বিএনপি
সাঈদীর মৃত্যুতে বিএনপির শোক
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো পৃথক শোকবার্তায় সাঈদীর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্য, আত্মীয়-স্বজন, ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানানো হয়।
এই প্রথম জামায়াতের কোনো দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুতে বিএনপি শোক প্রকাশ করেছে। এর আগে যখন মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছিল তখন দলটি নিরব ছিল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে মারা যান সাঈদী।
আরও পড়ুন: ঢাকায় সাঈদীর গায়েবানা জানাজা হবে না: ডিএমপি প্রধান
এক শোকবার্তায় ফখরুল বলেন, কারাবন্দী অবস্থায় সাঈদীর মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত।
জামায়াতের এই নেতাকে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলেম হিসেবে বর্ণনা করে তিনি বলেন, সাঈদী বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের মানুষকে ইসলামের আলোকিত পথে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
ফখরুল বলেন, ‘ধর্মপ্রাণ মানুষের প্রতি সহমর্মী এই মানুষটি জনসাধারণের মধ্যে বিশুদ্ধ ইসলামি জ্ঞানের চর্চা ও প্রচারে নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জাতীয় সংসদে তিনি ছিলেন ধৈর্যশীল ও তেজস্বী বক্তা।’
ফখরুল বলেন, ‘গুরুতর অসুস্থ মরহুম দেলাওয়ার হোসেন সাঈদী গত ১৩ বছর বন্দি অবস্থায় থাকলেও তাকে কোনো সুচিকিৎসা দেওয়া হয়নি। তার মৃত্যু স্বৈরশাসনের এক নির্দয় নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’
আরও পড়ুন: যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী মারা গেছেন
সাঈদীর মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স ঘিরে সমর্থকদের বিক্ষোভ: শাহবাগে মোটরসাইকেলে আগুন
খালেদা জিয়া ৭৯ বছরে পা দিলেন
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) ৭৯ বছরে পা দিয়েছেন।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যার স্মরণে জাতীয় শোক দিবসের সঙ্গে মিলে যাওয়ায় মঙ্গলবারের পরিবর্তে বুধবার সকাল ১১টায় বিএনপি দলের পক্ষ থেকে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শুধু মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হবে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে মিলাদ মাহফিল করবে তাদের দল।
জাতীয় শোক দিবসে তার জন্মদিন পালনের জন্য আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনার কারণে বিএনপি ২০১৬ সাল থেকে কেক কাটার পরিবর্তে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে তার জন্মদিন পালন করে আসছে।
অসুস্থ হয়ে পড়ায় ৯ আগস্ট খালেদাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
তাকে হাসপাতালের একটি কেবিনে চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেছেন মির্জা ফখরুল
তিনি বলেন, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপার্সনকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার এক সেমিনারে বলেছেন, মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো তাদের দলের চেয়ারপার্সন বিভিন্ন অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে জীবনযুদ্ধে লড়ছেন। ডাক্তাররা বারবার বিদেশে উন্নত কেন্দ্রে তার চিকিৎসার কথা বললেও সরকার তাকে সে সুযোগ দিচ্ছে না।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়া লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট, চোখের সমস্যাসহ নানা রোগে ভুগছেন।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় 8 ফেব্রুয়ারি, ২০১৮-এ বিচারিক আদালত কর্তৃক দোষী সাব্যস্ত হয়ে তাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
২৫ মার্চ, ২০২০-এ বিএনপি প্রধানকে কিছু শর্তে একটি নির্বাহী আদেশে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। বয়স এবং মানবিক ভিত্তি তার পরিবারের দ্বারা একটি আবেদন অনুসরণ করে.
