%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%8F%E0%A6%A8%E0%A6%AA%E0%A6%BF
বিএনপি-জামায়াতের ডাকা চতুর্থ ধাপের দ্বিতীয় দিনের অবরোধ চলছে
বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী ডাকা চতুর্থ ধাপের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিন চলছে।
রবিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধ শেষ হবে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়।
পদত্যাগ করে নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজন করতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যেই এই অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলো।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আগের তিনটি অবরোধের তুলনায় সোমবার ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা একটু বেশি।
অফিসগামী, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য যাত্রীদের তাদের নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।
রবিবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও ও নারায়ণগঞ্জের আদমজী ইপিজেড এলাকায় দুটি বাসে আগুন দিয়েছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের তৃতীয় সপ্তাহের অবরোধ শুরু রবিবার
অবরোধ শুরুর আগে শনিবার রাত ৮টা থেকে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ঢাকার যাত্রাবাড়ী, গুলিস্তান, গাবতলী, নটরডেম কলেজের কাছে, রূপনগর, সূত্রাপুর ও মিরপুর এলাকায় সাতটি বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়।
শনিবার বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অবরোধ সফল করতে দেশবাসী ও বিএনপি সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন এই অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত দুই দফা ৪৮ ঘণ্টার দেশব্যাপী অবরোধ ও ৩১ অক্টোবর থেকে তিন দিনের দেশব্যাপী অবরোধ ঘোষণা করে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী।
অবরোধের সময় ব্যাপক সংঘর্ষ, সহিংসতা এবং বেশ কিছু যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে চায় সরকার: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করে বলেন, তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে স্থানান্তরের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে সরকার তৈরি পোশাক খাতকে ধ্বংস করছে।
রবিববার (১২ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
এ ছাড়া ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি পোশাক শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে শিথিল করা এবং চার শ্রমিককে হত্যা করার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
তিনি বলেন, ‘সরকার অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য দেশের সবচেয়ে বড় খাত গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংস করার নীল নকশা বাস্তবায়ন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তিনি (শেখ হাসিনা) ১৯৭৪ সালের মতো আবারও দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করতে চান এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করতে চান।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সরকারের প্ররোচনায় মালিকরা শনিবার ১৫০টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে।
বিএনপির এই নেতা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যে পুলিশ তৈরি পোশাক শ্রমিকদের উপর হামলা চালিয়েছে তারা ১১ হাজার তৈরি পোশাক শ্রমিককে আসামি করে মামলা করেছে।
রিজভী বলেন, ‘জনগণ বিশ্বাস করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৈরি পোশাক ব্যবসা অন্য দেশে স্থানান্তর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার গ্যারান্টি চান।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের হাতে শুধু বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরাই নয়, পেশাদার গার্মেন্টস শ্রমিকরাও নিরাপদ নয়। এ পর্যন্ত পুলিশের গুলিতে চারজন গার্মেন্টস শ্রমিক নিহত হয়েছেন।’
বিএনপি নেতা বলেন, বিরোধী দলের চলমান আন্দোলন দমনে সরকার আবারও সাদা পোশাকে পুলিশ ব্যবহার করে গুম করতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্যরা কালো গ্লাসে ঢেকে মাইক্রোবাসে করে ‘নাৎসি বাহিনীর’ মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং গণতন্ত্রপন্থী শক্তিকে তুলে নিচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এমনকি সাধারণ মানুষও রেহাই পাচ্ছে না। তারা র্যাব-পুলিশের নামে গণতান্ত্রিক শক্তির বাবা-মা, ছেলে, সন্তান, ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজনদের তুলে নিয়ে গুম করছে।’
ভোটের অধিকার ফিরে পেতে যারা স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন করছে তাদের বিরোধী না হতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
তিনি দাবি করেন, রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপির ৩৬৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপির ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ, হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১০ হাজার ৭৭০ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
বগুড়ায় ট্রাকে আগুন: স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা কারাগারে
নাশকতার মামলায় বগুড়া সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজানকে (৩৯) গ্রেপ্তারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শনিবার (১১ নভেম্বর) সকালে ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১২। তারা রবিবার সকালে বগুড়া সদর থানায় হস্তান্তর করার পর তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার মিজান বগুড়া সদর উপজেলার গোকুল পশ্চিম পাড়ার মৃত আফসার আলীর ছেলে।
র্যাব-১২ বগুড়ার কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মীর মনির হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার মতিঝিল এলাকা থেকে মিজানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩ এর সদস্যরা। তার নামে বগুড়ার বিভিন্ন থানায় ১৯টি মামলা রয়েছে।
তিনি জানান, অবরোধে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের বাঘোপাড়া ও দিঘলকান্দি এলাকায় একটি কাভার্ড ভ্যান এবং দুইটি ট্রাকে আগুন লাগিয়ে দেয় অবরোধকারীরা। এসব ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় চারটি মামলা হয়েছে। এই চার মামলার অন্যতম আসামি মিজান।
বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আবু হাসান বলেছেন, মিজানকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তার করে সরকার পতনের আন্দোলন থামানো যাবে না।
একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
অতীতের ন্যায় আরেকটি ভুয়া ও একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর দমন-পীড়ন চালিয়ে দেশে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে বলে অভেযোগ করেছে বিএনপি।
শনিবার (১১ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
তিনি দাবি করেন, বিএনপির আন্দোলনকে কলঙ্কিত করতে সরকারি গাড়িতে আগুন দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডাররা।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার অতীতের মতো একতরফা প্রহসনের নির্বাচন করতে কৌশলহীন ও বিপজ্জনকভাবে মরিয়া হয়ে উঠেছে। শেখ হাসিনা এখন ৫৭ সেকেন্ডে নৌকার জন্য ৪৩টি সিল মেরে নির্বাচন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।’
মিথ্যা মামলায় বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে সরকারের কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে।
তিনি আরও বলেন, 'সাধারণ মানুষ এখন যুদ্ধকালীন সময়ের মতো নীরব ভীতিকর পরিবেশে বসবাস করছে। ক্ষমতা হারানোর ভয়ে সরকার প্রধান হিংস্র খুনি হয়ে উঠেছেন... তার (প্রধানমন্ত্রীর) নির্দেশে দেশকে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নেই: বিএনপি
প্রবীণ এই নেতা আরও বলেন, সরকারের অধীনস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা এখন আওয়ামী লীগ লিমিটেড কোম্পানির কর্মচারী হয়েছেন।
তিনি বলেন, রাত হলেই পুলিশি অভিযানের কারণে দেশে আতঙ্ক নেমে আসে, কারণ গণতন্ত্রপন্থী শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিদিন অসংখ্য মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, থানাগুলো এখন প্রতিটি বাড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে গ্রেপ্তার ব্যাপক বাণিজ্যে লিপ্ত হচ্ছে। ‘শেখ হাসিনা জনগণের সকল সুখ-শান্তি বিনষ্ট করে দানবের শাসন কায়েম করেছেন।’
তিনি দাবি করেন, শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ৩১৫ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার ও বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ১২টি নতুন মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ এবং হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১০ হাজার ৪০৫ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
তিনি আরও দাবি করেন, গত ২৮ অক্টোবর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের হাতে তাদের দলের ১১ জন নেতা-কর্মী ও একজন সাংবাদিক নিহত ও তিন হাজার ৯০৬ জন আহত হয়েছেন।
রিজভী বলেন, গত ২৮ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির ১৩ হাজার ৩৮৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ৪৮ হাজার ৪৪৩ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ৬১৩টি মামলা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে শান্তিপূর্ণভাবে আরও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ কার্যকর করতে যাচ্ছে তাদের দল। কিন্তু আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বিরোধী দলের আন্দোলন নিয়ে প্রশ্ন তোলার জন্য যানবাহনে আগুন দিচ্ছে এবং তাণ্ডব চালাচ্ছে। আমাদের হাতে এর অসংখ্য প্রমাণ, ভিডিও এবং ছবি রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের তৃতীয় সপ্তাহের অবরোধ শুরু রবিবার
বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের তৃতীয় সপ্তাহের অবরোধ শুরু রবিবার
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের পথ সুগম করতে আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে রবিবার সকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টার জন্য দেশব্যাপী সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ করবে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো।
রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে এ অবরোধ চলবে।
দুই দিনের জন্য বিরতি দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসা অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও একই সঙ্গে অবরোধ করবে।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
শনিবার (১১ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী কর্মসূচি সফল করতে দেশবাসী ও বিএনপি সমর্থকদের স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনের আহ্বান জানান।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন তিন দিনের এই অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে গত ৫ নভেম্বর থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত দুই দফা দেশব্যাপী অবরোধ ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের দেশব্যাপী অবরোধ এবং পরের কয়েক ধাপের বিভিন্ন কর্মসূচিতে ব্যাপক সংঘর্ষ, সহিংসতা ও বেশ কিছু যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করেন তারা।
বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়, গত ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তাদের দলের ১১ জন নেতা-কর্মী নিহত ও প্রায় তিন হাজার ৯০৬ জন আহত হয়েছেন।
এ সময় সংঘর্ষে একজন পুলিশ কনস্টেবল, একজন সাংবাদিক ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী নিহত হন।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশ মাঝপথে পণ্ড হয়ে যায়।আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নেই: বিএনপি
নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূতের বক্তব্যে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন নেই: বিএনপি
বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন নিয়ে চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সাম্প্রতিক বক্তব্যে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়নি বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি।
শনিবার (১১ নভেম্বর) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক বিবৃতিতে এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশা ও জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো তুলে ধরার জন্য চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, 'প্রকৃতপক্ষে, চীন সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচন দেখতে চায় বলে রাষ্ট্রদূত ওয়েন যে মন্তব্য করেছেন, তাতে জনগণের ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন হয়নি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, গত ১০ বছরে বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশ ভোট দেওয়ার সুযোগ পায়নি।
