বিএনপি
বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় ঘেরাও করেছে পুলিশ
শনিবারের রাজনৈতিক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়কে হলুদ টেপ দিয়ে ঘেরাও করে রেখেছে।
দলের হরতালের মধ্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটেও তালাবদ্ধ দেখা গেছে। রবিবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১টা পর্যন্ত বিরোধী দলের কোনো নেতা-কর্মীকে অফিস এলাকায় আসতে দেখা যায়নি।
ইউএনবির সঙ্গে আলাপকালে সেখানে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, তদন্তের জন্য সেখান থেকে আলামত সংগ্রহের জন্য তারা বিএনপি কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অপরাধ দৃশ্যের টেপ দিয়ে এলাকা চিহ্নিত করে রেখেছেন।
তারা বলেন, প্রমাণ সংগ্রহের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত কেউ বিএনপি কার্যালয়ে নির্ধারিত এলাকা পেরিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না।
সকাল ১০টার দিকে বিএনপি কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক পুলিশি উপস্থিতির মধ্যে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কয়েকজন সদস্যকে ঘেরাও করে আলামত সংগ্রহ করতে দেখা যায়।
আলামত হিসেবে এলাকায় পড়ে থাকা বিভিন্ন জিনিসপত্র এবং ছাই সংগ্রহ করতে দেখা গেছে তাদের।
পরে ক্রাইম সিন ইউনিটের সহকারী পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, তারা ১০ ধরনের আলামত সংগ্রহ করেছেন।
আলামত পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।
এর আগে শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবলসহ দুইজন নিহত এবং কয়েক শতাধিক আহত হন।
ফখরুলকে আটকের নিন্দা জানিয়েছে বিএনপি
মির্জা ফখরুল ইসলামকে আটকের নিন্দা জানিয়ে রবিবার বিএনপি বলেছে, সরকার জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য এটা করেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকায় নিপীড়ন, হত্যা ও গ্রেপ্তার করে সরকার আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে দলটি।
এক বিবৃতিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে, যখন পুরো জাতি তার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েছে।’
আরও পড়ুন: গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুল আটক
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখে 'পরিকল্পিতভাবে' সমাবেশে হামলা ও বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গুলি ও হত্যা করেও 'অবৈধ' সরকার নিরাপদ বোধ করছে না।
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আজ (রবিবার) সকালে তার বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। আমি বিএনপি মহাসচিবের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করছি।’
৭৫ বছর বয়সী ফখরুল গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তারে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে রিজভী বলেন, ‘জনগণকে ভয় দেখানোর জন্য বিএনপি নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কিন্তু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দেশের মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ।’
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে সহিংসতায় যুবদল নেতা নিহত, বিএনপির এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী ক্যাডাররা বিএনপির মহাসমাবেশে হামলা চালিয়েছে, গুলি করেছে, হত্যা করেছে এবং সব নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছে। এর (সহিংসতা) জন্য তারাই দায়ী।’
বিএনপির মিডিয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, সকাল ৯টা ২৫ মিনিটের দিকে গুলশান-২ এর বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে (ফখরুল) আটক করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
আরও পড়ুন: সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী হরতাল চলছে
সমাবেশে হামলার প্রতিবাদে বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী হরতাল চলছে
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশে হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতাল চলছে।
শনিবারের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য পুলিশি পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানিয়েছে বিরোধী দলটি। জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুমতি দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
শনিবার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দলটিও সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে হরতালের ঘোষণা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: গুলশানের বাসা থেকে মির্জা ফখরুল আটক
এ সময় রাজধানীতে টহল দিতে পুলিশ ও র্যাবের সঙ্গে যোগ দেয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
বিক্ষোভের প্রথম প্রহরে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শিকড় পরিবহনের একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন জানান, সকাল ৮টা ৫ মিনিটে এ ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে সহিংসতায় যুবদল নেতা নিহত, বিএনপির এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত: ফখরুল
শহরের রাস্তায় অল্প সংখ্যক বাস, প্রাইভেট কার চলাচল করতে দেখা গেছে।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন, কমলাপুর রেলস্টেশনে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক রয়েছে।
