আইনশৃঙ্খলা
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সাময়িক বরখাস্তের আদেশ স্থগিত
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃত করে প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে রবিবার (১৩ আগস্ট) বহিষ্কৃত ছাত্র ও সংবাদকর্মী ইকবাল মনোয়ারের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে বহিষ্কারের আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ সময় আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সিহাব উদ্দিন খান।
আরও পড়ুন: কুবির হলের ডাইনিংয়ে নেই ভর্তুকি, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
আদালতের আদেশের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ইকবাল স্বাভাবিকভাবে তার একাডেমিক কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন বলে জানা গেছে।
গত ৩১ জুলাই কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ ফ ম আবদুল মঈনের বক্তব্য বিকৃত করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করার অভিযোগ উঠে দৈনিক যায়যায় দিন পত্রিকার কুমিল্লা প্রতিনিধি ইকবালের বিরুদ্ধে। এর ফলে গত ২ আগস্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
এর আগে গত ৯ আগস্ট ইকাবলের সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। শিক্ষা সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপউপাচার্য ও রেজিস্ট্রার, প্রক্টর, জনসংযোগ কর্মকর্তা ও মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান বরাবর নোটিশটি পাঠানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃত করার কোনো প্রমাণ নেই এবং উপাচার্যের ব্যক্তিগত ক্রোধের কারণে ইকবালকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী একটি শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও এ ধরনের বোর্ডের অস্তিত্ব নেই। সুতরাং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক জারি করা স্থগিতাদেশ অবৈধ এবং এর এখতিয়ারের বাইরে।
নোটিশে বলা হয়, ইকবাল পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই।
নোটিশে আরও বলা হয়, প্রতিবেদন নিয়ে ভিসির কোনো সমস্যা থাকলে প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার তার আছে, কিন্তু তা না করে উপাচার্য তার ক্ষমতার অপব্যবহার করে ওই শিক্ষার্থীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।
আরও পড়ুন: রুমমেটের ফেসবুক পোস্টে মানসিক চাপে কুবি ছাত্রীর আত্মহত্যাচেষ্টা
হুমকির আশঙ্কা না থাকলেও শোক দিবসে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে: ডিএমপি কমিশনার
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবসে হুমকির কোনো আশঙ্কা না থাকলেও সার্বিক বিবেচনায় ঢাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ধানমন্ডি-৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের ভেতরে ও বাইরে বিপুল সংখ্যক মানুষকে সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ ভিড় আগের বছরের তুলনায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি হতে পারে।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ও এর আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে ডিএমপি কমিশনার এ মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে ২০ পুলিশ আহত, আটক ৯০: ডিএমপি
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসে শ্রদ্ধা জানাতে ধানমন্ডি-৩২ নম্বর সড়কে বিপুল সংখ্যক মানুষ সমবেত হবেন।
তিনি আরও বলেন, যদিও হুমকির বিষয়ে কোনো তথ্য নেই, তবুও সেদিনের বিশাল জনসমাগম সামাল দেওয়া পুলিশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
ডিএমপি কমিশনার সবাইকে ব্যাগ, ছুরি বা ধারালো কোনো জিনিস সঙ্গে না আনতে অনুরোধ করেন। এলাকায় প্রবেশের আগে সবাইকে চেক করা হবে।
ইতোমধ্যেই রাজধানীর বিভিন্ন সড়েকে চেকপয়েন্ট বসিয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ।
এছাড়া হোটেল ও অন্যান্য স্থানেও তল্লাশি অভিযান চালানো হচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশ প্রস্তুত রয়েছে।
ডিএমপি প্রধান আরও বলেন, পুলিশ নিয়মিত সাইবার স্পেস পর্যবেক্ষণ করছে। এছাড়া ডিবি ও সিটিটিসির সাইবার ইউনিট সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
আরও পড়ুন: আ. লীগ ও বিএনপির কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি ডিএমপি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইকবালের বহিষ্কারাদেশ স্থগিত হাইকোর্টের
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থী ও দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি থেকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
ইকবালের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার (১৪ আগস্ট) বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি মো. আলী রেজার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন।
