বিএনপি
যাত্রাবাড়ী থেকে জুরাইন পর্যন্ত বিএনপির ২য় পদযাত্রা শুরু
বিএনপির চার দিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী সাধারণ নির্বাচন নির্দলীয় নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি নিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি শাখার নেতাকর্মীরা যাত্রাবাড়ী থেকে রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় মিছিল করছেন।
সোমবার দুপুর আড়াইটার দিকে যাত্রাবাড়ী আইডিয়াল স্কুলের সামনে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এটি বিএনপির দ্বিতীয় কর্মসূচি। শনিবার দলের ঢাকা উত্তর মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা রাজধানীর বাড্ডা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত মিছিল করে।
মিছিল শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফখরুল দলের নেতাকর্মীদের আগের সব কর্মসূচির মতো শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
তবে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে দুর্বলতা না ভাবতে তিনি ক্ষমতাসীন দলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘আমাদের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত হলে কঠোর প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
আরও পড়ুন: শাহজাদপুর থেকে মালিবাগ বিএনপির পদযাত্রা শুরু
সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততায় শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করবেন বলেও জানান এই বিএনপি নেতা।
ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও জনগণের ভোট ও অন্যান্য অধিকারের জন্য পদযাত্রা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তারা আন্দোলনের নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। এই মিছিল গণতন্ত্র ও সভ্যতার বিজয়।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পায়ের নিচের মাটি হারিয়ে ফেলায় এখন বেপরোয়া মন্তব্য করছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের উপনির্বাচনে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিএনপি থেকে বরখাস্ত হওয়া নেতা অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারকে বিজয় নিশ্চিত করতে ক্ষমতাসীন দলের নানা ধরনের 'অশুভ' প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না।
আরও পড়ুন: তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা: ফখরুল
ফখরুল বলেন, ‘সুতরাং, আওয়ামী লীগ সরকারকে সংসদ থেকে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে এবং সংসদ ভেঙে দিতে হবে। যাতে মানুষ একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে তাদের ভোট দিতে পারে।’
ব্যানার, জাতীয়, দলীয় ও সাদা পতাকা, ফেস্টুন ও দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতিকৃতি নিয়ে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ২৮, ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে চারদিনের পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
আগামী ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মিরপুর-১০ মোড় পর্যন্ত মিছিল করবে ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি।
এছাড়া ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে।
আরও পড়ুন: ক্ষমতাচ্যুতি এড়াতে এখনই পদত্যাগ করুন, সরকারকে ফখরুল
তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের মতো একটি দেশের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা।
তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে আওয়ামী লীগ জাতিকে বিশৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দিয়েছে। দেশের মানুষ এখন জানে না কিভাবে নির্বাচন হবে এবং তারা তাদের ভোট দিতে পারবে কি না।
রবিবার বিএনপি ও ১২-দলীয় জোটের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ দাবি করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, বর্তমান শাসনের পতনের জন্য তাদের চলমান যুগপৎ আন্দোলন জনগণের ব্যাপক আস্থা অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন: খালেদা, তারেককে নিয়ে সময় টিভির প্রতিবেদন সম্পর্কে যা বললেন ফখরুল
তিনি বলেন, দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে গেছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ব্যবস্থাই দেশের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা।
ফখরুল বলেন, বিগত নির্বাচনগুলো প্রমাণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার ও দলীয় প্রশাসনের অধীনে কোনো বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন হতে পারে না। আমরা আরও খুশি হতাম যদি দেশের আরও বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনগুলি সত্যিই এই বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলত।
আমি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য তাদের আওয়াজ তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।
