বিএনপি
রাজশাহীতে হরতালের প্রথম দিনে পুড়ল দুই বাস
বিএনপি,জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলাকালে রবিবার(১৯ নভেম্বর) রাজশাহীর পুঠিয়া ও গোদাগাড়ী উপজেলায় দুটি বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা।
এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
পুঠিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান জানান, রবিবার রাতে নাটোর থেকে একটি বেসরকারি কোম্পানির শ্রমিকদের বহনকারী একটি বাস বাগমারা উপজেলার তাহেরপুরের দিকে যায়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফেরার পথে ধোপাপাড়া এলাকায় চলন্ত বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তরের স্টেশন অফিসার তালহা বিন জসিম জানান, খবর পেয়ে পুঠিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গোদাগাড়ী উপজেলায় শিমু নূর তাজ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে ৪ বিএনপি কর্মী আটক
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল মতিন জানান, রবিবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের উদপুর এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হেলমেট পরিহিত দুই মোটরসাইকেলে চারজন চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী চলন্ত বাসে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে বলেও জানান ওসি।
চালক বাসথামানোর পর যাত্রীরা দ্রুত নেমে যাওয়ায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় দিনের হরতাল চলছে, ঢাকার রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক
দ্বিতীয় দিনের হরতাল চলছে, ঢাকার রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর ডাকা দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার দ্বিতীয় দিনের মতো হরতাল চলছে আজ।
নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর বিরোধী দলগুলোর এটাই প্রথম হরতাল।
চলমান হরতাল শেষ হবে আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল ৬টায়।
উত্তেজনা ও সহিংসতার আশঙ্কা সত্ত্বেও আজ সকালে ঢাকার রাস্তায় গণপরিবহনের উপস্থিতি স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে।
এর আগে সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে পাঁচবার অবরোধের পর বিএনপি, জামায়াত ও সমমনা বিরোধী দলগুলো হরতালের ডাক দেয়। অবরোধের সময় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশকিছু যানবাহন, বিশেষ করে বাস পোড়ানো হয়।
অবরোধের তুলনায় আজ সকালে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বেশি।
গতকাল রবিবার হরতালের প্রথম দিনে বিক্ষিপ্তভাবে অগ্নিসংযোগ ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতাল উপলক্ষে বিএনপি ও জোটের সমাবেশ
সুনামগঞ্জে পুলিশ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন এবং সারাদেশে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি ট্রেনসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
হরতাল চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ২৩৫ প্লাটুন এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ৪৬০টি টহল দল মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে শনিবার বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালন ও সফল করার জন্য সর্বস্তরের জনগণ ও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অপপ্রচার একতরফা নির্বাচনের কৌশল: রিজভী
চট্টগ্রামে বিএনপির ১৪ নেতা-কর্মী আটক
চট্টগ্রামে বিএনপি ও সমমনা কয়েকটি বিরোধী দলের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল চলাকালে অন্তত ১৪ জন নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘোষিত তফসিলের প্রতিবাদে রবিবার (১৯ নভেম্বর) নগরীর বিভিন্ন স্থানে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল করে বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নগর ও জেলার বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল ও পিকেটিং চলাকালে ১০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
রবিবার রাতে মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-দপ্তর সম্পাদক ইদ্রিস আলীর সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
আরও পড়ুন: তফসিল বাতিল করে আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন: বিএনপি
এদিকে পুলিশ দাবি করছে চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ ও চন্দনাইশ উপজেলায় একটি গাড়িতে আগুন দেয়ার চেষ্টাকালে চারজনকে আটক করেছে।
এ সময় তাদের কাছ থেকে ইটপাটকেল, টায়ার, টর্চ, কেরোসিন ভর্তি বোতল উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতাল উপলক্ষে বিএনপি ও জোটের সমাবেশ
আটককৃতরা হলেন- ২৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান মোস্তফা, ২৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মাইনুদ্দিন, মো. জায়েদ ও মো. জাকির হোসেন প্রকাশ।
এ ব্যাপারে চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওবায়দুল বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অপপ্রচার একতরফা নির্বাচনের কৌশল: রিজভী
বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অপপ্রচার একতরফা নির্বাচনের কৌশল: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফা নির্বাচনের জন্য ‘সরকারের পুতুল’ হিসেবে কাজ করছে।