রুলে তার বহিষ্কারাদেশ কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনকারীর আইনজীবী শিহাব উদ্দিন খান বলেন, হাইকোর্টের এই আদেশের ফলে ইকবাল তার বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। তিনি তার স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন চালিয়ে যেতে পারবেন।
আরও পড়ুন: মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
গত ৩১ জুলাই কুবি’র উপাচার্য এ এফ এম আবদুল মঈনের বক্তব্য নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় ২ আগস্ট ইকবালকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে প্রশাসন।
ইকবাল দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাংবাদিক সমিতির অর্থসম্পাদক।
ইকবালকে সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ৯ আগস্ট আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যসহ ৮ জনকে ইকবালের পক্ষে এই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
আইনি নোটিশে বলা হয়েছিল, তিন দিনের মধ্যে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা না হলে উচ্চ আদালতে যাবেন ইকবাল।
নোটিশে আরও বলা হয়, যে অফিস আদেশের মাধ্যমে ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সে আদেশে কোনো আইন বা বিধির উল্লেখ করা হয়নি।
এছাড়া তার সংবাদে উল্লিখিত উপাচার্যের বক্তব্য বিকৃতের আপাত কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এর থেকে প্রতীয়মান হয়, উপাচার্য তার ব্যক্তিগত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতেই ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন।
এছাড়া গত ৬ আগস্ট সংশ্লিষ্ট সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়ে ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে উপাচার্যের নিকট চিঠি দিয়েছেন ইকবাল। এখন পর্যন্ত সে চিঠির কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।
আইনি নোটিশে আরও বলা হয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আইন-২০০৬ এর ৩২ নং ধারা অনুযায়ী শৃঙ্খলা বোর্ড থাকার কথা থাকলেও সে সংক্রান্ত কোন বোর্ড এবং বিধি তৈরি হয়নি। এ অবস্থায় কুবি প্রশাসনের এই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বেআইনি ও এখতিয়ার বহির্ভূত বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
ইকবাল তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন, যার সঙ্গে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর কার্যক্রমের কোনো সম্পৃক্ততা নেই উল্লেখ করে নোটিশে বলা হয়, কোনো সংবাদের বিষয়ে যদি উপাচার্য সংক্ষুব্ধ হয়ে থাকেন, তাহলে তার প্রেস কাউন্সিলে অভিযোগ করার অধিকার রয়েছে।
তা না করে ইকবালকে বহিষ্কার করে উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইকবাল সংবাদকর্মী হিসেবে শুধু উপাচার্যের হুবুহু বক্তব্য তুলে ধরেছেন যার অডিও রেকর্ড তার কাছে রয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের জেরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কারের মাধ্যমে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ (২) (খ) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতার মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন করেছেন মর্মে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া ইকবালকে তার অবস্থান ব্যাখ্যার জন্য কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কারাদেশ দেওয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক ন্যায়বিচারের নীতির চূড়ান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন্তু তিন দিনের মধ্যে নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন ইকবাল।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
আপনি ভুল করেননি, ক্রাইম করেছেন: জেলা জজকে হাইকোর্ট
সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ানের ৩ বছরের কারাদণ্ড
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ান আহমেদের ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২–এর বিচারক মো. আখতারুজ্জামান সোমবার (১৪ আগস্ট) এই রায় দেন।
আরও পড়ুন: সাবেক ওসি ফিরোজ কবির দম্পতির কারাদণ্ড
রায় ঘোষণার সময় রেদোয়ান আহমেদ আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। পরে আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম।
মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, রেদোয়ান আহমেদ ছিলেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী। দায়িত্ব পালনকালে তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন- এ অভিযোগে ২০০৭ সালে তার বিরুদ্ধে নুরুল ইসলাম নামের এক মুক্তিযোদ্ধা রমনা থানায় মামলা করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলাটি তদন্ত করে দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল হোসেন ২০০৭ সালের ৮ অক্টোবর রেদোয়ান আহমেদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ওই মামলায় সোম আদালত তার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করলেন।
