বিএনপি
পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই হয়নি: ফখরুল
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশগুলোর অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম অলমগীর।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারের পদত্যাগের বিষয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্ব তাদের অবস্থানে অটল। অর্থাৎ পর্দার আড়ালে আসলে কিছুই ঘটেনি।
আরও পড়ুন: সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
তিনি বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে দুর্গাপূজার পর বিএনপিসহ অন্যান্য বিরোধী দল অপ্রতিরোধ্য আন্দোলন শুরু করবে।
ফখরুল বলেন, এটা কোনো নির্বাচিত সরকার নয়। এটাকে সরকার বলা যাবে না। কারণ শাসক হিসেবে তারা (সরকার) তিনবার ক্ষমতায় থাকা বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপিকে তাদের শত্রু ঘোষণা করেছে।
তিনি আরও বলেন, তার মানে তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না। তারা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, তাহলে তারা কোনো রাজনৈতিক দলকে শত্রু হিসেবে বিবেচনা করতে পারে না।
বিএনপির এ নেতা বলেন, বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আইন অমান্য করে নরসিংদীর ছাত্রদলের দুই নেতাকে কমান্ডো স্টাইলে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে সরকার গণতন্ত্র ও আইনের শাসনে বিশ্বাস করে না।
তারা এখন বলছে, পর্দার আড়ালে সব কিছু ঠিক হয়ে গেছে। আপনি কেন বারবার এই কথা বলছেন? কারণ, আসলে কিছুই ঘটেনি।
ফখরুল বলেন, সমগ্র গণতান্ত্রিক বিশ্ব স্পষ্টভাবে তাদের (সরকারকে) পদত্যাগ করে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বান জানাচ্ছে।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তিন ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে: ফখরুল
বেলা ১১টার দিকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচিতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিএনপির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী অংশ নেন।
দুপুর ২টার দিকে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি অলি আহমেদের দেওয়া জুস পান করে অনশন ভাঙেন ফখরুল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী ও অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ স্থায়ী কমিটির সদস্যদের জুস খাওয়ান।
গত ৯ আগস্ট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করে, বাংলাদেশে তার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় তাকে দ্রুত বিদেশে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানোর।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া।
গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নিতে সরকারের কাছে আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো: ফখরুল
বিদেশে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার দাবিতে বিএনপির প্রতীকী অনশন শুরু
কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে তিন ঘণ্টার প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শুরু করেছে বিএনপি।
শনিবার সকাল ১১টা ২১ মিনিটে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি শুরু হয়।
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ সিনিয়র নেতারা।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
বিএনপি চেয়ারপার্সনের স্থায়ী মুক্তির দাবিতে ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিএনপি নেতা-কর্মীরা এ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন।
প্রতীকী অনশন দুপুর ২টার দিকে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
এছাড়া দেশের সব জেলা শহর ও মেট্রোপলিটন শহরে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে।
একই দাবিতে গত সোমবার রাজধানীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনেসহ সারাদেশে সমাবেশ করেছে বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে: ওবায়দুল কাদেরের 'ইউরেনিয়াম' মন্তব্য প্রসঙ্গে আব্বাস
গত ৯ আগস্ট থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের তত্ত্বাবধানে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ড সুপারিশ করে যে, বাংলাদেশে এখন তার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় তাকে দ্রুত বিদেশে একটি মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানো হোক।
লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছেন খালেদা জিয়া।
গত ৫ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়ার ভাই শামীম ইস্কান্দার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করলেও তা প্রত্যাখ্যান করা হয়।
আরও পড়ুন: আমাদের সর্বোচ্চটা করেছি, প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া: মেডিকেল বোর্ড
আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ব্যাংকিং খাতে চরম অব্যবস্থাপনা, ব্যাপক দুর্নীতি ও মানি লন্ডারিংয়ের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন বিপর্যস্ত।
শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দেশের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রতিষ্ঠিত অনেক স্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক ব্যাংকিংয়ের দিকে মনোযোগ না দিয়ে জনগণের অর্থ লুণ্ঠনে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মুখে পড়লে সরকারকে ভয়াবহ পরিণামের হুঁশিয়ারি ফখরুলের
তিনি বলেন, 'এটি পুরোপুরি একটি ফাঁকা অর্থনীতি। অর্থনীতি বিপর্যস্ত। আসলে তারা (ক্ষমতাসীন দল) দেশের সম্পদ লুট করেছে এবং তাদের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে।‘
সংবাদপত্র ও অন্যান্য উৎস থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপির এই নেতা দাবি করেন, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকিং ও অন্যান্য খাত থেকে প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা লুট পাট হয়েছে।
তিনি বলেন, 'এই লোকদের (আওয়ামী লীগ নেতাদের) দেশে নতুন কোনো বিনিয়োগ নেই। সুতরাং, এখানে কোনো নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়নি। এর ফলে দরিদ্ররা দরিদ্র থেকে যাচ্ছে এবং আয় বৈষম্য ও অসমতা দিন দিন বাড়ছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) অধ্যাপক রেহমান সোবহানের অর্থনীতি নিয়ে সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, বাংলাদেশে দুটি সমাজ তৈরি হয়েছে- একটি হচ্ছে অত্যন্ত ধনী শ্রেণির মানুষ যারা বিদেশে যায়, দামি পোশাক পরে এবং বিএমডব্লিউ ও মার্সিডিজের মতো বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করে। ‘এটাই বাস্তবতা।’
রাজনীতিতে প্রবেশের আগে অর্থনীতি পড়ানো এই বিএনপি নেতা বলেন, দেশে আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার মূল চাবিকাঠি হলো জবাবদিহি।
আরও পড়ুন:সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
যেহেতু বর্তমান ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই, তাই দেশের অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও বিচার বিভাগ তাদের হাতে নিরাপদ নয়।
বর্তমান পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং সত্যিকারের জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনে অংশগ্রহণের জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, একটি গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহিমূলক সরকারই পারে ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতি ও ব্যাংকিং খাতকে উদ্ধার করে টেকসই উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করেন, 'বর্তমান অবৈধ সরকার' শুধু রাজনীতিই নয়, অর্থনীতিকেও পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, 'তারা (সরকার) মিথ্যাচারের মাধ্যমে জনগণকে প্রতারিত করছে। তারা শুধু জনগণকেই নয়, বাংলাদেশ তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকেও প্রতারিত করছে।
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ব্যাংকিং খাতে নজিরবিহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করা খুবই কঠিন।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো: ফখরুল
তিনি বলেন, সরকারের ভুল নীতি, রাজনৈতিক দুর্বলতা ও ব্যাপক লুটপাটের কারণে আমাদের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ হচ্ছে রাজনৈতিক স্বার্থে জনতা ব্যাংকের ২২ হাজার কোটি টাকা অবৈধভাবে একটি বিশেষ কোয়ার্টার বা ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিদের দেওয়া।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে ইসলামী ব্যাংকে। কারণ একটি বৃহৎ শিল্প গ্রুপ একটি বেনামী ভুয়া কোম্পানির নামে ইসলামী ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। তবে গ্রুপটি সর্বোচ্চ ২১৫ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারবে। গণমাধ্যমে খবর এসেছে যে এই গোষ্ঠীটি কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশে পাচার করেছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ঋণের নামে ব্যাংক থেকে টাকা লুট করা এখন বাংলাদেশে সবচেয়ে সহজ কাজ। কারণ কিছু লোক ব্যাংকিং ব্যবস্থার অপব্যবহার করে ঋণ নেয় এবং রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে বছরের পর বছর ধরে ঋণ পরিশোধ না করে বিদেশে অর্থ পাচার করে।
অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয় এমন দেশে সাধারণত বিদেশি ব্যাংক আসে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ১৩টি স্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হলেও বিদেশি ব্যাংকগুলো এখানে কাজ করতে আগ্রহ দেখায়নি।
ফখরুল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মুদ্রাস্ফীতি বাড়ছে এবং ডলারের অভাবে প্রয়োজনীয় পণ্য, কাঁচামাল, মেশিন ও সরঞ্জাম আমদানি ব্যাহত হচ্ছে, যা অর্থনীতির গতিকে ধীর করে দিচ্ছে।
তিনি বলেন, সরকার ও তাদের অবৈধ সুবিধাভোগীরা দেশকে দুর্নীতি, লুণ্ঠন ও বিদেশে অর্থ পাচারের স্বর্গে পরিণত করায় ডলার সংকট তীব্র আকার ধারণ করছে।
আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বলেছেন, বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়, শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়ার মতো।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সবচেয়ে প্রতারক দল, তারা যা বলে তার উল্টোটা করে। তারা মার্কিন প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশনকে বলেছিল যে তারা গত দুটি নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে করেছে এবং আমরা পরবর্তী নির্বাচনে আবারও একই কাজ করব।’
ছাত্রদের এক কনভেনশনে বক্তৃতায় বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী শাসনামলে ২০১৪ সালে একটি সুন্দর নির্বাচন হয়েছিল, যেখানে ১৫৩ জন সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং ২০১৮ সালে নির্বাচনের আগের রাতে ভোট হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘তারা এখন বলছে তাদের ওপর আস্থা রাখতে, কারণ তারা আবার সুষ্ঠু নির্বাচন করবে। এটি একটি মুরগিকে শেয়ালের কাছে বর্গা দেওয়ার মতো। আপনাদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না। যথেষ্ট হয়েছে।’
সরকার অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে আক্ষেপ করেন ফখরুল।
ছাত্রদলের নেতৃত্বে ছাত্র ঐক্য (ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিরোধী দলের ১৫টি ছাত্র সংগঠনের একটি মঞ্চ) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-এ এই ছাত্র সম্মেলনের আয়োজন করে।
রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসতে এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বিদেশি চাপ মোকাবিলার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি বলতে চাই আপনার সময় শেষ হয়ে গেছে এবং মানুষ আপনার দুঃশাসনে বিরক্ত হওয়ায় কোনো কৌশল কাজে আসবে না। তারা (জনগণ) দমন, চুরি ও দুর্নীতি থেকে মুক্তি চায়। তাই এখনও সময় আছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি মেনে নেন।’
আরও পড়ুন: সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
সরকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য জনগণের কাছে জনপ্রিয়তা দাবি করে, তাহলে কেন তারা সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভয় পায়, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এই বিএনপি নেতা।
ফখরুল বলেন, অতীতে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে ছাত্ররা সমাজ পরিবর্তন করেছে এবং মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। ‘আমরা এখন আমাদের আন্দোলনের সাফল্য সম্পর্কে আশাবাদী, কারণ ছাত্ররা এখন আবার ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পরাস্ত করার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।’
তিনি বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে নরকে পরিণত করা ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাতের জন্য তারা কঠোর সংগ্রামে নেমেছে।
ফখরুল বলেন, বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে গভীর রাতে তার বাড়ির দরজা ভেঙে আটক করে নিয়ে গিয়ে নির্মম নির্যাতন করা হয়। ‘একজন প্রাক্তন সাংসদ এবং প্রাক্তন ছাত্রনেতা এ্যানিকে যেভাবে সরকারের কুশীলবেরা বেআইনিভাবে আক্রমণ ও নির্যাতন করেছে, আমরা তা কল্পনাও করতে পারি না।’
তিনি সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেআইনি পুলিশি পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানান। ‘এটি আমাদের ও শিক্ষার্থীদের জন্য লজ্জাজনক।’
ফখরুল বলেন, দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও চলমান ফ্যাসিবাদী সরকারের থেকে মুক্তি পেতে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘শুধু স্লোগান দিলে চলবে না। আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে এবং সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে আমাদের আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নিতে হবে।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারি কর্মকর্তাদের খুশি করতে সরকার ডিসি ও ইউএনওদের জন্য আধুনিক যানবাহন কিনতে যাচ্ছে।
তিনি আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের রাজপথে নামার আহ্বান জানান। ‘ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমাদের বিজয়ী হতে হবে।’
বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেছেন, সরকার রাজনৈতিকভাবে বিরোধীদের মোকাবিলা করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে বলে বিরোধী নেতাদের জেলে পাঠাচ্ছে ও দমন-পীড়ন করছে।
তিনি অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা থেকে সরকার বিএনপি চেয়ারপার্সনন খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
সাইফুল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সনের খারাপ কিছু ঘটনা ঘটলে সরকার দায়ী থাকবে।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মুখে পড়লে সরকারকে ভয়াবহ পরিণামের হুঁশিয়ারি ফখরুলের
যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত প্রধানমন্ত্রী : ফখরুল
যশোরে বিএনপির ৬২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা
যশোরে বিএনপির ৬২ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে দু’টি নাশকতার মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার(১১ অক্টোবর) রাতে এই মামলা করেন পুলিশ।
বিএনপির ৩৪ জনের বিরুদ্ধে বেনাপোল বন্দর থানায় এবং বাকি ২৮ জনের বিরুদ্ধে শার্শা থানায় মামলা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, একই রাতে বেনাপোল থেকে বিএনপির ৭ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার এবং পাঁচটি পেট্রোল বোমা ও ছয়টি ককটেল উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন, শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসান জহির, যুবদলের সভাপতি মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম, বেনাপোল পৌরসভা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের ভরত ও সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তারুজ্জামান আক্তার।
আরও পড়ুন: সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাসান জহির বলেন, ‘ঘটনার দিন রাতে আমি যশোরে ছিলাম। আমাদের বিরুদ্ধে সাজানো মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে।’
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভূঁইয়া জানান, উপজেলার পোড়াবাড়ী গ্রামের একটি আম বাগান থেকে বিএনপির সাত নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযানকালে তাদের কাছ থেকে পাঁচটি পেট্রোল বোমা ও ছয়টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সুইস রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলির সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক
সুইস রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলির সঙ্গে বিএনপি প্রতিনিধি দলের বৈঠক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলির সঙ্গে তার বারিধারার বাসভবনে বৈঠক করেছেন।
আরও পড়ুন: সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে শুরু হওয়া বৈঠকে বিএনপির প্রতিনিধিদল বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ইস্যু এবং বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করে।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
সরকার দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে: ফখরুল
সরকার আরেকটি একতরফা নির্বাচনের জন্য দেশকে সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুদবার বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সরকার বিএনপির সক্রিয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে কারাগারে রেখে এবং তাদের বিরুদ্ধে 'মিথ্যা' মামলা দিয়ে একতরফা নির্বাচনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো ভোটারবিহীন আরেকটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে সরকার দেশকে সম্পূর্ণ সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, দেশের জনগণ সরকারকে আর একতরফা নির্বাচন করতে দেবে না।
তিনি বলেন, 'আমরা পরিষ্কার করে বলেছি, শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হতে পারে না। নিরপেক্ষ প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে এবং এই সংসদ ভেঙে দিতে হবে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আতঙ্কিত প্রধানমন্ত্রী : ফখরুল
বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দল এখন নির্বাচন নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয়, কারণ তাদের মূল লক্ষ্য আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, সরকারের অধীনস্থ কয়েকটি দল ছাড়া প্রায় সব রাজনৈতিক দলই ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেয় না।
তিনি বলেন, 'এভাবে নির্বাচন করার কোনো মানে হয় না। সারা বিশ্ব বলছে, আপনাদের শেষ দুটি নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য ছিল না। সুতরাং, এই ধরনের নির্বাচনের কী লাভ? সুতরাং জোর করে অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করে তারা কী লাভ করবে?’
তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে আগামী দিনগুলোতে তাদের আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।
সফররত যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ আইআরআই ও এনডিআই'র প্রাক-নির্বাচন মূল্যায়ন মিশনের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিবেশ আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছিল।
তিনি বলেন, তারা মার্কিন দলকে বলেছেন, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বাংলাদেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
বিএনপি রাজনৈতিক সংলাপের পথ বন্ধ করে দিয়েছে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের যে মন্তব্য করেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করে ফখরুল বলেন, 'এটা বাজে কথা ও বড় মিথ্যে।'
তিনি বলেন, তাদের দল দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছে, সরকার নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের বিষয়ে আলোচনা করতে চাইলে তারা সংলাপে বসতে পারে। তিনি বলেন, 'সরকারকে প্রথমে ঘোষণা করতে হবে যে তারা এটি (নিরপেক্ষ সরকারের দাবি) মেনে নেবে।
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে আজ (১১ অক্টোবর) সকালে ধানমন্ডির বাসা থেকে গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে এ্যানির বাড়ির দরজা ভেঙে তাকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ডাকাতের মতো আচরণ করে।
মির্জা ফখরুল বলেন, 'যেভাবে তাকে (অ্যানি) গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তা প্রমাণ করে যে, বিএনপির সক্রিয় নেতাদের গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে এই সরকার একতরফা নির্বাচনের পথে রয়েছে।’
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার বিএনপির অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে। তিনি বলেন, 'বিরোধী দলীয় নেতাদের কারারুদ্ধ করা ও গ্রেপ্তার করা স্বৈরাচারী শাসকদের পুরোনো অভ্যাস।’
আরও পড়ুন: সাংবাদিকতা এখন সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পেশা: ফখরুল
খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মুখে পড়লে সরকারকে ভয়াবহ পরিণামের হুঁশিয়ারি ফখরুলের
খালেদা জিয়ার জীবন বাঁচাতে বাধা অপসারণ করুন: সরকারের প্রতি বিএনপির নীতিনির্ধারকদের আহ্বান
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বিদেশে উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সব বাধা অপসারণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দলটির স্থায়ী কমিটি।
বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, এটা এখন স্পষ্ট, সরকার তার প্রধান প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়াকে বিদেশে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে জাতীয় নির্বাচনের আগে তাকে হত্যা করতে চায়।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসা নিয়ে চিকিৎসকদের বক্তব্যে দেশের মানুষের মতো বিএনপির সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সদস্য ও সমর্থকরা উদ্বিগ্ন।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটি আমাদের নেত্রীর (খালেদা জিয়া) জীবন বাঁচাতে উন্নত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব এরকম যেকোনো দেশে পাঠাতে সরকারের কাছে জোরালো দাবি জানিয়েছে। একই সঙ্গে বিদেশে যাওয়ার পথে আরোপিত অমানবিক প্রতিবন্ধকতা অবিলম্বে অপসারণের আহ্বানও জানিয়েছে স্থায়ী কমিটি।’
আরও পড়ুন: আবারও সিসিইউতে খালেদা জিয়া
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের শর্ত, তার বয়স ও অসুস্থতা এবং বিদ্যমান আইনের অযৌক্তিক ও ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে অশালীন, নিষ্ঠুর ও অমানবিক বক্তব্য দিয়ে তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার 'অসুস্থ' প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী স্থায়ী কমিটি।
সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের ফলাফল জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি দৃঢ়ভাবে মনে করে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে খালেদা জিয়াকে যেভাবে ক্যান্টনমেন্টের বাসভবন থেকে অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে, ঠিক তেমনি কোনো অপরাধ না করেও নির্ধারিত রায়ের মাধ্যমে তাকে বিনা চিকিৎসায় এবং ইচ্ছাকৃত পরিত্যক্ত কারাগারে পাঠিয়ে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু থেকে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে নদীতে ফেলে দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য এবং প্রায় ৮০ বছর বয়সী মৃতপ্রায় ব্যক্তির জন্য কান্নাকাটি করার কোনো মানে নেই বলে তার সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রমাণ করেছে যে বর্তমান 'দখলদার' সরকার তাকে জীবিত দেখতে চায় না।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কোনো সভ্য, মানবিক ও সুস্থ সাধারণ নাগরিক, কোনো দেশের সরকার প্রধানের কথাই বলা হোক না কেন, প্রতিপক্ষকে নিয়ে এমন ‘সন্ত্রাসী’ শব্দ উচ্চারণ করতে পারে না। আমাদের নেত্রীর মৃত্যু চায় এমন সরকার অন্যায়ভাবে তার উন্নত চিকিৎসায় বাধা সৃষ্টি করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সরকারের এই মনোভাব ও আচরণ দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।’
খালেদা জিয়াকে তার প্রাপ্য চিকিৎসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করলে যদি খারাপ কিছু ঘটে তাহলে সরকারকে জনগণের রোষের মুখে পড়তে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে ফখরুল বলেন, ‘বিদেশে চিকিৎসার পথ সুগম করতে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে একের পর এক কর্মসূচি পালন করছেন তারা। খালেদা জিয়ার (বিদেশে) চিকিৎসা নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, তারা (সরকার) তাকে হত্যা করতে চায়। তাকে চিকিৎসার সুযোগ না দেওয়া মানে জাতীয় নির্বাচনের আগে তাকে হত্যা করা।’
তিনি বলেন, সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করতে আগামী দিনগুলোতে তাদের আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।
এর আগে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে গঠিত মেডিকেল বোর্ড বাংলাদেশে তার চিকিৎসার কোনো বিকল্প না থাকায় তাকে দ্রুত বিদেশে মাল্টিডিসিপ্লিনারি সেন্টারে পাঠানোর সুপারিশ করেছে।
হাসপাতালে এক সংবাদ সম্মেলনে বোর্ডের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, লিভার সিরোসিসের কারণে পেট ও বুকে পানি জমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ এবং সংক্রমণ রোধে যথাযথ চিকিৎসার অভাবে ৭৮ বছর বয়সী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
আরও পড়ুন: খালেদাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর ক্ষমতা রয়েছে সরকারের: আইন বিশেষজ্ঞরা
খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার আবেদন নাকচ আইন মন্ত্রণালয়ের
আ. লীগের সাধারণ সম্পাদককে ‘কেমিক্যাল কাদের’ বলে মন্তব্য বিএনপির রিজভীর
বিরোধী দলের নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেওয়া মন্তব্যের জন্য মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ‘কেমিক্যাল কাদের’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ইরাকে আলী নামে একজন মন্ত্রী ছিলেন। তিনি বিষাক্ত রাসায়নিক অস্ত্র তৈরির তদারকি করছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই সবাই তাকে কেমিক্যাল আলী বলে ডাকতো। বাংলাদেশেও একজন কেমিক্যাল কাদের (আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক) আবির্ভূত হয়েছে।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবর প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিরোধী বিএনপি নেতাদের মাথায় ধ্বংসাত্মক ইউরেনিয়াম ঢেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে, তাদের দল কতটা নিষ্ঠুর তা প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ইউরেনিয়াম তার বিষাক্ত বিকিরণের মাধ্যমে পুরো বিশ্বকে ধ্বংস করতে পারে। তিনি (কাদের) ওই ইউরেনিয়াম বিএনপি মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটির সদস্যদের মাথায় ঢেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।’
সোমবার আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার এক অনুষ্ঠানে কাদের হুঁশিয়ারি দেন, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করতে চাইলে বিএনপি নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেবেন।
কাদের বলেন, ‘ইতোমধ্যে রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়ামের দুটি চালান দেশে এসেছে। আমরা ফখরুল, মঈন খান, গয়েশ্বর, আব্বাস এবং ‘পাগলা’ রিজভীদের মাথায় কিছু ইউরেনিয়াম ঢেলে দেব। যারা বাড়াবাড়ি করবে, আমরা লাঠি দিয়ে পেটানোর বদলে মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে তাদের শান্ত করব।’
