শিক্ষা
প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকের নিয়োগ পরীক্ষা আগামীকাল থেকে শুরু
আগামীকাল শুক্রবার থেকে সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা-২০২০ এর লিখিত পরীক্ষা শুরু হচ্ছে।
এর মধ্যে ১ম ধাপে ২২ জেলায় ও ২য় ধাপে ২০ মে ৩০ জেলায় এবং ৩ জুন ৩য় ধাপের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ৩১টি জেলায়।
বৃহস্পতিবার সচিবলয়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ২০২০ উপলক্ষে আয়োজতি সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামীকাল ২২ এপ্রিল প্রথমধাপে ২২ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৪ জেলার সব এবং আট জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২০ মে দ্বিতীয়ধাপে ৩০ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে আট জেলার সব এবং ২২ জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া তৃতীয়ধাপে ৩১ জেলায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৭ জেলার সব এবং ১৪টি জেলার আংশিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
আরও পড়ুন: শিক্ষার্থীরা নতুন বইয়ের সাথে ২ হাজার টাকাও পাবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
প্রতিমন্ত্রী জানান, ২০ অক্টোবর ২০২০ সালে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ৩২ হাজার ৫৭৭টি সহকারী শিক্ষকের শূন্যপদে জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হয়নি। ইতোমধ্যে অবসরজনিত কারণে আরও দশ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে করে বিদ্যালয়সমূহে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছ; যা পাঠদান কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে। এ সমস্যা নিরসনকল্পে মন্ত্রণালয় পূর্বের বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্যপদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা পরিচালনার স্বার্থে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর হতে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা পরিচালনা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। প্রতিটি দায়িত্ব সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অতীতের অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি স্থানীয় অসাধুচক্র শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষাকে বিভিন্নভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। এবার যেন সেটা না হয় সেটি নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা অপর্যাপ্ত হলে বিভাগীয় কমিশনার/মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে নারী পুলিশসহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। প্রতিটি পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় জনবলসহ মেটাল ডিটেক্টর সরবরাহসহ হ্যান্ড মেটাল ডিটেকটর দ্বারা পরীক্ষার্থীদের দেহ তল্লাশি করা হবে। এক্ষেত্রে নারী পরীক্ষার্থীদের মহিলা পুলিশ দ্বারা তল্লাশির ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জাকির হোসেন বলেন, পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে নির্ধারিত আসন গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে পরীক্ষা কেন্দ্রের সকল প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়া হবে। এ ছাড়া পুরুষ পরীক্ষার্থী ও মহিলা পরীক্ষার্থীদের কেন্দ্র যথাসম্ভব পৃথক করার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রবেশপত্রের রঙিন ছবি ও স্বাক্ষর এবং রঙিন ছবিযুক্ত হাজির শিটের পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে দেখা হবে। এছাড়া ওএমআর শিটের পরীক্ষার্থীর চেহারা মিলিয়ে দেখা হবে। কোন পরীক্ষার্থী কোন সেটের প্রশ্ন পাবেন তা পরীক্ষা শুরুর ৫ মিনিট আগে জানতে পারবেন। ভিন্ন সেটে পরীক্ষা দিলে তা বাতিল বলে গণ্য হবে।
আরও পড়ুন: ২০ রমজান পর্যন্ত প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা থাকবে: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী
এসময় প্রতিমন্ত্রী লিখিত পরীক্ষার ফলাফল ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগদান প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমকি ও গণশক্ষিা মন্ত্রণালয়রে সম্মানতি সচবি জনাব আমনিুল ইসলাম খান, প্রাথমকি শক্ষিা অধদিপ্তররে মহাপরচিালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, প্রাথমিক ও গণশক্ষিা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমকি শিক্ষা অধদিপ্তররে কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা কলেজের পাশে বিস্ফোরণের পর উত্তেজনা বৃদ্ধি
ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসের পাশে বুধবার দুটি অপরিশোধিত বোমা বিস্ফোরণের পর নিউমার্কেট এলাকায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এর ফলে দোকানিরা তাদের দোকান বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন।
বুধবার বিকাল ৫টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে কলেজের সামনে দুটি অপরিশোধিত বোমা বিস্ফোরণ ঘটালে পথচারী ও দোকানিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিস্ফোরণের পর ওই এলাকায় কিছু সময়ের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার শাহেন শাহ মাহমুদ জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ঘটনা জানতে পেরে আমরা সেখানে গিয়ে পুলিশ মোতায়ন করি এবং ঢাকা কলেজের শিক্ষকদের সহয়তায় ছাত্রদের ভেতরে পাঠানো হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।’
তিনি বলেন, ‘ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেট ব্যাবসায়ীদের সঙ্গে চলমান সমস্যা নিরসনে ব্যবসায়ী সমিতির নেতা ও ঢাকা কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা চলমান।’ আজকের ভেতরেই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে নিউমার্কেটের ব্যাবসায়ীরা শান্তির প্রতীক হিসেবে মার্কেটের গেটে সাদা পতাকা উত্তোলন করেছেন।
এদিকে মঙ্গলবার ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের মধ্যে সহিংস সংঘর্ষের সময় আহত হওয়া ডিলিংক কুরিয়ার সার্ভিসের ডেলিভারি ম্যান নাহিদ হোসেন নামে ২০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি মারা গেছেন।
এর আগে সোমবার মধ্যরাতে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এর জেরে পরদিন মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এ দিন সাংবাদিক ও শিক্ষার্থীসহ ৩০ জনের বেশি মানুষ আহত হন।
অনলাইন ভিত্তিক প্রশিক্ষণ জোরদার করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, দেশে কারিগরি শিক্ষার ব্যাপক বিস্তারে ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করে অনলাইন ভিত্তিক প্রশিক্ষণ জোরদার করা হবে।
মন্ত্রী বলেন, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তত্ত্বীয় শিক্ষার চেয়ে হাতে কলমে শেখানোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কর্মের উপযোগী করে তুলতে হবে।
রাজধানীর কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সার্বিক অগ্রগতি বিষয়ক এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষেত্রে নিয়ে শেখানোর জন্য একাডেমিয়া ইন্ডাস্ট্রি সংযোগ বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হবে। এজন্য কারিগরি শিক্ষার শিক্ষাক্রম পরিমার্জন করা হবে।
অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী দক্ষ পেশাদার ব্যক্তিদের কারিগরি প্রতিষ্ঠানে অতিথি প্রশিক্ষক হিসেবে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিভাগের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ অধীন দপ্তর সংস্থার প্রধানরা এবং বিভিন্ন প্রকল্পসমূহের পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ আইসিটি কম্পিটিশনের দ্বিতীয় পর্বে ১২৭ শিক্ষার্থী
সরকার আর শিক্ষিত বেকার তৈরি করতে চায় না: শিক্ষামন্ত্রী
করোনায় কর্মজীবন নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিষন্নতা-মানসিক চাপ বেড়েছে: শাবিপ্রবির গবেষণা
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে বিষন্নতা এবং মানসিক চাপ তাদেরকে ভয়ানক স্বাস্থ্য ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কোভিড-১৯ চলাকালীন এই বিষন্নতা ও মানসিক চাপ কয়েকগুণ বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই মানসিক চাপ এবং হতাশার পেছনে অন্যতম কারণ কোভিড-১৯ মহামারিতে কর্মসংস্থানের নিরাপত্তাহীনতা।
সম্প্রতি শাবিপ্রবির পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. জামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে তিন জন শিক্ষার্থী উপমা চৌধুরী, মো. আহসান হাবিব শুভ্র ও সৈয়দ মো. ফারহানের একটি গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
তাদের গবেষণার মূল উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের করোনা মহামারিতে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে মানসিক অবস্থা এবং হতাশা বৃদ্ধি পায় কিনা তা যাচাই করা। গবেষণাটি পরিচালিত হয় ২০২০-২১ সালে এবং সম্প্রতি এর ওপর ভিত্তি করে একটি গবেষণা প্রবন্ধ আন্তর্জাতিক জার্নাল এ প্রকাশিত হয়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঈদুল ফিতরের ছুটি ঘোষণা
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের ৬২ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ৩য়, ৪র্থ বর্ষ ও মাস্টার্সে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের ওপর পরিচালিত এ গবেষণায় দেখা গেছে অধিকাংশ (৮০ শতাংশ) শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষন্নতা রয়েছে এবং ৭০ শতাংশ মানসিক চাপের মধ্যে রয়েছে।
ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের পাশাপাশি করোনাভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ভয়ও মানসিক চাপ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে। ছাত্রদের তুলনায় ছাত্রীরাই দ্বিগুণের চেয়ে বেশি বিষন্নতা এবং মানসিক চাপের শিকার। শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের ধারণা কোভিড ১৯ মহামারির কারণে তাদের ভবিষ্যতে কর্মসংস্থান অনিশ্চিত তাদের বিষন্নতা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি।
গবেষণায় দেখা গেছে, উপযুক্ত চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা এবং স্নাতক সম্পন্ন হওয়ার সময়ের সঙ্গে নেতিবাচকভাবে সম্পর্কিত ছিল। আজকাল বেশির ভাগ প্রাইভেট কোম্পানি ভালো উদ্ভাবনী এবং সহজেই মানিয়ে নিতে পারে এমন যুবকদের পছন্দ করে। তাই শিক্ষার্থীদের স্নাতক বিলম্ব হওয়ায় তাদের এই সুযোগও বিলম্ব হচ্ছে যা তাদের অধিক হতাশা ও মানসিক চাপে রাখছে।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভাগ ইন্টার্নশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে অথবা ইন্টার্নশিপ তাদের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত সেসব শিক্ষার্থীরা বাকি শিক্ষার্থীদের তুলনায় ৩৬ শতাংশ কম বিষন্নতা এবং মানসিক চাপে ভোগে। যেসব শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভাগ কোনো ধরনের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কোনো কার্যক্রম বা কোর্সের ব্যবস্থা করে অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের পাঠ্যক্রমে দ্বিতীয় বা তৃতীয় বর্ষে থাকাকালীন মাঠ পর্যায়ের যেসব কাজের অভিজ্ঞতা থাকে তা দেয়ার সুযোগ করে দেয় সেসব শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন নিয়ে বিষন্নতা কম পাওয়া গেছে। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ ধরনের কার্যক্রমের সুযোগ করে দেয় সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিষন্নতা ৪৬ শতাংশ কম পাওয়া যায়।
গ্র্যাজুয়েশন বিলম্বিত হওয়া, উপযুক্ত চাকরি পাওয়ার জন্য দক্ষতার অভাব, স্টার্টআপ প্ল্যান এবং তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ইন্টার্নশিপ সুবিধা না পাওয়া হতাশা ও মানসিক চাপে বড় অবদান রাখছে। গ্রাজুয়েশনের পর অনলাইন মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রাম এবং ইন্টার্নশিপ প্রদানের মাধ্যমে পরিস্থিতি রোধ করতে সরকারের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সহযোগিতা করা উচিত যাতে তারা তাদের মানসিক চাপ মুছে ফেলতে পারে এবং হতাশা ও চাপ কাটিয়ে উঠতে পারে।
বর্তমানে এই মানসিক চাপ এবং হতাশা থেকে শিক্ষার্থীদের কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করার জন্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রোগ্রাম আয়োজন করা উচিৎ।
মূলত এই মানসিক চাপ, হতাশা বা বিষন্নতার পেছনে যে কারণগুলো যেমন তাদের দক্ষতার অভাব এবং তাদের ইন্টার্নশিপের সুযোগ দেয়া হয় না এইসব ব্যাপারগুলো নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সরকার এবং নীতি নির্ধারক সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি শিক্ষক সমিতির নির্বাচন: সভাপতি আখতার, সা. সম্পাদক জহির
নারী গ্রাজুয়েটরা অধিক বিষন্নতার স্বীকার পুরুষদের তুলনায় কারণ বেশিরভাগ নারী শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে তাদের কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা কম থাকে এবং তাদের বিভিন্ন পেশার মানুষ যারা কর্মসংস্থানের সঙ্গে জড়িত তাদের সঙ্গে অধিক যোগাযোগ স্থাপন হয় না। যেসকল শিক্ষার্থীরা শুধু পাঠ্যক্রম ভিত্তিক পড়াশোনা করে থাকে তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যৎ কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকে না সেক্ষেত্রে এসব শিক্ষার্থীদের হতাশা এবং মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায়। তাই শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ইন্টার্নশিপের সুযোগ প্রদান করার মাধ্যমে তাদের মানসিক হতাশা ও চাপ কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করা সম্ভব।
তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিৎ তারা যেন এসকল শিক্ষার্থীদের শিল্প সফর এবং ইন্টার্নশিপের আওতায় এনে তাদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবন সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা দেয়।
ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি বন্ধ রাখতে ইউজিসি’র নির্দেশ
ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রোগ্রামে নতুন শিক্ষার্থী ভর্তি বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
রবিবার কমিশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালক মো.ওমর ফারুখ স্বাক্ষরিত পত্রে ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ নির্দেশনা দেয়া হয়।
উক্ত পত্রে উল্লেখ করা হয় যে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে অপ্রতুল শিক্ষক সংখ্যা, যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব, গবেষণার অনুপস্থিতি, আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত বৈধ কর্তৃপক্ষের অনুপস্থিতি, শিক্ষাসহায়ক ক্যাম্পাসের অনুপস্থিতি, লাইব্রেরিতে প্রয়োজনীয় পাঠ্য বইয়ের অপ্রতুলতা রয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়টির সকল কারিকুলাম মেয়াদ উত্তীর্ণ।
আরও পড়ুন: শিক্ষাবর্ষের সময় কমানো, ছুটি বাতিলের পরামর্শ ইউজিসির
পত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ২০১০-এর ধারা ১৮ ও ২০ আইন অনুযায়ী সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি, শিক্ষাদান, সকল পরীক্ষা ও উহার ফলাফল অনুমোদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত। আইনের ১৭ ও ১৯ ধারা অনুযায়ী ভাইস-চ্যান্সেলর একাধারে সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি। আইনের ৩১ ধারা অনুযায়ী মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য সকল বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর নিয়োগ দিয়ে থাকেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি তথা আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত ভাইস-চ্যান্সেলরের অবর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল পরীক্ষা ও উহার ফলাফলের আইনগত কোনো বৈধতা নেই।
আরও পড়ুন: ৫ শর্তে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া যাবে: ইউজিসি
ব্রিটানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭ সাল থেকে আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত ভিসি এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রো-ভিসি ও ট্রেজারার নেই। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্য কর্তৃক নিযুক্ত উপাচার্যের অবর্তমানে অন্য কারো সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিলের সভার আইনগত কোনো বৈধতা নেই বলে পত্রে উল্লেখ করা হয়।
জাবির সাময়িক উপাচার্য হলেন অধ্যাপক নুরুল আলম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক মো. নুরুল আলমকে সাময়িকভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তিনি এর আগে জাবির উপ উপাচার্য ছিলেন।
রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাসুম আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ এই নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারেন বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
অধ্যাপক মো. নুরুল আলম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপকও।
এর আগে গত ১ মার্চ অধ্যাপক নুরুল আলমকে উপ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক প্রয়োজনে অন্তর্বর্তীকালীন ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়।
উপাচার্য পদে অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের মেয়াদ শেষ হয় গত ২ মার্চ।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে র্যাগ ডের নামে অশ্লীলতা বন্ধ করতে নির্দেশ
