বিএনপি
নির্বাচনের নামে প্রহসনমূলক খেলা বানচাল করতে জনগণের প্রতি আহ্বান বিএনপির
নির্বাচনের নামে আওয়ামী লীগ সরকারের ‘খেলা’র চেষ্টা নস্যাৎ করতে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম খান।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লিফলেট বিতরণকালে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের জনগণের কাছে আগামী নির্বাচন বর্জন করার জন্য আবেদন করছি, কারণ এই নির্বাচনে আপনাদের পছন্দের প্রার্থী বাছাই করার সুযোগ নেই।’
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ৭ জানুয়ারির নির্বাচন একটি অবৈধ, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা সরকারের মেয়াদ বাড়ানোর অপচেষ্টা মাত্র। “আপনারা (জনগণ) তাদের (সরকার) 'না' বলুন। আপনারা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়ান এবং নির্বাচনের নামে এই খেলা বানচাল করুন।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল বলেন, ‘জনগণের সব অধিকার কেড়ে নেওয়া সরকার ডামি নির্বাচন এবং গণতন্ত্রের নামে প্রহসনমূলক খেলা চালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলগুলো এই নির্বাচন বর্জন করায় দেশের জনগণের মতামত প্রকাশের কোনো সুযোগ নেই। যে নির্বাচনে সরকারবিরোধী কোনো প্রার্থী নেই সেখানে ভোট দেওয়ার কোনো গুরুত্ব ও সুযোগ নেই। সেজন্য দেশের জনগণ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় এই নির্বাচন বর্জন করবে।’
আরও পড়ুন: শনিবার পর্যন্ত চলবে বিএনপির গণসংযোগ কর্মসূচি
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান আন্দোলনে যোগ দিতে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লড়াইয়ে জয়ী হওয়ার জন্য দেশবাসীকে আবারও আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, আসুন গণতন্ত্রের সংগ্রামে জয়ী হই এবং এমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করি যে বাংলাদেশ হবে আমাদের বাংলাদেশ, জনগণের বাংলাদেশ।
দলের তিন দিনব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচির শেষ দিনে নজরুল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে পথচারীদের মধ্যে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেন।
একতরফা জাতীয় নির্বাচন বয়কটের পক্ষে জনসমর্থন আদায়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণ করেছেন বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের নেতারা।
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে নজরুল বলেন, নির্বাচনের নামে একটি খেলার অংশ হিসেবে ক্ষমতাসীন দল বুধবার তাদের ইশতেহার ঘোষণা করেছে। ‘এতে অনেক লম্বা লম্বা কথা আছে। অথচ গতকালও (বুধবার) সারা বিশ্বের শহরের তালিকায় সবচেয়ে খারাপ বায়ুর মানের তালিকায় শীর্ষে ছিল ঢাকা শহর। এভাবেই তারা হয়ে উঠেছেন উন্নয়নের রোল মডেল।’
আরও পড়ুন: ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিতে সরকারের 'মরিয়া' চেষ্টায় সাড়া মিলছে না: রিজভী
আওয়ামী লীগের অবৈধ ক্ষমতা বাড়াতে ডামি নির্বাচনে অংশ নেবেন না: বিএনপি
শনিবার পর্যন্ত চলবে বিএনপির গণসংযোগ কর্মসূচি
চলমান গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি আরও দুই দিন বাড়িয়ে শনিবার পর্যন্ত করেছে বিএনপি। জনগণকে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বর্জন ও আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা না করার আহ্বান জানাতে এই কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে বলে দলটি জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণাটি দেন।
তিনি বলেন, ‘সারা দেশে আমাদের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম চলছে। শুক্র ও শনিবারও এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
আসন্ন একতরফা নির্বাচন বর্জন, চলমান অসহযোগ আন্দোলন এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন আয়োজনের এক দফা দাবিতে জনসমর্থন আদায়ে আরও ২ দিন কর্মসূচি পালনে দলের সব স্তরের নেতা-কর্মী ও সমমনা দল এবং জোটের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির সমমনা দলগুলোও একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
এর আগে ২৪ ডিসেম্বর মঙ্গলবার থেকে ৩ দিনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। যা আজ (বৃহস্পতিবার) শেষ হওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের অবৈধ ক্ষমতা বাড়াতে ডামি নির্বাচনে অংশ নেবেন না: বিএনপি
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিতে সরকারের 'মরিয়া' চেষ্টায় সাড়া মিলছে না: রিজভী
ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিতে সরকারের 'মরিয়া' চেষ্টায় সাড়া মিলছে না: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে সরকার ‘মরিয়া’ হয়ে উঠলেও জনগণের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছে না।
রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় লিফলেট বিতরণের সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, 'ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে দেখে লোকজন দ্রুত পালিয়ে যাচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশে অবৈধ সরকার ও অধস্তন নির্বাচন কমিশন যে ডামি ও প্রহসনের নির্বাচন আয়োজন করছে তাতে জনগণ সাড়া দিচ্ছে না। জনগণকে ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ক্ষমতাসীন দল। তারা ঘরে ঘরে গিয়ে নানা ধরনের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।’
তিন দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে রিজভী বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে পথচারীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করে ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, সরকার জনগণকে একতরফা নির্বাচনে অংশ নিতে বাধ্য করে পুরো দেশকে নরকে পরিণত করার চেষ্টা করছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দেশের কোথাও ভোটারদের মধ্যে কোনো উৎসাহ-উদ্দীপনা নেই।
তিনি বলেন, 'কোনো এলাকায় আপনারা জনগণের মধ্যে ভোট নিয়ে কোনো আলোচনা করতে দেখতে পাবেন না। তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) যখন কোনো এলাকায় নৌকার পক্ষে নির্বাচনী প্রচার চালায়, তখন মানুষ দ্রুত সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। সাধারণ মানুষ বলছে এটা ভোট নয়, এটা ৩০০ আসন বণ্টনের নাটক।’
রিজভী বলেন, সরকার ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধ্য করার জন্য বিভিন্ন হুমকি দিয়ে সারাদেশের জনগণের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারকে বলতে চাই, সন্ত্রাসীদের মতো হুমকি দেওয়ার কোনো মানে নেই, কারণ মানুষ ডামি নির্বাচনে ভোট দিতে যাবে না।’
রিজভী ছাড়াও বিএনপির আরও অনেক নেতা ও বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতারা নির্বাচন বর্জন ও আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা না করার আহ্বানে জনসমর্থন আদায়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করেন।
আওয়ামী লীগের অবৈধ ক্ষমতা বাড়াতে ডামি নির্বাচনে অংশ নেবেন না: বিএনপি
আওয়ামী লীগ সরকারের অবৈধ ক্ষমতার মেয়াদ বাড়ানোর লক্ষ্যে ‘একতরফা ও ডামি নির্বাচনে’ অংশ না নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, 'আমরা জনগণকে ডামি নির্বাচনের খেলা প্রতিহত ও বর্জন করার আহ্বান জানাচ্ছি। আমরা আপনাদের বলছি, ভোট দিতে ভোটকেন্দ্রে যাবেন না। আপনাদের ভোট কোনো পরিবর্তন আনবে না।’
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে জনগণের ভোটাধিকার ও প্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘তারা আবারও আমাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার থেকে আমাদের বঞ্চিত করার চেষ্টা করছে। এই একতরফা নির্বাচনের নামে মেয়াদ আরও পাঁচ বছর বাড়ানোই এই সরকারের কৌশল।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, সরকার নির্বাচনের নামে খেলা করে দেশ ও জনগণের প্রতি অবিচার করছে।
তিনি বলেন, 'আপনারা (জনগণ) এই সরকারকে সহযোগিতা করবেন না। তারা (সরকার) যা করতে পারে তা করতে দিন, কিন্তু আপনারা তার অংশীদার হবেন না। আপনারা যদি ডাকাতি রোধ করতে না পারেন তবে কমপক্ষে ডাকাতির সঙ্গে যুক্ত হবেন না এবং ডাকাতিতে সহযোগিতা করবেন না। আপনাদের কাছে এটাই আমাদের অনুরোধ। যে অন্যায় করে তাকে সাহায্য করাও ভুল। এজন্য আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আপনারা যেন শাসক গোষ্ঠীর অন্যায়ের অংশ না হন ‘
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনে বিএনপির আহ্বানে সমর্থন জানিয়ে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এ কর্মসূচির আয়োজন করে।
কর্মসূচি শেষে নির্বাচন বর্জন ও দুপুরের সহযোগিতা আন্দোলনের পক্ষে জনসমর্থন আদায়ে বিএনপির তিন দিনব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে পথচারীদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করেন নজরুল।
তিনি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া কোটিপতি প্রার্থীদের অর্থের উৎস এবং তাদের আকস্মিক উত্থানের কারণ জানতে চান।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অধিকাংশই কোটিপতি। তিনি বলেন, 'বাংলাদেশে এত কোটিপতি কোথা থেকে আসে?’