তিনি বলেন,‘তাই, দেশের বিপুল জনগোষ্ঠী স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অধীনে নয়, নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায়।’
আরও পড়ুন: বিএনপি ভেঙে নতুন দল গঠনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন মেজর হাফিজ
রিজভী বলেন, চীনা রাষ্ট্রদূতের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে এসেছে যখন সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের ভোটাধিকার ও গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের প্রয়াসে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার দাবি জানাচ্ছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার(৯ নভেম্বর) এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, তার দেশ চায় সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এবং সংশ্লিষ্ট দলগুলো তাদের মতবিরোধ নিরসন করে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখুক।
রিজভী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ওয়েনের বক্তব্য বিএনপি ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সম্পর্কে তার উদ্বেগকে স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে আমরা তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ও সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তনকারী দল বিএনপি সবসময় সংবিধানের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, যা জনগণ কর্তৃক অনুমোদিত ও গ্রহণযোগ্য।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, এটা দুঃখজনক যে অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা ধরে রাখার প্রয়াসে বিতর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধান পরিবর্তন করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
তিনি আরও বলেন, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সুস্বীকৃত ও বহুল প্রশংসিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা 'ফ্যাসিবাদী' শেখ হাসিনা সরকার একটি হীন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিলুপ্ত করেছে।
রিজভী বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পরপর দুটি 'প্রহসনমূলক' জাতীয় নির্বাচন স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে যে শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন সম্ভব নয়। ‘কারণ নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন, বিচার বিভাগ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি চিহ্নিত অংশ নির্বাচনের নামে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে সহযোগীর ভূমিকা পালন করে।’
বাংলাদেশ ও চীন দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা-বাণিজ্য, জ্ঞান ও অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় স্বার্থের ভিত্তিতে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে যে কূটনৈতিক সাফল্য দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে নিহিত।
রিজভী বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে চীনের প্রতি আহ্বান জানান।
অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশের জনগণের চলমান আন্দোলনে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পূর্ণ সমর্থন প্রত্যাশা করে দলটি। ‘বিএনপি গণতন্ত্রের মূলভিত্তি পুনরুদ্ধার করতে চায়, যাতে বাংলাদেশে আইনের শাসন, মানবাধিকার, শ্রম অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বাংলাদেশ এখন উত্তর কোরিয়ার মতো 'নিষ্ঠুর' একদলীয় শাসনের অধীনে রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন একটি নিষ্ঠুর একদলীয় দেশ… এ ধরনের একদলীয় শাসন চলছে এখানে। বাংলাদেশ ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে এখন কোনো পার্থক্য নেই।’
শুক্রবার ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা মানে গুম বা নিহত হওয়ার বিপদকে আমন্ত্রণ জানানো।
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তুলে নেওয়ার কয়েকদিন পর যুবদল নেতার লাশ পাওয়া যায়। এটাই এখন বাংলাদেশের দৃশ্যপট।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন মামলায় জড়ানো অব্যাহত রেখেছে।
রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও হয়রানি করছে।
তিনি দাবি করেন, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ২০৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় অন্তত ১ হাজার ৫৫৫ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও দাবি করেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ এবং হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ১৩ হাজারেরও বেশি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
বিএনপির এই নেতা আরও দাবি করেন, ২৮ অক্টোবর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হাতে তাদের দলের ১২ জন নেতা-কর্মী নিহত ও ৫ হাজার ৯৮৭ জন আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকার ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিরোধী দলের 'শান্তিপূর্ণ' কর্মসূচি নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য নানাভাবে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
রিজভী বলেন, ‘সরকারের সন্ত্রাসের শৃঙ্খলে পুরো বাংলাদেশ নীরব হয়ে পড়েছে। সারা দেশের মানুষ সব দেখছে আর ক্ষুব্ধ হচ্ছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জনগণের ক্ষোভ অনুধাবন করতে পারছেন না।’
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনের সহায়তায় আরেকটি একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতাসীন দল ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। দেশের জনগণ ক্ষমতাসীন দলকে এই আশা পূরণ করতে দেবে না।’
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আওয়ামী লীগের একতরফা নির্বাচনের উদ্যোগ জনগণই বানচাল করবে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আরেকটি 'একতরফা' নির্বাচন অনুষ্ঠানের মরিয়া উদ্যোগ দেশের জনগণ বানচাল করবে।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। এ সময় দীর্ঘদিন ধরে সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ইঙ্গিতও দেন রিজভী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য পুরো জাতির নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। তারা আরেকটি একতরফা নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু বঞ্চিত ও নিপীড়িত জনগণ তাদের একতরফা নির্বাচন হতে দেবে না।
