড়িঘর, জমি, ব্যবসা দখল ও লুটপাট করা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ এসব অমানবিক ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধ করবে।
ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, বৈষম্যমূলক আচরণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘন বন্ধে আওয়ামী লীগ তার নীতি বজায় রাখবে। এটি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনের সব ক্ষেত্রে তাদের জীবন, সম্পত্তি, মর্যাদা এবং সমান অধিকারের সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।
বস্তি, চর, হাওর ও উপকূলীয় অঞ্চলসহ অনুন্নত এলাকার সুষম উন্নয়ন এবং সেখানকার অধিবাসীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
অবহেলিত সম্প্রদায়
বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি অংশ দলিত, হরিজন ও বেদে সম্প্রদায় নিয়ে গঠিত। এসব সম্প্রদায় সমাজে অবহেলিত, বিচ্ছিন্ন ও উপেক্ষিত। তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও মূলস্রোতে সম্পৃক্ত করতে কর্মসূচি বাস্তবায়নে আওয়ামী লীগ অঙ্গীকারাবদ্ধ।
বেদে ও অন্যান্য সুবিধাবঞ্চিত সম্প্রদায়ের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, যাতে তারা আয়বর্ধক কার্যক্রমে জড়িত হতে পারে এবং সমাজের মূলধারার সঙ্গে একীভূত হতে পারে। সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য নগদ সহায়তা ও আবাসন কর্মসূচি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হবে।
হিজড়া সম্প্রদায়
হিজড়া সম্প্রদায় বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার একটি ছোট অংশ। শুরু থেকেই এই সম্প্রদায় বিচ্ছিন্ন ও অবহেলিত। আওয়ামী লীগ সরকার হিজড়া সম্প্রদায়ের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং সমাজের মূলস্রোতে তাদের সম্পৃক্ত করতে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
ইশতেহারে বলা হয়েছে, হিজড়াদের সমাজের মূলধারায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে এবং তাদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত করা হবে। শিক্ষা, আবাসন, জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তার পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবে।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছে, হিজড়া সম্প্রদায়ের জন্য নগদ সহায়তা ও আবাসন কর্মসূচি দেশব্যাপী সম্প্রসারণ করা হবে।