%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F
সশস্ত্র বাহিনী দিবস: শিখা অনির্বাণে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২৩ উপলক্ষে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
এ সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার পেশ করে।
আরও পড়ুন: সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সেনানিবাসে যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন প্রধানমন্ত্রীর
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৫৮টি ভাষণের সংকলন ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাষা’- শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২০ নভেম্বর) তার সরকারি বাসভবন গণভবনে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন প্রণীত বইটির মোড়ক উন্মোচন করেন।
বইটির ভূমিকা লিখেছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে প্রতিটি বক্তৃতার সম্পূর্ণ অডিও সংস্করণের কিউআর কোড অন্তর্ভুক্ত আছে। বইটি প্রকাশ করেছেন মাওলা ব্রাদার্স।
বই উন্মোচন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুরকার মো. আকরাম-আল-হোসেন এবং মাওলা ব্রাদার্সের মালিক আহমেদ মাহমুদুল হক।
বইটির প্রকাশক বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ ইতিহাসের অমূল্য উপাদান। তার বক্তৃতা একদিকে যেমন তার সংগ্রামী জীবনকে প্রতিফলিত করে। অন্যদিকে বাঙালি জাতির আত্মত্যাগের গৌরব ও স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষাকে তুলে ধরে।
মাহমুদুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাঙালির অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার উজ্জ্বল দলিল।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালের ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক বলিষ্ঠ ভাষণের ফলশ্রুতিতে দীর্ঘ ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। ঐতিহাসিক ভাষণের কারণে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক অঙ্গনে 'রাজনীতির কবি' উপাধিতে ভূষিত হন। পরে, ইউনেস্কো ভাষণটিকে 'ডকুমেন্টারি হেরিটেজ' হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং এটিকে মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে (এমওডব্লিউ) অন্তর্ভুক্ত করে।’
তিনি বলেন, এই বইয়ে অন্তর্ভুক্ত তার বক্তৃতা শুধু বাংলাদেশের জনগণের নয়, সমগ্র বিশ্বের মানুষের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতার পথ দেখাবে।
বাংলাদেশ-মালদ্বীপ-নেপালের উচিত পারস্পরিক পর্যটনকে উৎসাহিত করা: প্রধানমন্ত্রী
পারস্পরিক সুবিধার জন্য পর্যটনের উন্নয়নে বাংলাদেশ, নেপাল ও মালদ্বীপের মধ্যে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (২০ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশে নিযুক্ত মালদ্বীপের বিদায়ী হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামীরের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বাংলাদেশ, নেপাল ও মালদ্বীপ পারস্পরিক স্বার্থে পর্যটন খাতে সহযোগিতা বাড়াতে পারে।’
প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
তিনি বলেন, 'তিন দেশের মধ্যে পর্যটনের বিকাশ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি মানে ভারতেরও প্রবৃদ্ধি: শ্রিংলা
প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুইজ্জুকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, পর্যটনে বাংলাদেশের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে বিশ্বের দীর্ঘতম কক্সবাজারের বালুকাময় সমুদ্র সৈকতকে কেন্দ্র করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালদ্বীপে অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক কাজ করছেন।‘তারা উভয় দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছেন।’
রাষ্ট্রদূত তার মেয়াদকালে সরকারের সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, তার শাসনামলে মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ এম জিয়াউদ্দিন ও মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
আরও পড়ুন:কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের কাছে রাষ্ট্রদূত ইমরানের পরিচয়পত্র পেশ, পোশাক ও ওষুধ শিল্পে সহযোগিতায় দেশটির আগ্রহ প্রকাশ
