%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%8F%E0%A6%A8%E0%A6%AA%E0%A6%BF
বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের তৃতীয় সপ্তাহের অবরোধ শুরু রবিবার
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের পথ সুগম করতে আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে রবিবার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য দেশব্যাপী সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ করবে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো।
রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে এ অবরোধ চলবে।
দুই দিনের জন্য বিরতি দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসা অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও একই সঙ্গে অবরোধ করবে।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
শনিবার (১১ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসী ও বিএনপি সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনের আহ্বান জানান।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন তিন দিনের এই অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত দুই দফা দেশব্যাপী অবরোধ ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের দেশব্যাপী অবরোধ এবং পরের কয়েক ধাপের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যাপক সংঘর্ষ, সহিংসতা ও বেশ কিছু যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করেন তারা।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের দলের ১১ জন নেতা-কর্মী নিহত ও প্রায় তিন হাজার ৯০৬ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় সংঘর্ষে একজন পুলিশ কনস্টেবল, একজন সাংবাদিক ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী নিহত হন।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশ মাঝপথে পণ্ড হয়ে যায়।আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নেই: বিএনপি
নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নেই: বিএনপি
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সাম্প্রতিক বক্তব্যে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়নি বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
শনিবার (১১ নভেম্বর) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা ও জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে, চীন সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন দেখতে চায় বলে রাষ্ট্রদূত ওয়েন যে মন্তব্য করেছেন, তাতে জনগণের ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়নি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশ ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি।
তিনি বলেন,‘তাই, দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অধীনে নয়, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়।’
আরও পড়ুন: বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মেজর হাফিজ
রিজভী বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের প্রয়াসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার(৯ নভেম্বর) এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, তার দেশ চায় সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং সংশ্লিষ্ট দলগুলো তাদের মতবিরোধ নিরসন করে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখুক।
রিজভী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ওয়েনের বক্তব্য বিএনপি ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সম্পর্কে তার উদ্বেগকে স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে আমরা তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনকারী দল বিএনপি সবসময় সংবিধানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, যা জনগণ কর্তৃক অনুমোদিত ও গ্রহণযোগ্য।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, এটা দুঃখজনক যে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার প্রয়াসে বিতর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সুস্বীকৃত ও বহুল প্রশংসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা 'ফ্যাসিবাদী' শেখ হাসিনা সরকার একটি হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিলুপ্ত করেছে।
রিজভী বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পরপর দুটি 'প্রহসনমূলক' জাতীয় নির্বাচন স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে যে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। ‘কারণ নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি চিহ্নিত অংশ নির্বাচনের নামে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগীর ভূমিকা পালন করে।’
বাংলাদেশ ও চীন দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্ঞান ও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে যে কূটনৈতিক সাফল্য দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে নিহিত।
রিজভী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে চীনের প্রতি আহ্বান জানান।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের চলমান আন্দোলনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পূর্ণ সমর্থন প্রত্যাশা করে দলটি। ‘বিএনপি গণতন্ত্রের মূলভিত্তি পুনরুদ্ধার করতে চায়, যাতে বাংলাদেশে আইনের শাসন, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ এখন উত্তর কোরিয়ার মতো 'নিষ্ঠুর' একদলীয় শাসনের অধীনে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি নিষ্ঠুর একদলীয় দেশ… এ ধরনের একদলীয় শাসন চলছে এখানে। বাংলাদেশ ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এখন কোনো পার্থক্য নেই।’
শুক্রবার ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানে গুম বা নিহত হওয়ার বিপদকে আমন্ত্রণ জানানো।
