বিএনপি
মির্জা আব্বাস ফের কারাগারে, ৮ নভেম্বর আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের বাইরে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে করা মামলায় রবিবার (৫ নভেম্বর) আত্মপক্ষ সমর্থনে জবানবন্দি রেকর্ডের জন্য দিন ধার্য করেছেন ঢাকার একটি আদালত।
শুনানিকালে মির্জা আব্বাস আদালতের কাছে কথা বলার অনুমতি চান।
আদালত তাকে কথা বলার অনুমতি দিলে তিনি বলেন, ‘গত বছর আমাকে এবং মির্জা ফখরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। সে সময় মির্জা ফখরুল ও আমাকে কনডেম সেলে রাখা হয়েছিল। এখন আমাকে মেঝেতে রাখা হয়েছে। এখন আমি পায়ে হেঁটে এখানে এসেছি, হয়তো পরের বার আমাকে হুইলচেয়ারে আসতে হবে।’
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম শুনানি শেষে আত্মপক্ষ সমর্থনের জবানবন্দি রেকর্ডের দিন ধার্য করেন।
মির্জা আব্বাসের আইনজীবী মো. আমিনুল ইসলাম জানান, আজ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের কথা ছিল।
তিনি বলেন, ‘আমরা মির্জা আব্বাসের জামিন আবেদন করেছি। শুনানির পর, আদালত জামিনের আবেদন রেকর্ড করে এবং আত্মপক্ষ সমর্থনের বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য ৮ নভেম্বর দিন ধার্য করে।’
গত ৩১ অক্টোবর একই আদালত মির্জা আব্বাসের জামিন বাতিল করে মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এদিকে নাশকতার মামলায় রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় দায়ের করা মামলায় রিমান্ড শেষে মির্জা আব্বাসকে আজ ফের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি পুলিশ রবিবার মির্জা আব্বাসকে আদালতে হাজির করে কারাগারে রাখার আবেদন জানায়।
মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠান।
এর আগে গত ১ নভেম্বর এ মামলায় তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
টঙ্গী থেকে বিএনপি নেতা আলতাফ হোসেনকে আটক করেছে র্যাব
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে টঙ্গীর একটি বাসা থেকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এলিট ফোর্সের মিডিয়া উইংয়ের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ইমরান খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আলতাফ হোসেন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র্যাব সদর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুর, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ও সহিংসতার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আলতাফের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
আটকের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ঢাকার নয়াপল্টন, কাকরাইলসহ ২৮ অক্টোবর দলের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবল আমিনুল ইসলাম গুরুতর আহত হয়ে পরে মারা যান।
২৯ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ৬৪ জন নেতার নাম উল্লেখ করে পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করে পুলিশ।
হত্যা মামলায় মির্জা ফখরুল, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং সিনিয়র যুগ্ম সচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির ২০০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১৫০
আটকের ৪৮ ঘণ্টায়ও খুলনা ছাত্রদল সভাপতির সন্ধান মেলেনি: পরিবার
পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিন: প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে রিজভী
১৯৭১ সালের পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর নৃশংসতা ও দুঃশাসনের অনুকরণ করে সরকার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য দেশে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
শনিবার (৪ নভেম্বর) এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেন, আরেকটি একতরফা নির্বাচনের লক্ষ্যে সরকার বিএনপির 'শীর্ষ থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের' নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা বল প্রয়োগ করে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করছেন। ১৯৭১ সালের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি এখন বাংলাদেশে বিরাজ করছে। আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৭১ সালের দখলদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতা ও দুঃশাসনের অনুকরণ করছে। আওয়ামী লীগ এখন ১৯৭১ সালের পাকিস্তানপন্থী 'শান্তি' কমিটির মতো 'শান্তি' সমাবেশ করছে।
আরও পড়ুন: বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়িতে না পেয়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী তাদের পরিবারের সদস্যদের ধরে নিয়ে গিয়েছিল।
তিনি বলেন, আজকের আওয়ামী পুলিশ সেই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করছে। ছেলেকে না পেলে তার ভাইকে নিয়ে যাওয়া হয়, ভাইকে না পেলে তার বাবাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সারা দেশ থেকে প্রতিনিয়ত এ ধরনের অমানবিক খবর আমাদের পেতে হয়।
রিজভী বলেন, জাতি এখন নতুন মডেলের কাল্পনিক মামলা দেখতে পাচ্ছে। মামুন নামে এক যুবদল নেতাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর তার বিরুদ্ধে বরিশালে ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলা করা হয়।
