%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A7%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%80%E0%A6%B0-%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A7%9F
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন: জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে বলেছেন। যারা আগামী সাধারণ নির্বাচনকে সামনে রেখে পেছন দিয়ে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র শুরু করেছে।
তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে কেউ যেন জনগণের অধিকার হরণ করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য আমি সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আন্দোলনের নামে কেউ যাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে এবং জনগণের জীবন, জীবিকা ও সম্পদের ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বাংলাদেশ বেতারের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ১১তম জাতীয় নির্বাচনের পর ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি বর্তমান সরকার গঠনের চতুর্থ বার্ষিকী উপলক্ষে এই ভাষণ দেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধী, ক্ষমতালোভী ও জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারীরা ইতোমধ্যেই নৈরাজ্য সৃষ্টিতে তৎপর হয়েছে।
সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় ২৫ মিনিটের ভাষণে তিনি বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য একটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করা এবং পিছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা, এবং গণতন্ত্রের অগ্রগতিতেও বাধা সৃষ্টি করা।’
প্রধানমন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা আওয়ামী লীগকে অপদস্থ করার জন্য লুটপাটের টাকা দিয়ে দেশে-বিদেশে ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী ও বিবৃতিদাতাদের নিয়োগ করেছে। তিনি বলেন, ‘তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মানহানিকর, মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। তাদের মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না।’
তিনি গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এমন কোনো উদ্ভট ধারণা (পরবর্তী নির্বাচনের আগে চক্র দ্বারা চালিত) মঞ্জুরি না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
‘আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করছি (পরবর্তীবার অনুষ্ঠিত হবে)।’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য আইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সার্চ কমিটির মাধ্যমে ওই আইনে বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। ‘নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল, যারা জনগণের শান্তি ও জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। ‘জনগণ যদি দলকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করে তাহলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন করে যাবে। তারা আমাদের বিজয়ী না করলে আমরা জনগণের কাতারে যাব। তবে আমরা যেখানেই থাকি না কেন, আমরা জনগণের সেবা করব।’
প্রধানমন্ত্রী তার বর্তমান শাসনামলের চতুর্থ বার্ষিকী উপলক্ষে দেশ-বিদেশের নাগরিকদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি তাদের ২০২৩ সালের খ্রিস্টান নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৩ এর উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
২০০৯ সাল থেকে তার সরকারের আমলে দেশের অগ্রগতির দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে বিশ্ব অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে।
‘আজকে কেউ বাংলাদেশকে বন্যা, খরা ও দুর্যোগের দেশ হিসেবে দেখে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন একটি উদীয়মান অর্থনীতি এবং উন্নয়নের রোল মডেল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর আওয়ামী লীগ টানা ১৪ বছর দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে।
‘আমাদের দেশ অনেক এগিয়েছে। তবে আমাদের এটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জনই আমাদের লক্ষ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
তিনি বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষি খাতসহ সব ক্ষেত্রে রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ন্যানোটেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োলজিক্যাল টেকনোলজি, স্মার্ট জনসংখ্যা এবং স্মার্ট শিল্প কারখানা এবং ডিজিটাল ডিভাইসের ব্যবহার নিশ্চিত করবে সরকার। ‘সব ক্ষেত্রেই গবেষণার ওপর জোর দেয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শতভাগ জনসংখ্যাকে বিদ্যুতের আওতায় আনা, সড়ক ও রেল যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ, খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ বিভিন্ন বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে তার সরকারের সাফল্যের ওপর আলোকপাত করেন। ঢাকা-মাওয়া-জাজিরা এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট, ১৬ কিলোমিটার ঢাকা বিমানবন্দর-কুতুবখালী এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প এবং ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, পশ্চিমা দেশ ও রাশিয়ার আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞার কারণে বিশ্বে অস্বাভাবিক হারে জ্বালানিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাংলাদেশেও বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কিছু পণ্য বেশি দামে কিনছি এবং সীমিত আয়ের লোকেদের মধ্যে কম দামে বিতরণ করছি, এক কোটি পরিবার টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী মূল্যে ৩০ টাকা কেজিতে চাল এবং ভোজ্যতেল, ডাল ও চিনি কিনতে পারবে।’ এছাড়া ন্যায্যমূল্যের কার্ড দিয়ে ৫০ লাখ পরিবার এক মাসে ১৫ টাকা কেজি দরে চাল কিনতে পারবে।
বিএনপি ও জামায়াত জোট শাসনের শেষের ১৬ বছর আগের পরিস্থিতির সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন।
তিনি বলেন, ২০০৫-২০০৬ অর্তবছরের মাথাপিছু আয় ৫৪৩ মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে এখন দুই হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার হয়েছে। আর দারিদ্র্যের হার ৪১ দশমিক ৫০ শতাংশ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে, গড় আয়ু ৬৪ দশমিক ৫০ বছর থেকে বেড়ে ৭৩ বছর হয়েছে এবং সাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে ৭৫ দশমিক ২০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ পেতে উৎপাদন খরচ পরিশোধ করুন: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, জিডিপি ২০২১-২২ অর্থবছরে মাত্র ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ৪৬০.৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২২-২৩ অর্থবছরে জাতীয় বাজেটের আকার ৬১ হাজার ৫৭ কোটি টাকা থেকে ৬৭৮ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা, রপ্তানি আয় ১০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে, এবং রেমিট্যান্সের প্রবাহ ৪ দশমিক ৮০ থেকে বেড়ে ২২ দশমিক ০৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০০৫-০৬ অর্থবছরে মাত্র তিন দশমিক ৫ পাঁচ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০২১ সালে ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। কিন্তু বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা এবং উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির কারণে এখন তা ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নেমে এসেছে। তারপরও পাঁচ মাসের রপ্তানি ব্যয় মেটানোর মতো পর্যাপ্ত রিজার্ভ রয়েছে বাংলাদেশের।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির বিপরীতে বরাদ্দ ২০০৫-২০০৬ অর্থবছরে মাত্র ৩৭৩ কোটি টাকা থেকে চলতি অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৭৬ কোটি টাকা, যেখানে কৃষি খাতে ভর্তুকি ৫৯২ কোটি টাকা থেকে ৪০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত শাসনামলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা মাত্র তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট থেকে বেড়ে এখন ২৫ হাজার ৮২৬ মেগাওয়াটে উন্নীত হয়েছে এবং বিদ্যুতের আওতাভুক্ত জনসংখ্যা একই সময়ে মাত্র ৪৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২০২২ সালে শতভাগ মানুষের জন্য বিদ্যুৎ সুবিধা নিশ্চিত করেছি। আমরা সব ঘর আলোকিত করেছি।’
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের ৪১তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে।
যোগাযোগ খাতে বাংলাদেশে বৈপ্লবিক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকার শত শত মহাসড়ক নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি প্রধান নদীগুলোর ওপর সেতু নির্মাণ করেছে। নিরবচ্ছিন্ন সড়ক ও রেল যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে গত ১৪ বছরে পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু, তিস্তা সেতু, পায়রা সেতু, দ্বিতীয় কাঁচপুর সেতু। দ্বিতীয় মেঘনা সেতু দ্বিতীয় গোমতী সেতু নির্মাণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত নভেম্বরে এক দিনে প্রায় ১০০টি সেতু একযোগে চালু করা হয়েছে এবং গত ডিসেম্বরে এক দিনে প্রায় ১০০টি সড়ক উদ্বোধন করা হয়েছে।
‘এটি দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে একটি অনন্য অর্জন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে প্রায় ৭১৮ কিলোমিটার মহাসড়ক চার বা তার উপরে লেনে উন্নীত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আজ জনগণ আমাদের দূরদর্শী পরিকল্পনার সুফল পেতে শুরু করেছে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ-বঞ্চনামুক্ত সোনার বাংলা (সোনার বাংলা) গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন উল্লেখ করে তিনি একটি সুখী-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
তিনি জাতির উদ্দেশে বলেন, আসুন একটি স্মার্ট দেশ গড়তে এবং এদেশের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে কাজ করি।’
আরও পড়ুন: মায়ের স্মৃতি বিজড়িত জমি ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী
মায়ের স্মৃতি বিজড়িত জমি ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী
খুলনার দিঘলিয়ায় মা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের স্মৃতি বিজড়িত জমি ও পাট গোডাউন ঘুরে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বোন শেখ রেহেনাসহ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ব্যক্তিগত সফরে শুক্রবার বিকাল ৩টা ৫৫ মিনিটে গোপালগঞ্জ থেকে সড়কপথে খুলনার দিঘলিয়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। পরে নগরঘাট ফেরি পার হয়ে বিকাল ৪টায় তার মায়ের নামে কেনা জমি ও পাট গোডাউনে যান। সেখানে প্রায় ৪০ মিনিট অবস্থান করেন প্রধানমন্ত্রী।
দিঘলিয়া থেকে প্রধানমন্ত্রী খুলনা নগরীর শেরে বাংলা সড়কে অবস্থিত প্রয়াত চাচা শেখ আবু নাসেরের বাড়িতে যান। বঙ্গবন্ধু খুলনায় এসে এই বাড়িতে অবস্থান করতেন। সেখানে দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে স্বাক্ষাত করেন। ওই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী মাগরিবের নামাজ আদায় শেষে সড়ক পথে খুলনা ত্যাগ করেন।
ওই বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর চাচাতো ভাই সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, সংসদ সদস্য শেখ সালাহ উদ্দিন জুয়েল, খুলনার মেয়র তালুকদার আবদুল খালেকসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে দুপুর থেকেই খুলনা শহর বাইপাস ও দৌলতপুত, ফুলবাড়িগেটে সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। প্রধানমন্ত্রীর গাড়ি বহর খুলনায় প্রবেশ করলে নেতাকর্মীরা স্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সড়কে লাগানো হয় অসংখ্য তোরণ।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে খুলনায় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
রূপসা সেতু থেকে শুরু করে খুলনা শহর বাইপাস, দিঘলিয়া ও শেখপাড়ার চাচার বাড়ি এলাকায় মোতায়েন করা হয় আইনশৃংখলা বাহিনীর প্রায় সাড়ে ৪ হাজার সদস্য।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই ভৈরব ও রূপসা নদী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও স্থানীয় লোকজন জানান, পাকিস্তান আমলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার সহধর্মিনী বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের নামে দিঘলিয়ার ভৈরব নদের কোলঘেষে নগরঘাট এলাকায় ১ একর ৪৪ শতক জমিতে পাট গোডাউন ও এক কক্ষ বিশিষ্ট ঘরসহ জমি কেনেন। তৎকালীন সময়ে বঙ্গবন্ধুর ভাই শেখ আবু নাসের এ জমি দেখাশোনা করতেন। বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর প্রধানমন্ত্রী এ জমির মালিক হলেও জমিটির কথা জানতেন না তিনি। ২০০৭ সালে তিনি তার আইনজীবীর মাধ্যমে এ জমির খোঁজ পান।
খুলনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং দিঘলিয়া গ্রামের বাসিন্দা বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এই জমি দেখাশোনা করে থাকেন।
২০২০ সালের দিকে প্রধানমন্ত্রীর জমিতে থাকা পুরাতন পাট গোডাউনটি ভেঙে সেখানে নতুন করে গোডাউন ও একটি রেস্ট হাউজ নির্মাণ করা হয়েছে। গোডাউনটি একজন পাট ব্যবসায়ীকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। গোডাউন সংলগ্ন পাকা রাস্তার নামকরণ হয়েছে শেখ রাসেলের নামে। এই প্রথম প্রধানমন্ত্রী এই স্থান পরিদর্শন করলেন।
প্রসঙ্গত, এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবশেষ ২০১৮ সালের ৩ মার্চ খুলনায় এসেছিলেন।
আরও পড়ুন: বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব পদক পেলেন ৫ বিশিষ্ট নারী
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধুর অন্যতম পথ প্রদর্শক ফজিলাতুন্নেছা মুজিব: প্রতিমন্ত্রী
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শুক্রবার শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে ফাতেহা পাঠ করেন এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডে জাতির পিতাসহ অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার চির শান্তি কামনা করে মোনাজাতে যোগ দেন।
বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা শেখ হাসিনা জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি বঙ্গবন্ধুর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে জাতির পিতাসহ তার পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে কিছু সেনা সদস্য হত্যা করে।
পদ্মা সেতু পার হয়ে সকালে সড়কপথে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর আজ রাতে টুঙ্গিপাড়ায় থাকার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা
টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আইন সচিবের শ্রদ্ধা
গ্যাস ও বিদ্যুতের নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ পেতে উৎপাদন খরচ পরিশোধ করুন: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে চাইলে অন্তত বিদ্যুৎ ও গ্যাস উৎপাদন ও সংগ্রহের খরচ দিতে বলেছেন।
তিনি বলেন, ‘আপনি যদি নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস চান, তাহলে আপনাকে অন্তত উৎপাদন খরচ বা সংগ্রহের খরচ দিতে হবে। আমরা কতদিন ভর্তুকি দেব?’