যুক্তরাজ্য ও জার্মানিকে পেছনে ফেলে ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের ৯ম বৃহত্তম বাজার হবে বাংলাদেশ: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার এবং সরকার বিশ্বের অনেক প্রতিষ্ঠিত বাজারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি যাতে বাংলাদেশ যুক্তরাজ্য ও জার্মানির মতো প্রতিষ্ঠিত বাজার এবং বর্তমান উচ্চ প্রবৃদ্ধির দেশ ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডকে অতিক্রম করতে পারে। আমাদের সে প্রচেষ্টা রয়েছে।’
রবিবার (১৯ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর হোটেল র্যাডিসন ব্লুতে ফরেন ইনভেস্টরস’ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ফিকি) ৬০ বছর পূর্তি উদযাপন ও বিনিয়োগ মেলা ২০২৩ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ রয়েছে। পাশাপাশি আমরা প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করেছি। আমরা মনে করি, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে পরিণত হবে।’
আরও পড়ুন: রবিবার শুরু হচ্ছে এফআইসিসিআইয়ের ‘৬০তম বর্ষপূর্তি ও বিনিয়োগ মেলা ২০২৩’
বাংলাদেশের জনসংখ্যা বিশাল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার তাদের (জনসংখ্যা) উপযুক্ত ব্যবহারের জন্য দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ২০২৫ সালের মধ্যে ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত ধনী মানুষের সংখ্যা হবে ৩ কোটি ৪০ লাখ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে মাথাপিছু আনুমানিক জিডিপি হবে ৫ হাজার ৮৮০ মার্কিন ডলার।
সরকার এই অঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ জোরদার করার পদক্ষেপ নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কৌশলগত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশ হতে পারে ৩০০ কোটি মানুষের আঞ্চলিক বাজারের কেন্দ্রবিন্দু।’
প্রধানমন্ত্রী ফিকি প্রকাশিত 'ক্যাটালাইজিং গ্রেটার এফডিআই ফর ভিশন ২০৪১' শীর্ষক একটি গবেষণা বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
আরও পড়ুন: ভোটের মধ্যে দিয়ে সরকার পরিবর্তন হবে: প্রধানমন্ত্রী
আজ আ. লীগের মনোনয়ন ফরম বিক্রির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগের জন্য জনসমক্ষে ক্ষমা চান: বিএনপি-জামায়াতকে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) বিএনপি ও জামায়াতকে মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগ করার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছেন।
ভোটের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত জানিয়ে তিনি ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে সব দলকে আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপি অগ্নিসংযোগ করে মানুষ হত্যা করেছে এবং জানমালের ক্ষতি করেছে। তাই আমরা চাই তারা জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে তারপর নির্বাচনে আসুক। নির্বাচনের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত।’
রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় আওয়ামী লীগের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রথম সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে।
সবার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আসুন নির্বাচনে অংশ নিন। জনগণের কাছে যান এবং জনগণের কাছে আপনাদের ভোট দিতে বলুন।’
অগ্নিসংযোগের ভয় না পেয়ে নিয়ম মেনে যথাসময়ে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করায় তিনি নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ধন্যবাদ জানান।
সময়মতো নির্বাচন যাতে সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয় সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন।
আরও পড়ুন: মুণ্ডুহীন বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এবং তাদের পছন্দের সরকার গঠনের জন্যই এই নির্বাচন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব- এই স্লোগান দিতে দিতে আপনারা (নির্বাচনে) ভোট দিতে যাবেন।’
যুব সমাজের প্রতি ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছে এবং এখন সবাই এর সুফল পাচ্ছে। এখন তার সরকার আগামীতে দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি আমরা তাদের (তরুণদের) সহযোগিতা (এটি করতে) পাব।’
তিনি প্রশ্ন করেন, যারা খুন করেছে এবং সাধারণ মানুষকে হত্যার পরিকল্পনা করেছে; জনগণ কেন তাদের ভোট দিতে যাবে এবং জনগণ কেন তাদের ওপর আস্থা রাখবে?