তিনি বলেন, আওয়ামী সরকার অর্থনীতি ও রাজনীতি ধ্বংস করে দেশকে অনিশ্চিত গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় বিরোধী দলের 'শান্তিপূর্ণ' অবরোধ কর্মসূচি বানচাল করতে সরকার মারাত্মক দমনমূলক নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, 'তারা অনেক বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার করেছে। অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্যই এই অবরোধ কর্মসূচি। কিন্তু র্যাব-পুলিশ, বিজিবি ও আওয়ামী লীগের সমন্বয়ে গঠিত পেটোয়া বাহিনী 'জনগণের সঙ্গে সহিংস আচরণ' করছে।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
রিজভী বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ৩৬৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশের পর থেকে ৯ হাজার ৮৩১ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বেপরোয়া আওয়ামী লীগ সরকারের অপকর্মের বিরুদ্ধে জনগণ সড়ক-মহাসড়কে মানববন্ধন করে অবরোধ অব্যাহত রাখবে। তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত এবং আমাদের এক দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত থাকবে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অবরোধ অব্যাহত থাকবে।’
রিজভী বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি, উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো এবং দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলীয় নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবিতে এ অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের এমনকি বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে মন্তব্য করে ফ্যাসিবাদের ভয়াবহ রূপ উন্মোচন করছে।
আরও পড়ুন:বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের একজন নেতা একজন রাষ্ট্রদূতকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার হুমকি দিয়েছেন এবং অন্যান্য সিনিয়র নেতারা ক্রমাগত কুৎসিত ও ভয়ানক বক্তব্য দিচ্ছেন।
ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যে, তারা জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অসংযত মন্তব্য করছেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে মারাত্মক দমনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে বাংলাদেশকে একটি 'দুর্বৃত্ত' রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার
টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে (৯ নভেম্বর) শহরের বেপারীপাড়া এলাকা থেকে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল থানা পুলিশ।
টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া জানান, গত ২৯ অক্টোবর টাঙ্গাইল সদর থানায় দায়ের করা সংঘর্ষ ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নেতাদের পরিবারের সদস্যদের আটকের অভিযোগ বিএনপির
তিনি আরও বলেন, এই মামলা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরও মামলা রয়েছে। এখন তিনি থানা হেফাজতে আছেন। আইনি প্রক্রিয়া শেষে শুক্রবার (১০ নভেম্বর) তাকে টাঙ্গাইল আদালতে পাঠানো হবে।
উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলে গত ২৯ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১৯৪ জন বিএনপির নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে করে বিভিন্ন থানায় ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসব মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৫০০ জনকে। গত ২৮ অক্টোবর থেকে এসব মামলায় প্রায় পৌনে ২০০ জন নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। বর্তমানে তারা টাঙ্গাইল জেলহাজতে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু আটক
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন চৌধুরী কারাগারে
রবিবার থেকে আবারও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের ডাক বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে দুই দিনের বিরতি দিয়ে আগামীকাল রবিবার থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
বুধবার সকাল ৬টায় শুরু হওয়া দেশব্যাপী বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শেষ হওয়ার প্রায় ১৩ ঘণ্টা আগে এই নতুন আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয়। চলমান অবরোধে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরসহ ব্যাপক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে ফের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর
দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে আসা অন্যান্য বিরোধী দলগুলোও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
রিজভী বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ ছাড়া বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও পুলিশের গুলিতে নিহত গার্মেন্টস শ্রমিকদের স্মরণে শুক্রবার জুমার নামাজের পর দেশের মসজিদগুলোতে দোয়ার আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, নিহত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী ও গার্মেন্টস শ্রমিকদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হবে।
সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
আরও পড়ুন: বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের আবারো গুম করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী: বিএনপি
তিনি বলেন, গ্রেপ্তার সব নেতাদের মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত এবং তাদের এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের অবরোধ অব্যাহত থাকবে।
দেশের জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থনে তাদের অবরোধ সফল হয়েছে বলেও জানান বিএনপির এই নেতা।
অবরোধ কর্মসূচি সফল করার জন্য বিএনপি ও সমমনা দলের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদও জানান তিনি।
এর আগে ৫ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টা এবং ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের দেশব্যাপী অবরোধ ঘোষণা করেছিল দলটি।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দেশব্যাপী হরতাল পালন করে দলটি। এতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষ এবং তিনজন নিহত হওয়ার মধ্যদিয়ে কর্মসূচি শেষ হয়।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং সমাবেশ মাঝপথে ভেস্তে যায়।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী