বিএনপি
২৬-২৭ জানুয়ারি কালো পতাকা মিছিল করবে বিএনপি
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বাতিলের দাবিতে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি দুই দিনের কালো পতাকা শোভাযাত্রার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ২৬ জানুয়ারি সব জেলা সদরে এবং ২৭ জানুয়ারি সব মেট্রোপলিটন শহরে এ কর্মসূচি পালন করা হবে।
গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটাই রাস্তায় বিএনপির প্রথম কর্মসূচি।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: মঈন খান
তিনি বলেন, 'দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা কালো পতাকা নিয়ে মিছিল বের করব। পাশাপাশি আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ সব রাজবন্দির মুক্তি, সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং অবৈধ সংসদ বাতিলের দাবিতেও এই কর্মসূচি পালন করা হবে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আসন ভাগাভাগি করে সাজানো নির্বাচনের নামে প্রহসনের মাধ্যমে গঠিত আওয়ামী -ডামি সরকার বিএনপিকে দমন করে বাংলাদেশকে পরাজিত করেছে। এখন জনগণের দেখভাল করার কেউ নেই।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিরোধী দল রাজপথ ছাড়বে না: বিএনপি
দেশে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির এই নেতা। তিনি বলেন, আওয়ামী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অসততার কারণে দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ কঠিন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
সংসার চালাতে হিমশিম খেতে খেতে চরম কষ্টে দিন পার করছে মানুষ। ঋণ নিয়েও সংসার চালাতে পারছেন না তারা। কাঁচা মরিচ থেকে সোনা, সবকিছুর বাজার মূল্য আকাশছোঁয়া।
রিজভী বলেন, গ্যাস সংকট চরম আকার ধারণ করায় জনগণ কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে এবং একের পর এক কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে মালিকরা। ‘চট্টগ্রামের অবস্থা আরও খারাপ।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদীন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আসাদুল করিম শাহিন, মীর নেওয়াজ আলী, তরিকুল ইসলাম তেনজিন, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন নিয়ে টিআইবির বক্তব্য 'জনমতের প্রতিফলন': বিএনপি
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিরোধী দল রাজপথ ছাড়বে না: বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিরোধী দল রাজপথ ছাড়বে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, বাংলাদেশে গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা থাকবে না।’
শনিবার (২০ জানুয়ারি) রাজধানীতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে বন্দুকের জোরে দেশ শাসন করছে।
আরও পড়ুন: বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
মঈন খান বলেন, ‘এখন শুধু আমরাই বলছি না, ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত প্রহসনের নির্বাচন নিয়ে সারা বিশ্বের মিডিয়ার দিকে তাকান, বিভিন্ন দেশের বিবৃতির দিকে তাকান। প্রহসনের নির্বাচন নিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক বিরোধী দলগুলো গত কয়েক বছর ধরে যা বলে আসছি, তারাও তারই প্রতিধ্বনি করেছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, দেশে-বিদেশে এটা প্রতিষ্ঠিত যে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন মৃত।
তিনি বলেন, দলের একমাত্র লক্ষ্য বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা। ‘ইনশাল্লাহ আমাদের গণতন্ত্রের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে নাগরিক ঐক্যের গণস্বাক্ষর কর্মসূচিতে দেশের প্রতিটি মানুষ যোগ দেবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিএনপি মহাসচিব। এছাড়া তিনি বর্তমান সরকারকে প্রত্যাখ্যান করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
নাগরিক ঐক্য জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গণতন্ত্রের পক্ষে ও ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির উদ্বোধন করে।
আরও পড়ুন: জাতীয় নির্বাচন নিয়ে টিআইবির বক্তব্য 'জনমতের প্রতিফলন': বিএনপি
আয়োজকরা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য বিরোধী দলগুলোর দাবির যৌক্তিকতা প্রমাণের অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে, জেলা ও উপজেলা এবং আন্তর্জাতিকভাবে সর্বস্তরের জনগণের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হবে।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, আওয়ামী লীগ সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য নয় বলেই ৭ জানুয়ারি একতরফা প্রহসনের নির্বাচনের আয়োজন করেছে।
মান্না আরও বলেন, এজন্য আমরা এই স্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচির আয়োজন করেছি। আমরা শুধু বাংলাদেশের ১০ কোটি ভোটার নয়, দেশের ১৭ থেকে ১৮ কোটি মানুষের কাছেও পৌঁছানোর চেষ্টা করব।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আমাদের কর্মসূচি অফলাইন ও অনলাইন উভয় ক্ষেত্রেই অব্যাহত থাকবে।
মান্না বলেন, দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে গঠিত সরকারের নিন্দা জানাতে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সারাদেশে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবেন তারা।
তিনি আরও বলেন, গণস্বাক্ষর কর্মসূচির পাশাপাশি অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে তাদের দল রাজপথে একযোগে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, স্বাক্ষর সংগ্রহ করতে গিয়ে আমরা রাস্তা ছেড়েছি, এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, ‘রাজপথের আন্দোলন জোরদার করতে আমরা স্বাক্ষর সংগ্রহ করছি। আমরা এমন একটি সংগ্রাম গড়ে তোলার চেষ্টা করছি যাতে দখলদারকে মাথা নত করতে বাধ্য করা যায়।’
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: মঈন খান
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে টিআইবির বক্তব্য 'জনমতের প্রতিফলন': বিএনপি
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বক্তব্যকে 'জনমতের প্রতিফলন' বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মাজারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, দেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নতুন কর্মসূচি দিয়ে রাজপথের আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করবে তাদের দল।
আরও পড়ুন: বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
জাতীয় নির্বাচন নিয়ে টিআইবির বক্তব্যের বিরোধিতা করে মন্ত্রীদের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কে না বলেছে এই নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি? সবাই বলেছে, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। সুতরাং টিআইবি যা বলেছে তা জনমতের প্রতিফলন।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপি যা বলছে তাও জনমতের প্রতিফলন। ‘তাই বিএনপির পছন্দ অনুযায়ী টিআইবি এটা (নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি) বলেনি। তারা যা বলেছে তা বাস্তবতা।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যদের নেতৃত্বে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান দলের নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: মঈন খান
এর আগে গত বুধবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে একতরফা বলে মন্তব্য করে টিআইবি বলেছিল, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ চেহারা দিতে সাজানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবি ৭ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে তাদের গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশ করে বলেছে, এ ধরনের নির্বাচন দেশের গণতন্ত্র ও নির্বাচনের ভবিষ্যতের জন্য অশনি সংকেত।
৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে দেশি-বিদেশি সংগঠনগুলোর মতামতের প্রশংসা করেন নজরুল। তিনি বলেন, 'নিরপেক্ষভাবে বলতে গেলে, বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে যারা কথা বলবেন আমরা তাদের স্বাগত জানাব। আমরা কী বলি সেটা গুরুত্বপূর্ণ, মানুষ কী বলছে সেটা গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: টিআইবি বিএনপির ‘দালাল’: কাদের
তিনি বলেন, ‘দেশের জনগণ বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের স্বৈরাচারকে পছন্দ করে না, যারা বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, শামসুজ্জামান দুদু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা এর নিন্দা জানাই। যারা অন্যায়, স্বৈরাচার, দমন-পীড়ন ও ভোট চুরির সমালোচনা করেন তাদেরও ধন্যবাদ জানাই।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান যে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেছিলেন তা আওয়ামী লীগ সরকার আবার ধ্বংস করেছে। ‘সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি আমরা আপনাদের জানাব।’
নজরুল ইসলাম বলেন, জিয়াউর রহমান বাকশালের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন এবং খালেদা জিয়া এরশাদের সামরিক স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এখন তারেক রহমানের নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য লড়াই করছি। জিয়াউর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা নতুন করে শপথ নিয়েছি, এ দেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের সহযোগিতায় যত দ্রুত সম্ভব আমরা দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করব।’
আরও পড়ুন: বিএনপির চাওয়ায় দেশের অমঙ্গল হবে না: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে শুক্রবার নানা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার বাগবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন জিয়াউর রহমান। তিনি ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন এবং দেশের সপ্তম রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল সেনা কর্মকর্তার হাতে নিহত হন জিয়া।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: মঈন খান
গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেন, আমাদের সংগ্রাম গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। গণতন্ত্র বলতে শান্তিপূর্ণ নিয়মতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থাকে বোঝায়। তাই নীতিগতভাবে সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম হতে হবে শান্তিপূর্ণ ও নিয়মতান্ত্রিক।
এক আলোচনা সভায় বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, রাস্তায় সরকারের বন্দুক ও গুলি মোকাবিলায় নিরস্ত্র জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ দখল করেছে আ. লীগ: মঈন খান
তিনি বলেন, এভাবে আমরা এই সরকারকে পরাজিত করব। আজকের এই দিনে আমরা এই শপথ নিই। আমরা বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব এবং এদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করব।
জনগণই বিএনপির শক্তি উল্লেখ করে ড. মঈন খান বলেন, বন্দুকের নল, বুলেটের শক্তি, কাঁদানে গ্যাসের শক্তি, জলকামানের শক্তি বা এই সরকারের যত ক্ষমতাই থাকুক না কেন জনগণের সেই শক্তি দিয়ে বিএনপি বর্তমান অবৈধ দ্বিতীয় বাকশাল সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবে।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে দলটি।
আরও পড়ুন: বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খান বলেন, ‘তাদের দল লগি-বৈঠা দিয়ে রাজনীতি করে না। তিনি বলেন, সভ্য মানুষই বিএনপির রাজনীতি করে। এখানেই আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে পার্থক্য।’
বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই দাবি করে তিনি বলেন, চূড়ান্ত সফলতা পেতে হয়তো দীর্ঘ সময় লাগতে পারে, কিন্তু তারা গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং জনগণের ভোটাধিকার ও অন্যান্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথের আন্দোলন থেকে বিচ্যুত হবে না।
জিয়াউর রহমানের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আন্দোলনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান ড. মঈন।
আরও পড়ুন: ভোটার উপস্থিতি দেখেই জনগণের ইচ্ছা বোঝা যায়: রিজভী
ভোটার উপস্থিতি দেখেই জনগণের ইচ্ছা বোঝা যায়: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিদেশি প্রভুদের সহায়তায় বর্তমান সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, 'শেখ হাসিনা মনে করেন, তিনি তার প্রভুদের পৃষ্ঠপোষকতায় ক্ষমতায় থাকবেন। সেসব দিন শেষ হয়ে গেছে।’
সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে বিএনপির এই নেতা বলেন, ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে দেশের জনগণ 'বিজয়ের লক্ষণ' দেখিয়েছে। ‘আপনাদের (সরকারের) উচিত এর থেকে জনগণের চাওয়া বোঝা।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনা করে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় এ কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল।
আরও পড়ুন: আ. লীগের নতুন 'কৃষ্ণতম মেকি সরকার': রিজভী
রিজভী বলেন, জনগণ এখন আন্দোলনে নেমেছে এবং এই কর্মসূচি সফল করতে আগামী দিনগুলোতে তারা রাজপথে থাকবে।
অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং স্বৈরাচারী নেতাদের উৎখাত করার ইতিহাস বাংলাদেশের রয়েছে উল্লেখ করে রিজভী ভবিষ্যদ্বাণী করেন, ‘শেখ হাসিনার ভাগ্যও এর চেয়ে আলাদা হবে না। শেখ হাসিনার সরকারও ভেসে যাবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার পদ্মা সেতু ও ফ্লাইওভারকে উন্নয়নের নিদর্শন হিসেবে দেখছে, ‘যেখানে দরিদ্র মানুষ তাদের সন্তানদের নিজেদের ভরণপোষণের জন্য বিক্রি করে দিচ্ছে।’
তিনি বলেন, জনগণ আবার রাস্তায় নামবে, তাদের দাবি আদায় করবে এবং তাদের অধিকার পুনরুদ্ধার করবে।
জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্কের একটি বক্তব্যের বিরোধিতা করায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র যেন 'কসমেটিক' না হয়।
আইনমন্ত্রী দাবি করেছেন, তুর্কির বক্তব্য পুরোপুরি ভুল তথ্য প্রাপ্তি থেকে হতে পারে।
তিনি বলেন, 'তিনি (হক) মিথ্যা বলতে পারেন বলেই আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী। তিনি যদি সত্য বলতে পারতেন, তাহলে আওয়ামী লীগ তাকে মন্ত্রী করত না।’
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও কারাবন্দি নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজধানীর শান্তিনগরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এসময় সেখানে, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য নেতারাও ছিলেন।
আরও পড়ুন: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: রিজভী
বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
বিএনপির নতুন কর্মসূচি আসছে: রিজভী
নির্দলীয় সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন জোরদার করতে বিএনপি নতুন কর্মসূচি প্রণয়ন করছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা রুহুল কবির রিজভী।