হরতালের সমর্থনে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা আজ সকাল ৮টার দিকে নগরীর মাদারটেক এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে।
সদরঘাট টার্মিনালে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক দেখা গেলেও যাত্রী কম দেখা গেছে।
আরও পড়ুন: রবিবার সারাদেশে হরতালের ডাক দিল বিএনপি
নয়াপল্টনে সহিংসতায় যুবদল নেতা নিহত, বিএনপির এক হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত: ফখরুল
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীর নয়াপল্টনে 'পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের হামলায়' যুবদলের এক নেতা নিহত ও এক হাজারের বেশি বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে দলটি।
মুগদা থানা যুবদল নেতা শামীম মোল্লা ‘পুলিশের গুলিতে’ নিহত হয়েছেন বলে শনিবার এক বিবৃতিতে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির মহাসমাবেশে পরিকল্পিতভাবে হামলা ও গুলি করে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গুলিতে যুবদল নেতা শামীম নিহত হয়েছেন।’
যুবদল নেতা হত্যার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: রবিবার সারাদেশে হরতালের ডাক দিল বিএনপি
এছাড়া বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের সহস্রাধিক নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ ও গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
ফখরুল আরও বলেন, সহিংসতায় অনেক গণমাধ্যমকর্মীও আহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আহত বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা আরও দাবি করেন, শনিবার থেকে তাদের দলের তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিনে মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দুই হাজারের বেশি বিএনপি নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রাজধানীর কাকরাইলে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা: ডিবি
এদিকে যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন জানান, নয়াপল্টনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে শামীম আহত হন এবং রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তবে পুলিশ জানায়, পেশায় গাড়িচালক শামীম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) ও হাসপাতালের পরিচালক রেজাউল হায়দার বলেন, শামীম সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ চলছে
রবিবার সারাদেশে হরতালের ডাক দিল বিএনপি
নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর 'পুলিশি হামলার' প্রতিবাদে রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হরতালের ঘোষণা দিয়েছে দলটি।
শনিবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষের মধ্যে সমাবেশ মঞ্চ ছাড়ার আগে হরতালের ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতাল পালন করা হবে।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের জন্য হাজারো মানুষের ঢল
এর আগে সংঘর্ষের জেরে কর্মসূচির মাঝপথে বিএনপির মহাসমাবেশ স্থগিত করা হয়।
দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে মহাসমাবেশ শুরু হয়ে দুপুর সোয়া ২টার দিকে শেষ করা হয়।
আরও পড়ুন: রাজধানীর কাকরাইলে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা: ডিবি
রাজধানীর কাকরাইলে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে বিএনপি নেতা-কর্মীরা: ডিবি
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন-অর-রশীদ বলেছেন, রাজধানীর কাকরাইলে জাজেস রেসিডেন্স কমপ্লেক্সের সামনে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মী পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে।
এতে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) কাকরাইল চার্চের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
ডিবি প্রধান বলেন, বিএনপির কয়েকজন কাকরাইলে আইডিবি ভবনের সামনে হামলা, ভাঙচুর ও কয়েকটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বর্তমানে কাকরাইল চার্চ ক্রসিংয়ে বিজিবি সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পুলিশের কাছে ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা খায়রুল কবির খোকনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ
হারুন-অর-রশীদ বলেন, 'আমরা জড়িতদের চিহ্নিত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
সহিংসতায় জড়িত বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেছে এবং পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
এর আগে রাজধানীর কাকরাইলে পুলিশের সঙ্গে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১টার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা কাকরাইল এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের দিকে যাত্রা শুরু করে।
এক পর্যায়ে পুলিশ তাদের বাধা দিলে বিএনপির নেতা-কর্মীরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে।
পরে পুলিশ রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হয়েছে দলটির হাজার হাজার নেতা-কর্মী।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নাশকতার কোনো হুমকি নেই: ডিবি প্রধান
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশ চলছে
