বিএনপি
সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আ.লীগ সরকারকে অপসারণের কোনো বিকল্প নেই: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে ‘অবৈধ’ আওয়ামী লীগ সরকারকে অপসারণের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই বর্তমান অবৈধ সরকারকে আমরা মানি না। এটি সংবিধান অনুযায়ী বৈধ সরকার নয়।’
শনিবার বিকালে বরিশালের বঙ্গবন্ধু উদ্যানে (বেলস্ পার্ক) বিএনপির তিনটি সহযোগী সংগঠন- যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত বরিশাল বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথীর বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন।
নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন আয়োজন করাসহ বিরোধী দলের ১০ দফা দাবিতে তরুণদের সমর্থন জোগাতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এসময় বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, তাদের দল শেখ হাসিনার শাসনামলে নয়, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় নির্বাচন চায়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
জনগণের আশা-আকাঙ্খা অনুযায়ী নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সংসদ ভেঙে দেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও পিরোজপুর থেকে তিনটি সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সমাবেশে যোগ দেন।
ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র ও দেশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে শক্তিশালী আন্দোলন প্রয়োজন।
তিনি বিরোধী দলের চলমান আন্দোলনকে সফল করতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘তরুণদের জেগে উঠতে হবে এবং ফ্যাসিবাদী ও অবৈধ শাসনকে পরাস্ত করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের অবশ্যই বিজয়ী হতে হবে এবং সত্যিকার অর্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর সুইজারল্যান্ড সফর ‘অত্যন্ত রহস্যময়’: রিজভী
প্রধানমন্ত্রীর সুইজারল্যান্ড সফর ‘অত্যন্ত রহস্যময়’: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড সফর ছিল ‘অত্যন্ত রহস্যজনক’।
তিনি বলেন, ‘গুরুতর ডলার সংকটের মধ্যে, বিশাল দল নিয়ে শেখ হাসিনার ঘন ঘন বিদেশ সফর এবং তার সাম্প্রতিক সুইজারল্যান্ড সফর অত্যন্ত রহস্যজনক। দেশে ফিরে আসার পর তার বক্তব্যও রহস্যজনক।’
শনিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার সপরিবারে সুইজারল্যান্ড সফরের পরপরই দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা রাখা ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে রহস্য আরও গভীর হচ্ছে। এক বছরে টাকা তুলেছে কারা? এটি জনগণের মনে একটি বড় প্রশ্ন হয়ে উঠেছে, কারণ একতরফা অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতরা সবাই ক্ষমতাসীন দলের ঘনিষ্ঠ।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের লুটেরারা যে সুইস ব্যাংক থেকে ১০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা তুলেছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরও পড়ুন: আ. লীগ সরকার দেশে ও বিদেশে সমর্থন হারিয়েছে: ফখরুল
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিভিন্ন দেশ নিয়ে ‘বেপরোয়া’ মন্তব্য করে দেশের স্বার্থের ক্ষতি করছে।
রিজভী অভিযোগ করেন, সরকারের পতনের ক্ষণগণনা শুরু হওয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও দমন-পীড়ন করে সরকারবিরোধী দলকে দমন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।
তিনি বলেন, গত ১৯ মে থেকে সারাদেশে বিএনপির বিভিন্ন গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা চালিয়েছে এবং বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২১০টি মামলা করেছে।
এছাড়া বিএনপির এই নেতা বলেন, তাদের দলের প্রায় ৮৩০ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং প্রায় ৯ হাজার ৩০০ জনকে ‘মিথ্যা’ মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।
তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, যারা বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিচ্ছে তাদের নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, নির্বাচনে যেতে চাপ দেওয়া হচ্ছে: ফখরুল
সেন্ট মার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া কিছুই নয়: ফখরুল
আ. লীগ সরকার দেশে ও বিদেশে সমর্থন হারিয়েছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে দেশের জনগণ বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থন করে না।
