বিএনপি
এক দফা আন্দোলন: ২৭ জুলাই ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ এক দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) রাজধানীতে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি।
শনিবার (২২ জুলাই) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে তারুণ্যের সমাবেশ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তাদের যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে দুপুর ২টায় রাজধানীতে জনসভা অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান তিনি। তবে সমাবেশস্থলের নাম উল্লেখ করেননি ফখরুল।
বর্তমান সরকারের পতন ত্বরান্বিত করতে সর্বস্তরের জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
অন্যান্য সমমনা দল ও জোটও একই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে সমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।
বিএনপির তিনটি সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের আয়োজিত তারুণ্যের সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় বিকাল ৩টা ২৮ মিনিটে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে।
কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য ছিল তরুণ প্রজন্মকে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজপথের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করা।
আরও পড়ুন: ভেঙে পড়ল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বিএনপির যুব সমাবেশের মঞ্চ
অতিরিক্ত লোডের কারণে অনুষ্ঠানের জন্য স্থাপিত অস্থায়ী মঞ্চটি ভেঙে পড়ায় সমাবেশটি ৯০ মিনিট দেরিতে শুরু হয়।
দুপুর দেড়টার দিকে জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু সমাবেশের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার সময় এ ঘটনা ঘটে। পরে দলীয় নেতা-কর্মীরা ডেকোরেশন কোম্পানির কর্মচারীদের সহায়তায় ভাঙা মঞ্চটি মেরামত করেন।
ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে তরুণ নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন রঙের ক্যাপ পরে, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও দলের শীর্ষ নেতাদের ছবি নিয়ে সকাল থেকেই মিছিলে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে থাকেন।
সমাবেশস্থল ছাড়াও আশপাশের সড়কে অবস্থান নেয় বিএনপি নেতা-কর্মীরা, এতে আশপাশের এলাকায় যান চলাচল ব্যাহত হয়।
যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সমাবেশস্থলের চারপাশে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।
তিনটি সংগঠন এর আগে পাঁচটি তারুণ্যের সমাবেশ করে তরুণদের ব্যাপক সাড়া পায়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রতি তরুণ প্রজন্মের সমর্থন জোগাতে গত ২ জুন বিএনপির তিনটি সহযোগী সংগঠন চট্টগ্রাম, বগুড়া, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ঢাকায় ছয়টি যুব সমাবেশের ঘোষণা দেয়।
আরও পড়ুন: সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ বিএনপি সমর্থকরা
এক দফা আন্দোলন ঠেকাতে লক্ষ্মীপুরে সজীব হত্যা: বিএনপি
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ বিএনপি সমর্থকরা
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে ‘তারুণ্যের সমাবেশে’ যোগ দিতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতা-কর্মী ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জড়ো হয়েছেন।
দুপুর ২টায় শুরু হওয়া সমাবেশের আগে শনিবার সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন রঙের টুপি পরা তরুণ নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেন।
দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ও প্রতিকৃতি বহন করে প্রখর রোদে সমাবেশ শুরুর আগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এসে তারা সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেবেন এবং চলমান এক দফা আন্দোলন জোরদার করতে তরুণদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেবেন।
বিএনপির তিনটি সহযোগী সংগঠন- জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল- তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তরুণ প্রজন্মকে রাজপথের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করতে এই সমাবেশের আয়োজন করেছে।
এর আগে শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, অধিকার বঞ্চিত তরুণরা যুব সমাবেশে অংশ নেবে এবং শনিবার ঢাকা তারুণ্যের নগরীতে পরিণত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদী শাসনে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত ৪ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি নতুন ভোটারের পক্ষে এবং ক্ষমতাসীনদের দলের রাজনীতি সঙ্গে জড়িত না থাকার কারণে সরকারি চাকরি না দেওয়া যুবকদের পক্ষে তারা রাস্তায় নেমেছে।