র্যাগ ডের নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টি, উদ্দাম নৃত্য, বুলিং, অশ্লীলতা ও নগ্নতা বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (১৭ এপ্রিল) এই সংক্রান্ত রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। আগামী ৩০ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া র্যাগ ডের নামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টি, উদ্দাম নৃত্য, বুলিং, অশ্লীলতা ও নগ্নতা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবেনা, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, তথ্য সচিব, সংস্কৃতি সচিব, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাবি, রাবি, জাবি, খুবি ও ববির উপাচার্য, পুলিশের মহাপরিদর্শক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদেরকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
গত ৭ এপ্রিল আইনজীবী মোহাম্মদ কামরুল হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি দায়ের করেন। এর আগে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। নোটিশের জবাব না পেয়ে রিট করা হয় বলে জানান কামরুল হাসান।
আইনজীবী কামরুল হাসান বলেন, সম্প্রতি র্যাগ ডের নামে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজে পার্টির আয়োজন করা হয়। এগুলোর স্থির চিত্র ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিক জীবন মান তৈরিতে কারিগর হওয়ার কথা শিক্ষকদের। অথচ সেই শিক্ষা প্রশাসকদের পৃষ্ঠ পোষকতায় এবং তাদের উপস্থিতিতে চরম নৈতিক অবক্ষয়মূলক কার্যলাপ চলছে। আগামী প্রজন্মকে অপসংস্কৃতির হাত থেকে রক্ষা করতে র্যাগ ডের নামে এসব অশ্লীল কার্যক্রম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্ধ করা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
পড়ুন: র্যাগিংয়ের দায়ে খুবির ৫ শিক্ষার্থীর বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি
মাদক মামলায় হাইকোর্টে জি কে শামীমের জামিন আবেদন
ঢাবি ছাত্রকে মারধরের অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রকে জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক অতনু বর্মন ও তার অনুসারীরা মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রের নাম রাকিবুল হাসান সজিব। তিনি সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ছাত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহাম্মদ মুহসীন হলের বাসিন্দা।
রাকিবুল হাসান সজীব জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে তিনি হলের দিকে ফিরছিলেন। এসময় উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে মোটরসাইকেলে থাকা অতনু বর্মণ ও তার অনুসারীরা তার মোটরসাইকেলের সামনে আসে। এসময় আমাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘তর্কের এক পর্যায়ে অতনু বর্মনের ২০ থেকে ২৫ জন অনুসারী আমাকে মারধর শুরু করে। যদিও আমি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলে পরিচয় দিই।’
পরে সজিবের দুই বন্ধু এসে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।
আরও পড়ুন: চবির চলন্ত শাটল ট্রেনে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে অতনু বর্মন বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
তিনি বলেন,‘তবে আমরা যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম চত্বরের দিকে যাচ্ছিলাম। তখন হঠাৎ ভুল দিক থেকে একটি মোটরসাইকেল আমাদের সামনে এসে দাঁড়ায়। তখন আমি আরোহীকে রাস্তার ভুল দিক দিয়ে গাড়ি চালানোর কারণ জিজ্ঞেস করি।’
অতনু আরও বলেন, ‘সে তার ভুলের জন্য ক্ষমা চাওয়ায় তখনই বিষয়টির সমাধান হয়ে যায়। আমরা তাকে মারধর করিনি বা তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করিনি।’
ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী ইউএনবিকে বলেন, ‘ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয়েছে। তাকে বলা হয়েছে যথাযথ তথ্য প্রমাণ সাপেক্ষে লিখিত অভিযোগ দেয়ার জন্য।’
এদিকে জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মিহির লাল সাহা বলেন, জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে ওই ছেলের কথা কাটাকাটি হয়। তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি। এছাড়া তার হলের বাইরে হওয়ায় বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেখবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: সংবাদে ছাত্রলীগ সভাপতির নাম 'উল্লেখ না করায়' সাংবাদিককে 'মারধর'
যৌন হয়রানির অভিযোগে খুবির আরেক শিক্ষক বরখাস্ত
চবির চলন্ত শাটল ট্রেনে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) চলন্ত শাটল ট্রেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। শাটল ট্রেনে থাকা বহিরাগত বখাটের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী।
বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শহরের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া চলন্ত শাটল ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী কলা ও মানববিদ্যা অনুষদভুক্ত একটি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।
তবে এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন অভিযোগ পায়নি বলে জানিয়েছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমি বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাস থেকে সাড়ে ৫টার শাটলে সামনে থেকে ৩ অথবা ৪ নম্বর বগিতে ওঠি। একই বগিতে আরও দুজন বয়স্ক লোক ছিলেন। সময় মতো ট্রেন না ছাড়া এবং ইফতারের সময় হয়ে যাওয়ায় বয়স্ক দুই লোক নেমে যান। ইফতারের পর নতুন করে দুজন ছেলে বগিতে ওঠে। এদের মধ্যে একজন একবার আমাকে ফোনের লাইট দিয়ে দেখে চলে যায়। পরে আবার এসে জিজ্ঞেস করে, আপু আপনি কোথায় যাবেন? আমি বললাম, কেন? তখন সে বলল ট্রেন ছাড়বে না। বললাম, তো? বলল, ট্রেন ছাড়বে না তাই বললাম আরকি।’
ভুক্তভোগী জানান, সাড়ে ৫টার শিডিউলের ট্রেন ছাড়ে সন্ধ্যা ৭টায়। ছেলেটি বগির এপাশ-ওপাশ হাঁটাহাঁটি করছে। তখন আমি তাদের জিজ্ঞেস করলাম তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কি না। তারা বলল বহদ্দারহাট থেকে এসেছে।
পড়ুন: ঈদের ছুটিতে ২৪ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে চবি
ভুক্তভোগী বলেন, ‘পরে ট্রেন একটি স্টেশনে থেমে আবার চলতে শুরু করলে হঠাৎ দুই ছেলের একজন এসে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে এক হাতে আমার মুখ এবং অপর হাতে আমার মাথা চেপে ধরে। সঙ্গে সঙ্গেই আমি চিৎকার করি এবং হাত সরানোর চেষ্টা করতে করতে মাটিতে পড়ে যাই। চোখের সামনে মৃত্যু দেখছিলাম। তখনো মুখে হাত দিয়ে চেপে ধরা এবং আমি প্রাণপণে হাত ও কনুই দিয়ে ঠেলে বিকট শব্দে চিৎকার করতে থাকি। হঠাৎ তার হাত ফসকে যেতেই আমার চিৎকার বাইরে যাচ্ছিল। তখনই কোথাও যেন পালিয়ে গেল। আমি জানালা দিয়ে হাত, মাথা বের করে চিৎকার করতে থাকি।
তিনি বলেন, বাড়িতে এসে দেখি আমার মুখের বিভিন্ন জায়গায় নখের ছোট-বড় লাল আঁচড়, চোখের ঠিক ওপরে কালো, সেখানে সুঁই ফোটানোর মতো অনুভব হচ্ছে এবং চোখের কোনায় ফুলে ব্যথা, গলা বসে গেছে, মানসিকভাবে অত্যন্ত বিপর্যস্ত।’
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) ড. শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘এটা তো খুব ভয়ংকর ঘটনা। মেয়েটি আমাদের এখনো বিষয়টি জানায়নি। আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছি।’ শাটলের বিভিন্ন বগিতে পুলিশ থাকার কথা। এমন কিছু হওয়াটা অপ্রত্যাশিত।
পড়ুন: চবি শাটলে পাথর নিক্ষেপ, আটক ৩
সংবাদে ছাত্রলীগ সভাপতির নাম 'উল্লেখ না করায়' সাংবাদিককে 'মারধর'
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সংবাদে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের নাম উল্লেখ না করায় এক সাংবাদিককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক আশিকুল হক রিফাত ‘দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস’ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি স্যার এ এফ রহমান হলের আবাসিক ছাত্র।
আরও পড়ুন: কড়া নিরাপত্তার মধ্যে ঢাবিতে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া অভিযোগপত্রে রিফাত অভিযোগ করেন, ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং একই হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ফারহান তানভীর নাসিফ বৃহস্পতিবার সংবাদে ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের নাম উল্লেখ না করায় তাকে কটূক্তি করেন।
রিফাত বলেন, ‘একটি প্রতিবেদনে আল নাহিয়ান খান জয়ের নাম হাইলাইট না করায় এর আগে নাসিফ ও আমার মধ্যে বাগ-বিতণ্ডা হয়। বৃহস্পতিবার একই বিষয় নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং তিনি আমাকে মারধর করেন।’
তবে এ বিষয়ে নাসিফের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
স্যার এ এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আমি তাদের দুজনের সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলেছি।
আরও পড়ুন: দুই বছর পর মঙ্গল শোভাযাত্রার জন্য প্রস্তুত ঢাবি
এ এফ আর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাইফুল হক বলেন, ‘অভিযোগ তদন্তে দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’