আইনশৃঙ্খলা
৪২ ঘন্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত; পুলিশ সুপার যোগাযোগ করায় অসন্তোষ হাইকোর্টের
উচ্চ আদালতের সঙ্গে পুলিশ সুপার যোগাযোগ (ফোন) করায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, বেশি স্বচ্ছতার জন্য যোগাযোগ করে? এটি পেশাগত অসদাচরণ।
সোমবার মানিকগঞ্জ সদরের কৈতরা গ্রামের মো. রুবেল হত্যা মামলাটি পুনরায় তদন্তের অগ্রগতি-বিষয়ক শুনানিকালে বিচারপতি মো. বদরুজ্জামান ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
পরে তদন্ত কর্মকর্তার সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আগামী ১৭ জুলাই পর্যন্ত সময় দিয়ে এ হত্যা মামলাটির পুনঃতদন্তের অগ্রগতি জানাতে বলেছেন।
‘লাশ উদ্ধার থেকে অভিযোগপত্র, ৪২ ঘণ্টার অবিশ্বাস্য তদন্ত’ শিরোনামে গত ২ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়।
আরও পড়ুন: এবি ব্যাংকে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের
প্রতিবেদনটি যুক্ত করে মামলার নথি তলবের নির্দেশনা চেয়ে আসামি সোহেল ওরফে নুরুন্নবী ও বাদী চম্পা আক্তার ওরফে অঞ্জনা গত ৫ মার্চ হাইকোর্টে আবেদন করেন।
সোহেল ও চম্পা সম্পর্কে খালাতো ভাই-বোন। আর নিহত রুবেল হলেন সোহেলের ভগ্নিপতি।
আবেদনের শুনানি নিয়ে ১৪ মার্চ হাইকোর্ট রুল দিয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাকসুদুর রহমানকে কেস ডকেটসহ আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেন।
সে অনুসারে কেস ডকেটসহ তিনি গত ৩ এপ্রিল আদালতে হাজির হন। ওই দিন শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট কয়েক দফা নির্দেশনাসহ আদেশ দেন।
পুলিশ সুপারের নিচে নন-পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এমন একজন কর্মকর্তা দিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্ত করে ৬০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
অধিকতর তদন্তের সময় চারটি বিষয়ে পিবিআইকে তদন্ত করতে বলা হয়।
এর মধ্যে বাদী যখন সংশ্লিষ্ট থানায় এজাহার করেন, তখন বর্তমান অভিযুক্তকে (সোহেল) জড়িত করে অথবা এজাহারে বাদী সই করেছিলেন কি না, নির্যাতন বা ভয়ভীতি দেখিয়ে সোহেলের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে কি না, তা-ও তদন্ত করতে বলা হয়।
হাইকোর্ট শুনানির জন্য ৫ জুন পরবর্তী দিন রাখেন।
এদিকে হাইকোর্টের আদেশে হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মানিকগঞ্জ সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাকসুদুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
হাইকোর্টের এ নির্দেশ স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল বিভাগে আবেদন করে।
এর শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ৬ এপ্রিল ওই সাময়িক বরখস্তের আদেশ অংশটুকু আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেন। তবে হত্যা মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করতে হাইকোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা বহাল থাকে।
আরও পড়ুন: শ্রমিকদের গ্রামীণ কল্যাণের লভ্যাংশ দেওয়ার রায়ে হাইকোর্টের স্থিতাবস্থা
আগের ধারাবাহিকতায় গতকাল বিষয়টি শুনানির জন্য কার্যতালিকায় ওঠে। আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পি।
শুনানিতে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, হত্যা মামলাটির তদন্ত শুরু করেছে পিবিআই। ইতিমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। কয়েকজন সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সঠিক ও সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।
মামলার বস্তুনিষ্ঠ সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ঘটনাস্থলের ডিজিটাল এভিডেন্স (সেল, কললিস্ট ইত্যাদি) সংগ্রহ করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্তসহ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মামলার তদন্তে আরও সময়ের প্রয়োজন।
এছাড়া তদন্তের জন্য আরও ৯০ কার্যদিবস সময় বর্ধিত করার আরজি জানান তিনি।
আদালত বলেন, অধিক তদন্তের জন্য ৬০ দিন সময় দেওয়া হয়েছে। আরও ৯০ দিন চাচ্ছেন। পুলিশ সুপার ফোন কল করেন। আদালতের জন্য এটি বিব্রতকর।
উনি কি এটি করতে পারেন?
তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বলেন, কোর্টের মর্যাদা সবচেয়ে বড়। তদন্তকারী কর্তৃপক্ষ ও আদালতের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষ সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করে। আদালতের সঙ্গে কেমন আচরণ করতে হবে, তা বেঙ্গল পুলিশ রেগুলেশনে রয়েছে।
কোর্টের মর্যাদা সমুন্নত না রাখলে আমাদের মূল্যায়নও থাকবে না। পুলিশ সুপার কোর্টকে ফোন করার মতো দুঃসাহস দেখিয়েছেন। আদালতের উদ্বেগের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
এ সময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জির উদ্দেশে আদালত বলেন, ২৪ ঘণ্টায় এক তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়ে দেন। আদালত ৬০ দিন সময় দিলেও অধিকতর তদন্তের প্রতিবেদন দিতে পারলেন না।
এছাড়া শুনানি শেষে হাইকোর্ট ১৭ জুলাই এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেন।
আরও পড়ুন: যমুনা নদী ছোট করার চিন্তা,প্রকল্পের সব নথি হাইকোর্টে তলব
মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা: শুনানি ১৪ আগস্ট
‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামায় দিছিলাম’ এক আলোচনা সভায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের এমন মন্তব্যে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে মামলা করেছেন এক আইনজীবী।
আপিল বিভাগে করা এ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৫ জুন) চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য ১৪ আগস্ট দিন রেখেছেন।
আরও পড়ুন: ডিএসসিসিতে ওয়ার্ডভিত্তিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে: মেয়র তাপস
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মহসিন রশিদ। সঙ্গে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এ জে মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, মামলার বাদী অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সজল ও অ্যাডভোকেট মামুন মাহবুব।
তাপসের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির এবং সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নুর দুলালসহ শতাধিক আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত রবিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল এ মামলা করেন।
মামলায় আদালত অবমাননামূলক বক্তব্যের কারণে মেয়র তাপসকে আদালতে তলব করার নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে।
সরকার সমর্থকদের একতরফা নির্বাচনের প্রতিবাদে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ আইনজীবীদের ব্যানারে ডাকা তলবি সভা থেকে গঠিত অ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিব শাহ আহমেদ বাদল।
এর আগ গত ২৩ মে একটি জাতীয় দৈনিকে মেয়র তাপসের ওই বক্তব্য প্রকাশিত হয়।
প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, আমি নগর ভবন থেকে শুনি যে আমার নেতাকর্মীদের গায়ে হাত দেয়া হয়। মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি।
যেখানে মুগুর দেয়ার সেটাও জানি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম।
মশিউজ্জামান (বারের গত নির্বাচনের সাব কমিটির প্রধান)কে আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কী জানি ফেরেস্তা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান।
যে সকল সুশীলরা আমাদেরকে বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সকল সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেবো।
আরও পড়ুন: মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা
গত ২৪ মে ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’- ঢাকা দক্ষিণের মেয়রের এই বক্তব্য আপিল বিভাগের নজরে আনেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির তলবী সভার সভাপতি ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম।
এসময় তার সঙ্গে বিএনিপন্থি সব শীর্ষ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আপিল বিভাগে ওই বক্তব্য তুলে ধরে ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিচার বিভাগের দিকে তাকিয়ে থাকে। মেয়র বলেছেন একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। গর্ব করে, যা দুর্ভাগ্যজনক।
তিনি পত্রিকায় প্রকাশিত তাপসের বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, ব্যারিস্টার তাপস তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ গঠনের আগেও অনেক বড় বড় আইনজীবী নেতা ছিলেন। কিন্তু যখন এই সংগঠন গঠন করা হয় তখন কিন্তু এইসব বিজ্ঞ, খ্যাতনামা, প্রাজ্ঞ, বড় বড় নেতাদের বাদ দিয়ে আমাদের মতো ছোট আইনজীবীদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ গঠন করা হয়। সুতরাং এগুলো ভুললে চলবে না। সবাই খালি ইতিহাস ভুলে যায়। ইতিহাস ভুললে চলবে না।’