বিএনপির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুর জেলায় ইস্কান্দার মজুমদার ও তৈয়বা মজুমদারের ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। চার বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি চতুর্থ।
আরও পড়ুন: খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৬ ঘণ্টার অনশন
গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়: ফখরুল
পাচারকারী ও দুর্নীতিবাজদের রক্ষায় কাজ করা গণমাধ্যমগুলো করপোরেট মিডিয়ায় পরিণত হয়েছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ছাড়া মুক্ত গণমাধ্যম সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা দেশে অনেক মিডিয়া দেখছি, কিন্তু তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না… দেশে কৌশলে করপোরেট মিডিয়া তৈরি করা হয়েছে, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোই সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলের মালিক।’
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর একটি হোটেলে 'বাংলাদেশের গণমাধ্যম: দুঃশাসনের দেড় দশক' শীর্ষক এক সেমিনারে বিএনপির এই নেতা এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘করপোরেট মিডিয়া মালিকরা সরকার ও ব্যাংকের সুযোগ-সুবিধা ভোগের পাশাপাশি ব্যবসা করছেন। ব্যাংক থেকে টাকা পাচারকারীদের রক্ষা করতে এসব গণমাধ্যম করপোরেশনে পরিণত হয়েছে।’
আরও পড়ুন: এবার অবশ্যই শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হবে: ফখরুল
তিনি বলেন, অদ্ভূত বিষয় হলো, এখন একটি করপোরেট গণমাধ্যম আরেকটি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে এবং এক ব্যবসায়ী আরেক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার করছে। তারা সবাই ফ্যাসিবাদের সঙ্গে সম্পর্কিত।
ফখরুল বলেন, ‘মূল কথা হচ্ছে গণতন্ত্র ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় এবং স্বাধীনতা না থাকলে গণমাধ্যম সঠিকভাবে কাজ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, সর্বব্যাপী ফ্যাসিবাদ আমাদের দেশকে গ্রাস করেছে এবং ফ্যাসিবাদের প্রধান অস্ত্র হচ্ছে গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্টদের প্রয়োজন জনগণকে ন্যূনতম গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। আর এজন্য প্রয়োজন গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করা, যা বর্তমান সরকার গত দেড় দশক ধরে সূক্ষ্মভাবে করে আসছে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘১৯৭১ সালে মুক্তিযোদ্ধারা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতার ৫২ বছর পর এখন আমাদের বলতে হচ্ছে, দেশে গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নেই।’
তিনি বলেন, এমনকি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় স্পষ্টভাবে বলছে, বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই, এখানে নির্বাচন হয় না। এখানে মানুষের অধিকার ও মানবাধিকারকে হরণ করা হচ্ছে।
ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করতে দলের নেতা-কর্মীরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
আরও পড়ুন: মানুষ বিএনপিকে 'হিন্দুবিরোধী' বলে বিশ্বাস করে না: ফখরুল
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা ও ক্ষমতা মজবুত করার পুরোনো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। এর অংশ হিসেবে তারা সংবিধান পরিবর্তন করে সংসদ, নির্বাচন ব্যবস্থা, প্রশাসন ও বিচার বিভাগের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে।
সরকার পুরো সমাজকে কলুষিত করে রাজনীতি ও দেশের সব অর্জনকে ধ্বংস করেছে বলেও অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
ফখরুল বলেন, ‘আসুন আমরা সবাই অন্ধকার ঠেলে আলোর দিকে এগিয়ে যাই। গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে, আমাদের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার রক্ষায় ১৯৭১ ও ৯০-এর দশকের মতো সাহস ও শক্তি নিয়ে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামতে হবে।’
তিনি বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে দিয়ে আওয়ামী লীগকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে খেলতে ইসি ‘অচেনা’ দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে: ফখরুল
এবার অবশ্যই শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন হবে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার যতই কৌশল অবলম্বন করুক না কেন এবার সরকারে অবশ্যই পরিবর্তন হবে।
তিনি বলেন, আপনারা নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন পরিবর্তন আসছে, পরিবর্তন আসবেই, সত্য ও সুন্দরের জয় হবে এবং গণতন্ত্রের জয় হবে ইনশাআল্লাহ।
ফখরুল বলেন, তাদের দল জনগণের শক্তি এবং গণতন্ত্রের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে, যা এখন সমগ্র বিশ্বের দ্বারা প্রশংসিত।