তিনি বলেন, এটা এখন পরিষ্কার যে শেখ হাসিনার সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অতীতে সম্ভব ছিল না বা ভবিষ্যতেও সম্ভব হবে না।
শুক্রবার (২৩ জুন) রাজধানীতে রোডমার্চ কর্মসূচিতে বক্তৃতাকালে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনেও দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না: ফখরুল
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি (হাসিনা) বুঝতে পেরেছেন যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তার পক্ষে নেই এবং বাংলাদেশেও তার সমর্থন নেই।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ একটাই কথা বলছে যে তাকে এখনই যেতে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশ সম্পর্কে বিভিন্ন বেপরোয়া মন্তব্য করে দেশকে বিপদে ফেলেছেন।
আমেরিকা থেকে ফিরে আসার পর তিনি বলেছিলেন যে আমেরিকা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করতে চায়। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে এমন মন্তব্য আশা করি না।
চলমান লোডশেডিং ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে সরকারের পদত্যাগসহ বিএনপির ১০ দফা দাবিতে রোডমার্চ কর্মসূচির আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ঢাকা উত্তর মহানগর শাখা।
সংক্ষিপ্ত বক্তৃতা শেষে ফখরুল শ্রমিক দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে কর্মসূচি শুরু করেন।
বাড্ডার শাহজাদপুর এলাকার সুবাস্তু টাওয়ারের সামনে থেকে মালিবাগ আবুল হোটেলের দিকে মিছিল করেন শ্রমিক দলের শত শত নেতাকর্মী।
ফখরুল তার সরকারের অধীনে প্রশ্নাতীত স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করেন।
তিনি বলেন, তারা (সরকার) বলছে তাদের শাসনামলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই সরকারের অধীনে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনও সুষ্ঠু হবে না।
নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে সরকারকে সরে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
কারণ শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার জন্য সরকার জনগণের ভোটাধিকারসহ সবধরনের অধিকার সম্পূর্ণভাবে কেড়ে নিয়েছে।
ফখরুল আরও বলেন, সরকার জনগণের চলমান আন্দোলনকে ভয় পেয়ে বিরোধী দলের অনেক নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, নির্বাচনে যেতে চাপ দেওয়া হচ্ছে: ফখরুল
সেন্ট মার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া কিছুই নয়: ফখরুল
বিএনপি নেতাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, নির্বাচনে যেতে চাপ দেওয়া হচ্ছে: ফখরুল
দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে যেতে ‘সক্রিয়’ নেতাদের গোয়েন্দারা ‘হুমকি’ দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আমাদের যারা এক্টিভ পলিটিক্স এবং ইলেকশন করছেন বা করবেন… এই ধরনের নেতৃবৃন্দকে গোয়েন্দা তুলে নিয়ে যাচ্ছে এবং তাদেরকে বলা হচ্ছে যে, তোমরা নির্বাচন করবা যদি বিএনপি নির্বাচন না করে তাও।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
এসময় ফখরুল বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে (গণমাধ্যম) আজকে প্রকাশ্যেই বললাম। আই হেভ লট অব লিডারস যারা এ অভিযোগ করেছে। আমরা কোন দেশে বাস করছি? একটা মধ্যযুগীয় বর্বর যুগে আমরা বাস করছি। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য এমন কোনো হেন কোনো অন্যায় নাই যে তারা করছে না।’
‘ওরা দেশের ভূ-রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করছে’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কি রকম মরিয়া হয়ে গেছে যে, দেশের ক্ষতি করতেও তারা দ্বিধা করছে না। জানে যে, এই দেশের যে অবস্থা সেই দেশের আজকে অন্যান্য দেশ সম্পর্কে তারা যে কমেন্টস করছে, যে কথাগুলো বলছে এটা আমাদের দেশের ভূ-রাজনীতি ক্ষতিস্ত হতে পারে এবং আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি ইতোমধ্যে।’
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের কথা-বার্তাগুলো কোনো দায়িত্বহীন নেতা বলতে পারেন, বিশেষ করে সরকার চালাচ্ছেন যিনি তিনি বলতে পারেন… এটা আমরা কল্পনা করতে পারি না। যারা আমরা সুস্থ রাজনীতিতে বিশ্বাস করি আমরা মনে করি যে, তাদের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। তারা পরিস্কার বুঝতে পেরেছেন এবং আগে থেকেই বুঝতে পেরেছেন যে তাদেরকে জনগণ আর গ্রহণ করবে না। তাই কোনোভাবেই তারা নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা শুনছেন না, একেবারে ওদিকে যাচ্ছেনই না।’
