বিএনপি
রাজশাহীতে বিএনপির কার্যালয় ঘিরে রেখেছে পুলিশ, পদযাত্রা পণ্ড
রাজশাহীতে বিএনপির কার্যালয় ঘিরে রেখেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা। নগরীর মালোপাড়ায় অবস্থিত বিএনপির ওই কার্যালয়ের দিক দিয়ে কোনো ধরনের যানবহন চলাচল করতেও দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া কোনও জমায়েত করতেও দেওয়া হচ্ছে না।
সিটি নির্বাচন উপলক্ষে পূর্বানুমতি ছাড়া একসঙ্গে পাঁচ জনের বেশি মানুষ জমায়েত হতে পারবে না। এ বিধিনিষেধের কারণে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২৩ মে) বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি ঠেকাতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এতে বিএনপির ঘোষিত পদযাত্রা কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: রাসিক নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশ নিলে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে: মিনু
এদিকে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের সিডিউল ঘোষিত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে রাজশাহী মহানগরীতে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখা জরুরি। এই পরিস্থিতিতে অনুনমোদিত যেকোনো ধরনের পদযাত্রায় রাজশাহী মহানগরীতে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির সম্ভাবনা থাকে। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে ও জননিরাপত্তা প্রতিবিধানে মঙ্গলবার রাজশাহী মহানগরী আইন, ১৯৯২-এর ধারা-৩০ মোতাবেক আরএমপির পুলিশ কমিশনার রাজশাহী মহানগরীতে সব ধরনের পদযাত্রা কর্মসূচি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছেন।
মির্জা ফখরুল আবারও করোনায় আক্রান্ত
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তৃতীয়বারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মঙ্গলবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তিনি স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরে সর্দি-কাশির সমস্যায় ভুগছিলেন বলে বিএনপি মহাসচিবের কোভিড টেস্ট করা হয় এবং ফলাফল পজিটিভ আসে।
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুল হাসপাতালে ভর্তি
তবে ফখরুলের অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানান জাহিদ।
তিনি বলেন, বিএনপির এই নেতার স্ত্রী রাহাত আরা বেগমেরও কোভিড টেস্ট করা হয় এবং তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, মির্জা ফখরুল ইতোমধ্যে করোনার ভ্যাকসিনের চারটি ডোজ নিয়েছেন।
২০২১ সালের ১১ জানুয়ারি ফখরুল ও তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম প্রথমবারের মতো করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হন।
আরও পড়ুন: জেএসডি সভাপতি আবদুর রব হাসপাতালে ভর্তি
বাংলাদেশ বিমানের এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের মূল কারণ কমিশন: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এয়ারবাস কেনার সিদ্ধান্তের মূল কারণ কমিশন। সোমবার (২২ মে) রাজধানীর একটি হোটেলে শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, আমি বিমান মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছি। আমি জানি এয়ারবাস কেন কিনতে চায়। কারণ বোয়িং কমিশন দেয় না, এয়ারবাস দেয়। আমি চ্যালেঞ্জ করছি, এয়ারবাস কমিশন দেয় কিন্তু বোয়িং কোনও কমিশন দেয় না। তাই বোয়িং বাদ দিয়ে এয়ারবাস কেনা হচ্ছে।
এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তৃতাকালে বিএনপি নেতা বলেন, বাংলাদেশ বিমান এয়ারবাস থেকে নতুন উড়োজাহাজ কিনতে যাচ্ছে, অথচ বাংলাদেশ বিমান এমনিতে চলতে পারে না, পয়সা নেই। লস হতে হতে এমন জায়গায় গিয়ে পৌঁছেছে যে বিমান চালানোর কোনও উপায় নেই।
বনানীর গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলের সভাকক্ষে এ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এ্যাব) ‘দেশের জ্বালানি খাতে অমানিশা: লুটপাট আর অরাজগতার চালচিত্র’-শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সম্প্রতি এক বৈঠকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালকরা জাতীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের বিদ্যমান বহরের আকার বাড়াতে এয়ারবাস থেকে নতুন ১০টি আধুনিক বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেন।