টুকু বলেন, তারা ইতোমধ্যে পাঁচটি যুব সমাবেশ করেছে এবং তরুণদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিতে চলমান আন্দোলনের প্রতি তরুণ প্রজন্মের সমর্থন জোগাতে গত ২ জুন বিএনপির তিনটি সহযোগী সংগঠন চট্টগ্রাম, বগুড়া, খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও ঢাকায় ছয়টি তারুণ্যের সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়।
কৃষিমন্ত্রীর হাতে এক দফার লিফলেট দিলেন বিএনপি নেতা মিলন
সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের ‘এক দফা’ দাবি-সম্পর্কিত লিফলেট কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকের হাতে তুলে দিয়েছেন বিএনপি নেতা ফজলুল হক মিলন।
শুক্রবার (২১ জুলাই) জুমার নামাজের পর রাজধানীর একটি একটি মসজিদের সামনে মন্ত্রীর হাতে একটি প্রচারপত্র এগিয়ে দেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন।
আরও পড়ুন: বিএনপি রাজধানীতে শোকমিছিল করবে বৃহস্পতিবার
এ সময় মন্ত্রী প্রচারপত্রটি হাসিমুখে তা গ্রহণ করেন।
বিএনপি নেতারা তাদের দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদের সামনে মুসল্লিদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন।
এছাড়া বিএনপির গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি মিলনসহ দলীয় নেতা-কর্মীরা সার্কিট হাউস মসজিদের সামনেও লিফলেট বিতরণ করছিলেন।
ইউএনবি’র সঙ্গে আলাপকালে মিলন বলেন, তিনি মসজিদের সামনে প্রায় আড়াইশ জনের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করেন।
তিনি বলেন, কৃষিমন্ত্রী যখন নামাজ শেষে মসজিদ থেকে বের হচ্ছিলেন, আমি তাকে একটি লিফলেট দিয়েছিলাম।
তিনি আরও বলেন, আমি ড. কামাল হোসেনকেও সেখানে পেয়েছিলাম এবং তাকে একটি লিফলেটও দিয়েছিলাম।
এদিকে এক পাতার লিফলেটে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর এক দফা আন্দোলন সফল করতে রাজপথে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে।
লিফলেট-এ লেখা রয়েছে-
অবৈধ সরকারকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে বাধ্য করতে হবে এবং দেশ ও এর জনগণকে সর্বব্যাপী দুর্নীতি এবং বিপজ্জনক জঙ্গল শাসন থেকে বাঁচানোর জন্য নির্দলীয় নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনতে হবে।
লিফলেটে ‘শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠাসহ এক দফা দাবিতে সারা দেশের মানুষ এখন ঐক্যবদ্ধ’ শিরোনামে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকারের নোংরা কৌশলের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে বুধবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করেন যে, তাদের দলের নেতাকর্মীরা সরকারের পদত্যাগসহ এক দফা দাবি জানাতে জুমার নামাজের পর সারাদেশের মসজিদে মুসল্লিদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করবেন।
আরও পড়ুন: ডেঙ্গুর ব্যর্থতায় ঢাকার দুই মেয়রের পদত্যাগ চায় বিএনপি
এক দফা আন্দোলন ঠেকাতে লক্ষ্মীপুরে সজীব হত্যা: বিএনপি
ডেঙ্গুর ব্যর্থতায় ঢাকার দুই মেয়রের পদত্যাগ চায় বিএনপি
রাজধানীতে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতির জন্য ঢাকার দুই সিটি মেয়রের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিএনপি নেতা তাবিথ আওয়ান ও ইশরাক হোসেন।
এ ছাড়া ব্যর্থতার দায় নিয়ে দুই মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা।
এদিকে মেয়রদের চরম ব্যর্থতাকে দায়ী করে ডেঙ্গু রোগীদের পাশে দাঁড়াতে এবং জনসচেতনতা সৃষ্টিতে চার দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
শুক্রবার (২১ জুলাই) ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত দুই মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাজধানীর ভয়াবহ ডেঙ্গু পরিস্থিতির কারণ তুলে ধরে এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
কর্মসূচির অংশ হিসাবে তারা বলেন, তারা রক্ত সংগ্রহ অভিযান শুরু করবেন। দলের লোকদের রক্তদানে উৎসাহিত করবেন এবং অন্যদেরও এটি করতে উৎসাহিত করবেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির সঙ্গে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
যতদিন ডেঙ্গু পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে দলটি গ্রহীতা ও দাতাদের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য একটি অনলাইন ‘ব্লাড ইনফরমেশন ডিপোজিটরি’ ওয়েবসাইটও চালু করবে এবং এর পরিষেবা অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া ডেঙ্গু থেকে মুক্তি পেতে এডিস লার্ভা নির্মূলে ওয়ার্ড পর্যায়ে লিফলেট বিতরণ ও পোস্টার লাগানোর মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক প্রচার চালাবে দলটি।