আরও পড়ুন: সেন্ট মার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া কিছুই নয়: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘তাদের একটাই কথা হচ্ছে যে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে সেই সংবিধান কে কাটাছেড়া করেছে? সেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হলে তো অবশ্যই এয়োদশ সংশোধনীতে যে কেয়ারটেকার সরকার ছিলো সেটাই থাকবে এবং সেটা থাকা উচিত। সেটা ছিলো কনসেন্সাসের ভিত্তিতে একটা রাজনৈতিক একটা সিদ্ধান্ত একটা বন্দোবস্তো হয়েছিলো সব দলগুলো মিলে।সেখান থেকে সরে গিয়ে নিজেরা বেমালুম একতরফাভাবে শুধু নিজেদের ক্ষমতায় রাখার জন্য একাজগুলো করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘আর এখন যখন নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে, আবার একতরফা নির্বাচন করার জন্য, আবার ক্ষমতায় হাইব্রিড রেজিমের মতো চলে যাওয়ার জন্য প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। কিন্তু মানুষ তো ঘুরে দাঁড়িয়েছে। মানুষ প্রতিবাদ করছে, মানুষ দাঁড়িয়ে গেছে। এবার সেটা মানুষ করতে দেবে না।’
প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাষ্ট্রযন্ত্রের যে সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলো আছে, যারা আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত তাদের কর্মকর্তাদের আমরা অনুরোধ জানাতে চাই যে দয়া করে সাংবিধানিক কাজের সঙ্গে নিজেদের জড়িত করবেন না এবং জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। এদেশের মানুষ তারা বরাবরই যেকেনো অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, যেকোনো ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, যেকোনো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এবং তাদের অধিকার আদায় করে নিয়েছে। এখনো তারা অধিকার আদায় করে নেবে।’
তিনি বলেন, ‘জনগণের যেটা আশা-আকাংখা সেটা পুরণ করবার জন্যে আমরা আশা করব যারা প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারি যাদের দায়িত্বশীলতা শুধু জনগণে প্রতি, সেই জনগণের প্রতি তাদের দায়িত্বশীলতা পালন করবেন। এই ধরনের অন্যায়-বেআইনি নির্দেশের ফলে আপনারা এ ধরনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে ব্যাহত করবেন না। এটা সম্পূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা। জনগণ যেখানে তার অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছে, লড়াই করছে, তার সাংবিধানিক অধিকার ফিরে পেতে চাচ্ছে সেই অধিকারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে এভাবে বাধাগ্রস্ত করা, গ্রেপ্তার করা, নির্যাতন করা নাগরিকদেরকে… এটা ভয়াবহভাবে রাষ্ট্রদ্রোহীতার শামীল বলে আমরা মনে করি। দয়া করে এটা থেকে বিরত থাকুন, জনগণের সঙ্গে আসুন।’
‘সরকারের প্রতি’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনো সময় আছে আপনারা জনগনের ভাষা বুঝতে পেরে, জনগণের চাহিদা বুঝতে পেরে আপনারা পদত্যাগ করুন, একটা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন এবং সংসদ বিলুপ্ত করে একটা নতুন নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন।’
তিনি বলেন, ‘অন্যথায় দেশের মানুষ তাদের অধিকার আদায় কিভাবে করে নিতে হয় তারা তা জানে।’
আরও পড়ুন: বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনেও দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না: ফখরুল
গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে মহানগর দক্ষিণের নেতা-কর্মীদের ওপর মিথ্যা ও গায়েবী মামলা দায়েরের বিষয় নিয়ে কথা বলতে বিএনপি মহাসচিব এই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।
মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুব দলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সাবেক মহানগর সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর আলম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহিন, মহানগর দক্ষিন বিএনপির শেখ রবিউল আলম রবি, হারুনুর রশীদ হারুন, ওবায়দুর রহমান লিটন, আরিফুল ইসলাম আরিফসহ মহানগর দক্ষিনের গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তিসহ তাদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলাসমূহ প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে গায়েবী মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেই কাজটি এখন পুরোপুরিভাবে শুরু হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই আমাদের এক্টিভ নেতাদের জেলে আটকিয়ে রাখা।’
তিনি বলেন, ‘এসব নেতাদের জামিন হচ্ছে উচ্চ আদালত থেকে কিন্তু তাদেরকে আরেকটা মামলা দিয়ে আটকিয়ে রাখা হচ্ছে। একটা ভয়াবহ অবস্থা।’
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকন, আবদুস সাত্তার, লিটন মাহমুদ, হাজী মো. মনির হোসেন, আনম সাইফুল ইসলাম, মহানগর দক্ষিন যুব দলের সাঈদ হাসান মিন্টু, খন্দকার এনামুল হক এনাম, মহানগর দক্ষিন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাইদ মোরশেদ পাপ্পা, মহানগনর দক্ষিন কৃষক দলের হাজী মো. কামাল হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন বাদশা ও পূর্ব ছাত্র দলের মোহাম্মদ আল আমিন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি নেতারা ঐক্যবদ্ধ: নজরুল
সেন্ট মার্টিন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশল ছাড়া কিছুই নয়: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের দল সেন্টমার্টিন বিক্রির অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর ‘মিথ্যা’ মন্তব্য রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের কৌশল ছাড়া কিছুই নয়।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি প্রশ্ন তোলেন, বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ‘বানোয়াট’ বক্তব্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় পড়ে কি না।
বিএনপি নেতা বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কৌশল… ২০০১ সালের নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর তিনিও (হাসিনা) এমন মন্তব্য করেছিলেন। এটি একটি বানোয়াট গল্প যা সে কিছু সুবিধা পেতে তৈরি করেছে। কিন্তু তিনি বুঝতে পারেন না যে এটি বিপরীতমুখী হতে পারে।’
সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য এতটাই মরিয়া হয়ে উঠেছে যে দেশের ক্ষতি করতে দ্বিধা করছে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা জানে অন্য দেশ সম্পর্কে তারা কী মন্তব্য করছে তা ভূ-রাজনীতিতে আমাদের প্রভাবিত করতে পারে। আমরা ইতোমধ্যে প্রভাবিত হয়েছি। আমরা কল্পনাও করতে পারি না কোনো দায়িত্বশীল নেতা, বিশেষ করে যিনি সরকার পরিচালনা করেন, এমন মন্তব্য করতে পারেন।’
আরও পড়ুন: সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চায় বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী
‘তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই মন্তব্য করেছেন। তাই, আমি তাকে জিজ্ঞাসা করতে চাই যে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা যেতে পারে কি না। বিএনপির বিরুদ্ধে তার মিথ্যা অভিযোগ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় পড়ে কিনা? তার মিথ্যা ও বানোয়াট মন্তব্যের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করার সময় এসেছে?
তিনি বলেন, এর আগে বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘বিএনপি ২০০১ সালে গ্যাস বিক্রির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে। এখন তারা দেশ বিক্রি করতে চায়। নাকি তারা সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বিক্রি করে ক্ষমতায় আসতে চায়?
তিনি আরও বলেন, যদি তিনি(প্রধানমন্ত্রী) সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা দেশটি ইজারা দেন তাহলেও তার ক্ষমতায় থাকতে কোনো সমস্যা হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফখরুল বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ এবং দাবি করেন, বিএনপি এমন একটি দল যারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বদা আত্মত্যাগ করে আসছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দেশ বিক্রি করেছে নাকি দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়েছে এমন প্রশ্ন কেউ তুলতে পারেনি। তবে তাদের (আ.লীগ) বিরুদ্ধে এমন অনেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি নিজেও বলেছিলেন যে তারা তাদের (ভারত) সবকিছু দিয়েছে… আপনি (প্রধানমন্ত্রী) কেন মানুষকে এত বোকা মনে করেন? তার বোঝা উচিত যে তিনি এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে রেহাই পাবেন না।’
তিনি আরও বলেন, সেন্টমার্টিন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য বিপজ্জনক। ‘আপনি কি ভাবতে পারেন যে সেই দেশের (মার্কিন) সঙ্গে সম্পর্ক কোথায় দাঁড়াবে?