আরেক বিএনপি নেতা কঙ্কনকে একটি ট্রাকে পেট্রল বোমা নিক্ষেপের মামলায় অভিযুক্ত করা হয়, অথচ তিনি কারাগারে ছিলেন। তিনি বলেন, 'আপনারা সংবাদপত্রে এসব বিষয় উঠে আসতে দেখবেন। আমরা প্রায়ই গণমাধ্যমে এসব মজার গল্প ও কৌতুকের খবর দেখি ও শুনি।
আরও পড়ুন: আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক বিএনপির
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দলের নেতা-কর্মীদের 'হাস্যকর' মামলায় নাম ও আসামি করে দমন-পীড়ন ও হয়রানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, 'দেশের জাতীয় নেতাদের থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের ঘটনা অবর্ণনীয়ভাবে চলছে।
তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও হত্যা করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, শনিবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ১৭৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ এবং হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত এক সপ্তাহে সারাদেশে ৫০৬টি নতুন মামলায় অন্তত ৭ হাজার ৭১৩ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, এ সময় পুলিশের গুলিতে ৫ হাজার ৭৮০ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন এবং একজন সাংবাদিকসহ ৯জন নিহত হয়েছেন।
রিজভী দাবি করেন, কারাগারে সরকারের অসদাচরণের পাশাপাশি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ দলের নেতা-কর্মীদের মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে অনিচ্ছুক, কারণ তিনি একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকার স্বাদ পেয়েছেন। ‘তিনি একতরফা নির্বাচন করবেন, এমনকি রক্তপাত হলেও।’
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু রবিবার
রিজভী নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করে প্রধানমন্ত্রীকে তার গণতান্ত্রিক যোগ্যতা প্রমাণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী কিছুদিন আগে একটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, জনগণই তার মূল শক্তি। তাহলে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করছেন না কেন? জনগণ যদি আপনাদের সঙ্গে থাকে, তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচন করে আপনারা ক্ষমতায় আসতে ভয় পাচ্ছেন কেন?
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে 'নৃশংসভাবে' হামলা চালানোর পর নির্বাচনের আগে সরকার কেন বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের গ্রেপ্তার করছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘জনগণ যদি আপনার পাশে থাকে, তাহলে কেন আপনি এই ধ্বংসাত্মক ও রক্তাক্ত পথ অবলম্বন করবেন? জনগণ যে সরকারকে ভয় পায়, সেটি হলো স্বৈরাচারী সরকার। এর পরিবর্তে যে সরকার জনগণকে ভয় পায়, তা হলো গণতান্ত্রিক সরকার।’
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির ২০০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১৫০
বিএনপি নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শুরু রবিবার
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পথ সুগম করতে আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে রবিবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলগুলোর দেশব্যাপী ৪৮ ঘণ্টার সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ।
রবিবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টা পর্যন্ত সারাদেশে এ অবরোধ চলবে।
বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তত্ত্বাবধানের জন্য নির্দলীয় নিরপেক্ষ প্রশাসন প্রতিষ্ঠার দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ পালন করবে।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ কর্মসূচি সফল করতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালনের জন্য নেতা-কর্মী ও সমর্থক এবং দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
তিনি বলে, সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের যানবাহন, অ্যাম্বুলেন্স এবং অক্সিজেন সিলিন্ডার ও ওষুধ বহনকারী যানবাহন ঘোষিত অবরোধের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
বিএনপি-জামায়াত ছাড়াও ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতন্ত্র মঞ্চ, এলডিপি, গণফোরাম ও পিপলস পার্টি, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণঅধিকার পরিষদ লেবার পার্টি ও এনডিএম পৃথকভাবে অবরোধ কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আগামীকাল রবিবার চট্টগ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল পালন করবে বিএনপি।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তর সমন্বয়কারী ইদ্রিস আলী জানান, সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি দিনব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে।
অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্র বহনকারী যানবাহন, সাংবাদিক ও ফায়ার সার্ভিস সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া হরতালের আওতাবহির্ভূত থাকবে।
এর আগে গত ২৯ অক্টোবর এক দফা দাবিতে এবং ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর দিনব্যাপী হরতাল এবং ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের অবরোধ পালন করে বিরোধী দলগুলো।
আরও পড়ুন: আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক বিএনপির
হরতাল চলাকালে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও গ্রেপ্তারের ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
দেশব্যাপী তিন দিনের অবরোধে সংঘর্ষ এবং যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ব্যাপক ঘটনায় চারজন নিহত হয়েছে।
এদিকে গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন নিহত হওয়ার ঘটনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওই দিন নয়াপল্টনে বিএনপির বহুল আলোচিত মহাসমাবেশ শুরুর দেড় ঘণ্টা পর কাকরাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন দলটির নেতা-কর্মীরা। ক্রমেই তা নয়াপল্টনের মহাসমাবেশে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে সমাবেশটি মাঝপথে ভণ্ডুল হয়ে যায়।
ওই রাজনৈতিক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়। সেদিন থেকেই অবরুদ্ধ হয়ে আছে দলটির প্রধান কার্যালয়।
আরও পড়ুন: খুলনায় বিএনপির ২০০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১৫০
খুলনায় বিএনপির ২০০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, আটক ১৫০
ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশকে (২৮ অক্টোবর) কেন্দ্র করে এক সপ্তাহে খুলনায় নেতা-কর্মীদের নামে ১৫টি মামলা এবং দেড় শতাধিক নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে দলের পক্ষ থেকে। এ ছাড়া এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মীকে।
এর মধ্যে খুলনা মেট্রোপলিটনে (কেএমপি) নতুন ৩টি ও জেলার ৯টি থানায় নতুন ১২টি মামলা করেছে পুলিশ।
দলটির খুলনা মিডিয়া সেলের সদস্য মিজানুর রহমান মিলটন অভিযোগ করে বলেন, এজাহার নামীয় আসামি না হলেও নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করে অজ্ঞাত আসামি হিসেবে বিভিন্ন থানায় দায়ের করা মামলায় আদালতে পাঠাচ্ছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মাহমুদ আলী, দাকোপ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল মান্নান, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রিসহ দেড় শতাধিক নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমীর এজাজ খানকে পুলিশ গ্রেপ্তার দেখিয়েছে বটিয়াঘাটা উপজেলার জলমা এলাকা থেকে।
বটিয়াঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শওকত কবির গণমাধ্যমকে জানান, বুধবার বটিয়াঘাটা থানায় হওয়া বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার জলমা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
খুলনা মহানগরীর তিন থানায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা ৩টি মামলায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্যবিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা, সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পিসহ মোট আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ২৮৭ জনকে।
আরও পড়ুন:মির্জা ফখরুলের মুক্তির দাবি ৬৮ জন বিশিষ্ট নাগরিকের
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) তেরখাদা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
তেরখাদা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফখরুল ইসলাম বাবু বলেন, মামলায় আমার বাবাকে আসামি করা হয়েছে, তিনি ১১ বছর আগে মারা গেছেন। আমাকে ১০ নম্বর আসামি করা হয়েছে। ২ নভেম্বর তেরখাদা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) চঞ্চল কুমার হালদার বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
তেরখাদা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরদার মোশাররফ হোসেন বিশেষ ক্ষমতা আইন ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি গ্রহণ করেন। মামলায় মোট ৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও অজ্ঞাতনামা দেড়শ’ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
খুলনা জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মান্নান মিস্ত্রিকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ। মান্নানের ভাগ্নি মুন্নি খাতুন জানান, বুধবার (১ নভেম্বর) বিকালে সাদা পোশাকের ৮ জন নিরালা এলাকায় মান্নানের ভাড়া বাসায় প্রবেশ করে।
আরও পড়ুন: বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
এ ছাড়া গত মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) খুলনা সদর থানায় এসআই খালিদ উদ্দিন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। মামলায় মোট ৪৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
খুলনা সদর থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
অপরদিকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম জহিরসহ বিএনপির দুই শতাধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার(৩১ অক্টোবর) রাতে সোনাডাঙ্গা থানার এসআই নিয়াজ মোর্শেদ বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
আরও পড়ুন: আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক বিএনপির
আমীর খসরুকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক বিএনপির
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে নেওয়ার প্রতিবাদে রবিবার (৫ নভেম্বর) চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে বিএনপি।
