আইনশৃঙ্খলা
সাংবাদিক গ্রেপ্তার ও মামলা দায়েরের ঘটনায় ইরাব’র উদ্বেগ
দৈনিক প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা দায়ের এবং পত্রিকাটির সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে নিন্দা জানিয়েছে এডুকেশন রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ইরাব)।
একই সঙ্গে দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মাহবুবুল আলম লাবলুর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়েরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
ইরাব সভাপতি মীর মোহাম্মদ জসিম ও সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসাইন এক বিবৃতিতে এসব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার সব সাংবাদিকের মুক্তি এবং বিভিন্ন সময়ে দেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নির্যাতনের ঘটনার বিচারের দাবি জানান ইরাব’র নেতারা।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক মাহবুব আলম লাবলুর বিরুদ্ধে মামলায় বিএসআরএফ’র উদ্বেগ
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের উদ্বেগ
প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) মামলার আসামি প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে শুক্রবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়েছে।
কাশিমপুর কারাগার-১ এর সুপার শাহজাহান আহমেদ জানান, দুপুর দেড়টার দিকে তাকে বহনকারী একটি প্রিজন ভ্যান কাশিমপুর কারাগারে পৌঁছায়।
এর আগে, বৃহস্পতিবার সাংবাদিককে ঢাকার একটি আদালতে হাজির করা হলে রমনা থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে (ডিএসএ) দায়ের করা মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ ৩ জনকে লিগ্যাল নোটিশ
পরে তাকে কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
গত ২৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় শামসকে তার বাসা থেকে সাদা পোশাকের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সদস্যরা ধরে নিয়ে যায়।
একই দিন প্রথম আলো ওয়েবসাইটে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন’ প্রকাশের অভিযোগে শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন এক যুবলীগ নেতা।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠালেন আদালত
চট্টগ্রামে দুদকের মামলা থেকে ৫ জনকে অব্যাহতি দিতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন
চট্টগ্রামে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ-স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগের দায় থেকে সাবেক এক মন্ত্রীপুত্রসহ ৫ আসামিকে দায়মুক্তি দিতে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন তদন্তকারী সংস্থা দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. আতিকুল হক।
এতে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) গ্রাহক ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলামের ছেলে মুজিবুর রহমানসহ অন্য যাদের অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তারা হলেন- কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ার ও সার্ভিসেস) মো. সারওয়ার হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত দক্ষিণ জোনের টেকনিশিয়ান (সার্ভেয়ার) মো. দিদারুল আলম, ব্যবস্থাপক মুজিবুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (বিপণন) মোহাম্মদ আলী চৌধুরী।
চট্টগ্রাম আদালতের দুদকের জিআরও আবদুল লতিফ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
আরও পড়ুন: কৃষি ব্যাংকের ৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
তিনি বলেন, ‘দুদক একটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। মামলার প্রতিবেদন পাওয়ার পর মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়েছে। আগামী ৯ এপ্রিল এ প্রতিবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।’
জমা দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনে দুদক উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ায়, এম এ সালামের স্ত্রীর কোনও অভিযোগ না থাকায়, সরকার কোনও আর্থিক ক্ষতি না হওয়ায় এবং ঘুষ লেনদেনের কোনও সাক্ষ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হলো।’
দুদক সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ১০ জুন দুদকের চাকরিচ্যুত উপসহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন বাদী হয়ে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ, স্থানান্তর ও নতুন সংযোগ দেওয়ার অভিযোগে মামলাটি করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর হালিশহর এলাকার বাসিন্দা এম এ সালামের (বর্তমানে মৃত) নামে বরাদ্দ করা ১৮টি অব্যবহৃত দ্বৈত চুলার সংযোগ ছিল। এরমধ্যে ১২টি নগরের চান্দগাঁও থানার সানোয়ারা আবাসিক এলাকার গ্রাহক মুজিবুর রহমানের নামে স্থানান্তর করা হয়। এ কাজে সালামের স্ত্রীর নামে ভুয়া চুক্তিনামা করা হয়। সালাম ও মুজিবুরের গ্রাহক সংকেত পৃথক হওয়ায় সংযোগ স্থানান্তরে আইনগত কোনও বৈধতা নেই। এছাড়া ২০১৬ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গ্যাস সংযোগ দেওয়া বন্ধ থাকলেও সে সিদ্ধান্ত অমান্য করে মুজিবুরের নামে আরও ১০টি নতুন সংযোগ দেওয়া হয়।
২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে ২০১৮ সালের ২ আগস্ট পর্যন্ত এসব সংযোগ দেওয়া হয়। মামলা করার পরদিন অবৈধভাবে দেওয়া ২২টি গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে কেজিডিসিএল।
আরও পড়ুন: চসিক কার্যালয়ে দুদকের অভিযান, মশার ওষুধ কেনায় অনিয়ম