বিএনপি জনগণের সঙ্গে একত্রে এডিস মশার প্রজনন চিহ্নিত করে পরিষ্কার করার পাশাপাশি প্রতিটি ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে।
তাবিথ বলেন, এক্ষেত্রে, আমরা অনলাইন এবং সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি সরাসরি জনসচেতনতার মাধ্যমে সচেতনতা বৃদ্ধি কার্যক্রম পরিচালনা করব।
তিনি বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের অব্যাহত অবহেলায় মৌসুমি ডেঙ্গু এখন সারা বছরের আতঙ্কে পরিণত হয়েছে।
২০১০-২০১১ সাল পর্যন্ত ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ছিল, কিন্তু গত কয়েক বছরের অব্যবস্থাপনা এবং অবহেলার কারণে এটি এখন ধ্বংসাত্মক হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, শহরটি এডিস মশার অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। নগরবাসী এখন মশার কামড়ে মৃত্যুর ক্রমাগত ভয়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, নগর কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল একটি সমন্বিত, কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। কিন্তু জনগণের নির্বাচিত কোনো প্রতিনিধি না থাকায় আমরা ঢাকায় তেমন কিছু দেখিনি। ফলে ২০২৩ সালেও ঢাকার মানুষ ডেঙ্গুর ঝুঁকিতে রয়েছে।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, বর্ষাকালে বর্তমান হারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ডেঙ্গু খুব দ্রুত মহামারি আকার ধারণ করতে পারে। বর্তমান অবৈধ সিটি করপোরেশন অবহেলা ও দুর্নীতির মাধ্যমে আমাদের যুব সমাজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।
তিনি বলেন, সারাদেশে ডেঙ্গু ছড়ানোর জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনকেও দায়ী করতে হবে।
তাবিথ বলেন, নগর কর্তৃপক্ষ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে নাগরিকদের জরিমানা করার কথা বলছে। এই অনির্বাচিত মেয়রদের বক্তব্য পরস্পর বিরোধী। মশা নিয়ন্ত্রণে নিজেদের অসাবধানতা, ব্যর্থতা, দুর্নীতি আড়াল করার জন্য নাগরিকদের দায়ী করা হচ্ছে। আমরা এই প্রচেষ্টার নিন্দা জানাই।
তিনি বলেন, অকার্যকর ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দিয়ে যথেচ্ছভাবে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রম অবৈজ্ঞানিকভাবে চলছে।
এমনকি এই ওষুধগুলো কেনার ক্ষেত্রেও অসামঞ্জস্য ছিল, কারণ তারা তাদের কার্যকারিতা পরীক্ষা না করেই জনগণের অর্থ ব্যয় করেছে।
স্প্রে করার ক্ষেত্রে প্রচণ্ড অব্যবস্থাপনা, অপ্রশিক্ষিত শ্রমিকদের নিয়ে শো-অফের কর্মসূচিও রয়েছে।
তাবিথ বলেন, তবে জনগণের প্রতিনিধি হিসেবে এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির কর্মী হিসেবে আমরা মনে করি, সবসময় বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে জনগণের পাশে দাঁড়ানো আমাদের কর্তব্য।
তাবিথ ও ইশরাক উভয়েই ডেঙ্গু পরিস্থিতি মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের দুই মেয়রের পদত্যাগ দাবি করেন।
ইশরাক বলেন, ঢাকার দুই সিটির মেয়রের ব্যর্থতায় রাজধানীতে ডেঙ্গু মহামারি ও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। জনগণের কাছে জবাবদিহির অভাবে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, দূষণ রোধে এবং কার্যকর বর্জ্য ব্যবস্থাপনা তৈরিতে সামগ্রিক ব্যর্থতা ডেঙ্গু পরিস্থিতি বর্তমান পর্যায়ে অবনতির অন্যতম কারণ।
স্থির পানিতে এডিস মশা বংশবৃদ্ধি করে উল্লেখ করে ইশরাক বলেন, অপর্যাপ্ত বর্জ্য নিষ্কাশনের কারণে স্থির পানিতে এডিস মশা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতামতকে উপেক্ষা করে দুই মেয়র এডিস মশার বংশবৃদ্ধি ঠেকাতে যথেচ্ছ কিছু কার্যক্রম চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ইশরাক অভিযোগ করেন যে, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়ররা শহরের আকার এবং জনসংখ্যার অনুপাতে পর্যাপ্ত কীটতত্ত্ববিদ নিয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন ঠেকাতে লক্ষ্মীপুরে সজীব হত্যা: বিএনপি
ভোট চুরির পরিকল্পনা আছে আ. লীগের: ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
এক দফা আন্দোলন ঠেকাতে লক্ষ্মীপুরে সজীব হত্যা: বিএনপি
বিরোধী দলের এক দফা আন্দোলন ঠেকাতে সরকার পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্মীপুরে কৃষকদল নেতা সজীব হোসেনকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র নেতারা।
বৃহস্পতিবার সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নয়াপল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শোক মিছিল বের করার আগে সজীবের রক্ত বৃথা যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সজীব হোসেনকে অত্যন্ত ঠাণ্ডা মাথায় এবং পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই। দিবালোকে এ ঘটনা ঘটে। আমাদের আন্দোলন ঠেকাতে সরকার এটা করেছে।’
আরও পড়ুন:চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে কৃষকদল নেতা হত্যার জন্য সরকারকে দায়ী করা হবে বলে জানান তিনি।
সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের জবাবে বিএনপি নেতা বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হলে জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটবে না।
রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারবে না। তাই নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার আবশ্যক।’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতুল্লাহ বুলু অভিযোগ করেন, সরকারবিরোধী আন্দোলনে সরকার এ পর্যন্ত বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের ১৯ নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে।
আরও পড়ুন: ১০ দফা দাবি এক দফায় পরিণত, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার আমাদের এক দফা আন্দোলন বন্ধ করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাদের টার্গেট করছে। তাদের দল এক দফা আন্দোলন শুরু করায় সরকার বেকায়দায় পড়েছে। সেই আন্দোলনে যে সজীব প্রাণ দিয়েছেন তার রক্ত বৃথা যাবে না।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘জোরপূর্বক গুম, হামলা-মামলা চালিয়ে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করা যাবে না। ‘আমরা এই আন্দোলনকে সফল করব। দেশের সব রাজনৈতিক দল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও বর্তমান শাসন ক্ষমতাচ্যুত করতে ঐক্যবদ্ধ।’
বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন করে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে।
ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান অভিযোগ করেছেন, বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর দমন, হত্যা, হামলা ও গুম করে সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চায়।
তিনি বলেন, ‘কোন ষড়যন্ত্র এবং দমনমূলক কৌশল এবার কাজ করবে না। দেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা তাদের এক দফা দাবি আদায় করে ছাড়বে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশেই লক্ষ্মীপুরে সজীবকে হত্যা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন আমান।
তিনি বলেন, এই শাসনের পতন না হওয়া পর্যন্ত তাদের দল রাজপথ থেকে পিছপা হবে না। ‘আমাদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের এক দফা দাবি মেনে নিয়ে এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করব।’
আরও পড়ুন: বিএনপির সঙ্গে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
পরে সজীব হোসেন হত্যার প্রতিবাদে বিকাল ৪টার দিকে নিজ কার্যালয়ের সামনে শোক র্যালি বের করেন তারা।
মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে দল ও জোটের শরিকদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে দলটির প্রতিবাদ নথিভুক্ত করার জন্যও এ সমাবেশ ছিল।
বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী কালো ব্যাজ বেঁধে এবং সরকারবিরোধী স্লোগান নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন।
র্যালিটি কাকরাইল ও নয়াপল্টন প্রদক্ষিণ শেষে ফকিরাপুল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
সব মহানগর ও জেলা শহরেও বিএনপির নেতাকর্মীরা শোক র্যালি বের করেন।
সরকারের পদত্যাগসহ তাদের এক দফা দাবি আদায়ে আগামীকাল জুমার নামাজের পর সারাদেশের মসজিদে মুসল্লিদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করবেন বিএনপি নেতাকর্মীরা।
তাদের এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ও বুধবার রাজধানীসহ সারাদেশে মিছিল করেছে বিএনপি।
মঙ্গলবার দলের মিছিলে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষ, লক্ষ্মীপুরে সজীব নিহত ও কয়েক শতাধিক মানুষ আহত হয়।
আরও পড়ুন: ভোট চুরির পরিকল্পনা আছে আ. লীগের: ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
ভোট চুরির পরিকল্পনা আছে আ. লীগের: ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতকে বিএনপি
বাংলাদেশে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে বিএনপি বলেছে, বর্তমান সরকার ভোট কারচুপির পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে। তাই নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।