মামলার অভিযোগ বলা হয়, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাব থেকে ২০০২ সালের ১১ জুন তিনটি চেকের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকা তোলা হয়। ওই তিন চেকে সই করেন মুক্তিযুদ্ধ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের তৎকালীন চেয়ারম্যান রেদোয়ান আহমেদ।
পরে পে-অর্ডারের মাধ্যমে রেদোয়ান আহমেদের ব্যাংক হিসাবে জমা হয় ৪০ লাখ টাকা। সেই টাকা ফেরত চেয়ে মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক মহাসচিব শাহ আলম চৌধুরী চিঠি দিলেও রেদওয়ান আহমেদ টাকা ফেরত দেননি।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, টাকা আত্মসাতের বিষয়টি জানাজানি হলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে তখন রেদোয়ান আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তৎকালীন বিএনপি সরকারের প্রতিমন্ত্রী রেদোয়ান বর্তমানে অলি আহমদ নেতৃত্বাধীন এলডিপির মহাসচিবের পদে রয়েছেন।
এছাড়াও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে রেদোয়ান আহমেদের বিরুদ্ধে করা আরেকটি মামলা ঢাকার আদালত চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পাচারকালে বিরল প্রজাতির হনুমান উদ্ধার, বাস চালকের কারাদণ্ড
দুর্নীতি মামলায় তারেকের ৯ বছর, জোবাইদার ৩ বছরের কারাদণ্ড
বিমানে পাইলট নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ
পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের নিয়ম-নীতি লঙ্ঘনের অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই অনিয়ম তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলেছেন আদালত।
এই তিন সদস্যের তদন্ত কমিটিতে বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বিমানের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও সিভিল এভিয়েশনের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে যুক্ত করতে বলেছেন আদালত।
রবিবার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতির লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট করা হয়।
আরও পড়ুন: সুজনের হাফিজ-বদিউলের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননা মামলার আবেদন
একই সঙ্গে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালতে রবিবার রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
এর আগে পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়ম-নীতি লঙ্ঘন করেছে, এমন অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন কমিটি গঠন করতে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।
জনস্বার্থে গত ২৭ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান। নোটিশ পাওয়ার দুই দিনের মধ্যে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠনে পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছিল। নোটিশ পাওয়ার পরও কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় রিটটি করা হয়।
রিটে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে এই আদেশ দেন আদালত।
রিটে পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশ এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা) পাইলট নিয়োগে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ও নিজস্ব নিয়মনীতি চরম লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করে।
পাইলট হিসেবে নির্বাচন করা হয়েছে বিমানের অনেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যকে। বিমানের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে এই নিয়োগের তদন্ত চায় বাপা।
এর আগে বিষয়টি তদন্তের দাবি করে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বরাবর একটি চিঠি জমা দেয় বাপার নির্বাহী কমিটি। একইভাবে এর প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে বিমানের প্রশাসন ও ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের পরিচালকদের কাছে।
পাইলট নিয়োগে অনিয়ম তুলে ধরে ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিভিন্ন পত্রিকায় বিমানের পাইলট নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে।
বাপার পর্যবেক্ষণেও দেখা গেছে, নিয়ম ভেঙে পাইলট নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া নিয়োগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিমানের ট্রেনিং বিভাগের প্রধানকে। যার নিজের স্ত্রী পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। এটি নিয়মের চরম লঙ্ঘন।
আরও পড়ুন: আদালত পরিবর্তন চেয়ে জাপানি দুই শিশুর বাবার আবেদন খারিজ
এদিকে বাপা বলেছে, পাইলট নিয়োগে বিমান ও বাপার মধ্যে একটি চুক্তি রয়েছে। তবে নিয়োগের সময় এই চুক্তি লঙ্ঘন করা হয়েছে। নিয়োগের সময় বাপার মতামতকে পাত্তা দেওয়া হয়নি।
বিমানের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ চালনার জন্য নতুন করে কোনো পাইলট নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে বিমানের পক্ষ থেকে এই উড়োজাহাজের জন্য ক্রু নিয়োগের সার্কুলার দেওয়া হয়। ক্রুদের বাছাই করে ট্রেনিং দেওয়ার মেইল পাঠানো হয়েছে।
একজন ব্যক্তি ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে বিমানের ফার্স্ট অফিসার পদে নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি সিম্যুলেটর ট্রেইনিং করেননি। পরবর্তী সময়ে বিমানের খরচে তাকে ট্রেনিং করতে পাঠানো হয়েছে যা সম্পূর্ণ অপচয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিমানের চরম গাফিলতির কারণে বোয়িং-৭৮৭ ফ্লাইটের ক্রুদের বিদেশে গিয়ে জেডএফটিটি এবং পিপিসি নামের দুইটি ট্রেনিং রিটেক করতে হচ্ছে, যা বিমানের অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রার অপচয়ের অন্যতম কারণ। বোয়িং-৭৭৭ এর জুনিয়র পাইলটকে পাইলটদের প্রশিক্ষক বানানো হয়েছে যা অনৈতিক। এটি সিনিয়র পাইলটদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
অনিয়মের কারণে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছ থেকে বিমান বাংলাদেশ সতর্কতা চিঠি (ওয়ার্নিং লেটার) পেয়েছে। এটি একটি এয়ারলাইনসের জন্য বিব্রতকর বিষয়।
বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মেয়েকে পাইলট হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ট্রেনিংয়ের সময় ওই নারী পাইলটের সাধারণ জ্ঞান কম থাকায় তাকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে ওই পাইলটের পক্ষে বোয়িং-৭৭৭ এর ট্রেনিং নেওয়াও কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
বাপা জানায়, বাপা চায় বিমানে দক্ষ পাইলট নিয়োগ দেওয়া হোক। পাইলট নিয়োগে সব নিয়মনীতি মানা হোক, যা বিমানকে উচ্চমানের একটি এয়ারলাইনসে পরিণত হতে সাহায্য করবে। এ জন্য বাপা পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে তদন্ত করার দাবি করছে।
আরও পড়ুন: মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা
সিলেটে আদালতে এপিপির উপর হামলা: ছাত্রলীগে নেতাসহ ২৫৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
সিলেট জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর প্রবাল চৌধুরী পূজনের উপর হামলার ঘটনায় রবিবার (১৩ আগস্ট) ৫৫ অজ্ঞাতনামা ও দুই শতাধিক জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
রবিবার (১৩ আগস্ট) ভুক্তভোগী প্রবাল চৌধুরী বাদী হয়ে সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজ ও মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাঈম আহমেদ, সিসিক ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুহেল আহমদ ও সিলেট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মিসবাউল করিম রফিকসহ ৫৫ জনকে আসামি করে মামলাটি করেন।
এদিন দুপুরে সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান ভূঁইয়া কোতোয়ালি থানা পুলিশকে এই আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার পাশাপাশি মামলাটি যেন দ্রুত বিচার আইনে নথিভুক্ত করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ও মামলার বাদী আইনজীবী প্রবাল চৌধুরী পূজন।
সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ও মামলার বাদী আইনজীবী প্রবাল চৌধুরী জানান, মামলার আসামিরা সিলেটের চিনি চোরাকারবারী ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। একই সঙ্গে তারা অছাত্র দিয়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন নিয়ে আমি ফেসবুকে পোস্ট করি। এরই ধারাবাহিকতায় আসামিরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। হামলার সময় আসামিরা গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
আরও পড়ুন: সিলেট-তামাবিল সড়কে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
তিনি আরও জানান, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকসহ ৫৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ দাখিল করলে আদালত থানাকে অভিযোগের এজাহারটি দ্রুত বিচার আইনে নথিভুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে, প্রবাল চৌধুরীর উপর হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য গত শুক্রবার (১১ আগস্ট) তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় উপদপ্তর সম্পাদক সানি মোহাম্মদ আকাশ বলেন, হামলার বিষয়ে যেসব অভিযোগ উঠেছে সেগুলো খতিয়ে দেখার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চার সদস্যের কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে দলের সিদ্ধান্ত অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কমিটির সদস্যরা হলেন- কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফুয়াদ হোসেন শাহাদত, সহসভপতি বরিকুল ইসলাম বাধন, সহসভাপতি মাইনুল হাওলাদার ও আইনবিষয়ক সম্পাদক তাওহিদ বনি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য আইনজীবী প্রবাল চৌধুরী পূজনের সিলেট নগরীর দাঁড়িয়াপাড়াস্থ বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় আহত হন পূজন। এমনকি তিনি স্প্লিন্টারবিদ্ধ হয়েছেন বলে জানা যায়।
আরও জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে অ্যাডভোকেট পূজনের সমালোচনার জেরে ওই হামলার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: সিলেটে বাসিয়া নদী থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার
হিরো আলমকে হত্যার হুমকি: সিলেট থেকে যুবক গ্রেপ্তার
চট্টগ্রামে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ডিসিকে তদন্তের নির্দেশ
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে লিখিত মতামত পাঠানোর জন্য জেলা প্রশাসককে (ডিসি) নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়।
রবিবার (১৩ আগস্ট) চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের অনুকূলে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সহকারী সিনিয়র সচিব জেসমীন প্রধানের সই করা এক নোটিশের মাধ্যমে এ নির্দেশনা জারি করা হয়।
চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই উপজেলার ১১ নম্বর মঘাদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধে মিরসরাই থানায় একটি মামলার দায়ের করা হয়। ওই অভিযোগ আদালতে গৃহীত হয়েছে কি না তা জানিয়ে সার্টিফাইড কপি সংগ্রহ করে মতামত পাঠানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইউএনও’র ওপর হামলার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যানসহ আটক ৪
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুন মিরসরাইয়ের বিভিন্ন এলাকায় কেন্দ্রীয় যুবলীগ সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ এলিটের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের প্রচার চালায়।
প্রচারের এক পর্যায়ে নেতা-কর্মীরা মঘাদিয়া ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু শিল্প জোনগামী মিয়াপাড়া চার রাস্তার মোড়ে পৌঁছালে ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনের নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা তাদের উপর হামলা চালায়। হামলায় বেশ কয়েকজন গুরুতর জখম হয় ও গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
ঘটনার পরদিন আহত যুবলীগকর্মী মো. আছিফুল রহমান শাহীন বাদি হয়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মিরসরাই থানায় মামলা করেন।
আরও পড়ুন: জামালপুরে সাবেক ইউপি সদস্য খুন
চট্টগ্রামে দায়িত্বে অবহেলা করার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান বরখাস্ত
মশা নিয়ন্ত্রণে রিসার্চ সেন্টার করতে বললেন হাইকোর্ট
রোগের বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের (ভিসিআরসি) মতো একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠায় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষায় জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রবিবার (১৩ আগস্ট) এ রায় দেন বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আবেদনকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ।
তিনি সাংবাদিকদের জানান, আদালতের আহ্বানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক কবিরুল বাশার সুপারিশসহ বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। আজ মামলাটি নিষ্পত্তি করে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সিভিল এভিয়েশন এবং সিটি করপোরশনকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দীর্ঘমেয়াদে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টারের (ভিসিআরসি) মতো একটি সেন্টার করতে আদালত সরকারকে বলেছেন।
হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ২০১৯ সালের ৩ মার্চ হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
রিটের প্রাথমিক শুনানির পর ১২ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন। এর মধ্যে বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর-প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সেসব খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে সম্পূরক আবেদন করেন আইজীবী তানভীর।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