এ সময় প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, ‘আমরা একটু দেখি। এখন কোর্টের কাজ করি।’
আইনজীবী শাহ আহমদ বাদল সাংবাদিকদের বলেন, আপিল বিভাগ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছি।
আরও পড়ুন: খালের বর্জ্যের পাশাপাশি সিটি করপোরেশনের দুর্নীতিও অপসারণ করা হচ্ছে: মেয়র তাপস
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৭ হাজারের বেশি মামলা হয়েছে: আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারা দেশে প্রায় ৭ হাজার মামলা হয়েছে।
সোমবার সিলেট থেকে নির্বাচিত গণফোরামের সংসদ সদস্য মুকাব্বির খানের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বহুল আলোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে সংসদে পাস হয়।
মন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ পর্যন্ত কতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে প্রশ্নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ উদ্বিগ্ন।
তাই সচিবালয়ের নিয়মানুযায়ী প্রশ্নের এই অংশটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে স্থানান্তর করা হয়েছে।
জামালপুর থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ৩৬ লাখ ৭০ হাজার মামলা বিচারিক আদালতে বিচারাধীন রয়েছে চলতি বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: কবে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন হবে তা প্রধানমন্ত্রীই ঠিক করবেন: আইনমন্ত্রী
এর মধ্যে দেওয়ানি মামলার সংখ্যা ১৫ লাখ ৮৪ হাজার এবং ফৌজদারি মামলার সংখ্যা ২০ লাখ ৮৬ হাজার।
মন্ত্রী বলেন, দেশের ৬৪ জেলার মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ লাখ ৪৪ হাজার ঢাকায় এবং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২ লাখ ৭১ হাজার মামলা চলছে চট্টগ্রামে।
নোয়াখালীর আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য মোরশেদ আলমের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার ন্যায়বিচার প্রত্যাশী জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে একটি আধুনিক বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়িত হলে সারাদেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে এবং মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে কার্যকর ও দৃশ্যমান উন্নতি হবে।’
আরও পড়ুন: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সংশোধনী আনা হবে: আইনমন্ত্রী
শ্রম আইন সংশোধনে জোরালোভাবে কাজ করছে সরকার: আইনমন্ত্রী
মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা
'একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’-ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের এমন বক্তব্যকে আদালত অবমাননা উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় আদালত অবমাননামূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে মেয়র তাপসকে আদালতে তলব করার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রবিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল এ মামলা করেন। সরকার সমর্থকদের একতরফা ভোটের প্রতিবাদে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সদস্যদের তলবী সভা থেকে গঠিত অ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল।
গত ২১ মে বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সভায় মেয়র তাপস তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন- ‘একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম’।
আরও পড়ুন: ধাপে ধাপে পর্যায়ক্রমে ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলো সংস্কার ও সংরক্ষণ করা হবে: মেয়র তাপস
এই বক্তব্য গত ২৩ মে এক দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তাপসকে উদ্ধৃত করে সেখানে বলা হয়- ‘মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি। যেখানে মুগুর দেওয়ার সেটিও জানি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। মশিউজ্জামানকে (বারের গত নির্বাচনের সাবকমিটির প্রধান) আমরা মনে করতাম- ওরে বাবা, কী জানি ফেরেস্তা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান। যেসব সুশীল আমাদের বুদ্ধি দিতে যাবেন, সেসব সুশীলকে আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেব।’
গত ২৪ মে মেয়র তাপসের এই বক্তব্য আপিল বিভাগের নজরে আনেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম। এ সময় তার সঙ্গে বিএনিপন্থী সব শীর্ষ আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