ফখরুল বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে যুগপৎ আন্দোলন ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আমাদের ১০ দফা দাবিতে একমত হওয়ায় এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ায় যুগপৎ আন্দোলনে জনগণের মধ্যে নিশ্চিতভাবে আস্থা তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ একটি ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড পার্টি’
ফখরুল অভিযোগ করেন, রবিবার রাজশাহীতে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এবং পাবলিক ট্রেন ভাড়া করে সমাবেশ করলেও তারা বিরোধী দলের অনুরূপ কর্মসূচিতে নানা ধরনের বাধা সৃষ্টি করেছে।
বিএনপির ১০টি বিভাগীয় সমাবেশের আগে পরিবহন ধর্মঘট, পুলিশি অভিযান এবং বিরোধী দলের নেতাদের গ্রেপ্তারের মতো বাধার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলগুলোকে যেকোনো মূল্যে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনে বাধা দিতে নানা অপকৌশল অবলম্বন করে।
আওয়ামী লীগ সরকারের চরিত্র ও কর্মকাণ্ড ইতোমধ্যে জনগণের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। তারা এদেশে সম্পূর্ণ একদলীয় শাসন জারি করছে।
এছাড়া আওয়ামী লীগ সব সময় ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড পার্টি ’। তারা বলে এক, করে আরেক।
‘এটা বিএনপির পদযাত্রা নয়, মরণযাত্রা’ বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের করা মন্তব্য প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, বিএনপির পদযাত্রার কর্মসূচি দেখে হয়তো ক্ষমতাসীন দলের নেতার কিশোর কুমারের ‘মরণযাত্রা’ গানের কথা মনে পড়ে গেছে। আমি জানি না তিনি নিজের (তার রাজনৈতিক মৃত্যু) সম্পর্কে ভাবছিলেন কি না।
১২ দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি বলেন, চলমান আন্দোলন ও দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে।
এছাড়া আমরা পরবর্তী কর্মসূচি এবং কীভাবে আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করা যায় সে সম্পর্কেও কথা বলি।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে আরও জনসমর্থনের ঢোল বাজিয়ে তারা যুগপৎ আন্দোলন জোরদার করতে সম্মত হয়েছেন।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু ও এম শাহজাহান, ১২ দলের সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপি’র সালমান শাহজাদা, এলডিপির আবু তাহের, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহিউদ্দিন ইকরাম, জাগপার রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের আবদুল করিম, ইসলামিক পার্টির আবুল কাশেম ও মুসলিম লীগের তোফাজ্জল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ক্ষমতাচ্যুতি এড়াতে এখনই পদত্যাগ করুন, সরকারকে ফখরুল
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
ক্ষমতাচ্যুতি এড়াতে এখনই পদত্যাগ করুন, সরকারকে ফখরুল
দলের পদযাত্রা কর্মসূচিকে সরকারবিরোধী আন্দোলনের নতুন রূপ আখ্যায়িত করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সরকারকে অবিলম্বে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
শনিবার রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় পদযাত্রা কর্মসূচি শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আজ (শনিবার) ঢাকা শহরে এই নীরব প্রতিবাদের মধ্য দিয়ে আমরা নতুন আন্দোলন শুরু করেছি। জনগণের সঙ্গে একত্রে নীরব মিছিলের মাধ্যমে আমরা এই ভয়ঙ্কর, দানব সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করব।’
আরও পড়ুন: মির্জা ফখরুলের মুক্তির দাবি ৬০ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের
বিএনপি নেতা আরও বলেন, অবিলম্বে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে এবং একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে নতুন কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারকে বার্তা দিতে চান তারা।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘অন্যথায় আপনাদেরকে খুব মর্মান্তিক ক্ষমতাচ্যুতির মুখোমুখি হতে হবে এবং আপনারা পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।’
দলের চারদিনের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীরা নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবি আদায়ে বাড্ডার সুবাস্তু নজর ভ্যালি বাজার থেকে রাজধানীর মালিবাগের আবুল হোটেল এলাকা অভিমুখে মিছিল করেন।
দুপুর আড়াইটার দিকে ফখরুল আনুষ্ঠানিকভাবে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন যা চার কিলোমিটার সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিকাল ৪টার দিকে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।
তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের কোনো উসকানির জবাব না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে বলেন। ‘আমরা এখন পর্যন্ত আমাদের সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করেছি এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের (সরকার) পতন নিশ্চিত করব।’
সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে তারা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন কোনও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। যাতে মানুষ একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে তাদের ভোট দিতে পারে।’
ফখরুল বলেন, নির্দলীয় প্রশাসনের অধীনে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ তাদের ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি ও সরকারকে নির্বাচিত করবে। ‘নির্বাচিত সরকারই দেশ চালাবে।’
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, চাল, তেল, লবণ, ডিমসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানুষ কষ্ট পাচ্ছে।
বিএনপি নেতা অভিযোগ করেন, দমনমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে জনগণ এখন সরকারের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে পারে না। ‘বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা ও কাল্পনিক মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হচ্ছে। তারা (সরকার) পুরো বাংলাদেশকে কারাগারে পরিণত করেছে।
তাদের দলের প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ রাজনৈতিক মামলার শিকার হয়েছেন দাবি করে তিনি বলেন, দেশে সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য এসব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে এবং গ্রেপ্তারকৃত সব নেতাকর্মীকে মুক্তি দিতে হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার ২৮, ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে চারদিনের পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
আগামী ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মিরপুর-১০ মোড় পর্যন্ত মিছিল করবে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি।
এছাড়া ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।
আরও পড়ুন: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল হাসপাতালে ভর্তি
মির্জা ফখরুল ও আব্বাসের জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন
শাহজাদপুর থেকে মালিবাগ বিএনপির পদযাত্রা শুরু
বিএনপির চার দিনের কর্মসূচির অংশ হিসাবে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আগামী সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ তাদের ১০ দফা দাবি জানাতে রাজধানীর শাহজাদপুর থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা শুরু করেছে ঢাকা উত্তর সিটি ইউনিট।
শনিবার দুপুর আড়াইটার দিকে শাহজাদপুরের হোসেন মার্কেটের সামনে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
কর্মসূচি শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ফখরুল দলের নেতাকর্মীদের কোনো উসকানি না দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
ফখরুল বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত আমাদের সকল কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালন করেছি এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের (সরকার) পতন নিশ্চিত করব।
এছাড়া তাদের পদযাত্রা কর্মসূচিকে সরকারের বিরুদ্ধে নীরব প্রতিবাদ হিসাবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তারা সরকারকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবেন।
সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের ভোটাধিকার ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ তুলে বিএনপি নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারকে হটিয়ে তারা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। তাই, আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে এবং সংসদ ভেঙে দিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে যাতে মানুষ একটি নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে তাদের ভোট দিতে পারে।
বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী দলের শীর্ষ নেতাদের ব্যানার, ফেস্টুন ও প্রতিকৃতি হাতে নিয়ে কর্মসূচিতে যোগ দেন।
তারা সরকারের পদত্যাগ ও দলীয় নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানও দিচ্ছেন।
এদিকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এছাড়া বেলা ১টা থেকে হোসেন মার্কেট এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের ভিড় দেখা যায়, অন্যদিকে দলের সিনিয়র নেতারা বারবার যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বলছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার ২৮, ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীতে চারদিনের পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করে বিএনপি।
আগামী ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মিরপুর-১০ মোড় পর্যন্ত মিছিল করবে ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
'ফ্যাসিস্ট' সরকার গণতন্ত্রের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে বানচাল করতে চাইছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, সরকার ও তার দালালরা বিভিন্ন 'অশুভ' কৌশল অবলম্বন করে এবং বানোয়াট গল্প তৈরি করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চলমান ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে চাইছে। বিরোধী জোটের মধ্যে ফাটল সৃষ্টির চেষ্টা করছে।
বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি আরও বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য অটুট রয়েছে এবং তারা 'ফ্যাসিস্ট' সরকাকে উৎখাত করতে এগিয়ে যাচ্ছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমাদের মধ্যে (বিরোধী জোটের) কোনো সমস্যা নেই...স্বাভাবিকভাবেই সরকার ও তার দালালরা বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দমন ও বানচাল করতে মিডিয়াকে ব্যবহার করে নানা অশুভ কৌশল অবলম্বন করছে এবং নানা রকম গল্প তৈরি করছে।’
বিরোধী দলগুলোর ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য সরকারের প্রচেষ্টা নিয়ে তারা কম চিন্তিত বলে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের মূল ফোকাস এখন মানুষকে আরও একত্রিত করা এবং ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারী শাসনকে উৎখাত করার জন্য আমাদের আন্দোলনে তাদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করা।’
বিকাল ৪টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শুরু হয়ে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে।
বৈঠকে ফখরুল বলেন, চলমান যুগপৎ আন্দোলনকে আরও জোরদার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: খালেদা, তারেককে নিয়ে সময় টিভির প্রতিবেদন সম্পর্কে যা বললেন ফখরুল
‘আমাদের বৈঠকে আমরা বিএনপি ও গণতন্ত্র মঞ্চের একযোগে আন্দোলনের আগের কর্মসূচি পর্যালোচনা করেছি। আমাদের আন্দোলনকে সফল করার জন্য আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়েও আলোচনা করেছি’, তিনি বলেন।
বিএনপি নেতা বলেন, গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে তারা বৃহত্তর ঐক্য গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছেন।
তিনি বলেন, যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত অন্যান্য দল ও জোটের সঙ্গেও তারা একই ধরনের বৈঠক করবেন।
গণতন্ত্র মঞ্চের সমন্বয়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আন্দোলনকে ধীরে ধীরে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাওয়ার কৌশল ও নীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, তারা বিরোধী দলগুলোর মধ্যে ঐক্য জোরদার করার উপায় নিয়েও কথা বলেছেন। কেউ যেন কোনো বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে আমাদের ঐক্যে কোনো ফাটল সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
মান্না বলেন, রাজধানী ঢাকায় বিরোধী জোটের তৎপরতা কীভাবে বাড়ানো যায় সে বিষয়েও তারা কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, ঢাকায় বিএনপি স্বতন্ত্রভাবে কিছু কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ‘আমরা মনে করি যে প্রোগ্রামগুলি কার্যকর হতে পারে। আমরাও কর্মসূচিতে আমাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি। এ ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা গণঅভ্যুত্থান ঘটানোর চেষ্টা করব। আমরা আশাবাদী যে আমরা বিপুল জনসমর্থন পাচ্ছি বলে আমরা বিজয়ী হব।’
খালেদাকে নিয়ে সেলিমের মন্তব্য 'ভিত্তিহীন'
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া রাজনীতি করবেন না বলে মুচলেকা দিয়ে কারাগার থেকে মুক্ত হয়েছেন বলে সংসদে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ সেলিমের বক্তব্যের বিষয়ে মন্তব্য করতে চাইলে ফখরুল বলেন, এটা একটি বানানো গল্প।
‘তিনি (সেলিম) হঠাৎ করেই এই গল্পটা তৈরি করলেন। এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং বানোয়াট মন্তব্য’, বিএনপি নেতা যোগ করেন।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
খালেদা, তারেককে নিয়ে সময় টিভির প্রতিবেদন সম্পর্কে যা বললেন ফখরুল
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানের উদ্ধৃতি দিয়ে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সম্পর্কে সম্প্রতি প্রকাশিত সময় টিভির প্রতিবেদনের সমালোচনা করেছেন বিএনপি’র মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
‘বিএনপির ২৭ দফা ঘোষণায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থানের কথা বলা হলেও তাদের নেতৃত্বের শীর্ষে আদালতের রায়ে সাজাপ্রাপ্তদের রাখাকে ‘সাংঘর্ষিক ও নৈতিক অবক্ষয়’- ইফতেখারুজ্জামানের এই মন্তব্যে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় সময় টিভিকে কটাক্ষ করেছেন এই বিএনপি নেতা।
ফখরুলের বক্তব্য তুলে ধরে, সময় টিভি বৃহস্পতিবার আবার আগের প্রতিবেদন প্রচার করেছে এবং প্রতিবেদনটির পিছনে তার অবস্থান এবং ন্যায্যতা রক্ষা করতে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের মামলায় মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) এজেন্টের সাক্ষ্যের কথাও উল্লেখ করা হয়। .
সংবাদ সম্মেলনে সময় টিভি সম্পর্কে ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নেতা তারেক রহমান ও বেগম জিয়া সম্পর্কে ওই প্রতিবেদন সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পিঠে ছুরিকাঘাতের শামিল। যেহেতু আমরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি, তাদের উচিত এই ধরনের প্রতিবেদন প্রচার করা থেকে বিরত থাকা।’
আরও পড়ুন: বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
ফখরুল আরও স্বীকার করে বলেছেন, ‘চ্যানেলটি একটি মূলধারার সংবাদমাধ্যম এবং দেশের মানুষ বিশ্বাসযোগ্য হিসাবে গ্রহণ করে।’
গত ১৬ জানুয়ারি ঢাকার নয়াপল্টনে অনুষ্ঠিত দলের সমাবেশ কভার করার সময় সময় টিভি’র এক সাংবাদিক তার ওপর ‘হামলা করার’ জন্য বিএনপিকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করার পর এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
সময় টিভির ওই প্রতিবেদনেন বলা হয়, তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া উভয়কেই আদালত সাজা দিয়েছেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের যাবতীয় সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিরা নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন কিনা সে বিষয়েও প্রতিবেদনে আইনের উল্লেখ করা হয়েছে।
এটিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালকের পর্যবেক্ষণও রয়েছে যে বিএনপি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাহসী অবস্থান নেয়ার কথা বলছে এবং একই সঙ্গে শীর্ষ নেতৃত্বে দণ্ডিতদের নিয়ে দল পরিচালনা করছে।
বিএনপির ২৭ দফার কথা উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক এর আগে দলটির সেগুলো বাস্তবায়নের সামর্থ্য আছে কিনা তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ইতিহাস এবং দেশের মানুষের সঙ্গে এর অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে বলা যেতে পারে যে রাজনৈতিক দলগুলো ইশতেহার তৈরি করে। তারা ক্ষমতায় এলেও চিত্র ভিন্ন। সেই অর্থে, এটি একটি ইচ্ছা তালিকা। যদিও উল্লিখিত অনেক বিষয় বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: সরকারের দিন ঘনিয়ে আসছে: ফখরুল
২০১১ সালের নভেম্বরে, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার গিয়াসউদ্দিন আল মামুনের বিরুদ্ধে দায়ের করা ২০ দশমিক ৪১ কোটি টাকার মানি লন্ডারিং মামলায় এফবিআই এজেন্ট সাক্ষ্য দেন। এই প্রথম কোনো মার্কিন এফবিআই এজেন্ট বাংলাদেশের কোনো আদালতে সাক্ষ্য দিলেন।
এফবিআই-এর তত্ত্বাবধায়ক বিশেষ এজেন্ট ডেব্রা ল্যাপ্রেভোট, ঢাকার একটি আদালতের সামনে বর্ণনা করেছেন যে কীভাবে তিনি পাচারের অভিযোগে তারেক রহমান এবং মামুনের সিঙ্গাপুরের একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ট্র্যাক করেছিলেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিশেষ আদালত খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন। পরে তিনি দ্বিতীয় দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন।
মহামারির মধ্যে, সরকার ২০২০ সালে ২৫ মার্চ এ একটি নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে তার জেলের মেয়াদ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে। সরকার দুটি দুর্নীতির মামলায় তার শর্তসাপেক্ষ মুক্তির মেয়াদ কয়েকবার বাড়িয়েছিল।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
রাজধানীতে ২৮ জানুয়ারি থেকে ৪ দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচির ঘোষণা বিএনপির
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দশ দফা দাবির লক্ষ্যে চার দিনব্যাপী পদযাত্রা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এ কর্মসূচি ঘোষণা দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
তিনি বলেন, তাদের দলের ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ মহানগর শাখার নেতাকর্মীরা ২৮, ৩০, ৩১ জানুয়ারি ও ১ ফেব্রুয়ারি পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করবেন। দলের পরিকল্পনা অনুযায়ী ২৮ জানুয়ারি শাহজাদপুর থেকে মালিবাগ আবুল হোটেল এবং ৩১ জানুয়ারি গাবতলী থেকে মিরপুর ১০ মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা উত্তর মহানগর বিএনপি।
তিনি আরও বলেন, এদিকে ৩০ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থেকে শ্যামপুর এবং ১ ফেব্রুয়ারি মুগদা থেকে মালিবাগ পর্যন্ত পদযাত্রা করবে ঢাকা দক্ষিণ মহানগর বিএনপি।
এছাড়া সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে তাদের পদযাত্রার কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন ফখরুল।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
সরকারের দিন ঘনিয়ে আসছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের দিন ঘনিয়ে এসেছে। কারণ জনগণ নির্বাচনের নামে আর কোনো নাটক করতে দেবে না।
বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারের দিন শেষ হয়ে গেছে... এবার তাদের যেতে হবে।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, যারা গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের হত্যা করেছে এবং গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নানাভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তাদের সেই ঋণ শোধ করতে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার ছদ্মবেশে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে পরিকল্পিতভাবে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ‘সুতরাং, তারা একটি নির্বাচনের নামে নাটক এবং উপহাস করতে চায় ... যে নির্বাচন এই দেশে আর হবে না কারণ মানুষ এখন তাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে প্রস্তুত।’
ফখরুল বলেন, জনগণের সঙ্গে বর্তমান ‘অনির্বাচিত’ সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই এবং তাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে জনগণের টাকা লুটপাট করা। কারণ তারা বাংলাদেশকে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি এবং দেশের জনগণকে তাদের প্রজা মনে করে।
আরও পড়ুন: যুগপৎ আন্দোলন: ঢাকার নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ শুরু
বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। দল ও এর অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী এ কর্মসূচিতে যোগ দেন।
আয়োজকরা জানান, ১৯৭৫ সালের এই দিনে আওয়ামী লীগ কর্তৃক একদলীয় বাকশাল শাসন প্রবর্তন, বিদ্যুত-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানসহ সরকারের ওপর তাদের ১০ দফা দাবি আদায়ের জন্য চাপ বৃদ্ধিই এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য।
ফখরুল বলেন, শক্তিশালী আন্দোলনের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত না হলে আওয়ামী লীগ স্বেচ্ছায় ক্ষমতা ছাড়বে না। ‘আমরা এই শাসনকে ক্ষমতা থেকে সরাতে জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করছি।’
বিএনপি নেতা আরও বলেন, যতদিন আওয়ামী লীগ পদত্যাগ না করবে এবং যতদিন গ্রেপ্তার বিএনপি নেতাদের জেল থেকে মুক্তি না দেয়া হবে, ততদিন তাদের চলমান আন্দোলন চলবে।
ফখরুল বলেন, গণতান্ত্রিক সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে জাতি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। এই আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালের এই দিনে (২৫ জানুয়ারি) জনগণের সব আশা-আকাঙ্খাকে ধোঁকা দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছিল।
বিএনপি নেতারা প্রশ্ন তোলেন, আওয়ামী লীগ কেন ভুলে যায় যে তারা প্রথমে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে সব দল ও সংবাদপত্র নিষিদ্ধ করে দেশে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছিল।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কখনই গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না এবং ভিন্ন মতকে সহ্য করতে পারে না। আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই সন্ত্রাসী দল। তাদের ইতিহাস সন্ত্রাসের ইতিহাস এবং তারা সর্বদা শক্তি প্রয়োগ করে এবং সন্ত্রাসবাদের আশ্রয় নিয়ে ক্ষমতায় থাকতে চায়।’
বর্তমান আন্দোলনে বিএনপির ১৭ নেতাকর্মী নিহত হয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসার জঘন্য আকাঙ্খা চরিতার্থ করতে এত প্রাণ হরণ করেছে।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, বিদ্যুৎ-গ্যাসসহ সব নিত্যপ্রয়োজনীয় ও ইউটিলিটি সেবার দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় মানুষ খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে দিন পার করছে।
বিএনপি নেতা বলেন, সরকার বিদ্যুৎ-গ্যাস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের শুল্ক কমাবে না। ‘সুতরাং, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই শাসনকে অবশ্যই ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে।’
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
রাষ্ট্রপতি নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন না
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে ক্ষমতা নেই এমন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
ফখরুল বলেন, ‘আমরা রাষ্ট্রপতির চেয়ারকে অত্যন্ত সম্মান করি, ব্যক্তি যেই হোক না কেন এবং তিনি যে দলেরই হোন না কেন। রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রপ্রধান।’
তবে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি এখন নিরপেক্ষভাবে তার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে পারবেন না। ‘তাই আমরা আমাদের ২৭ দফা প্রস্তাবে স্পষ্ট করেছি যে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার মধ্যে ভারসাম্য থাকতে হবে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদলীয় বাকশাল শাসন প্রতিষ্ঠা করে জনগণের সব অধিকার কেড়ে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেছিল।
তিনি বলেন, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানই গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনরুদ্ধার করেছেন।
বিএনপি নেতা আরও বলেন, বাকশাল শাসনামলে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ পুনরুজ্জীবিত হয়েছে কারণ জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন, দলটিকে বাংলাদেশে রাজনীতি করার নতুন সুযোগ দিয়েছিলেন। তাই আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রের ঘাতক আর বিএনপি গণতন্ত্র রক্ষাকারী।
আরও পড়ুন: ৪ ফেব্রুয়ারি সব বিভাগীয় শহরে সমাবেশ করবে বিএনপি
চট্টগ্রামে পুলিশের ৪ মামলায় বিএনপির ১০২ নেতাকর্মীর আগাম জামিন লাভ
চট্টগ্রামের কাজীর দেউড়িতে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় পুলিশের দায়ের করা চারটি মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন ও সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করসহ ১০২ জন নেতাকর্মী।
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালনকারী ইদ্রিস আলী জামিন পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) হাইকোর্ট ডিভিশনের সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ এর বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম এবং বিচারপতি মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম এর ব্রাঞ্চ ৬ সপ্তাহের জন্য জামিনের আবেদন মঞ্জুরের আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপির মিছিলে বাধা, সংঘর্ষে পুলিশসহ আহত ৪০
আবেদনকারীদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান।
এসময় তার সঙ্গে ছিলেন- সিনিয়র অ্যাডভোকেট এ.জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহাবুব উদ্দীন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামান, এডভোকেট আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, এডভোকেট আব্দুল মান্নান, এডভোকেট ওসমান চৌধুরী, এ.কে.এম খলিলুল্লাহ কাসেম, গোলাম মুক্তাদী উজ্জ্বল প্রমুখ আইনজীবী।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জানুয়ারি বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনকালে নগরীর নাসিমন ভবনের সামনে বিএনপির বিক্ষোভ কর্মসূচি চলাকালে সমাবেশে যোগ দিতে মিছিল নিয়ে যাবার সময় পুলিশের বাধা পেয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে পুলিশ ও বিএনপি কর্মীরা। এসময় ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। পুলিশ ২০ জনকে আটক করে। পুলিশসহ অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়। ওই দিন রাতে পুলিশ দেড় থেকে দুইশ’ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চারটি পৃথক মামলা দায়ের করে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে বিএনপি-পুলিশ সংর্ঘষ: শাহাদাতসহ ৭৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
চট্টগ্রামে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১০
বরিশালে বিএনপির সমাবেশে ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের সংঘর্ষ
বরিশালে বিএনপির সমাবেশের মঞ্চের সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বেশ কিছুক্ষণ এই সংঘর্ষ চলার পর বিএনপির সিনিয়র নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
বুধবার দুপুরে নগরীর অশ্বিনী কুমার হল সংলগ্ন বিএনপির সমাবেশস্থলে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মঞ্চের সামনে দাড়ানোকে কেন্দ্র করে স্বেচ্ছাসেবক দল কর্মী তপু কাজীর সাথে জেলা ছাত্রদলের সহ সভাপতি সবুজ আকনের দ্বন্দ হয়। এই নিয়ে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে দুই জনের সমর্থক হাতাহাতিতে জড়ায় এরপর তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সহ কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে। পরে বিএনপির সিনিয়র নেতারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের বিষয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব মীর জাহিদুল কবির জাহিদ বলেন, চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে কর্মী পর্যায়ের লোকজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। পরে তাদের শান্ত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষে আহত ১২, আটক ২০
ফরিদপুরে বিএনপির ১১৪ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা