%E0%A6%86%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%B6%E0%A7%83%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%96%E0%A6%B2%E0%A6%BE
থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে হাইকোর্টে রিট
থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার জনস্বার্থে হাইকোর্টে হিউম্যান রাইটস্ অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার নিয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট সংযুক্ত করে এ রিট আবেদন দায়ের করে।
রিট আবেদনকারীরা হলেন- অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরী এবং অ্যাডভোকেট এখলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া।
রিটের পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ জানান, হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদনটি শুনানির জন্য উত্থাপন করা হবে।
রিটে থ্যালাসেমিয়া রোগ বিস্তার রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না এবং বিবাহ রেজিস্ট্রি ফরমে বর-কনের থ্যালাসেমিয়া রোগ সম্পর্কিত তথ্য কেন লিপিবদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হবে না, এই মর্মে রুল জারি করার আবেদন জানানো হয়েছে।
এছাড়া রিটে অন্তর্বর্তীকালীন আদেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ বন্ধে গাইডলাইন তৈরি করার জন্য ৭ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন এবং কমিটির ড্রাফট গাইডলাইন ৯০ (নব্বই) দিনের মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
থ্যালাসেমিয়া রোগ বিস্তার রোধে ছাত্র-ছাত্রী, সাধারণ জনগণ, সরকারি কর্মচারী ও অন্যান্য পেশার মানুষদের মধ্যে প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য বিবাদীদের ওপর নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বাস্থ্য মহাপরিচালকসহ মোট ৮ জনকে রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, থ্যালাসেমিয়া জিনগত অর্থাৎ বংশানুক্রমিক রোগ। এই রোগ থ্যালাসেমিয়ার জিনবহনকারী দুই বাবা-মায়ের মাধ্যমে সন্তানের দেহে সংক্রমিত হয়। তবে সচেতনতার অভাব এবং চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় অপ্রতুলতার কারণে দুই থ্যালাসেমিয়া জিন বাহকের বিয়ে বন্ধ করতে না পারায় এই রোগ ক্রমেই দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে বিস্তার লাভ করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই রোগ সম্পর্কে ব্যাপক জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুই থ্যালাসেমিয়া জিন বাহকের বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া বন্ধ করতে না পারলে আগামীতে এই রোগ প্রতিরোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। কারণ গবেষণায় দেখা গেছে, বাবা-মায়ের একজনও যদি থ্যালাসেমিয়া জিনের বাহক না থাকে বা সুস্থ থাকে তা হলে তাদের পরবর্তী বংশধরদের মধ্যে এই রোগ সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কম।
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন চিকিৎসা বিষয়ক জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১০ শতাংশের বেশি অর্থাৎ ১ কোটি ৮০ লাখেরও বেশি মানুষ থ্যালাসেমিয়া বাহক বা রোগী। এছাড়াও প্রতি বছর আরও ৭ হাজারের বেশি নতুন শিশু থ্যালাসেমিয়া রোগের জিনসহ জন্মগ্রহণ করছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানের মাত্র ১০ শতাংশ বাহককে দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে আগামী ৫০ বছরে এই সংখ্যা ৫০ শতাংশে উন্নীত হবে। দেশ ও জাতি হবে মেধাশূন্য, কমে যাবে মানুষের কর্মক্ষমতা।
থ্যালাসেমিয়ার চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি ও ব্যয়বহুল হওয়ায় অনেক পরিবারের পক্ষেই তা বহন করা সম্ভব হয় না। কারণ চিকিৎসায় রোগীকে প্রায় প্রতি মাসেই এক বা একাধিকবার রক্ত দিতে হয়। ২০১৭ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে একজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্য শুধু রক্ত সঞ্চালনের জন্য তার পরিবারকে বছরে প্রায় দেড় থেকে ২ লাখ টাকা খরচ করতে হয়। আরেক ধরনের চিকিৎসা হলো অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন, যা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এই চিকিৎসা পদ্ধতি আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত মাত্র দুজন থ্যালাসেমিয়া রোগীর ক্ষেত্রে প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