তিনি আরও বলেন, জনগণ তাদের বিশ্বাস করে না, কারণ তারা খুনি ও ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত।
নির্বাচন জনগণের সাংবিধানিক অধিকার উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় এসেছে এবং জনগণ ভোট দেবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারো সাহস থাকলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে। জনসমর্থন থাকলে তারা তা পাবে।’
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভোটে যে দল জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারাই সরকার গঠন করবে।
তিনি বলেন, তারা (বিএনপি-জামায়াত) জনগণের ওপর আস্থা রাখতে ব্যর্থ হয়ে হামলা চালাচ্ছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অবশ্যই অগ্নিসংযোগ সহিংসতা কাটিয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসংযোগকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন: দলীয় সদস্যদের প্রতি শেখ হাসিনা
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে বিশ্ব নেতাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ফিলিস্তিনে চলমান সংঘাতের অবসানের দাবিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়।
তিনি বলেন, ‘আমি নির্মম হত্যাযজ্ঞের মুখে অসহায় ফিলিস্তিনিদের মর্মান্তিক, অমানবিক অস্তিত্বের প্রতি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। আমাদের সকলের এক বিশ্ব হিসেবে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং সংঘাতের অবসানের দাবি জানানোর সময় এসেছে।’
শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ভারত আয়োজিত দ্বিতীয় ভয়েস অব দ্য গ্লোবাল সাউথ সামিট ২০২৩ এ ভাষণ দেওয়ার সময় এ আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘এটি মূলত জাতিগুলোর মধ্যে বিশ্বাসের ঘাটতি এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি শ্রদ্ধার অভাব, যা ইউরোপে চলমান যুদ্ধ এবং ফিলিস্তিনে গণহত্যার দিকে পরিচালিত করেছে।’
শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, এই সংঘাতগুলো যুদ্ধরত দেশ এবং জড়িত আন্তর্জাতিক অংশদের মধ্যে সত্যিকারের বিশ্বাস ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা তৈরি করার জরুরি প্রয়োজনের আহ্বান জানায়।
তিনি বলেন, ‘আমাদের বিশ্ব অসহনীয় দারিদ্র্য, অনাকাঙ্ক্ষিত বৈষম্য, অসহনীয় সন্ত্রাসবাদ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিপর্যয়কর হুমকিতে জর্জরিত।’
তিনি বলেন, গ্লোবাল সাউথের জনগণের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ ও ক্রমবর্ধমান কষ্টের সঙ্গে এখন নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেখা দিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সংকটময় সময়ে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং 'সবার প্রবৃদ্ধি' অর্জনের জন্য 'সবার আস্থা' জোরদার করতে হবে।’
আরও পড়ুন: উদ্বোধন হওয়া ৩ উন্নয়ন প্রকল্প থেকে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্লোবাল সাউথ আমাদের ভবিষ্যত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে প্রস্তুত, যদিও এটি প্রায়শই বিভিন্ন আর্থ-সামাজিক চ্যালেঞ্জের ঝুঁকিতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, ‘সবার আস্থার ভিত্তিতে আরও ন্যায়সঙ্গত ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব গঠনে সক্ষম করার জন্য গ্লোবাল সাউথের জন্য আরও সুযোগ ও আওয়াজের অনুমতি দিয়ে এগুলো মোকাবিলা করা দরকার।’
তিনি এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ খাদ্য নিরাপত্তা, বিনামূল্যে আবাসন, কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু অভিযোজন অর্জনে গ্লোবাল সাউথের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত রয়েছে।
তিনি গ্লোবাল সাউথ এবং বিশ্বের উন্নতির জন্য কিছু সুপারিশ করেন। সেগুলো হলো-
প্রথম: শান্তির প্রবক্তা হিসেবে তিনি বিশ্বাস করেন, মানবতার সার্বিক কল্যাণের জন্য বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা সমুন্নত রাখা অত্যাবশ্যক।
‘গ্লোবাল সাউথকে অবশ্যই একতরফা নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ফ্রন্ট বজায় রাখতে হবে।’
দ্বিতীয়: বৈশ্বিক জনসংখ্যার অর্ধেক হিসেবে নারীরা অন্তর্ভুক্তিমূলক ও প্রাণবন্ত সমাজ গঠনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
‘দীর্ঘসময় ধরে নারী নেত্রী হিসেবে আমি নিশ্চিতভাবে জানি, একটি উজ্জ্বল ও ন্যায়সঙ্গত ভবিষ্যতের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন একটি কৌশলগত প্রয়োজনীয়তা।’
আরও পড়ুন: আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতমানের চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
তৃতীয়: বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য সমস্ত প্রচেষ্টা অত্যাবশ্যক।
‘গ্লোবাল সাউথে জলবায়ু অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন বৃদ্ধি এবং প্রাসঙ্গিক প্রযুক্তি হস্তান্তর অপরিহার্য।’
চতুর্থ: প্রধান জনশক্তি রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে গ্লোবাল সাউথের উচিৎ সবার উন্নত জীবন প্রদান এবং আয়োজক ও স্বদেশ উভয় দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখার জন্য উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় অভিবাসনকে সহজতর করা।
পঞ্চম: কোভিড-১৯ এবং বিশ্বের বিভিন্ন অংশে সংঘাতের ফলে স্বল্পোন্নত দেশগুলো বিভিন্ন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে।
‘আমি স্বল্পোন্নত দেশগুলোর গ্র্যাজুয়েশনের পরেও যথাযথ সময়ের জন্য শুল্ক, কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’
পরিশেষে, তিনি বৈশ্বিক মানব উন্নয়নে দক্ষিণ-দক্ষিণ ও ট্রায়াঙ্গুলার কোঅপারেশনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
‘আমি উন্নয়ন অংশীদার, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অংশীজনদের আরো উন্নত ভবিষ্যতের জন্য গ্লোবাল সাউথকে উদারভাবে সমর্থন করার আহ্বান জানাই।’
ভারত শুক্রবার ভার্চুয়াল ফরম্যাটে সেকেন্ড ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিটের আয়োজন করছে, যা এই বছরের জানুয়ারির পর দ্বিতীয়বার হচ্ছে।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় গ্লোবাল সাউথ সামিটে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী
আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উন্নতমানের চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
বিদেশ থেকেও প্রশংসিত হবে এমন চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, 'আমি পরিচালক, শিল্পী, প্রযোজকসহ সকলকে অনুরোধ করবো বিদেশ থেকে প্রশংসা কুড়ায় এমন চলচ্চিত্র প্রযোজনা করার জন্য।’
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, চলচ্চিত্র একটি সমাজকে সচেতন, বিনোদন ও সংস্কার করতে পারে এবং ইতিহাসকে কেন্দ্র করে মানুষকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে পারে।
তিনি বলেন, 'চলচ্চিত্র আমাদের জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলতে পারে।’
শেখ হাসিনা বলেন, খুব বেশি দিন হয়নি সিনেমা হলগুলো গ্রামাঞ্চলে চলে গেছে, যেখানে মানুষ বিনোদনের জন্য যেতে পারত।
তিনি বলেন, ‘কিন্তু ধীরে ধীরে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিশেষ করে করোনাভাইরাস মহামারির সময় সিনেমা হলগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, মহামারি চলাকালীন তিনি সিনেমা হলের মালিকদের সঙ্গে বসে সিনেমা হলের কার্যক্রম পুনরায় চালু করার উপায় খুঁজে বের করেন এবং সিনেমা হলগুলোতে আধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন করতে বলেন।’আরও পড়ুন: চঞ্চল ও জয়া ছাড়াও যারা পাচ্ছেন এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার
তিনি বলেন, ‘সময় ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পকে এগিয়ে নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীনে ১ হাজার কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন, যাতে স্বল্প সুদে ঋণ নিয়ে চলচ্চিত্র শিল্পকে পুনরুজ্জীবিত করা যায়।
তিনি বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিশ্বমানের চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে, আপনাদের সেই উদ্যোগ নিতে হবে এবং আমরা সেটাই চাই।’
এর আগে প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্র শিল্পে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ২৭টি ক্যাটাগরিতে ৩৩ জন বিজয়ীকে পুরস্কার প্রদান করেন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু এবং তথ্য সচিব হুমায়ুন কবির খন্দকার বক্তব্য দেন।
'আজীবন সম্মাননাপ্রাপ্ত' শিল্পী রওশন আরা রোজিনা অনুষ্ঠানে তার অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
এই পুরস্কারটি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের জন্য প্রদত্ত সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ পুরষ্কার হিসাবে বিবেচিত হয়।
পরে শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
আরও পড়ুন: বিজয়ীদের হাতে উঠল জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২