আরও পড়ুন: ভয়-প্রতিহিংসা থেকে বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে আ. লীগ: ফখরুল
তিনি বলেন, এ কারণেই আমরা এখন এতটা আশাবাদী। অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন কেন আমি সবসময় এমন হাসি মুখে থাকি। আমি হাসি কারণ আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে এই ভয়ংকর দানব (সরকার) জনগণের উত্তাল ঢেউয়ের তোড়ে দিয়ে আমাদের বুক থেকে সরে যাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, বর্তমান সরকারের পতন নিশ্চিত করতে সারা বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠতে শুরু করেছে। তারা (জনগণ) সত্যিই একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গড়তে চায়।
ক্ষমতা হারানোর ভয়ে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করছেন বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ১০ শতাংশ আসনও পাবে না।
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দলের একটাই দাবি নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রয়াত ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিদেশিদের ভয় দেখানোর জন্য সরকার
ফখরুল অভিযোগ করেন, চলমান আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি সরাতে এবং বিদেশিদের জুজুর ভয় দেখানোর জন্য মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযান চালিয়ে সরকার নাটক করেছেন।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) কতটা ভয়ংকর তার প্রমাণ হলো তারা কুলাউড়ার একটি প্রত্যন্ত বাড়ি থেকে আকস্মিক জঙ্গিবাদ বিরোধী অভিযানের মাধ্যমে ৪ জন পুরুষ, ৫ জন মহিলা এবং ১ জন শিশুকে আটক করেছে। এ ছাড়া তারা ৩ কেজি বিস্ফোরক ও ডেটোনেটরও জব্দ করেছে।
তবে সন্দেহভাজন জঙ্গিরা হঠাৎ কোথা থেকে ওই বাড়িতে গেল এবং কারা তাদের নিয়ে এল এবং কীভাবে তারা সেখানে বিস্ফোরক ও ডেটোনেটর নিয়ে এসেছিল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি।
ফখরুল বলেন, সরকার সবসময় জঙ্গিদের নিয়ে নাটক করে।
তিনি বলেন, এটা একটা অশুভ লক্ষণ। এখন দেখবেন তারা জঙ্গিদের কথা বলে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবে।
তিনি আরও বলেন, তারা আবার ক্ষমতায় না এলে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না- এই কথা বলে পশ্চিমা বিশ্বকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে তারা।
খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ
ফখরুল বলেন, বর্তমানে খুবই অসুস্থ হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন খালেদা জিয়া। অন্য কোনো সভ্য দেশে হলে সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর উদ্যোগ নিত।
তিনি বলেন, চিকিৎসকরা বারবার বলছেন- তার যে চিকিৎসা দরকার তা দেশে সম্ভব নয় এবং তার চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে হবে।
বিএনপির এই নেতা আক্ষেপ করে বলেন, সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে সব সময় চায় খালেদা জিয়া চিরতরে পৃথিবী থেকে চলে যান।
রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ততা না থাকলেও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে অল্প বয়সে আরাফাত রহমান ইহলোক ত্যাগ করেছেন বলেও তিনি দাবি করেন।
ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার উদাসীন
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার উদাসীন।
তিনি আরও বলেন, শিশুসহ হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন অনেক মানুষ।
এ ছাড়া সরকার যখন কোটি কোটি টাকার উন্নয়ন ও মেগা প্রকল্পের এত কথা বলেন তারা কেন এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন?
বিএনপি নেতা বলেন, দেশের জনগণের প্রতি বর্তমান সরকারের কোনো দায়বদ্ধতা নেই। এ কারণে তারা বিরোধী দলকে দমন ও একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে চায়।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের কারণে বিএনপি নেতা-কর্মীরা ঘরে থাকতে পারছেন না। এমনকি রাজনীতিতে যাদের সম্পৃক্ততা নেই তারাও রেহাই পাচ্ছেন না। বিএনপির কর্মীদের খুঁজে না পেলে তাদের বাবা-ভাইদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য সরকারের সমালোচনা করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: মানুষ বিএনপিকে 'হিন্দুবিরোধী' বলে বিশ্বাস করে না: ফখরুল
ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য: ফখরুল
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কমিটি গঠন নিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১০
আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা নিয়ে মতবিরোধের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (১২ আগস্ট) বিকালে পৃথক কর্মসূচি পালনকালে জেলা বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে এই সংঘর্ষ বাধে।
জানা যায়, গত ১০ আগস্ট বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সই করা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় বিএনপি।