অর্পিত সম্পত্তির তদারকি-লিজের ক্ষমতা ডিসিদের: হাইকোর্ট
জামালপুরে দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত সাংবাদিকের মৃত্যু
জামালপুরের বকশীগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ২টা ৪৫ মিনিটে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ (মমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত গোলাম রব্বানী নাদিম বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি এবং একাত্তর টেলিভিশনের বকশীগঞ্জ উপজেলা সংবাদ সংগ্রহকারী হিসেবে কাজ করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, বুধবার রাতে নাদিম পেশাগত দায়িত্ব পালন শেষে বকশীগঞ্জ উপজেলা থেকে বাড়ি ফেরার পথে পাটহাটি এলাকায় দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়।
পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বকশীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাত ১২টার দিকে তাকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: পরিবারের অভিযোগ, সাংবাদিক নাদিমকে ইউপি চেয়ারম্যানের সমর্থকরা হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে
সকালে তার অবস্থার অবনতি হলে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এস এম শহিদুর রহমান তাকে মমেক হাসপাতালে রেফার করেন। বৃহস্পতিবার বিকালে মমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম অভিযোগ করেন, সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুর সমর্থকরা নাদিমের ওপর হামলা চালিয়ে তাকে হত্যা করেছে।
তিনি এ ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোহেল রানা জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ‘ভুক্তভোগীর পরিবার এফআইআর দায়ের করার পর মামলা করা হবে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
এদিকে সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও ফাঁসির দাবিতে বুধবার প্রেসক্লাব মিলনায়তনে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে জামালপুর প্রেসক্লাব।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক আজহার মাহমুদ মারা গেছেন
সাংবাদিক কামরুল ইসলাম চৌধুরীর মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর শোক
রাঙামাটিতে অপহরণের দুইদিন পর ৩ শ্রমিক উদ্ধার
রাঙামাটির রাজস্থলীর লংগাদুপাড়া এলাকা থেকে সোমবার অজ্ঞাত দুর্বৃত্তদের হাতে অপহৃত হওয়া তিন শ্রমিককে বুধবার রাতে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
উদ্ধারকৃত শ্রমিকরা হলেন- সোহাগ (২০), রূপক (১৮) ও বিশ্বজিৎ (২২)।
জানা যায়, লাঙ্গাপাড়ায় রাজস্থলী-বাঙ্গালহালিয়া সড়কে দেওয়াল নির্মাণ করছেন ১৪ নম্বর শ্রমিকের দল। তারা রাস্তার পাশে লেবার সেডে থাকে।
সোমবার রাত ৮টার দিকে ওই তিনজন ছাড়া বাকি শ্রমিকেরা লেবার শেড থেকে বেরিয়ে যান। একপর্যায়ে ৫-৬ জন দুর্বৃত্ত শ্রমিক শেড থেকে অস্ত্রের মুখে তাদের অপহরণ করে।
তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ করা হয়নি।
রাজস্থলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন জানান, স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর শুনে পুলিশ মঙ্গলবার ও বুধবার এলাকায় অভিযান চালিয়ে বুধবার রাতে তাদের উদ্ধার করে।
আরও পড়ুন: রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ ও জেএসএস সদস্যরা সশস্ত্র যুদ্ধে জড়িয়েছে
রাঙামাটিতে ইউপিডিএফ সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত
রাঙামাটিতে অস্ত্রসহ ইউপিডিএফ সদস্য আটক
কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ২ জনের ফাঁসির আদেশ
কুমিল্লার হোমনায় ২০১০ সালে আবদুল করিম হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
বুধবার (১৪ জুন) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন।
আরও পড়ুন: যশোরে শিশুকে ধর্ষণ করে হত্যার অভিযোগে যুবকের ফাঁসির আদেশ
তবে এ মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মজনু মিয়া ও কবির মিয়া দুই জনের বাড়ি কুমিল্লা হোমনা উপজেলার বাগমারা পশিচমপাড়া গ্রামে।