শনিবার (৪ নভেম্বর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক উপ-দপ্তর সম্পাদক ও বর্তমানে দপ্তরের সমন্বয়ক মো. ইদ্রিস আলী জানান, আমীর খসরু মাহমুদ একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ। তাকে পুলিশ রাজধানীর গুলশানের বাসা থেকে গভীর রাতে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিয়েছে। এর প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি রবিবার চট্টগ্রামে এ হরতালের আহ্বান করেছে।
হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী ও চট্টগ্রামবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন নেতৃবৃন্দ।
আরও পড়ুন: পুলিশ কনস্টেবল হত্যা মামলায় বিএনপি নেতা আমীর খসরুকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে: ডিবি প্রধান হারুন
বিএনপির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরে সর্বাত্মকভাবে হরতাল কর্মসূচি পালন করা হবে। তবে অ্যাম্বুলেন্স, সংবাদপত্রবাহী ও সাংবাদিকদের বহনকারী যানবাহন, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।
পাশাপাশি রবিবার ও সোমবার বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী দুই দিনের অবরোধ কর্মসূচি চলমান থাকবে।
এতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রামে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মো. নাছির উদ্দীন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খন্দকার, এস এম ফজলুল হক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম।
উল্লেখ্য- বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে রাজধানীর গুলশানের একটি বাসা থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। কনস্টেবল আমিরুল হক হত্যা মামলায় পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত শুক্রবার তার ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা আমীর খসরু আটক
বিজয় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বেশ কয়েকজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হলেও ‘বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত’ সরকারের পতনের জন্য বিএনপির এক দফা আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, ‘বিজয় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। রবিবার সকাল থেকে আমাদের ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হবে।’
শুক্রবার (৩ নভেম্বর) ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতা এ কথা বলেন।
এদিকে অবরোধ পালনের সময় সরকারের কোনো প্ররোচনায় সাড়া না দিতে বিএনপি ও সমমনা বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
তিনি আরও বলেন, জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য তারা আন্দোলন করছেন, যাতে তারা নির্ভয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে পারেন।
তিনি বলেন, জনগণের ন্যায়সঙ্গত দাবি আদায়ের জন্য এটি একটি আদর্শ আন্দোলন। যারা গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার পক্ষে এবং স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে, তারা সবাই এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে সমর্থন করবে এবং এর সঙ্গে থাকবে।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে গভীর রাতে ভোট কারচুপির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি বলেন, এই সংসদের সংসদ সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
রিজভী বলেন, ‘তারা সাধারণ মানুষের জন্য ভালো কিছু করেনি।’
তিনি বলেন, ‘২৭২ কার্যদিবসের এই সংসদ আওয়ামী লীগের গুঞ্জনের আস্তানায় পরিণত হয়েছে। গত পাঁচ বছরে এই অবৈধ পার্লামেন্টে প্রায় ১৬৫টি বিল পাস হয়েছে এবং এর প্রায় সবগুলোই গণবিরোধী। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের মাধ্যমে এই অবৈধ সংসদে গৃহীত অবৈধ আইনগুলো বুড়িগঙ্গা নদীতে নিক্ষেপ করা হবে।
একাদশ জাতীয় সংসদের কার্যক্রম পরিচালনায় বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, পুলিশ ও প্রশাসন তাদের সব শক্তি নিয়ে মাঠে রয়েছে। আমরা সারা দেশ থেকে খবর পাচ্ছি যে, শেখ হাসিনা ও তার সরকার প্রশাসনকে ব্যবহার করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে নতুন নোংরা মিশন শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ২ কোটি সুবিধাভোগী ও কার্ডধারীদের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও নেতারা প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি উপজেলায় সরকারের বিভিন্ন বিভাগ থেকে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী প্রকল্পের আওতায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সুবিধাপ্রাপ্তদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। ডিসি, এসপি, ইউএনও ও ওসিরা বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য জনগণকে উদ্বুদ্ধ করাই এসব সমাবেশের উদ্দেশ্য।’
আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকা।
রিজভী বলেন, জনগণকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে না গেলে এই সুবিধা গ্রহণের জন্য তারা যে কার্ড ব্যবহার করেন তা বাতিল করা হবে।
তিনি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে বিদেশিদের সন্তোষজনক ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য শেখ হাসিনা এই ভয়ানক কৌশল নিয়েছেন।’
রিজভী বলেন, শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত মাত্র ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপির ২৯২ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারের কোনো কৌশলই বিএনপির আন্দোলন দমন করতে পারবে না: রিজভী
বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
মির্জা ফখরুলের মুক্তির দাবি ৬৮ জন বিশিষ্ট নাগরিকের
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে অবিলম্বে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দেশের ৬৮ জন বিশিষ্ট নাগরিক।
এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতা পরিহার এবং সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ তৈরিতে ফখরুলের মুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
গত ২৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন নিহত হন। এর একদিন পর গুলশানের বাসা থেকে বিএনপি মহাসচিবকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ঢাকা মহানগর হাকিম রাশিদুল আলম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলে তাকে কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে গেলেন মির্জা ফখরুল
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতি এখন একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নিজেও এই অঙ্গীকারের কথা বলেছেন।’
এতে আরও বলা হয়, আগামী তিন মাসের মধ্যে নিরপেক্ষ সরকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার দাবি জোরালো হচ্ছে।
তারা বলেন, 'এই মুহূর্তে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে গ্রেপ্তারের ফলে শান্তিপূর্ণ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রক্রিয়া বিপন্ন হয়েছে। আমরা দেখেছি, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে দৃঢ় বিশ্বাসী।’
তারা আরও বলেন, রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে ফখরুলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ‘আমরা বিশ্বাস করি, মির্জা ফখরুলের মুক্তি রাজনীতিতে সংঘাত পরিহার এবং গণতান্ত্রিক রীতিনীতি ফিরিয়ে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।’
বিএনপি মহাসচিবকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে সরকার শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথ সুগম করবে বলে আশা প্রকাশ করেন বিশিষ্ট নাগরিকরা।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন লেখক বদরুদ্দীন ওমর, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী, অধ্যাপক আহমেদ কামাল, অধ্যাপক সাইদুর রহমান, অধ্যাপক এটিএম নুরুল আমিন, অধ্যাপক সাদরুল আমিন, অধ্যাপক আকমল হোসেন, অধ্যাপক এ এফ এম ইউসুফ হায়দার, অধ্যাপক তাজমেরী ইসলাম, অধ্যাপক চৌধুরী আবরার, অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী ও অধ্যাপক মোরশেদ হাসান খান।
বিবৃতিটি বিএনপির মিডিয়া সেল থেকে সাংবাদিকদের কাছে পাঠানো হয়েছিল। তবে, ৬৮ জন নাগরিক এতে স্বাক্ষর করেছেন কি না- সে বিষয় ইউএনবি স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
আরও পড়ুন: গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুল আটক
মির্জা ফখরুল সিঙ্গাপুর থেকে দেশে ফিরেছেন
বিএনপি নেতা মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে আটক করেছে।
বৃহস্পতিবার(২ নভেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে তাকে আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আরও পড়ুন: সরকারের নির্দেশে সংলাপের নামে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করছে ইসি: বিএনপি
পরিবারের সদস্যদের বরাত দিয়ে রিজভী বলেন, 'মুজিবুর রহমান সারোয়ারকে গভীর রাতে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নিয়ে যায়।’
সারোয়ারকে গ্রেপ্তারের নিন্দা জানান বিএনপির এই নেতা।
এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-অর-রশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
সাবেক সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে গুলশান থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা আমীর খসরু আটক
বিএনপি নেতা আমীর খসরু আটক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীকে গুলশানের বাসা থেকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের মিডিয়া উইং সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বলেন, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে গুলশানের বাসা থেকে আমীর খসরুকে আটক করে ডিবি পুলিশের একটি দল।
ডিবির একজন কর্মকর্তা ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও আলাল গ্রেপ্তার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমীর খসরু মাহমুদের আটকের বিষয়ে বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
এর আগে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর শাজাহানপুর এলাকা থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপির ঢাকা উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুলসহ ৪ জন গ্রেপ্তার: রিজভী
শনিবার বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টন ও কাকরাইল এলাকায় ব্যাপক সহিংসতার পর রবিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দুই নেতার বাড়িতে অভিযান চালালেও সেখানে তাদের পাওয়া যায়নি।
এদিকে ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।
পরে ঢাকা মহানগর হাকিম তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: গুলশানের একটি হোটেল থেকে বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী আটক