রবিবার (১৯ নভেম্বর) ভার্চুয়াল প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে ও বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করতে দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মেরুদণ্ডহীন ও পুতুল নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের নির্বাচনের তফসিল বাস্তবায়নে জোরালো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
আরও পড়ুন: তারেক ও বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তার অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশ: রিজভী
তিনি অভিযোগ করেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সারা দেশে যারা আন্দোলন করছে, তাদের উপর ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা, আওয়ামী লীগপন্থী পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দাদের সঙ্গে নিয়ে হায়েনার মতো আক্রমণ করেছে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, রাজনীতিতে বিপজ্জনক অচলাবস্থা নিরসনে এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়া চলমান আন্দোলনকে বানচাল করতে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের হয়রানি ও নির্যাতন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘অনিবার্য গণঅভ্যুত্থানের পদাঙ্ক শুনছে বাংলাদেশিরা। স্বৈরাচারী নিপীড়কের পতনের কাউন্টডাউনের মধ্যে আরেকটি একতরফা ও পর্যায়ক্রমে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অপপ্রয়াস চলছে।’
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সারাদেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বাড়িতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে, তাদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের পাইকারি গ্রেপ্তার ও বিভিন্ন হুমকি দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, পিটিয়ে হত্যা, গাড়িতে আগুন দিয়ে হত্যা করার মতো মারাত্মক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার রেকর্ড রয়েছে আওয়ামী লীগের।
তিনি বলেন, ‘নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য বিএনপিকে দোষারোপ করে আওয়ামী লীগ দেশের বাইরে প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু তাতে তারা সফল হতে পারছে না। সারা বিশ্ব বুঝতে পেরেছে যে, বিএনপির বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অপপ্রচার মূলত একতরফা নির্বাচনের কৌশল।’
রবিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ৫১০ জনের বেশি নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিন সফল করার জন্য তিনি দেশের জনগণ, বিএনপি ও সমমনা দল ও জোটের নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে দেশে বিএনপি-জামায়াত নামে কোনো দল থাকবে না বলে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বক্তব্যের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, তার ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য শুনে দেশের মানুষ হতবাক।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে এবং দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার চালিয়ে বিএনপিকে বিভক্ত করার অশুভ প্রচেষ্টায় সফল হতে পারেনি।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা যতদিন থাকবে ততদিন বিএনপি রাজনৈতিক দল হিসেবে থাকবে।
আরও পড়ুন: তৈরি পোশাক শিল্পকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে চায় সরকার: রিজভী
দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংকট চরমে, জনগণ প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত: রিজভী
রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে হরতাল উপলক্ষে বিএনপি ও জোটের সমাবেশ
আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের সমর্থনে রবিবার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বিএনপিসহ কয়েকটি সমমনা দল ও জোট।
বিরোধী দলগুলো একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য অবিলম্বে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তফসিল বাতিলের আহ্বান জানিয়েছে।
৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনে তেজগাঁও, ফকিরাপুল, জিগাতলা, বাড্ডা, মালিবাগ, গুলশান, বনানী, গ্রিন রোড, ধানমণ্ডি, রমনা ও মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ঝটিকা মিছিল বের করে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
অন্যদিকে, রবিবারও তালাবদ্ধ বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের দুই পাশের সড়কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল।
গণতন্ত্র মঞ্চ, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণ অধিকার পরিষদ, ১২ দলীয় জোট এলডিপি, লেবার পার্টি, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, গণফোরাম-এনপিপি ও বাম গণতান্ত্রিক জোটও বিজয়নগর, পুরানা পল্টন, নাইটিঙ্গেল ক্রসিং, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও মতিঝিল এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে।
এসব মিছিল-সমাবেশ থেকে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও সরকারের বিরুদ্ধে একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টার অভিযোগ করে এর বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দেন।
বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য বিরোধী দল আজ সকাল ৬টায় সারাদেশে হরতাল পালন করে।
আরও পড়ুন: তফসিল বাতিল করে আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন: বিএনপি
গত ৭ জানুয়ারি ইসি দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়ার পর বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে এই প্রথম হরতাল পালন করা হচ্ছে।