প্রধানমন্ত্রীর 'দায়িত্বজ্ঞানহীন' মন্তব্যের মাধ্যমে দেশে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য ভিত্তি তৈরির অভিযোগও তোলেন ফখরুল।
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন যে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না বলে নিশ্চিত হয়ে গেছেন বলে তিনি মন্তব্য করছেন কিনা।
বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ কোনোভাবেই একটি নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের কথা শুনতে চায় না কারণ দলটি বুঝতে পারে যে দেশের মানুষ আর মেনে নেবে না।
আরও পড়ুন: বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনেও দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না: ফখরুল
তিনি বলেন, ‘আমি তাকে (হাসিনা) অনুরোধ করতে চাই আপনি দয়া করে মানুষের ভাষা এবং তাদের দাবি, আশা এবং আকাঙ্ক্ষা বোঝার চেষ্টা করুন। মানুষ চায় আপনি এখনই পদত্যাগ করুন। কিছু সুবিধাভোগী এবং যারা অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছে তারা ছাড়া কেউই হাসিনাকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।’
বিএনপি ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য বিদেশিদের সাহায্য চাইছে এমন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই স্বীকার করেছেন যে তিনি বিএনপিকে নির্বাচনে নিয়ে ক্ষমতায় রাখতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সাহায্য চেয়েছেন।
তিনি বলেন, তাদের দল দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে এবং তারা বাংলাদেশের এক ইঞ্চি জমিও কোনো দেশকে নিতে দেওয়ার পক্ষে নয়। ‘আমরা আমাদের শেষ রক্ত বিন্দু বিসর্জন দিয়েও এই ধরনের যেকোনো পদক্ষেপকে রক্ষা করব। কিন্তু তারা (আ.লীগ) এ ধরনের কর্মকাণ্ড অনেক করেছে।
ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিএনপির কোনো চুক্তি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরোধী দল কোনো দেশের সঙ্গে কোনো চুক্তি করতে পারে না। ‘চুক্তিগুলো দেশ এবং সরকার থেকে সরকারের মধ্যে সই হয়।
আরও পড়ুন: বিদেশিরা আমাদের আলোচনার জন্য ডাকে, আমরা নিজেরা যাই না: ফখরুল
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে আগামী নির্বাচনেও দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আগামী জাতীয় নির্বাচনেও দেশের মানুষ ভোট দিতে পারবে না।
তিনি বলেন, সরকার আবারও সেভাবে নির্বাচন করার পরিকল্পনা করছে। আমাদের জনগণ তাদের ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে তা কখনোই সম্ভব হবে না।
মঙ্গলবার বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে বিএনপির মিডিয়া সেলের এক বছরপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, তাদের দল দীর্ঘদিন ধরে একটি নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছে, যাতে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে স্বাধীনভাবে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করতে পারে।
ফখরুল বলেন, যেসব রাজনৈতিক দল গণতান্ত্রিক রাজনীতি ও দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী এবং বাংলাদেশকে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়; তারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যুগপৎ আন্দোলন করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। বিএনপিকে ক্ষমতায় নিয়ে যাওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য নয়।’
আরও পড়ুন: বিদেশিরা আমাদের আলোচনার জন্য ডাকে, আমরা নিজেরা যাই না: ফখরুল
এই বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্রের অভাবই এখন বাংলাদেশে প্রধান সংকট। কারণ সরকার একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠা করে সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, মূলধারার গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে না বলে জনগণের হারানো অধিকার পুনরুদ্ধারে বিএনপি মিডিয়া সেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। ‘এটাও একটা বড় চ্যালেঞ্জ যে এদেশে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে ফেলা হয়েছে বিভিন্ন কৌশলে।’
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে।
তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে সাংবাদিকদের দমন ও হয়রানির অভিযোগও করেন।
মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, নিতাই রায় চৌধুরী, আবদুস সালাম, জয়নুল আবদিন ফারুক, ফরহাদ হালিম ডোনার, আবদুল হাই শিকদার, মজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, ফজলুল হক মিলন, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, আশরাফ উদ্দিন নিজান, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, মিডিয়া সেলের শাম্মী আখতার, মোর্শেদ হাসান খান, রুমিন ফারহানা, কাদের গনি চৌধুরী, ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী, মীর মোহাম্মদ হেলাল, মওদুদ হোসেন আলমগীর, আলী মাহমুদ, আতিকুর রহমান রুমন, শায়রুল কবির খানসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিতসক, আইনজীবীসহ পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মানি ও ডেনমার্কসহ কয়েকটি দেশের কূটনীতিকরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি নেতারা ঐক্যবদ্ধ: নজরুল
বিএনপি মাঠে নেমেছে, অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরবে : মির্জা ফখরুল
বিদেশিরা আমাদের আলোচনার জন্য ডাকে, আমরা নিজেরা যাই না: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তাদের দলের নেতারা বিদেশিদের কাছে যান না, তারা (বিদেশিরা) মাঝেমধ্যে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলার জন্য আমন্ত্রণ জানান।
তিনি বলেন, ‘তারা (আ.লীগ) বলে আমরা বিদেশিদের কাছে যাই। আমরা বিদেশিদের কাছে যাই না, বরং বিদেশিরা আমাদের মাঝে মাঝে ডাকে। তারা জানতে চায় দেশে কী হচ্ছে, আমরা কী করছি। যে দেশগুলো গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদের জন্য এই বিষয়গুলো জানা স্বাভাবিক।’
রবিবার একটি বইয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় ফখরুল এ মন্তব্য করেন।
এসময় বিরোধী দলের নেতাদের বিদেশিদের কাছে নালিশ করার বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলের অভিযোগকে প্রত্যাখান করেনি বিএনপির এই নেতা।
তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষিত নীতি হচ্ছে, পৃথিবীতে তিনি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চান। যেখানে গণতন্ত্র নেই, সেখানে তারা সে কথা বলে দেন, তাদের (মার্কিন) গণতন্ত্র সম্মেলনে ডাকেন না। আবার তাদের (যেসব দেশে গণতন্ত্র নেই) স্যাংশন না কি সব দেন।’
বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরে ফখরুল বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ‘মানুষকে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না বলে তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।’
তিনি বলেন, সরকার দল গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রেখে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা যাবে না। ‘তারা (আ.লীগ নেতা) বারবার ভালো নির্বাচন করার কথা বলছে। কিন্তু জনগণ কীভাবে বিশ্বাস করবে যে তারা ক্ষমতায় থেকে ভালো নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে, কারণ তারা অতীতে কখনও তা করেনি।’
বিএনপি নেতা বলেন, বারবার মানুষকে বোকা বানিয়ে ক্ষমতায় থাকা সম্ভব নয়। ‘আপনারা মানুষকে একবার বা দুবার ধোঁকা দিতে পারেন, এটি বারবার ঘটবে না। এবার মানুষ জেড়ে উঠেছে।’
ফখরুল অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দল গত ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশের জনগণের ওপর দমন-পীড়নের স্টিমরোলার চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমি আজ (রবিবার) পত্রিকায় পড়েছি যে একজনকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে ডিবি (পুলিশের গোয়েন্দা শাখা)… সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমকে জামালপুরে আওয়ামী লীগের সবাই পিটিয়ে হত্যা করেছে।’
দুই দিন আগে চট্টগ্রাম নগরীতে বিএনপির যুব সমাবেশে যোগ দিয়ে একটি অটোরিকশায় করে বাড়ি ফেরার সময় মিরসরাইয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ ক্যাডাররা এক নারী ছাত্রদল নেত্রীকে তুলে নিয়ে যায় বলেও অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের লোকজন তাকে একটি বাড়িতে নিয়ে যায় এবং সেখানে কয়েক ঘণ্টা ধরে নির্যাতন ও লাঞ্ছিত করে।
তিনি আরও বলেন, মেয়েটির মা তাকে উদ্ধার করতে গেলে নির্যাতকরা তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে এবং পরদিন তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়। ‘এটিই বিচার ব্যবস্থা যেখানে একজন নির্যাতিত ও বেআইনিভাবে গ্রেপ্তার করা একটা মেয়েকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আপনারা কীভাবে এই দেশে গণতন্ত্র এবং আপনার অধিকারের কথা বলবেন?’
পরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী প্রকাশনা সংস্থা আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জাইউর রহমান, চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন ফখরুল।
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঁচদিন চিকিৎসা শেষে শনিবার সন্ধ্যায় গুলশানের বাসায় ফিরেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া।
তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ম্যাডামকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার রিপোর্ট পর্যালোচনা করে বোর্ড এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখন তাকে বাড়িতেই চিকিৎসা দেওয়া হবে।’
আরও পড়ুন: গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন খালেদা জিয়া: ফখরুল
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন সন্ধ্যা ৬টা ৩৫ মিনিটে হাসপাতাল ত্যাগ করেন এবং সন্ধ্যা ৭টা ৫০ মিনিটে বাসায় পৌঁছান।’
হঠাৎ জ্বর ও পেটব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে মঙ্গলবার ভোরে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকার হাসপাতালে তার মেডিকেল বোর্ডের নিবিড় তত্ত্বাবধানে তার স্বাস্থ্যের বিভিন্ন পরীক্ষা করানো হয়।
আরও পড়ুন: ৫ দিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া
৭৮ বছর বয়সী খালেদা দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, হার্ট ও চোখের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। ২০২০ সালে তার শর্তসাপেক্ষে মুক্তির পর থেকে বিএনপি নেত্রী হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি নিম্ন আদালত তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করায় খালেদাকে পুরান ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, একই বছর আরেকটি দুর্নীতির মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে সরকার ২০২০ সালের ২৫ মার্চ তার সাজা স্থগিত করে একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে সাময়িকভাবে কারাগার থেকে মুক্তি দেয়, এই শর্তে যে তিনি তার গুলশানের বাড়িতে থাকবেন এবং দেশ ছেড়ে যাবেন না।
আরও পড়ুন: খালেদার অবস্থা এখন স্থিতিশীল: ডা. জাহিদ
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপি নেতারা ঐক্যবদ্ধ: নজরুল
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে ‘ মিথ্যা নির্ভর’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন,‘শুধু অনেক নেতা কেন? আমরা সবাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চাই, কিন্তু এই সরকারের অধীনে নয়, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে।’
এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা বলেন, তাদের দল দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন পরিষদ ও সিটি নির্বাচনসহ স্থানীয় সরকার নির্বাচন বর্জন করে আসছে এবং নির্বাচনে যোগদানকারী কয়েকজন নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
নজরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বিএনপি ও এর নেতাদের নিয়ে বেপরোয়া মন্তব্য করে নিজেদের খারাপ রুচির পরিচয় দিচ্ছেন। ‘আমরা আরও শুনেছি যে আওয়ামী লীগের অনেক লোক সামনে খারাপ সময়ের ভয়ে দেশ ছাড়তে চায়। কিন্তু এটা কি বক্তব্য দেওয়ার ব্যাপার? আমরা এমন মন্তব্য করি না কারণ আমাদের অবস্থান খুব নীচু নয়।’
আরও পড়ুন: অর্থনীতি মর্যাদাপূর্ণ অবস্থায় নেই, দেশ চালাতে সর্বত্র বৈদেশিক ঋণ খুঁজছে সরকার: মোশাররফ
শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল নেতা মাইনুল আহসান পিংকুর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে শহীদ পিংকু স্মৃতি পরিষদ।
নজরুল বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল এখন বিশ্বাস করে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়।