শনিবার (১৩ জানুয়ারি) দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'অবশ্যই আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ভাবছি। আমাদের নেতারা প্রায় প্রতিদিনই বসছেন। আমাদের কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়ে গেলে আমরা আপনাদের জানাব।’
আরও পড়ুন: পাঁচ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
তিনি আরও বলেন, আমাদের দল এখনও বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। 'আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলো আছে। তাদের সঙ্গে কথা বলার মতো অনেকগুলো বিষয় আছে... আমরা সবার সঙ্গে কথা বলে নতুন কর্মসূচি প্রণয়ন করব এবং তারপর আপনাদের জানাব।’
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল এখন অবৈধ ব্যক্তিদের নিয়ে সরকার গঠন করে উদযাপন করছে। ‘ক্ষমতাসীন দলের এ ধরনের উৎসব একদিন তাদের (আওয়ামী লীগের) পরাজয় ও পতনের মধ্য দিয়ে জনগণের উৎসব হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচন করে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করে আনন্দ করছে, ঠিক যেমন নেকড়ে ও সিংহের মতো হিংস্র ও রক্তপিপাসু প্রাণী শিকার করে ভোজ করে।
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ দখল করেছে আ. লীগ: মঈন খান
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘মানুষকে বশীভূত করে তারা যে আনন্দ পায় তা একদিন তাদের জন্য ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনবে। সেদিন জনগণ বিজয়ী হবে।’
রিজভী বলেন, ন্যায়বিচার ও গণতন্ত্রের জন্য জনগণের ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন কখনও বৃথা যাবে না। ‘এটি ইতিহাসের একটি রেকর্ড এবং এটি ইতিহাসের সাক্ষী। জনগণ পরাজিত হয় না... অশুভ শক্তি কিছু সময়ের জন্য মানুষের ঢেউকে আটকাতে পারে কিন্তু তারা এটি থামাতে সক্ষম হবে না।’
তিনি বলেন, কারাগারগুলো হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত হওয়ায় তাদের দলের কারাবন্দি নেতা-কর্মীরা শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে বসবাস করছেন।
বিএনপি নেতা বলেন, 'সেখানে (কারাগারে) সর্বোচ্চ মাত্রার নিপীড়ন চালানো হয়েছে, বিরোধী দলের বন্দিদের সব মৌলিক মানবাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদসহ সিনিয়র নেতারা কারাগারে রয়েছেন বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, 'গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষ কারাগারে মারা গেছেন। শেখ হাসিনার কারাগারকে হিটলারের কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের নৃশংস নিপীড়নের সঙ্গে তুলনা করা যায়।’
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সরকার অবৈধ ক্ষমতার স্বাদ নিচ্ছে। অন্যদিকে, বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের মানুষ মারাত্মক দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছেন।
অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিত্তবান ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান রিজভী।
আরও পড়ুন: আ. লীগের নতুন 'কৃষ্ণতম মেকি সরকার': রিজভী
আ. লীগের নতুন 'কৃষ্ণতম মেকি সরকার': রিজভী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের নতুন সরকারকে একদলীয় ফ্যাসিবাদের বৈশিষ্ট্যযুক্ত বাংলাদেশের 'কৃষ্ণতম মেকি সরকার' বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, 'ডামি প্রার্থী, ডামি ভোটার, ডামি পোলিং এজেন্ট ও ডামি পর্যবেক্ষকদের নিয়ে অনুষ্ঠিত ডামি নির্বাচনের ডামি ফলাফলের ভিত্তিতে ডামি এমপিদের শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একদলীয় ফ্যাসিবাদের চিহ্নিত কৃষ্ণতম মেকি সরকারের যাত্রা শুরু হয়েছে।’
শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন বর্জন করে দেশ ও গণতান্ত্রিক বিশ্বের জনগণ শেখ হাসিনার 'ফ্যাসিবাদী' শাসনকে প্রত্যাখ্যান করেছে। ‘তারা ব্যক্তি, ফলাফল, শপথ, সংসদ ও সরকারসহ ওই নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত সব প্রক্রিয়াও প্রত্যাখ্যান করেছে।’
ভুয়া নির্বাচনের পরপরই এবং একাদশ জাতীয় সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই শেখ হাসিনা গেজেট জারি করে এবং তড়িঘড়ি করে শপথ নিয়ে নজিরবিহীন গতিতে সরকার গঠন করেন। ‘এতেই প্রকাশ পেয়েছে যে একটি অজানা ভয় তাকে গ্রাস করেছে। বৈধতা, জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে সিংহাসনকে তাসের ঘরের মতো স্থাপন করা হলে পতনের এমন নিদ্রাহীন অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে যায় জীবন।’
আরও পড়ুন: ৭৫ দিন পর খোলা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়
বিএনপির এই নেতা বলেন, নতুন সংসদ ও মন্ত্রিসভা দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। ‘জনগণ সব দিক থেকে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।’
