বিএনপি
আ. লীগ নেতারা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন: রিজভী
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে একতরফাভাবে আগামী নির্বাচন করতে পারবে না ভেবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা দেশ ছেড়ে পালাতে শুরু করেছেন।
তিনি বলেন, 'পুলিশকে ব্যবহার করে দেশে আর নির্বাচন হবে না। দেশের মানুষ তা হতে দেবে না। আমরা শুনেছি তাদের (আওয়ামী লীগের) অনেক নেতা-কর্মী দেশ ছাড়তে শুরু করেছেন। ’
তারেক-জুবাইদার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার দেশব্যাপী বিএনপির সমাবেশ
নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের আরও অনেক নেতা যেকোনো সময় দেশ ছাড়ার জন্য পাসপোর্টে ভিসা সংগ্রহ করেছেন।
রিজভী বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা খুব ভালো করেই জানেন যে, জনগণ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকায় ভোট দেবে না। শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিজয় নিশ্চিত করতে শুধু পুলিশই ভোট দিতে পারে, কিন্তু ভোটাররা তা করবে না।
আওয়ামী লীগের প্ররোচনায় বিএনপির সমাবেশে হামলা করা হচ্ছে: রিজভী
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ২০১৪ ও ২০১৮ সালে পুলিশের ভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন। তিনি বলেন, 'তারা (আওয়ামী লীগ নেতারা) আগামী দিনগুলোতে এ ধরনের নির্বাচন করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এবার সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হবে না। জোর করে আগামী নির্বাচন করা সম্ভব হবে না। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে যে কোনো সময় দেশ ছাড়তে পারে বলে তাদের ভিসা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, একতরফা নির্বাচন করে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতা দখল করা আওয়ামী লীগের ঐতিহ্য ও বৈশিষ্ট্য।
তিনি বলেন, দেশের মালিকানা ফিরে পেতে এবং আওয়ামী লীগের ছিনিয়ে নেওয়া ভোটাধিকার ফিরে পেতে জনগণ জেগে উঠেছে।
বিএনপির সমাবেশে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের আহ্বান খন্দকার মোশাররফের
রিজভী বলেন, সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে এতটাই ভীত হয়ে পড়েছে যে বুধবার রাজধানীতে দলের জনসভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের তিন শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
তিনি বলেন, সরকার আমাদের নেতা-কর্মীদের সমাবেশে যোগ দিতে বাধা দেওয়ার অপকৌশল নিয়েছে। কিন্তু তারা কী অর্জন করেছে? গতকাল (বুধবার) নয়াপল্টনে সরকারের সব বাজে কৌশল ব্যর্থ করে গণজোয়ার সৃষ্টি করা হয়েছে।
তিনি বিএনপি নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে তাদের মুক্তি দাবি করেন।
সহজ জয়ের জন্য বিএনপিকে নির্বাচনে বাধা দিচ্ছে আ. লীগ: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিরোধী দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তারা ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চেষ্টায় আছে।
শনিবার (১০ অক্টোবর) জাতীয়তাবাদী সমন্বয় জোট আয়োজিত একটি স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, 'আপনারা (আওয়ামী লীগ) আমাদের নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা সৃষ্টি করছেন। আপনারা বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে অংশ নিতে দিতে চান না। এর পেছনে একমাত্র কারণ হলো আপনারা 'ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়া'র চেষ্টায় আছেন।
গণতান্ত্রিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ মনির স্মরণে এ সভার আয়োজন করা হয়। গত ১৩ অক্টোবর মিরপুরের বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মনি।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা বিএনপির
ফখরুল বলেন, আগামী নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্য প্রমাণ করে যে, তারা বাংলাদেশকে তাদের 'পৈতৃক সম্পত্তি' মনে করে এবং একজনই দেশের মালিক।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বুধবার (১৮ অক্টোবর) বিরোধী দলকে শেষ বার্তা দিয়েছেন। তিনি (কাদের) বলেছেন, নির্বাচনকালীন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন এবং তিনি আবারও প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।
ওবায়দুল কাদেরের বার্তা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আপনি যদি এমনটা মনে করেন, তাহলে নির্বাচনের কোনো প্রয়োজন নেই।’
আরও পড়ুন: নিরাপদ প্রস্থান চান নাকি ক্ষমতাচ্যুতি চান, সিদ্ধান্ত নিন: ফখরুল