প্রধানমন্ত্রী ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ফেয়ার (ডিআইটিএফ)-২০২৩’-এর ২৭তম আসরের উদ্বোধন করেন। যেখানে বাংলাদেশের তৈরি পণ্য আন্তর্জাতিক বাজারে প্রচারের জন্য প্রদর্শিত হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচলে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ- অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার দীর্ঘসময়ের জন্য বিদ্যুৎ ও গ্যাসে বিশাল ভর্তুকি দিতে পারে না।
তিনি বলেন, আমরা এত বিপুল পরিমাণ সরকারি অর্থ ভর্তুকি হিসেবে দিতে পারি না, তাই ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের এ বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পাট ও পাটজাত পণ্যকে ২০২৩ সালের পণ্য হিসেবে ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, এক সময় পাটকে দেশের সোনালি আঁশ বলা হতো।
তিনি উল্লেখ করেন যে পাটের চাহিদা কখনই শেষ হবে না এবং পাটজাত পণ্য পরিবেশবান্ধব।
তিনি বলেন, ‘আমরা পাটের জিনোম উদ্ভাবন করতে পেরেছি, তাই আমরা অনেক পণ্য তৈরি করতে পারি।’
হাসিনা আরও উল্লেখ করেন যে পাট এমন একটি ফসল যার পাতা থেকে লাঠি পর্যন্ত প্রতিটি অংশ ব্যবহার করা যায়।
তিনি বলেন, ‘তাই পাটের প্রতি আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আমরা আমাদের পাবলিক জুট মিল খুলে দিয়েছি এবং যে কেউ এই মিলগুলোর একটি ইজারা নিতে পারে।’
এ বিষয়ে তিনি বলেন, ইজারাদাররা এই মিলগুলো সরাসরি পরিচালনা করতে পারে বা বৈচিত্র্যময় আইটেম উৎপাদন করতে আধুনিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পরিবেশ-বান্ধব পণ্যের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে, তাই বিশ্বজুড়ে আপনারা বিপণন করতে পারেন। আপনাদের সেই সুযোগটি নিতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে সরকার সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ফাইভজি চালু করবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ফোরজি পরিষেবা অন্তর্ভুক্ত করেছি এবং অবশ্যই ফাইভজি পরিষেবা চালু করব। তবে এটি ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য করা হবে, কারণ এই পরিষেবাটি (ফাইভজি) সব এলাকার জন্য প্রয়োজনীয় নয়। এটি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর জন্য প্রযোজ্য।’
তিনি বলেন, সরকার সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে তথ্যপ্রযুক্তি ও আইটি সক্ষম সেবার ওপর জোর দিতে বলেন।
দেশের রপ্তানি বাস্কেটকে বৈচিত্র্যময় করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আবারও নতুন বাজার ও পণ্য খোঁজার ওপর গুরুত্ব দেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের রপ্তানি আইটেম সীমিত, আমরা খুব কম রপ্তানি আইটেমের ওপর নির্ভরশীল, এটিকে বহুমুখী করতে হবে। আমি বারবার বলছি যে আমরা যত বেশি আমাদের পণ্য বৈচিত্র্য আনতে সক্ষম হব, তত বেশি আমরা নতুন বাজার খুঁজে পাব, তত বেশি আমরা আমাদের ব্যবসা এবং আয় বাড়াতে সক্ষম হব।’
শেখ হাসিনা সারাবিশ্বে এই পণ্যগুলোর অপার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, খাদ্যদ্রব্যের চাহিদা কমবে না, সবসময় বাড়বে।
পরে তিনি মেলার বিভিন্ন প্যাভিলিয়ন ও স্টল পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ও ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আ খ ম আহসান।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৩ এর উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রবিবার ‘ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা (ডিআইটিএফ)-২০২৩’-এর ২৭তম আসরের উদ্বোধন করেছেন।
দেশের বৃহত্তম এই বার্ষিক ব্যবসা ও বাণিজ্য মেলা দ্বিতীয়বারের মতো রাজধানীর উপকণ্ঠে পূর্বাচলে ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার’-এর স্থায়ী ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মাসব্যাপী মেলার আয়োজন করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন এবং ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান আ খ ম আহসান।
এ বছর বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে মোট ৩৩১টি স্টল ও ১৭টি প্যাভিলিয়ন লিজ দেয়া হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রতিদিন সকাল ১০টায় খোলা হবে এবং রাত ৯টায় বন্ধ হবে।
সরকারি ছুটির দিনে মেলা চলবে রাত ১০টা পর্যন্ত। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা এবং শিশুদের জন্য ২০ টাকা।
এছাড়া অনলাইন থেকে টিকিট বুক করলে দর্শকরা পাবেন ৫০ শতাংশ ছাড়।
সরকার মেলাস্থলে পৌঁছানোর জন্য একটি পরিবহন সুবিধা প্রদান করবে, কারণ এ বিষয়ে ৭০টি বিআরটিসি বাস পরিষেবাতে চাপ দেয়া হয়েছে। এগুলো চলবে কুড়িল ফ্লাইওভার থেকে মেলাস্থল পর্যন্ত। ন্যূনতম ৩৫ টাকা ভাড়ায় এসব বাসে ভ্রমণ করতে পারবেন দর্শনার্থীরা।
ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা প্রথম অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালে।