তিনি বলেন, এমনকি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরও বলে আসছেন বর্তমান সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। ১৪ দলীয় জোটে যারা আছেন তাদের অনেকেই একই কথা বলছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা এখন জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিএনপি মাঠে নেমেছে, অধিকার আদায় করেই ঘরে ফিরবে : মির্জা ফখরুল
বিএনপি নেতা আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্যভাবে করতে না পারলে জাতীয় নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে। তাই আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হতে হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান ‘দখলকারী’ শাসনের পতন নিশ্চিত করে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তাদের দলের আন্দোলন সফল হবে।
বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এত অপকর্ম, নির্যাতন, নিপীড়ন, দুর্নীতি ও লুণ্ঠন করেছে যে এখন ক্ষমতা ছাড়তে ভয় পাচ্ছে। ‘তারা এখন ভয় পায় যে তারা ক্ষমতা হারানোর পরে জনগণের ক্রোধ এড়াতে পারবে না কারণ জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না।’
আরও পড়ুন: ফের প্রধানমন্ত্রীকে ‘হত্যার হুমকি’: সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার স্লোগানের ভিডিওতে আ.লীগের নিন্দা
ফের প্রধানমন্ত্রীকে ‘হত্যার হুমকি’: সিরাজগঞ্জে বিএনপি নেতার স্লোগানের ভিডিওতে আ.লীগের নিন্দা
রাজশাহীর এক বিএনপি নেতা প্রকাশ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যা’ করার হুমকি দেওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেই, বিএনপির আরেক নেতা তাকে (শেখ হাসিনাকে) খুন করার আহ্বান জানিয়ে স্লোগান দেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, এসময় বিএনপির শত শত সমর্থক ‘হাসিনাকে হত্যা করার জন্য লড়াই’ করার আহ্বান জানিয়ে দেওয়া স্লোগান প্রতিধ্বনিত করেছে।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে, বিএনপির সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান রঞ্জনকে স্লোগান দিতে শোনা যায়: ‘এই লড়াই হাসিনা মারার, এই লড়াইয়ে জিততে হবে’।
ভিডিওটিতে শুক্রবার সিরাজগঞ্জে এক প্রতিবাদ সমাবেশে রাশেদুলের সঙ্গে মঞ্চে বিএনপির সিনিয়র নেতাদেরও দেখা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে ভিডিও’র সঙ্গে পোস্টে লেখা হয়েছে: ‘আমরা সমাবেশ থেকে হুমকি দেওয়ার এ ধরনের কাজের তীব্র নিন্দা জানাই এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।’
ভিডিওটি ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনার সূত্রপাত করেছে এবং অনেকেই এর স্লোগানের সমালোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: আরও ৩ দিনের রিমান্ডে বিএনপি নেতা চাঁদ
আওয়ামী লীগের এক সমাবেশে ২০০৪ সালের জঘন্য গ্রেনেড হামলাসহ শেখ হাসিনার জীবনের ওপর করা ১৯টি প্রচেষ্টাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এ ধরনের ‘মৃত্যুর হুমকি’ আমলে নিচ্ছেন, যাতে প্রায় ২৪ নেতাকর্মী নিহত হয়।
গ্রেনেড হামলার পরিকল্পনায় জড়িত থাকার দায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
গত বছর বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক দলের এক নেতার প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া একই রকম ‘হুমকি’ সোশ্যাল মিডিয়াতে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দেয়।
ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিওতে এক বক্তৃতায় আবদুল কাদের ভূঁইয়া নামের ওই নেতা জনসমক্ষে বলেন, ‘আরেকটি ১৯৭৫’ পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানাতে শোনা যায়; যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যদের একদল অসন্তুষ্ট সেনা কর্মকর্তাদের দ্বারা নির্মম গণহত্যার শিকার হন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: বিএনপি নেতা চাঁদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা আদালতে মামলা
প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি: সেই বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মাগুরায় আরেকটি মামলা