নিরাপদ প্রস্থান চান নাকি ক্ষমতাচ্যুতি চান, সিদ্ধান্ত নিন: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী ২৮ অক্টোবরের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কি ক্ষমতা ছেড়ে নিরাপদে সরে যাবে, নাকি জনগণের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হবে।
তিনি বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের মধ্য দিয়ে সরকার পতন এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রচারণা জোরদার করতে মহাযাত্রা শুরু করবে বিএনপি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীদের নিয়ে এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সরকারের পদত্যাগ এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ দলের এক দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
তাদের ঘোষিত মহাসমাবেশকে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ের আংশিক কর্মসূচি উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর বিরোধীদল ধারাবাহিক কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশও হারিয়েছে, বিদেশও হারিয়েছে: আমীর খসরু
তিনি নেতা-কর্মীদের উৎসাহ দিয়ে বলেন, 'মহাসমাবেশের পর ইনশাল্লাহ আমরা এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত থামব না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এই মহাসমাবেশের আয়োজন করা হবে। ‘আমরা সকল রাজনৈতিক দল, যারা যুগপৎ আন্দোলন করছি তারা এই কর্মসূচি সফল করব।’
তিনি বলেন, ‘এটি একটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি হবে। দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী এই সন্ত্রাসী আওয়ামী লীগ সরকারের পতন আমরা নিশ্চিত করব।’
ফখরুল বিএনপি নেতা-কর্মীদের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, মহাসমাবেশকে সামনে রেখে সরকার অনেক বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করতে পারে। ‘কিন্তু জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে হলে সম্ভাব্য সকল প্রতিকূলতা অতিক্রম করে সমাবেশকে সফল করতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, সরকার আসন্ন পতন উপলব্ধি করে বিভিন্ন অশুভ কৌশল অবলম্বন করছে।
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন, পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই: ফখরুল
বিএনপি নেতা বলেন, ক্ষমতা হারানোর ভয়ে বিএনপির সমাবেশের আগে সরকার বিএনপির আড়াই শতাধিক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
তারা সম্মানের সঙ্গে ক্ষমতা ছাড়বেন নাকি জনগণের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হবেন, সে বিষয়ে দুর্গাপূজার শেষ নাগাদ সিদ্ধান্ত নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার অবৈধভাবে সংবিধান সংশোধন করে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের অজুহাত হিসেবে সংবিধানকে দেখাচ্ছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সংবিধানের কথা বললেও তারা সবসময় এর ধারা লঙ্ঘন করে।
বিএনপি নেতা বলেন, এটা বাস্তবতা যে সরকার দমনমূলক কর্মকাণ্ড এবং বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও কারারুদ্ধ করে জনগণ ও আন্দোলনকে দমন করতে পারবে না। ‘সরকার যত তাড়াতাড়ি এটা উপলব্ধি করবে, ততই তাদের জন্য মঙ্গল হবে।’
মঙ্গলবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে বিএনপি চেয়ারপার্সনের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় চিকিৎসকরা তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন।
আরও পড়ুন: সরকার পতনের আন্দোলন নভেম্বরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি
তিনি বলেন, সরকার এতটাই নৃশংস ও অমানবিক যে, জীবন বাঁচাতে খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিচ্ছে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, বর্তমান সরকারের পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাওয়ায় দমনমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি'র সমাবেশে যোগ দিতে না দেয়ার জন্য তাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর জন্য সরকার অনেক নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। ‘কিন্তু তারা তা করতে পারেনি। বিএনপি নেতারা এখন কোনো কিছুকে ভয় পান না। কারণ তাদের লক্ষ্য এই সরকারকে উৎখাত করা।’
‘শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশের চেয়েও ভয়াবহ পরিণতি বিএনপিকে ভোগ করতে হবে ’ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন হুঁশিয়ারি প্রসঙ্গে আব্বাস বলেন, হঠাৎ করে রাজপথে নামার কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। ‘আমরা আমাদের কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকব।’
