অন্যান্য
বিএনপির আন্দোলনকে সমর্থন করতে ১২ দলীয় জোট গঠন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার লক্ষ্যে বিএনপির পরিকল্পিত যুগপৎ সরকারবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিতে ১২টি দলের একটি নতুন রাজনৈতিক জোট আত্মপ্রকাশ করেছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করে জোটটি আত্মপ্রকাশ করে।
এর আগে এই ১২টি দল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের অংশ ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার নতুন এই জোট গঠনের ঘোষণা দেন।
নতুন জোটের শরিকরা হলো- জাতীয় পার্টি (কাজী জাফর), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় দল, এনডিপি, এলডিপি (সেলিম), মুসলিম লীগ, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, ইসলামী ঐক্যজোট, জাগপা, ইসলামিক পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল এবং সাম্যবাদী দল।
তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বলতে পারি দেশের সবচেয়ে বড় বিরোধী দল বিএনপির সঙ্গে আমাদের বোঝাপড়া ও ঐক্য আগের মতোই থাকবে। যে রাজনৈতিক দলগুলো এই ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে, তাদের অংশগ্রহণে বৃহত্তর ঐক্য গড়তে আমরা নতুন কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।’
আরও পড়ুন:আ.লীগের জাতীয় কাউন্সিল বিবেচনায় ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করবে বিএনপি
মোস্তফা বলেন, ভুল বোঝাবুঝির কোনো সুযোগ নেই এবং আমরা সবাই একযোগে আন্দোলনের পথে এগোচ্ছি।
নবগঠিত ১২ দলীয় জোটের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান।
মোস্তাফিজুর বলেন, আমরা গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং আমরা ১২ দলীয় জোট হিসেবে স্বীকৃতি পাব।
তিনি বলেন, ‘সরকারকে পদত্যাগ করতে এবং নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে বাধ্য করতে বিএনপির সঙ্গে একযোগে সরকারবিরোধী আন্দোলনে রাজপথে সক্রিয় থাকবে ১২ দলীয় জোট। চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।’
তিনি আরও বলেন, ১২ দলীয় জোট বিএনপির ২৭ দফা রূপরেখা 'রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার' একটি 'জাতীয় মুক্তির সনদ' হিসাবে বিবেচনা করে এবং এর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা’: ২৭ দফা ঘোষণা বিএনপি’র
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘বিলুপ্তির আগে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে ২০-দলীয় জোটের শেষ বৈঠক হয়েছিল ২০২২ সালের ৯ ডিসেম্বর। যেখানে জোটের নেতারা পূর্বের নাম ২০-দল ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নেন। জোট ২০ দলীয় জোট গঠিত হয় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল।
তিনি আরও বলেন, ১২-দলীয় জোটে দুটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে- একটি বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি এবং অন্যটি বাংলাদেশ মুসলিম লীগ।
মেজর ইব্রাহিম বলেন, অন্যান্য দল নিবন্ধনের জন্য নির্বাচন কমিশনে তাদের আবেদন করেছে এবং আশা করা হচ্ছে একটি ইতিবাচক ফলাফল আসবে।
জোটটি ৩০ ডিসেম্বরের পর বিভাগীয় শহরে সফর করার পরিকল্পনা করছে এবং তারা শিগগিরই এ বিষয়ে তাদের সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানান ইব্রাহিম।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বিএনপির সকল কর্মসূচিতে যোগ দেব এবং যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ৩০ ডিসেম্বর আমরা গণ মিছিল বের করব। আমরা দুপুর ২টার দিকে বিজয় নগর এলাকায় সমবেত হব।’
আরও পড়ুন: স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ
রাজধানীতে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশ বিরোধীদের পক্ষে
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, যারা দেশে ক্ষমতায় আছেন এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন তারাই 'ভোট লুটেরা'। এরাই জনগণের ভোটাধিকার হরণ করে প্রতারণার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন।শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মিরপুরে সনি সিনেমা হলের সামনে মান্নার নাগরিক ঐক্যসহ সাতটি ছোট বিরোধী দলের জোট গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।মান্না বলেন, শনিবার খুলনায় বিএনপির সমাবেশ হবে সবচেয়ে বড় জনসমাগম এবং সরকার তা ঠেকাতে পারবে না।তিনি আরও বলেন, ‘তারা খুলনায় বিশাল জনসমাগম ঠেকাতে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু জনগণ তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই কোন কিছুই সমাবেশে আসা থেকে তাদের আটকাতে পারবে না।’
হাজারীবাগ বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে
রাজধানীর হাজারীবাগে বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা ১৫ মিনিটে বটতলার ওই বস্তিতে আগুনের সূত্রপাত হয়। এক ঘন্টা ১৫ মিনিটের চেষ্টায় ৭.৩০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার জানান, খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। সোয়া এক ঘন্টার চেষ্টায় তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি বলেও জানান শাহজাহান।
আরও পড়ুন:পল্টনে ইলেকট্রনিক্স গুদামে আগুন
মাতুয়াইলে প্যাকেজিং কারখানায় আগুন
বোয়ালখালীতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে ছাত্রলীগের হামলা, আহত ১০
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ছাত্র ইউনিয়নের ১০ জন নেতাকর্মী আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শনিবার দুপুরে কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজ গেটে এ ঘটনা ঘটে।
বোয়ালখালী উপজেলা ছাত্র ইউনিয়নের যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াছিন আরাফাত জানান, স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজের বহুমুখী সংকট নিরসনের দাবিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হলে ছাত্রলীগ নেতা শিমুল সরদারের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন-ছাত্র ইউনিয়ন কলেজ শাখার আহ্বায়ক হিমেল চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা যুব ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অনুপম বড়ুয়া,বোয়ালখালী কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি সাইফুদ্দিন সাইফ, দক্ষিণ জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন,দক্ষিণ জেলা যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সেহাব উদ্দিন সাইফু, ছাত্র ইউনিয়ন সদস্য ইয়াছিন, অমিত, রাশেদ। বাকিদের নাম জানা যায়নি।
আরও পড়ুন: মাগুরায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১৫
কলেজ ছাত্র ইউনিয়নের আহ্বায়ক হিমেল চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে শিক্ষা সংকট, ভবন সংকটসহ বিভিন্ন সংকট নিরসনের দাবি জানিয়ে কলেজ ছাত্র ইউনিয়ন মানববন্ধন করছিল। এসময় কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে চাইলে কলেজ ছাত্রলীগের নেতারা তাতে বাধা দেন। একপর্যায়ে চলমান মানববন্ধনে কাঠ ও লোহার পাইপ নিয়ে কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিমুল সর্দার, রয়েল দেবনাথ ও মো. কাইয়েুমের নেতৃত্বে অতর্কি তভাবেহামলা চালায়। তারা এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন, এসময় বেশ কয়েকজনের মোবাইলও ছিনিয়ে নেয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শিমুল সর্দার বলেন, কোনে হামলার ঘটনা ঘটেনি। ছাত্র ইউনিয়ন মানববন্ধনের নামে কলেজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করে আসছিল। আমরা তাদের মানববন্ধন থেকে সরিয়ে দিতে চাইলে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে বিলবোর্ড ভেঙে জবি শিক্ষার্থী আহত
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুর রাজ্জাক বলেন, কলেজের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে ছাত্র ইউনিয়ন মানববন্ধন করতে চাইলে ছাত্রলীগের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তবে হামলার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।
সাবেক এমপি শাহানা রহমান আর নেই
সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সহ-সভাপতি শাহানা রহমান রাজধানীর একটি হাসপাতালে মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০।
বুধবার রাত ৮টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজা শেষে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ কয়েকজন দলীয় নেতাকর্মী তার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং দলীয় পতাকা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
পরে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নেতারাও শাহানার কফিনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এদিকে তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপি মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এক শোক বার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম মহিলা দলের সভাপতিকে বহিষ্কার
করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব
অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান ড.কামালের
গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন জনগণকে অপকর্ম ও অনৈতিক কাজের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন অনৈতিক কাজ ও অপকর্মের কারণে দেশ ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করুন এবং এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।’
বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত নতুন রাজনৈতিক দল ‘নৈতিক সমাজ’ এর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও প্রথম কাউন্সিলে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে দেয়া বক্তব্যে এসব কথা বলেন ড. কামাল।
তিনি বলেন, দেশকে অনৈতিক ও অপকর্ম থেকে মুক্ত করতে হবে। আমরা আশা করি আপনারা সবাই দেশে আইনের শাসন, জন-নিরাপত্তা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাবেন।
আরও পড়ুন: নির্দলীয় সরকার চান ড. কামাল
ড. কামাল নৈতিক সমাজের কাউন্সিলের সর্বাত্মক সাফল্য কামনা করেন এবং দলের নেতা-কর্মীদের জনগণের অধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
গত বছরের ৩০ মার্চ মেজর জেনারেল (অব.) এ এম এস এ আমিন রাজনীতিতে ন্যায়পরায়ণ নেতৃত্ব ও নৈতিক মূল্যবোধ তৈরির লক্ষ্যে ‘নৈতিক সমাজ’ গঠন করেন।
এ সময় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বর্তমান সরকার নীতিহীন। কারণ তারা ভোট ডাকাতি করে জোর করে ক্ষমতা দখল করেছে। বাংলাদেশের যে কোনো জায়গায় কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বলবে, এই সরকার নীতিহীন।
সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্বাভাবিক ও অযৌক্তিক মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে সরকারের ব্যর্থতার জন্য তিনি কঠোর সমালোচনা করেন।
মান্না বলেন, চাল, আটা, তেল, পেঁয়াজের মতো অত্যাবশ্যক খাদ্যদ্রব্য কিনতে টিসিবির পণ্য বিক্রি করা ট্রাকের পেছনে মানুষ সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে, কারণ পণ্যের আকাশছোঁয়া দামের কারণে তাদের জীবন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
আওয়ামী লীগের শাসনামলে ১৯৭৪ সালে দেশে বড় দুর্ভিক্ষ দেখা দেয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, একই দল এখন ক্ষমতায় থাকায় এখনও একই অবস্থা বিরাজ করছে।
নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের কথাও তুলে ধরেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক।
আরও পড়ুন: ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথ দখলের আহ্বান ড. কামালের
সরকারকে ‘ক্ষমতাচ্যুত’ করতে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন চান ড. কামাল
পল্টনে বাম জোটের হরতাল সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ
বাম গণতান্ত্রিক জোটের (এলডিএ) ডাকা অর্ধদিবস হরতাল পালনকালে রাজধানীর পল্টন মোড়ে হরতালের সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও জলকামান ব্যবহার করেছে।
ভোজ্যতেল ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য এবং ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম গণতান্ত্রিক জোট (এলডিএ) অর্ধদিবস হরতালের ঘোষণা দেয়। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে দেশব্যাপী ডাকা তাদের এ হরতাল শেষ হয়।
রিয়াজ মন্টু নামে এক হরতাল সমর্থক বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করছিলাম। কিন্তু দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ করে।’
আরও পড়ুন: বাম জোটের হরতাল: নারায়ণগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত ১০
হরতাল সমর্থকরা রাজধানীর পল্টন মোড়ে মিছিল বের করে এবং সকাল থেকে কাকরাইল থেকে জিপিও মোড় এবং প্রেসক্লাব থেকে দৈনিক বাংলা মোড় পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বামপন্থী নেতা-কর্মীরা শাহবাগ মোড়ও অবরোধ করেন।
সহকারী কমিশনার (ট্রাফিক-শাহবাগ) মো. নুরুন নবী জানান, সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ, ফার্মগেট থেকে শাহবাগ এবং প্রেসক্লাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত যানবাহন চলাচল কয়েক ঘণ্টা বন্ধ থাকে এবং এর ফলে রাজধানীর অন্যান্য স্থানেও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন: বাম জোটের হরতাল: খুলনায় মিছিলের প্রস্তুতিকালে আটক ৬
সোমবার সকাল ৬টায় শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এ হরতাল চলে।
এর আগে ১১ মার্চ দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতালের ডাকে এলডিএ।
বাম জোটের হরতাল: খুলনায় মিছিলের প্রস্তুতিকালে আটক ৬
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে খুলনায় হরতালের সমর্থনে বাম জোট মিছিলের প্রস্তুতিকালে ছয় জনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর গোলকমনি শিশু পার্ক ও ডায়াবেটিস হাসপাতালের সামনে থেকে তাদেরকে আটক করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার, আটক ১
তবে বাম জোটের ডাকা অর্ধদিবসের হরতাল খুলনায় তেমন কোন প্রভাব পড়েনি। সকাল ৯টার দিকে নগরীতে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস চলছে। এমনকি অফিস আদালতও স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে।
এ ব্যাপারে খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন জানান, রাস্তায় যান চলাচল বিঘ্নসৃষ্টি করে মিছিল করার প্রস্তুতিকালে কয়েকজনকে থানায় আনা হয়েছে। পরবর্তীতে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় স্মৃতিসৌধে ১৩ মোবাইল চোর আটক
প্রসঙ্গত, গত ১১ মার্চ বামজোটের পক্ষ থেকে ২৮ মার্চ সারাদেশে অর্ধদিবস হরতাল ডাকা হয়। এছাড়া গণসংহতি আন্দোলনের পক্ষ থেকেও ২৮ মার্চ হরতাল ও তা বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়া হয়। সিপিবি বলেছে এ হরতাল কোন দলের নয় এ হরতাল সবার। এ হরতাল দেশের সাধারণ মানুষের পক্ষে হরতাল।
মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাম জোটের অর্ধদিবস হরতাল সোমবার
ভোজ্যতেল ও অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য এবং ইউটিলিটি সার্ভিসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে সোমবার দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতাল পালন করবে বাম গণতান্ত্রিক জোট (এলডিএ)।
রবিবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে এলডিএ নেতারা জানান, এদিন সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত হরতাল চলবে।
দলটির সমন্বয়ক সাইফুল হক সর্বস্তরের জনগণকে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন দিয়ে ধর্মঘট সফল করার আহ্বান জানান। এছাড়া তিনি সরকারকে যেকোনো ধরনের উসকানি দেয়া থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান।
হরতালের সমর্থনে জোটটি ইতোমধ্যে কয়েক লাখ লিফলেট বিতরণ করেছে এবং দেয়ালে দেয়ালে পোস্টার সাঁটিয়েছে। এছাড়া দলটি ব্যাপক গণপ্রচার ও সারাদেশে সমাবেশ করেছে।
সাইফুল বলেন, ‘প্রচারণার সময় মানুষ আমাদের ধর্মঘটের ডাকে অভূতপূর্ব সাড়া দিয়েছে। দলমত নির্বিশেষে মানুষের মধ্যে এক ধরনের স্বতঃস্ফূর্ততা লক্ষ্য করা গেছে।’
তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিনা উসকানিতে তাদের প্রচারণায় বাধা দেয় এবং তাদের সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়।
তিনি বলেন, ‘আমি আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা জনগণের সমর্থনে শান্তিপূর্ণভাবে এই হরতাল পালন করতে চাই। আমরা আশা করি আমাদের ধর্মঘটের সময় কেউ আমাদের উসকানি দেবে না।’
হরতাল চলাকালে কোনো ধরনের উসকানিমূলক কাজের কারণে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার জন্য সরকার ও ক্ষমতাসীন দল দায়ী থাকবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।
সাইফুল জানান, সকাল ৬টায় এলডিএর জ্যৈষ্ঠ নেতারা পুরানা পল্টন এলাকাসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নেবেন এবং পিকেটিংয়ে যোগ দেবেন।
তিনি বলেন, ‘জনগণের সমর্থনে হরতাল সফল হবে। এই কর্মসূচিকে সফল করতে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ, দোকান মালিক, কর্মচারী, পরিবহন মালিক ও পরিবহন শ্রমিকদের এগিয়ে আসতে হবে।’
এর আগে গত ১১ মার্চ ইউটিলিটি সার্ভিস এবং ভোজ্যতেল, চাল, মসুর ডাল ও পেঁয়াজের মতো নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছিল দলটি।
গণফোরামের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১৫
রাজধানীতে একটি গ্রুপের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে গণফোরামের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন।
তবে দলের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন অসুস্থ থাকায় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
গত বছরের ৩ ডিসেম্বর দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ড. কামাল হোসেনকে বাদ দিয়ে একটি কাউন্সিলের মাধ্যমে মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বে দলের ১৫৭ সদস্যের নতুন কমিটি গঠন করায় গণফোরাম বিভক্ত হয়ে পড়ে।
ড. কামাল ও মোকাব্বির খান এমপির নেতৃত্বে আরেকটি দল শনিবার সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে কাউন্সিল করার কথা ছিল এবং মন্টুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপ একই সময়ে ক্লাবে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে।
মন্টুর নেতৃত্বাধীন গ্রুপের কিছু নেতাকর্মী মোকাব্বিরের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে দিতে কাউন্সিল ভেন্যুতে প্রবেশ করলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
এর আগে গণফোরাম থেকে যাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল, তারা 'পরিকল্পিতভাবে' কাউন্সিলে হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন মোকাব্বির।
হামলায় তাদের ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।
মোকাব্বির বলেন, ‘আমরা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিল আয়োজন করেছি। এটা পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি। কিন্তু কিছু দুর্বৃত্ত কাউন্সিলে হামলা করে, এতে আমিসহ আমাদের অনেককে আহত করেছে।’
যোগাযোগ করা হলে মোস্তফা মহসিন মন্টু দাবি করেন, তার অনুসারীদের কেউ কাউন্সিল ভেন্যুতে প্রবেশ করেনি।
তিনি বলেন, ‘সুব্রত চৌধুরী ও আমিসহ আমাদের সিনিয়র নেতারা আজ (শনিবার) প্রেসক্লাবেও যাননি। আমাদের মহানগর কমিটি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে একটি মানববন্ধনের আয়োজন করে এবং তারা তাদের কর্মসূচী শেষে চলে যায়।’
কাউন্সিল আহ্বানকারীদের সাথে ড. কামাল হোসেনের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও মন্টু দাবি করেন।
পড়ুন: ইসি নিয়ে সংলাপ: ৩ দফা দাবি গণফোরাম ও বিকল্পধারার
বিভক্ত হলো গণফোরাম, নতুন অংশের সভাপতি মন্টু