গত ২৮ অক্টোবর পুলিশের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষের পর বিএনপি নেতারা আত্মগোপনে চলে যাওয়ার পর থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করেছেন রিজভী। বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় খোলার পর শুক্রবার প্রথমবারের মতো সরাসরি সংবাদ সম্মেলন করলেন তিনি।
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, জনগণের ভোটাধিকার ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য তাদের দলের নেতা-কর্মীরা আন্দোলন করছেন।
৭ জানুয়ারির 'তথাকথিত' নির্বাচন বর্জন করে জনগণ বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের আন্দোলনের পক্ষে তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছে বলেও দাবি করেন বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: পাঁচ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে পরাজিত আওয়ামী লীগ নেতারা এখন ভোট জালিয়াতি, ভোট ডাকাতি ও বিভিন্ন অনিয়মের ঘটনা বর্ণনা করে শেখ হাসিনাকে অবৈধ ভোটের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করছেন।
তিনি বলেন, পরাজিত প্রার্থীরা এখন প্রকাশ্যে বলছেন, কত টাকা দিয়ে কাকে নির্বাচনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। থলের বিড়ালটি আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসছে। ক্ষমতাসীন দলের সব অপকর্ম উন্মোচিত হচ্ছে।
রিজভী বলেন, 'বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে শেখ হাসিনাকে ভোট চোর বলে আসছে এবং এখন আওয়ামী লীগের লোকজন বলছে শেখ হাসিনা ভোট চোর এবং শেখ হাসিনা একজন ভোট ডাকাত।’
আরও পড়ুন: ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ দখল করেছে আ. লীগ: মঈন খান
৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ দখল করেছে আ. লীগ: মঈন খান
আওয়ামী লীগ সরকার ৭ জানুয়ারি ভুয়া নির্বাচনের মাধ্যমে সংসদ দখল করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা ড. আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেন, 'এই সরকার ভুয়া ও প্রহসনের নির্বাচন করে তার ইচ্ছানুযায়ী সংসদ দখল করেছে। এখন সবার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, ৭ জানুয়ারি কোনো নির্বাচন হয়নি।’
ড. মঈন দাবি করেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের জয়-পরাজয় সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে পূর্বনির্ধারিত ছিল।’
তিনি বলেন, ‘এটা এখন আর শুধু বিএনপির বক্তব্য নয়, এটি এখন সব প্রমাণসহ বিশ্বের সামনে উন্মোচিত হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) নয়া পল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নির্বাচন হয়েছে সরকার বনাম সরকার: তৈমূর
তিনি বলেন, সবচেয়ে হতাশাজনক ও লজ্জাজনক বিষয় হচ্ছে সরকার প্রকাশ্য দিবালোকে ভোট ডাকাতিতে লিপ্ত হয়েছে। ‘তারা আলোচনার মাধ্যমে খোলাখুলিভাবে আসন ভাগ করে নিয়েছে এবং (নির্বাচনের আগে) কে কোন আসনে নির্বাচিত হবে প্রকাশ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন বলেন, এই সরকার কতটা অর্থহীন তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের পর প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর আজ সকাল ১০টা ৪২ মিনিটের দিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটের তালা ভেঙে প্রবেশ করেন।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে দলের মহাসমাবেশ ভণ্ডুল হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য মোতায়েন করে বিএনপি কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ৭৫ দিন পর খোলা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়
ড. মঈন বলেন, গত ২৮ অক্টোবর দেশের সর্ববৃহৎ দল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় দখল করে নেয় সরকার। তিনি বলেন, 'আমরা আজ (বৃহস্পতিবার) অফিস পুনরায় খুলেছি এবং জনগণের পক্ষে কথা বলতে এসেছি, কারণ আমরা জনগণের কল্যাণের জন্য রাজনীতি করি।’
বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মতাদর্শে বিশ্বাস করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের দল অতীতের মতো জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে নেমেছে।
তিনি বলেন, 'আমরা রাস্তায় আছি এবং আন্দোলন করে যাব। বিএনপি শুধু ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনীতি করে না, কারণ আমাদের মূল লক্ষ্য জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। সুতরাং, আমরা আন্দোলন করছি এবং আমরা জনগণের ভোটাধিকার, জনগণের অর্থনৈতিক সমতার অধিকার এবং জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার করব। আমরা বাংলাদেশে এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করব যেখানে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীর কাছে এটা প্রমাণিত, এই সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, ‘এই সরকার যা বিশ্বাস করে তা হলো একদলীয় বাকশাল শাসন।’
এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান এম শাহজাহান, জয়নুল আবেদীন, নেতাই রায় চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পরে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অনিয়ম, ভোট কারচুপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের ব্যালটে সিল মারার ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: পাঁচ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
পাঁচ মাস পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া
পাঁচ মাসেরও বেশি সময় পর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) বাসায় ফিরলেন তিনি।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, বিএনপি চেয়ারপারসন বিকাল ৫টায় হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং প্রায় এক ঘণ্টা পর গুলশানের বাসায় পৌঁছান।
এ সময় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান খালেদা জিয়াকে অভ্যর্থনা জানান।
খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়াকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ায় তাকে বাসায় ফিরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
জাহিদ বলেন, মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়াকে তার গুলশানের বাসভবনে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেবে এবং এ বিষয়ে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
গত বছরের ৯ আগস্ট হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর থেকে নানা শারীরিক জটিলতায় সেখানে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
৭৮ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন।
গত ২৬ অক্টোবর খালেদা জিয়ার পেট ও বুকে পানি বৃদ্ধি এবং লিভারে রক্তক্ষরণ বন্ধে ট্রান্সজুগার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শন্ট (টিআইপিএস পদ্ধতি) নামে পরিচিত হেপাটিক পদ্ধতি সম্পন্ন করেন যুক্তরাষ্ট্রের তিন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের হামিদ রব, ক্রিস্টোস জর্জিয়াডেস ও জেমস পি এ হ্যামিল্টন গত ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশে এসে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে টিআইপিএস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নেন।
টিআইপিএস এমন একটি পদ্ধতি যা পোর্টাল শিরাগুলোকে নিম্ন চাপযুক্ত রক্তনালীগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত করতে একটি স্টেন্ট (টিউব) সন্নিবেশ করে। এটি রোগাক্রান্ত লিভারের মাধ্যমে প্রবাহিত রক্তের চাপ উপশম করে এবং রক্তপাত ও তরল ব্যাকআপ বন্ধ করতে সহায়তা করতে পারে। একটি টিআইপিএস পোর্টাল শিরার (পোর্টাল হাইপারটেনশন নামে পরিচিত) উচ্চ রক্তচাপকে উপশম করে যা প্রায়শই লিভার সিরোসিসের সেটিংয়ে ঘটে।
২০২১ সালের নভেম্বরে লিভার সিরোসিস ধরা পড়ার পর থেকেই খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠানোর পরামর্শ দিয়ে আসছেন চিকিৎসকরা।
বিএনপি চেয়ারপারসনের পরিবারও বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে অনুমতি চেয়েছিল, কিন্তু আইনমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির মামলায় সাজা স্থগিত করে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাওয়ায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়ে পুরান ঢাকার কারাগারে পাঠানো হয়। পরে একই বছর দুর্নীতির আরেকটি মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ এক নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে গুলশানের বাসায় অবস্থান এবং দেশ ত্যাগ না করার শর্তে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয়। এরপর থেকে তাকে কারাগারের বাইরে রাখতে একাধিকবার সময় বাড়ানো হয়েছে।
৭৫ দিন পর খোলা হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়
২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনার প্রায় আড়াই মাস বন্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার (১১ জানুয়ারি) সকালে পুনরায় খুলে দেওয়া হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়।
সকাল ১০টা ৪২ মিনিটের দিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে কয়েকজন নেতা-কর্মী কার্যালয়ের কলাপসিবল গেট খুলে দেন।
তারা দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নামে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কার্যালয়ে প্রবেশ করেন।
আরও পড়ুন: জনগণ বিএনপির ভোট বর্জনের ডাক প্রত্যাখ্যান করেছে: তথ্যমন্ত্রী
রিজভী বলেন, ‘তালা ভেঙে আমরা বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে প্রবেশ করেছি। ২৮ অক্টোবর সরকারের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নৃশংস অভিযানের মাধ্যমে সমাবেশ বানচাল করা হয়েছিল… পরে পুলিশ অফিসে তালা ঝুলিয়ে দেয়।’
আব্দুল মঈন খানের নেতৃত্বে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচন বিষয়য়ে বিকাল ৩টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করবেন।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সংবাদ সম্মেলনের জন্য তারা এখন অফিস পরিষ্কার করবেন।
আরও পড়ুন: দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে বিএনপি: রিজভী