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেওয়ার কয়েকদিন পর যুবদল নেতার লাশ পাওয়া যায়। এটাই এখন বাংলাদেশের দৃশ্যপট।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন মামলায় জড়ানো অব্যাহত রেখেছে।
রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হয়রানি করছে।
তিনি দাবি করেন, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ২০৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় অন্তত ১ হাজার ৫৫৫ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ এবং হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৩ হাজারেরও বেশি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
বিএনপির এই নেতা আরও দাবি করেন, ২৮ অক্টোবর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হাতে তাদের দলের ১২ জন নেতা-কর্মী নিহত ও ৫ হাজার ৯৮৭ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিরোধী দলের 'শান্তিপূর্ণ' কর্মসূচি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য নানাভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘সরকারের সন্ত্রাসের শৃঙ্খলে পুরো বাংলাদেশ নীরব হয়ে পড়েছে। সারা দেশের মানুষ সব দেখছে আর ক্ষুব্ধ হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জনগণের ক্ষোভ অনুধাবন করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় আরেকটি একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। দেশের জনগণ ক্ষমতাসীন দলকে এই আশা পূরণ করতে দেবে না।’
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আরেকটি 'একতরফা' নির্বাচন অনুষ্ঠানের মরিয়া উদ্যোগ দেশের জনগণ বানচাল করবে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এ সময় দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ইঙ্গিতও দেন রিজভী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য পুরো জাতির নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। তারা আরেকটি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বঞ্চিত ও নিপীড়িত জনগণ তাদের একতরফা নির্বাচন হতে দেবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার অর্থনীতি ও রাজনীতি ধ্বংস করে দেশকে অনিশ্চিত গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় বিরোধী দলের 'শান্তিপূর্ণ' অবরোধ কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার মারাত্মক দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, 'তারা অনেক বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করেছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্যই এই অবরোধ কর্মসূচি। কিন্তু র্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও আওয়ামী লীগের সমন্বয়ে গঠিত পেটোয়া বাহিনী 'জনগণের সঙ্গে সহিংস আচরণ' করছে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
রিজভী বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ৩৬৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে ৯ হাজার ৮৩১ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেপরোয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে জনগণ সড়ক-মহাসড়কে মানববন্ধন করে অবরোধ অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এবং আমাদের এক দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত থাকবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত থাকবে।’
রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের এমনকি বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে মন্তব্য করে ফ্যাসিবাদের ভয়াবহ রূপ উন্মোচন করছে।
আরও পড়ুন:বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা একজন রাষ্ট্রদূতকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি দিয়েছেন এবং অন্যান্য সিনিয়র নেতারা ক্রমাগত কুৎসিত ও ভয়ানক বক্তব্য দিচ্ছেন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যে, তারা জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অসংযত মন্তব্য করছেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে মারাত্মক দমনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে বাংলাদেশকে একটি 'দুর্বৃত্ত' রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে (৯ নভেম্বর) শহরের বেপারীপাড়া এলাকা থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল থানা পুলিশ।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, গত ২৯ অক্টোবর টাঙ্গাইল সদর থানায় দায়ের করা সংঘর্ষ ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেতাদের পরিবারের সদস্যদের আটকের অভিযোগ বিএনপির
তিনি আরও বলেন, এই মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে। এখন তিনি থানা হেফাজতে আছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) তাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯৪ জন বিএনপির নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে করে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৫০০ জনকে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে এসব মামলায় প্রায় পৌনে ২০০ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। বর্তমানে তারা টাঙ্গাইল জেলহাজতে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আটক
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী কারাগারে
রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে দুই দিনের বিরতি দিয়ে আগামীকাল রবিবার থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বুধবার সকাল ৬টায় শুরু হওয়া দেশব্যাপী বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হওয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা আগে এই নতুন আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। চলমান অবরোধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরসহ ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসা অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