কুমিল্লার আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট সেলিম মিয়া মামলার বিবরণে জানায়, ২০১০ সালের ২৮ জুলাই বাগমারা পশিচমপাড়া গ্রামের আবদুল করিমকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করে।
চারদিন পর ২ আগস্ট দুপুরে হোমনার বালুর মাঠের পশ্চিমে তিতাস নদীতে থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহতের ভাই মোশারফ হোসেন বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে হোমনা থানায় মামলা দায়ের করেন।
ওই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়।
আদালত দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ডসহ ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন এপিপি অ্যাডভোকেট সেলিম মিয়া।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে জোড়া খুনের মামলায় ৯ জনের ফাঁসি
নারায়ণগঞ্জে চার খুন: ২৩ ফাঁসির আসামির ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ৪ এপ্রিল
বাফুফে’র দুর্নীতি, অর্থ পাচারের বিষয়ে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কোনো মতামত প্রকাশ নয়: হাইকোর্ট
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) দুর্নীতি-অর্থ পাচার, জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ বিষয়ে দুদকের অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, ব্যারিস্টার সুমনসহ যেকোন গণমাধ্যমকে কোন ধরণের মতামত প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (১৪ জুন) সালাউদ্দিনের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি করে বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই হাত হারানো শিশুকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
আদালতে কাজী সালাউদ্দিনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, অ্যাডভোকেট মমতাজ উদ্দিন ফকির। অপর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
ব্যারিস্টার অনিক আর হক জানিয়েছেন, দুদকের অনুসন্ধান শেষ না হওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কেউ কোন মতামত প্রকাশ করতে পারবে না মর্মে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ১৫ মে হাইকোর্ট বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনসহ বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছেন।
ব্যারিস্টার সুমন ফুটবল একাডেমির পক্ষে করা রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। চার মাসের মধ্যে এ অনুসন্ধান করতে দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে বাফুফে সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী ও আবু নাঈম সোহাগের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার, জালিয়াতি, অর্থ আত্মসাতের অনুসন্ধানে প্রয়োজনীয় আইনি পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, দুদকের চেয়ারম্যান, বিএফআইইউ প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ বাফুফের কর্তা-ব্যক্তিদেরকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
এই রুলের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বাফুফে’র দুর্নীতি ও অর্থ পাচার বিষয়ে কোন ধরণের মতামত প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনের বিষয়ে প্রচারিত পাবলিক ডোমেইনে থাকা ভুয়া ও মানহানিকর তথ্য অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করা হয়।
আবেদনে কাজী সালাউদ্দিনের মৌলিক অধিকার হিসেবে মর্যাদা ও গোপনীয়তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনকে (বিটিআরসি) কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না ও তার বিরুদ্ধে মানহানি ও যে কোনো ভুয়া তথ্য তৈরি এবং প্রচার থেকে বিরত রাখতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
একইসঙ্গে ন্যাশনাল ব্রডকাস্টিং পলিসি ২০১৪ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিতে আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, সেই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়।
এ রুল বিবেচনাধীন থাকা অবস্থায় পাবলিক ডোমেইনে থাকা কাজী সালাউদ্দিনেকে নিয়ে করা মানহানিকর ও ভুয়া তথ্য অপসারণ করতে স্বরাষ্ট্র সচিব ও বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা চাওয়া হয়। একইসঙ্গে ভবিষ্যতে কাজী সালাউদ্দিনের বিষয়ে মানহানিকর ও ভুয়া তথ্য প্রচারে বিরত থাকতে নিষেধাজ্ঞা চাওয়া হয়।
রিটে স্বরাষ্ট্র সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন, একাত্তর টিভি, একাত্তর টিভির স্পোর্টস ইনচার্জ এহসান মাহমুদ, যুগান্তরের সিনিয়র স্পোর্টস জার্নালিস্ট মোজাম্মেল হক চঞ্চল, গ্লোবাল স্পোর্টসের সমন্বয়ক শাকিল মাহমুদ চৌধুরী, নীলফামারী জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়শনের সভাপতি আরিফ হোসেন মুন, একাত্তর টিভির স্পোর্টস জার্নালিস্ট মেহেদী নাইম, পার্থ বণিক, মাহমুদুল হাসান সজিব, অর্ণব বাপ্পী, এহতেশাম সবুজ, মেহেদী হাসান, ফাহিম হাসান, রিয়াসাদ আজিম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন, কহিনুর কনাকে বিবাদী করা হয়। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট এ বিষয়ে মতামত প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।
আরও পড়ুন: শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
রাজধানীতে টিপু-প্রীতি খুন: ২ আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
রাজধানীর শাহজাহানপুরে মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন প্রীতি হত্যা মামলায় দুই আসামিকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। মঙ্গলবার (১৩ জুন) তাদের আগাম জামিনের জন্য আবেদন করা হলে বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকার্ট বেঞ্চ কার্যতালিকা থেকে তা বাদ দেন।
দুই আসামি হলেন- মো. সোহেল ও শামসুল হায়দার উজ্জ্বল।
আরও পড়ুন: 'পাকিস্তান' শব্দ যুক্ত থাকা আইনের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া এবং আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. কামাল হোসেন।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভূঁইয়া জানান, আসামিদের আগাম জামিন না দিয়ে আবেদন কার্যতালিকা থেকে ডিলিট করে জামিন আবেদন ফেরত দেন।
এর আগে গত ৫ জুন এ মামলায় ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযুক্ত দাখিল করে ডিবি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের পরিদর্শক ইয়াসিন শিকদার বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, তদন্তে ৩৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেলেও এক্সেল সোহেল নামে এক আসামির পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা পাওয়া যায়নি। তাই তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে। বাকি ৩৩ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আগামী ১৫ জুন মামলাটির পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য রয়েছে।
গত বছর ২৪ মার্চ রাত পৌনে ১০টার দিকে মতিঝিল এজিবি কলোনি কাঁচাবাজার সংলগ্ন রেস্টুরেন্ট থেকে বাসায় ফেরার পথে শাজাহানপুর আমতলা ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের সামনে দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু এবং কলেজছাত্রী প্রীতি। এছাড়া টিপুর গাড়িচালক গুলিবিদ্ধ হন।
এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাত পরিচয়ের ব্যক্তিদের আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: বায়ু দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচান: পরিবেশ অধিদপ্তরকে হাইকোর্ট
টিপু-প্রীতি হত্যা: বিডি বাবুকে জামিন দেননি হাইকোর্ট
র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যুর তদন্ত ২ মাসের মধ্যে শেষ করুন: হাইকোর্ট
নওগাঁয় র্যাব হেফাজতে ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে আরও দুই মাস সময় বেধে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দাখিল করতে সময় চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১৩ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
শুনানিকালে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে আদালত বলেছেন, এটা সেনসিটিভ বিষয়। দুই মাস ক্রস করবেন না। দুই মাস কিন্তু দুই মাসই। আর দেরি করবেন না।
আরও পড়ুন: জেসমিনের মৃত্যু মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনে নয়: চিকিৎসক
এর আগে গত ৫ এপ্রিল হাইকোর্টের উপরোক্ত বেঞ্চ আটকের পর র্যাব হেফাজতে নওগাঁর সুলতানা জেসমিন নামে এক নারীর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।
কমিটিতে নওগাঁর জেলা জজ পদ মর্যাদার একজন এবং সেখানকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে রাখতে বলা হয়। তদন্ত সম্পন্ন করে কমিটিকে ৬০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করতে বলা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। তদন্তকালীন সময়ে জেসমিনকে আটকের সঙ্গে র্যাবের যেসব সদস্য জড়িত ছিলেন তাদেরকে দায়িত্ব পালন থেকে সরিয়ে রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে মামলা ছাড়াই সুলতানা জেসমিনকে তুলে নেওয়া ও পরবর্তী পদক্ষেগুলো কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিষয়টি কার্যতালিকায় ওঠে।
আদালতে রিটের পক্ষে আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম খান ও তৌফিক সাজাওয়ার।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবের পক্ষে দুই মাস সময়ের আরজি জানিয়ে শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিবকে (সমন্বয় ও সংস্কার) আহ্বায়ক করে গত ২২ মে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটি রাজশাহী ও নওগাঁ সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে।
আদালত বলেন, তদন্ত প্রক্রিয়া কি সম্পূর্ণ হয়েছে? তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এভিডেন্স ও তথ্যাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হয়নি।
কমিটি প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দুই মাস সময় বাড়ানোর প্রার্থনা করেছে।
আদালত বলেন, কমিটি কবে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল? জবাবে সমরেন্দ্র বিশ্বাস বলেন, গত ২৯ থেকে ৩১ মে।
যেসব মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয়েছে, তা জব্দ করা হয়েছে। এগুলোর ফরেনসিক টেস্ট করা হবে। সার্বিক বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে।
রিট আবেদনকারী আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, গত ৫ এপ্রিল আদালত আদেশ দেন। ২২ মে কমিটি গঠন করা হয়। আদালতের আদেশের পর এক মাসের বেশি সময় লেগেছে কমিটি গঠন করতে। ধীরগতিতে করেছে। এক মাস সময় দেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে জেসমিনের মৃত্যু: উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, নওগাঁ ও নাটোরের র্যাবকে বিবাদী করে রিট আবেদনকারী রিট করেন। এটি সংশোধন করতে হয়েছে, যা রিট আবেদনকারী আদালতে আনেননি।
দুই মাস সময় দিলে তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা যাবে।
এ সময় আদালত বলেন, বিষয়টি সেনসিটিভ। বারবার সময় নেওয়া যাবে না। দুই মাস কিন্তু দুই মাস। এর মধ্যে শেষ করবেন। পরে আদালত দুই মাস সময় দিয়ে আদেশ দেন।
স্থানীয় সরকারের রাজশাহী বিভাগের পরিচালক মো. এনামুল হকের মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৫ এর জয়পুরহাট ক্যাম্পের একটি দল গত ২২ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় নওগাঁ শহরের নওযোয়ান মাঠের সামনে থেকে সুলতানা জেসমিনকে আটক করে।
এনামুল হককে সঙ্গে নিয়েই র্যাব ওই অভিযান চালায়।
এনামুল হকের অভিযোগ, সুলতানা জেসমিন ও আল-আমিন নামের এক ব্যক্তি তাঁর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখাচ্ছিলেন বিভিন্ন ব্যক্তিকে।
আটকের পর সুলতানা জেসমিন অসুস্থ হয়ে পড়ায় প্রথমে তাঁকে নওগাঁর হাসপাতালে ও পরে রাজশাহীতে নেওয়া হয়। ২৪ মার্চ সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান তিনি।
পরিবারের অভিযোগ, র্যাব হেফাজতে নির্যাতনের কারণে জেসমিনের মৃত্যু হয়েছে।
সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর পর জানা যায়, তার বিরুদ্ধে রাজশাহীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে যুগ্ম সচিব এনামুল হক একটি মামলা করেছেন, যেটি রেকর্ডের সময় ২৩ মার্চ বিকেলে। এ মামলার আসামি জেসমিন ও তাঁর কথিত সহযোগী মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট আল-আমিন।
এদিকে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু সংক্রান্ত প্রকাশিত খবর গত ২৭ মার্চ হাইকোর্টের নজরে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক।
পরে আদালতের নির্দেশে ২৮ মার্চ তিনি হাইকোর্টে এ বিষয়ে রিট আবেদন দায়ের করেন। রিটে র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ ও র্যাবের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে মৃত্যু: জেসমিনের ছেলে ও ভগ্নিপতিকে জিজ্ঞাসাবাদ
সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে ৫ জনের কারাদণ্ড
গাজীপুরে সাংবাদিক পরিচয়ে ভূমি কার্যালয়ে এসে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তার কাছে চাঁদা দাবির অভিযোগে পাঁচজনকে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার (১৩ জুন) দুপুরে উপজেলা ভূমি অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
জানান যায়, অভিযুক্তেরা সাংবাদিক পরিচয়ে ভূমি কার্যালয়ে এসে এসে গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উম্মে হাফছা নাদিয়ার কাছে চাঁদা দাবি করে। বিষয়টিতে সন্দেহ হলে সহকারী কমিশনার তাদের পত্রিকার পরিচয়পত্র যাচাই বাছাই করেন। তাতেই প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া যায়।
প্রতারণার প্রমাণ মিলে যাওয়ায় তাদের প্রত্যেককে ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
আরও পড়ুন: সিলেটে ৩ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বিটিভির খোঁজ খবর অনুষ্ঠান ও সাপ্তাহিক এশিয়া বার্তার সাব-এডিটর পরিচয়দানকারী সাংবাদিক নেত্রকোনার নিউটাউন এলাকার মৃত মুজিবুর রহমানের ছেলে মো. মনিরুজ্জামান (৫৪);দৈনিক আজকের আলোকিত সকাল পত্রিকার ক্রাইম রিপোর্টার গাজীপুরের পূবাইল করমতলা এলাকার বাহার আলী দেওয়ানের ছেলে মাজহারুল ইসলাম অনিক (২৪); দৈনিক আজকের আলোকিত সকাল পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি টঙ্গী আরিচপুর এলাকার বাচ্চু সরকারের ছেলে সরকার নাইমুল ইসলাম সেলিম (৩৪); দৈনিক আজকের আলোকিত সকাল পত্রিকার রিপোর্টার ময়মনসিংহ জেলার ফুলবাড়িয়া থানার সোয়াইবপুর গ্রামের ফখরুল ইসলামের মেয়ে রোজিনা আক্তার (১৯) এবং একই পত্রিকার ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি টঙ্গীর এরশাদ নগর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে কামরুজ্জামান রানা (২৪)।
শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিম ও ২ পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্টে তলব
উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া কয়েকজন আসামি ও তাদের স্বজনদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ৭২ লাখ টাকা আদায়ের ঘটনায় শরীয়তপুরের নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির এবং পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে শরীয়তপুরের মুখ্য বিচারিক হাকিমকেও তলব করা হয়েছে। আগামী ১৬ জুলাই তাদের সশরীরে হাজির হতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: তাফসির আউয়ালকে বিদেশ যেতে বাধা না দিতে হাইকোর্টের নির্দেশ
হাজির হয়ে উচ্চ আদালতের আগাম জামিনের পরও কেন গ্রেপ্তার ও নির্যাতন করে ৭২লাখ টাকা আদায় করা হয়েছে এবং আসামিদেরকে কেন জামিন দেওয়া হয়নি তার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এক ফৌজদারি বিবিধ আবেনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৩ জুন) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান।
এর আগে গত ১১ জুন বিষয়টি আদালতের নজরে আনেন অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান।
তখন আদালত বলেন, লিখিত আবেদন দাখিল করুন। আমরা ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। পরে তিনি লিখিত আবেদন করেন।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া কয়েকজন আসামি ও তাদের স্বজনদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে ৭২ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। নড়িয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির এবং পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করা হয়।
ভুক্তভোগীর বড় ভাই আবু জাফর ঠান্ডু জেলা পুলিশ সুপার বরাবর অভিযোগ করেন। এ ঘটনায় শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মোহাম্মদ বদিউজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
এছাড়া ঘটনায় অভিযুক্তদের সম্পৃক্ততা পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ মে দ্রুত বিচার আইনে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানায় একটি ছিনতাই মামলা হয়। মামলায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার নাওডোবা আহম্মেদ চোকদার কান্দি এলাকার সাদ্দাম চোকদার, বকুল চোকদারসহ নয়জনকে আসামি করা হয়।
সেই মামলায় ২৯ মে সাদ্দাম, বকুল, সাইদুল উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বের হন।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই হাত হারানো শিশুকে দেড় কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ কেন নয়: হাইকোর্ট
জামিনে আসার পর ৩০ মে রাতে তারা এ মামলার আরেক আসামি আনোয়ারকে নিয়ে ঢাকা কেরানীগঞ্জ সাদ্দামের বন্ধু আলমগীর চোকদারের বাসায় যান। ওইদিন রাতে তথ্য পেয়ে সেই বাসায় হাজির হন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির ও ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বেপারীসহ ১০-১২ পুলিশ সদস্য।
অভিযোগে বলা হয়, এ সময় সাদ্দাম তাদের জামিনের কাগজ দেখালে তা ছিঁড়ে ফেলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। পরে পুলিশ সাদ্দাম ও বকুলকে লাথি, কিল-ঘুষি, চড়-থাপ্পড়সহ পুলিশের লাঠি (ডান্ডা), কাঁঠ, হাতুড়ি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে প্লাস দিয়ে হাত ও পায়ের নখ তুলে ফেলা হয়।
সাদ্দাম পানি পান করতে চাইলে ছোট ভাই বকুলকে দাঁড় করিয়ে মুখে প্রস্রাব করতে বলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাসেল মনির। পরে সাদ্দামের শরীরে প্রস্রাব করেন বকুল। এমন নির্যাতন চলে রাত ১টা থেকে পরদিন ৩১ মে সকাল ৮টা পর্যন্ত।
অভিযোগে আরও বলা হয়, কিছুক্ষণ পর ওই চারজনকে গামছা ও কালো কাপড় দিয়ে চোখ বেঁধে গাড়িতে করে জাজিরা প্রান্তে পদ্মাসেতুর নিচে আনা হয়। পরে সাদ্দাম ও বকুল এবং সাইদুল ও আনোয়ারকে পৃথক দুই স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসি সাদ্দাম-বকুলকে বলেন, সাইদুল-আনোয়ারকে ক্রসফায়ার দিয়ে দিয়েছি। তোরা ৭২ লাখ টাকা দিবি, তা না হলে তোদেরও ক্রসফায়ার দিয়ে দেওয়া হবে।
এভাবে সারাদিন রেখে রাতে পদ্মাসেতু দক্ষিণ থানায় এনে ৭২ লাখ টাকা চাঁদা চেয়ে বেত ও কাঁঠ, কোদালের বাট, লাঠি দিয়ে আবার বেধড়ক মারা হয় সাদ্দাম ও বকুলকে। সারারাত চলে এ নির্যাতন।
এরপর টাকার জন্য বকুলের স্ত্রী সানজিদা, দুই বছরের সন্তান, বাবা রশিদ চোকদার, মা রমেলা ও চাচাতো ভাই আবু জাফর ঠান্ডুকে থানায় এনে সারারাত আটকে রাখা হয় এবং শারীরিক নির্যাতন করা হয়।
পরে আত্মীয়-স্বজনরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসির কাছে পাঁচটি চেকের মাধ্যমে ৭২ লাখ টাকা দিলে নির্যাতন থেকে মুক্তি মেলে সাদ্দাম ও বকুলের।
এ দুই দিন যন্ত্রণায় চিৎকার করলেও তাদের খাবার ও ওষুধ দেয়নি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও ওসি।
আরও পড়ুন: অর্পিত সম্পত্তির তদারকি-লিজের ক্ষমতা ডিসিদের: হাইকোর্ট
অনলাইন জালিয়াতি চক্রের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার
বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট (এটিইউ) সোমবার রাজধানীর ভাটারা ও মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে অনলাইন প্রতারক চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন- তৌহিদ মোল্লার ছেলে মো. তুর্জাউল হোসেন তুর্জো(২২), আব্দুল মোল্লার ছেলে জুলহাস হোসেন ওরফে শায়ন(৩০), মো. বখতিয়ার গাজীর ছেলে মো. মনির হোসেন(২৪), মো. কায়েস বিশ্বাসের ছেলে মো. রাজিব বিশ্বাস (২১), আবু জার বিশ্বাসের ছেলে মো. মাহফুজ বিশ্বাস ওরফে মাহফুজ(২৭) ও আব্দুল আল মুকিত কাওসার (২১)।
আরও পড়ুন: দলিল জালিয়াতির মামলায় জাপার আহ্বায়ক গ্রেপ্তার
এটিইউ সদর দপ্তরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসলাম খান (মিডিয়া ও সচেতনতা বিভাগ) বলেছেন, খবর পেয়ে এটিইউ -এর একটি দল সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নগরীর ভাটারা ও মোহাম্মদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।
অভিযানের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, ১৮টি মোবাইল ফোন সেট এবং দুটি হার্ডডিস্ক উদ্ধার করেছে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, অনলাইন প্রতারক চক্র ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণা করে আসছে।
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ঋণ জালিয়াতির মামলায় রিজেন্ট সাহেদের জামিন