এবারের মেলায় ১০টি দেশের ব্যবসায়ীরা ১৭টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে অংশ নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ একদিন বিশ্বকাপ ফুটবল খেলবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের তরুণ খেলোয়াড়দের তাদের খেলাধুলায় আন্তরিকভাবে মনোনিবেশ করতে বলেছেন যাতে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ ফুটবল বিশ্বকাপ জিততে পারে।
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি ধীরে ধীরে আমাদের খেলোয়াড়রা বিশ্বকাপে খেলবে, তার জন্য তোমাদের নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। তোমরা হবে আমাদের সোনার ছেলে। আমরা বিশ্বকাপ জিতব।’
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ আর্মি স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বয়েজ অনূর্ধ্ব-১৭ এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট গার্লস অনূর্ধ্ব-১৭ এর গ্র্যান্ড ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, খেলাধুলার মাধ্যমে শরীর ও মন ফিট থাকে এবং একাগ্রতা বিঘ্নিত হয় না।
তিনি বলেন, ‘আপনি যত বেশি খেলাধুলার অনুশীলন করবেন তত বেশি আপনি শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করবেন। তাই আমি তোমাদের আন্তরিকতা নিয়ে খেলতে বলবো।’
দেশের খেলাধুলার মানোন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি এলাকায় ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিত করতে প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: বিজয়ের মাসে ১০০ মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার: প্রধানমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশের ঘরোয়া খেলাধুলার বিকাশে পদক্ষেপ নিয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে জেলা পর্যায়ে এ পর্যন্ত প্রায় ৫৬টি স্টেডিয়াম নির্মাণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের প্রতিটি জেলায় সুইমিং পুল, শুটিং রেঞ্জ, স্পোর্টস কমপ্লেক্স ও ইনডোর স্টেডিয়াম স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘দেশে ভালো ক্রীড়াবিদ নিশ্চিত করতে আমরা আটটি বিভাগেই বিকেএসপি প্রতিষ্ঠা করব।
তিনি বলেন, ‘সবার জন্য খেলাধুলা’ সরকারের লক্ষ্য। ‘আমাদের বিবেচনায় সেই লক্ষ্যটি নিয়ে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে প্রায় এক লাখ ১০ হাজার ৫৫২ খেলোয়াড় টুর্নামেন্টে যোগ দিয়েছেন এবং এটি বিশাল।
‘এই টুর্নামেন্টের প্রতিভাবান ৪০ জন ছেলে ও ৪০ জন মেয়ে বিকেএসপিতে তিন মাসের নিবিড় প্রশিক্ষণ পাবে। এছাড়া আমরা খেলোয়াড়দের বিদেশে পাঠানোর মাধ্যমে উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ নৌবাহিনী 'ক্রেতা' থেকে 'নির্মাতা' হতে চলেছে: প্রধানমন্ত্রী
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেসবাহ উদ্দিন।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট গার্লস অনূর্ধ্ব-১৭ রংপুর বিভাগ ও খুলনা বিভাগের মধ্যকার ফাইনাল খেলাও উপভোগ করেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট বয়েজ অনূর্ধ্ব-১৭ তে সিলেট বিভাগ চ্যাম্পিয়ন এবং বরিশাল বিভাগ রানার্সআপ হয়েছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট গার্লস অনূর্ধ্ব-১৭ এর শিরোপা জিতেছে রংপুর বিভাগ এবং রানার্সআপ হয়েছে খুলনা বিভাগ।
গ্র্যান্ড ফাইনালের পর দু’টি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের পাশাপাশি সেরা পারফরমার এবং সর্বোচ্চ গোলদাতাদের মধ্যে পুরস্কার ও পদক বিতরণ করেন হাসিনা।
এছাড়াও, তিনি টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষক এবং গ্র্যান্ড ফাইনালের সেরা খেলোয়াড়দের পদক প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সরকার মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চায়: প্রধানমন্ত্রী
স্বচ্ছতা নিশ্চিতে সরকার মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চায়: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করে দেশে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চায়।
সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই দেশের প্রতিটি নাগরিক ন্যায় বিচার পাবে। আমরা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি চাই। আমরা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই... আমরা সেই পরিবেশ তৈরি করতে চাই।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সকল ধর্মীয় বিশ্বাস সমান অধিকার ভোগ করে: প্রধানমন্ত্রী
তিনি বলেন, সরকার জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করে তাদের উজ্জ্বল ও নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আসুন আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য আইনের শাসন নিশ্চিত করি, যাতে তারা একটি উন্নত জীবন পেতে পারে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করব।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার ও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এএইচএম হাবিবুর রহমান ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগীয় সেবার ওপর একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
আরও পড়ুন: জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণ করবো: প্রধানমন্ত্রী
বিজয়ের মাসে ১০০ মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার: প্রধানমন্ত্রী
বাংলাদেশ নৌবাহিনী 'ক্রেতা' থেকে 'নির্মাতা' হতে চলেছে: প্রধানমন্ত্রী
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি যেকোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘সততা, নেতৃত্ব এবং আত্মত্যাগের গুণাবলিতে উৎসাহিত হয়ে আপনাদের সর্বদা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার পাশাপাশি যে কোনও দুর্যোগ মোকাবিলায় সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দাঁড়াতে হবে।বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির (বিএনএ) মিডশিপম্যান ২০২০ আলফা ব্যাচ এবং ডিরেক্ট এন্ট্রি অফিসার ২০২২ ব্রাভো ব্যাচের উত্তীর্ণ ক্যাডেটদের প্রেসিডেন্ট প্যারেডে ভাষণ দিচ্ছিলেন।
তিনি বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে বাংলাদেশ নৌবাহিনী সর্বদা জনগণের পাশে থাকে এবং দক্ষতার সঙ্গে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি চাই আমাদের কর্মকর্তারা সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করুক।’
গ্র্যাজুয়েট অফিসারদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় আপনারা আমাদের নৌবাহিনীর ভবিষ্যত নেতৃত্বদানকারী।
তিনি তাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ এবং শৃঙ্খলা ও সততার অনুভূতিতে সজ্জিত হয়ে দেশের প্রতি দায়িত্ব পালন করতে বলেছিলেন।
আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করছে উল্লেখ করে
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে সম্ভাব্য হামলা প্রতিরোধে সক্ষম করার লক্ষ্যে তাদের আধুনিকায়নের কাজ করছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কারও সঙ্গে যুদ্ধে জড়াবে না, বরং সবার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবে। ‘একটি স্বাধীন দেশ হওয়ায় আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে আধুনিক প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং উন্নত সরঞ্জামে সজ্জিত করতে চাই, যাতে আমরা বাইরের শত্রুদের যে কোনও আক্রমণ প্রতিহত করতে পারি এবং যে কোনও যুদ্ধে জয়ী হতে পারি।’
তিনি বলেন, তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীর প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিচ্ছে এবং এ লক্ষ্যে অবকাঠামো উন্নয়ন করেছে।
বাংলাদেশ নৌবাহিনী ক্রেতা থেকে নির্মাতা হতে চলেছে
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী সামরিক জাহাজ ও ব্যবস্থার নির্মাতা হয়ে উঠছে যা বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ নিজস্ব ব্যবহারের জন্য স্থানীয় শিপইয়ার্ডে জাহাজ নির্মাণ করছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনী খুলনা শিপইয়ার্ডে পাঁচটি পেট্রোল ক্রাফট এবং দুটি বৃহৎ পেট্রোল ক্রাফট নির্মাণের কাজ শেষ করেছে। তিনি বলেন, আরও পাঁচটি টহল কারুশিল্প তৈরির কাজ চলছে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নৌবাহিনী তিন বাহিনীর জন্য আইএফএফ (বন্ধু ও শত্রুর পরিচয়) ব্যবস্থা প্রস্তুত করেছে। এখন নৌবাহিনী ‘ক্রেতা’ থেকে ‘নির্মাতা’ (সামরিক জাহাজ ও ব্যবস্থার) বাহিনীতে পরিণত হতে যাচ্ছে। এটি বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করবে, স্থানীয় প্রযুক্তির বিকাশ ঘটাবে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দক্ষতা বাড়াবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনীকে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের প্রথম টানেল।
তিনি বলেন, বিএনএস শের-ই-বাংলার নির্মাণ কাজ চলছে এবং কক্সবাজারের পেকুয়ায় একটি স্থায়ী সাবমেরিন ঘাঁটি তৈরি করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ফোর্সেস গোল ২০৩০ প্রণয়ন করেছে এবং এখন তা বাস্তবায়ন করছে।
তিনি বলেন, গত ১৪ বছরে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বহরে চারটি ফ্রিগেট, ছয়টি করভেট, চারটি বড় পেট্রোল ক্রাফট, পাঁচটি পেট্রোল ক্রাফট এবং দুটি প্রশিক্ষণ জাহাজসহ মোট ৩১টি যুদ্ধজাহাজ যুক্ত হয়েছে।
আরও পড়ুন: বৈশ্বিক সংকটে মানুষ যাতে কষ্ট না পায় তা নিশ্চিত করুন: স্থানীয় প্রতিনিধিদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
তিনি বলেন, সরকার দক্ষ কমান্ডো ও উদ্ধারকারী দল হিসেবে 'স্পেশাল ওয়ারফেয়ার ডাইভিং অ্যান্ড স্যালভেজ কমান্ড' এবং নেভাল এভিয়েশন উইং প্রতিষ্ঠা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ২০১৭ সালে দুটি সাবমেরিন যুক্ত করেছি। ফলস্বরূপ, আমাদের নৌবাহিনী আজ একটি ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নৌবাহিনী চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দরসহ সমুদ্র ও উপকূলীয় এলাকায় বাণিজ্যিক জাহাজ, ফিশিং ট্রলার, নৌকা এবং ব্লু ইকোনমি-সম্পর্কিত মেরিটাইম প্রতিষ্ঠানকে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ‘আমরা মোংলা কমান্ডার ফ্লোটিলা ওয়েস্টের অবকাঠামো উন্নয়ন করছি। নৌবাহিনীতেও ডিজিটাল প্রযুক্তি চালু করা হয়েছে।’
বাংলাদেশ নৌবাহিনী সম্প্রতি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে 'ইন্টারন্যাশনাল ফ্লিট রিভিউ-২০২২'-এর আয়োজন করেছে, যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নৌবাহিনীর জন্য ব্যাপক প্রশংসা অর্জন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে একটি জমকালো কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন।
অনুষ্ঠানে ২০২০ আলফা ব্যাচের মোট ৩৫ জন মিডশিপম্যানকে কমিশন দেয়া হয়, আর ২০২২ ব্রাভো ব্যাচের ছয়জন সরাসরি প্রবেশকারী কর্মকর্তা স্নাতক হন।
প্রধানমন্ত্রী দুই সেরা অলরাউন্ড মিডশিপম্যানকে সম্মানের তরবারি এবং সিএনএস স্বর্ণপদক এবং সরাসরি প্রবেশকারী সেরা কর্মকর্তাকে বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্বর্ণপদক প্রদান করেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সকল ধর্মীয় বিশ্বাস সমান অধিকার ভোগ করে: প্রধানমন্ত্রী
বিজয়ের মাসে ১০০ মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজয়ের মাসে ১০০টি মহাসড়ক জাতির জন্য উপহার।
বুধবার প্রধানমন্ত্রী ঢাকায় তার কার্যালয়ে ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যকালে এ কথা বলেন।
তিনি জনগণকে অন্যান্য সরকারের উন্নয়ন কাজের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করতে বলেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আশা করি দেশের জনগণ অন্তত বিবেচনা করবে যে প্রায় ৩০ বছর (১৯৭৫-১৯৯৬ এবং ২০০১-২০০৯) ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিরা কতটা উন্নয়ন করেছে এবং আওয়ামী লীগ সরকার কী করেছে।’
এক দিনে ১০০টি সেতু উদ্বোধনের দেড় মাসের মধ্যে ভার্চুয়ালি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার ৫০ জেলায় রেকর্ডসংখ্যক ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী একটি নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করার পাশাপাশি সড়ক দুর্ঘটনা ও ভ্রমণের সময় কমানোর লক্ষ্যে এই সড়ক-মহাসড়কগুলো উদ্বোধন করেন।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত দুই বছরে ১৪ হাজাত ৯১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৮টি প্রকল্পের অধীনে দুই হাজার ২১ দশমিক ৫৬ কিলোমিটার সম্মিলিত দৈর্ঘ্যের মহাসড়কগুলো নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ করা হয়।
আরও পড়ুন: ৫০ জেলায় ১০০ সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকার একদিনে ১০০টি সড়ক-মহাসড়ক উদ্বোধন করেছে এবং এর আগেও একদিনে ১০০টি সেতুর উদ্বোধন করে। অতীতে কেউ এটা করতে পারে? না। এটা একমাত্র আওয়ামী লীগই করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বলা হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকার দেশকে ধ্বংস করেছে… আমি জানি না, যারা বলে আওয়ামী লীগ দেশকে ধ্বংস করেছে এর পরেও (১০০টি মহাসড়ক ও ১০০টি সেতু চালু করে) তাদের কথা মানুষ বিশ্বাস করবে কি না। এটাই আমার প্রশ্ন।’
নতুন সড়ক-মহাসড়কের মধ্যে রয়েছে- ঢাকা বিভাগের ৬৫৩ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৩২টি, খুলনা বিভাগে ৩৫২ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৬টি, চট্টগ্রাম বিভাগের ২৫৮ দশমিক ৯০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৪টি, রংপুর বিভাগের ২০৩ দশমিক ৯৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৫টি, রাজশাহী বিভাগের ১৯৬ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের আটটি, ময়মনসিংহ বিভাগের ১৪২ দশমিক ৪৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ছয়টি, সিলেট বিভাগের ১০৬ দশমিক ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি এবং বরিশাল বিভাগের ১০৭ দশমিক ২৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের চারটি।
এর মধ্যে ৯৯টি মহাসড়ক সরকারি অর্থায়নে করা হয়েছে। অন্য একটি ৭০ কিলোমিটার জয়দেবপুর (গাজীপুর)- এলেঙ্গা (টাঙ্গাইল) চার লেনের মহাসড়কের দুই পাশে সার্ভিস লেন নির্মাণ করা হয়েছে বৈদেশিক ঋণ (তিন হাজার ২০৫ কোটি টাকা) ও সরকারি তহবিলের (দুই হাজার ৯৬৩ দশমিক ৬৪ কোটি টাকা) সমন্বয়ে।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জেল হোসেন মিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নূরী নতুন ১০০টি মহাসড়কের বিষয়ে একটি উপস্থাপনা পরিবেশন করেন।
আরও পড়ুন: গ্রীষ্মের জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় তথ্য সংগ্রহ করছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে টাঙ্গাইল ও খুলনা থেকে স্থানীয় সুবিধাভোগী এবং উন্নয়ন প্রকল্পের অংশীজনদের এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে ২২ হাজার ৪৭৬ কিলোমিটার সড়ক নেটওয়ার্কের মধ্যে তিন হাজার ৯৯১ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক, চার হাজার ৮৯৭ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ক এবং ১৩ হাজার ৫৮৮ কিলোমিটার জেলা সড়ক রয়েছে।
জাতীয় মহাসড়কগুলো রাজধানীকে বিভাগীয় শহর, সমুদ্র বন্দর, স্থলবন্দর ও আন্তর্জাতিক মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করে। আঞ্চলিক মহাসড়কগুলো জেলা শহরগুলোকে নদী বন্দর ও স্থলবন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত করে। জেলা সড়কগুলো জেলা শহরকে উপজেলা বা এক উপজেলার সঙ্গে অন্য উপজেলাকে সংযুক্ত করে।
৭ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী দেশের ২৫টি জেলায় ৮,৭৯ দশমিক ৬১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মোট পাঁচ হাজার ৪৯৪ মিটার দৈর্ঘ্যের ১০০টি নবনির্মিত সেতু উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন: সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: বিজিবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী
সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন: বিজিবির প্রতি প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশে সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান রোধ; মাদক, নারী ও শিশু পাচার আন্তর্জাতিক অপরাধ দমনসহ সীমান্তবর্তী জনগণের জানমাল রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বিজিবি সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান কারণ তারা তাদের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করছেন।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর বিজিবি সদর দপ্তরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২২ এর কুচকাওয়াজে ভাষণ দিচ্ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শান্তিপূর্ণভাবে ছিটমহল বিনিময়ের সময় সীমান্তরক্ষীরা দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করেছে। ‘উৎসবের পরিবেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময় করে আমরা বিশ্বের জন্য একটি উদাহরণ তৈরি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের সময়, বিজিবি বাস্তুচ্যুতদের নিবন্ধনসহ তাদের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করেছে।
শেখ হাসিনা তার শাসনামলে বিজিবির আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিজিবি সংস্কার উদ্যোগের আওতায় বাহিনীর সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করেছে এবং একটি নতুন আইন প্রণয়ন করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিজিবি একটি দক্ষ, শক্তিশালী, আধুনিক ত্রিমাত্রিক বাহিনীর সাংগঠনিক রূপ পেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, এখন বিজিবি স্থল, জল ও আকাশে তার দায়িত্ব পালনে সক্ষম।
আরও পড়ুন: জাতীয় উন্নয়ন অব্যাহত রাখতে ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করুন: জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজিবিকে একটি বিশ্বমানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তার সরকার 'বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন-২০৪১' গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, 'স্মার্ট ডিজিটাল নজরদারি এবং কৌশলগত বর্ডার রেসপন্স সিস্টেম' নিরবিচ্ছিন্ন নজরদারি এবং আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্ত এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন যে বিজিবিতে উন্নত ও যুগোপযোগী অস্ত্র ও সরঞ্জাম যোগ করার কারণে এর অপারেশনাল সক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার পার্বত্য সীমান্ত এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে মোট এক হাজার ৩৬ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।
তিনি জানান, প্রথম পর্যায়ে ৩১৭ কিলোমিটার সীমান্ত সড়ক নির্মাণের কাজ চলছে।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের এক লাখ ৪০ হাজার পাঁচটি সীমানা পিলার থেকে ‘পাক’ বা ‘পাকিস্তান’ শব্দগুলো তুলে ফেলে সেগুলোর জায়গায় ‘বাংলাদেশ’ বা ‘বিডি’ লেখার জন্য বিজিবিকে ধন্যবাদ জানান।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে বেগম রোকেয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
অগ্নিসন্ত্রাসী, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিকে ক্ষমতায় যেতে দেবেন না: প্রধানমন্ত্রী