বৃহস্পতিবার বিকালে গুলশানের বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক বৈঠকে সারাহ কুককে এসব কথা বলেছেন দলের নেতারা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘নির্বাচনের ছয় মাস বাকি থাকলেও ভোট চুরির ষড়যন্ত্র চলছে। তাই নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাদের বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ভোট চুরির পরিকল্পনা নস্যাৎ করার একমাত্র উপায় একটি নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করা। ‘এই আলোচনা এখন সর্বত্র চলছে এবং এটি আজ (বৃহস্পতিবার) আমাদের আলোচনায় এসেছে।’
গত সপ্তাহের রাজনৈতিক অগ্রগতি ও প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করে বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দলের একজন নেতা নিহত হয়েছেন। অনেকে আহত হয়েছেন, গ্রেপ্তার হয়েছেন এবং মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ডিসি, ইউএনও ও পুলিশ কর্মকর্তাদের বদলি ও নতুন পদায়ন করা হয়েছে। ‘এগুলো সবই নির্বাচনে ভোট চুরির পরিকল্পনার অংশ।’
আরও পড়ুন:আর নিপীড়ন সহ্য নয়, উপযুক্ত জবাব দিন: মির্জা আব্বাস
তিনি বলেন, বিশ্বের সকল গণতান্ত্রিক দেশ ও সংস্থার উদ্বেগ রয়েছে যে একটি 'অনির্বাচিত' সরকার ক্ষমতায় থাকায় ব্যাপক দুর্নীতির মধ্যে মানবাধিকার, আইনের শাসন এবং জনজীবনের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।
বিএনপি নেতা বলেন, এই পরিস্থিতি পরিবর্তনের একমাত্র উপায় হলো একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। বাংলাদেশের মতো গণতান্ত্রিক দেশগুলোরও এমনটাই প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে একটি বিশ্বাসযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে কি না- তা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বেগ রয়েছে। যার মাধ্যমে জনগণ তাদের সংসদ ও সরকার নির্বাচন করবে। ‘ব্রিটিশ সরকারেরও সবসময় এই উদ্বেগ ছিল কারণ আমরা ওয়েস্টমিনস্টারকে অনুসরণ করি। বৈঠকে সেই বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক অনুষ্ঠানের জন্য বিএনপির দাবিকে যুক্তরাজ্য সমর্থন করে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধু গ্রেট ব্রিটেন নয়, আরও অনেক দেশ এতে সমর্থন দিচ্ছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘কেন গণতান্ত্রিক দেশের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে আসছে? তারা কী বার্তা পাঠাচ্ছে? কেন তারা একটি প্রতিনিধিত্বমূলক, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কথা বলছেন? তারা কি দক্ষিণ এশিয়ার অন্য কোনো দেশে যাচ্ছেন?
বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে এসব প্রশ্ন উঠত না এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এসব বিষয়ে আলোচনা করতে আসতেন না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
খসরু বলেন, বাংলাদেশের জনগণ গণতন্ত্র, তাদের ভোটাধিকার, আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক রাজনীতি এবং সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। তারা সমান সুযোগ ও জীবনের নিরাপত্তা চায়। ‘এগুলো শুধু বিএনপির দাবি নয়, এদেশের কোটি মানুষের দাবি।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে বৈঠকের পর ব্রিটিশ হাইকমিশনার বিকাল ৩টার দিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে যান। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রায় ১ ঘণ্টা ৫০ মিনিট বৈঠক করেন এই ব্রিটিশ কূটনীতিক।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিএনপির সঙ্গে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বিএনপির সঙ্গে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন।
বৃহস্পতিবার বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে বিকাল ৩টার দিকে বৈঠক শুরু হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানান।
আগামী জাতীয় নির্বাচনসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে বিএনপির সঙ্গে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের কথা বলার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: হিরো আলমের ওপর হামলা: পূর্ণ তদন্ত চেয়ে ঢাকায় বিদেশি মিশনগুলোর যৌথ বিবৃতি
বৈঠকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে আমীর খসরু বৈঠকের ফলাফল সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফ করবেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: অন্য দেশে এমন ঘটনা ঘটলে বিদেশি মিশন কি বিবৃতি দেয়: মোমেন
ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির শোকমিছিল আজ
মঙ্গলবার দলের পদযাত্রার সময় লক্ষ্মীপুরে কৃষকদল নেতা নিহতের প্রতিবাদে আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাকাসহ দেশব্যাপী ‘শোকমিছিল’ করবে বিএনপি।