তিনি অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট পাট হয়েছে। ‘সরকার জানে কারা এর পেছনে আছে, কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের সদস্য হওয়ায় তাদের গ্রেপ্তার করবে না।’
কোনো ‘অর্থহীন’ নির্বাচনে ভোট দেওয়ার আগ্রহ মানুষের নেই: বিএনপি
বিএনপির জে্যষ্ঠ নেতা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ‘অর্থহীন’ নির্বাচনে দেশের জনগণের ভোট দেওয়ার কোনো আগ্রহ নেই।
তিনি প্রশ্ন করেছেন, 'একতরফা' নির্বাচনে নাকি জনসাধারণের সমর্থন রয়েছে, তাহলে কেন কাউন্সিলরদের ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আনার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) মতিঝিল থেকে দিলকুশা রোডের পথচারীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করার সময় নজরুল সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, ‘মানুষ ভোট দিতে আগ্রহী নয়, কারণ তারা জানে এটি একটি অর্থহীন নির্বাচন ... এটি কোনো প্রকৃত ভোট বা নির্বাচন নয়।’
তিনি ভোটারদের ৭ জানুয়ারি কোনোভাবেই ভোটকেন্দ্রে না যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘জনগণের জীবন ও জীবিকা নিয়ে খেলা করছে এমন সরকারকে সহযোগিতা করবেন না।’
আরও পড়ুন: মঙ্গলবার থেকে ৩ দিন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল বলেছেন, কেন মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আনার জন্য ডামি প্রার্থীর প্রয়োজন। ‘সরকারের বিভিন্ন প্রোগ্রাম এবং সুবিধাগুলোর সুবিধাভোগীদের কেন ভোট না দিলে তাদের কার্ড বাতিল করার হুমকি দেওয়া হচ্ছে?
তিনি বলেন, অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তারা ভোটদানও বর্জন করবে।
দেশের অর্থনীতি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যখন মারাত্মক সংকটে পড়েছে, তখন কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে এ জাতীয় অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের ন্যায্যতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এই অবৈধ নির্বাচনের ব্যয় বন্ধ করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি ... জনগণ এমন নির্বাচন চায় না যার সব প্রার্থীই আওয়ামী লীগের। আমরা এ ধরনের নির্বাচন চাই না।’
এই বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল এমন একটি নির্বাচন চায় যেখানে মানুষ নির্দ্বিধায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে এবং নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।
তাদের তিন দিনের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে নজরুলসহ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কিছু নেতা-কর্মী গণসংযোগ করেন এবং মতিঝিল অঞ্চলের সোনালি ব্যাংকের নিকটবর্তী পথচারীদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার কেবিনে অজ্ঞাত যুবক ঢোকার চেষ্টা করেছে: রিজভী
বিএনপি-সমমনা বিরোধী দলের ডাকা দ্বাদশ অবরোধ চলছে
সিরাজগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ায় ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি-চৌহালী) সংসদীয় আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মেজর (অব.) আব্দুল্লাহ আল মামুনের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ায় ছাত্রদল নেতা সানোয়ার হোসেন বিজয়কে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি সিরাজগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি ছিলেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ওই ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়ায় শনিবার তাকে বহিষ্কার করা হয়।
এ বিষয়ে জেলা ছাত্রদলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা সাংবাদিকদের জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিরাজগঞ্জ-৫ আসনের স্বতন্ত্র ওই প্রার্থীর নির্বাচনী কাজে অংশগ্রহণ করায় তাকে তার পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে নৌকার ক্যাম্প ভাঙচুরের অভিযোগ
নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন: নড়াইলে মাশরাফীসহ ৩ প্রার্থীকে জরিমানা
হিরো আলমের উপর ফের হামলার অভিযোগ
মঙ্গলবার থেকে ৩ দিন গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা বিএনপির
আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচন বর্জনে বিএনপির আহ্বানের পক্ষে জনসমর্থন আদায়ে মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) থেকে তিন দিনের গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটি।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘আগামী ২৬, ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর তিন দিনব্যাপী সারাদেশে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হবে। আমি নির্বাচন বর্জন ও অসহযোগ আন্দোলন অব্যাহত রাখার পক্ষে এই কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’
সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের তিন ঘণ্টা আগে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোও একই ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে আজ (রবিবার) সকাল ৬টায় দিনব্যাপী সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ পালন করে বিরোধী দল।
২০ ডিসেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণার পর প্রথম এবং ৩১ অক্টোবর থেকে বিরোধী দলগুলোর ডাকা দ্বাদশ দফার অবরোধ কর্মসূচি এটি।
বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করাতে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন করতে বাধ্য করতে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর থেকে প্রায় তিন ডজন বিরোধী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিএনপি যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে আসছে।
গত ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর বিএনপির আন্দোলন গতি হারিয়ে ফেলে। কারণ এর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক সিনিয়র নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং অনেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তারের ভয়ে আত্মগোপনে চলে যায়।
তবে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো ২৯ অক্টোবর থেকে ১১ দফায় ২২ দিন দেশব্যাপী অবরোধ এবং চার দফায় পাঁচ দিন হরতাল দেয়।
বিরোধী দল ২০ ডিসেম্বর অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।
খালেদা জিয়ার কেবিনে অজ্ঞাত যুবক ঢোকার চেষ্টা করেছে: রিজভী
এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কেবিনে প্রবেশের চেষ্টা করে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, 'আমাদের চেয়ারপারসন অসুস্থ, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কেবিনে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের অনুপ্রবেশের চেষ্টা শুধু উদ্বেগজনকই নয়, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও গুরুতর প্রশ্ন উঠছে।’
খালেদা জিয়ার বর্তমান স্বাস্থ্য সমস্যার প্রেক্ষাপটে পরিস্থিতির ভয়াবহতা তুলে ধরেন বিএনপি নেতা।
তিনি আরও বলেন, এভারকেয়ার হাসপাতালের মতো একটি স্বনামধন্য নিরাপদ পরিবেশে কীভাবে এমন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির নিরাপত্তা, বিশেষকরে তার অসুস্থ অবস্থায়, তা নিয়ে মানুষ বিস্মিত।
রিজভী এই ঘটনার প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং সম্ভাব্য গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দেন। ‘এ ধরনের রহস্যময় ঘটনায় জনগণের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নাকি আরও ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্রের অংশ তা নিশ্চিত করা জরুরি।’
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, হার্টের জটিলতাসহ একাধিক স্বাস্থ্যজনিত কারণে গত ৯ আগস্ট থেকে হাসপাতালে ভর্তি ৭৮ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা জোরদারের দাবি উঠেছে। সম্প্রতি, তিনি ট্রান্সজুগুলার ইন্ট্রাহেপাটিক পোর্টোসিস্টেমিক শন্ট (টিআইপিএস) নামে একটি বিশেষ হেপাটিকের চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির স্কুল অব মেডিসিনের মার্কিন বিশেষজ্ঞদের একটি দলের পরক্ষিার পর এটি শনাক্ত করা হয়।
২০২০ সালে শর্তসাপেক্ষে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে খালেদা জিয়া চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যে সরকার তার মুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে তার গুলশানের বাসভবনে থাকার বাধ্যবাধকতা দেয় এবং বহির্বিশ্বে ভ্রমণ নিষিদ্ধ করে।
রংপুরে বিএনপির দিনব্যাপী হরতাল
সরকারের পদত্যাগ, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার ও রংপুর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডনের মুক্তির দাবিতে রংপুরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি।
শনিবার(২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগর যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব সই করা এক বিবৃতিতে এ হরতালের ঘোষণা দেয়া হয়।
আজ সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে এই হরতাল।
হরতাল সফল করার জন্য তারা দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর রংপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাডভোকেট মাহফুজ উন নবী ডনসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নাশকতার মামলায় বিএনপির পাঁচ নেতাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বিএনপি-সমমনা বিরোধী দলের ডাকা দ্বাদশ অবরোধ চলছে
বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর সারাদেশে ডাকা আরেকটি সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ চলছে।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে দিনব্যাপী এ অবরোধ পালন করছে দলগুলো।
গত ২০ ডিসেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন ঘোষণার পর এটিই প্রথম অবরোধ কর্মসূচি। এর আগে গত ৩১ অক্টোবর থেকে বিরোধী দলগুলো ১১ দফায় অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে। সে অনুযায়ী এটি আন্দোলনকারীদের দ্বাদশ অবরোধ কর্মসূচি।
সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া অবরোধ শেষ হবে সন্ধ্যা ৬টায়।
আরও পড়ুন: রবিবার ফের বিএনপির অবরোধ
উত্তেজনা ও অগ্নিসংযোগের আশঙ্কা সত্ত্বেও ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহন ও যাত্রীদের উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে এবং ঢাকার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে।
সংবাদপত্র, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
এদিকে অবরোধের প্রাক্কালে শনিবার রাতে রাজধানীর গুলিস্তান, মিরপুর ও কলাবাগান এলাকায় তিনটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে: ড. মঈন খান