তিনি আদালতে বলেন, ‘মেয়র তাপস বলেছেন, মনটা চায় আবার ইস্তফা দিয়ে ফিরে আসি। একজন চিফ জাস্টিসকেও নামিয়ে দিয়েছিলাম। মশিউজ্জামানকে (বারের গত নির্বাচনের সাব কমিটির প্রধান) আমরা মনে করতাম, ওরে বাবা, কী জানি ফেরেশতা আসছে। সবচেয়ে বড় চোর হলো মশিউজ্জামান। যে সকল সুশীলরা আমাদেরকে বুদ্ধি দিতে যাবেন সেই সকল সুশীলদের আমরা বস্তায় ভরে বুড়িগঙ্গা নদীর কালো পানিতে ছেড়ে দেবো।’
ব্যারিস্টার আমীর বলেন, ‘আমরা সংক্ষুব্ধ। এই বক্তব্যে সিনিয়র আইনজীবীদের হেয় করা হয়েছে।’
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ বিষয়ে বলেন, ‘পত্রিকায় আসা সংবাদটি ভালোভাবে পড়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।’
আইনজীবী শাহ আহমদ বাদল বলেন, ‘আপিল বিভাগ থেকে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় আমরা তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করেছি।’
আরও পড়ুন: ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে অংশীজনদের থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা প্রত্যাশা করি: মেয়র তাপস
দুই মামলায় মামুনুল হকের জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ
২০২১ সালে ঢাকার পল্টন থানায় করা মামলায় হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের জামিন আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (৪ জুন) বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লা ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া।
রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইমরান আহম্মদ ভূঁইয়া এক জাতীয় দৈনিককে বলেন, ‘এ দুই মামলায় জামিন আবেদনের ওপর শুনানি গ্রহণ শেষে আদালত জামিন দিতে চাননি। তখন তার আইনজীবী আবেদন দু’টি ফেরতের আবেদন জানান। তখন আদালত আবেদন দু’টি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: আরও ৩ মামলায় জামিন পেল মামুনুল হক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফর ঘিরে সহিংসতায় রাজধানীর পল্টন থানা ২০২১ সালের এপ্রিলে দু’টি মামলা হয় মামুনুল হকের বিরুদ্ধে।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন রয়েল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণাসহ মামুনুল হককে আটক করে স্থানীয় লোকজন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে উপস্থিত হলে ঝর্ণাকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে দাবি করেন মামুনুল। ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাগারে রয়েছেন। মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল সোনারগাঁয়ের রয়েল রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকেই মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় অবস্থান করছিলেন মামুনুল হক। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ তাকে নজরদারিতে রেখেছিল।
পরে ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের আলোচিত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা করেন তার দাবি করা দ্বিতীয় স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা।
তার বিরুদ্ধে করা ৪১টি মামলার মধ্যে মতিঝিল থানায় করা চারটি, পল্টন থানায় ৯টি, নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় তিনটি, সিদ্ধিরগঞ্জে তিনটি, হাটহাজারী মডেল থানায় আটটি, খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় একটি, কুমিল্লার চান্দিনা থানায় একটি, রাজধানীর ভাটার থানায় একটি, মোহাম্মদপুর থানায় একটি, দারুস সালাম থানায় পাঁচটি ও মিরপুর মডেল থানায় তিনটি।
এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনালেও দু’টি মামলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ৫ মামলায় জামিন পেলেন মামুনুল হক
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় বাবুল আক্তারের জামিন
চট্টগ্রামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে একই আইনের অধীনে ঢাকায় করা এক মামলায় জামিন আবেদনের আদেশ দুই মাসের জন্য মুলতবি (স্ট্যান্ড ওভার) রেখেছেন।
রবিবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ জামিন দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. সারওয়ার হোসেন বাপ্পি।
এর আগে চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি চট্টগ্রামের মামলায় তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেছিলেন বিচারিক আদালত। পাশাপাশি ঢাকায় করা মামলায়ও জামিন না মঞ্জুর করা হয়। পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। স্ত্রী হত্যা মামলায় ২০২১ সালের মে মাসে গ্রেপ্তার হয়ে বাবুল বর্তমানে কারাগারে আছেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে সাইবার মামলায় জামিন পেলেন বাবুল আক্তারের বাবা ও ভাই