মঙ্গলবার দল ও জোটের শরিকদের পদযাত্রায় হামলার প্রতিবাদ জানাতেও আজকের কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোকমিছিল বের করবে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার রাজধানীর উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী অভিমুখে দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
পরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরে শোকমিছিল বের করা হবে।
তিনি বলেন, বিকাল ৩টায় নয়াপল্টন থেকে একটি শোকমিছিল বের করে শান্তিনগর, মালিবাগ ও মৌচাক হয়ে মগবাজারে গিয়ে শেষ হবে।
আরও পড়ুন: ১০ দফা দাবি এক দফায় পরিণত, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: ফখরুল
তিনি বলেন, সরকারের পদত্যাগসহ এক দফা দাবিতে শুক্রবার জুমার নামাজের পর সারা দেশের মসজিদে মুসল্লিদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করবেন দলের নেতা-কর্মীরা।
এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ও বুধবার রাজধানীসহ সারা দেশে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
মঙ্গলবারের কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত একজন নিহত ও কয়েকশ’ মানুষ আহত হন।
একই দিন রাজধানীর মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের সামনে বিএনপির পদযাত্রায় হামলার ঘটনা ঘটে।
১২ জুলাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে 'নিরপেক্ষ' সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে 'এক দফা' আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
আরও পড়ুন: আর নিপীড়ন সহ্য নয়, উপযুক্ত জবাব দিন: মির্জা আব্বাস
এক দফা আন্দোলন: আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিএনপির দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শুরু
১০ দফা দাবি এক দফায় পরিণত, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ১০ দফা দাবি এখন এক দফায় পরিণত হয়েছে- শেখ হাসিনার পদত্যাগ।
তিনি বলেন, তাকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে।
বুধবার বিকালে দিনাজপুরের ইনস্টিটিউট চত্বরে প্রধান অতিথির ভাষণে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নতুন সংসদ এবং জনগণের একটি নতুন সরকার গঠন করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই আন্দোলন শুধু বিএনপি বা খালেদা জিয়া বা তারেক রহমানের আন্দোলন নয়, এই সংগ্রাম সারা দেশের ১৮ কোটি মানুষের মুক্তির আন্দোলন।’
আরও পড়ুন: বিএনপি রাজধানীতে শোক সমাবেশ করবে বৃহস্পতিবার
উক্ত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন কৃষক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাসান জাফির তুহিন। বক্তব্য রাখেন জেলা কমিটির সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন দুলাল, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ.জেড.এম. জাহিদ হোসেনসহ অন্যান্যরা।
এর আগে বিভাগের ৮ জেলার নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড নিয়ে সভাস্থলে জড়ো হন।
সমাবেশ শেষে পদযাত্রা বের হয়ে শহরের প্রধান সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করা হয়।
এদিকে ছাত্রলীগের হামলায় দলের ৫০ জন নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ
আর নিপীড়ন সহ্য নয়, উপযুক্ত জবাব দিন: মির্জা আব্বাস
বিএনপি রাজধানীতে শোকমিছিল করবে বৃহস্পতিবার
লক্ষ্মীপুরে কৃষকদল নেতাকে হত্যা এবং মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন স্থানে দল ও জোটের শরিকদের পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে রাজধানীতে শোকমিছিল করবে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শোকমিছিল বের করবে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
বুধবার উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী অভিমুখে দলের দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
তাদের এক দফা আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রখর রোদে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো পদযাত্রা কর্মসূচিতে যোগ দেন বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী।
আরও পড়ুন: এখনই ক্ষমতা ছাড়ুন, জনগণ আপনাদের আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না: ফখরুল
দীর্ঘ পথ হেঁটে নেতা-কর্মীরা সেখানে পৌঁছালে যাত্রাবাড়ীতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মধ্য দিয়ে পদযাত্রা কর্মসূচি শেষ করে দলটি।
অন্যান্য সকল মহানগর ও জেলা শহরেও অনুরূপ কর্মসূচী পালন করে দলটির নেতাকর্মীরা।