দুদকের চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়া ৪৭৩ নথি আদালতে দাখিলের নির্দেশ
বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার বন্ধে পুলিশ কর্মকর্তাদের সক্রিয় হওয়ার আহ্বান আইজিপির
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার এবং বৈধ অস্ত্রের অবৈধ ব্যবহার রোধে নিয়মিত ‘গানচেকিং’ করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে ফেব্রুয়ারি মাসের অপরাধ পর্যালোচনা ও সাম্প্রতিক ইস্যুতে তিনি এসব কথা বলেন।
রমজান ও ঈদ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও অপরাধ দমনে জোরালো কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
আরও পড়ুন: যে কোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পুলিশ বদ্ধপরিকর: আইজিপি
তিনি বলেন, ঈদ উপলক্ষে ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টিসহ অন্যান্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ ধরনের অপরাধ দমনে নজরদারি জোরদার করতে হবে।
তিনি বিট কর্মকর্তাদের নিজ নিজ এলাকার প্রতিটি ঘটনা সম্পর্কে জানতে এবং সে অনুযায়ী তাদের নিজ এলাকায় কিছু ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
আইজিপি ঘরমুখো মানুষের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে এবং সড়ক দুর্ঘটনা রোধে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ফিটনেসবিহীন বাস ও লঞ্চের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।
তিনি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট প্রধানদের নির্দেশ দেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলাম দেশের সামগ্রিক অপরাধ পরিস্থিতি যেমন ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, হত্যা, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদক ও অস্ত্র উদ্ধারের পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন।
সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (প্রশাসন) মো. কামরুল আহসান, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক, র্যাবের মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মনিরুল ইসলামসহ অন্যান্য অতিরিক্ত আইজিপিগণ এবং ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, সকল মহানগর পুলিশের কমিশনার ও রেঞ্জের ডিআইজি উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: আইন মেনেই পুলিশ বিএনপির ৫৩ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে: আইজিপি
নির্বাচন কমিশনের দেয়া দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকারবদ্ধ পুলিশ: আইজিপি
ময়মনসিংহের সেই শিশুকে ১৩ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের
ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তঃসত্ত্বা মায়ের মৃত্যুর সময় অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া শিশু ফাতেমা ও তার পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে থাকা ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে শিশু ও শিশুর পরিবারকে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য গঠিত ট্রাস্টি বোর্ডকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। এ টাকা দিয়েও সঞ্চয়পত্র কিনে দিতে বলেছেন আদালত। সঞ্চয়পত্রের লভ্যাংশ দিয়ে শিশু ফাতেমা, তার দুই ভাই-বোন ও দাদীর সংসারের ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বৃহস্পতিবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ মাহসিব হোসাইন। ট্রাস্টি বোর্ডের পক্ষে ছিলেন রাফিউল ইসলাম ও রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় অভিযুক্ত ট্রাকচালক গ্রেপ্তার
রিটকারী আইনজীবী সৈয়দ মাহসিব হোসেন বলেন, অলৌকিকভাবে বেঁচে যাওয়া শিশুর জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে পাওয়া ১৩ লাখ ১১ হাজার টাকা ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসকের কাছে রয়েছে। এ টাকা দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনে শিশু ফাতেমা, তার ভাই ইবাদত হোসেন ও বোন জান্নাতের কল্যাণে ব্যয় করতে বলেছেন আদালত। এছাড়া, ট্রাস্টি বোর্ডকেও দুর্ঘটনার ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী রাফিউল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, আদালত আদেশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে রিটকারী আইনজীবীকে ট্রাস্টি বোর্ডে একটি আবেদন করতে বলেছেন। আবেদন পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ট্রাস্টি বোর্ডকে নিহত রত্না বেগমের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, গত বছরের ১৬ জুলাই ত্রিশালের কোর্ট ভবন এলাকায় রাস্তা পার হওয়ার সময় ট্রাক-চাপায় প্রাণ হারান অন্তঃসত্ত্বা রত্না বেগম (৩২), তার স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৪০) এবং তাদের ছয় বছরের মেয়ে সানজিদা। এ সময় অলৌকিকভাবে মায়ের গর্ভ ফেটে ভূমিষ্ঠ হয় ফুটফুটে এক নবজাতক। পরে নবজাতকটিকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
সেখানে নেওয়ার পর জানা যায়, জীবিত আছে নবজাতকটি। পরবর্তীতে যার নাম রাখা হয় ফাতেমা।
আরও পড়ুন: জেসমিনকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
ঢাবিতে শিক্ষার্থীদের কান-মুখ খোলা রাখতে দেয়া নোটিশের কার্যকারিতা হাইকোর্টে স্থগিত
সিলেটে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলের মৃত্যুদণ্ড
সিলেটের গোলাপগঞ্জে মা-বাবাকে হত্যার দায়ে ছেলেকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সকালে সিলেট জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিনিয়র দায়রা জজ মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম-আতিকুর রহমান রাহেল (৩০)।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা জানান, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সিলেটের গোলাপগঞ্জে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে বাবা আবদুল করিম খান (৬০) ও মা মিনারা বেগমকে (৫০) কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেন আতিক হোসেন খান ওরফে আতিকুর রহমান রাহেল নামক এক ব্যক্তি।
পরে, তার ভাই দেলোয়ার হোসেন বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পরবর্তীতে ২৮ মার্চ গোলাপগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত আতিককে গেপ্তার করে। এরপর ধারাবাহিক বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে রায়ের তারিখ ঘোষণা করেন সিলেট জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অ্যাডভোকেট নিজাম উদ্দিন আহমদ জানান, সকল সাক্ষ্য প্রমাণে আতিকুর রহমান দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় আদালত মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
তবে, রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২৭ মার্চ সকালে উপজেলার ঢাকা দক্ষিণ ইউনিয়নের সুনামপুর গ্রামে আবদুল করিম খান এর ছেলে আতিক হোসেন খান ওরফে আতিকুর রহমান রাহেল বাড়ির সামনের গাছ কাটতে গেলে তার বাবা করিম খান ও তার মা মিনারা বেগম বাধা দেন। এসময় তাদের সঙ্গে ছেলের বাকবিতণ্ডা হলে এক পর্যায়ে আতিক হোসেন খান উত্তেজিত হয়ে হাতে থাকা কোদাল ও দা দিয়ে বাবা ও মায়ের ওপর হামলা করেন।
স্থানীয়রা তাদের চিৎকার শুনে এগিয়ে আসলে ছেলে আতিক হোসেন খান ওরফে আতিকুর রহমান রাহেল পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই করিম খান মৃত্যুবরণ করেন। তাৎক্ষণিক স্থানীয়রা মিনারা বেগমকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর কিছুটা সুস্থ হলে মিনারা বেগমকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে হঠাৎ আবার শরীর খারাপ হয়ে গেলে গোলাপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন: সিলেটে ছেলের দাফনের পর বাবার মৃত্যু
সিলেটে অটোরিকশা চালকের লাথিতে ক্যান্সার রোগীর মৃত্যু!
সুলতানার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হয়েছে: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, নওগাঁয় র্যাবের হেফাজতে মৃত সুলতানার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হয়েছে।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই যে যখন ওই নারীকে নওগাঁ থেকে আটক করা হয়েছিল; তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো মামলা হয়নি। এর একদিন পর মামলা দায়ের করা হয়। সুতরাং, এক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে।’
বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয় প্রাঙ্গণে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমার বক্তব্য হলো ওই নারী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ধরা পড়েননি।
দু-একটি ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যেখানেই এই আইনের অপব্যবহার হচ্ছে সেখানেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
নওগাঁ পৌরসভা-চন্ডিপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহকারী সুলতানাকে (৩৮) ২২ মার্চ র্যাব-৫ এর একটি টহল দল তুলে নিয়ে যায়।
পরে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতাল এবং তারপর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গত ২৪ মার্চ সেখানে তার মৃত্যু হয় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
প্রথম আলোর প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যে মামলাগুলো করা হয়েছে বা করা হচ্ছে সেগুলো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নয়, অন্যায়ের বিরুদ্ধে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি স্বীকার করি আপনারা নির্ভীক সাংবাদিক। জনগণের কাছে সত্য প্রকাশ করলে সরকার কখনো বাধা দেবে না।’
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন আমবাগান এলাকার বাসা থেকে শামসকে সাদা পোশাকের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) লোকজন ধরে নিয়ে যায়।
একই দিন দৈনিক প্রথম আলোতে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন’ প্রকাশের অভিযোগে শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন যুবলীগ নেতা।
বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিক শামসকে ছেড়ে দেওয়া হয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, গত ২৬ মার্চ প্রথম আলোয় প্রকাশিত প্রতিবেদন নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান শামসকে ছেড়ে দেয়।
তিনি বলেন, ‘এরপর বিভিন্ন স্থানে বেশ কয়েকটি মামলা হওয়ার পর তাকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরও মামলা হচ্ছে বলে আমরা শুনেছি।’
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে আইনমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
সাংবাদিককে আটক রাখা এবং ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত কোনো তথ্য না পাওয়া সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমি গতকাল স্পষ্ট করে বলেছি, একটা সংবাদের ভিত্তিতে দুই-একটা মামলা হচ্ছে বলে আমি শুনেছি। কিন্তু মামলাগুলো কোথায়-কখন হচ্ছে সেটার বিস্তারিত তথ্য আমার কাছে এখন পর্যন্ত নেই।’
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠালেন আদালত
এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘যেসব সাংবাদিক সত্য তথ্যের ভিত্তিতে সংবাদ করেন, তাদের ভয় পাওয়ার দরকার নেই।’
গত ২৯ মার্চ ভোর সাড়ে ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) সংলগ্ন আমবাগান এলাকার বাসা থেকে শামসকে সাদা পোশাকে সিআইডি তুলে নিয়ে যায়।
বিকালে দৈনিক প্রথম আলোতে ‘মিথ্যা ও বানোয়াট প্রতিবেদন’ প্রকাশের অভিযোগে শামসের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন যুবলীগ নেতা।
বৃহস্পতিবার ঢাকার একটি আদালত শামসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক শামস আদালতে
প্রথম আলোর সম্পাদকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা
চট্টগ্রামে দৈনিক যুগান্তরের সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতার মামলা
চট্টগ্রামে ‘দৈনিক যুগান্তর’- এর সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইবুনাল আইনে মামলা করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের সাবেক নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর। বুধবার (২৯ মার্চ) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোহাম্মদ জহিরুল কবিরের আদালতে মামলাটি করা হয়।
মামলার আসামি করা হয়েছে- দৈনিক যুগান্তরের ঢাকা অফিসের স্টাফ রিপোর্টার মাহাবুবুল আলম বাবলুকে।
আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাইবার ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, হেলাল আকবর বাবর কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক উপ-অর্থ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে সাংবাদিক মাহবুব সম্প্রতি ‘দুবাই ফেরত চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী বাবর বাহিনীর দাপট, শাহ আলম সিন্ডিকেটের হাতে জিম্মি রেল’- শিরোনামে দৈনিক যুগান্তরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক শামস আদালতে
প্রতিবেদনটি তিনি ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করেন।
প্রতিবেদনে হেলাল আকবরকে চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, দখলবাজ ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার বলে উল্লেখ করা হয়। মিথ্যা তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন লিখে ভুক্তভোগীর মানহানি করায় হয় বলে মামলায় অভিযোগ আনেন বাদী যুবলীগ নেতা।
বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে কাউন্টার টেররিজম ইউনিটকে তদন্তের আদেশ দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর বাবর ইউএরবিকে বলেন, কোনো সাংবাদিকের সঙ্গে আমার বিরোধ নাই, সবার সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক। যুগান্তরের এই সাংবাদিক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা খবর দিয়ে আমার সম্মান নষ্ট করেছে।
তিনি আরও বলেন, তিনি লিখেছেন আমি নাকি সন্ত্রাসী ও টেন্ডারবাজ। মামলার আগে তাকে আমি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছি। প্রয়োজনে আরও একটি মানহানির মামলা করবো।
আরও পড়ুন: প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসের জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে পাঠালেন আদালত
চট্টগ্রামে প্রথম আলোর সম্পাদকসহ ৩ জনকে লিগ্যাল নোটিশ
র্যাব হেফাজতে সুলতানার মৃত্যু: কথিত সহযোগী আল আমিন গ্রেপ্তার
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার প্রধান আসামি আল আমিনকে বুধবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) গ্রেপ্তার করেছে।
বৃহস্পতিবার র্যাব-৩ এর সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) ফারজানা হক এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি দল ঢাকার শাহজাহানপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে মো. আল আমিনকে (৩২) গ্রেপ্তার করে।
র্যাব জানায়, গত ২৪ মার্চ র্যাব হেফাজতে মারা যাওয়া নওগাঁ ভূমি অফিসের সহকারী সুলতানা জেসমিনের একজন ‘সহায়ক’ এই আল আমিন।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘আল আমিন ও তার দলের সদস্যরা রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে কর্মরত যুগ্ম সচিব মো. এনামুল হকের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে বেকার যুবকদের সরকারি চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন।’
এতে বলা হয়,পরে ওই কর্মকর্তা বিষয়টি জানতে পারলে তিনি আল আমিন ও তার সহযোগী সুলতানা জেসমিনের বিরুদ্ধে রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। সুলতানা জেসমিনকে গত ২৩ মার্চ গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল আমিন জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
আরও পড়ুন: জেসমিনকে উঠিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে র্যাবের জুরিসডিকশন নিয়ে প্রশ্ন হাইকোর্টের
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মামলা দায়েরের পর থেকে গ্রেপ্তার আসামিকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয় এবং একপর্যায়ে তিনি র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।
আল আমিনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এই চক্রের অন্য সহযোগীদের গ্রেপ্তারে র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আল আমিন একজন মোবাইল ব্যাংকিং এর এজেন্ট। তিনি উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে জালিয়াতি করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য একটি গ্রুপের সঙ্গে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: র্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যু বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্কে কোনো প্রভাব ফেলবে না: মোমেন