রিজভী বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ ছাড়া বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্মরণে শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশের মসজিদগুলোতে দোয়ার আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, নিহত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হবে।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সব নেতাদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
দেশের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে তাদের অবরোধ সফল হয়েছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য বিএনপি ও সমমনা দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদও জানান তিনি।
এর আগে ৫ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা এবং ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের দেশব্যাপী অবরোধ ঘোষণা করেছিল দলটি।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতাল পালন করে দলটি। এতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষ এবং তিনজন নিহত হওয়ার মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং সমাবেশ মাঝপথে ভেস্তে যায়।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের মধ্যে বুধবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘দল যেসব কর্মসূচি ঘোষণা করবে, আমাদের নেতা-কর্মীরা তা পালন করবে। আমাদের গন্তব্য হয় জেলখানা অথবা মহাসড়ক।
আরও পড়ুন: পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
রিজভী বলেন, ‘এই দুইয়ের মাঝখানে কিছুই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘তারা আমাদের জেলে নিয়ে যেতে পারে, নানাভাবে আঘাত করতে পারে, নির্যাতন করতে পারে, কিন্তু আমরা সবকিছু মেনে নেব এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এই যাত্রা অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকা মহানগর পূর্ব ছাত্রদলের সদস্য সচিব আল-আমিনকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাদা পোশাকের সদস্যরা তুলে নিয়েছে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘আমাদের একজন ছাত্রনেতা কোথায় আছেন বা কেমন আছে তা আমরা জানি না। শেখ হাসিনার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও তাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো প্রতিদিন এসব কাজ করছে।’
তিনি বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা যাতে আন্দোলন চালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সামগ্রিক নৈরাজ্যকর ও ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করা হচ্ছে, কিন্তু সরকার ব্যর্থ হবে।
গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে উন্নত মজুরির দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর পুলিশের হামলায় এক নারী শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, দেশব্যাপী অবরোধের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ১৮টি মামলায় ১ হাজার ৯২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। ‘২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত ১২ হাজার ৪৪৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও ৫৭৯টি মামলা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এত নিপীড়ন, নির্যাতন ও নাশকতার মধ্যে দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিন চলছে। এই কর্মসূচি সফল হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘সারাদেশে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। কারণ তারা যাত্রী পায়নি। তার মানে আমাদের কর্মসূচির প্রতি মানুষের সমর্থন রয়েছে।’
আরও পড়ুন: রাজপথে বিরোধী দলের ব্যাপক উপস্থিতি সরকারকে বিভ্রান্ত করছে: রিজভী
টিক্কা ও নিয়াজির চরিত্রে অভিনয় করছেন কাদের: রিজভী
বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মেজর হাফিজ
বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, তিনি শিগগিরই রাজনীতি থেকে অবসর নেবেন।
বুধবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর বনানীতে নিজ বাসভবনে নতুন দল গঠনের গুঞ্জনের মধ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
বিষয়টি স্পষ্ট করে তিনি বলেন, 'আমি শারীরিকভাবে সক্রিয় রাজনীতিতে অংশ নিতে পারি না। আমি শিগগিরই অবসর নেব। এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেব। আমি অসুস্থ থাকায় রাজনীতিতে সক্রিয় নই। এখন আমার অগ্রাধিকার আমার স্বাস্থ্য।’
তিনি বলেন, 'এটা সত্য নয় যে আমি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করব। আমি এই মুহূর্তে রাজনীতিতে সক্রিয় নই। বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে আমি অংশ নেব। আমি এখনো বিএনপির সঙ্গে আছি এবং দলের সঙ্গেই থাকব।’
আরও পড়ুন: বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
‘মেজর হাফিজ নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করবেন’ - তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের এমন বক্তব্য দেওয়ার পর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর ও ছয়বারের জাতীয় সংসদ সদস্য এই সংবাদ সম্মেলন করেন।
নির্বাচনের জন্য নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। বিএনপি ক্ষমতায় এলে এটা সুষ্ঠু হবে না। সুতরাং নিরপেক্ষ সরকার বা তত্ত্বাবধায়ক সরকারই হতে পারে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ। আশা করি সংঘাতের রাজনীতির অবসান ঘটবে।’
তিনি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক সম্প্রীতির স্বার্থে এখনই সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আপনার অবস্থান যাই হোক না কেন, আপনার উচিত আপনার পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করা এবং একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরিচালনা করা। তার আগে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের মাধ্যমে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বিএনপির সংস্কার, গণতান্ত্রিক উপায়ে দল পরিচালনা, বিভিন্ন পর্যায়ে নেতা তৈরি, নিবেদিতপ্রাণ নেতাদের মূল্যায়নের আহ্বানও জানান তিনি।