খালেদা জিয়ার শেষ মন্ত্রিসভার সময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী থাকা ফখরুল এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি দেখলাম বিমানের এমডি বলছেন, দেশের স্বার্থ চিন্তা করে কেনা হচ্ছে। দেশের স্বার্থ চিন্তা করলে যেগুলো আছে সেগুলোকে এফিশিয়েন্টলি চালানোর চেষ্টা করেন। সেগুলো তো করছে না।
বিএনপি নেতা বলেন, বিমান বাংলাদেশের বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি ভুল হ্যান্ডলিং-এর কারণে অন্য একটি উড়োজাহাজের ধাক্কায় এক বছর বা দুই বছর নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে। ‘এটাই বাস্তবতা।’
তিনি আরও বলেন, আজকে সরকারের একটাই লক্ষ্য কিভাবে চুরি করবে, কিভাবে দুর্নীতি করবে। তারা গোটা বাংলাদেশকে লুট করে শেষ করে দিয়েছে। আরও পাঁচ বছর লুট করতে চায়। সেজন্য এখন তারা ভোট চাইতে শুরু করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের যে বডি কেমিস্ট্রি সেই কেমেস্ট্রি থেকে দুইটা জিনিস বেরিয়ে আসে।
একটা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ মানে হচ্ছে সন্ত্রাস আর আওয়ামী লীগ মানে হচ্ছে দুর্নীতিবাজ।
আন্দোলন দমন করতে সরকার সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সোমবার অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনকে দমন করতে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের নেতারা একটা কথাই বারবার বলছেন অগ্নিসংযোগ হবে, বিএনপি আবার আগুন নিয়ে খেলবে। তবে এটি একটি পরিকল্পিত বিবৃতি এবং তারা নিজেরাই এই ধরনের কার্যক্রম চালাতে চলেছে।’
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
সোমবার দুপুরে এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তৃতাকালে এই বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ক্ষমতাসীন দল ইতোমধ্যে সহিংসতার কথা বলে কিছুটা সাফল্য অর্জন করেছে, কারণ নির্বাচন ঘনিয়ে আসায় বিভিন্ন দূতাবাস তাদের নাগরিকদের জন্য সংঘাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে সতর্কতা জারি করছে।
ফখরুল বলেন, সরকার সহিংসতা ছড়ানোর অংশ হিসেবে খুলনা, রাজবাড়ী, নেত্রকোনা ও পটুয়াখালীতে বিএনপির সাম্প্রতিক শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। ‘তারা (আ.লীগ) এটা করছে কারণ তারা মনে করে সহিংসতাই প্রতিবাদ থামানোর একমাত্র উপায়। তারা সহিংসতা সৃষ্টি করে জনগণের দাবি চাপা দিতে চায়।’
বনানীর গোল্ডেন টিউলিপ হোটেলের সভাকক্ষে এ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (এ্যাব) ‘দেশের জ্বালানি খাতে অমানিশা: লুটপাট আর অরাজগতার চালচিত্র’-শীর্ষক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ফখরুল বলেন, তাদের দল বর্তমান সরকারকে হটিয়ে গণমুখী সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করছে। ‘অনেক দল আমাদের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করছে... যে আন্দোলন শুরু হয়েছে তা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছাতে হবে।’
আরও পড়ুন: আসন্ন সিটি নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই: ফখরুল
তিনি সকল পেশাজীবীদের নিজেদের মধ্যে মতভেদ ও ভুল বোঝাবুঝি ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ আরও পাঁচ বছর ‘লুণ্ঠন’ চালিয়ে যেতে আবারও ভোট চাওয়া শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দল বিরোধীদেরও তাদের অধীনে ভোটে অংশ নেওয়ার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা ছাড়াই আহ্বান জানাচ্ছে। তারা (সরকার) ইতোমধ্যেই আমাদের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার, নির্যাতন ও হয়রানি এবং মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর খেলা শুরু করেছে।
ফখরুল হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, বাংলাদেশের জনগণ আর কোনো ‘সাজানো’ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এবং তারা এই ফাঁদে পা দেবে না।
তিনি বলেন, তাদের দল সহিংসতা ও সংঘর্ষে জড়াতে চায় না, কারণ তাদের লক্ষ্য শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায় করা।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘নির্দলীয় (নির্বাচনকালীন) সরকারের জন্য আমাদের দাবি মেনে নিন এবং তারপরে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।’
আরও পড়ুন: দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
রাসিক নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশ নিলে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে: মিনু
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান মিনু বলেছেন, রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে বিএনপির কেউ অংশ নিলে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হবে। তাকে আর বিএনপির রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া হবে না।
রবিবার (২১ মে) দুপুরে নগরের মালোপাড়ায় মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ'লীগ মনোনয়ন প্রত্যাশীদের আয়ের উৎস দেখার দাবি রাসিক মেয়রের
দলের নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে মহানগর বিএনপি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মিজানুর রহমান মিনু।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ও নির্বাচন কমিশনের অধীনে কোন নির্বাচন নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়। এই নির্বাচন ভোট ডাকাতি ও প্রহসনের নির্বাচন হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারের পতন এবং এই নির্বাচন কমিশন ভেঙে দিয়ে সকল দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে নির্বাচন নিশ্চিত করা হবে।
তিনি আরও বলেন, গত ১৯ মে পুঠিয়া উপজেলার শিবপুরের জনসভা শেষ করে বাড়িতে ফেরার পথে বিএনপি ও সহযোগী সংঠনের ১১ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়। এভাবে বিনা কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে।
গ্রেপ্তার সকল নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির ত্রাণ ও পুণর্বাসন বিষয়ক সহ-সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন, রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ইশা, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাইদ চাঁদ, নগর বিএনপির সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ প্রমুখ।
আরও পড়ুন: কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাসিক কর্মকর্তা কারাগারে
চট্টগ্রামে স্ত্রীর মামলায় আইনজীবী কারাগারে
আসন্ন সিটি নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে সিটি নির্বাচনে জনগণের কোনো আগ্রহ নেই।
বিএনপি কোনো প্রার্থী না দিলেও আগামী পাঁচ সিটি করপোরেশনে সাজানো নির্বাচন হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
রবিবার (২১ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) প্রতিষ্ঠাতা শফিউল আলম প্রধানের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দলটির একটি অংশের আয়োজিত অনুষ্ঠানে ফখরুল এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘তারা (সরকার) রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন সরকারের নিয়ন্ত্রণে। দেশে নির্বাচন নিয়ে জনগণ আগ্রহী নয়।’
ফখরুল বলেন, ‘নির্বাচন ব্যবস্থাকে তারা (সরকার) ধ্বংস করে দিয়েছে। দেখেন আপনারা আজ নির্বাচনের অবস্থা কেমন? এই যে মেয়র ইলেকশন হচ্ছে, বেশির ভাগ সিটি করপোরেশনে বিরোধী দল কোনো প্রার্থী দিচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: ‘স্বৈরাচারের’ বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শ্রমিকদের প্রতি মির্জা ফখরুলের আহ্বান
তিনি বলেন, সিলেটে অত্যন্ত জনপ্রিয় মানুষ আরিফ (আরিফুল হক চৌধুরী) দুইবার মেয়র হয়েছেন এবং সিলেটের মানুষ তাকে আবারও মেয়র হিসেবে চায়। সেই আরিফ শনিবার জনসভা করে বলেছেন যে এ নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না, নির্বাচনই হবে না। তারা ব্লু প্রিন্ট করে ফেলেছে। এ নির্বাচনে যাওয়ার অর্থই হয় না।
তিনি বলেন, সিলেট নগরীর জনগণ তাদের প্রিয় নেতা নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় চোখের পানি ফেলেছে। তিনি (আরিফ) স্পষ্টভাবে বলেছেন, এই নির্বাচন অর্থহীন হবে এবং এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না।
তিনি আরও বলেছেন, আমিও মনে করি এ নির্বাচন অর্থহীন হবে এবং এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, সব জায়গায় একই অবস্থা। আজ প্রতিটি নির্বাচনকে একই অবস্থার দিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুরো নির্বাচন ব্যবস্থা ও প্রতিষ্ঠানটাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে।
তিনি বলেন, এটাই হচ্ছে এ ধরনের কর্তৃত্ববাদী যারা, এ ধরনের ফ্যাসিবাদী যারা তাদের একটা হাতিয়ার। নির্বাচন একটা টুল, দেখাবে নির্বাচন হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, সুতরাং আমরা খুব পরিষ্কার, স্পষ্ট ও দৃঢ়ভাবে বলছি যে এ সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। শেখ হাসিনা সরকার থাকলে কোনো নির্বাচন হবে না। একটা নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে এমন একটা অবস্থা হয়েছে, তাদের যে জোট আছে, ১৪ দলের এক শরিক দল বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির আমাদের অত্যন্ত সম্মানিত শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব রাশেদ খান মেনন, তিনি কিছুদিন আগে বলেছেন, পরিকল্পিত নির্বাচন চাই না। ম্যাসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার যে আওয়ামী লীগ পরিকল্পিত নির্বাচন করে, সেই নির্বাচন তিনি চান না।
আরেকজন প্রতিমন্ত্রী বলেছেন যে এখানে মন্ত্রীরাই সিন্ডিকেট তৈরি করে, তারাই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে। এসব আমার কথা নয়, সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন।
এছাড়া রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।
আরও পড়ুন: দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
‘খেলাপী ঋণ প্রসঙ্গে’
মির্জা ফখরুল বলেন, পত্রিকায় আজ এসেছে যে ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তার রিপোর্টে বলছে বাংলাদেশ ইজ চ্যাম্পিয়ান অব ডিফল্ট লোনস, এই যে খেলাপি ঋণ, এটাতে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ান হয়ে গেছে। এক নম্বরে শ্রীলঙ্কা ছিল, শ্রীলঙ্কাকে ছাড়িয়ে গেছে বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ কেন হবে না? যারা ঋণ নেয়, শোধ করে না। তারা তো তাদের অ্যাডভাইজার মন্ত্রী, আমি নাম বলব না। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা ঋণ নিয়ে রিসিডিউল করছে বছরের পর বছর ধরে।
এই বিএনপি নেতা বলেন, আর আমাদের ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা যদি একটা-দুইটা ডিফল্ট হয় তো তার বিরুদ্ধে মামলা হয়ে যাচ্ছে, তাকে কারাগারে নিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এই সরকারের অপকর্ম বলে শেষ করা যাবে না। এনাফ ইজ এনাফ। এই সরকার যদি একটা মুহূর্ত আর দেশের পরিচালনায় থাকে, দেশ আরও খারাপের দিকে যাবে।
২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যে কমিটমেন্টগুলো করেছিলো, জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি করেছিলো প্রত্যকটা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছে। আওয়ামী লীগ হচ্ছে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দল, আওয়ামী লীগ হচ্ছে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর দল, আওয়ামী লীগ হচ্ছে স্বাধীনতার বিরুদ্ধের দল।
আরও পড়ুন: সরকার মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে: মির্জা ফখরুল
‘অনেক খেলা হবে’
মির্জা ফখরুল বলেন, এখানে অনেক খেলা হচ্ছে, খেলা হবে। এই যে, উনি (ওবায়দুল কাদের) তো প্রায় বলেন খেলা হবে। সেটা হবে। অনেক চেষ্টা হবে আমাদের মধ্যে ভুলবুঝাবুঝি সৃষ্টি করানোর।
তিনি বলেন, যারা দেশপ্রেমিক আছেন তারা কখনো ভুল বুঝবেন না। আজকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য নিয়ে আমরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, আমাদের নেতা তারেক রহমান সাহেবকে দেশে ফিরিয়ে আনা, গণতন্ত্রের মুক্তি, বাংলাদেশের মুক্তি, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং একটা সাম্যের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে আমরা এক ও অনঢ় হয়ে থাকব।
এছাড়া এই আন্দোলন আমাদের শুরু হয়ে গেছে। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায় যাওয়ার জন্য আমাদের সবাইকে সর্বশক্তি দিয়ে নামতে হবে একাত্তর সালে যেভাবে আমরা নেমেছিলাম আজকেও একইভাবে আন্দোলনে নেমে শান্তিপূর্ণভাবে এই সরকারকে সরিয়ে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে একটা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যবস্থা আমাদেরকেই করতে হবে।
তিনি বলেন, এই কাজটা বাইর থেকে কেউ করে দেবে না। অনেকে অপেক্ষায় আছেন। অপেক্ষায় থাকার কোনো কারণ নাই। আপনাকে করতে হবে, আমাদের সবাইকে করতে হবে। এটা প্রত্যেকের দায়িত্ব বিশেষ করে তরুন সমাজের।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিচার বিভাগের কি অবস্থা, তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। আপনি হাইকোর্ট থেকে জামিন নিচ্ছে, নিম্ন আদালতে গেলে সেই জামিন ক্যানসেল করে কারাগারে ঢুকিয়ে দিচ্ছেন।
আর গায়েবি মামলার কথা আমরা বলতে বলতে হয়রান হয়ে গেছি, আর বলতে ইচ্ছা করে না।
তিনি বলেন, খুলনাতে দেখেন একটা সভায় গিয়ে কিভাবে পুলিশ সেখানে আক্রমণ করেছে, ন্যাক্কারজনক। সেখানে অসংখ্য মানুষকে গুলিবিদ্ধ করেছে, আহত করেছে এবং হয়রানি করেছে।
এছাড়া এক হাজার ৩০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন মির্জা ফখরুলের
আরও কঠোর কর্মসূচি দিয়ে সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার করার ইঙ্গিত মোশাররফের
বিএনপির সিনিয়র নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে আগামী দিনে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছেন এবং আন্দোলন সফল করতে দলের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
শনিবার রাজধানীর এক সমাবেশে বক্তৃতায় তিনি জনগণের ওপর গুলি না চালাতে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা না দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক করে দেন।
এই স্বৈরাচারী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য আগামী দিনে বৃহত্তর আন্দোলনে অংশ নিতে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে আমাদের কঠোর কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান এই বিএনপি নেতা।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মোশাররফ বলেন, ‘দুঃশাসন’, লুণ্ঠন ও দমন-পীড়নে দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, দেশের জনগণ বর্তমান সরকারকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
'মিথ্যা মামলায়' দলীয় নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানি, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য দলটির দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর কমলাপুর এলাকার পীর জঙ্গী মাজার সড়কে সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপির ঢাকা দক্ষিণ সিটি শাখা।
বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে 'গায়েবি' মামলা দায়ের, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ঘন ঘন বিদ্যুত বিপর্যয় এবং আওয়ামী লীগ সরকারের 'সবক্ষেত্রে' দুর্নীতির বিরুদ্ধে দলের প্রতিবাদ হিসেবে আরও ২০টি নগর ও জেলায শহরে সমাবেশ করেছে বিএনপি।
শুক্রবার খুলনায় এবং শনিবার লালমনিরহাট, রাজবাড়ী ও পটুয়াখালীতে বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ হামলা ও গুলি চালায় বলে অভিযোগ করেন মোশাররফ।
এই বিএনপি নেতা বলেন, ‘আমরা প্রশাসন এবং বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী বাহিনীকে মনে করিয়ে দিতে চাই তারা প্রজাতন্ত্রের সেবক…আপনাদের জনগণের সেবা করার কথা। কিন্তু আপনারা এখন দেশের জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে গুলি চালাচ্ছেন।’
তিনি জনগণের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের বেআইনি নির্দেশ পালন না করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
মোশাররফ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না থাকলে আপনাদের অনেকের (আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) অনেক সমস্যায় পড়ার আশংকা আছে। তাই আমরা বলছি আপনারা এখনই নিজেদের সংশোধন করুন। আপনারা এখন থেকে জনগণের পক্ষে দাঁড়ান। ভবিষ্যতে যে সরকার আসবে তারা ক্ষমা করবে না।’
তিনি বলেন, যারা জনগণের বিরুদ্ধে গিয়ে তাদের ওপর গুলি চালাবে এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দেবে, দেশের জনগণ ও তাদের সরকার তাদের ক্ষমা করবে না।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় বসতে গণতন্ত্রকে বিলুপ্ত করে জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন এই বিএনপি নেতা।
তিনি বলেন, সরকার ব্যাপক লুটপাট ও দুর্নীতি করে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ‘আওয়ামী লীগ তাদের ব্যবসায়িক সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে দেশবাসীকে চরম সমস্যায় ফেলেছে।’
মোশাররফ বলেন, সরকার রাজনীতিকরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগকে ধ্বংস করেছে বলে দেশে আইনের শাসন নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ অর্থনীতি ও গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, তারা তা পুনরুদ্ধার করতে পারবে না। ‘তাই মানুষ এখন এই সরকারের পতন দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। ‘যারা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়ে নিজেদের পকেট ভারী করেছে তারা দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।’
তিনি বলেন, অতীতের মতো বর্তমান স্বৈরাচারী সরকারকে উচ্ছেদ করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা বিএনপির দায়িত্ব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ক্ষমতাসীনরা হামলা করলে তাদের দলও পাল্টা হামলা করবে।
তিনি ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
বিএনপির এই নেতা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের দমন ও তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিন্দা করেন।
তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘যারা মানুষের ওপর গুলি চালাচ্ছে তাদের মনে রাখতে হবে যে সবসময় আপনার ইউনিফর্ম থাকবে না। যারা বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও হত্যা করছে, তাদের রেহাই দেওয়া হবে না।’
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
রাষ্ট্রদূতদের ‘অতিরিক্ত পুলিশ এসকর্ট’ প্রত্যাহার সরকারের ‘চরম দায়িত্বহীনতা’: ফখরুল
দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ: মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দাবি একটাই, হাসিনার পদত্যাগ। ফয়সালা হবে রাজপথে। সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে দিতে হবে। যেই বাংলাদেশ আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে পেয়েছি, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। শনিবার (২০ মে) বিকালে লালমনিরহাট কালেক্টরেট মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় মির্জা ফখরুল বলেন, ভোট ডাকাত সরকার ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াতে চেয়ে পারেনি, সারের দাম কয়েক দফায় কয়েকগুণ বাড়িয়েছে, আজ মানুষ পেঁয়াজ কিনতে পারছে না, ডিম কিনতে পারছে না। দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে আওয়ামী লীগ দেশের সম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে।
তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রায় ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। সাবেক এমপিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গুম করেছে। ক্রসফায়ারের নামে নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। অসংখ্য শিশু বাবার জন্য, অসংখ্য স্ত্রী তার স্বামীর জন্য, অনেক মা তার সন্তানের আগমনের প্রতিক্ষা করছে। শেখ হাসিনা সরকার আমাদের এমন দেশ উপহার দিয়েছে।
আরও পড়ুন: 'আপনার সময় শেষ': সরকারের প্রতি ফখরুল
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়নের কথা বলে। সে উন্নয়ন কোথায়? উন্নয়ন তাদের ঘরে। যাদের সাইকেল ছিল না সেই নেতা এখন গাড়ি চালায়। ভূমিহীন নেতারা এখন অসংখ্য আলিসান বাড়ি-গাড়ির মালিক। এই সব তাদের উন্নয়ন। দেশকে ধ্বংস করে নিজেদের উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। আমরা বলেছি যে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। এজন্য শেখ হাসিনা সরকারকে আগে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায় সরকার গঠন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। নতুন আইন করেছে, নির্বাচন কমিশন কোনো নির্বাচন বাতিল করতে পারবে না। এমন বানানো নির্বাচন কমিশন আমরা চাই না।
ফখরুল বলেন, যারা আমাদের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছে। তাদের আর ক্ষমতায় থাকার সময় নেই। তাদেরকে বিতাড়িত করার সময় এসেছে। ‘কোনঠে বাহে জাগো সবাই’। দাবি একটাই, শেখ হাসিনার পদত্যাগ।
সরকার পতনের আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
বেগম কালেদা জিয়ার শর্তহীন মুক্তি, দ্রব্যমুল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ও ১০ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত জনসভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজিব প্রধান, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রোকন উদ্দিন বাবুল, যুগ্ন সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রদূতদের ‘অতিরিক্ত পুলিশ এসকর্ট’ প্রত্যাহার সরকারের ‘চরম দায়িত্বহীনতা’: ফখরুল
এটা সরকারের সুদূরপ্রসারী রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র: খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রসঙ্গে ফখরুল
সিলেট সিটি নির্বাচন: দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে সরে দাঁড়ালেন আরিফ
আগামী ২১ জুন অনুষ্ঠিতব্য সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী।
শনিবার (২০ মে) বিকাল ৩টায় নগরীর ঐতিহাসিক রেজিস্ট্রারি মাঠে আয়োজিত এক নাগরিক সভায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
জনসভায় আরিফ বলেন, ‘আমি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে বিএনপির রাজনীতি শুরু করি। আমার জীবন থাকতে এই দলের ক্ষতি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেবো না। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন করার পরিবেশ নেই। বিশেষ করে ইভিএম নিয়ে নগরের মানুষজন জানে না। এটা ভোট কারচুপির মহাআয়োজন। ইভিএমে উন্নত দেশগুলোও ভোট করছেনা। ইভিএমে আপনারা এক মার্কায় ভোট দিবেন, দেখবেন সেটা আরেক মার্কায় চলে গেছে।
আরিফ বলেন, এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে আমার দল বিএনপি অংশ নেবে না। আমি এই সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ালাম।
এসময় আরিফ নগরবাসীকে ভোট বর্জন করার আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন সিসিক মেয়র আরিফ
তিনি বলেন, জেল-জুলুম-নির্যাতন সহ্য করে সিলেটের উন্নয়নে মনোনিবেশ করেছিলাম। আমার উন্নয়ন কাজ নিয়ে যারা সমালোচনা করছেন তাদের বলতে চাই, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও আমার কাজের প্রশংসা করেছেন। আর তাই সিলেটের মানুষজন, মা-বোন যে যেখানেই আমাকে পাচ্ছেন, নির্বাচন করার জন্য বলছেন। অনুরোধ করছেন।
তিনি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, এখনো আমি মনোনয়নপত্র কিনিনি। অথচ আমার নেতাকর্মীদের ঘরে ঘরে পুলিশ তল্লাশি করছে। গ্রেপ্তার-নির্যাতন, এমনকি রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি আপনাদের সন্তান, আমি আপনাদের ভাই। আমি মেয়র না থাকলেও আপনাদের পাশে সবসময় থাকবো। আমাকে আপনারা ক্ষমা করুন।
আরও পড়ুন: দুই ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে পেঁয়াজ কিনলেন সিসিক মেয়র আরিফ!
পটুয়াখালীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে পুলিশসহ ৩০ জন আহত
পটুয়াখালী সদর উপজেলায় পূর্বনির্ধারিত সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ (আ.লীগ)ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার সকালে পটুয়াখালী জেলা বিএনপির কার্যলয়ের সামনে এ সংঘর্ষ ঘটে।
জানা যায়, সরকারের পদত্যাগ দাবিতে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশ নিতে এদিন সকাল থেকেই বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিএনপি নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরু করে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল রশিদ চুন্নু মিয়ার সভাপতিত্বে বনানী মোড়ে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
জেলা বিএনপি সমাবেশ শুরুর আগে নেতাকর্মীরা পুলিশের বাধার মুখে পড়ে। এ সময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সমাবেশে হামলা শুরু করলে উভয়েই সম্মুখ সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশ উভয় দলের নেতাকর্মীদেরকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষে আহত ১৯; ১২টি মোটরবাইক ভাঙচুর ৩টিতে আগুন
এতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি উজ্জ্বল তালুকদারসহ বিএনপি ও আওয়ামী লীগের ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং শহরের বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
এসপি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তারা টিয়ারগ্যাস ব্যবহার করেছে, তবে কত রাউন্ড ব্যবহার হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান জানান, সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, যারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলা করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করার চেষ্টা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
বিএনপির জেলা শাখা তাদের ১০ দফা দাবির পক্ষে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে এবং আজ বিকালে একটি হোটেলে তাদের সমাবেশে ‘হামলার’ প্রতিবাদ জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে না।
এদিকে, সকালে স্থানীয় আ’লীগের নেতাকর্মীরা শান্তি সমাবেশ করে।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের জেলা শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা কাজী আলমগীর ও সহ-সভাপতি সুলতান আহমদ মৃধা প্রমুখ।
জেলা আ.লীগের সভাপতি বলেন, তাদের সমাবেশে ‘হামলার’ অভিযোগে তারা বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