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা গত বছরের ১৯ অক্টোবর খুলশী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। মামলায় বাবুল আক্তার ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সাংবাদিক ইলিয়াস হোসাইন, বাবুলের ভাই হাবিবুর রহমান ও বাবা ওয়াদুদ মিয়াকে আসামি করা হয়। মামলায় বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা খানম হত্যা মামলা নিয়ে মিথ্যা-অসত্য তথ্য সরবরাহ প্রচারের অভিযোগ আনা হয়। একই অভিযোগে এ আসামিদের নামে গত ১৭ সেপ্টেম্বর ঢাকার ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার।
মামলায় অভিযোগ, মাহমুদা হত্যা মামলা নিয়ে আসামিরা ফেসবুক-ইউটিউবে মিথ্যা তথ্য প্রচার করে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। এতে পিবিআই ও সংস্থাপ্রধানের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। বাবুল, হাবিবুর ও ওয়াদুদের যোগসাজশে বিদেশে থাকা ইলিয়াস মিথ্যা তথ্য প্রচার করেন।
২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে গুলি ও ছুরিকাঘাতে নিহত হন বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা। এ মামলায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর বাবুলসহ সাতজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পিবিআই। এ মামলায় চলতি বছরের ১৩ মার্চ বাবুল আক্তারসহ সাতজনের নামে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালত।
আরও পড়ুন: জামিন পেলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বাবা ও ভাই
কুমিল্লায় স্কুলছাত্র হত্যায় ৫ জনের ফাঁসি
কুমিল্লার হোমনায় স্কুলছাত্র আশিকুর রহমান আশিক হত্যার দায়ে পাঁচজনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত। তাদের প্রত্যেককে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়া দুজনকে কারাদণ্ড এবং এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: মেহেরপুরে জোড়া খুনের মামলায় ৯ জনের ফাঁসি
রবিবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ৫ম আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর হোসেন এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লা মুরাদনগর উপজেলার আসাদপুরের মো. সুজন মিয়া (২৫), আল আমিন (৩০), সোহেল মিয়া (২৫), মো. শাহিন মিয়া (২৭) ও মো. সোহাগ মিয়া (২৮)।
এছাড়াও একই রায়ে আকিমুল হক মধু ও আবদুর রহমানকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। খালাস দেয়া হয় মো. সোহেলকে।
রায়ের সময় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত সোহেল ও বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রাপ্ত আকিমুল হক মধু, আবদুর রহমান ও খালাস প্রাপ্ত আসামি সোহেল ছাড়া বাকি আসামিরা পলাতক ছিলো।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, ২০১২ সালে আশিক অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলো। ওই সময় প্রেম সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আশিকুর রহমান আশিককে বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে জবাই করে হত্যা করে দণ্ডপ্রাপ্তরা।
রায়ে সন্তুষ প্রকাশ করে নিহত আশিকের বাবা মো. হারুন ভূইয়া বলেন, উচ্চ আদালতেও যেন এই রায় বহাল থাকে পাশাপাশি রায় যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।
কুমিল্লা আদালতের পরিদর্শক মুজিবুর রহমান বলেন, আসামিদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাবি অধ্যাপক ড. তাহের খুন: ২ আসামির ফাঁসি স্থগিত চেয়ে রিট
নারায়ণগঞ্জে চার খুন: ২৩ ফাঁসির আসামির ব্যাপারে হাইকোর্টের রায় ৪ এপ্রিল
মে মাসে ২৮২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার চোরাচালান পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ২৮২ কোটি ৩৩ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান পণ্য ও অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, জব্দকৃত সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ২০ কেজি ৫৬৯ গ্রাম স্বর্ণ, ৮৮ কেজি ৬৯৪ গ্রাম রূপা, ১ লাখ ৫১ হাজার ৬৪৫টি কসমেটিক সামগ্রী, ২ হাজার ৭৬৬টি ইমিটেশন জুয়েলারি, ২১ হাজার ৪৮১টি শাড়ি, ১ হাজার ২৭৫টি থ্রি-পিস/শার্টের টুকরো/চাদর/কম্বল, ৩ হাজার ৯১১টি তৈরি পোশাক, ১ হাজার ৯২৪ ঘনফুট কাঠ, ৬ হাজার ৬৬ কেজি চা পাতা। ১ লাখ ৬৫ হাজার ঘটফুট পাথর, ১০টি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান, ১১টি পিকআপ, ৫টি প্রাইভেটকার, ২৫টি সিএনজি/ইজিবাইক এবং ১১৬টি মোটরসাইকেল।