জিয়ার আদর্শ থেকে বিচ্যুত হওয়ায় বিএনপি ক্ষমতার বাইরে বলেও উল্লেখ করেন দলটির এই নেতা।
আরও পড়ুন: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত: হাফিজউদ্দিন
বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
চলমান এক দফা আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আবারও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গুম করতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে সরকার বিভিন্ন নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে তাদের ওপর দোষ চাপানোর পরিকল্পনা করছে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রফিক ও সাইফুল ইসলামকে ডিবি পুলিশ তুলে নেয়ার পর থেকে তাদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমাদের নেতা-কর্মীদের গুম করা নতুন করে শুরু হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ভোটারদের অংশগ্রহণ ছাড়া আরেকটি একতরফা নির্বাচন করতে সরকার মরিয়া হয়ে উঠেছে। ‘তাই জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য তারা (সরকার) গুমের নতুন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: জনাকীর্ণ কারাগারে মানবিক সংকটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবার তরুণদের গুম করার জন্য টার্গেট করছে, যেহেতু তরুণরা অগ্রগামী হিসেবে রাজপথে আন্দোলন করছে।
অবিলম্বে এফ মাহমুদুল ও সাইফুল ইসলামকে তাদের পরিবারের কাছে নিরাপদে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান রিজভী।
তিনি বলেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলো তাদের এক দফা দাবি আদায়ে বুধবার সকাল ৬টা থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে। আমাদের অবরোধ কর্মসূচি জনগণের দাবির ওপর ভিত্তি করে। এটা শুধু বিএনপির কর্মসূচি নয়। যারা দেশের মালিকানা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, তাদের সবার কর্মসূচি এটি।’
আরও পড়ুন: ঢাকায় ১১২ মামলায় ১০ দিনে গ্রেপ্তার ১৬৩৬ জন : ডিএমপি
বিএনপি ও সমমনা দলের নেতা-কর্মীদের অতীতের মতো সব বাধা উপেক্ষা করে রাজপথে অবস্থান নিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান তিনি।
রিজভী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সড়ক অবরোধ করুন, মহাসড়ক অবরোধ করুন এবং শান্তিপূর্ণ থাকুন। কিন্তু তারা (সরকার) আমাদের বিরুদ্ধে নাশকতার বিভিন্ন মহাপরিকল্পনা করছে। আমরা রাজপথে থাকব এবং সরকারের অশুভ চক্রান্ত প্রতিহত করবো।
চলমান আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও ভোটাধিকার ফিরে পেতে দেশের লাখ লাখ মানুষ বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচিকে সমর্থন দিচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি।
রিজভী বলেন, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ৪৯৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় বিএনপির নির্বাচনে অংশ নেওয়া উচিত: হাফিজউদ্দিন
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় বিএনপির আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা উচিত।
তবে তিনি জানান, বর্তমানে তিনি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং অসুস্থতার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন।
মঙ্গলবার হাফিজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপির উচিত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যস্থতায় নির্বাচনে যাওয়া। বিএনপি নির্বাচনে যোগ দিলে আমি সেই নির্বাচনে অংশ নেবো।’
তিনি নতুন দলে যোগ দিতে যাচ্ছেন বলে ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের মন্তব্যের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে এই বিএনপি নেতা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, ‘আমি শুধু বলতে পারি যে আমি রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি...আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ। আমি এই মুহূর্তে রাজনীতি নিয়ে ভাবছি না।’
৭৯ বছর বয়সী হাফিজ বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতার জন্য দুই মাস আগে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসা নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ভোটারদের ভয় দেখানো হচ্ছে, অভিযোগ হাফিজউদ্দিনের
তিনি জানান, অসুস্থ থাকায় চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আমি সিঙ্গাপুরে যাওয়ার জন্য ভিসার জন্য আবেদন করব।’
হাফিজ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রথম সামরিক ব্রিগেড 'জেড ফোর্সের' অধীনে যুদ্ধ করেন।
সাহসিকতার জন্য তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ বীরত্ব পুরস্কার বীর বিক্রমে ভূষিত হন।
সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন এবং ভোলা-৩ (লালমোহন-তজুমদ্দিন) আসন থেকে ছয়বার এমপি নির্বাচিত হন।
২০০১ সালে বিএনপি গঠিত সরকারে তিনি পানিসম্পদ মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। হাফিজ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন।
২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে হাফিজকে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়।
পরে একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার বিরুদ্ধে দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লিখিত অভিযোগগুলিকে অসত্য বলে অভিহিত করেন।
তিনি বলেন, পার্টির নোটিশের ভাষা ‘আক্রমণাত্মক’ এবং তা ‘সৌজন্য ও প্রটোকল বিরোধী’। তার বিরুদ্ধে এ ধরনের নোটিশ জারি করায় তিনি অপমানিত বোধ করেছেন।
আরও পড়ুন: জনাকীর্ণ কারাগারে মানবিক সংকটে বিএনপির নেতা-কর্মীরা
৭ নভেম্বরের সাধারণ কর্মসূচি স্থগিত করেছে বিএনপি