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের এক দফা দাবিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির মহাসমাবেশ শুরু হয়েছে।
শনিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন এবং বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ আগামী নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
আরও পড়ুন: কাকরাইলে নির্মাণাধীন ভবন থেকে বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মী আটক
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী।
দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্দেশ অমান্য করে শুক্রবার বিকালে কয়েক হাজার বিরোধী দলীয় নেতাকর্মী নয়াপল্টনে জড়ো হয়ে রাতভর অবস্থান করেন।
ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড এবং দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতিকৃতি নিয়ে সারা দেশ থেকে বিরোধী দলের অনুসারীরা এই কর্মসূচিতে অংশ নেন।
ফকিরাপুল থেকে কাকরাইল মসজিদ পর্যন্ত সড়ক ও গলিগুলোতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশের বিস্তৃত জনতা আশেপাশের সড়ক, রাস্তা, গলি এবং নানা স্থানে ছড়িয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন: শনিবারের সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপি নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টনে জড়ো হতে শুরু করেছে
নয়াপল্টনে বিএনপির মহাসমাবেশের জন্য হাজারো মানুষের ঢল
বিএনপির এক দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়েছেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল উপস্থিতিতে আজ (শনিবার) সকাল থেকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করে দলটির নেতা-কর্মীরা।
জ্যেষ্ঠ নেতাদের নির্দেশ অমান্য করে শুক্রবার বিকালে কয়েক হাজার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী নয়াপল্টনে জড়ো হয়ে রাতভর অবস্থান করেন।
আজ সকাল ৯টার দিকে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, শহরের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজার হাজার বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মী আসছেন।
আরও পড়ুন: কাকরাইলে নির্মাণাধীন ভবন থেকে বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মী আটক
রঙিন টুপি পরে, ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতিকৃতি হাতে নিয়ে তারা সমাবেশস্থলে এসে সরকারবিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন।
কাকরাইল থেকে আরামবাগ পর্যন্ত সড়ক ও গলি বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপচে পড়ায় ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দলের অনেক নেতা-কর্মী অভিযোগ করেন, ঢাকার প্রবেশপথ ও বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তল্লাশি ও ব্যারিকেডের সম্মুখীন হতে হয়েছে।
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে ‘এক দফা’ আদায়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এই সমাবেশের আয়োজন করেছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: শনিবারের সমাবেশকে সামনে রেখে বিএনপি নেতা-কর্মীরা নয়াপল্টনে জড়ো হতে শুরু করেছে
কাকরাইলে নির্মাণাধীন ভবন থেকে বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মী আটক
রাজধানীর কাকরাইলে একটি নির্মাণাধীন ভবন থেকে শনিবার বিএনপির ২ শতাধিক নেতা-কর্মীকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। ধারণা করা হচ্ছে- আজকের মহাসমাবেশ যোগ দেওয়ার জন্য তারা ঢাকার বাইরে থেকে এসে এখানে জমা হয়েছিলেন।
পল্টন মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিন মিয়া জানান, রাতে ডিবি পুলিশের একটি দল কাকরাইলে অভিযান চালায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) হারুন অর রশীদ বলেন, ওই এলাকায় (নয়াপল্টন) বেশ কতগুলো ককটেল চার্জ করা হয়।
তিনি বলেন, বিস্ফোরণের শব্দ শুনে পুলিশ ও ডিবি একটি নির্মাণাধীন ভবনে অভিযান চালিয়ে বিএনপির ২০০ নেতা-কর্মীকে আটক করে।
আরও পড়ুন: শর্তসাপেক্ষে আ. লীগ ও বিএনপিকে সমাবেশের অনুমতি
তিনি আরও বলেন, বিএনপির মহাসমাবেশকে সামনে রেখে তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসেছেন।
ডিবি’র এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা পরবর্তীতে সেখানে গিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার একটি গাড়ি, প্ল্যাকার্ড, খাবার রান্নার সরঞ্জাম, অনেক লাঠিসোঁটা, রড এবং অবিস্ফোরিত ককটেল উদ্ধার করেছি।’
ডিবি মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, ‘রাত দেড়টার দিকে পুলিশকে লক্ষ্য করে নির্মাণাধীন ভবন থেকে ১৫-২০টি বোমা চার্জ করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা করছে পুলিশ।’
হারুন বলেন, ককটেল নিক্ষেপের ঘটনায় ২ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্যই হলো মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে অথবা মহাসমাবেশে কেউ যেন কোনো প্রকার অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে না পারে। রাজধানীজুড়ে এরকম আরও ৭-৮টি ভবন আছে। সেখানেও এরকম সমাগম হয়েছে বলে আমরা খবর পেয়েছি। আমরা সেখানেও অভিযান চালাব।’
আরও পড়ুন: আ. লীগ-বিএনপির শনিবারের সমাবেশকে ঘিরে রাজধানীতে আতঙ্ক
সমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ হবে, সরকারকে বাড়াবাড়ি না করতে হুঁশিয়ারি ফখরুলের