জব্দ করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- আটটি পিস্তল, আটটি ম্যাগাজিন, সাতটি সব ধরনের বন্দুক, ১০০ কেজি সালফার, চারটি বিস্ফোরক লাঠি, সাতটি ডেটোনেটর ও ৪০ রাউন্ড গুলি।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে শারজাহ ফ্লাইট থেকে ১.৩ কোটি টাকার স্বর্ণ জব্দ
গত মাসেও বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে বিজিবি। জব্দকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ১৯ লাখ ৫৫ হাজার ২১০ পিস ইয়াবা বড়ি, ২৮ কেজি ৭১০ গ্রাম ক্রিস্টাল
মেথ আইস, ২৭ কেজি ৮৬০ গ্রাম হেরোইন, ২২ হাজার ৬১৪ বোতল ফেনসিডিল, ২৩ হাজার ৬৮২ বোতল বিদেশি মদ, ৩ হাজার ৫শ’ বোতল বিদেশি মদ, ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট,৬ হাজার ৬৬১ ইস্কাফ সিরাপ, ৬৯৮ বোতল এমকেডিল/কফিডিল,১৭ লাখ ৭৬ হাজার ৯৪১ পিস বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ২ কেজি ৪৪৫ গ্রাম কোকেন এবং এক লাখ ৬০ হাজার ১৬৮টি অন্যান্য ট্যাবলেট।
বিভিন্ন ধরনের মাদক চোরাচালান ও অন্যান্য চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২২০ জন চোরাকারবারীর বিরুদ্ধে এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৩১ জন বাংলাদেশী, চার ভারতীয় এবং ২৮ জন মিয়ানমারের নাগরিকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাকা বিমানবন্দরে এক কেজি স্বর্ণ জব্দ, আটক ১
চাঁদপুরে কুরিয়ার সার্ভিস থেকে ২০ লাখ মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধার
চাঁদপুর শহরের তালতলা এলাকার জননী কুরিয়ার সার্ভিস থেকে ২০ লাখ মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড।
কোস্ট গার্ড ঢাকা জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার খন্দকার মুনিফ তকি বৃহস্পতিবার (১ জুন) বিকালে এ তথ্য জানান।
আরও পড়ুন: চাঁদপুরে ১০ লাখ মিটার অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোস্ট গার্ড স্টেশনের অফিসার লেফটেন্যান্ট সামশ সাদিকীন-এর নেতৃত্বে জননী কুরিয়ার সার্ভিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের অফিসে বিকাল ৪টার দিকে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২০ লাখ মিটার নতুন কারেন্ট জাল উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও বলেন, উদ্ধার জালের প্রকৃত মালিককে খুঁজে না পাওয়ায় এসময় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পরে জালগুলো কোস্ট গার্ড চাঁদপুর স্টেশন কম্পাউন্ডে এনে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এ অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাহান সাথী ও উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা জামিল হোসেনসহ অন্যান্যরা।
আরও পড়ুন: কুষ্টিয়ায় ১০ হাজার মিটার কারেন্ট জাল উদ্ধার
লক্ষ্মীপুরে ৫ কোটি টাকার কারেন্ট জাল জব্দ
বান্দরবানে কেএনএফের সদর দপ্তর দখল, ১ সেনা সদস্য নিহত
সেনাবাহিনীর একটি টহল দল বান্দরবানের রুমা উপজেলার থেপি পাড়া এলাকায় কেএনএফ (কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট) এর সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সদর দপ্তরসহ একটি গোপন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প দখল করেছে। এই অভিযানে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইসে (আইইডি) বিস্ফোরণে সেনাবাহিনীর এক সদস্য নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কেএনএফের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প এলাকার আশেপাশে বসবাসরত স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে রুমা সেনা জোনের একটি টহল দল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। কেএনএফ প্রশিক্ষণ ক্যাম্পের কাছাকাছি পৌঁছালে কেএনএফ সশস্ত্র সন্ত্রাসী দলটি পালিয়ে যায়। তবে ওই সময় কেএনএফের পুতে রাখা আইইডি বিস্ফোরণে সৈনিক তুজাম (৩০) আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হেলিকপ্টার দিয়ে তাকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
সাধারণ জনগণের নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীর বিশেষায়িত দল এই ধরনের সম্ভাব্য আইইডি চিহ্নিত করে নিষ্ক্রিয় করছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ সৈনিকের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন এবং তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে কেএনএফ সন্ত্রাসীরা বান্দরবানের রুমা, রোয়ানছড়ি ও থানচি উপজেলার পাহাড়ি জনপদে ক্রমাগত হত্যা, অপহরণ, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো এই ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানে আইইডি বিস্ফোরণে এক শ্রমিক নিহত
বান্দরবানে কেএনএফ নেতা গ্রেপ্তার