আরও ১১ জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার আরও ১১টি জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেছেন। দেশে এরকম জেলার সংখ্যা ৩২টিতে পৌঁছেছে।
সদ্য ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ১১টি জেলা হলো- টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালী, সিলেট ও মৌলভীবাজার।
প্রধানমন্ত্রী ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৫৭টি প্রকল্পের অধীনে সারাদেশে ৫ হাজার ৩৯৭টি আশ্রয়ণ বাড়িসহ ১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামো (প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা মোট ব্যয়) উদ্বোধনের সময় এই ঘোষণা দেন।
তিনি তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এসব অবকাঠামোর উদ্বোধন করেন।
এসময় সারাদেশের ৬৪টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ ১০১টি প্রান্ত ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিল। প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ৯৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা।
১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামোর মধ্যে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ৪ হাজার ৬৪৪টি অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন বা উদ্বোধন করেন এবং ৪৬ট জেলার ১৩২টি উপজেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ৫ হাজার ৩৯৭টি বাড়ি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে বিতরণ করেন।
আশ্রয়ণ ঘর বিতরণের পর প্রধানমন্ত্রী আরও ৬০টি উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করেন।
নতুন ৬০টি নিয়ে এখন মোট ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারমুক্ত উপজেলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৯৪ জনে।
যে ২১টি জেলাকে এর আগে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারমুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল সেগুলো হলো- পঞ্চগড়, মাগুরা, মাদারীপুর, গাজীপুর, নরসিংদী, জয়পুরহাট, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, নওগাঁ, পাবনা, কুষ্টিয়া, পিরোজপুর ও ঝালকাঠি।
৪ হাজার ৬৪৪টি অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে ২০২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, ১ হাজার ৮০০টি মাদরাসা ভবন, ২৯৯টি একাডেমিক ভবন এবং ৪০টি প্রশাসনিক ভবন; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে ৯৫২টি একাডেমিক ও গবেষণা ভবন; ১২টি ছাত্র ছাত্রাবাস ভবন; ২২২টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র; ১২৮ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন; ৪৬ জেলায় সাব-রেজিস্টার অফিস ভবন; ১১০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র; ২৫টি মুজিব কিল্লা; ২০টি সেতু; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২২টি কমপ্লেক্স; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীনে ৩৪টি ভবন; ৭টি ছাত্র মেস; ১৬টি ছাত্রাবাস; ২৩টি আইসিইউ; ৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক; ৪৬টি মেডিকেল কলেজ ভবন; ২৪টি নার্সিং কলেজ ভবন; ২৫টি জেলায় টেনিস অবকাঠামোগত উন্নয়ন; ১৩টি ক্রীড়া বিদ্যালয় ভবন; ২৬টি বিকেএসপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র; ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র; ডাবল পাইপলাইনসহ ৩৮ এসপিএম; ১০টি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ; ২৬টি পরিশোধন ইউনিটের কিস্তি; ২৪টি খনি খনন; ১৪০ গ্যাস প্লান্ট ক্রয় ও কিস্তি; ৩৩টি পাইপলাইন নির্মাণ; শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ১৮টি অবকাঠামো; ১১ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট অবকাঠামো; ৪০টি প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ১৪টি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ভবন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
দু-একদিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে ইসি: শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘনিয়ে আসছে এবং নির্বাচন কমিশন দু-একদিনের মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে পারে।
তিনি আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে বলেন, যেহেতু আমরা জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি, তাই তারা নির্বিঘ্নে তাদের ভোট দেবেন।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি ২৪টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ১৫৭টি প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ১০ হাজার ৪১টি অবকাঠামো উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।