এরপরই জেলা বিএনপির একটি বিরাট অংশের নেতা-কর্মী ঘোষিত কমিটিকে ফরমায়েশি কমিটি আখ্যা দেন। তারা এই কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে শুক্রবার (১১ আগস্ট) বিকালে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
শনিবার বিকালে নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম পৌর এলাকার শেখ হাসিনা সড়ক সেতু এলাকায় একটি শোভাযাত্রা বের করে।
অন্যদিকে, একই সময়ে জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি এবং নব গঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকনের নেতৃত্বে পাওয়ার হাউজ রোডে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ৫৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও কেক কাটার আয়োজন করে।
শোভাযাত্রা বের হয়ে কিছুদূর যাওয়ার পর উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া শুরু হয়।
আরও পড়ুন: বিএনপি বাংলাদেশে হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি শুরু করেছে, তাদের প্রতিহত করুন: কাদের
প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মাহমুদসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে একজনকে আটক করে পুলিশ।
জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘আনন্দ শোভাযাত্রা শেষ করে আমি ঘটনাস্থল ত্যাগ করি। পরে সংঘর্ষ হয়েছে বলে শুনেছি।’
জেলা বিএনপির নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক সভাপতি হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি বলেন, ‘এমন ব্যক্তিকে আহ্বায়ক করায় জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিব্রত। এই কমিটি বাতিল করে নতুন করে ত্যাগী নেতা-কর্মীদের দিয়ে কমিটি গঠন করা হোক। বিচ্ছিন্নভাবে কিছু নেতা-কর্মী সংঘর্ষে জড়িয়েছে বলে জানতে পেরেছি।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসাইন জানান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। বিকালে একপক্ষ আনন্দ র্যালি বের করে এবং অন্যপক্ষ কোকোর জন্মদিন উপদযাপনের কথা বললেও মূলত আনন্দ মিছিলকে প্রতিহত করার জন্য মাঠে নামে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
তিনি বলেন, পুলিশ অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং একজনকে আটক করে।
আরও পড়ুন: বিএনপির ওপর মার্কিন ভিসানীতি প্রয়োগ করা উচিত: ওবায়দুল কাদের
খেলা হবে তারেক ও হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে: ওবায়দুল কাদের
মানুষ বিএনপিকে 'হিন্দুবিরোধী' বলে বিশ্বাস করে না: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপিকে হিন্দুবিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে আওয়ামী লীগের অপপ্রচার জনগণ বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতে এমন অপপ্রচার চালায়, যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ হিন্দু সম্প্রদায়ের। তারা বলেন, বাংলাদেশে বিএনপি হচ্ছে একটা হিন্দুবিরোধী সংগঠন।’
শনিবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধি সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ফখরুল তাদের কাছে জানতে চান, তারা বিশ্বাস করেন কি না- যে বিএনপি হিন্দুবিরোধী দল।
তিনি বলেন, ‘আমরা জোর গলায় বলতে পারি, বিএনপি যখন ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা (হিন্দুরা) নিরাপদে থাকে। সব সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষায় আমাদের অঙ্গীকার রয়েছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে খেলতে ইসি ‘অচেনা’ দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে: ফখরুল
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় গণতন্ত্র অপরিহার্য। তাই গণতন্ত্রের সংগ্রামে আমাদের জয়ী হতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
তিনি বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ কথায় কথায় বলে, তারা দেশের সবচেয়ে অসাম্প্রদায়িক দল। তারা কতটা অসাম্প্রদায়িক তা আপনারা জানেন। আমরা ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল দেখেছি। আওয়ামী লীগের লোকেরা এই দেশে আমাদের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, দোকানপাট ও ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করেছে।’
বর্তমান সরকারের আমলে দেশের বিভিন্ন স্থানে মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুর এবং কক্সবাজারের রামুতে বৌদ্ধ বিহার ও সম্প্রদায়ের উপর অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
ফখরুল বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা হিন্দু ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়ে তাদের জমি ও সম্পত্তি দখল করার জন্য আক্রমণ করেছিল। তারা তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অপমান করার জন্য তাদের উপর দোষ চাপিয়ে দেওয়ার জন্যও এটি করেছিল। মানুষ এখন এটা বুঝতে পেরেছে এবং তারা এটাকে বিশ্বাস করে না এবং মেনেও নেয় না।’