তিনি আরও বলেন, হেফাজতের সমাবেশ চলাকালে সরকার শাপলা চত্বরে গণহত্যা ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে বলে ওবায়দুল কাদের তার বক্তব্যে স্বীকার করেছেন।
ওবায়দুল কাদেরের হুমকি প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির এই নেতা বলেন, হেফাজত ও বিএনপি এক রকম সংগঠন নয়, কারণ আমাদের দল নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় ছিল।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ চলছে
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে বিএনপির নেতাকর্মীরা তাদের আন্দোলনকে সফল করবে।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি নিয়ে মিছিল নিয়ে সমাবেশ যোগ দেন।
ফকিরাপুল থেকে বিজয়নগর পর্যন্ত সড়ক ও গলি-গলিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের ভিড়ে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশের অতিরিক্ত জনতা আশেপাশের রাস্তা এবং স্থানগুলিতে ছড়িয়ে পড়ে।
বিএনপি ছাড়াও সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোও এক দফা দাবিতে বিভিন্ন শহরে পৃথক সমাবেশ করেছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়াপল্টন এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
আরও পড়ুন: ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা বিএনপির
২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণা বিএনপির
সরকার পতনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের চূড়ান্ত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২৮ অক্টোবর রাজধানীতে মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপি।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ ঘোষণা দেন।
ফখরুল বলেন, 'এটা আমাদের আংশিক কর্মসূচি, মহাসমাবেশ থেকে আমাদের মহাযাত্রা শুরু হবে।’
বিএনপি নেতা বলেন, 'অনেক প্রতিবন্ধকতা আসবে, এসব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে আমাদের আন্দোলন সফল করতে হবে।’
এর আগে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে জনসভা শুরু হয়।
আরও পড়ুন: সরকার পতনের আন্দোলন নভেম্বরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি
সরকারের পদত্যাগ ও বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ দলের এক দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করতেই এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
বিএনপি ছাড়াও সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোও এক দফা দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক সমাবেশের আয়োজন করেছে।
আরও পড়ুন: নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ চলছে
নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ চলছে
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দল ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীর অংশগ্রহণে সমাবেশ শুরু হয়েছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বুধবার দুপুর ১টা ৫৫ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হয়।
সরকারের পদত্যাগ এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ দলের এক দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিকরতেই এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকার পতনের আন্দোলন নভেম্বরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
সমাবেশ থেকে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে ফখরুলের। তুমুল আন্দোলন এড়াতে তাদের এক দফা দাবি মেনে নিতে সরকারকে শেষ সতর্কবার্তাও দিতে পারেন তিনি।
সমাবেশে যোগ দিতে বুধবার সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও প্রতিকৃতি নিয়ে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে শুরু করে দলটির নেতা-কর্মীরা।
ফকিরাপুল থেকে বিজয়নগর পর্যন্ত সড়ক ও গলিগুলোতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উপচে পড়া ভিড়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সমাবেশের বিপুল জনতা আশেপাশের রাস্তা এবং স্থানগুলোতে ছড়িয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন, পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই: ফখরুল
বিএনপি ছাড়াও সমমনা রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোও এক দফা দাবিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পৃথক সমাবেশের আয়োজন করছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নয়াপল্টন এলাকায় বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, সমাবেশকে সামনে রেখে মঙ্গলবার রাতে বিএনপির কয়েকজন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে সরকার নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন: সঠিক পথে আন্দোলন, এবার ভোটার ছাড়া নির্বাচন হবে না: ফখরুল
সরকার পতনের আন্দোলন নভেম্বরেই চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে চায় বিএনপি
ক্ষমতাসীন দলের ভয়াবহ পরিণতির হুঁশিয়ারির মধ্যে বিএনপি ও অন্যান্য বিরোধী দলগুলো সরকার পতনের জন্য কঠোর কর্মসূচি নিয়ে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় শুরু করতে যাচ্ছে। ফলে আগামী মাসের শুরুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে।
বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা ইউএনবিকে বলেন, আগামী ২৮ অক্টোবর তাদের দল ঢাকায় জনসভা করতে পারে। সেই জনসভা থেকেই তারা রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সরকারি অফিস অভিমুখে পদযাত্রা অথবা অফিস ঘেরাও, সচিবালয় বা নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন এবং ঢাকার প্রবেশপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে পারে।
তবে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন তারা।
বিএনপির নেতারা বলেন, তাদের কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা রোধ করা এবং অন্তবর্তীকালীন নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে সরকারকে বাধ্য করা।
এদিকে, সরকারের পদত্যাগ এবং বিদেশে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তিসহ এক দফা দাবিতে বুধবার রাজধানীতে জনসভা করবে বিএনপি।
সমাবেশ থেকে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেবেন। কঠোর কর্মসূচি এড়ানোর জন্য তাদের এক দফা আন্দোলন মেনে নিতে সরকারকে শেষ সতর্কবার্তা দেওয়ার কথাও রয়েছে তার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য ইউএনবিকে বলেন,নভেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে নির্বাচন কমিশন। তাই তফসিল ঘোষণার অন্তত দুই সপ্তাহ আগে আমরা কঠোর কর্মসূচি শুরু করতে চাই। ‘আমরা মনে করি, আমাদের আন্দোলন ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে এবং নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জন্য কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করবে।’
আরও পড়ুন: চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন, পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই: ফখরুল
যেসব রাজনৈতিক দল যুগপৎ আন্দোলন করছে, তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসে চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলনের সম্ভাব্য কর্মসূচি নিয়ে মতামত নিয়েছেন বিএনপি নেতারা।
বেশিরভাগ দলই সচিবালয় ও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ঘেরাও বা গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ের দিকে পদযাত্রার মতো কর্মসূচির পরামর্শ দিয়েছে।
এছাড়া রাজধানীসংলগ্ন জেলা গুলো থেকে ঢাকা অভিমুখে রোড মার্চ, ইসি ও সুপ্রিম কোর্ট অভিমুখে পদযাত্রা এবং শেষ পর্যায়ে হরতাল-অবরোধসহ আরও কিছু কঠোর কর্মসূচির সুপারিশও করা হয়।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বিএনপি যদি রাজধানী অবরোধের মতো কর্মসূচি নেয়, তাহলে তাদের ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হবে।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক যুব সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন,‘আমরাও প্রস্তুত। বিএনপি ঢাকা অবরোধের চেষ্টা করলে তাদের অবরুদ্ধ করা হবে। বিএনপিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হবে এবং পালানোর কোন পথ থাকবে না। তারা (হেফাজত কর্মীরা) কি রাতের অন্ধকারে শাপলা চত্বর থেকে পালিয়ে যায়নি? বিএনপিকে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হবে।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, গত বছরের ডিসেম্বরের মতো এবারও সারাদেশ থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় জড়ো হতে শুরু করেছে। ‘হোটেলের সব কক্ষ বুক করা হয়েছে। তারা ফ্ল্যাট ভাড়া নিচ্ছেন। তারা আবারও সরকারকে উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছে।’
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশও হারিয়েছে, বিদেশও হারিয়েছে: আমীর খসরু
তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দুর্গাপূজার পর ঢাকাকে কেন্দ্র করে কর্মসূচি দিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, তাদের একমাত্র লক্ষ্য হচ্ছে একটি অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের মাধ্যমে একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীরা নতুন উদ্যম ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে অংশ নেবেন এবং যেকোনো মূল্যে তা সফল করবেন।
বিএনপি নেতা বলেন, 'ইনশাল্লাহ আমরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই ভয়ানক ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হব।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, দুর্গাপূজার পর কঠোর কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্ব শুরু করতে প্রস্তুত তারা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার যে কোনো পদক্ষেপ প্রতিহত করতে আমরা বিভিন্ন কঠোর কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকব। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করতে হবে। আমরা অবশ্যই বিজয়ী হব'।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেছেন, সফল আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ' কিভাবে আমাদের আন্দোলনকে শক্তিশালী করা যায় এবং সম্ভাব্য কর্মসূচি গ্রহণ করা যায়, তা নিয়ে আমরা বিরোধী দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করছি। আমরা আত্মবিশ্বাসী যে আমরা আমাদের আন্দোলন জোরদার করার মাধ্যমে সরকারকে আমাদের দাবি মেনে নিতে বাধ্য করতে সক্ষম হব।
সমমনা দলগুলোর পাশাপাশি তারা ইসলামী দলগুলোর সঙ্গেও তাদের আন্দোলনে যোগ দিতে এবং তা সফল করতে আলোচনা করছে।
আরও পড়ুন: পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল
চূড়ান্ত আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হোন, পেছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার (১৬ অক্টোবর) বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটাতে শিগগিরই চূড়ান্ত পর্যায়ের আন্দোলন শুরু করতে যাচ্ছে বিএনপি।
তরুণদের সমাবেশে তিনি রাজপথে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে আন্দোলন সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য বিএনপির নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আমাদের একমাত্র লক্ষ্য বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করা এবং অপ্রতিরোধ্য আন্দোলনের মাধ্যমে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর জন্য মুক্ত করা।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, বিএনপির যুব শাখার বিশাল সমাবেশ দুর্গাপূজার কয়েক দিনের মধ্যে শুরু হওয়া বিরোধী দলের চূড়ান্ত আন্দোলনকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই করছি, কারণ আমাদের অনেক ভাই তাদের জীবন ও রক্ত উৎসর্গ করেছে, আমাদের অনেক মা-বোন নির্যাতিত হয়েছে, আমাদের অনেক শিশু তাদের বাবাকে হারিয়েছে এবং আমাদের অনেক মা তাদের সন্তানদের হারিয়েছে। সুতরাং, আমাদের পিছনে ফিরে তাকানোর সময় নেই।’
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে এবং সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনসহ বিএনপির এক দফা দাবিতে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল।
বিজয়নগর থেকে ফকিরাপুল ক্রসিং পর্যন্ত চলা এই র্যালিতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাল-সবুজ টুপি পরিহিত হাজার হাজার যুবক-যুবতী অংশ নেন। তাদের অনেককে মাথায় সাদা কাফন পড়ে সমাবেশে বসে থাকতে দেখা গেছে।
তরুণদের বিশাল সমাবেশকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যায়িত করে ফখরুল বলেন, এই সমাবেশ অবশ্যই দেশের জনগণকে নতুন উদ্যম ও আকাঙ্ক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত আন্দোলনে অংশ নিতে অনুপ্রাণিত করবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা এই ভয়ানক ফ্যাসিবাদী সরকারকে পরাজিত করতে সক্ষম হব, যারা আমাদের বুকের ওপর বড় পাথরের মতো বসে আছে।’
শর্ত প্রত্যাহার করলে বিএনপির সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার সাংবিধানিকভাবে বৈধ কিনা, আপনাদের (আওয়ামী লীগ) এটা প্রমাণ করতে হবে। আমি বলছি আপনারা সাংবিধানিকভাবে বৈধ নন।’
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী অসাংবিধানিকভাবে এনে সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় রয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক প্রথমে দেশ ও জনগণের স্বার্থে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আরও দুটি জাতীয় নির্বাচন হতে পারে বলে একটি সংক্ষিপ্ত রায় দিয়েছিলেন।
এই আওয়ামী লীগ পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের আগেই জনগণকে সম্পূর্ণ প্রতারিত করে সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস করেছে। আপনারা যেমন বলছেন, নির্বাচন সংবিধানের ভিত্তিতে হওয়া উচিত; তাই আপনাদেরকে (সরকারকে) প্রথমে পদত্যাগ করতে হবে, কারণ আপনারা অবৈধ।
সংবিধান লঙ্ঘন এবং জনগণকে ধোঁকা দিয়ে ক্ষমতায় থাকার জন্য জনগণ বর্তমান সরকারকে ক্ষমা করবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন তিনি।
আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে ক্ষমতা ছাড়তে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
আরও পড়ুন: সঠিক পথে আন্দোলন, এবার ভোটার ছাড়া নির্বাচন হবে না: ফখরুল
পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল
আওয়ামী লীগ দেশও হারিয়েছে, বিদেশও হারিয়েছে: আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগ দেশও হারিয়েছে, বিদেশও হারিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা তো কোনো সময় বলি না তলে তলে সবকিছু ম্যানেজ করে নিয়েছি। বিএনপি হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল। বেগম খালেদা জিয়া সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী। তারেক রহমান সবচেয়ে ডায়ানামিক লিডার। কারও উপর নির্ভর করতে হবে না বিএনপিকে। যারা নির্ভরশীল তাদের হৃদয়ে কম্পন শুরু হয়েছে। কারণ তারা দেশও হারিয়েছে, বিদেশও হারিয়েছে।
আরও পড়ুন: জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিদেশিদের কাছে সুবিধা চান প্রধানমন্ত্রী: আমীর খসরু
সোমবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় নগরীর কাজির দেউরি নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সমঝোতা করে একটি উপায় বের করা উচিত' জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, এখানে আওয়ামী লীগ বিএনপি বিষয় না। বিষয়টি হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের মালিকানা ফিরে পাওয়ার বিষয়। তার ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার বিষয়। এখানে কোনো দলের বিষয় না। সেটা একমাত্র সম্ভব আজ জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে বিধান ছিল সেটা আওয়ামী লীগ এককভাবে বাতিল করেছিল। সেটা ফেরত এনে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। কাদের মধ্যে সমঝোতা হবে এটা কোনো আলোচনার বিষয় না। বাংলাদেশের মালিক বাংলাদেশের জনগণ। ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার একমাত্র পথ হচ্ছে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। একমাত্র সমঝোতা হবে বাংলাদেশের মানুষের প্রতাশা প্রয়োগে।
আমীর খসরু বলেন, বলেছিলাম ৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের রোড মার্চে সুনামি হবে। সেদিন চট্টগ্রামের মানুষ দেখিয়ে দিয়েছে। সুনামির থেকেও বেশি কিছু করেছে। চট্টগ্রামে সেদিন মানুষের ঝড় তুলেছে। আমাদের আগামী দিনগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের জন্য, মানুষের জন্য ও গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য।
আরও পড়ুন: আগামী নির্বাচনে চুরি করলে রেহাই নেই: আমীর খসরু
সরকারের পদত্যাগের মাধ্যমে একদফা আন্দোলন শেষ হবে: আমীর খসরু
সঠিক পথে আন্দোলন, এবার ভোটার ছাড়া নির্বাচন হবে না: ফখরুল
তাদের আন্দোলন সঠিক পথে রয়েছে দাবি করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশে এবার ভোটার ছাড়া কোনো নির্বাচন হবে না।
রবিবার (১৫ অক্টোবর) এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, এটা অনস্বীকার্য যে- গণতন্ত্রের প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর অঙ্গীকার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য চলমান আন্দোলন পরিচালনায় তাদের দলীয় নেতা-কর্মীদের উৎসাহিত করেছে।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল (শনিবার) যা বলেছেন, তার মানে এমন- তোরা যে যা বলিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই। তার মানে আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাজনৈতিক দলগুলো যাই বলুক না কেন, তিনি ক্ষমতায় থাকতে চান।’
তিনি বলেন, ক্ষমতা দখল ও রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বেআইনিভাবে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একই কায়দায় আগামী নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘রাজনৈতিক সংকটের পেছনে এটাই কারণ।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা যদি ভোটার ছাড়া আগামী নির্বাচন করতে চান, তাহলে এবার তা হবে না। আপনি ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন ২০২৪ সালে করতে পারবেন না। এটা এবার সম্ভব হবে না, কারণ জনগণ এবার আপনাকে প্রতিহত করার জন্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে।’
রাজধানীর একটি হোটেলে ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে স্থানীয়-আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকা এবং এখনই আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে বিএনপি। সেমিনারে আলোকচিত্রী বাবুল তালুকদারের লেখা ‘নো কমেন্টস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে যারা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, তারাই বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করতে আবারও আন্দোলন শুরু করেছে। ‘একটি দায়িত্বশীল গণতান্ত্রিক দল হিসেবে, আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য সমস্ত গণতান্ত্রিক ও দেশপ্রেমিক শক্তির সঙ্গে এই সংগ্রাম শুরু করেছি।’
তিনি বলেন, সমাজে অনেক হতাশাবাদী মানুষ আছে, কিন্তু বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশার কোনো চিহ্ন তিনি দেখেননি।
তিনি বলেন, ‘যারা আমাদের সঙ্গে আছেন এবং একযোগে আন্দোলন করছেন তাদের মধ্যেও কোনো হতাশা নেই। আমরা বিশ্বাস করি যে আমরা এই লড়াইয়ে অবশ্যই জয়ী হব কারণ আমরা সঠিক পথে এবং সত্যের পথে রয়েছি।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, সবাইকে মনে রাখতে হবে, একটি গণতান্ত্রিক শক্তির পক্ষে ফ্যাসিবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করা সহজ কাজ নয়। গত এক বছরে ২২ জন সাধারণ মানুষসহ এই সংগ্রামে আমাদের অনেক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন এবং এক হাজারেরও বেশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, সরকারের দমনের পদক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রায় ৪৫ লাখ বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীকে ‘মিথ্যা’ মামলায় জড়ানো হয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পেতে এদেশের মানুষ সব ধরনের ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত।
আরও পড়ুন: পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া বন্দি অবস্থায় খুব অসুস্থ হলেও কখনো মাথা নত করেননি। একইভাবে আমাদের সব নেতা-কর্মী তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সুতরাং, আমি বিশ্বাস করি আমাদের সংগ্রাম অবশ্যই সফল হবে এবং আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, তাদের দলও একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায় যেখানে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে সক্ষম হবে।
ফখরুল পর্যবেক্ষণ করেন যে, ‘আমাদের বিশ্বাস করতে হবে যে পশ্চিমা বিশ্ব গণতন্ত্রের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাদের অঙ্গীকার ও চেতনা আমাদের সাহস দেয় এবং এগিয়ে যেতে সহায়তা করে। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। একই সঙ্গে আমাদের এটাও মনে রাখতে হবে যে, আমরা যারা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি, ভবিষ্যতে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আরও দৃঢ়সংকল্প নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে রাজপথে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের জন্য তারা আন্দোলন করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে সক্ষম হব।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, শাহজাহান ওমর, বরকতউল্লাহ বুলু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে: ফখরুল
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলামকে (৫৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে জেলা শহরের টি এ রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার শিমরাইলকান্দি এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসাইন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের টি এ রোড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০১৬ সালের নাশকতায় মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। এছাড়াও পূর্বে ১১টি মামলা রয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তাকে কোটে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন: যশোরে বিএনপির ৬২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা
গাইবান্ধায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষ-গুলি, নারীসহ আহত ২০
সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতা গ্রেপ্তার