এসময় সারাদেশের ৬৪টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ ১০১টি প্রান্ত ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিল। প্রকল্পগুলোর মোট আনুমানিক ব্যয় ৯৭ হাজার ৪৭১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই গতিকে ধরে রাখতে সরকারের ধারাবাহিকতা অপরিহার্য।
বিএনপির উল্লেখ না করে তিনি বিরোধী দলকে কটাক্ষ করে বলেন, তারা (বিএনপি) আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যোগ দিতে চায় না, কারণ ২০০৮ সালের নির্বাচনের মতো খারাপ ফলাফল হতে পারে।
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৩০০টি আসনের মধ্যে ২৩৩টি আসন পেয়ে ভূমিধস জয় লাভ করে, যেখানে বিএনপি মাত্র ৩০টি আসনে জয়লাভ করে।
বিএনপির নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেকেই নির্বাচনে অংশ নিতে চান না। (এটা স্বাভাবিক) যারা মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল, তাদের তো নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো আকাঙ্খা থাকবেই না। তারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ২০১৪ সালের নির্বাচনে অগ্নিসংযোগ সহিংসতা ও ভোট বানচালের চেষ্টাকে কাটিয়ে জয়লাভ করে।
আমরা বারবার জনগণের দ্বারা নির্বাচিত হয়ে (ক্ষমতায়) এসেছি। আওয়ামী লীগ গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে সরকার গঠন করেনি।
আরও পড়ুন: মুণ্ডুহীন বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন থেকে শুরু করে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স প্রবর্তন পর্যন্ত সব নির্বাচনী সংস্কার আওয়ামী লীগের প্রস্তাব অনুসরণ করেই করা হয়েছে জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার তৃণমূল পর্যায় থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নের সূচনা করেছে যাতে মানুষ গ্রামে থেকেও নগর সুবিধা ভোগ করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদেশের মানুষ একটু শান্তিতে ছিল, স্বস্তিতে ছিল, উন্নয়ন দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছিল; ঠিক সেই সময়ে এই অবরোধ আর অগ্নিসন্ত্রাস-জালাও পোড়াও। গাড়িতে আগুন বাসে আগুন দিয়ে মানুষের জীবনযাত্রা যেমন ব্যাহত করা হচ্ছে, স্কুল-কলেজের ছেলে-মেয়েরা ঠিকভাবে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারছে না। তাদের লেখাপড়া নষ্ট হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার দেশে সাক্ষরতার হার ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশে উন্নীত করেছে, যা বিএনপি শাসনামলে ছিল মাত্র ৪৫ শতাংশ।
তিনি আশা করেন, শুভবুদ্ধির জয় হবে এবং ধ্বংস ও অগ্নিসংযোগ সহিংসতার অবসান হবে।
প্রধানমন্ত্রী আবারও দেশবাসীকে তাদের নিজেদের জানমাল রক্ষার স্বার্থে অগ্নিসংযোগের সহিংসতা প্রতিরোধ করতে বলেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে ৪ হাজার ৬৪৪টি অবকাঠামোর ভিত্তিপ্রস্তর উন্মোচন বা উদ্বোধনের পাশাপাশি ৪৬টি জেলার ১৩২টি উপজেলায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ৫ হাজার ৩৯৭টি বাড়ি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আরও ১১টি জেলা ও ৬০টি উপজেলাকে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন’ ঘোষণা করেন।
এ পর্যন্ত মোট ৩২টি জেলা ও ৩৯৪টি উপজেলাকে ‘ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারমুক্ত’ ঘোষণা করা হয়েছে।
৪ হাজার ৬৪৪টি অবকাঠামোর মধ্যে রয়েছে ২০২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন, ১ হাজার ৮০০টি মাদরাসা ভবন, ২৯৯টি একাডেমিক ভবন এবং ৪০টি প্রশাসনিক ভবন; মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অধীনে ৯৫২টি একাডেমিক ও গবেষণা ভবন; ১২টি ছাত্র ছাত্রাবাস ভবন; ২২২টি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র; ১২৮ চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ভবন; ৪৬ জেলায় সাব-রেজিস্টার অফিস ভবন; ১১০টি বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র; ২৫টি মুজিব কিল্লা; ২০টি সেতু; সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ২২টি কমপ্লেক্স; স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীনে ৩৪টি ভবন; ৭টি ছাত্র মেস; ১৬টি ছাত্রাবাস; ২৩টি আইসিইউ; ৭৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক; ৪৬টি মেডিকেল কলেজ ভবন; ২৪টি নার্সিং কলেজ ভবন; ২৫টি জেলায় টেনিস অবকাঠামোগত উন্নয়ন; ১৩টি ক্রীড়া বিদ্যালয় ভবন; ২৬টি বিকেএসপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র; ২০টি শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র; ডাবল পাইপলাইনসহ ৩৮ এসপিএম; ১০টি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ; ২৬টি পরিশোধন ইউনিটের কিস্তি; ২৪টি খনি খনন; ১৪০ গ্যাস প্লান্ট ক্রয় ও কিস্তি; ৩৩টি পাইপলাইন নির্মাণ; শেখ হাসিনা টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ১৮টি অবকাঠামো; ১১ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট অবকাঠামো; ৪০টি প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং ১৪টি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ভবন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর
মঙ্গলবার ২০২৩ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
মুণ্ডুহীন বিএনপি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে নির্বাচন বানচাল করতে চায়: প্রধানমন্ত্রী
বিরোধী দল বিএনপিকে নেতৃত্বহীন বলে উড়িয়ে দিয়ে শেখ হাসিনা বলেছেন, দলটি আসন্ন জাতীয় নির্বাচন বানচাল করে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।
তিনি বলেন, ‘তারা জানে যে তাদের কোনো নেতৃত্ব নেই। তারা মুণ্ডুহীন দল মাত্র। একজন পলাতক, আরেকজন কারাগারে রয়েছে। ওই দল কোনো নির্বাচন করতে চায় না। তারা শুধু একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়।’
সোমবার (১৩ নভেম্বর) খুলনা সার্কিট হাউস মাঠে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন আসন্ন এবং ভোটের সময় সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জানে ২০০৮ সালের নির্বাচনে তারা মাত্র ৩০টি আসন পেয়েছিল।
তিনি আবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন, যে হাত যানবাহনে আগুন দেয়, সেই হাত একই আগুনে পুড়ে যাবে।
তিনি বলেন, ‘তাদের একটি উচিৎ শিক্ষা দিন, যাতে কেউ আর দেশের কারো ক্ষতি করার সাহস না পায়। এই ধরনের ঘটনা ফের ঘটতে দেওয়া উচিত নয়।’
তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি দেশের জনগণকে নিরাপত্তা দিতে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে; দেশের উন্নয়ন হয়, জনগণের কল্যাণ হয়।
তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক, বিএনপি সন্ত্রাসের সমার্থক। বিএনপি-জামায়াতের একমাত্র কাজ অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যা করা।
আরও পড়ুন: খুলনায় ২৪টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৫টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন প্রধানমন্ত্রীর
এ প্রসঙ্গে তিনি গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনার উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসীরা নির্দয়ভাবে একজন পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা ৪৫জন পুলিশ সদস্যকে আহত করেছে এবং তাদের কর্মসূচি কভার করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছে।
তিনি বলেন, ‘তারা গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর মতো হাসপাতাল আক্রমণ করেছে। তারা অ্যাম্বুলেন্সও ভাঙচুর করে। আমি মনে করি না তাদের একটুও মানবতা আছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, মানুষ হত্যা করাই বিএনপি-জামায়াতের একমাত্র কাজ।
তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে অগ্নিসংযোগকারীদের গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার জন্য ২০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে।
তিনি আরও বলেন, অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যার সঙ্গে জড়িত কাউকে আমরা ছাড় দেব না।
তিনি বলেন, ধারাবাহিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বাংলাদেশকে ব্যাপক উন্নয়ন করতে সাহায্য করছে, যা সবার কাছে দৃশ্যমান।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা তার দলকে দেশ ও জনগণের সেবা করতে এবং দেশের উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে সবাইকে তার দলকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন খুলনা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক।
বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং দলের নেতা শেখ হেলাল উদ্দিন, শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল ও শেখ সারহান নাসের তন্ময়।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ অবশ্যই অগ্নিসংযোগ সহিংসতা কাটিয়ে উঠবে: প্রধানমন্ত্রী
অসম্পূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্প শেষ করতে আওয়ামী লীগকে ভোট দিন: শেখ হাসিনা