১৯৯২ সালে ভারতের বাবরি মসজিদে হামলার সময় বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য তৎকালীন বিএনপি সরকারের গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা তুলে ধরেন তিনি।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখার বিশাল মিছিল
ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় থাকে তখন হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের কেউ-ই নিরাপদ বোধ করেন না। যে কোনো সময় কাউকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো যেতে পারে বলে সাধারণ মানুষও নিরাপদ বোধ করে না।’
গণতন্ত্র ও হারানো সব অধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য সর্বস্তরের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ফখরুল যুবকদের অনুরোধ করেন, তাদের কমিউনিটির সদস্যসহ সব মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে এবং অনুপ্রাণিত করতে হবে যে গণতন্ত্রের এই লড়াইয়ে তাদের জিততে হবে।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, সরকার দীর্ঘদিন ধরে তাদের ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অনেককে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য: ফখরুল
নির্বাচন নিয়ে খেলতে ইসি ‘অচেনা’ দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মদদে নির্বাচনের নামে চক্রান্তের অংশ হিসেবে দুটি ‘অচেনা’ দলকে নিবন্ধন দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন কতটা নির্লজ্জ... তারা দুটি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে। এই দলগুলোকে কেউ চেনে না। কেউ কি তাদের চেনেন? আপনারা কি জানেন কেন তাদের নিবন্ধন দেওয়া হয়েছে? তাদের দ্বারা নির্বাচন নিয়ে একটি খেলা খেলতে চায়। এই খেলা এইবার খেলতে দেওয়া হবে না।’
শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার গণমিছিলের উদ্বোধনকালে এ অভিযোগ করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা।
তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ এখন তাদের অধিকার রক্ষা, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ।
ফখরুল বলেন, ‘এবার আমাদের লড়াই জীবন রক্ষার জন্য। কোনো ভয়, কোনো জেল বা দমন-পীড়ন এবার আমাদের দমন করতে পারবে না।’
এর আগে বৃহস্পতিবার, ইসি আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি) এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের (বিএনএম) নিবন্ধনের অনুমোদন দেয়।
বিবৃতিতে ইসি বলেছে, সর্বসম্মতিক্রমে দল দুটিকে নিবন্ধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।
ফখরুল বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তারা বর্তমান ‘দানব’ সরকারকে পরাজিত করে শান্তিপূর্ণ ও ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন। ‘আমরা একটি নতুন সংগ্রাম শুরু করেছি। মিছিলের মাধ্যমে আমরা তাদের (সরকার) কাছে একটি বার্তা দিতে চাই যে তোমাদের দিন শেষ।’
ফখরুল সরকারের উদ্দেশে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে মর্যাদার সঙ্গে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান।
অন্যথায় রাজপথে বিষয়টির মিমাংসা করবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এই নেতা।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখার বিশাল মিছিল
এক দফা আন্দোলন: বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর শাখার বিশাল মিছিল
চলমান এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে শুক্রবার (১১ আগস্ট) রাজধানীর বাড্ডা ও কমলাপুর স্টেডিয়াম এলাকা থেকে মালিবাগের দিকে পৃথক দুটি মিছিল নিয়ে আসে বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা।
বিরোধী দলের এক দফা দাবি মেনে নিতে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করেই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান।
এদিন বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বাড্ডার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার মিছিলের উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
কর্মসূচি শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এই বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, সরকার দমনমূলক কর্মকাণ্ড ও বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে বিরোধী দলের আন্দোলনকে দমন করার চেষ্টা করছে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সরকার কোনোভাবেই আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে পারবে না। ‘কোনোকিছুই এবার আমাদের দমাতে পারবে না।’
ফখরুল বলেন, সরকার যাতে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচনের নামে আরেকবার খেলা করতে পারে, তাই নির্বাচন কমিশন (ইসি) দুটি অখ্যাত দলকে নিবন্ধন দিয়েছে।
তিনি বলেন, দেশের জনগণ এবার ক্ষমতাসীন দলকে কোনো অন্যায় খেলা খেলতে দেবে না।
আরও পড়ুন: ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য: ফখরুল
ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোই তাদের দলের একমাত্র লক্ষ্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী ও অত্যাচারী সরকারের নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই ও সংগ্রাম করেছি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এই ফ্যাসিস্টদের হাত থেকে দেশকে মুক্ত করা।’
বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে ফখরুল এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের জন্য ইতোমধ্যে অনেক বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন এবং অনেকে গুমের শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, গত ১৮ জুলাই লক্ষ্মীপুরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিল কর্মসূচিতে পুলিশ গুলি চালিয়ে কৃষকদল কর্মী সজিব হোসেনকে হত্যা করে, অনেকে আহত হয়। ‘আন্দোলনই এই সরকারকে অপসারণের একমাত্র উপায়। এই সরকারকে অবশ্যই উৎখাত করতে হবে।’
গত ১৮ জুলাই জেলায় বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে সজিবের পরিবারের সদস্য ও আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাতে এ কর্মসূচির আয়োজন করে লক্ষ্মীপুর শাখা বিএনপি।
আরও পড়ুন: ভয়-প্রতিহিংসা থেকে বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে আ. লীগ: ফখরুল
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশ ও দেশের কোনো নাগরিক নিরাপদ থাকবে না।
বিএনপি নেতা বলেন, সজিবসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের জীবন উৎসর্গ বৃথা যাবে না। ‘আমাদের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে এবং গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
দেশের জনগণ তাদের দলের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, তারা বিশ্বাস করে বর্তমান সরকারকে হটিয়ে জনগণ অবশ্যই গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।
তিনি নিহত কৃষকদল কর্মী এবং লক্ষ্মীপুরে পুলিশের গুলিতে আহত ও দৃষ্টিশক্তি হারানো পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করে বলেন, বিএনপি সবসময় তাদের পাশে থাকবে।
অনুষ্ঠানে সজিবের পরিবার ও আহত দলীয় নেতাকর্মীদের আর্থিক সহায়তা দেয় দলটি।
আরও পড়ুন: সময় ও একাত্তর টিভির টকশোতে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত বিএনপির
আ.লীগ চাপে বিনয়ী হওয়ার ভান করছে: ফখরুল
ডিবি অফিস এখন ভাতের হোটেল: রিজভী
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয় এখন ভাতের হোটেলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতা রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আমরা জানি ডিবি কার্যালয় বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের আতঙ্কের আস্তানা। সেখানে কী হয়েছিল জানেন? ডিবি অফিস এখন ভাতের হোটেলে পরিণত হয়েছে।’
দুর্নীতি মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে নিম্ন আদালতের রায়ের প্রতিবাদে বুধবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: তারেক-জুবাইদার কারাদণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার ঢাকায় বিএনপির সমাবেশতিনি বলেন, গত ২৯ জুলাই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে নগরীর ধোলাইখাল এলাকায় দলের অবস্থান কর্মসূচি থেকে আটকের পর ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ডিবি অফিসের প্রধান হারুন-অর-রশিদের সঙ্গে গয়েশ্বরের দুপুরের খাবারের ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে আরও কয়েকজন সেলিব্রেটি ডিবি অফিসে তাদের বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে সেখানে যাওয়ায় দুপুরের খাবার খান। ডিবি প্রধান বলেন, দুপুরের খাবারের সময় তাদের অফিসে আসা লোকজনকে দুপুরের খাবার দেয়।
আরও পড়ুন: আ.লীগ চাপে বিনয়ী হওয়ার ভান করছে: ফখরুল
চলমান আন্দোলন দমন করতে সরকার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিভিন্ন মামলায় ফাঁসানোর জন্য ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘আমাদের নেতাদের তুলে নিয়ে ৪-৫ দিনের জন্য গায়েব করা হচ্ছে। তারপর বলা হয় মহানগর ডিবি অফিসে নাকি ডিবি পুলিশের কাছে। কয়েকদিন পর থানায় হস্তান্তর করা হয়।’
বিএনপি নেতা আক্ষেপ করে বলেন, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা স্বাভাবিক জীবনযাপন ও স্বাভাবিক রাজনীতি করার অধিকার হারিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন বা ন্যায়বিচার নেই। দেশে ন্যায়বিচার থাকলে যারা এখন ক্ষমতায় আছেন তারা তাদের অপকর্ম ও অপরাধের জন্য জেলে থাকতেন।’
সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে মহিলা দলের নেতা-কর্মীরা সরকারবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে নাইটিঙ্গেল ক্রসিং অভিমুখে মিছিল বের করে।
আরও পড়ুন: ভয়-প্রতিহিংসা থেকে বিএনপির কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে আ. লীগ: ফখরুল