গত ১৫ নভেম্বর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল ঘোষণা করেন, আগামী ৭ জানুয়ারি দেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গণতন্ত্র মঞ্চ বিজয়নগর থেকে একটি মিছিল বের করে, যা সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
সমাবেশে বক্তব্যে জোট নেতারা অভিযোগ করেন, দেশ ও জনগণকে বিপদে ফেলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আরেকটি 'প্রহসনমূলক' নির্বাচন করতে চায় আওয়ামী লীগ সরকার।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জুনায়েদ সাকি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে দেশের অধিকাংশ বিরোধী দল এখন ঐক্যবদ্ধ।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো প্রতিপক্ষ ছাড়াই ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়।
তিনি আরও বলেন, ‘যদি আরেকটি একতরফা নির্বাচন হয়, তাহলে দেশ শুধু অর্থনৈতিক সংকটই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ভয়ানক কূটনৈতিক সংকটের সম্মুখীন হবে।’
সাকি বলেন, সরকার যেকোনো উপায়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য দেশের মানুষকে বিপদে ফেলছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের জোটের শরিক জাতীয় পার্টিও বলছে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
সাকি আরও বলেন, ‘ভোট কারচুপিকে নির্বাচন হিসেবে প্রচারণা চালানোটা আওয়ামী লীগের জন্য লজ্জাজনক। আমরা জনগণ এভাবে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হতে দেব না। সেজন্য আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং আমরা বিজয়ী হব।’
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক নির্বাচনের তফসিল স্থগিত করে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হাজার হাজার মামলা প্রত্যাহারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টির জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘সব মানুষ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। এরপরও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিচ্ছেন। এমনকি তাদের (আওয়ামী লীগ নেতাদের) প্রতারণামূলক বক্তব্য শুনে শয়তানও লজ্জিত হয়।’
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু
দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংকট চরমে, জনগণ প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত: রিজভী
তফসিল বাতিল করে আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন: বিএনপি
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল দেশের ভোটাররা প্রত্যাখ্যান করায় স্বৈরাচারী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকার সারাদেশে বিরোধী রাজনীতির ওপর কঠোর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই অভিযোগ করেন।
নির্বাচনের তফসিল বাতিল করে দেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে নির্বাচন কমিশন ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, দেশের ১২ কোটি ভোটার নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিলকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর ধরে যারা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত, তারা স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং আগামী নির্বাচন তদারকির জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাজপথে নেমেছে।
আরও পড়ুন: তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে রবিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক বিএনপির
বিএনপি নেতা বলেন, 'ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা বিচার বিভাগ, প্রশাসন, পুলিশসহ সকল রাষ্ট্রযন্ত্রের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পর জাতীয়তাবাদী শক্তি, বিরোধী দল ও ভিন্নমতাবলম্বীদের নির্মূল করে স্বৈরাচারী একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দেশব্যাপী বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞের অভিযান চালাচ্ছেন।’
তিনি দাবি করেন, বিএনপি নেতা-কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেপ্তারে নেকড়ের মতো জনগণের ওপর হামলা চালাচ্ছে পুলিশ।
রিজভী বলেন, 'পুলিশের বিস্ময়কর হীন প্রচেষ্টা প্রমাণ করেছে যে, শেখ হাসিনার সরকার একটি ধ্বংসাত্মক ও প্রাণঘাতী পরিস্থিতি তৈরি করতে সহিংস হয়ে উঠেছে এবং একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য মড়িয়া হয়ে উঠেছে। অতীতের মতো তিনি বাংলাদেশের জনগণকে আটকে রেখে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করে ভোট ডাকাতির উৎসবকে সফল করতে চান।’
বিএনপি নেতা বলেন, বিএনপি নেতা-কর্মীদের 'গায়েবি' মামলায় গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তাদের বাড়িতে অভিযান চালাচ্ছে এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের বাড়ি-ঘর ও গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করছে।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের 'মিথ্যা' মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও 'গ্রেপ্তার বাণিজ্যে' লিপ্ত হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বিক্ষোভ
তিনি আরও বলেন, 'শেখ হাসিনা তাদের (পুলিশকে) গ্রেপ্তার বাণিজ্যের সনদ দিয়েছেন। কার্যত দেশে আইনের শাসন কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ভুতুড়ে মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার ভয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দেশের দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে।’
রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, যেহেতু জনগণ তাদের অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য রাস্তায় নেমেছে, তাই নিপীড়ন চালিয়ে সরকার তার পতন প্রতিরোধ করতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না হলে সরকারের পতন অনিবার্য। অবিলম্বে আপনাদের ঘোষিত তফসিল প্রত্যাহার করুন। নির্বাচন স্থগিত করুন এবং প্রথমে পদত্যাগ করুন। অন্যথায় দেশের জনগণ এই একতরফা নির্বাচনকে প্রতিহত করবে।’
শনিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ৩০২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ নিয়ে গত ২৮ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন মামলায় বিএনপির ১৩ হাজার ২১০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রবিবার থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদল নেতাসহ গ্রেপ্তার ২
নারায়ণগঞ্জে নাশকতার মামলায় জেলা ছাত্রদলের এক নেতা ও তার সহকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বাহিনীর লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
গ্রেপ্তারেরা হলেন- জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি আবু তালেব মাসুম (৩৭) এবং তার সহকারী নারায়ণগঞ্জ জেলা জিয়া মঞ্চের সভাপতি জজ মিয়া (৩৯)।
খন্দকার আল মঈন বলেন, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন মহাসড়কে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। মহাসড়ক অবরোধ করে গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত পরিবহনসহ বিভিন্ন যানবাহনে অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাঙচুরসহ বিভিন্ন ধরনের নাশকতা ও সহিংসতা চালায় তারা। এসব নাশকতা ও সহিংসতার ভিডিও ফুটেজ প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এ নাশকতা ও সহিংসতার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র্যাব।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির ৭০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা: ১২ জন গ্রেপ্তার
এরই ধারাবাহিকতায়, শুক্রবার রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-১ ও র্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল কক্সবাজারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে মূলহোতা ও ১৫টি মামলার পলাতক আসামি আবু তালেব মাসুম ও তার সহযোগী জজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তার দুইজন তাদের দলীয় নেতাদের নির্দেশনায় ও মাসুমের পরিকল্পনা রূপগঞ্জ এলাকায় সহিংসতা ও নাশকতা চালায়। মাসুম ২৮ অক্টোবর পল্টনে সমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য নেতা-কর্মীদের নিয়ে ঢাকায় আসে। পরে তারা পল্টন ও এর আশপাশের এলাকায় গণপরিবহন, ব্যক্তিগত যানবাহনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে নাশকতা সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির অপচেষ্টা চালায়।
তিনি বলেন, মাসুম ও তার অনুসারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়াতে রাজধানীর বাড্ডা, বসুন্ধরা, খিলক্ষেত, যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন এলাকায় এবং সর্বশেষ কক্সবাজারে আত্মগোপন করে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তার জজ মিয়া ছাত্রদল নেতা মাসুমের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তার বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ ও রাজধানীর বিভিন্ন থানায় চারটির বেশি মামলা রয়েছে।
আরও পড়ুন: জয়পুরহাটে নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে বিএনপির বিরুদ্ধে ৪৮ মামলা: ৭০০ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
রবিবার থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর ৪৮ ঘণ্টার হরতাল শুরু
রবিবার সকাল থেকে দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার হরতাল পালন করতে যাচ্ছে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলো।
গত সপ্তাহে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে এই হরতাল ডাকা হয়েছে।
নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ গ্রেপ্তার সব নেতা-কর্মীকে মুক্তি দিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালন করবে বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: তফসিল ঘোষণার নামে 'নাটক' বন্ধ করুন: বিএনপি
শনিবার (১৮ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে দলের কয়েকজন নেতার মধ্যে অন্যতম রুহুল কবির রিজভী সর্বস্তরের জনগণ ও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন ও সফল করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘জনগণের হারানো সব অধিকার পুনরুদ্ধার এবং অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এই হরতাল। সরকারের দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর জন্যও এই হরতাল।’
হরতাল কার্যকর করতে বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের সাহসের সঙ্গে রাজপথে নামার আহ্বান জানান রিজভী।
তিনি একটি বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকারের পদত্যাগ এবং নির্বাচনের তফসিল বাতিলের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে রবিবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার হরতালের ডাক বিএনপির
এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য চাপ দিতে বুধবার সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার সড়ক-রেল-নৌপথ অবরোধ করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন একই দল। এটি ছিল বিরোধী দলগুলোর অবরোধ কর্মসূচির পঞ্চম পর্যায়।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দেশব্যাপী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করেন তারা।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষ হয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই নয়াপল্টনে সহিংস সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশ মাঝপথে পণ্ড হয়ে যায়।
তফসিলের প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট (এলডিএ) সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অর্ধদিবস হরতাল এবং গণতন্ত্র মঞ্চ সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করে। ইসলামী দলগুলোর একটি উদীয়মান জোটও ইসির তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে, যা আসন্ন নির্বাচন সত্যিকার অর্থে অংশগ্রহণমূলক হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি করেছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বিক্ষোভ
দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংকট চরমে, জনগণ প্রতিরোধ করতে প্রস্তুত: রিজভী
বিএনপি শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বলেছে, বাংলাদেশে দীর্ঘস্থায়ী রাজনৈতিক সংকট এখন চরমে পৌঁছেছে। কারণ নাগরিকরা একতরফা জাতীয় নির্বাচন প্রতিহত করতে প্রস্তুত।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিতে গিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীও অভিযোগ করেন, সরকার গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশে 'ফেরাউনের রাজত্ব' প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি বলেন, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন।
এই বিএনপি নেতা বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লাগাতার আন্দোলন এবং রাজপথে বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মীদের ত্যাগ ও রক্ত উপেক্ষা করে নির্বাচন কমিশন (ইসি) একতরফাভাবে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, দেশের সুশীল সমাজ, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিদেশি কূটনীতিকদের আবেদন উপেক্ষা করে সিইসি একটি স্বৈরাচারী ও গণতন্ত্রবিরোধী সরকারের প্রধানের নির্দেশে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন।
আরও পড়ুন: একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যেই বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ: রিজভী
রিজভী বলেন, ‘একতরফা নির্বাচন প্রতিহত করতে জনগণ তাদের জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। জনগণের ক্ষমতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলন সব স্বৈরশাসকের জন্য একটি সতর্ক বার্তা। দেশের দেড় দশকের রাজনৈতিক সংকট এখন এর ক্লাইম্যাক্সে আসছে।’
তিনি বলেন, জনগণ বাংলাদেশের ত্রাণকর্তা এবং তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও ভোটাধিকারের অধিকারসহ তাদের সব অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘নিষ্ঠুর স্বৈরশাসক’ শেখ হাসিনার শোষণ-নিপীড়নের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে বিশ্বের গণতন্ত্রকামী জনগণ বাংলাদেশের জনগণের সংগ্রামকে সমর্থন করছে। ‘বিশ্ব বিবেক এখন জাগ্রত।’
রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা গণতান্ত্রিক শক্তিকে দমন করে 'আওয়ামী ফ্যাসিবাদ' প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রপন্থী শক্তি এখন শেখ হাসিনার বুলেটের লক্ষ্যবস্তু। মূলত দেশে গণতন্ত্র মৃত।’
তিনি আরও বলেন, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্য।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা অভিযোগ করেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, বাড়িঘরে তল্লাশি ও পরিবারের সদস্যদের হয়রানি অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
শুক্রবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির অন্তত ৩৯৫ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে রিজভী জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এখন ‘নিষ্ঠুর একদলীয় শাসনের’ অধীনে: রিজভী
তারেক ও বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য তার অসহায়ত্বের বহিঃপ্রকাশ: রিজভী
নির্বাচনের তফসিলের প্রতিবাদে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলোর বিক্ষোভ
আগামী ৭ জানুয়ারি ভোট গ্রহণের লক্ষ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলো।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীরা এই বিক্ষোভ করেন।
একতরফা নির্বাচনের তফসিল অবিলম্বে বাতিল করার জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিরোধী দলগুলো।
তফসিলের প্রতিবাদে রামপুরা, মালিবাগ, ওয়ারী, মতিঝিল, সায়েদাবাদ, সেগুন বাগিচাসহ বিভিন্ন এলাকায় আকস্মিক মিছিল করেছে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
আরও পড়ুন: তফসিল ঘোষণার নামে 'নাটক' বন্ধ করুন: বিএনপি
গণঅধিকার পরিষদের দুই অংশ ও ১২ দলীয় জোট বিজয়নগর এলাকায় পৃথক মিছিল করে এবং এলডিপি, লেবার পার্টি ও বাম গণতান্ত্রিক জোট পুরানা পল্টন এলাকায় বিক্ষোভ করে।
এসব মিছিল থেকে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের 'প্রচেষ্টার' জন্য নির্বাচন কমিশন ও সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের জন্য তফসিল ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: ইসি ঘোষিত নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান বিএনপির