বিএনপির মহাসমাবেশ শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করে সর্বস্তরের জনগণকে এতে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। যাতে করে আওয়ামী লীগকে পদত্যাগ করে একটি নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের বার্তা দেওয়া যায়।
শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘সরকার বা ক্ষমতাসীন দল যদি কোনো বাড়াবাড়ি করে বা সমাবেশে কোনো বাধা সৃষ্টি করে, তাহলে তার জন্য দায়ী থাকবে সরকার।’
আরও পড়ুন: শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে: ফখরুল
শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন।
নয়াপল্টনে সমাবেশের অনুমতির জন্য প্রয়োজনে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে বলেও জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে ডিএমপিকে চিঠি দেওয়ায় আমরা নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণভাবে এই সমাবেশ করব।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নয়াপল্টনে কর্মসূচি পালনের অনুমতি দিয়ে ডিএমপির পক্ষ থেকে এখনো কোনো চিঠি পায়নি বিএনপি। আমরা এখনও আশা করি, তারা (ডিএমপি) কোনো বাধা সৃষ্টি করবে না এবং মহাসমাবেশে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সহায়তা করবে।’
তিনি বলেন, তাদের সমাবেশের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য চাপ সৃষ্টি করা।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই আমাদের এক দফা দাবি মেনে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে সরকারের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, দেশে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ নেই।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি কোনো সহিংসতার ভয় পায় না, কারণ তাদের দল অতীতে শান্তিপূর্ণভাবে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে।
ফখরুল অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা লাঠি হাতে রাস্তায় নামার মতো বিভিন্ন উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, সরকার তার দমনমূলক নীতি ও পুলিশ প্রশাসনকে ব্যবহার করে সমগ্র জনগণকে জিম্মি করার চেষ্টা করছে।
এমতাবস্থায় ভোটাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতাসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধার এবং একটি মুক্ত ও বাসযোগ্য সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপির সমাবেশে যোগ দিতে সারা দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা আন্তরিকভাবে জনগণকে আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন শনিবারের মহাসমাবেশে যোগ দেয় এবং সরকারকে পদত্যাগ আর ক্ষমতায় না থাকার বার্তা দেয়।’
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার টিআইপিএস প্রক্রিয়া সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে: ফখরুল
তিনি অভিযোগ করেন, সরকার রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে লুটপাট ও বিদেশে অর্থ পাচারের মাধ্যমে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে।
ফখরুল দাবি করেন, গত সোমবার থেকে শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে প্রায় ১ হাজার ৩৫০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩৩০ জন বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, এ সময়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ১৮টি ‘মিথ্যা মামলা’ দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এ ছাড়া চলতি বছরের ২৭ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত বিএনপির ৪ হাজার ২০ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার, ৪১৮টি মামলায় ২৮ হাজার ৫৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং বিএনপির নয় নেতাকে মৃত্যুদণ্ড ও ৯০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা (প্রধানমন্ত্রী) ব্রাসেলসে বলেছেন, খুব সুন্দর একটি নির্বাচন হবে, কারণ সরকার সেই নির্বাচনের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করছে। কিন্তু আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে এবং প্রতি রাতে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। সবচেয়ে খারাপ বিষয় হচ্ছে, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে আমাদের নেতাদের সাজা দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সরকার গুরুতর দমনমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপর তার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রহসনে পরিণত করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের অবস্থান পরিষ্কার যে, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকার ছাড়া এ দেশের জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সত্যিকারের অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কোনো ইচ্ছা নেই।
তিনি আরও বলেন, ‘এ জন্য তারা বিরোধী দলের অংশগ্রহণ ছাড়াই একতরফাভাবে নির্বাচন করতে সারাদেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু জনগণ জেগে উঠেছে। তাদের দাবি আদায় এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এবার রাস্তায় নেমেছে।’
বিএনপির পক্ষ থেকে ফখরুল ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে মালিকদের তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: কোনো কিছুই ২৮ অক্টোবরের বিএনপির সমাবেশ বন্ধ করতে পারবে না: ফখরুল