বিএনপির পাশাপাশি গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণফোরাম অ্যান্ড পিপলস পার্টি, লেবার পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, সমমনা গণতান্ত্রিক পেশাজীবী জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সংসদের সদস্যরা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিভিন্ন এলাকায় কর্মসূচি পালন করে।
যাত্রাবাড়ীর জনসভায় আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে বিএনপি আগামী নির্বাচনে যাবে না। ‘যারা এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবেন তাদেরকে আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। দেশের মাটিতে তাদের বিচার হবে।’
তিনি দাবি করেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন না হওয়ায় শুধু বিএনপি নয়, সারা বিশ্ব বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় যারা বিরোধী দলের পদযাত্রা কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে এবং লক্ষ্মীপুরে কৃষকদল নেতাকে হত্যা করেছে তাদের একদিন জবাবদিহি করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এই নেতা।
তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদেরও বিচার করা হবে।
এর আগে সকাল ১১টা ৫ মিনিটে উত্তরার আবদুল্লাহপুরে পলওয়েল মার্কেটের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে পদযাত্রার উদ্বোধন করেন আব্বাস।
মার্চ শুরু করার আগে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্যে তিনি সতর্ক করেছিলেন যে তাদের দল আর রাজনৈতিক নিপীড়ন সহ্য করবে না। তারা আগামী দিনে উপযুক্ত জবাব দেবে।
আরও পড়ুন: এক দফা আন্দোলন: আবদুল্লাহপুর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিএনপির দ্বিতীয় দিনের পদযাত্রা শুরু
আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ তাদের ভোটাধিকার আদায় করবে। আমরা ১৫ বছর ধরে আপনাদের (সরকারের) অত্যাচার সহ্য করেছি। আমরা এটা আর সহ্য করব না। ইনশাআল্লাহ, আপনারা (আ.লীগ) গতকাল সারাদেশে আমাদের ওপর যে নিপীড়ন চালিয়েছেন আমরা তার উপযুক্ত জবাব দেব।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে। ‘আমাদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং আমাদের ভোটের অধিকার উপলব্ধি করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের পদযাত্রায় আপনারা (মিরপুরে) বাংলা কলেজ থেকে যখন ইট-পাথর নিক্ষেপ করলেন আমরা কীভাবে আপনাদের রেহাই দেব? এটা ঘটবে না। আপনাদের বাঁচার দিন শেষ। আমাদের অধিকার রক্ষা করতে হবে বলে অন্য কেউ রেহাই পাবে না।’
বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দলের নেতা-কর্মীরা কীভাবে জেলে যেতে হয়, মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতে হয় এবং প্রতবন্ধকতাকে মারিয়ে মিছিল করতে হয় তা জানে। ‘আমরা আর আপনাদের অত্যাচার সহ্য করব না, নৃশংসতার জবাব দেব।’
তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা ‘শান্তি মিছিলের’ নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার লক্ষ্মীপুরে আমাদের দলের একজনকে হত্যা করা হয়েছে এবং আপনারা শান্তি মিছিলের নামে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছেন। আপনারা কেন ঝামেলা তৈরি করতে চান?’
আরও পড়ুন: আর নিপীড়ন সহ্য নয়, উপযুক্ত জবাব দিন: মির্জা আব্বাস
সহিংসতা ও বিশৃঙ্খলা এড়াতে পাল্টা কর্মসূচি না দিতে তিনি ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানান।
তাদের দল আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য সংবিধান থেকে এক চুলও নড়বে না আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আব্বাস বলেন, তারাও পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের আগে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন চায়।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী থেকে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক পর্যন্ত মিছিল করে। একইভাবে দেশের সব মহানগর ও জেলা শহরেও কর্মসূচি পালন করে নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার দলটির মিছিল সারাদেশে পুলিশ এবং আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষ হয়। এতে একজন নিহত এবং কয়েক শতাধিক লোক আহত হয়।
রাজধানীর মিরপুরের সরকারি বাংলা কলেজের কাছেও বিএনপির মিছিলে হামলা হয়, যার ফলে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
গত ১২ জুলাই বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে ‘একদফা’ আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন।
এক দফা দাবি আদায়ে প্রথম কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিনি ১৮ ও ১৯ জুলাই দুই দিনের দেশব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির কার্যালয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