এ আবেদনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরে গত বছর ২০ ফেব্রুয়ারি আদালত হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বেবিচককে নির্দেশ দেন। বেবিচকের চেয়ারম্যানকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
এ নির্দেশনার পর সিটি করপোরেশন ও বেবিচক একাধিকবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।
গত ৬ মার্চ সেসব প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মার্চ আদালত বিমানবন্দর এলাকার মশা নিধনে কবিরুল বাশারসহ তিনজনের মতামত জানতে তাদের ডেকেছিলেন।
সে অনুযায়ী কবিরুল বাশার আদালতে বিমানবন্দর এলাকার চারপাশে চার কিলোমিটার এলাকা মশামুক্ত রাখা নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রবিধান’র বিভিন্ন বিধি ও আটটি সুপারিশ প্রতিবেদনে তুলে ধরেন। কবিরুল বাশারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মশা ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৯৭৫ সালে ভেক্টর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (ভিসিআরসি) প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত আধুনিক ও যুগোপযোগী।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
বাংলাদেশে এমন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে বাহক বাহিত রোগ ও বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করা যাবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে এখন পর্যন্ত ১২৬ প্রজাতির মশা শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ঢাকায় শনাক্ত হয়েছে ১৬ প্রজাতির মশা। আর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাওয়া গেছে ৯ প্রজাতির মশা।
এগুলো হচ্ছে- কিউলাস কুইনকিউফেসিয়েটাস, কিউলেক্স ট্রিটাইনায়োরিঙ্কাস, কিউলাস গেলিডাস, এডিস ইজিপটি, এডিস অ্যালবোপিকটাস, ম্যানসোনিয়া অ্যানুলিফেরা, ম্যানসোনিয়া ইউনিফর্মিস, আর্মিজেস সাবলবাটাস ও টক্সোরিঙ্কাইটস স্প্লেডেনস।
এ কীটতত্ত্ববিদ তার প্রতিবেদনে বলেছেন, প্রজাতিভেদে মশার প্রজনন স্থল, প্রজনন ঋতু ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভিন্ন। তাই মশা নিয়ন্ত্রণে সফলতার জন্য এর জীবনাচরণ সম্পর্কে জানা দরকার। মশার বায়োলজি, ইকোলজি, স্বভাব পর্যালোচনা করে নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত মশক ব্যবস্থাপনার বিজ্ঞানভিত্তিক প্রয়োগ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ কেন বাতিল নয়: হাইকোর্ট
বিমানবন্দর এলাকায় মশার প্রজননস্থল হিসেবে দুটি বড় খাল, ছোট-বড় পাঁচটি জলাশয়, খোলা ড্রেন, পরিত্যক্ত টায়ার, ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের পাত্র, গাছের কোটর এবং বিমানবন্দর ঘিরে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাঁচটি ওয়ার্ড (১, ১৭, ৪৯, ৫০ ও৫২), এয়ারফোর্স এরিয়া, প্রিয়াঙ্কা হাউজিং ছাড়াও রাজউকের কিছু জায়গার কথা উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে এ শিক্ষক বলেন, যেহেতু মশা চার কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে যেতে পারে, তাই বিমান বন্দরকে মশামুক্ত করতে হলে এর চারপাশে চার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে মশার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। তার জন্য সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। কাজটি করা কঠিন নয়।
আদালত আজ শুনানি গ্রহণ শেষে এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের পাশাপাশি মশা নিয়ন্ত্রণে একটি রিসার্চ সেন্টার করতে বলেছেন।
তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানায় নোটিশ পাঠাতে হাইকোর্টের নির্দেশ
গণমাধ্যম, ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারসহ সব মাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে জারি করা রুলের নোটিশ তার লন্ডনের ঠিকানায় পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া পত্রিকায় এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করতে বলা হয়েছে।
আজ রবিবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন।
গণমাধ্যম, ইউটিউব, ফেসবুক, টুইটারসহ সব মাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধের বিষয়ে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু সেই রুলের নোটিশ এখনও তারেক রহমানের কাছে পৌঁছায়নি।
আরও পড়ুন: দুর্নীতির মামলা বাতিল চেয়ে তারেক রহমানের স্ত্রীর আবেদন: আদেশ ১৩ এপ্রিল
এ অবস্থায় গত ৮ আগস্ট সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামসহ আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা অনলাইনসহ সব গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞার রুল শুনানির জন্য দিন ঠিক করতে হাইকোর্টে আবেদন করেন।
এ সময় হাইকোর্ট জানতে চান, তারেক রহমানকে নোটিশ দেওয়া হয়নি, তাহলে কীভাবে শুনানি হবে। তখন রিটকারি আইনজীবী কামরুল ইসলাম উত্তরে বলেন, উনাকে কোনো ঠিকানায় পাওয়া যায়নি। তবে এর তীব্র বিরোধিতা করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ১০ আগস্ট তারেক রহমানের লন্ডনের ঠিকানা সংশোধন করে নতুন আবেদন করতে বলেন হাইকোর্ট। সে অনুযায়ী আজ তারেক রহমানের লন্ডনের সংশোধিত ঠিকানা সম্বলিত নতুন আবেদন দায়ের করার পর হাইকোর্ট উপরোক্ত আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: তারেক রহমান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
জানা যায়, ২০১৫ সালে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার ও প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকা রিট করেন। ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালের ৭ জানুয়ারি তৎকালীন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দিয়েছিলেন।
আদেশে আইনের দৃষ্টিতে পলাতক থাকায় তারেক রহমানের কোনো বক্তব্য কিংবা বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তারেক রহমানের বিদেশে অবস্থানের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানাতে পররাষ্ট্রসচিবকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ বিষয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) একটি প্রতিবেদন দিতেও নির্দেশ দেন আদালত।
একই সঙ্গে তার বক্তব্য প্রকাশ ও প্রচার বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। এরপর দীর্ঘদিনেও রুলের শুনানি হয়নি।
সম্প্রতি সমাবেশে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার করে বিএনপি। এরপরই বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে রুল শুনানির আবেদন করেন রিটকারী আইনজীবী নাসরিন সিদ্দিকা।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের আহ্বানকে ‘সহিংসতার প্ররোচনা’ বলে দাবি অধিকারকর্মী ও সংখ্যালঘু নেতাদের
'অপারেশন হিলসাইড': নতুন জঙ্গি সংগঠন 'ইমাম মাহমুদের কাফেলা'র ১০ সদস্য আটক
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার দুর্গম এলাকায় ‘অপারেশন হিলসাইড’ নামে অভিযান চালিয়েছে নবগঠিত জঙ্গি সংগঠন 'ইমাম মাহমুদের কাফেলা'র ১০ সদস্যকে আটক করেছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সদস্যরা।
শনিবার (১২ আগস্ট) উপজেলার পূর্ব টাট্রিউলি গ্রামেও জঙ্গিদের ওই আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। এ ছাড়া গোপন ওই আস্তানা থেকে তিন শিশুকেও উদ্ধার করা হয়।
আটকরা হলেন- সাতক্ষীরার তালা উপজেলার শরিফুল ইসলাম (৪০), তার স্ত্রী আমিনা বেগম (৪০), তাদের ২০ বছরের মেয়ে হাবিবা বিনতে শরিফুল; কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার হাফিজ উল্লাহ (২৫); নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা উপজেলার খায়রুল ইসলাম (২২) ও তার স্ত্রী মেঘনা (২২); সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার রফিউল ইসলাম (২২); পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী শাপলা বেগম (২২); নাটোরের সোহেল তানজিম রানার স্ত্রী মাইশা ইসলাম (২০) এবং বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার সুমন মিয়ার স্ত্রী সানজিদা খাতুন (১৮)।
অভিযানের পর শনিবার বেলা ১১টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে সিটিটিসি ইউনিটের প্রধান ও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, তারা চার পুরুষ ও ছয় নারীকে আটক করেছেন এবং গোপন আস্তানা থেকে তিন শিশুকে উদ্ধার করেছেন।
আরও পড়ুন: মৌলভীবাজারে জঙ্গি আস্তানায় ‘অপারেশন হিলসাইড’ চালাচ্ছে সিটিটিসি
তিনি বলেন, আটকরা নবগঠিত জঙ্গি সংগঠন ‘ইমাম মাহমুদের কাফেলা’র সদস্য।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, তারা গোপন আস্তানা থেকে আড়াই কেজি বিস্ফোরক জাতীয় পদার্থ, ৫০টি বিস্ফোরক, প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, যুদ্ধের বুট, জঙ্গিবাদী বই, স্থানীয়ভাবে তৈরি ধারালো অস্ত্র, নগদ ৩ লাখ ৬১ হাজার টাকা ও অলংকার জব্দ করেছেন।
আসাদুজ্জামান বলেন, তাদের কাছে তথ্য ছিল, একটি জঙ্গি সংগঠন জেলার একটি পাহাড়ে আস্তানা তৈরি করে নতুন করে সদস্য সংগ্রহ করে সংগঠিত হচ্ছে।
সিটিটিসি প্রধান বলেন, আটকদের কাছ থেকে তারা জঙ্গি সংগঠনের মূল পরিকল্পনাকারীর নাম জানতে পেরেছেন এবং তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এর আগে শুক্রবার রাতে জেলা পুলিশের সহায়তায় গ্রামের ওই ভবন ঘেরাও করেন সিটিটিসি সদস্যরা। পরে শনিবার সকালে গোপন ওই আস্তানায় অভিযান চালাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেন তারা।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহিবুল ইসলাম জানান, আটক সন্দেহভাজন জঙ্গিরা অন্য জেলার বাসিন্দা এবং তারা গত দুই মাস ধরে দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় বাড়ি তৈরি করে ওই এলাকায় বসবাস করে আসছিলেন।
আরও পড়ুন: জঙ্গি সংগঠন ‘জামায়াতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়া' নিষিদ্ধ