রিজভী অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনার সরকার এবং তার মন্ত্রীরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বাংলাদেশে বলপূর্বক গুম, হত্যা, গুপ্তহত্যা ও ক্রসফায়ারের মতো ভয়ঙ্কর কর্মকাণ্ডে জড়িত। ‘বিরোধী দলের নেতাদের মাথায় বিষাক্ত রাসায়নিক ইউরেনিয়াম ঢেলে দেওয়ার হুমকি ক্ষমতাসীন দলের নিষ্ঠুর মনোভাবের পরিচায়ক।’
তিনি অসুস্থ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে না দেওয়ায় সরকারের সমালোচনা করেন।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি না দিয়ে সরকার তার চিকিৎসার মৌলিক ও সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
তিনি সর্বস্তরের জনগণকে বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারের কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে জেগে ওঠার আহ্বান জানান।
রিজভী নবনিযুক্ত বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা ও সাধারণ সম্পাদক আলী আসগর হেনাকে সঙ্গে নিয়ে জিয়ার কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতাদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে: ওবায়দুল কাদেরের 'ইউরেনিয়াম' মন্তব্য প্রসঙ্গে আব্বাস
বিরোধী দলের নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের নিন্দা জানিয়ে মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, এটা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের হত্যার হুমকি।
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে লাঠিপেটা না করে মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে আমাদের শান্ত করবেন। আমি তাকে জিজ্ঞেস করতে চাই: ইউরেনিয়াম কী এবং এর ধরন সম্পর্কে আপনার কি কোনো ধারণা আছে। এটা একজন পাগলের প্রলাপ।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, ইউরেনিয়াম কারো গায়ে ঢাললে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মানুষ মারা যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তাহলে আপনি (বিএনপি নেতাদের) হত্যার হুমকি দিচ্ছেন না? আপনি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও মির্জা আব্বাসকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে আপনি আমাদের স্থায়ী কমিটির কয়েকজন সদস্যকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।’
এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল (জেসিডি) কর্মী নাজির উদ্দিন আহমেদ জেহাদের স্মরণে জাতীয় প্রেসক্লাবে আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে জিহাদ স্মৃতি পরিষদ।
এর আগে সোমবার আওয়ামী লীগের ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার এক কর্মসূচিতে ওবায়দুল কাদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের চেষ্টা করলে বিএনপি নেতাদের মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে দেবেন।
কাদের বলেন, ‘ইওতামধ্যে রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়ামের দুটি চালান দেশে এসেছে। আমরা ফখরুল, মঈন খান, গয়েশ্বর, আব্বাস ও পাগলা রিজভীর মাথায় কিছু ইউরেনিয়াম ঢেলে দেব। যারা বাড়াবাড়ি করবে, আমরা লাঠি দিয়ে পেটানোর বদলে মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে তাদের শান্ত করব।’
আব্বাস স্মরণ করেন যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর আগে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা তা (খালেদা জিয়াকে পদ্মা সেতু থেকে নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি) ভুলিনি। আপনারা এখন ইউরেনিয়াম হুমকি জারি করেছেন… আপনারা কি শুরু করেছেন? রাজনীতি করুন এবং রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলুন এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সঙ্গে কথা বলতে শিখুন।’
আব্বাস হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, তারা এই ধরনের ঘৃণ্য মন্তব্যের জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে।
তিনি বলেন, আমরা এবার আর তাদের (আ.লীগ নেতাদের) রেহাই দেবো না।
তিনি দাবি করেন, বিএনপি ভদ্র মানুষের দল, আর আওয়ামী লীগ অসভ্য মানুষের দল। আমরাও (বিএনপি নেতারা) গালিগালাজ করতে জানি, কিন্তু বিএনপি ভদ্রলোকদের দল বলে আমরা তা করি না।
এসময় আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য বিএনপি নেতাকর্মীদের নতুন শক্তি ও সাহস নিয়ে রাজপথে নামতে আহ্বান জানান তিনি।